বিশেষ-সংবাদ
রমজানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ধাক্কায় শহরাঞ্চলে 'সঙ্কুচিত মধ্যবিত্ত'
রমজানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি লাগামহীন হওয়ায় খুবই কঠিন সময় পার করছে শহরাঞ্চলের মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। রমজানে তাদের মাসিক ব্যয় ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার মতো বেড়ে যাওয়ায় সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে ।
এমন অনেকেই আছেন যাদের বাসা সুপারশপগুলোর আশেপাশে, অথচ তারা এখন স্থানীয় কাঁচাবাজার থেকে বাজার করছেন। আর মূল্যবৃদ্ধির কারণে পরিবারের প্রধান উপার্জনকারী ব্যক্তি কারোর রউপর ভরসা না করে নিজেই বাজারে গিয়ে কেনাকাটা করছেন, যাতে কিছুটা হলেও সাশ্রয় হয়।
তাদের একজন বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিজীবী কাজী শরিফুল হক ইউএনবিকে বলেন, রমজানে ইফতার ও সেহরির সময় যে খাবার খাওয়া হয়, তাতে অন্য সময়ের থেকে মাসে খাবার খরচ বেশি হয়। এসময় সাধারণত ফল, গরুর মাংস ও খাসির মাংসের মতো কিছু জিনিসের ব্যবহার কমে যায়।
ইউএনবি শরিফুলের সঙ্গে রাজধানীর প্রধান কাঁচাবাজার কাওরানবাজারে কথা হয় ইউএনবির। যেখানে তিনি গিয়েছিলেন পুরো সপ্তাহের বাজার করতে। একটি কেনাকাটার তালিকায় রয়েছে ফলমূল, শাকসবজি, মাছ ও মুরগি।
তিনি বলেন, তার অভিজ্ঞতায় বেশিরভাগ পণ্যের দাম কেজিপ্রতি ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। রমজান মাসের শুরুতেই মাছের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, মুরগির মাংস ১৫ থেকে ২০ টাকা, ছোলা, মসুর ডাল, পেঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
সরকার নির্ধারিত মূল্যে খেজুর পাওয়া যায় না জানিয়ে তিনি বলেন, আপেল, মাল্টাসহ কিছু ফল প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি দরে।
আরও পড়ুন: রমজানে ইফতার পার্টি না করে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান: প্রধানমন্ত্রী
শরিফুল জানান, চাল ও ভোজ্যতেলের দাম আপাতত স্থিতিশীল। তবে সংসার খরচ শুধু বাজারের খরচের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ওষুধ (স্বাস্থ্য), পানির বিল, গ্যাসের বিল, বিদ্যুৎ, বাড়িভাড়াসহ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই মানুষকে অতিরিক্ত ব্যয় করতে হচ্ছে।
বিভিন্ন বিল ও দ্রব্যমূল্য শহরের মধ্যবিত্তকে চেপে ধরছে, বিশেষত শরিফুলের মতো প্রান্তিক অবস্থানের মানুষকে। সর্বশেষ দুই বছর আগে তার কর্মস্থলে বেতন বাড়ানো হয়েছিল এবং এই দুই বছরে দেশে মুদ্রাস্ফীতিও বেড়েছে। এমনকি তিনি যে সংস্থায় কাজ করেছিলেন সেই সংস্থাটিও এই দুই বছরে ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হয় এবং এ কারণে তিনি আর্থিক চাপে হতাশ হয়ে পড়েন।
তবুও ২-৩ বছর আগে একই লোকদের সঙ্গে কাটানো ভালো সময় শরিফুলকে এখনো আশাবাদী করে তোলে।
২০২১ সালে ঢাকার ফার্মগেটে চার সদস্যের পরিবারের ভরণপোষণের পাশাপাশি গ্রামে বসবাসরত বাবা-মায়ের খরচও দিয়েছেন তিনি। তারপরও প্রতি মাসে সামান্য কিছু টাকা সঞ্চয় করতে পেরেছেন শরিফুল। ‘আর এখন আমাকে আমার আগের সঞ্চয় দিয়ে সংসারের খরচ চালাতে হচ্ছে’- ক্ষোভের সঙ্গে বলেন শরিফুল।
ইদানিং রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে শরিফুলের মতো অবস্থা অধিকাংশ ক্রেতাদের।
২০০৯ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের পর যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের সাবেক বিরোধীদলীয় নেতা লেবার পার্টির এড মিলিব্যান্ড বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে 'স্কুইজড মিডল' শব্দটি চয়ন করেছিলেন।
অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি ২০১১ সালে এটিকে তাদের 'ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার' হিসেবে বিবেচনা করে। এটির সংজ্ঞায় বলা হয়, "এটি এমন একটি শ্রেণির সমন্বয়ে গঠিত সমাজ, যাদের আয় নিম্ন বা মধ্যম স্তরের। এরা মুদ্রাস্ফীতি, মজুরি হিমায়িত ও অর্থনৈতিক সংকটের সময় খরচ কমাতে বাধ্য হয়।”
শরিফুল ও তার আশেপাশের সবার অবস্থা এরকম।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন ইউএনবিকে বলেন, মুদ্রাস্ফীতি ও এলোমেলোভাবে বিনিময় হারের ওঠানামা (আমদানি পণ্যের দামকে প্রভাবিত করে) শহরাঞ্চলে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়িয়ে তুলেছে, কারণ শহুরে মানুষ সরবরাহ চেইনের উপর নির্ভর করছে।
তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলে একটি পরিবারের ভোগ করা পণ্যের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশই উৎপাদিত হয় নিজের জমিতে, যা শহরে হয় না। মধ্যবিত্তদের বেশিরভাগই এমনকি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন। ফলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নগর জীবনকে আরও মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে।
কাওরানবাজারের শরিফুলসহ অন্যদের একই রকম অবস্থার সত্যতা নিশ্চিত করে ফাহমিদা বলেন, শুধু ভোগ্যপণ্যের দাম নয়- স্বাস্থ্যসংক্রান্ত ব্যয় ও নানা ধরনের (ইউটিলিটি) বিলও বেড়েছে।
ফাহমিদা বলেন, ‘কোভিডের প্রাদুর্ভাব (২০২০-২০২২) কমে যাওয়ার পর পরিবারের আয়, মূলত বেতন বাড়েনি। ফলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপে পড়েছেন চাকরিজীবীরা।’
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দেওয়া সময়সীমার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২০২৩ সালের নভেম্বরে টানা ২২তম মাস বাংলাদেশে গড় মজুরি প্রবৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতির হারের অনেক নিচে রয়েছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, আমদানি হোক বা দেশে উৎপাদিত হোক সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে।
