সুপ্রিম কোর্ট
আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনায় ৫ আইনজীবী কারাগারে
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনায় শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় রিমান্ড শেষে পাঁচ আইনজীবীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া আইনজীবীরা হলেন- মোহাম্মাদ ওসমান চৌধুরী, কাজী বশির আহাম্মেদ, মো. এনামুল হোসেন সুমন, মো. হাসানুজ্জামান তুষার ও মো. তরিকুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা হাফিজকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
তিন দিনের রিমান্ড শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আবুল কালাম আযাদ পাঁচ আইনজীবীকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন চেয়ে শুনানি করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের জামিনের বিরোধিতা করে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
শাহবাগ থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপপরিদর্শক (এসআই) নিজাম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে মারধর, ভাঙচুরের ঘটনায় স্বতন্ত্র সম্পাদক প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথী ও বিএনপি সমর্থিত সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২০ জন আইনজীবীকে আসামি করে শাহবাগ থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ৮ মার্চ মামলা করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী (সাইফ)। মামলায় আরও ৩০-৪০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় যুবক কারাগারে
আত্মসমর্পণ করে কারাগারে বিএনপির ৭ নেতা-কর্মী
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ আইনজীবী গ্রেপ্তার: ডিবি
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি (এসসিবিএ) নির্বাচনের ভোট গণনা চলাকালে সংঘর্ষের ঘটনায় শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় পাঁচ আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাজী বশির আহমেদ, তুষার, তরিকুল ইসলাম, সুমন ও ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরী। শুক্রবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন বলেন, ‘কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়, সে যত ক্ষমতাবানই হোক না কেন। শাহবাগ থানায় মামলা দায়েরের পর ছায়া তদন্ত করে বনানীসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচ আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।’
দেশের সর্বোচ্চ আদালতে নাশকতার ঘটনায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান ডিবি প্রধান।
তিনি বলেন, ‘সংঘর্ষে কোন গ্রুপের লোক জড়িত ছিল তা বিবেচ্য নয়। যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল, যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।’
এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে শুক্রবার রাতে ২০ জনের নাম উল্লেখ করে আর ২০-৩০ জন অজ্ঞাত আসামি করে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এস আর সিদ্দিক সাইফ বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করেন।
মামলায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক পদে যুবলীগ নেতা শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী এবং বিএনপিপন্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুসের নাম রয়েছে আসামির তালিকায়।
সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত সাতজন।
বিচারকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারকে চিঠি
সারা দেশের সব আদালত ও ট্রাইব্যুনাল এবং বিচারকদের গাড়ি ও বাসভবনের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও ঢাকার পুলিশ কমিশনারকে চিঠি পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ চিঠি পাঠান।
আরও পড়ুন: বিচারককে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য: দিনাজপুরের মেয়র জাহাঙ্গীরকে এক মাসের কারাদণ্ড
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোতে সারা দেশের বিচারকরা চরমভাবে উদ্বিগ্ন, আতঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি মহানগর দায়রা জজ আদালত, ঢাকা ও জেলা জজ আদালত এবং খুলনায় বোমা হামলা হয়েছে। ইতোপূর্বে কুমিল্লা আদালতে বিচারকের খাস কামরায় বিচারপ্রার্থীকে হত্যার ঘটনা ও সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোতে সারাদেশের বিচারকেরা চরমভাবে উদ্বিগ্ন, আতঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। দেশের বিচার ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দেশের সবগুলো আদালত ও ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ, বিচারকদের বহনকারী গাড়ি ও বাসভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অতি জরুরি।
সারা দেশের সবগুলো আদালত ও ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ এবং বিচারকদের বহনকারী গাড়ি ও বাসভবনের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
এ অবস্থায় সারাদেশের সবগুলো আদালত ও ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ, বিচারকদের বহনকারী গাড়ি এবং বাসভবনে সার্বক্ষণিক পুলিশি পাহারা ও পর্যাপ্ত পুলিশ ফোর্স মোতায়েনসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।
আরও পড়ুন: তারেক-জোবাইদাকে দোষী সাব্যস্ত করা নিম্ন আদালতের বিচারককে হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি
বগুড়ায় বিচারকের সই জাল করে আসামিদের অব্যাহতি, সাবেক পেশকারসহ গ্রেপ্তার ৫
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে জামায়াত ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে: বিএনপি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বলেছে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। কারণ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দলের আপিল খারিজ করে দিয়েছে।
সোমবার (২০ নভেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে ‘অন্যায়’ রায় দিয়ে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করার ঘটনা বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়।
তিনি বলেন, ‘যদিও দেশের জনগণ এই রায়ে (জামায়াতের বিরুদ্ধে) বিস্মিত হয়নি। তারা ন্যায়বিচারের শেষ অবলম্বন বিচার বিভাগের ব্যক্তিদের রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট বক্তব্য এবং সরকারের ইচ্ছা পূরণে সহায়তা করার ঘটনায় হতাশ।’
বিএনপি নেতা বলেন, জামায়াত ইতোমধ্যেই এই রায়কে 'বিচারহীন' বলে বর্ণনা করেছে।
রিজভী আরও বলেন, যে কোনো বিরোধী দল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিচার বিভাগ কর্তৃক তার গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা পাওয়ার যোগ্য। ‘এর কোনো ব্যতিক্রম গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। এটাও অগ্রহণযোগ্য।’
পুলিশকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেলসহ বিএনপির ১৪ নেতা-কর্মীকে দেড় বছরের কারাদণ্ডের ঢাকার আদালতের রায়ের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।
আরও পড়ুন: বুধবার থেকে আবারও বিএনপির ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে মাঠ পরিষ্কার করার জন্য এই নির্দেশিত রায়গুলো ভালভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। এই তরুণ নেতাদের সাজা দিয়ে যদি আটক করা যায়, তাহলে শেখ হাসিনার অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘকাল চলবে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, এই নেতাদের সাজা দেওয়া হয়েছে।’
এর আগে রবিবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ জামায়াতে ইসলামীর দায়ের করা লিভ-টু-আপিল খারিজ করে, হাইকোর্টের একটি রায়কে চ্যালেঞ্জ করে যা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধন বাতিল করেছে।
শুনানির নির্ধারিত তারিখে অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলীসহ দলের আইনজীবীদের ঘন ঘন অনুপস্থিতির কারণে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ বরখাস্তের আদেশ দেন।
রাজনৈতিক দল হিসেবে ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে নিবন্ধন দেয় ইসি।
এই নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট আবেদন করেন তরীকত ফেডারেশনের তৎকালীন মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি।
আবেদনে তারা বলেন, জামায়াত একটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল এবং এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না।
আরও পড়ুন: বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অপপ্রচার একতরফা নির্বাচনের কৌশল: রিজভী
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে হরতাল উপলক্ষে বিএনপি ও জোটের সমাবেশ
জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল: দলের আপিল খারিজ সুপ্রিম কোর্টের
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রবিবার (১৯ নভেম্বর) হাইকোর্টের একটি রায়কে চ্যালেঞ্জ করে জামায়াতে ইসলামীর দায়ের করা লিভ-টু-আপিল খারিজ করে দিয়েছে।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ শুনানির নির্ধারিত তারিখে অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলীসহ দলের আইনজীবীদের ঘন ঘন অনুপস্থিতির কারণে এ খারিজের আদেশ দেন।
আইনজীবী এ জে আলীর প্রতিনিধি জিয়াউর রহমান রবিবার শুনানির জন্য সময় চাইলেও আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেন।
রিট আবেদনকারীর প্রতিনিধিত্বকারী অ্যাডভোকেট তানিয়া আমির বলেন, খারিজের আদেশের পর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্টের রায় কার্যকর থাকবে।
জামায়াত নিযুক্ত আইনজীবী এ জে আলী তার ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আপিল শুনানির জন্য হাইকোর্টের কাছে এর আগে ছয় সপ্তাহের সময় চেয়েছিলেন, কিন্তু আপিল বিভাগ সময় আবেদন নাকচ করে দেন।
আরও পড়ুন: জামায়াতে ইসলামীর কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা ও আদালত অবমাননার অভিযোগের শুনানি ৬ নভেম্বর
পরে গত ১২ নভেম্বর জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের আবেদনের শুনানির জন্য ১৯ নভেম্বর দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।
এর আগে গত ৬ নভেম্বর হাইকোর্টের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে জামায়াতে ইসলামীর করা আবেদনের শুনানির জন্য ১২ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।
রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের অভিযোগে দায়ের করা মামলার এজাহার না দেওয়া পর্যন্ত সমাবেশ ও মিছিলসহ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করতে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব রেজাউল হক চাঁদপুরীর পক্ষে গত ২৬ জুন আইনজীবী তানিয়া আমীর একটি আবেদন করেন।
২০০৯ সালে চাঁদপুরী এবং আরও ২৪ জনের দায়ের করা একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের আগস্টে হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে।
আবেদনে তারা বলেন, জামায়াত একটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল এবং এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না।
হাইকোর্টের রায়ের পর জামায়াতের নিবন্ধন স্থগিত রাখে ইসি।
২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর ইসি হাইকোর্টের আদেশ মেনে রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে নাশকতার মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৪৪ নেতাকর্মীর বিচার শুরু
চট্টগ্রামে নাশকতা মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৪৬ জনের বিচার শুরুর আদেশ
নির্বাচন আয়োজন নিয়ে পিটিআইয়ের আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট
৯০ দিনের মধ্যে দেশব্যাপী নির্বাচন চেয়ে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) করা আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তানভিত্তিক জিও নিউজের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের গণমাধ্যম এএনআই।
সাবেক ক্ষমতাসীন জোট সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার আগে প্রাসঙ্গিক ফোরামের কাছে না যাওয়ায় আবেদনটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।
আবেদনে পিটিআই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভিকে বিবাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তবে রেজিস্ট্রার বলেছেন, ২৪৮ ধারা অনুযায়ী প্রেসিডেন্টকে পিটিশনের অংশ করা যাবে না।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার আরও বলেছেন যে আবেদনকারীর কোন মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে তা ‘পিটিশনে উল্লেখ করা হয়নি। পিটিশনটি ১৮৪/৩ ধারার অধীনে আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে না।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর শপথ
পিটিআই গত আগস্টে বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে পাকিস্তানে নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেছিল।
আবেদনকারী পিটিআই-এর মহাসচিব ওমর আইয়ুব, সুপ্রিম কোর্টকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আলভিকে নির্বাচনের তারিখ দেওয়ার জন্য এবং পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনকে (ইসিপি) সেই অনুযায়ী নির্বাচনের সময়সূচি জারি করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।
জিও নিউজ জানিয়েছে, আইয়ুব সংবিধানের ১৮৪(৩) অনুচ্ছেদের অধীনে পিটিশনটি দাখিল করেন এবং আদমশুমারিকে অবৈধ ও বাতিল হিসেবে অনুমোদন দিয়ে ২০২৩ সালের ৫ আগস্টের সাধারণ স্বার্থ কাউন্সিলের (সিসিআই) সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার জন্য আদালতকে অনুরোধ করেছিলেন। এটি ছিল সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা দ্বিতীয় পিটিশন।
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের (এসসিবিএ) সভাপতি আবিদ এস জুবায়েরি সুপ্রিম কোর্টে একই আবেদন করেছিলেন।
জুবায়েরি ব্যারিস্টার আলী জাফরের মাধ্যমে পিটিশনটি দাখিল করেন।
তাতে তিনি ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট তারিখ পরিসংখ্যান ব্যুরোর বিজ্ঞপ্তিটিকে বেআইনি, বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করার অনুরোধ করেন।
২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট ইসিপি’র প্রস্তাবিত বিজ্ঞপ্তিটিকে বেআইনি ও অকার্যকর ঘোষণা করার জন্য আদালতকে অনুরোধ করেছিলেন তিনি।
পিটিআই আদালতকে অনুরোধ করেছেন, সিন্ধু রাজ্যপালকে সিন্ধু জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে এবং নির্বাচনী সংস্থাকে সেই অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল জারি করতে বলা হবে এবং বেলুচিস্তান প্রদেশের জন্যও একই নিয়ম মানা হবে।
আরও পড়ুন: আনোয়ার-উল-হক কাকার পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত
জিও নিউজ জানিয়েছে, ইসিপি আরও বলেছে যে পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়া বিধানসভার নির্বাচন আদালতের রায় অনুসারে এবং আদালত কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে।
