ইউরোপ
মেক্সিকোতে পর্যটকবাহী নৌকায় হাঙরের ধাক্কা, আহত ৬
ক্যালিফোর্নিয়া সুর উপকূলীয় শহর লা পাজের কাছে একটি ছোট মেক্সিকান পর্যটকবাহী নৌকায় হাঙরের ধাক্কায় ছয় জন আহত হয়েছে বলে শনিবার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ওই রাজ্যের বেসামরিক প্রতিরক্ষা অফিস একটি ভিডিও ক্লিপ পোস্ট করেছে যাতে দেখা যাচ্ছে একটি খোলা নৌকা, যার শামিয়ানা আছে, পানিতে ভাসমান অবস্থায় কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
আরও পড়ুন: হাইতিতে বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ৫
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাহাজটিতে থাকা তিন জন শিশু হালকা আঘাত পেয়েছে। তবে শুক্রবার ঘটে যাওয়া ওই দুর্ঘটনার পরে দুই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। নৌবাহিনীর কর্মীরা জাহাজটিতে থাকা অন্য একজনকে চিকিৎসার জন্য একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেছে।
মেক্সিকান আইনে তিমি দেখতে আসা নৌযানকে প্রয়োজনে তিমি প্রাণীদের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে বলা আছে, তবে শুক্রবার তিমি পর্যবেক্ষণকারী নৌকাটি তা মেনে চলেনি বলে তা দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ায় অবৈধ তেল শোধনাগারে বিস্ফোরণ, নিহত অর্ধ শতাধিক
সিভিল ডিফেন্স অফিস জানিয়েছে, দুর্ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে। ভিডিও দেখা গেছে প্রাণীটি দ্রুত গতিতে এসে লাফ দিয়ে নৌকাটিকে আঘাত করে।
পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করবেন জাতিসংঘের মহাসচিব
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আগামী সপ্তাহে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পৃথকভাবে দেখা করবেন। শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, গুতেরেস মঙ্গলবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এবং ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করবেন।
পরে জাতিসংঘ জানায়, গুতেরেস ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবারের সঙ্গে দেখা করতে বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে যাবেন।
আরও পড়ুন: আগামী সপ্তাহে কিয়েভে দূতাবাস খুলবে যুক্তরাজ্য
জাতিসংঘের মুখপাত্র এরি কানেকো বলেছেন, দুই সফরেই গুতেরেস যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং মানুষকে নিরাপদে নিয়ে যেতে সহায়তা করার জন্য ‘এখনই নেয়া যেতে পারে এমন পদক্ষেপ’ নিয়ে আলোচনা করা লক্ষ্য স্থির করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গুতেরেস ইউক্রেনে শান্তি আনতে জরুরিভাবে কী করা যেতে পারে সে বিষয়ে কথা বলার আশা করছেন।’
দুই মাস আগে ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর থেকেই যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র রক্ষায় অবদানের জন্য পুরস্কার পেলেন জেলেনস্কি
আগামী সপ্তাহে কিয়েভে দূতাবাস খুলবে যুক্তরাজ্য
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, যুক্তরাজ্য আগামী সপ্তাহে ইউক্রেনের রাজধানীতে তাদের দূতাবাস পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শুক্রবার ভারত সফরের সময় বরিস জনসন পরিকল্পিত এই পদক্ষেপের ঘোষণা দেন।
পূর্ব ইউক্রেনে লক্ষ্য নির্ধারণ করায় কিয়েভ থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের পর থেকে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোর কূটনীতিকরা কিয়েভে ফিরে এসেছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে জনসন চলতি মাসে কিয়েভে একটি আকস্মিক সফর করেন।
সেসময়ে বরিস ইউক্রেনের জন্য আর্থিক ও সামরিক সহায়তার একটি নতুন প্যাকেজের কথা বলেন। এছাড়া তিনি যুদ্ধের পরে শহরটিকে (কিয়েভ) পুনর্নির্মাণে সহায়তা করার যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতির কথা জেলেনস্কিকে জানান।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র রক্ষায় অবদানের জন্য পুরস্কার পেলেন জেলেনস্কি
স্যাটেলাইট ছবিতে মারিউপোলের কাছে সম্ভাব্য গণকবরের সন্ধান
