বাংলাদেশ
বিএনপির দুঃখ-কষ্টের বাংলাদেশ এখন আর নেই: নানক
বিএনপির দুঃখ-কষ্টের বাংলাদেশ এখন আর নেই বলে মন্তব্য করেছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
ঈদ মানুষের কষ্টে কেটেছে বলে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য প্রসঙ্গে নানক বলেন, রুহুল কবির রিজভী সাহেবরা যে কথা বলেন তারা সে বাংলাদেশ দেখতে অভ্যস্ত। আজ বাংলাদেশ এমন এক জায়গায় গেছে যে পেছনে তাকানোর সময় নেই।
আরও পড়ুন: পাটপণ্যের রপ্তানি বাড়াতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে: নানক
সোমবার (১৫ এপ্রিল) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে তিনি একথা বলেন। এসময় মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আজ বিশ্ব হাতের নাগালের মধ্যে। কাজেই রুহুল কবির রিজভী সাহেবরা যে দুঃখ-কষ্টের বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছিলেন সে দুঃখ-কষ্টের বাংলাদেশ আজ আর নেই।
নানক বলেন, আজকের বাংলাদেশ একটি সুন্দর বাংলাদেশ, হাস্যোজ্জ্বল বাংলাদেশ। রুহুল কবির রিজভী সাহেবরা যত স্বপ্নই দেখুক সে স্বপ্ন পূরণ হবে না।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, আমরা গ্রামের মানুষ। আমরা যারা সরকারের লোক এবং সরকারে রয়েছি, আমরা কিন্তু রমজানের আগেই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি। রমজানের আগেই বাজার ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ছিলাম।
তিনি আরও বলেন, আমার নির্বাচনি এলাকা মোহাম্মদপুর, আদাবর, শেরে বাংলা নগরে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সুলভ মূল্যে কেনাকাটার ব্যবস্থা করেছিলাম। ঢাকার মানুষ যে বাজার পরিস্থিতির মুখোমুখি ছিল মফস্বলের মানুষ কিন্তু সে পরিস্থিতির মুখে ছিল না। ঢাকা শহরে এক পরিস্থিতি, মফস্বলে আরেক পরিস্থিতি। তৃণমূল কৃষক যে দামে বিক্রি করে ভোক্তার কাছে এসে তা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এটি আমরা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি।
তাহলে কি সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেননি- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সিন্ডিকেট একটা পপুলার শব্দ। সিন্ডিকেট আমার কাছে মনে হয়েছে বড় ব্যাপার। তবে সিন্ডিকেট কাঁচাবাজারের ব্যাপারে প্রযোজ্য নয়। মাঝখানে যারা ভোক্তা যাদের কাছে মালামাল কেনে সেখানে নিয়ন্ত্রণ হওয়া দরকার। সে কাজ সরকার করবে, সেটি সরকারের দায়িত্ব। সুলভ মূল্যের বাজারের কারণে ঢাকা শহরে ১৫ রোজার পরে জিনিসপত্রের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে এসেছে। জিনিসপত্র, কাঁচামালের দাম নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশের মানুষ দুটি বড় উৎসব পালন করল। ঈদুল ফিতরের পর বাংলা নববর্ষ উদযাপন করেছে। দুটি উৎসব মানুষ আনন্দের সঙ্গে পালন করেছে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
আরও পড়ুন: সোনালী ব্যাগের জন্য প্লাস্টিক ব্যবসায়ীরা বড় বাধা হলেও আমরা জয়ী হব: পাটমন্ত্রী নানক
পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিকবিরোধী অভিযান জোরদার করা হবে: নানক
টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাসে পহেলা বৈশাখ উদযাপন
বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করেছে টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস।
অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা, তাদের পরিবারের সদস্য এবং জাপানে বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ‘গণহত্যা দিবস’ পালিত
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়।
শোভাযাত্রা শেষে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমেদ অতিথিদের বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।
স্বাগত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে কাজ করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
পরে স্থানীয় বাংলাদেশি শিল্পীদের অংশগ্রহণে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সহায়তায় উপকূলের সুবিধাবঞ্চিত ১২শ’ তরুণীর কর্মসংস্থান করেছে ব্র্যাক
ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাসে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.১%, আগামী বছর হবে ৬.৬ %: এডিবির পূর্বাভাস
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৬ দশমিক ১ শতাংশ হারে বাড়বে।