তিনি বলেন, চাকরিজীবীদের আয় না বাড়লেও অন্যদের পাশাপাশি তাদের ব্যয়ও বেড়েছে, তবে এটি নির্দিষ্ট আয়ের গোষ্ঠীর জন্য একটি বিশেষ বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, যদি 'যৌক্তিক ও পদ্ধতিগতভাবে' দাম বাড়ানো হয় অর্থাৎ বাজারের মৌলিক বিষয়গুলো মেনে চলা, তাহলে এই বোঝা নিয়ন্ত্রণযোগ্য থাকবে। কিন্তু যখন স্বেচ্ছাচারিতা করে, তখন জনগণের পক্ষে এটি খুব কঠিন হয়ে যায়।
এমনটি এটি ঘটছে কি না সেদিকে কর্তৃপক্ষকে আরও মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, কারণ দেশে মূল্যবৃদ্ধি, মজুতদারি ইত্যাদির বেশ কয়েকটি উদাহরণ রয়েছে এবং এর বিরুদ্ধে আইন রয়েছে।
যেখানেই অনিয়ম পাওয়া যায়, সেখানে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা, বাজারে স্থিতিশীলতা আনার আহ্বান জানান ক্যাব সভাপতি।
আরও পড়ুন: রমজানে ২৫ মার্চ পর্যন্ত খোলা থাকবে স্কুল: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
রমজানে পবিত্র নগরী মক্কা-মদিনায় ওমরাহ পালনকারীদের উপচে পড়া ভিড়
পবিত্র রমজান মাসে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সৌদি আরবে আসছেন হাজারো মুসল্লি। রমজানের শুরু থেকে সৌদি আরবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ওমরাহ পালনকারীদের সংখ্যা বাড়ছে।
আরবি বর্ষপঞ্জির নবম মাস রমজান। এ সময় সৌদি আরবে সবচেয়ে ভালো আবহাওয়া বিরাজ করে এবং প্রার্থনা, আত্মমূল্যায়ন ও ধর্মীয় নিষ্ঠার জন্য উৎসর্গ করা এই পবিত্র মাস ঐতিহ্যগতভাবে ওমরাহ পালনের শ্রেষ্ঠ সময় হিসেবে গণ্য করা হয়।
যদিও অত্যধিক উষ্ণ তাপমাত্রার জন্য মক্কা সুপরিচিত তবে আশ্চর্যজনকভাবে মার্চ মাসে একটি মনোরম আবহাওয়া বিরাজ করছে।
রমজানের প্রথম জুমা শুক্রবার (১৫ মার্চ) মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদ ও মদিনার মসজিদে নববিতে জুমার নামাজ আদায় করেছেন হাজার হাজার মুসল্লি।
গ্র্যান্ড মসজিদ ও এর আঙিনাজুড়ে ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের ভিড় ছিল এবং কেন্দ্রীয় হারাম এলাকার রাস্তা জুড়েও অবস্থান নেন তারা।
অনেকেই নিজ নিজ হোটেল থেকে জুমা আদায় করেছেন, যেসব স্থান অডিও ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে গ্র্যান্ড মসজিদের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে।
এদিকে, দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম বাদশাহ সালমান ২০২৪ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এক হাজার জনকে ওমরাহতে নিমন্ত্রণ জানান।
২০২৪ সালের চতুর্থ ও চূড়ান্ত ব্যাচের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশের ১৬টি দেশের ২৫০ জন বিশিষ্ট ইসলামি ব্যক্তিত্ব ও নারী-পুরুষ ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব সফর করছেন।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে রয়েছেন ইসলামিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, ইনফ্লুয়েন্সার, লেখক, বক্তা, শিক্ষক।
শিক্ষক মুনজেরিন শহীদ বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। এসব ঐতিহাসিক স্থানের গল্প জানতাম। এবার নিজের চোখে দেখার সুযোগ পেলাম।’
তিনি বলেন, এখানে ভাষাগত কোনো বাধা বা সাংস্কৃতিক কোনো বিভাজন নেই।
স্বামী আয়মান সাদিকের সঙ্গে প্রথম ওমরাহ পালন করতে আসা মুনজেরিন বলেন, ‘আমি মানুষের মধ্যে অসাধারণ ঐক্য দেখতে পাচ্ছি। আমার আবার আসার ইচ্ছা আছে।’
সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্ডে ব্যয়করকে যৌক্তিক করতে চায় সরকার
রাজস্ব আদায়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে এবং পূর্ববর্তী অর্থবছরের আদায় না হওয়া রাজস্ব (Foregone revenue) বা পরোক্ষ সরকারি ব্যয়ের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকার ব্যয়করকে যৌক্তিকীকরণে কাজ করছে বলে সরকারি এক নথিতে জানা গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি (২০২৩-২৪ থেকে ২০২৫-২৬) অনুযায়ী, আন্তঃসংস্থা সহযোগিতার মাধ্যমে পর্যাপ্ত ও সঠিক তথ্য সংগ্রহ করাকে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য করছে সরকার।
চলতি সপ্তাহে ইউএনবির হাতে কিছু নথিপত্র এসেছে। এতে দেখা গেছে, ‘ব্যয়কর বিশ্লেষণ শুরু করার জন্য প্রথম পদক্ষেপ হবে আয়কর ও ভ্যাটের জন্য করের হারের মানদণ্ড নির্ধারণ এবং ভিত্তি স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা।’
ভ্যাট, আয়কর ও কাস্টমসে প্রদত্ত বিভিন্ন ধরনের সুবিধা ও পছন্দের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করাও প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: মজুতদার ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে: কৃষিমন্ত্রী
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত কম থাকায়, কী পরিমাণ রাজস্ব আদায় বা লোকসান হয় এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির সঙ্গে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না- তা সরকারের উন্নয়ন ও বিনিয়োগ পরিকল্পনায় অর্থায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়।
সরকার সামাজিক বা অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণ, নির্দিষ্ট খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বা বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বিভিন্ন কর সুবিধার অনুমতি দেয়।
এতে বলা হয়, ‘পূর্ববর্তী অর্থবছরের আদায় না হওয়া রাজস্ব অনুমান করার জন্য একটি পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে তা হলো ব্যয়কর মূল্যায়ন।’
ব্যয়কর হলো একটি বেঞ্চমার্ক (বা রেফারেন্স) কর ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত অগ্রাধিকারমূলক ট্যাক্স ট্রিটমেন্টের কারণে সংগ্রহ না করা অনুমিত রাজস্ব, যা নিরপেক্ষতা, দক্ষতা ও সমতার ভিত্তিতে তৈরি করা হয়।
ব্যয়করের মধ্যে কর ছাড়, হ্রাসকৃত করের হার, ট্যাক্স ক্রেডিট, ট্যাক্স হলিডে, ট্যাক্স ভাতা, ট্যাক্স বিলম্ব ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ব্যয়কর প্রাক্কলন বিভিন্ন বিশেষ কর ব্যবস্থার ব্যয়-সুবিধা বিশ্লেষণ করে রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোর এবং কর ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা বাড়ানোর সম্ভাব্য উপায়গুলো চিহ্নিত করতে সহায়তা করে।
অনেক দেশ ব্যয়কর মূল্যায়নকে তাদের বার্ষিক বাজেট অনুশীলনের অংশ করে নিয়েছে।
যদিও বাংলাদেশ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যয়করের প্রাক্কলন শুরু করতে পারেনি, ২০২১ সালে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যক্তিগত ও কর্পোরেট আয়করের জন্য একটি ব্যয়কর বিশ্লেষণ করেছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
ছোট আকারে হলেও এবং পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও, সেই বিশ্লেষণের ফলাফল বেশ উল্লেখযোগ্য ছিল। ফলাফলে দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জিডিপির প্রায় ৩৬ শতাংশ প্রত্যক্ষ কর থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল, যা প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকার পূর্ববর্তী অর্থবছরের অপরিশোধিত কর।
যদি কেউ জমি হস্তান্তরে ব্যয়কর যোগ করে তাহলে জিডিপি হিসাবের আওতাভুক্ত নয় এমন মূলধনী লাভের একটি বড় অংশ পূর্ববর্তী অর্থবছরের অপরিশোধিত করে পরিণত হয়। আরও প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারায় সরকার।
এটি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জিডিপির প্রায় ২.৬ শতাংশ।
যদিও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার বৃহত্তর প্রবেশাধিকার, বৈষম্য হ্রাসের মতো কিছু সামাজিক ও অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণের জন্য ব্যয়কর মঞ্জুর করা হয়। এর মূল্যায়নগুলো অর্জিত সুবিধা ও রাজস্ব ক্ষতির মধ্যে ভারসাম্য তুলে ধরে।
মূসকের ক্ষেত্রে মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবরণীতে (২০২৩-২৪ থেকে ২০২৫-২৬) বলা হয়েছে, কৃষি, পশুসম্পদ, মৎস্য, শিক্ষা, জনপ্রশাসন, প্রতিরক্ষা, সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডের মতো বেশ কিছু খাত (মোট জিডিপির ২১ দশমিক ২ শতাংশ) মূল্য সংযোজন করের আওতা বহির্ভূত। উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রকৌশল (হালকা), গৃহস্থালি বৈদ্যুতিক পণ্য ও ভোগ্যপণ্য, ওষুধ, কম্পিউটার দ্রব্য ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি, রপ্তানিমুখী শিল্প ইত্যাদি শিল্পকে স্থানীয় শিল্পের উন্নয়ন, রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। যা জিডিপির আরও ২৩ শতাংশ।
খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে (জিডিপির ১৫ শতাংশ) একটি বড় অংশ ভ্যাটমুক্ত। পরিবহন ব্যয় সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী করতে পরিবহন সেবার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ (জিডিপির ৭.৫ শতাংশ) ইচ্ছাকৃতভাবে ভ্যাটের বাইরে রাখা হয়েছে।
গত বছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব সম্মেলনে এক উপস্থাপনায় বলা হয়, বাংলাদেশের জিডিপির প্রায় ৫০ শতাংশে পণ্য ও সেবার ওপর কোনো ভ্যাট আদায় করা হয় না।
যদিও ভবিষ্যতে রাজস্ব আদায়ে কাস্টমসের অবদান কমে যেতে পারে, তবুও বর্তমানে এটি সরকারি কোষাগারে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে।
২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের আমদানির বিষয় ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, সব আমদানির ১৫ শতাংশ শতভাগ রপ্তানিমুখী বন্ডেড কারখানা, ৭ দশমিক ৪ শতাংশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) কারখানা এবং ১৯.৮ শতাংশ আমদানি সম্পন্ন করেছে এসআরও/অর্ডারের আওতায় বিশেষ কর সুবিধা থেকে।
সব মিলিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট আমদানির ৪২ দশমিক ৩ শতাংশে কোনো শুল্ক আদায় হয়নি।
আরও পড়ুন: জিম্মি নাবিকদের সুস্থ ফেরত আনার বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর: নৌপ্রতিমন্ত্রী
চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও সরকার শ্রমবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: আইনমন্ত্রী
পুরান ঢাকার ইফতার বাজার: ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ বনাম ‘সব বাপের পোলায় খায়’
রমজানের শুরুতেই জমে উঠেছে পুরান ঢাকায় ইফতার বাজার। পুরান ঢাকার ঐতিহ্যের সঙ্গে ভোজন রসিক শব্দের ঘনিষ্ঠতাও পুরোনো। বাহারি সব পদের ইফতার সামগ্রী থাকলে প্রকাশ্য লড়াই চলছে ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ ও ‘সব বাপের পোলায় খায়’ ইফতারের মধ্যে। কে কাকে টেক্কা দেবে তা নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ইফতার বাজার সরগরম তাদের স্লোগানে। পুরান ঢাকার চকবাজার, ইসলামপুর, বাংলাবাজারসহ রাস্তার পাশের টং দোকানগুলোতে ঘুরে ব্যাপক আয়োজন দেখা গেছে।
ঢাকার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ইফতারের মার্কেট চকবাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন রকম ইফতারের জমকালো পরিবেশনা। সাধারণ ছোলা-মুড়ি, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, শরবতের পাশাপাশি দেখা গেছে ইফতারের নানারকম আইটেম। এছাড়া ইসলামপুর ও বাংলাবাজারেও দেখা গেছে বিভিন্ন রকমের ইফতারের আয়োজন।
বিভিন্ন ধরনের কাবাব রয়েছে। টেংরি কাবাব, সুতি কাবাব, শিক কাবাব, কাঠি কাবাবের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। এছাড়াও রয়েছে আস্ত মুরগির রোস্ট, কোয়েলের রোস্ট, খাসির আস্ত পা রোস্ট, গরুর হালিম। শুধু মাংসই নয় রয়েছে সবজি নান, দুধ নান, পরোটা, কিমা পরোটা, গরুর মাংসের বিরিয়ানিও। ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে তারা নানা রকম বিজ্ঞাপনী কথাবার্তাও বলে চলেছেন।
আরও পড়ুন: অগ্নি নিরাপত্তা: ঢাকার অভিজাত এলাকার রেস্টুরেন্টগুলো কতটা নিরাপদ?
