মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। পরে চট্টগ্রাম কলেজ ও পাশ্ববর্তী মহসীন কলেজ ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ সড়ক অবরোধের কারণে চকবাজার থেকে গণি বেকারী পর্যন্ত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগে গতকাল সোমবার রাতে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের ২৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে মহানগর ছাত্রলীগ। এতে মাহমুদুল করিমকে সভাপতি ও সুভাষ মল্লিক সবুজকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি অনুমোদন দেয় নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হাসান ইমু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দস্তগীর চৌধুরী।
এ কমিটিকে শিবির ছাত্রদলের কমিটি আখ্যায়িত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাত থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় ছাত্রলীগের একাংশ নেতা-কর্মীদের।
পরে আজ সকালে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের ডাক দেয় তারা। সকাল থেকে কলেজ গেটে রাস্তার ওপর অবস্থান নিয়ে সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভকারীরা। তারা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
অপরদিকে কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয় ঘোষিত নতুন কমিটির নেতারা।
প্রতক্ষ্যদশীরা জানায়, সকাল ১১টার দিকে পদবঞ্চিতরা কলেজের সামনে বাঁশ দিয়ে সড়ক অবরোধ করে এবং বিক্ষোভ করতে থাকে। এসময় তাদের সাথে যোগ দেয় কমিটিতে পদ পাওয়া বেশ কয়েকজন নেতাও। এসময় বাইরে থেকে একটি গ্রুপ কলেজের ভেতরে প্রবেশ করলে দুটি পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ সময় কমিটির নতুন দায়িত্বপ্রাপ্তদের টেনে হিঁছড়ে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয় চকবাজার যুবলীগ নেতা টিনুর সমর্থকরা। উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে বাইরে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি গাড়ি। এসময় আখতার হোসেন নামে একজন ফটো সাংবাদিকসহ তিনজন আহত হন।
সংঘর্ষ চলাকালীন প্রায় ২ ঘণ্টা কলেজের সামনের সড়কে গাড়ি বন্ধ ছিল। দুপুর ১টার দিকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে দুই পক্ষকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু বলেন, ‘সকলের মতামতের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম কলেজে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে শিবির ছাত্রদলের কেউ নেই। ক্যাম্পাসে যাদের অবস্থান ভালো তাদেরকে আমরা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেছি।’
চকবাজার থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের বিরোধ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। এক পক্ষ সড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করেছিল। পুলিশ গিয়ে তাদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, এক সময় ইসলামী ছাত্রশিবিরের দুর্গ হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম কলেজ ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর ছাত্রলীগ পুলিশের সহযোগিতায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। এর পর থেকে প্রতিনিয়ত ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপ নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ চালিয়ে আসছে। গত ৩ বছরে অন্তত ২৫ বার সংঘর্ষ হয়েছে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধে।