মধ্যপ্রাচ্য
রাজনৈতিক অচলাবস্থার মধ্যে পদত্যাগ করলেন সুদানের প্রধানমন্ত্রী
রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও গণতন্ত্রপন্থীদের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন সুদানের প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদক। রবিবার দেশটির একটি জাতীয় টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে পদত্যাগের ঘোষণা দেন আবদাল্লাহ হামদক নিজেই।
হামদক জাতিসংঘের একজন প্রাক্তন কর্মকর্তা, তাকে সুদানের অন্তর্বতীকালীন সরকারের বেসামরিক মুখ হিসাবে ভাবা হয়েছিল। গত অক্টোবরে সুদানের সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা পুরোপুরি নিজেদের দখলে নেয়। সেসময় তারা প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদককে গৃহবন্দী করে, গ্রেপ্তার করে তার সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীকে। পরবর্তীতে সেনা অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেয়াদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তির পর তাকে পুনর্বহাল করা হয়।
তবে হামদকের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি অনেকে। এরপর দেশজুড়ে বিক্ষোভ, সহিংসতা শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তারা সামরিক বাহিনীকে বিশ্বাস করে না।
রবিবার টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে হামদক বলেন, সুদানের পরিস্থিতি ‘বিপজ্জনক দিকে মোড় নিচ্ছে, যা দেশের সমগ্র অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে।’
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে মন্দিরে পদদলিত হয়ে নিহত ১২
তিনি বলেন, তার পদত্যাগ অন্য একজনকে জাতির নেতৃত্ব দেয়ার এবং একটি ‘বেসামরিক, গণতান্ত্রিক দেশে গঠণের’ সুযোগ দেবে। তবে এসময় হামদক তার কোনো উত্তরসূরির নাম বলেননি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে ক্রমবর্ধমান ব্যবধান পূরণ ও বিরোধ নিষ্পত্তিতে তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
ভাষণে হামদক আরও বলেন, তিনি দেশটিকে ‘বিপর্যয়ের দিকে চলে যাওয়া’ থেকে থামানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে যা করা হয়েছে তা সত্ত্বেও ...এটি ঘটেনি।’
২০১৯ সালের অক্টোবরে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাবাহিনী দেশটিরে ক্ষমতাসীন দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক ওমর আল-বশির এবং তার ইসলামপন্থী সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করে। আল-বশিরের ক্ষমতাচ্যুতির চার মাস পরে জেনারেল ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ২০২৩ সালে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ শাসন করার জন্য একটি ক্ষমতা ভাগাভাগি চুক্তি হয়।
নভেম্বরে হামদকের সঙ্গে সমঝোতার অধীনে, পুনর্বহাল হওয়া প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত টেকনোক্র্যাটদের একটি মন্ত্রিসভার নেতৃত্ব দেয়ার কথা ছিল। তবে নতুন বেসামরিক সরকারের কতটা ক্ষমতা থাকবে তা স্পষ্ট করা হয়নি তখন।
ভাষণে হামদক বলেন, আমি দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে আমার দেশের মানুষের সেবা করার সম্মান পেয়েছি। এসময়কালে আমি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সফল হয়েছি, আবার কখনও কখনও ব্যর্থ হয়েছি।
আরও পড়ুন: গণহত্যা ও জ্বালাও-পোড়াও নীতিতে ফিরে যাচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কূলে পৌঁছে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনী
১৮ মাস পর পর্যটক প্রবেশের অনুমতি দিল সৌদি আরব
করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে বিধিনিষেধ আরোপের ১৮ মাস পর রবিবার প্রথমবারের মতো সৌদি আরব পর্যটকদের জন্য দেশটিতে প্রবেশের বিধিনিষেধ তুলে নিল।
করোনা সংক্রমণের কিছু আগে ২০১৯ সালের শেষের দিকে দেশটি পর্যটকদের জন্য ই-ভিসা (ইলেকট্রনিক ভিসা) চালু করেছিল।
সৌদি আরব তাদের তেল বাণিজ্যের বাইরে রাজস্ব বাড়ানোর এবং আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে প্রকৃতি প্রেমি এবং কৌতূহলী ভ্রমণকারীদের জন্য একটি অনন্য পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে নিজেদের নতুন করে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে।
বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশসহ প্রায় ৪৯ টি দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের নাগরিকদের নতুন নিয়মে কোয়ারেন্টাইন ছাড়াই দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে।
এক্ষেত্রে ভ্রমণের আগে পিসিআর পরীক্ষা এবং অক্সফোর্ড, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার,বায়োটেক অথবা মডার্না টিকার দুটি ডোজ নেয়ার সার্টিফিকেট কিংবা জনসন অ্যান্ড জনসনের উৎপাদিত টিকার একটি ডোজ নেয়ার সার্টিফিকেট দেখাতে হবে।
তবে চীনা সিনোফার্ম বা সিনোভ্যাক টিকা গ্রহনকারীদের অবশ্যই অন্যান্য ভ্যাকসিন থেকে তৃতীয় ডোজ গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: ২৯ মে সৌদি আরবে বিমান ফ্লাইট শুরু
সৌদি আরবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে বাংলাদেশিদের নিয়োগের আহ্বান
যুদ্ধবিরতির পর ফের গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা
গত মাসে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় যুদ্ধবিরতির পর আবারও গাজায় বিনা উস্কানিতে সিরিজ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
বুধবার প্রথম প্রহরে গাজায় হামাসের ঘাঁটিতে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের দাবি, ওই সব এলাকা থেকে হামাস ইসরায়েলে হামলার পরিকল্পনা করতো। তবে, তাৎক্ষণিকভাবে কোনও হতাহতের ঘটনা জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতিতে গেলো হামাস-ইসরায়েল
মঙ্গলবার পূর্ব জেরুজালেমে প্রায় শতাধিক উগ্র জাতীয়তাবাদি ইসরায়েলি পতাকাসহ বিক্ষোভ মিছিল করে। ওই মিছিলে তারা আরবদের মৃত্যু কামনা করে স্লোগান দিতে থাকে। এই মিছিলের মাধ্যমে নতুন করে গাজা উপত্যকায় সহিংসতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় এপিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের ভবনে ইসরায়েলের বিমান হামলা
অবশ্য ইসরায়েলিদের এমন আচরণে জবাবে ফিলিস্তিনিরা দাহ্য গ্যাসপূর্ণ বেলুন উড়িয়ে দেয়। এর ফলে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অন্তত ১০ জায়গায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যম ব্যবহার করে হামাসকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা ইসরায়েলের
ফিলিস্তিনিরা মনে করে, ১৯৬৭ সালে জোরপূর্বক পূর্ব জেরুজালেম দখলের বর্ষপূর্তি উদযাপনের এবং উস্কানি ছড়াতেই এমন মিছিল করে ইসরায়েলিরা।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় গাজায় আরও ১০ ফিলিস্তিনি নিহত
এদিকে গাজার শাসক দল হামাস ইসরায়েলিদের এমন উস্কানিমূলক মিছিল ফিলিস্তিনিদের প্রতিহত করার আহ্বান জানান।
যুদ্ধবিরতিতে গেলো হামাস-ইসরায়েল
জেরুজালেম, ২১ মে (এপি/ইউএনবি)- গাজা উপত্যকায় ১১ দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর অবশেষে বৃহস্পতিবার অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয় হামাস এবং ইসরায়েল। এই সংঘর্ষে দুই শতাধিক মানুষ মারা যাবার খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ২টায় অস্ত্রবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। যুদ্ধবিরতির আনন্দে অনেক ফিলিস্তিনিই ‘আল্লাহু আকবর’ বলতে বলতে রাস্তায় নেমে আসেন।