ম্যানিলাভিত্তিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি বৃহস্পতিবার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক বলেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ১ শতাংশ হবে এবং আগামী অর্থবছরে এটি বেড়ে ৬ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়াতে পারে।
ব্যাপক অভ্যন্তরীণ চাহিদা, সেমিকন্ডাক্টর রপ্তানির উন্নতি এবং পর্যটন পুনরুদ্ধারের মধ্যে এই অঞ্চলের স্থিতিস্থাপক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলো এই বছর গড়ে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
এডিবি প্রকাশিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) এপ্রিল ২০২৪ অনুযায়ী, আগামী বছরও একই হারে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।
গত দুই বছর ধরে অনেক অর্থনীতিতে উচ্চতর খাদ্যের দাম বাড়ার পরে ২০২৪ ও ২০২৫ সালে মুদ্রাস্ফীতি মাঝারি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও রপ্তানির দ্বারা চালিত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি সম্পত্তির বাজারে দুর্বলতা এবং কম খরচের কারণে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনে (পিআরসি) মন্দার ভারসাম্য রক্ষা করছে।
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারত একটি প্রধান প্রবৃদ্ধির চালক হিসেবে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে, এই বছর ৭ শতাংশ এবং পরের বছর ৭ দশমিক ২ শথাংশ বৃদ্ধি পাবে।
চীনের প্রবৃদ্ধি গত বছরের ৫ দশমিক ২ শতাংশ থেকে এই বছর ৪ দশমিক ৮ শতাংশ এবং পরের বছর ৪ দশমিক ৫ শতাংশে এ নেমে আসবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এডিবির প্রধান অর্থনীতিবিদ অ্যালবার্ট পার্ক বলেন, 'আমরা চলতি বছর ও আগামী বছর উন্নয়নশীল এশিয়ার বেশিরভাগ অর্থনীতির শক্তিশালী ও স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘ভোক্তাদের আস্থা উন্নত হচ্ছে এবং বিনিয়োগ সামগ্রিকভাবে স্থিতিস্থাপক। বাহ্যিক চাহিদাও কমে আসছে বলে মনে হচ্ছে, বিশেষ করে সেমিকন্ডাক্টরের ক্ষেত্রে।’
নীতিনির্ধারকদের সতর্ক থাকতে হবে, কারণ বেশ কয়েকটি ঝুঁকি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্ন, মার্কিন আর্থিক নীতি সম্পর্কে অনিশ্চয়তা, চরম আবহাওয়ার প্রভাব এবং চীনে সম্পত্তি বাজারের আরও দুর্বলতা।
উন্নয়নশীল এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মুদ্রাস্ফীতি এই বছর ৩ দশমিক ২ শতাংশ এবং আগামী বছর ৩ শতাংশে এ নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে, কারণ বিশ্বব্যাপী মূল্যের চাপ হ্রাস পাবে এবং অনেক অর্থনীতিতে মুদ্রানীতি কঠোর থাকবে। তবে চীন বাদে এই অঞ্চলে মূল্যস্ফীতি এখনও কোভিড-১৯ মহামারির আগের চেয়ে বেশি।
চালের দাম খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে ভূমিকা রেখেছে, বিশেষ করে আমদানিনির্ভর অর্থনীতির জন্য। এডিও এপ্রিল ২০২৪ অনুসারে, এ বছর চালের দাম বাড়তে পারে।
প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ফসলের ক্ষতি ও চাল রপ্তানিতে ভারতের বিধিনিষেধও এর অন্যতম কারণ। লোহিত সাগরে জাহাজের ওপর হামলা এবং পানামা খালে খরার কারণে বিশ্বব্যাপী জাহাজ চলাচলের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এশিয়ায় মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে পারে।
চালের ক্রমবর্ধমান দাম মোকাবিলা এবং খাদ্য নিরাপত্তা রক্ষার জন্য, সরকার ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে ভর্তুকি দিতে পারে এবং মূল্য হেরফের ও মজুতদারি রোধে বাজারের স্বচ্ছতা ও পর্যবেক্ষণ বাড়াতে পারে।
মধ্য থেকে দীর্ঘমেয়াদি নীতিতে মূল্য স্থিতিশীল করার জন্য কৌশলগত চালের মজুদ প্রতিষ্ঠা, টেকসই চাষ ও ফসল বৈচিত্র্যকরণকে উৎসাহিত করা এবং উত্পাদনশীলতা বাড়াতে কৃষি প্রযুক্তি ও অবকাঠামোতে বিনিয়োগের দিকে মনোনিবেশ করা উচিত।
আঞ্চলিক সহযোগিতা চালের দাম এবং এর প্রভাব মোকাবিলায় সহায়তা করতে পারে, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ভারত থেকে বাংলাদেশের ৯১ বিঘা জমি উদ্ধার
ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার জগদল ও বেউড়াড়ি সীমান্তে ৭০ বছর ভারতের নিয়ন্ত্রণে থাকা ৯১ বিঘা এলাকা সফলভাবে উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
মঙ্গলবার উদ্ধারকৃত এলাকায় সাদা পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ঠাকুরগাঁওয়ে বিজিবির ৫০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানজির আহমেদ।
ভূমি জরিপ করতে বিজিবির আনুষ্ঠানিক অনুরোধের পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক এবং পদ্ধতিগত সম্পৃ্ক্ততার মাধ্যমে এই ভূমি পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়।