আগামী দুই অর্থবছরে রাজস্ব সংগ্রহের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা সরকারের
২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে উচ্চাভিলাষী রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ সরকার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য এ লক্ষামাত্রা ৫ হাজার ৮৭২ বিলিয়ন এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ হাজার ৯৭ বিলিয়ন টাকা। তবে ডিজিটালাইজেশনের পরিধি বাড়ানো এবং ব্যক্তি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে কর পদ্ধতি সহজ করার ওপর এ বিষয়টি নির্ভর করছে।
এছাড়াও রাজস্ব বাড়াতে প্রত্যক্ষ কর ও মূল্য সংযোজন করের ওপর নজর দিচ্ছে সরকার। কর নেট সম্প্রসারণ ও কর কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কর অব্যাহতির যে ব্যাপক সুযোগ রয়েছে সে বিষয়টি যৌক্তিকতা যাচাই করতে এবং বাজেট বক্তৃতায় আরও স্বচ্ছতা আনতে সরকার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি (২০২৪-২৫ থেকে ২০২৫-২৬) অনুযায়ী, কর রাজস্ব খাত থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রায় ৫ হাজার ৩৪৩ বিলিয়ন টাকা এবং ২০২৫-২৬ সালে ৬ হাজার ৪৬৩ বিলিয়ন টাকা আসবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আগামী দুই অর্থবছরে যথাক্রমে ৫০ হাজার ৯৫ কোটি টাকা এবং ৬ হাজার ১৭১ কোটি টাকা দেবে।
আরও পড়ুন: চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে ৬.০৭%
আয়কর শাখা থেকে, আগামী অর্থবছরের জন্য প্রাক্কলিত সংগ্রহ হবে ১ হাজার ৭৫৩ বিলিয়ন টাকা এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ২ হাজার ১২৩ বিলিয়ন টাকা। আমদানি শুল্ক থেকে আদায় হবে যথাক্রমে ১ হাজার ৫১১ বিলিয়ন টাকা এবং ১ হাজার ৮৩০ বিলিয়ন টাকা।
আর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক থেকে রাজস্ব আদায় হবে যথাক্রমে ১ হাজার ৮৩১ বিলিয়ন টাকা এবং ২ হাজার ২১৮ বিলিয়ন টাকা।
২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য এনবিআর বহির্ভূত কর হবে যথাক্রমে ২৪৮ বিলিয়ন টাকা এবং ২৯২ বিলিয়ন টাকা।
কর বহির্ভূত রাজস্ব আদায় হবে যথাক্রমে ৫২৯ বিলিয়ন টাকা এবং ৬৩৪ বিলিয়ন টাকা।
চলমান ২০২৩-২৪ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৫০০ বিলিয়ন টাকা রাজস্ব করসহ মোট ৫ হাজার বিলিয়ন টাকা। মোট রাজস্বের মধ্যে এনবিআর থেকে আসবে ৪ হাজার ৩০০ বিলিয়ন টাকা, যার মধ্যে আয়কর থেকে ১ হাজার ৪৮০ বিলিয়ন টাকা, আমদানি শুল্ক থেকে ১ হাজার ২৭৫ বিলিয়ন টাকা, ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক থেকে ১ হাজার ৫৪৫ বিলিয়ন টাকা।
অন্যদিকে এনবিআর বহির্ভূত খাত থেকে প্রায় ২০০ বিলিয়ন টাকা এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব খাত থেকে ৫০০ বিলিয়ন টাকা আদায় করা হবে।
আরও পড়ুন: চলতি অর্থবছর ফেব্রুয়ারিতে সর্বোচ্চ ২১৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে
মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রাক্কলিত রাজস্ব আয় এবং পরবর্তী দুই বছরের আনুমানিক রাজস্ব আয়ে যে উচ্চ স্থিতিস্থাপকতা এবং ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধি দেখা যায়, তাতে রাজস্ব সংগ্রহের জোরালো আভাস পাওয়া যায়।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজস্ব সংগ্রহে কর ও কর-বহির্ভূত অংশগুলোর মধ্যে, কর-বহির্ভূত অংশের তুলনায় কর রাজস্ব আরও ক্রিয়াশীল ও স্থিতিস্থাপক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়াও এই তথ্যউপাত্তে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ন্যূনতম জিডিপি থেকে সামগ্রিক রাজস্ব ১ দশমিক ৬৫ গুণ বেশি বাড়বে বলে অনুমান করা হয়েছে।
বিবৃতি অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য জিডিপির রাজস্ব স্থিতিস্থাপকতা গত অর্থবছরের তুলনায় ১ দশমিক ২৮ গুণ বেশি এবং পরবর্তী অর্থবছরে এটি ১ দশমিক ৪০ গুণ বেশি হবে বলে অনুমান করা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে জিডিপির কর রাজস্ব স্থিতিস্থাপকতা ১ দশমিক ৩৩ গুণ বেশি হবে, যা পরবর্তী অর্থবছরে ১ দশমিক ৫০ গুণ বেশি এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১ দশমিক ৬৬ গুণ বেশি হবে।
চলমান অর্থবছরের জন্য জিডিপির কর-বহির্ভূত রাজস্ব স্থিতিস্থাপকতা চলতি অর্থবছরে ০.৯২ গুণ বেশি, পরবর্তী অর্থবছরে ০.৪৭ গুণ বেশি এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১.৫৭ গুণ বেশি হবে।
অন্যদিকে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে করের রাজস্ব প্রকৃত জিডিপির প্রবৃদ্ধির চেয়ে ৯৮ শতাংশ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নীতি বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজস্ব সংগ্রহ একটি দেশের উন্নয়ন করতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশ ২০৩১ সালে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে একটি উন্নত দেশ হতে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-২০৪১)’- অনুযায়ী রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ২০৩১ সালের মধ্যে ১৯.৫৫ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ২৪ শতাংশে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মধ্যে জিডিপির ১১.২% কর আদায়ের লক্ষ্য সরকারের
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশ চমকপ্রদ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, তবে বাংলাদেশ সমন্বিত রাজস্ব প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়নি। রাজস্বের একটি বড় অংশ আসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংগৃহীত প্রত্যক্ষ (আয়কর) এবং পরোক্ষ কর (ভ্যাট এবং শুল্ক) থেকে। এছাড়াও এনবিআরবহির্ভূত কর এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব (এনটিআর) হিসেবেও সামান্য অংশ আসে।
এতে বলা হয়েছে, পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য কম রাজস্ব সংগ্রহের কারণগুলো চিহ্নিত করতে হবে। অর্থনৈতিক কাঠামো (বৃহৎ অনানুষ্ঠানিকতা এবং অব্যাহতি), কাঠামোগত দুর্বলতা (জটিল প্রক্রিয়া এবং তথ্যের অসামঞ্জস্য) এবং সাংস্কৃতিক কারণ (কর প্রদানের প্রতি উদাসীনতা) কম রাজস্ব সংগ্রহের উল্লেখযোগ্য কারণ।
নীতিগত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেসরকারি খাতে সহায়তা নিয়ে সরকার কর প্রদান পদ্ধতি সহজীকরণ, কর বিধি যেন সহজে বুঝা যায় এবং কর অব্যাহতি যেন যৌক্তিক হয় সে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