গণতন্ত্র রক্ষায় অবদানের জন্য পুরস্কার পেলেন জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গণতন্ত্র রক্ষায় অবদানের জন্য ‘জন এফ কেনেডি প্রোফাইল ইন কারেজ অ্যাওয়ার্ড’-এর জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার এ পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত পাঁচজনের মধ্যে জেলেনস্কির নাম ঘোষণা করা হয়।
জন এফ কেনেডি লাইব্রেরি ফাউন্ডেশন জেলেনস্কিকে নির্বাচিত করার বিষয়ে জানায়, তাকে নির্বাচিত করার কারণ হলো তিনি ‘তাদের দেশের জন্য জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে ইউক্রেনের জনগণের চেতনা, দেশপ্রেম ও অক্লান্ত আত্মত্যাগকে সংগঠিত করেছেন।’
পুরস্কারের জন্য মনোনীত অন্য চারজন হলেন-ওয়াইমিং-এর রিপাবলিকান ইউএস রিপাবলিকান লিজ চেনি, মিশিগান সেক্রেটারি অফ স্টেট জোসেলিন বেনসন, অ্যারিজোনা হাউসের স্পিকার রাস্টি বোয়ার্স ও জর্জিয়ার ফুলটন কাউন্টির নির্বাচনী কর্মী ওয়ান্ড্রিয়া ‘শায়ে’ মস। ফাউন্ডেশন বলছে, এ চার মার্কিন কর্মকর্তাকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বেছে নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডনবাসে হামলা শুরু করেছে রাশিয়া: জেলেনস্কি
ক্যারোলিন কেনেডি ও তার ছেলে জ্যাক শ্লোসবার্গ ২২ মে বোস্টনের জন এফ কেনেডি প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরিতে পুরস্কার বিতরণ করবেন। পুরস্কারটি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিবারে পক্ষ থেকে প্রবর্তন করা হয় এবং কেনেডির ১৯৫৭ সালে প্রকাশিত পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী বই ‘প্রোফাইলস ইন কারেজ’ এর নামানুসারে এই পুরস্কারের নামকরণ করা হয়।
ক্যারোলিন কেনেডি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের দেশ এবং বিশ্বের সামনে আজ গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনো সমস্যা নেই। ইউক্রেনের যুদ্ধ বিশ্বকে দেখিয়েছে যে আমরা স্বাধীনতাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের নির্বাচিত কর্মকর্তাদের সাহস আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা করা এবং আমাদের ভোট দেয়ার মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করা।’
আরও পড়ুন: লাভিভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৭ জন নিহত: ইউক্রেন
মারিউপোলে আত্মসমর্পণের আল্টিমেটাম প্রত্যাখান ইউক্রেনীয় সেনাদের
লাভিভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৭ জন নিহত: ইউক্রেন
ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লাভিভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ শহরটি প্রায় দুই মাসের যুদ্ধে তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে পালিয়ে আসা ইউক্রেনীয় নাগরিকদের জন্য তুলনামূলক আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
লাভিভে অঞ্চলের গভর্নর ম্যাকসিম কোজিটস্কি বলেছেন, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা তিনটি সামরিক অবকাঠামো ও একটি অটো মেকানিকের দোকানে আঘাত করেছে।
আরও পড়ুন: মারিউপোলে আত্মসমর্পণের আল্টিমেটাম প্রত্যাখান ইউক্রেনীয় সেনাদের
এ হামলায় আহতদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে বলেও জানান তিনি।
লাভিভের মেয়র আন্দ্রি সাদোভিই বলেছেন, এ হামলায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে একটি হোটেল রয়েছে যেখানে দেশের অন্যান্য এলাকার যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা ইউক্রেনীয় নাগরিকরা আশ্রয় নিয়েছিলেন।
৪৭ বছর বয়সী লিউডমিলা তুরচাক ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভ থেকে দুই শিশুসহ পালিয়ে লাভিভে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের দুঃস্বপ্ন আমাদের এখানেও ধরে ফেলেছে। এমনকি লাভিভেও। ইউক্রেনে এমন কোনো জায়গা আর নেই যেখানে আমরা নিরাপদ বোধ করতে পারি।’
আরও পড়ুন: মারিউপোলে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের আত্মসমর্পণের আহ্বান রুশ সেনাবাহিনীর
কিয়েভ ও অন্যান্য শহরে নতুন করে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া
রুশ বাহিনী কিয়েভ ও এর আশেপাশের বেশ কয়েকটি শহরে তাদের আক্রমণ জোরদার করেছে। শনিবার যুদ্ধের ৫২তম দিন নতুন করে তাদের আক্রমণাত্মক হামলার পরিমাণ অনেকটা বেড়েছে।