আরও পড়ুন: বিজিবি-বিএসএফ সম্মেলন: সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার অঙ্গীকার
লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানজির আহমেদ বলেন, ‘ এই সাফল্যের শুরুতে জগদল ও বেউড়াছড়ি সীমান্তের কিছু এলাকাকে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের মালিকানাধীন হিসেবে চিহ্নিত করি। আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবি ও বিএসএফের (বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স) যৌথ জরিপে আমাদের অবস্থানকে সমর্থন করা হয়।’
তিনি আরও জানান, সীমান্তবর্তী জনগণ ৯১ বিঘা জমি ফিরে পাওয়ায় অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছে। এই জমি সরকারি জমির নথিতে (খাস খতিয়ান) রেকর্ড করা হয়েছে।
উদ্ধারকৃত জমির মধ্যে জগদল বিওপি (সীমান্ত ফাঁড়ি) এলাকায় প্রায় ১৫ বিঘা এবং বেউড়াছড়ি বিওপি এলাকায় প্রায় ৭৬ বিঘা জমি রয়েছে। এর মধ্যে ৭৭ বিঘা জমি আবাদযোগ্য, ১১ বিঘা চা বাগান এবং বাকি তিন বিঘা নদী চর (নদী দ্বীপ)।
এর আগে গত ৬ ও ৭ মার্চ বাংলাদেশ ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের সহকারী জরিপ কর্মকর্তা এবং ভারতীয় জরিপ অধিদপ্তরের সহকারী দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দেওয়া চূড়ান্ত জরিপ অনুযায়ী ৯১ বিঘা জমির পাশাপাশি ২৩ দশমিক ৫ বিঘা জমি ভারতের বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন: আমরা আমাদের সীমান্তের ভেতরে আর কাউকে ঢুকতে দেব না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ থেকে ব্রাজিলে সরাসরি তৈরি পোশাক আমদানি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য জোরদার করতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার(৮ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সফররত ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা ও তার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সম্ভাবনার কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রচুর সুযোগ রয়েছে।’
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে সরাসরি তৈরি পোশাক পণ্য আমদানি বৃদ্ধির জন্য ব্রাজিলের সুযোগের কথা তুলে ধরেন। ফলে মধ্যস্থতাকারীদের প্রয়োজনীয়তা দূর করে এবং এই প্রক্রিয়াটিকে আরও ব্যয়সাশ্রয়ী করে তোলা যায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে বর্তমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। বর্তমান বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা ব্রাজিলের পক্ষে প্রচণ্ডভাবে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে ব্রাজিল থেকে প্রচুর পরিমাণে চিনি, সয়াবিন তেল এবং তুলা আমদানি করে বাংলাদেশ। অন্যদিকে বিনিময়ে কেবলমাত্র ন্যূনতম পরিমাণে তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি করে। ব্রাজিলের আমদানিতে বৈচিত্র্য আনার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্রাজিলের আমদানিতে বৈচিত্র্য আনার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে- কেবল আরও বেশি তৈরি পোশাক পণ্য নয়, বরং এতে পাট, পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যও অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
আরও পড়ুন: জুলাইয়ে ব্রাজিল সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ঐতিহাসিক যোগসূত্রের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের পরপরই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি প্রদানকারী দক্ষিণ আমেরিকার প্রথম দেশ হিসেবে ব্রাজিলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থানের ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলের ফুটবলের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশের ফুটবলের মান উন্নয়নে সহযোগিতা কামনা করেন।
কূটনৈতিক সদিচ্ছার নিদর্শন হিসেবে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০২৪ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলনে যোগদানের জন্য ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনসিও লুলা দা সিলভার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানান।
২০২৪ সালের গ্রুপ অব ২০ (জি২০) শীর্ষ সম্মেলন আগামী ১২-১৪ জুলাই ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।
১৯টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়ে জি-২০ গঠিত। দেশগুলো হলো- আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, জার্মানি, ফ্রান্স, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়ান ফেডারেশন, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৪ সালে জি-২০ এর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবে ব্রাজিল।
আরও পড়ুন: মানুষের জন্য কাজ করুন, জনগণের আস্থা হারাবেন না: জনপ্রতিনিধিদেরকে প্রধানমন্ত্রী
বৈশ্বিক রাজনীতি নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে। ভিয়েরা গাজায় চলমান সংঘাতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থানের প্রশংসা করেন। ইসরায়েলি আগ্রাসনকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যা দিয়েবাংলাদেশের নিন্দাকে সমর্থন জানান সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিয়েরা।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে 'তারা (ইসরায়েল) সব ধরনের আন্তর্জাতিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করেছে, তারা হাসপাতালে বোমা হামলা চালিয়েছে, আশ্রয় শিবিরে হত্যা অব্যাহত রেখেছে- এটি যুদ্ধ নয়, এটি গণহত্যা।’
তিনি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী শিশু, নারী ও বৃদ্ধদেরও রেহাই দিচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির প্রশংসা করে ভিয়েরা বাংলাদেশের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে ব্রাজিলের আগ্রহ প্রকাশ করেন ভিয়েরা। দারিদ্র্য ও ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দুই জনবহুল দেশের মধ্যে সাদৃশ্যের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
ভিয়েরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি উপহার দেন। যা এই সফরে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা এবং সহযোগিতা ও অভিন্ন প্রবৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পথ খুঁজে বের করে পারস্পরিক আকাঙ্ক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং একটি শক্তিশালী ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়ে এটি ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশ সফর। এটি বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
আরও পড়ুন: বহুপক্ষীয় ফোরাম: ২৪ এপ্রিল থেকে ৬ মে থাইল্যান্ড-সৌদি আরব ও গাম্বিয়া সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী
কিউবার রাষ্ট্রীয় পদক পেলেন বাংলাদেশের দুই চিকিৎসক
কিউবায় রাষ্ট্রীয় পদকে ভূষিত হলেন বাংলাদেশের দুই চিকিৎসক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের প্রধান ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল ও জাপানের ঔতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সেন্টার ফর গ্লোবাল এন্ড লোকাল ইনফেকশাস ডিজিজেজ-এর ভিজিটিং রিসার্চার ডা. শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর।
ভারাদেরো শহরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির পক্ষে তাদের হাতে ‘কার্লোস জে. ফিনলে অর্ডার’ নামের এ পুরস্কার তুলে দেন দেশটির বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রী এডওয়ার্ডো মার্টিনেজ ডায়েজ।
উল্লেখ্য, ‘কার্লোস জে. ফিনলে অর্ডার’ কিউবায় বিজ্ঞান গবেষণায় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক। ইয়েলো ফিভারের আবিস্কারক ও নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত প্রথম কিউবান নাগরিক কার্লোস জে. ফিনলের নামে কিউবান সরকার এই পদকটি প্রবর্তন করে।
বিজ্ঞানে অবদান রাখার জন্য কিউবার সরকার প্রতি বছর দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানীদের ‘কার্লোস জে. ফিনলে অর্ডারে’ সন্মানিত করে থাকেন।
অন্যান্যের মধ্যে ২০১৮ রসায়নে নোবেল বিজয়ী মার্কিন বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. জর্জ পি. স্মিথও পদক লাভ করেন।
পদক প্রাপ্তির পর নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল বলেন, চিকিৎসক এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানীর দ্বৈত সত্তা বজায় রাখাটা এদেশে বিশেষ করে খুবই চ্যালেন্জিং।
তিনি আরও বলেন, কিউবার সরকারের প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা। কারন এ ধরনের স্বীকৃতি সমস্ত কস্টকে ভুলিয়ে দিয়ে নতুনভাবে এগিয়ে যেতে উৎসাহ যোগায়।
উল্লেখ্য ‘ন্যাসভ্যাক’ নামক হেপাটাইটিস বি’র একটি নতুন ওষুধ উদ্ভবনের জন্য কিউবান একাডেমি অব সাইন্সেস ২০১৯ সালে অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল ও ডা. আকবরকে কিউবান ও জাপানী কো-রিসার্চারদের সঙ্গে একাডেমি অব সাইন্সেসের সর্বোচ্চ পদক ‘প্রিমিও ন্যাশনাল’ প্রদান করে।
