বিশ্ব
গাজায় বিপুল পরিমাণ ত্রাণ দেওয়ার সময় এসেছে: জাতিসংঘ মহাসচিব
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শনিবার অপেক্ষমাণ ট্রাকের দীর্ঘ লাইনের কাছে দাঁড়িয়ে বলেছেন, গাজায় বিপুল পরিমাণ জীবন রক্ষাকারী ত্রাণ দেওয়ার সময় এসেছে। গাজার অভ্যন্তরে অনাহারকে 'নৈতিক অবমাননা' বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
তিনি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিরও আহ্বান জানান।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহ’র অদূরে সীমান্তের মিশর অংশে বক্তব্য রাখেন গুতেরেস। যেখানে ইসরায়েল সম্ভাব্য বিপর্যয়ের ব্যাপক সতর্কতা সত্ত্বেও স্থল হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে। গাজার অর্ধেকের বেশি মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছে।
মহাসচিব বলেন, ‘আবারও হামলা পরিস্থিতিকে আরও খারাপের দিকে নিয়ে যাবে। এতে পরিস্থিতি যা দাঁড়াবে তাতে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের, জিম্মিদের এবং ওই অঞ্চলের সব মানুষের জন্য আরও খারাপ হবে।’
আরও পড়ুন: গাজায় রমজানে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভোট
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ 'অবিলম্বে ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির' সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় আনা প্রস্তাবের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ার একদিন পর তিনি এসব কথা বললেন।
গুতেরেস বারবার গাজায় ত্রাণ পেতে অসুবিধার কথা উল্লেখ করেছেন। আর আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো মূলত ইসরায়েলকে দোষারোপ করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে এই ক্রসিং থেকে আমরা হৃদয়বিদারক ও হৃদয়হীনতা দেখতে পাচ্ছি… গেটের একপাশে অবরুদ্ধ ত্রাণ নিয়ে ট্রাকের লম্বা সারি, অন্যদিকে অনাহারের দীর্ঘ ছায়া।’
গভর্নর মোহাম্মদ আবদেল-ফাদেল শৌশা এক বিবৃতিতে বলেছেন, মিশরের উত্তর সিনাই প্রদেশে প্রায় ৭ হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজা-ইউক্রেন বিষয়ে 'দ্বৈত নীতি' পরিহার করতে ইইউর প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান
গাজায় দুর্ভিক্ষ ‘আসন্ন’, উত্তরাঞ্চলের প্রধান হাসপাতালে আবারও ইসরায়েলি হামলা
মস্কোর কনসার্ট হলে হামলায় নিহত বেড়ে ১৩৩
রাশিয়ার কনসার্ট হলে বন্দুকধারীর হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৩ জনে। রুশ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শনিবার জানিয়েছেন এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১১ জনকে আটক করা হয়েছে।
জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন একে 'রক্তাক্ত ও বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলা' হিসেবে অভিহিত করে বলেন, সরাসরি জড়িত চারজনকেই হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, তারা সীমান্ত অতিক্রম করে ইউক্রেনে ঢোকার চেষ্টা করছিল এবং পালানোর জন্য একটি ‘পথও’ তৈরির চেষ্টা করছিল।
এদিকে ইউক্রেন এই হামলায় জড়িত থাকার কথা দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে।
অন্যদিকে ইসলামিক স্টেট গ্রুপ অনুমোদিত সামাজিক মিডিয়া চ্যানেলগুলোতে বিবৃতি পোস্ট করে তারা হামলার দায় স্বীকার করেছে।
আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেটের শাখা সংগঠন আমাক নিউজ এজেন্সি বিবৃতিতে জানায়, তারা ক্রাসনোগোরস্কে 'খ্রিস্টানদের' একটি বড় সমাবেশে হামলা চালিয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে এই দাবির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: প্রিন্সেস ক্যাথরিন ক্যান্সার থেকে সুস্থ হয়ে উঠবেন, প্রিন্স হ্যারি-মেগানের আশা
