বিদেশ
খালেদার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি হয়নি: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর অনুমতি নিয়ে কোনো রাজনীতি হয়নি।
তিনি বলেন, এ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করেছেন।
বুধবার (৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: আমলযোগ্য অপরাধ ছাড়া বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের সুযোগ নেই: আইনমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, এটা আইনি ব্যাপার, এখানে রাজনীতির কোনো প্রশ্ন নেই। তার (খালেদা জিয়া) পরিবার দরখাস্ত করেছিল, সেটা নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, আইনে কোথাও নেই তাকে এই দরখাস্তে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যায়। বিদেশ যেতে পারবেন না বলে আগেই শর্ত দেওয়া ছিল, এখন সেটিকে পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ নেই।
যে দুই শর্তে খালেদা জিয়াকে দণ্ড স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হয়েছে তা পরিবর্তন করা যায় কি না- এ প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, আইনে আছে শর্তযুক্ত অথবা শর্তমুক্ত। শর্ত যদি দেওয়া হয় তা মানতে হবে।
তিনি বলেন, আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রীর যে ক্ষমতা তিনি প্রয়োগ করেছেন, এটা পুনরায় প্রয়োগ করার সুযোগ নেই।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিষয়ে আইনমন্ত্রী কারো নাম উল্লেখ না করে বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইলে দোষ স্বীকার করে চাইতে হয়। বিষয়টি যিনি ক্ষমা চাইবেন তার বিষয়। এটা হচ্ছে সাংবিধানিক অধিকার, যে কেউ রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে পারে।
আরও পড়ুন: হাসিনা-বাইডেন নয়, বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার সেলফি: আইনমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে সরকারের কিছু করার নেই: আইনমন্ত্রী
বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করুন: লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী
বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাজ করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য আমি আপনাদের সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষ হচ্ছে আজ
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বিদেশে বসবাসরত একদল লোক ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের বিরুদ্ধে অপবাদ দিচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, কিছু লোক; যারা বিভিন্ন অপরাধ বা অপকর্ম বা দুর্নীতি করে দেশ ত্যাগ করেছে এবং অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে চাকরি হারিয়েছে, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়াচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, তারা (সরকারের) কোনো ভালো ও উন্নয়নমূলক কাজ দেখতে পায় না, বরং সবসময় ত্রুটি খুঁজে বের করে।
এই ঘৃণ্য অপপ্রচার মোকাবিলায় ডিজিটাল ও সামাজিক প্লাটফর্মে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য দলীয় সদস্যদের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের সামনে তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সমালোচকদের (সরকার ও এর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের) সারা বাংলাদেশে ভ্রমণের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ বাংলাদেশে কোনো অভিযোগ শোনা যায় না। আমি দাবি করতে পারি, বাংলাদেশের গ্রামীণ জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে তাদের উন্নত জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সব কাজ আমরা করব।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশে দারিদ্র্য ৪১ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশে নেমে এসেছে। চরম দারিদ্র্য মাত্র ৫ শতাংশে নেমে এসেছে এবং বেকারত্বের হার এখন মাত্র ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ও অন্যান্য সামরিক স্বৈরশাসকরা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করায় তারা ১৯৮০ সালে লন্ডন থেকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন শুরু করে।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচনের আগে আন্দোলনের নামে অগ্নিসংযোগ ঘটলে সহ্য করা হবে না: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করায় ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা প্রত্যক্ষ করছে।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ফলে দেশে এই অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা দেশের অভ্যন্তরে অগ্নিসন্ত্রাসের মতো স্থানীয় ও বৈশ্বিক বিভিন্ন প্রতিকূলতা অতিক্রম করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাবা দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, এই স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করা যাবে না। এই স্বাধীনতার সুফল দেশের সব মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে, আর এ জন্যই আমার সংগ্রাম।
প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের কথা শোনেন।
তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মহিলা লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সর্বসম্মতিক্রমে সম্মেলন ও নতুন কমিটি গঠনের মাধ্যমে সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান।
এসময় বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
মঞ্চে ছিলেন লন্ডনে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। এছাড়াও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের আ.লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আ.লীগ নেতা আল মামুনের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
অবিলম্বে খালেদাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান বিএনপির
প্রবীণ নাগরিকের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করে দলের অসুস্থ চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে যত দ্রুত সম্ভব উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সঠিক চিকিৎসা পাওয়া একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। বেগম খালেদা জিয়া দেশের একজন প্রবীণ নাগরিক। সংবিধান তার জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত করেছে।’
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দলের চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ফখরুল।
তিনি বলেন, দেশে যে রোগের চিকিৎসা করা যায় না, তার চিকিৎসার জন্য খালেদাকে বিদেশে যেতে বাধা দেওয়া সংবিধানকে উপেক্ষা করার শামিল।
বিএনপি নেতা অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আমাদের নেত্রীকে (খালেদা) সংবিধানে দেওয়া চিকিৎসা সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা অন্যায্য, অমানবিক ও অসাংবিধানিক।’
তিনি বলেন, আইনের অজুহাতে গুরুতর অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করার কোনো সুযোগ নেই।
ফখরুল বলেন, দেশে বিএনপি চেয়ারপার্সনের চিকিৎসা অসম্ভব। ‘সরকার অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আইনের অজুহাতে তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন: খালেদাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ক্ষমতা রয়েছে সরকারের: আইন বিশেষজ্ঞরা
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে অন্যায়ভাবে হত্যার পরিণতি কখনোই ভালো হতে পারে না। তাই আমরা আবারও সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, আমাদের নেত্রীকে নাগরিক হিসেবে তার মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিন।
অন্যথায়, একজন গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় প্রবীণ নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার অস্বীকার করা এবং তার প্রতি অবৈধ, অমানবিক ও নিষ্ঠুর মনোভাব দেখানোর জন্য সরকার দায়ী থাকবে।
এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার তার নিঃশর্ত মুক্তি এবং তার জীবন বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে একটি ‘উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে’ চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে একটি আবেদন জমা দেন।
তবে, আইন মন্ত্রণালয় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি প্রত্যাখ্যান করেছে পরামর্শ দিয়েছে যে তাকে প্রথমে কারাগারে ফিরতে হবে এবং এরপরই এই বিষয়ে অনুমতি পেতে আদালতে আবেদন করতে পারেন তিনি।
লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন বলে গত ৯ আগস্ট থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন খালেদা।
সরকার খালেদাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ায় বিএনপি কী করতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, চিকিৎসকরা তাকে দেশেই সম্ভাব্য সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাকে জোর করে বিদেশে নিয়ে যেতে পারি না। এটা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়... আমরা বিশ্বাস করি জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন নিশ্চিত হবে এবং তারপর তার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’
ফখরুল বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ১৯৭৯ সালে ১০ বছরের সাজা ভোগ করে কারাগারে থাকা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের নেতা আ স ম আবদুর রবকে চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে যেতে দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, একইভাবে ১৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম ২০০৮ সালে ১/১১ সরকার তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছিল। ‘এমন আরও উদাহরণ রয়েছে।’
লন্ডনে খালেদাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘অশালীন’ মন্তব্যের জন্য ফখরুল বলেন, এটা বর্তমান সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমি লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই... একজন দায়িত্বশীল প্রধানমন্ত্রী এমন অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতে পারেন তা আমরা কল্পনাও করতে পারি না।’