এ ছাড়াও অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল ২০২১- এ বাংলাদেশ একাডেমি অব সাইন্সেসর সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘বাস গোল্ড মেডেল এওয়ার্ড’- এ ভূষিত হন।
‘ন্যাসভ্যাক’ ছাড়াও অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল ফ্যাটি লিভার, লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যন্সার চিকিৎসায় স্টেম সেল এবং হার্বাল মেডিসিন নিয়ে গবেষনা করছেন।
অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তিতে বাংলাদেশের আগ্রহকে স্বাগত জানালেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মার্কোসার-বাংলাদেশ অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তিতে (পিটিএ) পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশের আগ্রহকে স্বাগত জানিয়েছেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে উভয় পক্ষ একমত প্রকাশ করেন।তারা মনে করেন, এই চুক্তির প্রচেষ্টা বাংলাদেশ, ব্রাজিল ও অন্যান্য মার্কোসার রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ব্যবসার সুযোগ বাড়াবে এবং বেসরকারি খাতের যোগাযোগ জোরদার করবে, যা সাউথ-সাউথ কোঅপারেশন বাড়াতে অবদান রাখবে।
বৈঠকে যত দ্রুত সম্ভব হয় মার্কোসার-বাংলাদেশ পিটিএ নিয়ে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু করার লক্ষ্যে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মার্কোসার বা সাউদার্ন কমন মার্কেট মূলত আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ে নিয়ে গঠিত একটি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্লক। এর আগে সহযোগী সদস্য থাকা বলিভিয়া ২০২৩ সালে পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করে।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মাউরো ভিয়েরা ও হাছান মাহমুদের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে কারিগরি সহযোগিতাবিষয়ক মৌলিক চুক্তি সইকে স্বাগত জানান দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ব্রাজিল থেকে এই প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সফর।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক দৈত্যের দল বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বৈঠকে বাংলাদেশ-ব্রাজিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক উদ্যোগ এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।
কৃষি, পশুসম্পদ, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, শিক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি রূপান্তর এবং কারিগরি সহযোগিতাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও বিনিময় বাড়ানোর গুরুত্বের বিষয়ে একমত প্রকাশ করেছেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দুই দেশের ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সই হতে যাওয়া ক্রীড়া সহযোগিতাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকের আলোচনা সম্পন্ন হওয়ায় মন্ত্রীরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান।
প্রস্তাবিত সমঝোতাপত্রটি দীর্ঘ সময় ধরে লালিত জনসাধারণের মধ্যকার স্থায়ী বন্ধনের প্রতিফলন।
বাংলাদেশসহ ব্রিকসের জন্য গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান আগ্রহের কথা স্মরণ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান।
গ্লোবাল সাউথের উদীয়মান কণ্ঠস্বর হিসেবে বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে ব্রিকসে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে বলে আশ্বাস দেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্পর্ক জোরদার করতে রবিবার সকালে ঢাকায় আসেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাউরো ভিয়েরাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি রবিবার বিকেলে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন এবং হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুও ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের সম্মানে ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করেন হাছান মাহমুদ।
আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর মাউরো ভিয়েরা গাজীপুরে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ফ্যাসিলিটিজ এবং বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক পরিদর্শন করবেন।