তবে যুক্তরাষ্ট্রের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, আইএস এই হামলার জন্য দায়ী বলে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিশ্চিত করেছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, আইএসের শাখা মস্কোতে হামলার পরিকল্পনা করছে বলে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তথ্য সংগ্রহ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এ মাসের শুরুর দিকে রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোপনে তা জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই মার্কিন কর্মকর্তা এপিকে জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তাকে জানানো হয়েছিল তবে গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
এ হামলার পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আক্রান্তদের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানিয়ে বার্তা পাঠানো হচ্ছে।
পুতিন শনিবার বলেছেন, দেশজুড়ে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরোপ করা হয়েছে এবং ২৪ মার্চ দেশজুড়ে শোক পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের শেয়ার করা ছবিতে দেখা গেছে, মস্কোর পশ্চিম প্রান্তে ক্রোকাস সিটি হলের ধ্বংসাবশেষের বাইরে জরুরি সেবার দিতে বেশকিছু সংখ্যক যানবাহন জড়ো হয়েছে। ক্রোকাস সিটি হলে ছয় হাজারেরও বেশি লোক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি শপিং মল ও কনসার্ট হল ছিল।
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় কনসার্ট হলে বন্দুক হামলায় নিহত ৬০ ও আহত ১৪৫, আইএসের দায় স্বীকার
গত কয়েক বছরের মধ্যে রাশিয়ায় এই হামলা সবচেয়ে প্রাণঘাতী এবং ইউক্রেনে দেশটির আগ্রাসন তৃতীয় বছরে পদার্পণের মধ্যে এ হামলা চালানো হলো।
অনলাইনে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, বন্দুকধারীরা ঘটনাস্থলে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে বেসামরিকদের গুলি করছে। শুক্রবার থিয়েটারের ছাদে রাশিয়ান রক ব্যান্ড পিকনিকের পারফরম্যান্স ছিল। এজন্য সেখানে সংগীতপ্রেমীরা জড়ো হন। ওই কনসার্ট চলাকালে সেখানে বন্দুধারীরা হামলা চালালে আগুন ধরে যায়। শনিবার সকালের দিকে দমকলকর্মীরা আগুন নেভানোর সময় ছাদটি ধসে ধসে পড়ে।
আটকদের মধ্যে চারজন হামলায় সরাসরি জড়িত বলে জানিয়েছে তাস।
শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেএ হামলাকে 'জঘন্য ও কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলা' আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা জানিয়েছে। একই সঙ্গে অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনার ওপর জোর দিয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও এ সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
মস্কোতেই শনিবার সকালে ভুক্তভোগীদের রক্ত ও প্লাজমা দানের জন্য শত শত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন বলে জানিয়েছে রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
পুতিন সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সতর্কবার্তাকে রুশদের ভয় দেখানোর চেষ্টা বলে প্রকাশ্যে নিন্দা জানিয়েছিলেন। এ সপ্তাহের শুরুতে তিনি বলেন, 'এগুলো প্রকাশ্য ব্ল্যাকমেইল এবং আমাদের সমাজকে ভয় দেখানো ও অস্থিতিশীল করার চেষ্টা।’
এর আগে ২০১৫ সালের অক্টোবরে সিনাইয়ে রুশ যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত করে ইসলামিক স্টেট। এতে ২২৪ আরোহীর সবাই নিহত হন। তাদের অধিকাংশই মিশর থেকে ছুটি কাটাতে আসা রুশ নাগরিক ছিলেন। প্রধানত সিরিয়া ও ইরাকের পাশাপাশি আফগানিস্তান ও আফ্রিকায় তাদের কার্যক্রম চালায় এই গোষ্ঠীটি। বিগত বছরগুলোতে রাশিয়ার গোলযোগপূর্ণ ককেশাস ও অন্যান্য অঞ্চলে বেশ কয়েকটি হামলার দায়ও স্বীকার করেছে তারা।
আরও পড়ুন: মস্কোর কনসার্ট হলে হামলায় নিহত বেড়ে ৯৩, দায় স্বীকার আইএসের
প্রিন্সেস ক্যাথরিনের সাহসিকতায় গর্বিত রাজা চার্লস
প্রিন্সেস অব ওয়েলস ক্যাথরিনের সাহসিকতার জন্য গর্ববোধ করেছেন রাজা চার্লস। ‘ক্যান্সারে আক্রান্ত’ হয়েছেন জানিয়ে একটি বিবৃতি দেন ক্যাথরিন। এরপর প্রিন্সেস অব ওয়েলস সম্পর্কে রাজা চার্লস এই অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
রাজা চার্লস বলেন, 'ক্যাথরিনের মতো কথা বলার সাহসের জন্য তিনি গর্বিত।’
বাকিংহাম প্যালেসের বরাতে সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বর্ধিত প্রস্টেটের চিকিৎসার পর ক্যান্সারে আক্রান্ত চার্লসের সঙ্গে এখনও তার ‘প্রিয় পুত্রবধূর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।’
আরও পড়ুন: ক্যান্সারে আক্রান্ত রাজা চার্লস: বাকিংহাম প্যালেস
রাজপ্রাসাদের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, 'এই কঠিন সময়ে পুরো পরিবারের প্রতি ভালোবাসা ও সমর্থন অব্যাহত রাখবেন দুই রাজা ও রানি।’
১৬ জানুয়ারি তার পেটে সফল অস্ত্রোপচারের পর প্রিন্সেসের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ত্রোপচারের পর তিনি ১৩ দিন লন্ডনের একটি হাসপাতালে ছিলেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সুস্থ হয়ে ওঠার সময় লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান।
গত সপ্তাহে স্বামী প্রিন্স উইলিয়ামের সঙ্গে কেট একটি খামারের দোকানে গেলে জানুয়ারির পর প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে দেখা যায় তাকে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী, ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্ব চান রাজা চার্লস
প্রিন্সেস ক্যাথরিন ক্যান্সার থেকে সুস্থ হয়ে উঠবেন, প্রিন্স হ্যারি-মেগানের আশা
প্রিন্সেস অব ওয়েলস ক্যাথরিন তার ক্যান্সার শনাক্তের ঘোষণা দেওয়ার পর ‘সুস্থতা ও রোগমুক্তি’ কামনা করেছেন ডিউক প্রিন্স হ্যারি ও ডাচেস অব সাসেক্স মেগান।
তাদের বিবৃতির বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিস জানায়, ক্যাথরিন ও তার পরিবার 'ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করে শান্তিপূর্ণভাবে' সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রিন্স হ্যারি ও মেগান।
কয়েক মাস ধরে ভীষণ কঠিন সময় পার করার পর শুক্রবার (২২ মার্চ) ক্যাথরিন জানান, তিনি ‘ভালো’ আছেন এবং ‘প্রতিদিন তার অবস্থা আরও ভালো হচ্ছে’।
তবে ক্যান্সারের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। কেনসিংটন প্যালেসের খবরে বলা হয়েছে, প্রিন্সেস পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে নিশ্চিত।
জানুয়ারিতে ক্যাথরিনের পেটে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। যদিও সেসময় ক্যান্সারের উপস্থিতি জানা যায়নি।
পরীক্ষার পরে ক্যান্সারের উপস্থিতির কথা জানানো হয়েছিল।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যের পদ থেকে সরে দাঁড়ান হ্যারি ও মেগান।
ছেলে আর্চিকে বড় করার জন্য আরও জায়গার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তারা জুনে ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে যান। পরের বছর দ্বিতীয় সন্তান লিলিবেটের জন্ম হয়।
রাজা চার্লসও সম্প্রতি ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং হ্যারি চিকিৎসা শুরু করার ঠিক একদিন পরে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে তার বাবার সঙ্গে দেখা করতে লন্ডনে গিয়েছিলেন। তবে সে সময় তিনি তার বড় ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করেননি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রাজকীয় দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে ভাইয়ের সঙ্গে হ্যারির সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে।
বড় ভাই উইলিয়ামের সঙ্গে নিজের মনোমালিন্যের কথা ‘স্পেয়ার' বইয়ে লিখেছেন হ্যারি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই ভাইকে খুব কমই একসঙ্গে দেখা গেছে।
মস্কোর কনসার্ট হলে হামলায় নিহত বেড়ে ৯৩, দায় স্বীকার আইএসের
রাশিয়ার কনসার্ট হলে বন্দুকধারীর হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩ জনে। রুশ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম তাস এ তথ্য জানিয়েছে।
এ ছাড়া এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এসব তথ্য জানান রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের প্রধান।
আরও পড়ুন: মার্কিন পররাষ্ট্র নীতি ও রাষ্ট্রদূত হাসের বৈঠক সম্পর্কে মস্কোর 'ইচ্ছাকৃত ভুল ব্যাখ্যা' সম্পর্কে অবগত যুক্তরাষ্ট্র: ওয়াশিংটন
শনিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের শেয়ার করা ছবিতে দেখা গেছে, মস্কোর পশ্চিম প্রান্তে ক্রোকাস সিটি হলের ধ্বংসাবশেষের বাইরে জরুরি সেবার দিতে বেশকিছু সংখ্যক যানবাহন জড়ো হয়েছে। ক্রোকাস সিটি হলে ছয় হাজারেরও বেশি লোক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি শপিং মল ও কনসার্ট হল ছিল।
গত কয়েক বছরের মধ্যে রাশিয়ায় এই হামলা সবচেয়ে প্রাণঘাতী এবং ইউক্রেনে দেশটির আগ্রাসন তৃতীয় বছরে পদার্পণের মধ্যে এ হামলা চালানো হলো।
অনলাইনে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, বন্দুকধারীরা ঘটনাস্থলে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে বেসামরিকদের গুলি করছে। শুক্রবার থিয়েটারের ছাদে রাশিয়ান রক ব্যান্ড পিকনিকের পারফরম্যান্স ছিল। এজন্য সেখানে সংগীতপ্রেমীরা জড়ো হন। ওই কনসার্ট চলাকালে সেখানে বন্দুধারীরা হামলা চালালে আগুন ধরে যায়। শনিবার সকালের দিকে দমকলকর্মীরা আগুন নেভানোর সময় ছাদটি ধসে ধসে পড়ে।
আটকদের মধ্যে চারজন হামলায় সরাসরি জড়িত বলে জানিয়েছে তাস।
ইসলামিক স্টেট গ্রুপ অনুমোদিত সামাজিক মিডিয়া চ্যানেলগুলোতে বিবৃতি পোস্ট করে তারা হামলার দায় স্বীকার করেছে। যদিও ক্রেমলিন বা রাশিয়ান নিরাপত্তা বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার জন্য কাউকে দায়ী করেনি।
আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেটের শাখা সংগঠন আমাক নিউজ এজেন্সি বিবৃতিতে জানায়, তারা ক্রাসনোগোরস্কে 'খ্রিস্টানদের' একটি বড় সমাবেশে হামলা চালিয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে এই দাবির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, আইএস এই হামলার জন্য দায়ী বলে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিশ্চিত করেছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, আইএসের শাখা মস্কোতে হামলার পরিকল্পনা করছে বলে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তথ্য সংগ্রহ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এ মাসের শুরুর দিকে রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোপনে তা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা-মস্কো সম্পর্ক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী : রাষ্ট্রদূত মানতিৎস্কি
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই মার্কিন কর্মকর্তা এপিকে জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তাকে জানানো হয়েছিল তবে গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
এ হামলার পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আক্রান্তদের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানিয়ে বার্তা পাঠানো হচ্ছে।
শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেএ হামলাকে 'জঘন্য ও কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলা' আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা জানিয়েছে। একই সঙ্গে অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনার ওপর জোর দিয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও এ সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
মস্কোতেই শনিবার সকালে ভুক্তভোগীদের রক্ত ও প্লাজমা দানের জন্য শত শত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন বলে জানিয়েছে রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
পুতিন সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সতর্কবার্তাকে রুশদের ভয় দেখানোর চেষ্টা বলে প্রকাশ্যে নিন্দা জানিয়েছিলেন। এ সপ্তাহের শুরুতে তিনি বলেন, 'এগুলো প্রকাশ্য ব্ল্যাকমেইল এবং আমাদের সমাজকে ভয় দেখানো ও অস্থিতিশীল করার চেষ্টা।’
এর আগে ২০১৫ সালের অক্টোবরে সিনাইয়ে রুশ যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত করে ইসলামিক স্টেট। এতে ২২৪ আরোহীর সবাই নিহত হন। তাদের অধিকাংশই মিশর থেকে ছুটি কাটাতে আসা রুশ নাগরিক ছিলেন। প্রধানত সিরিয়া ও ইরাকের পাশাপাশি আফগানিস্তান ও আফ্রিকায় তাদের কার্যক্রম চালায় এই গোষ্ঠীটি। বিগত বছরগুলোতে রাশিয়ার গোলযোগপূর্ণ ককেশাস ও অন্যান্য অঞ্চলে বেশ কয়েকটি হামলার দায়ও স্বীকার করেছে তারা।
আরও পড়ুন: ঢাকা-মস্কো সম্পর্কে আরও উন্নতির প্রত্যাশা রুশ রাষ্ট্রদূতের
গাজায় রমজানে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভোট
মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাসে গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতির দাবিতে একটি প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হতে যাচ্ছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এই পদক্ষেপ ইসরায়েল-হামাস বৈরিতা বন্ধের আলোচনায় ক্ষতি করতে পারে।
১০ নির্বাচিত কাউন্সিল সদস্য প্রস্তাবটি উত্থাপন করে। প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছে রাশিয়া ও চীন। এদিকে, গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে 'অবিলম্বে ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির' সমর্থনে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় আনা একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া ও চীন।
জাতিসংঘে ২২ রাষ্ট্রের আরব লীগ শুক্রবার রাতে এক বিবৃতিতে নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের সবাইকে 'ঐক্য ও জরুরি ভিত্তিতে কাজ করার' এবং 'রক্তপাত বন্ধ, মানুষের জীবন রক্ষা ও আরও মানুষের দুর্ভোগ ও ধ্বংস এড়াতে' প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজা-ইউক্রেন বিষয়ে 'দ্বৈত নীতি' পরিহার করতে ইইউর প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান
আরব লীগ বলেছে, ‘যুদ্ধবিরতির সময় অনেক আগেই পেরিয়ে গেছে।’ কারণ, রমজান শুরু হয়েছে ১০ মার্চ ও শেষ হবে ৯ এপ্রিল।
সোমবার সকালে কাউন্সিলে এই প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে। শনিবার সকালে ভোটাভুটি হওয়ার কথা থাকলেও শনিবার ভোরে তা পিছিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের এক কূটনীতিক।
অনেক সদস্য রাষ্ট্র আশা করছেন, ৭ অক্টোবর গাজার হামাস শাসকরা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অতর্কিত হামলা শুরু করার পর শুরু হওয়া যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানাবে জাতিসংঘের সবচেয়ে শক্তিশালী সংস্থাটি।
এরপর থেকে নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় ক্রমবর্ধমান মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে দুটি প্রস্তাব গ্রহণ করলেও কেউই যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায়নি।
আরও পড়ুন: গাজায় দুর্ভিক্ষ ‘আসন্ন’, উত্তরাঞ্চলের প্রধান হাসপাতালে আবারও ইসরায়েলি হামলা
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, লড়াইয়ে গাজায় ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। মন্ত্রণালয়টি গণনার ক্ষেত্রে বেসামরিক ব্যক্তি ও যোদ্ধাদের মধ্যে পার্থক্য করেনি। তবে বলেছে, মৃতদের দুই-তৃতীয়াংশ নারী ও শিশু।
সোমবার ভোটাভুটির জন্য নির্ধারিত সংক্ষিপ্ত প্রস্তাবে রমজানে অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির দাবি জানানো হয়েছে। আর এর ওপর ভিত্তি করেই ‘স্থায়ীভাবে যুদ্ধবিরতির দিকে পরিচালিত করবে’।
একই সঙ্গে 'সব জিম্মির তাৎক্ষণিক ও নিঃশর্ত মুক্তির' দাবি জানানো হয়েছে এবং গাজা উপত্যকা জুড়ে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা ও মানবিক সহায়তা সরবরাহের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবারের ভোটাভুটির পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড কাউন্সিলকে বলেন, প্রস্তাবে যা বলা হয়ে তা ‘এই অঞ্চলে সংবেদনশীল কূটনীতিকে সমর্থন করতে ব্যর্থ হয়েছে। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হলো, প্রস্তাবটি আসলে হামাসকে আলোচনায় থাকা চুক্তি থেকে সরে আসার অজুহাতের সুযোগ করে দিতে পারে’।
আরও পড়ুন: গাজা ও সুদানে রমজান মাসে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
রাশিয়ায় কনসার্ট হলে বন্দুক হামলায় নিহত ৬০ ও আহত ১৪৫, আইএসের দায় স্বীকার
শুক্রবার রাশিয়ার মস্কোর একটি বড় কনসার্ট হলে হামলাকারীরা ঢুকে সাধারণ মানুষের ওপর গুলি ছুড়লে ৬০ জনেরও বেশি নিহত হন। এ ঘটনায় ১০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন এবং ঘটনাস্থলে আগুন ধরে যায়।
হামলার দায় স্বীকার করেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্পর্কিত একটি চ্যানেলে বিবৃতি দিয়েছে ইসলামিক স্টেট গ্রুপ (আইএস)।
যুক্তরাষ্ট্রের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানতে পেরেছে- আফগানিস্তানে গ্রুপটির শাখা মস্কোতে হামলার পরিকল্পনা করছিল এবং তারা রুশ কর্মকর্তাদের এ তথ্য দিয়েছে।
হামলার ঘটনার পর হামলাকারীদের কী হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। বিষয়টি সন্ত্রাসবাদ হিসেবে আমলে নিয়ে রাষ্ট্রীয় তদন্তকারীরা তদন্ত করছেন।
আরও পড়ুন: চীনের উত্তরাঞ্চলে বাস দুর্ঘটনায় নিহত ১৪, আহত ৩৭
এই হামলার কারণে কনসার্ট হলের ছাদ ধসে পড়ে এবং সেখানে আগুন লেগে যায়। এই হামলাটিকে কয়েক বছরের মধ্যে রাশিয়ায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন এই হামলার ঘটনাকে 'বড় ট্র্যাজেডি' বলে অভিহিত করেছেন।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, হামলাকারীরা ক্রোকাস সিটি হলে ঢুকে পড়ার কয়েক মিনিট পর পুতিনকে বিষয়টি জানানো হয়। ক্রোকাস সিটি হল মস্কোর পশ্চিম প্রান্তে একটি বড় সংগীত ভেন্যু। যার ধারণক্ষমতা ৬ হাজার ২০০ মানুষের।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২১, আহত ৩৮
রাশিয়ান রক ব্যান্ড পিকনিকের পারফরম্যান্স উপভোগ করার জন্য সবাই যখন ভেন্যুতে জড়ো হচ্ছিল সে সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
দেশটির শীর্ষ অপরাধ তদন্ত সংস্থা ইনভেস্টিগেশন কমিটি শনিবার ৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ আহত ১৪৫ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। যাদের মধ্যে ১১৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এতে ৫ শিশুও রয়েছে।
আরও পড়ুন: হুমকি পেলে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে প্রস্তুত রাশিয়া: পুতিন
গাজা-ইউক্রেন বিষয়ে 'দ্বৈত নীতি' পরিহার করতে ইইউর প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান
ইউক্রেনকে সমর্থন করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি যেমন শ্রদ্ধা প্রদর্শন করছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা, ঠিক একইভাবে মারাত্মক খাদ্য ঘাটতিতে থাকা লাখ লাখ ফিলিস্তিনি এবং দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে থাকা গাজার ক্ষেত্রে একই ধরনের মনোভাব প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
বৃহস্পতিবার(২১ মার্চ) ব্রাসেলসে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনে বর্ণিত মানদণ্ডের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে দৃঢ় ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের মূল নীতি হচ্ছে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া। ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেলের পাশে দাঁড়িয়ে গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেনের মতো গাজাতেও আমাদের অবশ্যই নীতিতে অটল থাকতে হবে।
জাতিসংঘের খাদ্যবিষয়ক একটি সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ আসন্ন। এদিকে, ইসরায়েল দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহয় স্থল আক্রমণ শুরু করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে মনে হচ্ছে, যেখানে অনেক লোক যুদ্ধ থেকে বাঁচতে আশ্রয় নিয়েছে।
আরও পড়ুন: কয়েক মাস ধরে দুর্ভিক্ষের সতর্কতার পর গাজায় বাড়তে শুরু করেছে শিশুদের মৃত্যু
২৭ জাতির ইইউ দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে গভীরভাবে বিভক্ত। ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের বিধ্বংসী হামলা এই বিভক্তির সৃষ্টি করেছে। তবে গাজায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ৩২ হাজার বেড়ে যাওয়ায় আরও অনেক দেশ যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে সমর্থন করছে।
অন্যদিকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধকে অস্তিত্বের হুমকি হিসেবে দেখছে প্রায় পুরো জোট। তারা দেশটিকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সহায়তা করার জন্য শত শত কোটি ইউরো ঢালছে জোটটি।
আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার বলেছেন, 'ফিলিস্তিনের ভয়াবহ সংকট মোকাবিলা ইউরোপের জন্য মোটেও উপযুক্ত সময় ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এটি ইউক্রেনকে রক্ষার জন্য আমাদের প্রচেষ্টাকে হ্রাস করছে কারণ গ্লোবাল সাউথের অনেক দেশ ইউক্রেন ও ফিলিস্তিনের বিষয়ে ইউরোপের পদক্ষেপকে দ্বৈত অবস্থান হিসাবে ব্যাখ্যা করে। আমি মনে করি, এক্ষেত্রে তাদের যুক্তি আছে।’
বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রু গাজায় ঘটে যাওয়া ঘটনাকে 'নাটকীয়' বলে বর্ণনা করেছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা আজ এমন মানুষদেরও দেখতে পাচ্ছি যারা ঘাস খেয়ে নিজেদের পেট ভরানোর চেষ্টা করছে। যারা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। ইউরোপকে নেতৃত্ব দিতে হবে, অনুসরণ করা নয়। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করার সময় এসেছে: অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি দাবি করা, জিম্মিদের মুক্তির দাবি করা।’
শীর্ষ সম্মেলনের উপসংহারে নেতারা ‘বেসামরিক মানুষের নজিরবিহীন প্রাণহানি এবং গুরুতর মানবিক পরিস্থিতি’ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ইউরোপীয় কাউন্সিল অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধ বিরতির আহ্বান জানিয়েছে, যার ফলে একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি হবে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি আলোচনা থমকে যাওয়ায় গাজায় ত্রাণের জন্য আলোচনায় সমুদ্রপথ
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, ইসারায়েল-হামাস যুদ্ধ গাজার ২৩ লাখ ফিলিস্তিনির জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হয়েছেন। জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ ক্ষুধার্ত রয়েছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা থেকে শুরু হওয়া অতর্কিত হামলায় ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা প্রায় ১২০০ জন ইসরাইলিকে হত্যা করে এবং আরও ২৫০ জনকে অপহরণ করে। হামাস এখনও প্রায় ১০০ জনকে জিম্মি করে রেখেছে বলে মনে করা হয়। পাশাপাশি আরও ৩০ জনের লাশও তাদের জিম্মায় রয়েছে।
মিশর সীমান্তের কাছে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহয় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আসন্ন স্থল অভিযানের বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এটি এমন একটি পরিকল্পনা যা সেখানে আশ্রয় নেওয়া কয়েক হাজার বেসামরিক নাগরিকের ক্ষতির আশঙ্কায় বিশ্বে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
আরও পড়ুন: বড় বাধার মুখে ফিলিস্তিনের নতুন প্রধানমন্ত্রীর সংস্কারের পরিকল্পনা
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, রাফাহয় অভিযান না চালিয়ে হামাসের বিরুদ্ধে 'সম্পূর্ণ বিজয়ের' লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না ইসরায়েল।
ইইউ নেতারা ইসরায়েলি সরকারকে রাফাহতে স্থল অভিযান থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এটি 'এরই মধ্যে মানবিক বিপর্যয়ের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পরিণত হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় মৌলিক সেবা ও মানবিক সহায়তার ব্যবস্থা করতে হবে।’
ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস রবিবার দেশটি সফর করে বলেছেন, 'আমরা রাফাহয় বড় ধরনের আগ্রাসনের পক্ষে নই। আমি নিজেই ইসরায়েলে এটির ওপর জোর দিয়েছি। আমরা আশা করি যে এখন একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি সম্ভব হবে। সমস্ত জিম্মির মুক্তি এবং নিহতদের লাশ হস্তান্তর করা হবে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেন, 'গাজায় আজ যা ঘটছে তা মানবতা রক্ষার ব্যর্থতা। এটা কোনো মানবিক সংকট নয়। এটা মানবতার ব্যর্থতা।’
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'এটা ভূমিকম্প নয়, বন্যা নয়। এটা বোমা হামলা।’
আরও পড়ুন: গাজায় দুর্ভিক্ষ ‘আসন্ন’, উত্তরাঞ্চলের প্রধান হাসপাতালে আবারও ইসরায়েলি হামলা
ইন্দোনেশিয়ার উত্তর উপকূলে ডুবে যাওয়া নৌকা থেকে ৬৯ রোহিঙ্গা শরণার্থী উদ্ধার
ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে রোহিঙ্গাদের বহনকারী একটি বিধ্বস্ত হওয়া নৌকার সন্ধান পেয়েছে ইন্দোনেশিয়ার একটি তল্লাশি ও উদ্ধারকারী জাহাজ। বৃহস্পতিবার সেই নৌকার ধ্বংসাবশেষে আশ্রয় নেওয়া ৬৯ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে তারা।
উদ্ধারকারী জাহাজে থাকা এপির এক আলোকচিত্রী জানিয়েছেন, স্থানীয় মাছ ধরার নৌকায় ১০ জনকে তোলা হয়েছে এবং আরও ৫৯ জনকে ইন্দোনেশিয়ার জাহাজটি উদ্ধার করেছে।
রাতের বৃষ্টিতে ভিজে তারা দুর্বল হয়ে পড়েছিল। উদ্ধার করা রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুও ছিল। রাবারের ডিঙ্গি নৌকায় করে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বুধবার ইন্দোনেশিয়ার উত্তর উপকূলে ডুবে যাওয়ার সময় ছোট নৌকাটিতে কতজন শরণার্থী ছিল তা এখনো জানা যায়নি। স্থানীয় জেলেরা প্রাথমিকভাবে ছয়জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে, ধারণা করা হচ্ছে ৬০ থেকে ১০০ জনের মতো রোহিঙ্গা ছিল।
প্রাথমিকভাবে উপকূলের উত্তাল পানিতে নৌকাটি খুঁজে পেতে অসুবিধা হচ্ছিল। কয়েক ঘণ্টা পরে, ইন্দোনেশিয়ার অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল বুধবার সন্ধ্যায় বান্দা আচেহ শহর ত্যাগ করেছে।
অবশেষে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে নৌকা ও জীবিতদের খুঁজে পাওয়া যায়।
আচেহ বারাত জেলার মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের নেতা আমিরুদ্দিন বলেন, উদ্ধার করা রোহিঙ্গারা জানয়েছেন, নৌকাটি পূর্ব দিকে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে এটি ফুটো হতে শুরু করে এবং তারপরে তীব্র স্রোত এটিকে আচেহর পশ্চিমের দিকে ঠেলে দেয়। ওই ছয়জন জানান, ডুবে যাওয়া নৌকায় এখনও বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন বাকিরা।
মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর জাতিগত নিধন অভিযানের নৃসংশতা থেকে বাঁচতে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
বাংলাদেশের জনাকীর্ণ শিবির ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালানোর চেষ্টা করছে রোহিঙ্গারা। নভেম্বর থেকে ইন্দোনেশিয়ায়ও শরণার্থীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।
থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার মতো ইন্দোনেশিয়াও জাতিসংঘের ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। তাই শরণার্থীদের আইনি সুরক্ষা দিতে এবং তাদের গ্রহণ করতে বাধ্য নয় তারা। তবে তারা এখন পর্যন্ত দুর্দশাগ্রস্ত শরণার্থীদের সাময়িক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, গত বছর প্রায় সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গা, যাদের দুই-তৃতীয়াংশ নারী ও শিশু, তাদের জন্মভূমি মিয়ানমার ও প্রতিবেশী বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে নৌকায় করে পালিয়ে আসে। এর মধ্যে ৫৬৯ জন বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান সাগর পাড়ি দেওয়ার সময় মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন, যা ২০১৪ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ প্রাণহানির সংখ্যা।
চীনের উত্তরাঞ্চলে বাস দুর্ঘটনায় নিহত ১৪, আহত ৩৭
চীনের উত্তরাঞ্চলীয় শানশি প্রদেশে মঙ্গলবার যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত ও ৩৭ জন আহত হয়েছেন।
বিষয়টি স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
শানশির হোহোত-বেইহাই এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রীবাহী বাসটি একটি টানেলের দেয়ালে ধাক্কা খায়।
উদ্ধারকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২১, আহত ৩৮