এতে আরও বলা হয়, কর প্রশাসনের সঙ্গে সহজে যোগাযোগের সুযোগ, স্বচ্ছতা ও অনুমানযোগ্যতা আনতে ডিজিটালাইজেশন বাড়ানো এবং কর ব্যবস্থায় গতিশীলতা আনার মাধ্যমে রাজস্ব সংগ্রহে সাফল্য জোরদার করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: এডিবি'র সর্বশেষ প্রতিবেদন: ২০২৪ অর্থবছরকে বাংলাদেশের জন্য একটি ভালো বছর হিসেবে পূর্বাভাস
খুলনায় রমজানের আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বেশি দামে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ
দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র মাহে রমজান। মাসটিকে ঘিরে প্রত্যেক পরিবারেই পুরোদমে চলছে প্রস্তুতি। বিশেষ করে রমজান মাসের শুরুতে খেজুর, চাল, ডাল, ছোলা, বেসন, চিনি ও পেঁয়াজের ওপর একটু বেশি চাপ পড়ে।
রোজা শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকেই বাজার ঘুরে শুরু হয় কেনাকাটা। তবে ক্রেতাদের পূর্ব প্রস্তুতিতে প্রতিবারের মতো এবারও দাম বেশি। যদিও দফায় দফায় সরকারের ঘোষণা ছিল রোজায় নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো পণ্যের দাম বাড়বে না। কিন্তু এসব ঘোষণার কোনো প্রতিফলন বাজারে দেখা যায়নি।
নিত্য পণ্যের উচ্চ মূল্যে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ ছিল লক্ষণীয়। আলু, দেশি রসুন, বেগুন, সব ধরনের মুরগির মাংস, গরুর মাংস এবং প্রায় সব ধরনের ডাল বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে।
বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলছেন, সরকার রোজায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকবে বললেও সেটা হচ্ছে না। সবকিছুর দামই বেড়েছে। অন্যদিকে, বিক্রেতারা বলছেন, ক্রেতারা বেশি চাহিদা দেখাচ্ছে বলেই সবকিছুর দাম বাড়তি।
দুই মাসের ব্যবধানের বিভিন্ন বাজার ও এলাকার মুদি দোকানে প্রতি কেজি ছোলা, মুড়ি, খেজুর, বেসন, সরিষার তেল, বুটের ডালের দাম ১০-৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর শরবত তৈরির উপকরণ ইসবগুলের ভুসির দাম কেজিতে ৫০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া রমজান নির্ভর বিভিন্ন খাদ্যপণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত আলু, ধনেপাতা, পুদিনাপাতা, ট্যাং, রুহ-আফজার দামও বেড়েছে।
আরও পড়ুন: আমদানিকৃত নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্যের কর মওকুফ হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
শনিবার সকালে খুলনার মিস্ত্রীপাড়া, শেখপাড়া, বয়রা ও গলামারী এলাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা, যা ২ মাস আগেও ৯০ টাকা ছিল। ২ মাস আগে যে মুড়ি ৮০ টাকা ছিল তা এখন ১১০/১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি মাঝারিমানের তিউনিশিয়ান খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা। যা ২ মাস আগে ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়। মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি বেসন বিক্রি হচ্ছে ৭০-১০০ টাকা। যা আগে ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়। বুটের ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হয় ১১০ টাকা। যা আগে ৯০ টাকা বিক্রি হয়।
এছাড়া, ইফতারে শরবত তৈরিতে ব্যবহৃত ইসবগুলের ভুসি, ট্যাং, রুহ-আফজার দামও বাড়ানো হয়েছে। প্রতি কেজি ইসবগুলের ভুসি দুই মাস আগে ১ হাজার ৬০০ টাকা বিক্রি হলেও এখন ২ হাজার ১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত ট্যাং বিক্রি হয়েছে ৮৫০ টাকা, যা আগে ৮০০ টাকা ছিল। বড় সাইজের রুহ-আফজা বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫৫০ টাকা। যা আগে ৩৫০ টাকা ছিল। ছোট সাইজের রুহ-আফজা বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা। যা আগে ২০০ টাকা ছিল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চিনি, চাল-ডালসহ প্রতিটি পণ্যের দাম সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সরকারের বেঁধে দেওয়া দেশি পেঁয়াজের খুচরা মূল্য প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ৬৫ টাকা হলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়।
সম্প্রতি ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে দাম কমতে শুরু করে। এক সপ্তাহ আগে যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০-১২০ টাকা কেজিতে, গত দু’দিন সেই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০-৮৫ টাকায়। তবে রোজার আগ মুহূর্তে শুক্রবার থেকে আবারও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়।
আরও পড়ুন: রমজান মাসে আমরা কঠোরভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করব: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
বিক্রেতারা বলছেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করলেও শুক্রবার ৯০ টাকা করে বিক্রি করতে হচ্ছে। এই দামে বিক্রি করলেও কোনো লাভ থাকছে না।
রবিউল আলম নামে এক বিক্রেতা বলেন, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কম। কারণ মুড়িকাটা পেঁয়াজ একেবারে শেষ দিকে। এ কারণে বাড়তি দাম যাচ্ছিল পেঁয়াজের। প্রধান জাতের পেঁয়াজ অর্থাৎ হালিকাটা পেঁয়াজ বাজারে পর্যাপ্ত এলেই দাম কমে যেত। এর মধ্যে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসার খবরে এখনই দাম কমতে শুরু করেছে।
গললামারী বাজারে আসা ক্রেতা আবুল হোসেন জানান- মাছ, মাংশ, ফল মুল দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কাচা তরকারি যেমন বেগুন, কপি, সিম, বরবটিসহ সব তরকারির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
মুনসুর নামে একজন হাঁসমুরগি বিক্রেতা জানান, রমজানের শুরুতে সব ধরনের হাস ও মুরগির দাম কজিতে ৬০টাকা থেকে ১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। গরুর মাংস ৭০০টাকা এবং খাসির মাংস এক হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
হাবীবুললাহ খান নামে একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, খুলনায় বাজার নিয়ন্ত্রণে কোনোরকম ব্যবস্থা নেই।
আরও পড়ুন: রমজানের আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে
ব্যাংকিং খাতে প্রাথমিক স্তরে নারী নিয়োগ দ্বিগুণ হলেও পরিচালনায় এখনও পিছিয়ে
২০২৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ব্যাংকিং খাতে নারীদের কর্মসংস্থান বেড়েছে ১ হাজার ৪০৭টি।
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে নারীদের কর্মসংস্থানের হার ১৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ, যেখানে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের মাত্র ১৩ দশমিক ৫১ শতাংশ সদস্য নারী।