সোমবার বিকেলে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে জি-২০তে ব্রাজিলের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলো নিয়ে একটি বক্তৃতা দেওয়ার কথা রয়েছে। বিকেল ৩টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল নিয়ে ঢাকায় ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সদস্যদের সম্মানে ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে বর্ণনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার সাম্প্রতিক নির্বাচনে জয়লাভের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছিল ব্রাজিল সরকার।
ব্রাজিল উভয় দেশের উন্নয়ন, সাউথ-সাউথ কোঅপারেশন এবং দারিদ্র্য, ক্ষুধা ও জলবায়ু সংকটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পক্ষে বাংলাদেশের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক অব্যাহত রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্রাজিল-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার হয়েছে।
২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রেসিডেন্ট লুলা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করেন।
গত বছর বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
সোমবার রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
তাকে বিদায় জানাতে ঢাকা বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (দ্বিপক্ষীয়) ড. নজরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, হাছান মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আজ
নাবিকদের উদ্ধারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে আছে, থাকবে: পরিবেশমন্ত্রী
বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী জনগণের পক্ষে থাকবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, মানবাধিকারের সর্বোচ্চ লঙ্ঘন হচ্ছে ফিলিস্তিনে। প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের আগ্রাসনের নিন্দা করেছেন। এছাড়া ফিলিস্তিনের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের পক্ষে থাকবে।
আরও পড়ুন: চাঁদাবাজ ও ভূমিদখলকারীদের কোনো ছাড় নেই: পরিবেশমন্ত্রী
রবিবার (৭ এপ্রিল) অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন, ওআইসিভুক্ত দেশসমূহের দূতাবাস, কুয়েত সোসাইটি ফর রিলিফ-বাংলাদেশ অফিস এবং সোসাইটি ফর সোস্যাল অ্যান্ড টেকনোলজিকাল সাপোর্ট, কুয়েতের সৌজন্যে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঢাকা-৯ নির্বাচনি এলাকার মুগদা থানাধীন ৭১ ও ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের জনগণের মাঝে ঈদ উপহার হিসেবে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, এবার আমরা ২৫ হাজার পরিবারকে সাহায্য করেছি। প্রতি পরিবারে ৪ জন সদস্য হলেও এক লাখ মানুষকে সাহায্য করেছি। তাদের আপনজন নিয়ে, প্রিয়জন নিয়ে যাতে আনন্দে ঈদ উদযাপন করতে পারে তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আসুন, আমরা সবাই সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াই।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ এস ওয়াই রামাদান বলেন, আমরা বাংলাদেশি ভাই-বোনদের অবদান কখনো ভুলব না। ফিলিস্তিন স্বাধীন হলে আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করব, বাংলাদেশের ভাই-বোনেরা আমাদের পাশে ছিলেন।
এসময় বক্তব্য দেন- বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ এস ওয়াই রামাদান ছাড়াও মুগদা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন বাহার, সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাসসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
আরও পড়ুন: বন কর্মকর্তার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়: পরিবেশমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় জনগণের পাশে থাকবে: পরিবেশমন্ত্রী
বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের ৩৩ শতাংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়: ড. দেবপ্রিয়
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বাংলাদেশ একটি অনিশ্চিত আর্থিক অবস্থার মধ্যে রয়েছে, যেখানে রাজস্বের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হয়।
ড. ভট্টাচার্যের মতে, সরকারের মোট ঋণের দুই-তৃতীয়াংশ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আসে, যার ফলে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ প্রায় ৮৫০ ডলারে পৌঁছায়।
বৃহস্পতিবার(৪ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এশিয়া ফাউন্ডেশন-বাংলাদেশের অংশীদারিত্বে সিপিডি আয়োজিত 'বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের পরিস্থিতি: উদ্বিগ্ন হওয়ার কি কোনো কারণ আছে?' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
ড. দেবপ্রিয় বাংলাদেশের ঋণ কাঠামোর জটিলতার ওপর আলোকপাত করেন সেমিনারে।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।
ড. দেবপ্রিয় পরিস্থিতির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, 'জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজস্ব ব্যয়ের ৩৪ শতাংশ ঋণ পরিশোধে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, এই পরিসংখ্যানে অভ্যন্তরীণ ঋণের জন্য ২৮ শতাংশ এবং বৈদেশিক ঋণের জন্য ৫ শতাংশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা মাত্র তিন বছরে ২৬ শতাংশ থেকে ৩৪ শতাংশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: এমপিদের সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি তদন্ত করতে হবে: সিপিডির মুস্তাফিজুর রহমান
কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০১৮-১৯ সাল থেকে ঋণ গ্রহণের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, রাজস্ব বাজেট এখন এতটাই টানাটানি যে, উন্নয়ন প্রকল্পে এক পয়সাও অর্থায়ন করা সম্ভব নয়।
ঋণ পরিশোধের বৃহত্তর প্রভাব তুলে ধরে ড. দেবপ্রিয় অর্থনীতিবিদদের সতর্কবাণীর প্রতি নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাখ্যানমূলক মনোভাবের সমালোচনা করেন। তিনি ২০২৪ সালে বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে দুই বছর আগে করা নিজের ভবিষ্যদ্বাণীর কথা উল্লেখ করেন। ২০২৫ সাল থেকে শুরু করে ২০২৬ সালে ঋণ পরিশোধে প্রত্যাশিত অস্বস্তির ওপর জোর দেন তিনি।
আরও পড়ুন: আ.লীগ ছাড়া সবাই বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বন্ধ করতে চায়: সিপিডি
তিনি বেসরকারি খাতের ঋণের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, মোট ঋণের ৮০ শতাংশই সরকারি ঋণ, বাকি ২০ শতাংশ বেসরকারি খাত। তিনি দেশের দায় ও বিনিময় খাতে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রভাবের ওপর জোর দিয়ে ব্যক্তিগত ঋণ এবং এর ব্যবহার দেশে বা বিদেশে যেখানেই হোক না কেন, অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের আহ্বান জানান।
বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণ একত্রিত করে ড. ভট্টাচার্য মাথাপিছু দায়বদ্ধতার বোঝার উপর জোর দিয়েছিলেন, যা কেবল বৈদেশিক ঋণের জন্য ৩১০ ডলারে দাঁড়িয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ঋণের ক্ষেত্রে প্রায় ৮৫০ ডলারে উন্নীত হয়। বাংলাদেশের ঋণ পরিস্থিতির এই সামগ্রিক বিশ্লেষণ সামনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় রাজস্বের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতা ও কৌশলগত পরিকল্পনার জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে।
আরও পড়ুন: এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার-সোনালির দাম বেড়েছে ১০-৩০ টাকা
'ইন্ডিয়া আউট' ক্যাম্পেইন: বাংলাদেশের সঙ্গে 'দৃঢ় ও গভীর' সম্পর্কের কথা জানাল ভারত
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে শক্তিশালী ও গভীর করার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে ভারত। একই সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে দৃঢ় ও বহুমুখী বলে বর্ণনা করেছে দেশটি।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল 'ইন্ডিয়া আউট ক্যাম্পেইন' সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে এই বিবৃতি দিয়েছেন।
অর্থনীতি, বিনিয়োগ, উন্নয়ন, যোগাযোগ ও জনগণের মধ্যে বিনিময়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত-বাংলাদেশ অংশীদারিত্বের বিস্তৃত পরিসর উল্লেখ করে ভারত-বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের অনেক ক্ষেত্র তুলে ধরেন জয়সওয়াল।
আরও পড়ুন: ভারতীয় পণ্য বর্জনে বিএনপি দেশের অর্জন ধ্বংস করতে চায়: কাদের
তিনি বলেন, 'আপনারা যেকোনো মানবিক প্রচেষ্টার নাম বলুন, তা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’
অংশীদারিত্বের গতিশীলতার উপর আরও জোর দিয়ে মুখপাত্র বলেন, ‘এতেই বোঝা যায় যে অংশীদারিত্ব কতটা প্রাণবন্ত এবং এটি অব্যাহত থাকবে।’
আরও পড়ুন: নতুন সরকার গঠনের পর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারত ও চীন যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী