বাংলাদেশ
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ
কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। নদ-নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তা, ধরলাসহ অন্যান্য নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জানা গেছে, গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় পানিবন্দি থাকার কারণে চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানি ও শৌচাগারের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে অনেক এলাকার বন্যার্তরা। একই সঙ্গে গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যার্তদের সহায়তায় শাবি শিক্ষক সমিতির কার্যক্রম অব্যাহত
রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের নামা জয়কুমর গ্রামের এনছাফুল হক জানান, গো খাদ্যের অনেক দাম। তাই বৃষ্টির কারণে নষ্ট হওয়া খড় বাধ্য হয়ে গরুকে খাওয়ানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো গোখাদ্য বিতরণ করা হয়নি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ৩২৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ১৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত থাকায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এদিকে দুর্গম এলাকার অনেকেই ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেছে। চাহিদার তুলনায় এখনও প্রয়োজনীয় ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ায় সবার কাছে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ।
সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন জানান, তার ইউনিয়নে অন্তত পাঁচ হাজার দরিদ্র পরিবার পানিবন্দী হলেও এই পর্যন্ত ৯ মেট্রিক টন চাল পাওয়া গেছে। যা দিয়ে ৯০০ পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল সহায়তা দেয়া যাবে।
আরও পড়ুন: বন্যার্তদের সহায়তায় শাবি শিক্ষক সমিতির কার্যক্রম অব্যাহত
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বন্যার্তদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে, ত্রাণের কোনো সমস্যা নেই। পর্যায়ক্রমে সবাই ত্রাণ পাবেন। জেলার বন্যার্তদের জন্য আরও ২০০ মেট্রিক টন চাল ও ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
তিনি জানান, এই নিয়ে জেলায় ৫৩৮ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, এক হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য বাবদ ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ও পশু খাদ্য বাবদ ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা উপজেলা পর্যায়ে বরাদ্দ করা হয়েছে। যা বিতরণ করা হচ্ছে।
নওগাঁয় ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৫
নওগাঁ সদরের বাবলাতলী এলাকায় ট্রাক ও যাত্রীবাহী সিএনজি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে কমপক্ষে পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নওঁগা-রাজশাহী মহাসড়কের এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-জান্নাতুল ফেরদৌস (৩৮), মকবুল হোসেন (৬০), দেলোয়ার হোসেন (৪৭), সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক সেলিম উদ্দিন (৪৫) ও ট্রাকের হেলপার লেলিন হোসেন (৩৫)।
এছাড়া নুর জাহান (৩২) নামে আহত একজনকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসা জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: টেকনাফে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ রোহিঙ্গা নিহত
নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল জানান, শুক্রবার সকালে নওগাঁ থেকে ছেড়ে আসা মালবাহী ট্রাক রাজশাহীর দিকে যাচ্ছিলো এবং নিয়ামতপুর থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী সিএনজিটি নওগাঁর দিকে যাচ্ছিল। এসময় নওগাঁ রাজশাহী মহাসড়কের বাবলাতলী নামক স্থানে পৌঁছালে একটি ট্রাক্টরকে সাইড দিতে গিয়ে ট্রাক ও সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজি পার্শ্ববর্তী পুকুরে পড়ে গেলে ঘটনাস্থলে পাঁচ জন নিহত হন।
লাশ উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে বলেও জানান ওসি।
নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মির্জা ইমাম উদ্দিন জানান, নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হবে। এছাড়া তাদের পারিবারিক অবস্থা বিবেচনা করে জেলা প্রশাসকের তহবিল থেকে প্রয়োজনে আরও অনুদান দেয়া হবে।
বন্যার্তদের সহায়তায় শাবি শিক্ষক সমিতির কার্যক্রম অব্যাহত