কৃষ্ণ সাগরের যুদ্ধজাহাজ হারানোর কারণে এবং রাশিয়ার ভূখণ্ডে ইউক্রেনের ‘আগ্রাসনের’ কারণে ক্ষুব্ধ রাশিয়ার সামরিক কমান্ড ইউক্রেনের রাজধানীতে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে।
মস্কোর কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা শুধু ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা করছে।
প্রকৃত অবস্থা যদিও ভিন্ন। প্রতিদিন হামলায় অসংখ্য বেসামরিক নাগরিক মারা যাচ্ছে। শনিবারও উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের শহর খারকিভের একটি আবাসিক এলাকায় রকেট হামলায় এক শিশুসহ অন্তত ৯ জন মারা গেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কিয়েভ অঞ্চলে ৯ শতাধিক মানুষের লাশ উদ্ধার: পুলিশ
কিয়েভের ঠিক পাশের শহর ও গ্রাম থেকে রুশ সেনা পিছু হটার পর ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ ৯০০টিরও বেশি বেসামরিক মানুষের লাশ খুঁজে পাওয়ার কথা জানিয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
শনিবার রাজধানীতে হামলা বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরটির মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো যুদ্ধের আগে শহর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া বাসিন্দাদের ফিরে না আসার পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা রাজধানীতে হামলা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছি না। যদি আপনার যেখানে আছেন সেটা নিরাপদ স্থান হয় এবং সেখানে আরেকটু বেশি সময় থাকার সুযোগ থাকে, তবে সেখানেই থাকুন।’
কিয়েভের দারনিটস্কি জেলায় হামলায় কী ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার জানা যায়নি। রাজধানীর দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে বিস্তৃত এই এলাকায় সোভিয়েত-শৈলীর অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক, নতুন শপিং সেন্টার এবং বড়-বক্স খুচরা দোকান, শিল্প এলাকা এবং রেলইয়ার্ড রয়েছে।
তবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ বলেছেন, দারনিটস্কিতে একটি সাঁজোয়া যানকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা শান্তির প্রধান পদক্ষেপ: জেলেনস্কি
রুশ সামরিক বাহিনী এই সপ্তাহে রাজধানীতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়ার পর এটি ছিল কিয়েভ এলাকায় দ্বিতীয় হামলা। শুক্রবার আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র কেন্দ্রে আঘাত হানে।
রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নতুন করে এমন সময় শহরটিতে আঘাত হানে যখন বাসিন্দারা নতুন করে নিজেদের বাড়িতে ফিরে আসছিল, বিদেশি দূতাবাসগুলো পুনরায় খোলার পরিকল্পনা চলছে এবং কিয়েভ থেকে রুশ সেনাদের প্রত্যাহারের পরে শহরের যুদ্ধপূর্ব অবস্থা ফিরে আসতে শুরু করে।
শনিবার কিয়েভে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়সহ দেশজুড়ে আটটি অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও গোলাবর্ষণের খবর পাওয়া যায়।
পশ্চিম ইউক্রেনের এলভিভের গভর্নর বেলারুশ থেকে উড্ডয়নকারী রাশিয়ান এসইউ-৩৫ দ্বারা এই অঞ্চলে বিমান হামলার কথা জানিয়েছেন।
রুশ সামরিক বাহিনী সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে গোলাবর্ষণ বাড়িয়েছে। শুক্রবারের হামলায় এ শহরের অনেক বেসামরিক মানুষ নিহত এবং ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছে বলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে।
খারকিভের মেয়র ইহোর তেরেখভ বলেছেন, শনিবারও এখানে হামলা হয়েছে। এদিনের হামলায় তিনজন নিহত ও ৩৪ জন আহত হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউক্রেনের সাংবাদিকদের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বন্দর নগরী মারিউপোল অবরুদ্ধতা অব্যাহত রয়েছে। ক্রমে যা যা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।
আরও পড়ুন: প্রতিদিন ইউক্রেনে ফিরছেন ৩০ হাজার মানুষ: জাতিসংঘ
রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা শান্তির প্রধান পদক্ষেপ: জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার ওপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা ‘বেদনাদায়ক’ হলেও তা রুশ সামরিক বাহিনীকে থামানোর জন্য এখনও যথেষ্ট নয়।
এ সময় জেলেনস্কি ‘গণতান্ত্রিক বিশ্বের’ প্রতি রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ইউরোপ রুশ জ্বলানি সরবরাহের ওপর অনেকটা নির্ভর করে। এদিকে ভারতকে রুশ জ্বালানি ব্যবহার বাড়ানো থেকে বিরত রাখতে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
শুক্রবার রাতে এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ‘সাধারণভাবে গণতান্ত্রিক বিশ্বকে অবশ্যই মেনে নিতে হবে রাশিয়ার জ্বালানি সম্পদের অর্থ আসলে গণতন্ত্রের ধ্বংসের জন্য অর্থ।’
তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক বিশ্ব যত তাড়াতাড়ি স্বীকার করবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে তেল নিষেধাজ্ঞা এবং তার ব্যাংকিং খাতের সম্পূর্ণ অবরোধ শান্তির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, তত তাড়াতাড়ি যুদ্ধ শেষ হবে।’
প্রতিদিন ইউক্রেনে ফিরছেন ৩০ হাজার মানুষ: জাতিসংঘ
ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর থেকে দেশ ত্যাগ করা আট লাখ ৭০ হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় নাগরিক দেশে ফিরে এসেছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
রাষ্ট্রীয় বর্ডার গার্ড সার্ভিসের বরাত দিয়ে জাতিসংঘের সাহায্য সমন্বয় অফিস ওসিএইচএ জানিয়েছে, প্রতিদিন ৩০ হাজার মানুষ ইউক্রেনে ফিরে আসছেন।
ওসিএইচএ বলছে, ‘এই পরিসংখ্যান ইঙ্গিত দেয় ইউক্রেনে প্রত্যাবাসন বাড়তে পারে। এর ফলে মানবিক সাড়াদানের ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। কেননা সম্প্রদায়ের সঙ্গে পুনরায় একীভূত হতে কিংবা তাদের বাড়ি ফেরা টেকসই না হলে উপযুক্ত হোস্ট সম্প্রদায় খুঁজে পেতে সহায়তার প্রয়োজন হবে।’
আরও পড়ুন: যুদ্ধজাহাজ ‘মস্কোভা’ ডুবে গেছে, স্বীকার করল রাশিয়া
ইউক্রেনের এক কোটি ২০ লাখ মানুষের সহযোগিতার প্রয়োজন। তাদের মধ্যে ২১ লাখ মানুষের কাছে মানবিক সহযোগিতা পৌঁছেছে। এছাড়া জাতিসংঘ ইউক্রেনের জন্য এক দশমিক এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের যে আবেদন করেছে তার মধ্যে ৬৪ শতাংশ অর্থায়ন হয়েছে।
এদিকে ওসিএইচএ আরও জানিয়েছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় দেড় লাখ শিশুসহ সাত লাখ ৮৩ হাজারের বেশি মানুষ ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় প্রবেশ করেছেন।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে চার দশমিক সাত মিলিয়নেরও বেশি মানুষ মানুষ ইউক্রেন ত্যাগ করেছেন এবং আরও সাত মিলিয়ন মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
যুদ্ধজাহাজ ‘মস্কোভা’ ডুবে গেছে, স্বীকার করল রাশিয়া
রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিটের ফ্ল্যাগশিপ যুদ্ধজাহাজ মস্কোভা বৃহস্পতিবার ডুবে গেছে। মস্কোভা ছিল একটি গাইডেড-মিসাইল ক্রুজার। যুদ্ধের শুরু থেকেই রুশ বাহিনী মস্কোভা ব্যবহার করে ইউক্রেনের ওপর হামলা চালিয়ে আসছিল।
তবে কৃষ্ণসাগরে অবস্থিত রাশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম জাহাজটিতে কিভাবে আগুন লাগল তা নিয়ে দুই রকম দাবি করেছে কিয়েভ আর মস্কো।
কিয়েভের দাবি, যুদ্ধজাহাজে মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। মিসাইল হামলায় জাহাজটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছে দেশটি। কৃষ্ণসাগরে অবস্থিত জাহাজটিতে বুধবার হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের ওডেসার গভর্নর।
তবে রাশিয়া মস্কোভা মিসাইল ক্রুজার নামে ওই যুদ্ধজাহাজে বিস্ফোরণ ও আগুন ধরে যাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে। যদিও এর কারণ হিসেবে তারা ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলার কথা স্বীকার করেনি।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আক্রমণ চালানোর অঙ্গীকার পুতিনের
রাশিয়ার রাজধানীর নামে নামকরণ করা এই যুদ্ধজাহাজের ধ্বংস হওয়া কৃষ্ণ সাগরে তাদের সামুদ্রিক অবস্থান পর্যালোচনার দিকে নিয়ে যাবে বলে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তার সর্বশেষ গোয়েন্দা ব্রিফিংয়ে জানিয়েছে।