পিটিআই পিটিশনে বলেছে, জাতীয় পরিষদের নির্বাচন বিলম্বিত করার অজুহাত হিসেবে ইসিপি’র করা আদমশুমারি ব্যবহার করা হচ্ছে।
পাকিস্তানভিত্তিক ডন জানিয়েছে, ১৩ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সিকান্দার সুলতান রাজাকে একটি চিঠিতে ৬ নভেম্বর জাতীয় নির্বাচনের তারিখ হিসেবে প্রস্তাব করেছিলেন।
চিঠিতে প্রেসিডেন্ট আলভি বলেছেন, তিনি ৯ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে অংশীজনদের মধ্যে মতামত বিভক্তের কারণে সিইসিকে প্রেসিডেন্ট এই পরামর্শ দেন।
তিনি সংবিধানের ৪৮ (৫) অনুচ্ছেদও উদ্ধৃত করেছেন।
ডনের রিপোর্ট অনুযায়ী, আলভী বলেন যে সভাপতিকে বিধানসভা 'বিলুপ্তির তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করার জন্য ক্ষমতা ও আদেশ দেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের ইমরান খানের বিরুদ্ধে যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়া মানার আহ্বান জাতিসংঘ প্রধানের
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘তাই অনুচ্ছেদ ৪৮ (৫) অনুসারে জাতীয় পরিষদের সাধারণ নির্বাচন সাধারণ পরিষদ ভেঙে দেওয়ার তারিখের ৮৯তম দিনের মধ্যে, অর্থাৎ ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।’
ডন জানিয়েছে, চিঠিতে আলভি আরও বলেছেন যে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা পূরণের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সিইসিকে সাংবিধানিক অভিপ্রায় এবং আদেশ বাস্তবায়নের উপায় নির্ধারণ করার জন্য একটি বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
তিনি আরও বলেছেন, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন ও পরিচালনার জন্য 'অনুচ্ছেদ ৫১, ২১৮, ২১৯, ২২০ এবং নির্বাচন আইন, ২০১৭'-এর অধীনে নির্ধারিত সমস্ত সাংবিধানিক ও আইনি পদক্ষেপগুলো মেনে চলা পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) দায়িত্ব।
সুপ্রিম কোর্টে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধের রায় কঠোরভাবে অনুসরণের নির্দেশ
সুপ্রিম কোর্টে সমাবেশ ও মিছিল না করার বিষয়ে ২০০৫ সালের উচ্চ আদালতের একটি রায় কঠোরভাবে অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বুধবার (৩০ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন- বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম।
একই সঙ্গে দুই বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করার প্রেক্ষাপটে বিএনপি সমর্থক সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে যে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়েছে সে বিষয়ে শুনানির জন্য ১৯ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আপিল বিভাগে মেয়র জাহাঙ্গীরের নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা
আদালত অবমাননার আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন- নাহিদ সুলতানা যুথি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
আদেশের পরে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সব আদালত প্রাঙ্গণে কোনো ধরনের মিছিল, সভা-সমাবেশ ও লিফলেট বিতরণ করা যাবে না।
সুপ্রিম কোর্টের এ রায় এখন থেকে মানা না হলে তা হবে আদালত অবমাননা। কারণ আপিল বিভাগ আজ ২০০৫ সালে দেওয়া ওই রায় মেনে চলতে বলেছেন। নিষেধ অমান্য করে কেউ মিছিল, সভা-সমাবেশ ও লিফলেট বিতরণ করলে সেই আইনজীবী আইনি কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবে বলেও তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, মূলত ২০০৫ সালে তৎকালীন হাইকোর্টের বিচারপতি আবদুল মতিনের বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এসব নিষেধাজ্ঞা দেন। আজ থেকে সেই রায় কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে। তবে আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠা বিএনপির ৭ আইনজীবীর ক্ষেত্রে এই রায় কার্যকর হবে না বলেও জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।
গত ১৫ অগাস্ট সুপ্রিম কোর্ট আয়োজিত শোক দিবসের এক আলোচনা সভায় দুই বিচারপতি তাদের বক্তব্যে বলেন, ‘বিচারপতিরা শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’। ওই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে তাদের অপসারণ চেয়ে সংবাদ সম্মেলনের পাশাপাশি কয়েকটি কর্মসূচি পালন করেছেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিএনপি সমর্থক সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ব্যবস্থা গ্রহণ চেয়ে সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেন মো. নাজমুল হুদা নামে এক আইনজীবী। সেই আবেদন আপিল বিভাগে উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী।
বিএনপির যে সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে তারা হলেন- জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল, ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সভাপতি আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাবেক সহসম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফাহিমা নাসরিন মুন্নি এবং ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল।