সিলেট ও সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ, সংগঠন ও ব্যক্তিরা। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষকদের সংগঠন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিও এই কার্যক্রমে পিছিয়ে নেই।
সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, সিলেট অঞ্চলের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১২০০টি পরিবারের মাঝে বিভিন্ন শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, দি য়াশলাই, মোমবাতি ইত্যাদি সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়াও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শাবিপ্রবির শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বাসায় বিশুদ্ধ পানিসহ অন্যান্য দ্রব্যাদি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটির পর শাবিপ্রবিতে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত
শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. জায়েদা শারমিন বলেন, সিলেট অঞ্চলের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যায় আক্রান্ত সাধারণ মানুষের পাশে থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে শাবি শিক্ষক সমিতি। এছাড়া শিক্ষকদের একদিনের বেতন এই বন্যার্তের মাঝে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বেতন ছাড়াও যে কেউ যেকোনো পরিমাণ অর্থ সাহায্য দিতে পারবে। সামনের যেকোনো সংকটময় মুহূর্তে দেশবাসীর সহায়তায় এই ধরনের কার্যক্রম শাবি শিক্ষক সমিতি কর্তৃক অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: আকস্মিক বিপর্যয় সামলে উঠেছে শাবিপ্রবি
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের ব্যাংক একাউন্টসহ বিকাশ ও নগদ নম্বর সাহায্যের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। শাবি শিক্ষক সমিতির মাধ্যমে দেশ ও দেশের বাইরে থেকেও আর্থিক সাহায্যের মাধ্যমে বন্যার্তদের পাশে থাকার সুযোগ থাকছে।
বন্যা পরবর্তী সংস্কার কাজে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর তাগিদ
বন্যা পরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংস্কারসহ এই খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিশিষ্টজনরা।
তারা বলেছেন, বন্যার সময়ে এবং পরবর্তী সময়ে খাদ্য, নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে যেভাবে আলোচনা বা উদ্যোগ নেয়া হয় দুঃখজনক হলেও সত্য শিক্ষা খাতের ক্ষতি বা বন্যা পরবর্তী করণীয় বিষয়ে সেভাবে কোনো আলোচনা বা উদ্যোগ চোখে পড়ে না। অথচ বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থী এবং পুরো শিক্ষা সেক্টর। তাই বন্যা পরবর্তী সময়ে শিক্ষা খাতের সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকারকে এখনি কার্যকর উদ্যোগ এবং সেই লক্ষ্যে শিক্ষা বাজেটে অতিরিক্ত বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বন্যা পরবর্তী শিক্ষাখাতের দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে করনীয় ও বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়ে এসব সুপারিশ উঠে আসে।
‘আমাদের শিক্ষা বাজেটের গতি প্রকৃতি ও আগামীর প্রত্যাশা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গণসাক্ষরতা অভিযান।
আরও পড়ুন: বিয়ানীবাজারে ১২৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি, খোলা হয়েছে ২৮ আশ্রয়কেন্দ্র
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া দরকার শিক্ষা সেক্টরের কাঠামোগত পরিবর্তনে। বর্তমান সরকার সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে। আমরাও চাই শিক্ষা খাতে নতুন কিছু উপহার দিতে।
তিনি বলেন, একটি সময় ছিল যখন শুধু শিক্ষার্থীদের মোমেরি বা মুখস্থ বিদ্যা বাড়ানোর ওপরেই জোর দেয়া হতো। আমরা এর পরিবর্তন করে নতুন শিক্ষা নীতিতে পঠন ও শিখনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে দক্ষ ও মেধাবী হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে।
রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়ানোর যে কথা বলা হচ্ছে এটা মূলত কোনো ব্যয় নয় বরং এটাই হচ্ছে বড় একটি বিনিয়োগ। এই বিনিয়োগ বাড়ানো সম্ভব হলেই শিক্ষা সেক্টরে বড় একটি পরিবর্তন আসবে।
তিনি বলেন, শিক্ষা খাতের বাজেটে কিংবা সরকারের ব্যয় না বাড়ানো হলেও অভিভাবক বা পরিবারের পক্ষ থেকে কিন্তু শিক্ষাখাতে ব্যয় ঠিকই বাড়ছে। অনেক পরিবার আছে যারা সন্তানের ব্যয় মেটাতে না পারার কারণেই পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কোচিং নির্ভরতা কমিয়ে ক্লাসরুমে ঠিকমতো যত্ন নিয়ে পড়ানো হলে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক অতিরিক্ত কিংবা ফরমায়েশি কিছু বইয়ের বোঝা বাড়িয়েও শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারকে অতিরিক্ত খরচের চাপে ফেলে দেয়া হচ্ছে।
রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, করোনার ধকল কাটতে না কাটতেই এখন আবার বন্যার কবলে পড়ে অনেক শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনই বিগ্নিত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তিনি করোনরা দুই বছরকে শর্ত হিসেবে নিয়ে এই দুই বছরে যেসব মেয়ে শিক্ষার্থীদের বিয়ে হয়েছে তাদেরকে পুনরায় শিক্ষা উপবৃত্তির আওতায় আনারও সুপারিশ করেন। একই সঙ্গে বন্যা পরবর্তী সময়ে দ্রুততার সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডাটা সংগ্রহ করে সরকারিভাবেই সমস্যা সমাধান বা সংস্কার করতে উদ্যোগ নিতে হবে। যেসব শিক্ষার্থীর পাঠ্যবই পানিতে নষ্ট হয়েছে তাদেরকে পুনরায় বই সরবরাহ করতে হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম বলেন, শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়লেই শুধু মানের উন্নয়ন হবে বিষয়ই এমন নয়। তবে শিক্ষার গুনগত মান রক্ষায় কম বরাদ্দ নিয়েও আবার কাজ করা যায় না। শিক্ষা খাতে যেসব প্রকল্পগুলো চালু ছিল সেগুলো পুনরায় চালু করতে বা রাখতেও সরকার বদ্ধপরিকর। তিনি প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্যে মিড ডে মিল প্রকল্পটি চালু রাখার বিষয়ে দাতা সংস্থার সঙ্গে সরকারও কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: চবিতে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার দাবিতে শিক্ষার্থীদের রেল অবরোধ
ইউনিসেফ বাংলাদেশের শিক্ষা বিভাগের প্রধান দীপা সরকার বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষাখাতের বিভিন্ন প্রকল্প সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি শিক্ষার উন্নয়নে কোয়ালিটি শিক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়েও সরকারের অংশীজনদের সমন্বয়ে কাজ করার সুপারিশ করেন।
অনুষ্ঠানে গণসাক্ষরতা অভিযানের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড.মোস্তাফিজুর রহমান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে শিক্ষক প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষা সেক্টরের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
করোনায় চাকরি হারিয়েছেন পাঁচ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি প্রবাসী: মন্ত্রী
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেছেন, করোনা মহামারি প্রাদুর্ভাবের পর থেকে পাঁচ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিক তাদের চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের ফরিদপুর জেলার সংসদ সদস্য মঞ্জুর হোসেনের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কূটনৈতিক উদ্যোগের কারণে ২০২২ সালের মে পর্যন্ত পাঁচ লাখ ৪০ হাজার অভিবাসী শ্রমিক বিদেশে কর্মসংস্থান পেয়েছেন।
চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের ৮৪টি দেশে মোট ১০ লাখ ৫০ হাজার নারী অভিবাসী শ্রমিক কাজ করছেন।
মন্ত্রী বিদেশে নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মিশনগুলোর বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
ভোলার আ.লীগ সাংসদ আলী আজমের এক প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, দেশে খাদ্যশস্যের কোনো অভাব নেই।
আওয়ামী লীগের জামালপুর জেলার সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সংসদে বলেন, বাজারে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর চেষ্টার জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। সম্প্রতি সয়াবিন তেল মজুদ করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে বাজার মনিটরিং টিম এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাজারে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য দায়ীদের জরিমানা করেছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন পরিচালিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে অসৎ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আ’লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন কেউ থামাতে পারবে না: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
অর্থ পাচারকারীদের দায়মুক্তির সমালোচনা সংসদ সদস্যদের
কোরবানি উদযাপনে সরকারের পক্ষ থেকে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি আছে: মন্ত্রী