জাতির উদ্দেশ্যে তার রাতের ভিডিও ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মস্কোভার ডুবে যাওয়ার বিষয়টি ইঙ্গিত করে বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অষ্টম সপ্তাহে প্রবেশ করছে। ইউক্রেনীয়দের গর্বিত হওয়া উচিত, কারণ রাশিয়ানরা ‘আমাদের সর্বোচ্চ পাঁচদিন’ সময় দিয়েছিল বেঁচে থাকার জন্য, কিন্তু আক্রমণের ৫০ দিন পরেও আমরা বেঁচে আছি।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, একটি বন্দরে নিয়ে যাওয়ার সময় ঝড়ের কবলে পড়ে জাহাজটি ডুবে যায়। রাশিয়া এর আগে বলেছিল জাহাজটিতে আগুন লেগেছে এবং সেখানে থাকা ৫০০ নাবিককে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এরপর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার কথাও জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ একটি 'গণহত্যা': বাইডেন
সোভিয়েত-যুগের জাহাজ মস্কোভা ১৯৭৯ সালে কার্যক্রম শুরু করে। তবে পরবর্তীতে ব্যাপক সংস্কারের পর ২০২১ সালে ফের জাহাজটির কার্যক্রম শুরু হয়। ১৬টি দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বহন করার ক্ষমতা ছিল মস্কোভার। এটি ডুবে যাওয়ার ফলে কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার শক্তি হ্রাস পেয়েছে।
যুদ্ধের শুরুর দিকে মস্কোভা জাহাজে অবস্থানরত রুশ সেনারা কৃষ্ণ সাগরের স্নেক দ্বীপে অবস্থানরত ইউক্রেনীয় সেনাদের আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানিয়েছিল। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এ তথ্যের সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মেজর জেনারেল ইগর কোনাশেনকভ বুধবার বলেছেন, শহরের একটি ধাতু কারখানায় এক হাজার ২৬ জন ইউক্রেনীয় সেনা আত্মসমর্পণ করেছে।
তবে ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা ভাদিম ডেনিসেনকো এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি কারেন্ট টাইম টিভিকে বলেছেন ‘সমুদ্রবন্দর নিয়ে যুদ্ধ আজও চলছে।’
আরও পড়ুন: মারিউপোলে ১০ হাজারের বেশি বেসামরিক লোক নিহত: মেয়র
রাশিয়ার লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আক্রমণ চালানোর অঙ্গীকার পুতিনের
রাশিয়ার লক্ষ্যগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ইউক্রেনে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে অঙ্গীকার করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
মঙ্গলবার তিনি বলেছেন, ইউক্রেনীয় বিরোধিতা এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নিষেধাজ্ঞা সত্বেও তাদের অভিযান পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে।
এদিন পুতিন বলেন, রুশ সেনারা ইউক্রেনের রাজধানীর দখল ভালোভাবেই নিতে পেরেছে। এখন তারা ডনবাস অঞ্চলের দিকে মনোযোগ দেবে।
এদিকে মঙ্গলবার ইউক্রেন বলেছে, সেনাদের (ইউক্রেনীয়) ওপর বিষাক্ত পদার্থ নিক্ষেপ করা হয়েছে। পদার্থটি কী হতে পারে তা তারা স্পষ্ট নয়।
তবে পশ্চিমা কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, রাশিয়ার রাসায়নিক অস্ত্রের কোনও ধরনের ব্যবহার করলে এই ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ আরও গুরুতর হয়ে উঠবে।
পশ্চিমা কর্মকর্তাদের মতে, রাজধানী কিয়েভ দখল, সরকার পতন এবং একটি মস্কো-বান্ধব শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে রাশিয়া ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল।
ছয় সপ্তাহ পর পুতিন মঙ্গলবার জোর দিয়ে বলেন, তার আক্রমণের লক্ষ্য ছিল মস্কো-সমর্থিতদের নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের কিছু অংশের জনগণকে রক্ষা করা এবং ‘রাশিয়ার নিজস্ব নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’
তিনি বলেন, রাশিয়ার কাছে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প ছিল না’ এবং অঙ্গীকার করেন, এর সম্পূর্ণ সমাপ্তি এবং নির্ধারিত কাজগুলি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকবে।’
আপাতত পুতিনের বাহিনী ডনবাসে একটি বড় আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। যেখানে ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ান-মিত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে লড়াই চলছে এবং রাশিয়া এই অঞ্চলের স্বাধীনতার দাবিকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ একটি 'গণহত্যা': বাইডেন