আরও পড়ুন: গাজায় এপিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের ভবনে ইসরায়েলের বিমান হামলা
এই দুই শত্রু পক্ষের মধ্যকার পূর্বের তিনটি যুদ্ধের মতোই এবারও কোনও ফলাফল ছাড়াই যুদ্ধ শেষ হল। ইসরায়েল দাবি করছে, এই যুদ্ধে তারা হামাসের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করতে সাধন হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো হামাসের রকেট হামলা থামাতে ব্যর্থ হয় ইসরায়েল।
এদিকে হামলা বন্ধের পরপরই ইসরায়েলি ডান-পন্থিরা প্রধানমন্ত্রী বেনঞ্জামিন নেতানিয়াহু সমালোচনা করেন। তাদের মতে সঠিক সময়ের আগেই হামলা বন্ধ করেছে ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: গাজা শহরজুড়ে ইসরায়েলের আরও বোমা হামলা
এদিকে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস নিজেদের এই যুদ্ধে জয়ী বলে দাবি করছে। কিন্তু তাদেরকে এবার নতুন শহরের স্থাপনা তৈরি, দারিদ্র, করোনাসহ বিভিন্ন সমস্যা মোকবিলা করতে হবে।
ইসরায়েলের রাজনৈতিক নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা জানায় তারা মিশরের দেয়া যুদ্ধবিরতির সুপারিশ সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করেছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক অভিযানের মাধ্যমে ইসরায়েলের ব্যাপক সামরিক অর্জন হয়েছে।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যম ব্যবহার করে হামাসকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা ইসরায়েলের
আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গনের ইসরায়েলি পুলিশের হামলার প্রতিবাদে গত ১০ মে রাত থেকে রকেট হামলা শুরু করে হামাস। আর এরপর থেকেই ইসরায়েল ও হামাস সংঘর্ষ চলতেই থাকে।
পবিত্র শহর জেরুজালেম নিয়েই দীর্ঘ দিন ধরে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘর্ষ চলে আসছে। গত বেশ কয়েকটি যুদ্ধও এই শহরকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়।
এই যুদ্ধে হামাস ও অন্যান্য সংগঠনের পক্ষ থেকে ছোড়া ৪ হাজারের অধিক রকেট হামলা ইসরায়েল সাধারণ জীবনযাত্র ব্যাহত করতে বেশ প্রভাব ফেলে। এমনকি তেল আবিব শহর পর্যন্তও হামলার রেশ পৌঁছায়।
গাজায় এপিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের ভবনে ইসরায়েলে বিমান হামলা
গাজায় বিদেশী গণমাধ্যমের কার্যক্রম বন্ধে এবার এপি, আল-জাজিরাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত একটি ভবনে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
শনিবার ইসরায়েলি হামলায় ওই ১২ তলা ভবনটিকে সম্পূর্ণ গুড়িয়ে দেয়া হয়। এরই মাধ্যমে গাজায় অবস্থানরত বিদেশী সংবাদ মাধ্যমের সরাসরি কাজের সুযোগ বন্ধ করে দিল ইসরায়েলি বাহিনী। ভবনটি ধ্বংসরে পর আশেপাশের এলাকাজুড়ে কালো ধোয়া উড়তে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় গাজায় আরও ১০ ফিলিস্তিনি নিহত
যদিও হামলার এক ঘণ্টা আগে ইসরায়েলি বাহিনী ভবনটি খালি করার আদেশ জারি করে। কিন্তু, কেন এই ভবনটিতে হামলা চালানো হয়, তা জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যম ব্যবহার করে হামাসকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা ইসরায়েলের
গাজায় অবস্থিত শরণার্থী শিবিরে হামলা চালানো মাত্র কয়েক ঘণ্ট পরেই এই ভবনটি গুড়িয়ে দেয়া হয়। ওই হামলায় ৮ শিশু ও ২ নারী নিহত হয়।
গণমাধ্যম ব্যবহার করে হামাসকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা ইসরায়েলের