কোরবানি উদযাপনে সরকারের পক্ষ থেকে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে তাঁর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে কোরবানির পশুর চাহিদা নিরূপণ, সরবরাহ ও অবাধ পরিবহন নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় মন্ত্রী এ কথা জানান।
এসময় তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের মত এবারও কোরবানির পশুর চাহিদা নিরূপন করা হয়েছে। কোরবানির চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত পশু প্রস্তুত আছে। এবার কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা এক কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৯টি। ফলে কোরবানির জন্য কোনরকম সংশয়, সংকট বা আশঙ্কার কারণ নেই। কোরবানির হাটে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হবে। রোগগ্রস্ত পশু হাটে বিক্রি করতে দেয়া হবে না। ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ হয়রানির শিকার হবেন না, ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত সদস্য নিয়োগ করা হবে। আমরা সুন্দরভাবে আসন্ন ঈদুল আযহা উদযাপন করতে চাই।
মন্ত্রী আরও বলেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য ঈদুল আযহা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি যাতে স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে এবং পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে উদযাপন করা যায় সে লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও সরকারের অন্যান্য দপ্তর-সংস্থা কাজ করছে। কোরবানির পশুর জন্য অতীতে পরমুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আমাদের প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা, খামারি ও উদ্যোক্তারা সম্মিলিতভাবে কাজ করায় প্রাণিসম্পদ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এ খাতে আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন মাংসে আমাদের স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও কোন খামারি নিজ বাড়ি থেকে পশু বিক্রি করলে তাকে হাসিল দিতে হবে না। কোন খামারি তার পশু দূরবর্তী হাটে নিতে চাইলে, রাস্তাঘাটে জোর করে নামাতে বাধ্য করা যাবে না। এক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সরকারের ইউনিট তথা পৌরসভা, উপজেলা বা ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি করপোরেশন এ বিষয়টি নিশ্চিত করবে। হাটে আনার পথে কেউ প্রাণী বিক্রি করলে তার কাছ থেকে ইজারা গ্রাহক জোর করে চাঁদা বা হাসিল গ্রহণ করতে পারবে না। এটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। নগদ টাকা বহন না করে বিকল্প উপায়ে স্মার্ট পদ্ধতিতে খামারিরা যাতে আর্থিক লেনদেন করতে পারে সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, গতবছর অনলাইন প্লাটফর্মে প্রচুর গবাদিপশু বিক্রি হয়েছিল। এ বছরও এই পদ্ধতি অব্যাহত থাকবে, যা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য সুখকর অবস্থা তৈরি করবে। অনলাইনে ক্রয়কৃত গরু পছন্দ না হলে টাকা ফেরত নেয়ার ব্যবস্থাও এবছর সংযোজন করা হচ্ছে। যাতে ক্রেতারা কোনভাবেই প্রতারিত না হয়।
তিনি আরও বলেন, লাভের আশায় কোরবানির অনুপযুক্ত পশু বা রোগগ্রস্ত পশু যাতে কেউ বিক্রির চেষ্টা না করে। এ বিষয়টি সকলকে তাগিদ দিতে হবে। প্রতিটি নির্ধারিত কোরবানির পশুর হাটে ভেটেরিনারি সার্জন থাকবে। গবাদিপশু কোরবানির উপযোগী কিনা বা তাদের শরীরে দূষিত পদার্থ প্রবেশ করানো হয়েছে কিনা তারা সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে।
মন্ত্রী আরও যোগ করেন, মহাসড়কে বা যেখানে হাট বসালে যান চলাচল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন কিছু যাতে না হয় এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হবে। সড়কে বা সেতুতে কোরবানির পশু পরিবাহী গাড়িকে প্রাধান্য দেয়া হবে, যাতে রাস্তায় পশু আটকে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না হয়। এক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হবে। অধিদপ্তরের হটলাইন ১৬৩৫৮ চালু থাকবে। পশু পরিবহনে খামারিদের সমস্যা সমাধানে এ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ কাজ করবে। পশু কোরবানির ক্ষেত্রে কোন রকম সমস্যা যাতে না হয়, সেজন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সিলেট-সুনামগঞ্জ অঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে গবাদিপশু কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে গবাদিপশুর খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে, চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করার বিষয়টিও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। কোরবানির সময় যাতে ওই অঞ্চলে দেশের অন্য অঞ্চল থেকে পশু যেতে পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, মো. তৌফিকুল আরিফ ও এস এম ফেরদৌস আলম, বিভাগীয় কমিশনাররা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের উপপরিচালক মো. শেফাউল করিম, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি প্রমুখ সভায় অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: চিংড়ি উৎপাদন ও রপ্তানি সমস্যা সমাধানে সরকার বদ্ধপরিকর: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
আ’লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন কেউ থামাতে পারবে না: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রণীত পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশ চালালে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘দেশ যদি এই পরিকল্পনা নিয়ে চলে তাহলে দেশের অগ্রযাত্রাকে কেউ থামাতে পারবে না। এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’
আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় সংসদে এক অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
সংসদ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আগামীতে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ গ্রহণ করেছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে সমৃদ্ধ ও উন্নত করার পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের সেবা করে ক্ষমতায় থাকলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ অবশ্যই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ মানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার, উন্নত ও সোনার বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের জন্ম একটি বিশেষ কারণে।
তিনি উল্লেখ করেন, পাকিস্তান সৃষ্টির মাত্র সাত মাস পর পাকিস্তানি শাসকরা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) এবং এর জনগণের প্রতি বৈরী মনোভাব দেখায়।
তিনি বলেন, তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকরা বাঙালিদের মাতৃভাষায় কথা বলতে বাধা দেয়, বাঙালিদের আর্থ-সামাজিকভাবে শোষণ ও নির্যাতন করে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলনেতৃত্ব দেন, ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন এবং আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়।’
পড়ুন: তারেক রহমানের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জনগণের সংগঠন। আওয়ামী লীগ সবসময় দেশের নির্যাতিত ও অবহেলিত মানুষের জন্য আন্দোলন করেছে। এর জন্য আ.লীগের অনেক নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন।’
সরকারপ্রধান বলেন, যে কোনো দুর্যোগে আ.লীগের নেতাকর্মীরা সবসময় দেশের মানুষের পাশে আছে।
তিনি বলেন, ‘জনগণের সেবা করা আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। এটা আমাদের আদর্শ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর সামরিক শাসকদের ছিনিয়ে নেয়ার পর আওয়ামী লীগ দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের নিজস্ব সম্পদে পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এভাবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং কখনই অন্যের উপর নির্ভরশীল হবে না এবং কখনও কারও কাছে ভিক্ষা চাইবে না। বাংলাদেশ তার নিজস্ব মর্যাদায় বিশ্ব অঙ্গনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।’
আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ।
পড়ুন: পদ্মা সেতু আমাদের জাতীয় গর্ব: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
হাইকোর্টে জামিন পাননি হলমার্কের তুষার
হলমার্ক গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক কারাবন্দি তুষার আহমেদকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। তবে সোনালী ব্যাংকের ১৩৫ কোটি টাকা আত্মসাতের এ মামলাটি বিচারিক আদালতকে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।
পরে সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী জানান, আসামি তুষারকে জামিন না দিয়ে মামলাটি ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, এ সময়ের মধ্যে মামলাটির বিচারকাজ শেষ না হয়, আর তখন যদি তুষার আহমেদ জামিন চান, তবে বিচারিক আদালত যেন তার জামিন আবেদনটি বিবেচনা করেন।