লিঙ্গ সমতা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ৬১টি ব্যাংকে নারী কর্মীর সংখ্যা ৩৩ হাজার ৩৪৬ জন, যা ব্যাংকগুলোর মোট কর্মীর ১৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৩ সালে তফসিলি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ৪৩টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে নারী কর্মীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ২২ হাজার ২৪৮ জন, যা মোট কর্মীর ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ।
বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে নারী কর্মকর্তার অনুপাত সবচেয়ে বেশি। যা অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ২৪ দশমিক ১৮ শতাংশ।
২০২৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে বোর্ড সদস্য হিসেবে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল মাত্র ১৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। এর মধ্যে বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে বোর্ডে নারীদের অংশগ্রহণের হার ১৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিকভাবে মুক্তির মাধ্যমে নারীদের স্বাবলম্বী হতে হবে: খাদ্যমন্ত্রী
অন্যদিকে আলোচিত সময়ে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে নারী সদস্য নেই।
২০২৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালে ব্যাংকগুলোর জমা দেওয়া প্রতিবেদন অনুসারে, নারী কর্মীদের অংশগ্রহণের হার চাকরির প্রাথমিক পর্যায়ে ১৭ দশমিক ০৪ শতাংশ এবং মাঝারি পর্যায়ে ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ, উচ্চ পর্যায়ে ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশের তুলনায় বেশি।
প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যাংকিং খাতে নারীর অংশগ্রহণ বেশি।
একই সঙ্গে ৩০ বছরের কম বয়সী নারী কর্মীদের অংশগ্রহণের হার ২০ দশমিক ৯৯ শতাংশ; যা তফসিলি ব্যাংকের তুলনায় এ হার দ্বিগুণেরও বেশি। তফসিলি ব্যাংকে নারী কর্মীর সংখ্যা ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশের বেশি।
২০২৩ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্টে বাংলাদেশের অবস্থান ১২ ধাপ এগিয়েছে।
আরও পড়ুন: নারী দিবসে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সমাবেশ বানচালের অভিযোগ
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বিশ্বের ১৪৬টি দেশের মধ্যে লিঙ্গ বৈষম্য বিবেচনায় ২০২২ সালের ৭১তম স্থান থেকে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের অবস্থান হয়েছে ৫৯তম।
সিডিপির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের সঙ্গে সাধারণত নারীর কর্মসংস্থান বাড়ছে এবং নারীর কর্মসংস্থানের অনুপাত কমার সঙ্গে সেই হিসাবের মিল নেই।
ব্যাংকিং খাতে নারীর কর্মসংস্থানের অনুপাত কেন কমছে তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তার ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক ইউএনবিকে বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লিঙ্গ বৈষম্য কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুসরণ করে ব্যাংকিং খাতে নারীর কর্মসংস্থান বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন উভয় ক্ষেত্রেই নারীদের অগ্রাধিকার দেয়। আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে সম্পৃক্ত নারীদের উৎসাহিত করে ঋণ বিতরণ ও সুদ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকগুলোর কর্মক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও কাজ করে যাচ্ছে। নারী কর্মীদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ ও ডে কেয়ারের সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি সেক্টরে নারীদের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি করতে আগ্রহী: নসরুল হামিদ
কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নয়: জবি ভিসি
কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও নারীর ক্ষমতায়ন বা সামাজিক মর্যাদা বাড়েনি বলে মন্তব্য করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস সামনে রেখে ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন সাদেকা হালিম।
জবি উপাচার্য বলেন, ‘অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতিতে নারীদের কথা বলার জায়গাটা তৈরি করে দিতে হবে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গাগুলোতে নারীদের নিয়ে আসতে হবে।’
জেন্ডার ইস্যুতে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘নারী পরিচয়ের আগে আমার বড় পরিচয় হলো আমি একজন মানুষ। নারী-পুরুষের মধ্যে যে ভেদাভেদ তৈরি, নারীকে হেয় করা, শারীরিক ও মানসিকভাবে পুরুষের থেকে দুর্বল মনে করা হচ্ছে এবং এ কারণে নারীকে অধস্তন করে রাখতে হবে, এটা সম্পূর্ণ অমূলক।’
আরও পড়ুন: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি অধ্যাপক সাদেকা হালিম
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের মূল্যায়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এমন হয়েছে, যে সমাজে নারীকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে দেখা হয়। যদিও বাংলাদেশের সংবিধানের নারী ও পুরুষ সমান। কিন্তু বাস্তবে কোনো দেশই খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে নারীকে পুরুষের সমান ভাবা হয়।’
এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, ‘সমাজের প্রতিটা ক্ষেত্রেই নারীত্ব নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। সেটা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাঙ্গন, ভাগ-বাটোয়ারার ক্ষেত্র, এমনকি ধর্মীয়ভাবেও। পৃথিবীতে এমন কোনো ধর্ম খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে প্রতিটা ক্ষেত্রে নারীকে সমান অধিকার দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমনকি নারীর সন্তান জন্ম দেওয়ার বিষয় নিয়েও রাজনীতি করা হয়। সন্তান জন্মের পর পরই সন্তানের অধিকার কীভাবে হবে সেটা আমরা ধর্মীয়ভাবে নির্ধারণ করি। বাবা ও মায়ের অধিকার কতটুকু, আমাদের সিভিল ল’তে কতটুকু, শরিয়া ল’তে কতটুকু, এসব বিষয় অনেকটাই পুরুষকেন্দ্রিক। পুরুষকে সব সময় প্রাধান্য দেওয়া হয়। পুরুষরাই এ সমাজের নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করে।’
