এবার যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটায় পুলিশের বিরুদ্ধে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যা মামলায় আসামিপক্ষের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দাবি করলেন, হৃদরোগের কারণেই ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়। বুধবার (১৪ এপ্রিল) বিবাদী পক্ষের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ড. ডেভিড ফওলার এমন দাবি করেন।
শরীরের অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে মৃত্যু ঘটার কথা ময়নাতদন্তে বেরিয়ে এলেও, তিনি জানান, ঘটনার সময় অনিয়মিত হৃদকম্পনের ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়।
ফ্লয়েডের শরীরে ফেনটানিল এবং মেথামফেটামিন এর আধিক্য এবং গাড়ির ধোয়ার সাথে কার্বন মনোক্সাইডের শরীরে প্রবেশ করে মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন ড. ডেভিড।
বিবাদী পক্ষের এই বিশেষজ্ঞ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনাকে খুনের স্বীকৃতি দিতে নারাজ। তার মতে ফ্লয়েডের মৃত্যুতে এমন অনেক দিক আছে, যা থেকে এই ঘটনাকে একদিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলা যায়, আবার অন্যকিছু কারণে একে হত্যাও বলা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: আবারো কৃষ্ণাঙ্গ হত্যা: মিনেসোটা পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চৌভিন এর আইনজীবী চেষ্টা করছেন, তার চৌভিন নির্দোষ এবং তার ১৯ বছরের কর্মজীবনের শিক্ষা অনুযায়ী তিনি কাজ করেছেন। তিনি প্রমাণ করতে চাইছেন, মাদক গ্রহণ এবং দুর্বল স্বাস্থ্যের কারণেই ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়েছে।
কিন্তু বাদীপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, প্রায় সাড়ে ৯ মিনিট ধরে জর্জ ফ্লয়েডকে উপুর করে মাটিতে ফেলে, তার ঘাড়ে চাপ প্রয়োগ করে বসেছিলেন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা চৌভিন। ভিডিওতে দেখা যায় মৃত্যুর আগের মুহূর্তে ফ্লয়েড বলছেন, ‘‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না।’’
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট উপেক্ষা করলেও, প্রসিকিউটর ব্ল্যাকওয়ের তার প্রশ্ন ও যুক্তির মাধ্যমে ড. ডেভিডের বেশকিছু যুক্তি খণ্ডন করেন এবং তার গবেষণার ভুল তুলে ধরেন।
আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসা অধিকাংশ বিশেষজ্ঞই জানান, ঘাড়ে অতিরিক্ত চাপের ফলে অক্সিজেন স্বল্পতায় ভুগে মারা যান ফ্লয়েড। অপরদিকে, আদালতে সাক্ষ্য দেয়া একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ফ্লয়েডের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাবার বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য বলে মত দেন। তিনি বলেন, ফ্লয়েড অস্বাভাবিক শক্তিশালী হৃদযন্ত্রে অধিকারী ছিলেন।
গত বছরের মে মাসে মিনেপোলিস শহরে জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যার দায়ে ডেরেক চৌভিন এখন জেলে আছেন। গত মার্চে তার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়।