বুধবার (৩০ আগস্ট) আবেদনটি শুনানির জন্য আদালতে আবেদন করেন আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথি।
এ পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা আবেদনটি অবকাশের পর শুনানি গ্রহণ করব। এরপরই ২০০৫ সালে হাইকোর্টের দেওয়া রায় কঠোরভাবে অনুসরণের আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে বিচারপতি এম.এ মতিন ও বিচারপতি এএফএম আব্দুর রহমানের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রায়ে বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে প্রধান বিচারপতিসহ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ বা মিছিল করা যাবে না। বহন করা যাবে না কোনো প্ল্যাকার্ড। এ ধরনের কর্মকাণ্ড করলে তা হবে বিচার প্রশাসনে হস্তক্ষেপের সামিল। এমনকি তা আদালত অবমাননাও বটে।
এ ছাড়া কর্মসূচি দিয়ে কোনো আইনজীবীকে মামলা পরিচালনা করতে বাধা দেওয়া যাবে না বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এই রায় গত ১৮ বছরেও মেনে চলেনি আইনজীবীদের সংগঠনগুলো।
আরও পড়ুন: বিচারপতিকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য, মেয়রকে আপিল বিভাগে তলব
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আপিল বিভাগেও খারিজ
ড. ইউনূসসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা চালানোর রাখার নির্দেশ
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় নোবেল বিজয়ী ও গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ তিনজনের করা আবেদন খারিজ করে বিচার কার্যক্রম অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
রবিবার (২০ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত নিয়মিত ও পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে নাশকতা মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৪৬ জনের বিচার শুরুর আদেশ
আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নূরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে গিয়ে অধিদপ্তরের পরিদর্শকরা দেখতে পান, ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীদের স্থায়ী হওয়ার কথা ছিল, তাদের তা করা হয়নি। তাদের জন্য কোনো অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি এবং কোম্পানির মুনাফার পাঁচ শতাংশ আইন অনুসরণ করে শ্রমিকদের দেওয়া হয়নি।
পরে গত ৭ ডিসেম্বর প্রফেসর ইউনূস মামলাটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন।
গত ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ছয় মাসের জন্য মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন।
চলতি বছরের ৬ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারের আদেশ দেন শ্রম আদালত।
পরে ড. ইউনূস অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে আবারও হাইকোর্টে রিট করেন। এরপর গত ৮ আগস্ট হাইকোর্ট আবেদনটি খারিজ করে দেন।
রবিবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন শুনানি শেষে আবেদনটি নিষ্পত্তি করেন।
আরও পড়ুন: মাইকেল জ্যাকসনের বিরুদ্ধে আনা যৌন নির্যাতনের মামলার শুনানি শুরু আপিল বিভাগে
সাঈদীর মৃত্যু: শাহবাগে জামায়াত-শিবিরের সহিংসতায় ৫ হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
সুপ্রিম কোর্টে ভাঙচুর: খোকন-কাজলসহ ১৪ জনের আগাম জামিন
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ১৪ আইনজীবীকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে ৪ আইনজীবীকে জামিন না দিয়ে ছয় সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যাদেরকে জামিন দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মো. সাগর হোসেন, মো. রেজাউল করিম রেজা, মাহবুবুর রহমান খান, মো. রবিউল আলম সৈকত, নজরুল ইসলাম ছোটন, রেদোয়ান আহমেদ রানজিব, মো. মাহমুদ হাসান, মো. কামাল হোসেন, মো. আনিসুর রহমান (রায়হান) ও খালেদ মাহমুদুর রহমান আদনান।
একইসঙ্গে ভাঙচুরের ঘটনায় সরাসরি যুক্ত থাকায় আইনজীবী নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, আ. কাইয়ুম ও উজ্জল হোসেনকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে অধস্তন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তারা সশরীরে হাজির হয়ে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন জানালে সোমবার (৮ আগস্ট) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
এর আগে গত ৩ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপির ১৮ আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
আইনজীবী সমিতির সহকারী সুপাররিনটেনডেন্ট মো. রফিকুল্লাহ বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন। তবে সেদিন বিএনপি সমর্থক এক নারী আইনজীবীর ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করতে গেলেও তা গ্রহণ করেনি শাহবাগ থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন: সাজা বহালের রায় প্রকাশ, আমান দম্পতিকে ১৫ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