এ উপমহাদেশে নারীদের ভূমিকা সম্পর্কে ড. সাদেকা উল্লেখ করেন, ‘ভারত উপমহাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন যে এখন হয়েছে, তা নয়। অবিভক্ত ভারত উপমহাদেশে নারীরা কিন্তু ইউরোপের নারীদের আগেই ভোটাধিকার পেয়েছিল। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় নারীরা যুদ্ধে অংশ নিয়েছে, রানি হয়েছে, ট্যাক্স সংগ্রহ করেছে। আধুনিক রাষ্ট্রে পুঁজিবাদের বিস্তার ঘটার সঙ্গে সঙ্গে নারীদের কাজের পরিধি বেড়েছে, কিন্তু নারীদের পণ্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। তার কাজ কে কাজ হিসেবে আমরা দেখিনি। নারীরা স্ত্রী, মা বা মেয়ে হিসেবে যে ভূমিকা পালন করে সেটিকেও অবমূল্যায়ন করা হয়।’
আরও পড়ুন: রাইড-শেয়ারিংয়ে বাড়ছে ঢাকার কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো নারী চাকরি করলেও তাকে আমরা প্রশ্ন করি তার স্বামী কী করে। সে যদি স্বামীর থেকে বেশি বেতন পায়, তাহলে পুরুষও হীনমন্যতায় ভুগে।’
সমাজের সাধারণ নারীদের অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন তো নারীদের অনেকেরই হয়েছে। গার্মেন্টস সেক্টর, চিংড়ি মাছের ঘের, কল-কারখানায় নারীরা কাজ করছে। এটি ভারত বা পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু নারীর সামাজিক মর্যাদা কি বেড়েছে? এটা খুবই জটিল একটা বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘চরম দারিদ্র্যের শিকার নারীরা কোনো কিছু ভাবে না। তারা জানে তাদেরই কাজ করতে হবে, ক্ষুধা মেটাতে হবে, তারাই শিশুদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে। সাধারণ নারীরা অনেক পরিশ্রমী, সামাজিক সমালোচনা গ্রাহ্য না করে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় তাদের বাদ দেওয়া হচ্ছে।’
নারীর সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নারীর নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে পারিনি। বাংলাদেশে বা প্রবাসে যে পরিমাণ নারী কাজ করে সেখানেও আমরা দেখি যে নারীরা নিরাপদ না। খুব নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে ধর্ষণের শিকার হয়।’
তবে নারী সমাজের পরিবর্তনের অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের দেশে প্রধানমন্ত্রী নারী, স্পিকার নারী, বিরোধীদলীয় নেত্রী নারী, এবং এবারকার কেবিনেটে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নারী মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হয়ে আসছেন। এটা ইতিবাচক দিক। সংখ্যার দিক থেকে নারীর অংশ গ্রহণ অনেক বেশি, কিন্তু নারীর ক্ষমতায়ন বা সামাজিক মর্যাদার জায়গায় গুণগত মানের দিক থেকে কতটা বদলেছে সেটি বড় বিষয়। যখন নারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে আসবে, নেতৃত্ব দেবে, সমাজ কিন্তু তখনই বদলাবে।’
আরও পড়ুন: দুর্যোগের সময়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদ বোধ করেন না প্রায় ৬৭ শতাংশ নারী
চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার কমেছে আমের মুকুল, লোকসানের আশঙ্কায় কৃষকরা
বৈরী আবহাওয়া ও আম উৎপাদনের জন্য চলতি বছর অনুকূল না হওয়ায় আমের জেলা খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে গাছগুলোতে মুকুল কম হয়েছে। মাঝারি আকারের আমগাছগুলোতে কিছুটা মুকুলের দেখা মিললেও বড় গাছগুলোতে অশানুরূপ নেই। ফলে লোকসানের চিন্তায় পড়েছেন জেলার আম চাষীরা।
কৃষি বিভাগ বলছে ,চলতি বছর একেতো অফ ইয়ার তার উপর শীতের প্রকোপ বেশি থাকায় গত বছরের তুলোনায় এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের মুকুল কম হয়েছে। তবে তাপমাত্রা বাড়ায় কিছু মুকল আসতে পারে।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক নিয়মেই এক বছর আমের ফলন ভালো হলে পরের বছর ফলন কম হয়। যে বছর আমের ফলন বেশি হয় সেই বছরকে বলা হয় অন ইয়ার। আর পরবর্তি বছরকে বলা হয় অফ ইয়ার। আর এই নিয়মে চলতি বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের অফ ইয়ার। অর্থাৎ আম কম হবার বছর। তার উপর এবার আমের মুকুল ফোটার সময় শীতের প্রকোপ বেশি থাকার কারণে আম গাছে মুকল আসা ব্যাহত হয়েছে। ফলে আম গাছগুলোতে আশানুরূপ মুকুল আসেনি। আর এতেই চিন্তায় পড়েছেন আম চাষীরা।
আরও পড়ুন- জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাচ্ছে ‘খিরসাপাত আম’
নিজেদের উদ্বেগ জানিয়ে কৃষকরা বলছেন, মাঘ মাসের প্রথম থেকে ফাল্গুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত আম গাছে মুকুল আসার সময়। কিন্তু সেই সময়ে শীতের প্রকোপ বেশির কারণে আশানুরূপ মুকুল আসেনি। মুকুল কম আসায় দুশ্চিন্তায় আছেন তারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার আরামবাগ এলাকার এক আম চাষী আব্দুর রাকিব বলেন, গতবার আমের অন ইয়ার গেছে। গতবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে ব্যাপক মুকুল হয়েছিল এবং আমও ভালো হয়েছিল। এবছর এমনিতেই অফ ইয়ার তার উপর যে সময়টায় মুকুল বের হবে এ সময়টাতে এত শীতের প্রকোপ ছিল। ফলে মুকুলটা পর্যাপ্ত পরিমাণ বের হয়নি।
এর মধ্যে যারা ঠিকমত পরিচর্যা করেছে তাদের কিছু কিছু যেমন আমার গাছে মুকুল মোটামুটি ৫০ শতাংশের উপর হয়েছে। আর যারা পরিচর্যা করতে একটু গড়িমসি করেছে তাদের মুকুল অতিরিক্ত কম হয়েছে এবং বড় গাছগুলোতে মুকুলের পরিমাণ খুবই কম বলে জানান তিনি।
রাকিব আরও বলেন, মাঝারি আকারের যে গাছগুলোতে মুকুল হালকা হালকা হয়েছে। আর পুরো জেলাতেই মুকুলটা এবার কম। যে পরিমাণ মুকুল বের হয়েছে এতে যদি আম হয় তাতে আমরা তেমন লাভের আশা করতে পারছি না, কারণ খরচ বেশি। এখন মুকুল আসার সময় শেষ হয়ে গেছে এবং গাছে কচি পাতা বের হচ্ছে। তারপরও যে মুকুল এসেছে সামনে আবার ঝড় বৃষ্টি কত রকমের বালা আসতে পারে। এখন সেটা আল্লাহর উপর ভরসা করছি যদি আমটা হয় যাদের মোটামুটি মুকুল এসেছে তারা হয়তো জানে বাঁচবে, আর যাদের অনেক কম এসেছে তারা তো ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
একই এলাকার অপর এক আম চাষী মোহাম্মদ আলম বলেন, এবার মুকুলের খবর খুব খারাপ। কারণ গত বছর অনেক মুকুল হয়েছিল আমও অনেক হয়েছিল। কিন্তু এবার মুকুলের অবস্থা খারাপ, অনেক কম মুকুল এসেছে। যে সময়ে মুকুলটা বের হবে ওই সময়ে শীতটা বেশি ছিল। এ কারণে মুকুলটা খুব কম। কিছু ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে মুকুল এলেও বড় গাছগুলোতে তেমন মুকুল আসেনি। এখন গাছে কচি পাতা বের হতে শুরু করেছে। মুকুল আসার আর আশা নাই।
আরও পড়ুন- জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশের ‘খিরসাপাত আম’
অগ্নি নিরাপত্তা: ঢাকার অভিজাত এলাকার রেস্টুরেন্টগুলো কতটা নিরাপদ?
