বন্যা আক্রান্ত এলাকার অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বিশুদ্ধ পানির সংকটের পাশাপাশি পানিবাহিত রোগও ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে পানিবন্দী মানুষগুলো চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমার পানি বিপদসীমার ১১২ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং জৈন্তাপুরের সারী নদীর পানি সারী পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
একই সময় জকিগঞ্জের আমলশীদ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি বিপদসীমার ১৪৪ সেন্টিমিটার, বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে ৯৪ সেন্টিমিটার ও মৌলভীবাজারের শেরপুর পয়েন্টে ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
জাফলং, বিছানাকান্দি, ভোলাগঞ্জে পাথর উত্তোলন বন্ধ হওয়ায় লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। আবার নিরাপত্তাজনিত কারণে সিলেটের ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, বিছানাকান্দিসহ নদী সংশ্লিষ্ট পর্যটন কেন্দ্রগুলোতেও পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ফলে সিলেটেএখন অনেকটা পর্যটক শূন্য।
এদিকে সুরমা নদীর পানি উপচে সিলেট নগরীতেও প্রবেশ করেছে পানি। নগরীর উপশহর ছাড়াও তেররতন, যতরপুর, কালিঘাট, মাছিমপুর, সুবহানীঘাট, সবুজবাগসহ সুরমা নদীর তীরবর্তী নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
নগরীর মিরাবাজারে শাহজালাল জামেয়া স্কুলে আশ্রয় কেন্দ্রে ৯০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। সোমবার সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তাদের বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট উপজেলার প্লাবিত এলাকায় ধীর গতিতে পানি নামছে। তবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় এবং নদীর পানি না কমায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
কুশিয়ারার পানি বাড়ায় ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ এবং জকিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া, জকিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ এবং বিয়ানীবাজারে সুরমা এবং কুশিয়ারায় ভাঙনের খবরও পাওয়া গেছে।
অপরদিকে প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষে থেকে বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
সিলেট জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নুরুজ্জামান মজুমদার জানান, বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে এ পর্যন্ত ৫০০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৮ লাখ টাকা এবং দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
‘ইতোমধ্যে ১০০ মেট্রিক টন চাল বিভিন্ন উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকায় বিতরণ করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও ত্রাণ বরাদ্দ করা হবে’, যোগ করেন তিনি।