জানা যায়, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে গত ৩ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষের সামনে দু’পক্ষের আইনজীবীরা স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি, হাতা-হাতি। এ পরিস্থিতি চলতে থাকে অন্তত ১০ মিনিট। এরই মধ্যে আইনজীবীরা সমিতির সভাপতির কক্ষের সামনে থাকা নেমপ্লেট খুলে ফেলেন।
পরে সমিতির সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুন নূর দুলাল বলেন, বিএনপির ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, কাজল ও সজলের নেতৃত্বে আমাদের আইনজীবীদের ওপর হামলা হয়েছে। সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর করেছে তারা।এদিকে বিএনপির ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সংবাদ সম্মেলন করে বের হওয়ার সময় আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা আমাদের এক নারী আইনজীবীর ওপর হামলা করেন। তাকে উদ্ধার করতে গেলে তারা আরও মারমুখী আচরণ করেন। সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, তারা নিজেরা ভাঙচুর করে উল্টো আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ নিয়ে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন: অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
তারেক-জুবাইদার সাজার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন, সুপ্রিমকোর্টে আইনজীবীদের দু’পক্ষের সংঘর্ষ
সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর: ২৫ আইনজীবীর আগাম জামিন
সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুরের মামলায় ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ ২৫ আইনজীবীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রবিবার (২১ মে) বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মামলায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করা পর্যন্ত তাদের জামিন দেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী।
এ সময় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পুনর্নির্বাচন দাবি সুপ্রিম কোর্ট বারের বিএনপিপন্থীদের
জামিন পাওয়া আইনজীবীরা হলেন-বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী মো. কামরুল ইসলাম সজল, বারের এডহক কমিটির আহ্বায়ক মো. মহসিন রশিদ, এডহক কমিটির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, সংবিধান সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট কাজী মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, অ্যাডভোকেট মো. ঈশা, অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, অ্যাডভোকেট মো. কাইয়ুম, অ্যাডভোকেট মো. সাগর হোসেন, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল করিম রেজা, অ্যাডভোকেট মো. উজ্জল হোসেন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট মাহফুজ বিন ইউসুফ, অ্যাডভোকেট মো. রবিউল আলম সৈকত, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম ছোটন, ব্যারিস্টার রেদোয়ান আহমেদ রানজিব, অ্যাডভোকেট মো. মাহমুদ হাসান, অ্যাডভোকেট মো. কামাল হোসেন, অ্যাডভোকেট সাকিবুজ্জামান ও আব্দুল কাইয়ুম।
গত ১৬ মে দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় দুপক্ষের ‘হাতাহাতি’র ঘটনাও ঘটে।
ঘটনার দিন রাতেই বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের আসামি করে মামলা করেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সহকারী সুপারিন্টেডেন্ট মো. রফিকউল্লাহ।
রাজধানীর শাহবাগ থানায় করা এ মামলায় ২৫ আইনজীবীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন: ঘটনা তদন্তে বিএনপি সমর্থিত ১৪ প্রার্থীর রিট
এ মামলার এজাহারে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর, হামলা, নারী আইনজীবীদের যৌন হয়রানি, এক লাখ টাকা দামের স্বর্ণের চেইন, নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং ১৫ হাজার টাকার কেসিও ঘড়ি চুরির অভিযোগ করেছেন বাদী।
গত ১৫ ও ১৬ মার্চ হট্টগোল, হামলা, ভাঙচুর, মামলা, সাংবাদিক পেটানো, প্রধান বিচারপতির কাছে নালিশ ও ধাক্কাধাক্কির মধ্যদিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুই দিনব্যাপী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
১৪টি পদের সব কটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল জয়ী হয়েছেন।
দুই দিনব্যাপী নির্বাচনের শেষদিন দিনগত রাতে এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
যদিও নির্বাচনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল বিএনপি সমর্থকরা। এরপর থেকে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আন্দোলন করে আসছেন। এর ধারাবাহিকতায় ১৬ মে মিছিল ও সমাবেশ করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। সেদিন বার সম্পাদকের কক্ষে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
আরও পড়ুন: আ.লীগ ‘তথাকথিত’ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছে: ফখরুল