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে খালেদা জিয়াকে নিয়ে মিথ্যা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী: ফখরুল
বিএনপি নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যও প্রমাণ করে যে তিনিই এই দেশের একমাত্র মালিক এবং তিনিই বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করেন। ‘তিনি আইন ও প্রশাসনের পরোয়া করেন না এবং সমস্ত অপকর্মের আদেশদাতা।’
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন তা অমানবিক ও প্রতিহিংসাপরায়ণ বলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে এবং খালেদাকে বাদ দিয়ে বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে না। ‘এটা আমাদের স্পষ্ট অবস্থান। আমি আবার এটি পুনরাবৃত্তি করেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলু।
আরও পড়ুন: খালেদার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি না দেওয়ায় সরকারকে ‘কাপুরুষ’ বললেন ফখরুল
খালেদাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ক্ষমতা রয়েছে সরকারের: আইন বিশেষজ্ঞরা
সরকার তার বিবেচনার ক্ষমতা ব্যবহার করে বিদেশে চিকিৎসা নিতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে যেতে দিতে পারে বলে মত দিয়েছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। যদিও আইন মন্ত্রণালয় বলছে আইনি বাধার কারণে তাদের কিছু করার নেই।
চলতি সপ্তাহে ইউএনবিকে দেয়া এক বক্তব্যে আইন বিশেষজ্ঞরা যুক্তি দেন, সরকার যখন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ অষ্টমবারের মতো বাড়িয়েছে, তখন ‘মিমাংসিত বিষয়(পাস্ট অ্যান্ড ক্লোজড ট্রানজেকশন)’বিবেচনায় নিয়ে আবেদনের বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইভাবে শর্ত প্রত্যাহার বা পরিবর্তন করে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতিও দেওয়া যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেছেন, সরকার ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ধারা ৪০১(১) অনুসারে খালেদাকে দেশ ছাড়ার অনুমতি দিয়ে নতুন নির্বাহী আদেশ জারি করতে পারে।
সিআরপিসি ধারা ৪০১ (১) -এর উদ্ধৃতি দিয়ে তারা বলেছে, সরকার যেকোনো সময় শর্ত ছাড়াই খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত বা মওকুফ করতে পারে।
গত ১ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে করা আবেদন প্রত্যাখ্যান করে আইন মন্ত্রণালয় পরামর্শ দেয় যে তাকে প্রথমে কারাগারে যেতে হবে এবং তারপরেই কেবল এ বিষয়ে অনুমতি পেতে আদালতে আবেদন করতে পারেন।
৫ সেপ্টেম্বর খালেদার ভাই শামীম ইস্কান্দার তার নিঃশর্ত মুক্তি এবং তার জীবন বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে ‘উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে’ চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে একটি আবেদন জমা দেন।
জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী নিষ্পত্তি হওয়া রিট আবেদনটি শুনানির কোনো সুযোগ নেই। ‘আমরা মতামত দিয়েছি যে ৪০১ ধারায় নিষ্পত্তি করা পিটিশনটি একটি ‘মিমাংসিত বিষয়(পাস্ট অ্যান্ড ক্লোজড ট্রানজেকশন)’। এটি চালুর আর কোনো সুযোগ নেই।’
আরও পড়ুন: উন্নত চিকিৎসায় বিদেশে যেতে খালেদা জিয়াকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে: আইনমন্ত্রী
মন্তব্য জানতে চাইলে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ও ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন আইনজীবী এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
জানতে চাইলে বিশিষ্ট আইনবিদ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, সরকার শর্ত সাপেক্ষে বা শর্ত ছাড়াই যে কোনো বন্দীর সাজা স্থগিত করতে পারে বা শাস্তির সম্পূর্ণ বা কোনো অংশ মওকুফ করতে পারে।
তিনি বলেন, সিআরপিসির ৪০১ (১) ধারা অনুযায়ী সরকার দুটি শর্তে তার সাজা স্থগিত করে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘প্রথম শর্তটি ছিল তার মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস এবং দ্বিতীয় শর্ত ছিল তাকে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে হবে।’
তিনি বলেন, প্রথম শর্ত পরিবর্তন করে সরকার কয়েকবার তার কারাদণ্ডের স্থগিতাদেশ বাড়িয়েছে, কিন্তু এই শর্ত পরিবর্তনের জন্য খালেদা জিয়াকে আর কারাগারে যেতে হয়নি। ‘এর মানে হলো সরকার তার বিবেচনার ক্ষমতা দিয়ে এটি করেছে।’
একইভাবে দ্বিতীয় এই শর্ত তাকে অবশ্যই ঢাকায় চিকিৎসা নিতে হবে। সরকার এটি পরিবর্তন করে বলতে পারে যে তিনি যেকোনো 'উপযুক্ত' হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারবেন।
তিনি বলেন, সরকার যদি তা করে, তাহলে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে কোনো আইনি বাধা থাকবে না।
আইনবিদ বলেছেন, তিনি আইনমন্ত্রীর সিআরপিসি ধারা ৪০১(১) -এর ব্যাখ্যার সঙ্গে একমত নন। চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি নিয়ে খালেদা জিয়াকে কেন আবার কারাগারে যেতে হবে তা আমার বোধগম্য নয়।
আরও পড়ুন: খালেদার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি না দেওয়ায় সরকারকে ‘কাপুরুষ’ বললেন ফখরুল