রাজধানীর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত ধানমন্ডি, গুলশান ও বনানী এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য রেস্টুরেন্ট। যেগুলোর বেশিরভাগই করা হয়েছে বহুতল ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব এলাকার বেশির ভাগ রেস্টুরেন্টে নেই অগ্নি নিরাপত্তা। লিফট ও একটি সিঁড়ি ছাড়া জরুরি বহির্গমনে আর কোনো সিঁড়িও নেই অধিকাংশের।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। বেইলি রোডের ঘটনায় মানুষের মধ্যে এখন একটি আতঙ্ক কাজ করছে।
আরও পড়ুন: রেস্টুরেন্টে খেতে লাগবে ভ্যাকসিন কার্ড: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ধানমন্ডি-গুলশান-বনানীর বিভিন্ন এলাকায়ও যত্রতত্র গড়ে উঠেছে এমন বহু রেস্টুরেন্ট। অগ্নি নিরাপত্তা লাইসেন্স ছাড়া বছরের পর বছর চলছে এসব রেস্টুরেন্ট। আবাসিক ভবনগুলো বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এলাকার বাসিন্দা ও রেস্টুরেন্টগুলোতে খেতে আসা অনেকেই বলছেন, বেইলি রোডের আগুনের ঘটনার মতো অগ্নিকাণ্ডের আতঙ্ক আছে ধানমন্ডি-গুলশান-বনানী এলাকাতেও। আগে থেকে ব্যবস্থা না নিলে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এসব এলাকার প্রায় প্রতিটি অলিগলিতে রয়েছে ক্যাফে ও রেস্টুরেন্ট। কিছু ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে রয়েছে রেস্তোরাঁ। এসব ভবনের প্রায় পুরোটাই কাচে ঘেরা। ফলে, বাইরে থেকে ভেতরে আলো-বাতাস ঢোকার কোনো ব্যবস্থা নেই। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বা আগুন লাগলে কাচ ভাঙা ছাড়া ভেতরে পানি দেওয়ারও কোনো উপায় নেই।
এসব ভবনে ছোট পরিসরে সিঁড়ি রয়েছে। ওই সিঁড়ি দিয়ে জরুরি বহির্গমনের সুযোগ খুব কম। কারণ সিঁড়িগুলোতে হয় বিভিন্ন মালামাল রাখা, নয়তো রেস্টুরেন্টগুলোর ভেতর থেকে সিঁড়িতে যাওয়ার গেট বন্ধ থাকে। সেক্ষেত্রে রেস্টুরেন্টগুলোতে কখনো আগুনের ঘটনা ঘটলে রেস্টুরেন্টে খেতে আসা মানুষ বুঝতেই পারবে না সিঁড়ি কোনদিকে আছে।
গুলশানে বসবাসকারী ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান ইউএনবিকে বলেন, ‘বেইলি রোডের ঘটনার পর গুলশান-বনানী এলাকায় রেস্টুরেন্টেগুলোতে পরিবার নিয়ে যেতে চাইলে আতঙ্ক কাজ করছে। কোন রেস্টুরেন্টে ফায়ার সেফটি আছে বা নেই আমাদের জানা নেই।’
একই ভাবে বনানীতে বসবাসকারী আরেক ব্যবসায়ী দিদারুল হক সানি ইউএনবিকে বলেন, ‘বেইলি রোডের ঘটনার পর আপাতত রেস্টুরেন্টে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। কারণ অগ্নি নিরাপত্তা এখন বড় একটি ইস্যু। গুলশান-বানানী এলাকায় রেস্টুরেন্টে নেই ফায়ার সেফটি।এ বিষয়ে রাজউক দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সঠিকভাবে তদারকি করলে সব রেস্টুরেন্টে ফায়ার সেফটি মানতে বাধ্য হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান ইউএনবিকে বলেন, ‘ধানমন্ডি-গুলশান-বনানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রায় প্রতিটি অলিগলিতে রয়েছে ক্যাফে ও রেস্টুরেন্ট। কিছু কিছু ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে রয়েছে রেস্টুরেন্ট। এসব ভবনের প্রায় পুরোটাই কাচে ঘেরা। ফলে, বাইরে থেকে ভেতরে আলো-বাতাস ঢোকার কোনো ব্যবস্থা নেই। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বা আগুন লাগলে কাচ ভাঙা ছাড়া ভেতরে পানি দেওয়ারও কোনো উপায় নেই।’
আদিল বলেন, বেইলি রোডের ঘটনার পর মানুষের মধ্যে একটি আতঙ্ক কাজ করছে। বেইলি রোডের মতো আর পুনরাবৃত্তি না হয়, সেজন্য রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনি ব্যবস্হা নিতে হবে। না হলে আবার আরেক জায়গায় আগুনের ঘটনা ঘটবে।
তিনি আরও বলেন, বেইলি রোডের মতো ধানমন্ডি, গুলশান ও বনানী এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য রেস্টুরেন্ট। এসব রেস্টুরেন্টে ফায়ার সেফটি আছে কি না রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে রেস্টুরেন্টের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ ৩
ড. আদিল বলেন, ‘বহুতল ও বিশেষ ব্যবহারের ভবনে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফায়ার এক্সটিংগুইশার, ফায়ার এলার্ম এগুলো ছিল কি না তা তদারকি করা প্রয়োজন। ভবনের সেফটি অডিট করানোর উদ্যোগ নিতে হবে।’
‘অনেক ভবন নিয়ম অনুযায়ী ২টি সিঁড়ি রাখলেও ফায়ার বহির্গমনের সিঁড়িটা অনেকে গুদামঘর হিসেবে ব্যবহার করে। এক্ষেত্রে জরুরি বহির্গমনের সিঁড়ি অন্য কোনো কাজে বা উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিরৎসাহিত করতে হবে।’
অনেকেই ভবনের ব্যবহার পরিবর্তন করে অ-আবাসিক ক্যাটাগরিতে ফেলে। এই “অ-আবাসিক” নাম ব্যবহার করে আবাসিক ভবন বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে বলে জানান অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান।
এ বিষয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা ইউএনবিকে বলেছেন, বেইলি রোডের মতো যেন আর ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। সেসব রেস্টুরেন্টে ফায়ার সেফটি নেই সেগুলো আমরা ব্যবস্হা নেব। ফায়ার সেফটি নিশ্চিত করতে কাজ করছি।
চেয়ারম্যান বলেন, যেসব আবাসিক ভবনে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। আবাসিক ভবনের নামে অনুমোদন নিয়ে সেখানে রেস্টুরেন্ট গড়ে তোলা হয়েছে, অথচ তাদের বাণিজ্যিক অনুমোদন নেই। এ বিষয়ে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, রাজউক থেকে নকশা অনুমোদন নেয় একভাবে আর বিল্ডিং করে নকশা বহির্ভূতভাবে। আবাসিক ভবন বাণিজ্যিক ব্যবহার করছে অনুমোদনের বাইরে। এসব বিষয়ে যখনই নজরে আসছে তখনই ব্যবস্হা নিচ্ছি। এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে জানা যায়, রাজধানীতে রাজউকের আওতায় ৫ লাখ ১৭ হাজার ভবন রয়েছে। এর মধ্যে অনুমোদন রয়েছে ২ লাখের। অনুমোদিত ভবনের মধ্যে ৯০ শতাংশ নকশার বিচ্যুতি ঘটিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: এক টাকার রেস্টুরেন্ট!