২০১২ সালের ৪ অক্টোবর সোনালী ব্যাংকের হোটেল শেরাটন শাখা থেকে ১৩৫ কোটি ৪৪ লাখ ৯ হাজার ৪৮৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদক রমনা থানায় এ মামলা করেন। মামলায় হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. তানভীর মাহমুদ, চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম ও মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় তুষারকে ২০১২ সালের ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর ১৭ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরপর ২০১৬ সলের ২৭ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারিক আদালত। ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-১ এ বিচারাধীন মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে আছে। ওই আদালতে জামিন না পেয়ে গত ডিসেম্বরে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন তুষার আহমেদ।
আরও পড়ুন: হলমার্কের জেসমিনের জামিন বাতিল, আত্মসমর্পণের নির্দেশ
২৪ ঘণ্টায় বন্যায় ২৪ মৃত্যু
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (ডিজিএইচএস) এর তথ্য অনুসারে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যায় মোট ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
১৭ মে থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮।
অধিদপ্তরের মতে, ২৪ ঘণ্টায় শুধু সিলেট বিভাগেই ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে বন্যার পানিতে ডুবে ২০ জন, বজ্রপাতে দুজন এবং ডায়রিয়ায় একজন মারা গেছেন।
মোট ১৮৫ বন্যাকবলিত উপজেলার মধ্যে সিলেট বিভাগে ২৯টি, রংপুর বিভাগে ১৬, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৯ এবং চট্টগ্রাম বিভাগে একটি উপজেলা রয়েছে।
সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও কুড়িগ্রাম সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা যেখানে যথাক্রমে ১৩, ১১, ১০ ও ৯টি উপজেলা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যার কারণে মোট ৮৭২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে যেখানে দুই হাজার ছয়টি মেডিকেল টিম বন্যাকবলিত মানুষদের বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য কাজ করছে।
আরও পড়ুন: কুশিয়ারার আগ্রাসী রূপ: পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, নিহত ১
বন্যার্ত মানুষকে অভুক্ত রেখে উৎসব করছে সরকার: অভিযোগ ফখরুলের
১১ মাসে রেকর্ড ৮.৪১ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, চলতি অর্থবছর (২০২১-২২) এ-১১ মাসে ৮ দশমিক ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ।
বর্তমান টাকার বিনিময় হারে এর পরিমাণ ৭৮ হাজার ২২১ কোটি টাকা, যা এক অর্থবছরে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ ঋণ। আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ঋণের পরিমাণ ৪৭ শতাংশ বেশি।
ইআরডি কর্মকর্তাদের ধারণা, ২০২২ সালের ৩০ জুন অর্থবছরের শেষ নাগাদ বৈদেশিক ঋণ ৯ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে।
শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে।
তবে অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা দুই দেশের মধ্যে তুলনা নাকচ করছেন। তারা বলছেন, বৈদেশিক ঋণ এখনো বাংলাদেশের জিডিপির ১৩ শতাংশের নিচে। শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে তা ৫০ শতাংশের কাছাকাছি।
অর্থনীতিবিদ ও গবেষক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘দুই বছরের মহামারির প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক এবং এডিবিসহ বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার কাছ থেকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ঋণ পাওয়ায় এ উল্লম্ফন হয়েছে।
পড়ুন: ২৯ জুন বাজারে নতুন নোট ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক
ইআরডি তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিগত অর্থবছর ২০২০-২০২১-এ বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ৭ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার ঋণসহায়তা পেয়েছিল বাংলাদেশ।
এর আগে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৭ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন বৈদেশিক ঋণ পেয়েছিল যা ২১ অর্থবছর পর্যন্ত দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ছিল।
২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে বাংলাদেশে বৈদেশিক ঋণ বাড়ছে। একই বছরে এটি এক লাফে ৬ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নিত হয়। তারপর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলারে।
পড়ুন: ব্যবসায়িক গ্রুপ থেকে সয়াবিন তেল, ডাল ও চিনি কিনবে টিসিবি