তিনি বলেন, সরকার ৪০১ (১) ধারা অনুযায়ী তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে এবং এটি আরও কিছু শর্ত যোগ করতে পারে যেমন তিনি বিদেশে রাজনীতি করতে পারবেন না এবং তাকে অবশ্যই চিকিৎসার পর দেশে ফিরে আসতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. মালিক আরও বলেন, তিনি মনে করেন না খালেদার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার জন্য আদালতে যাওয়ার প্রয়োজন আছে, যখন সরকার তার নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করে এটি করতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী শিশির মনির ড. মালিকের মতো একই ধরণের মতামত দেন। তিনি বলেন, সরকার যদি সদিচ্ছা দেখায়, তবেই খালেদা জিয়াকে অনুমতি নিতে বা বিদেশে চিকিৎসা নিতে কারাগারে যাওয়ার দরকার নেই।
তিনি বলেন, সিআরপিসির ৪০১ (১) ধারা অনুযায়ী বিএনপি প্রধানকে মুক্তি দেওয়ার সময় সরকার শর্তসাপেক্ষে ক্ষমতা প্রয়োগ করেছে। ‘তারা (সরকার) এখন কোনো শর্ত ছাড়াই এ ধরনের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে।’
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে খালেদা জিয়াকে নিয়ে মিথ্যা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী: ফখরুল
আইনজীবী বলেন, এটি সিআরপিসি’র ৪০১(১) ধারায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সরকার যে কোনও সময় তার বিবেচনার ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারে। ‘সুতরাং, সিআরপিসি’র ৪০১ (১) ধারায় খালেদা জিয়ার নতুন আবেদন পুনর্বিবেচনার সুযোগ নেই বলে আইনমন্ত্রীর বক্তব্য আইনত গ্রহণযোগ্য নয়।’
তিনি বলেন, সরকার নতুন করে নির্বাহী আদেশ দিলেই খালেদাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার আইনি বাধা দূর করতে পারে।
শিশির বলেন, এটা কোনো ‘মিমাংসিত বিষয়(পাস্ট অ্যান্ড ক্লোজড ট্রানজেকশন)’ নয় কারণ সরকার প্রতি ছয় মাস অন্তর খালেদার মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে। ‘যেহেতু সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়াচ্ছে, এটা কোনো ‘মিমাংসিত বিষয়(পাস্ট অ্যান্ড ক্লোজড ট্রানজেকশন)’ নয়। তাই আইনমন্ত্রীর ব্যাখ্যা স্ববিরোধী।’
তিনি বলেন, সরকার বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাজা স্থগিত করেছে এবং আদালতের পরামর্শ ছাড়াই নির্বাহী আদেশে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়েছে। তাই খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদনের বিষয়ে আদালত নয়, সরকারই সিদ্ধান্ত দিতে পারে।
বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, সিআরপিসির ৪০১ ধারায় স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে, সরকার তার নির্বাহী আদেশে একজন দণ্ডিত ব্যক্তিকে মুক্তি দিতে এবং বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে।
তিনি বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনে রাষ্ট্রীয় বন্দিদের বিদেশে চিকিৎসার জন্য মুক্তি দেওয়ার নজির রয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার আবেদন আমলে নেয়নি সরকার।
২০২০ সালের মার্চ মাসে সরকার খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের সাজা স্থগিত করে এবং তার পরিবারের একটি আবেদনের জবাবে তাকে দুটি শর্তে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়।
লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। গত ৯ আগস্ট থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: আবারও সিসিইউতে খালেদা জিয়া
খালেদার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি না দেওয়ায় সরকারকে ‘কাপুরুষ’ বললেন ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান ‘কাপুরুষোচিত’ সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে না দিয়ে তাকে হত্যা করতে চায়।
তিনি বলেন, বর্তমান অনির্বাচিত ও গণবিরোধী সরকার তাকে চিকিৎসার কোনো সুযোগ না দিয়ে হত্যা করতে চায় বলে দেশের জনগণ ক্ষোভে ফেটে পড়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী: ফখরুল
সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিনা চিকিৎসায় খালেদা জিয়াকে হত্যার জন্য সরকার জনগণকে বিভ্রান্ত করতে প্রতারণা ও আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, তারা ভীত ও কাপুরুষ। তারা জানে, খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে জনগণের মাঝে ফিরে এলে তাদের সিংহাসন ভেঙে পড়বে।
সোমবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘অন্যায্য’ বন্দিদশা থেকে মুক্তি, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের দাবিতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১/১১ এর রাজনৈতিক পরিবর্তনের সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কানের সমস্যার চিকিৎসার জন্য কারাগার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেও খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে সরকার বিভিন্ন আইন দেখাচ্ছে।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া যখন জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে আছেন, তখন আপনারা এসব কথা বলছেন কেন?
