কেসিসি’র আওতাধীন নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও নগর মাতৃসদনের ১০২ কর্মীর গত মার্চ মাসের অর্ধেক বেতন এবং বিগত বছরের একটি বোনাসও বকেয়া রয়েছে। মার্চ মাসের পর থেকে কোনো কর্মী বেতন পাননি।
নগরীর ২২ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত মাতৃসদন কেন্দ্রে কর্মরত কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের অসহনীয় জীবন যাপনের কথা। হামিদা বেগম নামে সেখানকার আয়া তার সঞ্চয়কৃত সোনার গহনা বিক্রি করে মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছে। তিনি বলেন, ৮ মাস বেতন না পেলে সংসার চালাবো কি করে। আমাদের তো কাজ করেই খেতে হয়। এতদিন বেতন বন্ধ থাকলে পেট চলে না।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সূত্র জানিয়েছে, সিটি করপোরেশনের আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার প্রকল্পের অধীনে ১৯৯৮ সাল থেকে পরিচালিত হচ্ছে নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও নগর মাতৃসদন। প্রকল্পের আওতায় টেন্ডারের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে অভিজ্ঞ বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) মাধ্যমে চলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো।
সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতায় সিটি করপোরেশনগুলোতে এ প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রকল্প শেষ হওয়ার পর এর মেয়াদ বাড়ানো হয়। একনেকেও এর বিল পাশ হয়েছে। টেন্ডার হওয়ার পর সর্বনিম্ন দরদাতাকে বছাই করে এর কাজ বুঝিয়ে দেয়া হয়নি।
স্বাস্থ্যকর্মীরা জানায়, আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় কর্মকর্তা কর্মচারীরা গত ৮ মাস ধরে কোনো বেতন ভাতা পাচ্ছে না। এসব স্যাটেলাইট ক্লিনিকের মাধ্যমে শহর অঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে। এত দীর্ঘসময় বেতন না পেয়েও কর্মকর্তা কর্মচারীরা স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের কাজ চালু রেখেছে। চলতি মাসের মধ্যে বকেয়া বেতন না পেলে তারা আন্দোলনের কর্মসূচি দেবে বলে জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে ২২ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত নগর মাতৃসদন কেন্দ্রের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় কেসিসির ১৬, ১৭, ১৮, ২১, ২৫ ও ২৬ নং ওয়ার্ডের প্রায় লক্ষাধিক মানুষকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ৬টি প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টারের আওতায় ১৫ জন বিভিন্ন পর্যায়ের অফিসার এবং ১২০ জন কর্মচারী বেতন ভাতা পাচ্ছে না। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এ কে এম আব্দুল্লাহ বলেন, প্রতি ৫ বছর পর পর প্রকল্পের মেয়াদ শেষে আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার প্রকল্পের সময় বাড়ানো হয়। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রকল্প একনেকে পাশ এবং টেন্ডার আহবানও হয়ে গেছে। সারাদেশেই এ প্রকল্পের কর্মীদের বেতন বকেয়া পড়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাসের শেষ নাগাদ বেতন ভাতা ছাড় হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।