বিএনপি নেতা বলেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে দিতে রাজি নয়।
তারা চায় না বেগম জিয়া সুস্থ হয়ে উঠুক এবং তারা তাকে রাজনীতি করতে দিতে চায় না। আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, এ দেশে কোনো বিরোধী দল থাকবে না।
একমাত্র তারাই এ দেশে সরকার পরিচালনা করবে। তাদের বক্তব্য থেকে মনে হয়, তারাই এ দেশের একমাত্র মালিক এবং আমরা সবাই তাদের প্রজা।
লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট, চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ৯ আগস্ট থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে করা আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো একটি আবেদন পাওয়ার পর আইন মন্ত্রণালয় এ অভিমত ব্যক্ত করে।
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার সাজার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে খালেদা জিয়াকে নিয়ে মিথ্যা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী: ফখরুল
ক্ষমতায় থাকার জন্য খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে: ফখরুল
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সুযোগ নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সুযোগ নেই।
সোমবার (২ অক্টোবর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান।
আরও পড়ুন: খালেদাকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে যেহেতু আইনি জটিলতা রয়েছে, তাই সেই পত্র আমি আইন মন্ত্রণালয় পাঠিয়ে দিয়েছিলাম তাদের মতামতের জন্য।
তিনি আরও বলেন, যে মতামতটা আসছে সেই মতামত বোধহয় তাদের (খালেদা জিয়ার পরিবার) পক্ষে আসেনি। এটা দেওয়া সম্ভব নয় বলে আইন মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের জানিয়েছে।
তিনি বলেন, এখন আমাদের আর কিছু করণীয় নেই বলে আমি মনে করছি।
সিদ্ধান্ত কি খালেদা জিয়ার পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হবে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ওনারা যদি জানতে চান আমরা অবশ্যই জানিয়ে দেব। তবে এরই মধ্যে উনি জেনে গেছেন।
তিনি বলেন, তাদের কোনো কিছু জানার থাকলে, কথা বলতে পারেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত যেটা সেটা পরিবর্তন হওয়ার সুযোগ এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই।
আরও পড়ুন: ভিসা নীতি আমেরিকার নিজস্ব ব্যাপার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য আদালতের অনুমতি লাগবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার আবেদন নাকচ আইন মন্ত্রণালয়ের
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে করা আবেদন নাকচ করে দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।
রবিবার (১ অক্টোবর) সচিবালয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো একটি আবেদন পাওয়ার পর আইন মন্ত্রণালয় এ অভিমত ব্যক্ত করে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার শর্তসাপেক্ষে মুক্তির মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানো হবে: আইনমন্ত্রী
এর আগে শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে।
রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া বেশ কয়েকটি মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন এবং তিনি কারাগারে ছিলেন। কিন্তু তার স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী তার সাজা স্থগিত করে বাসায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তার জন্য সম্ভাব্য সর্বোত্তম চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার জন্য তার ভাই আবেদন করলেও কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে আল্টিমেটাম দেন।
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার সাজার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, খালেদা জিয়াকে তার ঢাকার বাসভবন থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং এই সময়ের মধ্যে তাকে বিদেশে যেতে দেওয়া হবে না।
ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শুক্রবার বিকালে কেবিন থেকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী বিকালে খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন ৭৮ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: আবারও সিসিইউতে খালেদা জিয়া
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি, সিসিইউতে স্থানান্তর
খালেদাকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইডিইবি) ভবনে আইডিইবির জেলা ও সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের দুই দিনব্যাপী প্রতিনিধি সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে ছিলেন। কিন্তু তার স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী তার সাজা স্থগিত করে বাড়িতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তার সম্ভাব্য সর্বোত্তম চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: আবারও সিসিইউতে খালেদা জিয়া
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ভাই তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করলেও কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে আমরা আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এর পরে, আমরা যদি কিছু করতে চাই তবে আমাদের আইন অনুসরণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে।’
আরও পড়ুন: মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় পর্যবেক্ষণে খালেদা, কোনো উন্নতি নেই: চিকিৎসক
মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা রাস্তায় চারটি দেশের মিশনে বিশেষ নিরাপত্তা দিচ্ছিলাম। তাদের (মার্কিন) দূতাবাসে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রয়েছে। মার্কিন দূতাবাসে সর্বাধিক পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ওই চার দেশের রাষ্ট্রদূতরা যখন বাইরে যেতেন, আমরা কিছু মন্ত্রীদের মতো তাদের গাড়ির সামনে ও পেছনে পুলিশি নিরাপত্তা দিতাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তা সেবার জন্য পুলিশের পরিবর্তে আনসার গার্ড রেজিমেন্ট নিয়োগ করেছি। তারা (আনসার) যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম ও উচ্চমানের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।’
আরও পড়ুন: ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খালেদাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নিন: ফখরুল
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি বিদেশে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করবে না: দীপু মনি
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ভিসা নীতি উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ফি-এর ওপর নির্ভরশীল।
বুধবার(২৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে সিলেট নগরীতে স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সংস্থার ৫০তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ফাইনাল পর্বের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যম কর্মীরাও ভিসা নীতির মুখোমুখি হতে পারে: হাস
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি পরবর্তী নির্বাচনেও প্রভাব ফেলবে না, কারণ এতে সরকারের ওপর কোনো চাপ নেই।
দীপু মনি বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকার বদ্ধপরিকর।
তিনি আরও বলেন, আগামী বছরের প্রথম দিনে সবার হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব কামাল হোসেন এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলায়মান খান।
আরও পড়ুন: ভিসা নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কে ভাঙন ধরবে না: সালমান এফ রহমান
চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে বিদেশে পাঠান: ফখরুল
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক উল্লেখ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আজ যখন তিনি (খালেদা জিয়া) জীবনের সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আছেন, তখন তাকে আটকে রাখা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া শুধু বন্দ নন, দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক নম্বর নেত্রীও।
তিনি বরেন, তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী এবং দুইবারের বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে দেশের সেবা করেছেন।
আরও পড়ুন: অধিকারের আদিলুর ও নাসিরউদ্দিনের মুক্তি দাবি ফখরুলের
শুক্রবার বিকালে ঢাকার উত্তরায় সরকারের পদত্যাগ, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও এক দফা দাবিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ঢাকা উত্তর শাখা বিএনপি হাজার হাজার নেতা-কর্মীর অংশগ্রহণে আব্দুল্লাহপুর পলওয়াল সুপার মার্কেটসংলগ্ন মাঠে এ সমাবেশের আয়োজন করে।
ফখরুল অভিযোগ করেন, ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকার খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, চেয়ারপারসনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে। শিগগিরই তার অবস্থার অবনতি হতে পারে।
তার পরিবার, ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির দাবি সত্ত্বেও সরকার খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানোর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানবিক কারণে চিকিৎসার স্বার্থে তাকে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠানো উচিত।
ফখরুল বলেন, কারাবন্দিদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর উদাহরণ রয়েছে। এ ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনাকে চিকিৎসার জন্য আমেরিকায় পাঠানো হয়েছিল।
সমাবেশে দলের কেন্দ্রীয় ও উত্তর শাখার নেতারা বক্তব্য দেন।
এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসনকে তার মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে এভারকেয়ার হাসপাতালের কেবিন থেকে সিসিইউ-তে স্থানান্তর করা হয়।
৭৮ বছর বয়সী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
২০২০ সালে তার শর্তসাপেক্ষে মুক্তির পর থেকে বিএনপি চেয়ার হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতের পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের পর খালেদাকে পুরান ঢাকা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে একই বছর আরেকটি দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন খালেদা।
করোনাভাইরাসপ্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসায় অবস্থান এবং দেশ ত্যাগ না করার শর্তে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়।
আরও পড়ুন: সরকার পদত্যাগ না করলে দেশে সংঘাতের আশঙ্কা করছেন ফখরুল
সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত রোডমার্চ চলবে: ফখরুল