শুক্রবার ভোরে ইসরায়েলি মিলিটারি গণমাধ্যমকে জানায়, তারা গাজা উপত্যকায় বিমান ও স্থল হামলা শুরু করেছে।
ইসরায়েলি মিলিটারির এই বিবৃতি দ্রুতই উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়। ইসরায়েলের গাজায় স্থল আক্রমণের মাধ্যমে হামাসকে ঘায়েল করার চেষ্টা যেকোনও রক্তাক্ত সহিংসতার চূড়ান্ত বলেই বিবেচনা করা হয়। এরই মধ্যে কিছু সংবাদকর্মীকে সরাসরি জানায় যে, ইসরায়েল স্থল আক্রমণ শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় গাজায় আরও ১০ ফিলিস্তিনি নিহত
কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরই ইসরায়েল সেনা কর্তৃপক্ষ আগের বিবৃতির ব্যাখ্যা হিসেবে আরও একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। বিবৃতিতে জানানো হয়, গাজাতে কোন ইসরায়েলি সেনা অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেই বেশকিছু সংবাদ প্রতিষ্ঠান গাজায় স্থল হামলার ভুল খবর প্রকাশ করে।
ইসরায়েলি সেনা কর্তৃপক্ষ এই ঘটনাকে ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে ব্যাখা করে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনাকে হামাসের জন্য একটি ফাঁদ হিসেবে দেখছেন। তারা বলেন, মিডিয়াকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে ইসরায়েল অসংখ্য হামাস যোদ্ধাদের হত্যার পরিকল্পনা করেছিল।
আরও পড়ুন: গাজায় স্থল হামলা চালানোর হুমকি ইসরায়েলের
যুদ্ধ সাংবাদিক ওর হেলার ইসরায়েলের টেলিভিশন চ্যানেল থার্টিনকে বলেন, ‘তারা মিথ্যা বলেনি। বরং তারা একটি সুচতুরভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে এবং তারা সফল।’
এর আগে বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি বাহিনী তাদের ৯ হাজার সংরক্ষিত সেনাসদস্য নামানোর ঘোষণা দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ইসরায়েল গাজা সীমান্তে ট্যাংক স্থাপন করে। পূর্ববর্তী ঘটনাগুলো বিশ্লেষণে দেখা যায়, গাজায় স্থল অভিযান ছিল অত্যন্ত রক্তক্ষয়ী এবং অসংখ্য ফিলিস্তিনিদের প্রাণ হারাতে হয়।
হেলারের মতে, ইসরায়েলে কূটকৌশলে মূল উদ্দেশ্য ছিল হামাসকে ফাঁদে ফেলা। প্রচারিত সংবাদের মাধ্যমে হামাস বিভ্রান্ত হয়ে পাল্টা হামলার জন্য মাটির নিচে টানেলে অবস্থান নিলেই সেখানে হামলা চালানোই ছিল মূল পরিকল্পনা।
আরও পড়ুন: সশস্ত্র সহিংসতায় ক্লান্ত গাজাবাসীর ঈদে নেই আনন্দ
ইসরায়েলি বাহিনী বলছে, তারা ওই রাতে ১৬০টি যুদ্ধবিমান দিয়ে প্রায় ৪০ মিনিট বিভিন্ন টানেলে বোমা বর্ষণ করে। হেলারের মতে এতে অসংখ্য হামাস যোদ্ধা নিহত হবার কথা। কিন্তু এর সত্যতা নিশ্চিত করা অসম্ভব বলেও জানান তিনি।
কিন্তু এমন কোনও ঘটনার কথা স্বীকার করেনি ইসরায়েলে মুক্তিকামী হামাস।
এদিকে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) তাদের বিশ্লেষণ ও গাজা থেকে জানায়, এমন কোনও হামলার ঘটনাই ঘটেনি।
কিন্তু অন্যান্য বিদেশী গণমাধ্যমগুলো ইসরায়েলি মিলিটারিকে ভুল তথ্য দেয়ার জন্য অভিযুক্ত করে।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় আরও ১০ ফিলিস্তিনি নিহত
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় আরও অন্তত ১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল শিশু।
শনিবার ভোরে গাজা উপত্যকায় হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষে এটাই ইসরায়েলের অধিক প্রাণহানী হওয়া হামলা ছিল।
আরও পড়ুন: আল-আকসায় সংঘর্ষে ২০০ ফিলিস্তিনি আহত
সাম্প্রতিক সহিংসতা জেরুজালেম থেকে শুরু হয়ে ইসরায়েলে অভ্যন্তরের বিভিন্ন শহরে আরব ও ইহুদিদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রূপ নিয়েছে। এছাড়া পশ্চিম তীরে শুক্রবার ফিলিস্তিনিদের প্রতিবাদ মিছিলে গুলি করে অন্তত ১১ জনকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী।
বর্তমান ক্রমবর্ধমান সহিংসতা এমন এক সময়ে নতুন করে ফিলিস্তিনি গণআন্দোলনে রূপ নিতে যাচ্ছে, যেখানে গত কয়েক বছরে কোনও শান্তি আলোচনা হয়নি।
আরও পড়ুন: হামাসকে কঠোর হুশিয়ারি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর
এদিকে শনিবার ফিলিস্তিনিরা ‘নাকবা দিবস’ পালন করার কথা ছিল। ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ১৯৪৮ সালের ১৫ মে এর পর থেকে ফিলিস্তিনিদের কাছে নাকবা এক মহাবিপর্যয়ের দিন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ইহুদি অভিবাসীরা ওই দিন ফিলিস্তিনিদের বাড়ি ও ভূমি দখল করে নেয়। ওইদিন বাস্তাহারা সাত লাখ ফিলিস্তিনি। এরই মধ্যে বর্তমান এই সহিংসতা নতুন করে যুদ্ধ রূপ নিতে পারে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের এক বাড়ির নাম ‘শেখ হাসিনা’
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক হ্যাডি আমর ইসরায়েলে শান্তি আলোচনা জন্য এসে পৌঁছায়। রবিবার জাতিসংঘের নিরপত্তা পরিষদের সভা হবার কথা ছিল। কিন্তু শুক্রবার মিশরের এক বছরের জন্য যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব হামাস মেনে নিলেও, তা ফিরিয়ে দেয় ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: সশস্ত্র সহিংসতায় ক্লান্ত গাজাবাসীর ঈদে নেই আনন্দ
ফিলিস্তিনি বসতি দখল ও হামলার প্রতিবাদে গত সোমবার রাতে হামাসের কয়েকশ রকেট হামলা পর থেকে শুরু হওয়া দুই পক্ষের সহিংসতায় এই পর্যন্ত ৩১ শিশু এবং ২০ জন নারীসহ অন্তত ১২৬ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক মারা গেছে। এদিকে ইসরায়েলে এক শিশুসহ ৭ জন মারা যায়।
শনিবার ভোর পর্যন্ত দুই পক্ষের হামরা, পাল্ট হামলা অব্যাহত ছিল। কিন্তু গাজা উপত্যকার একটি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় ৮ শিশু ও ২ জন নারী নিহত হয়। এটাই একদিনে এক হামলায় সর্বোচ্চ মৃত্যু।
আরও পড়ুন: গাজায় স্থল হামলা চালানোর হুমকি ইসরায়েলের
পবিত্র লাইলাতুল কদর ও পবিত্র ঈদের দিনেও ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। শুক্রবার আবারও ফিলিস্তিনিদের চরম মূল্য দিতে হবে বলে জানান ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ‘আত্মরক্ষার’ নামে ইসরায়েলকেই সমর্থন জানিয়েছেন।
তবে যতদিন পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসন চলবে, ততদিন পর্যন্ত পাল্টা জবাব দেয়ার কথা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারা এ পর্যন্ত ২ হাজারেরও অধিক রকেট হামলা চালিয়ে ইসরায়েলকে চাপে রেখেছে।
গাজায় স্থল হামলা চালানোর হুমকি ইসরায়েলের
ফিলিস্তিনের গাজায় সম্ভাব্য স্থল হামলা চালানোর লক্ষে ইসরায়েল গাজা সীমান্তে সৈন্য জমায়েত করছে। ইতিমধ্যেই ৯ হাজার সংরক্ষিত সেনা সদস্যকে ডেকে পাঠানো হয়েছে হামলায় অংশ নেয়ার জন্য। গাজায় হামাস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযান পরিচালনা করাই এখন ইসরায়েলের উদ্দেশ্য।
চির শত্রু ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলের মধ্যকার সম্ভাব্য যুদ্ধ এড়াতে এরইমধ্যে ইসরায়েল পৌঁছেছে মিশরের মধ্যস্ততাকারী দল। তাদের যুদ্ধবিরতির চেষ্টার মধ্যেই ইসরায়েল স্থল অভিযানের হুমকি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: সশস্ত্র সহিংসতায় ক্লান্ত গাজাবাসীর ঈদে নেই আনন্দ
সোমবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষ বর্তমানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রূপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের লড শহরে পুলিশের উপস্থিতিতেই ইহুদি ও আরবদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মধ্যেই ইসরায়েল এ পর্যন্ত সবচেয়ে কঠিন সংঘর্ষে জড়াচ্ছে হামাসের সঙ্গে। এদিকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে লেবানন থেকে কয়েকটি রকেট নিক্ষেপ করা হয়। এতে এই সংঘাতকে নতুন মোড় দিতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
হামাসের নির্বাসিত এক জেষ্ঠ্য নেতা লন্ডন ভিত্তিক আল আরাবি চ্যানেলকে শুক্রবার জানান, মিশর, কাতার এবং জাতিসংঘ ইসরায়েল ও হামাসের চলমান সংঘর্ষে বন্ধে মধ্যস্তা করার চেষ্টা করছে। তারা তিন ঘণ্টার জন্য যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব করলে, হামাস তা নাকোচ করে দেয়।
আরও পড়ুন: হামাসকে কঠোর হুশিয়ারি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর
শুক্রবার ভোরে ইসরায়েলি বাহিনী জানায়, গাজায় এ পর্যন্ত সবচেয়ে কঠোর ও শক্তিশালী আক্রমণ চালাবে বিমান ও সেনাবাহিনী। গাজা উপত্যকায় এই রাতে দুই পক্ষের হামলা ই অব্যাহত থাকে।
এই অচলাবস্থার মধ্যেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আমি বলেছিলাম, হামাসকে চরম মূল্য দিতে হবে। আমরা সেই লক্ষেই আগাচ্ছি এবং সর্বশক্তি ব্যবহার করে আমরা পরবর্তী হামলা করবো।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের এক বাড়ির নাম ‘শেখ হাসিনা’
বৃহস্পতিবার ঈদের দিনেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত ছিল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, গাজায় এ পর্যন্ত ১০৯ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছে। এর মধ্যে ২৮ শিশু ও ১৫ জন নারীও রয়েছে। এছাড়া ৬২১ জন আহত হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি চলমান বিমান হামলায় এরই মধ্যে বেশকিছু পরিবার সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
তবে হামাস বলছে, ইসরায়েলি হুমকি বা হামলায় ভীত নয় তারা। যেকোনও অন্যায় হামলার প্রতিউত্তর দেয়ার জন্য হামাস প্রস্তুত আছে বলে জানায় স্বাধীনতাকামী এই দলটি।
সশস্ত্র সহিংসতায় ক্লান্ত গাজাবাসীর ঈদে নেই আনন্দ
ফিলিস্তিনি মুসলিম জনগণের, বিশেষত গাজার মুসলমানদের ঈদ আনন্দ বদলে গেছে শঙ্কায়। পরিবার নিয়ে ঈদের ভোজ আর আনন্দ করার বদলে প্রতি মুহূর্তেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাটছে ঈদের দিন।
আরও পড়ুন: হামাসকে কঠোর হুশিয়ারি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর
পবিত্র রমজান শেষে বৃহস্পতিবার সারা বিশ্বের মতো ফিলিস্তিনেও ঈদ পালিত হচ্ছে। আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের বিশাল জামাত। কিন্তু গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি বিমান হামলা এবং দখলকৃত ইসরায়েলের অভ্যন্তরে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে সহিংসতা গাজাবাসীর ঈদ আনন্দকে মলিন করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: আল-আকসায় সংঘর্ষে ২০০ ফিলিস্তিনি আহত
বর্তমান ফিলিস্তিনদের আন্দোলনকে গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে কঠোর ও জোরালো আন্দোলন হিসেবে দেখছে বিশ্ব। আরব ও ইহুদিদের মধ্যকার সংঘর্ষ চূড়ান্ত রূপ ধারণ করেছে। রাস্তায় সাধারণ জনগণের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দেয়া হচ্ছে নিয়মিত।
ইসরায়েল এবং স্বাধীনতাকামী হামাসের মধ্যকার গত তিনটি যুদ্ধ শুধুমাত্র ফিলিস্তিনি সীমান্ত এলাকা এবং ইসরায়েলি জনবসতির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু জেরুজালেমের সাম্প্রতিক সহিংসতা যা এক গণঅভ্যুত্থানে রূপ নিচ্ছে, তা ছড়িয়ে পড়েছে সমগ্র ফিলিস্তিন আর ইসরায়েলে মধ্যে।
সাধারণত ফিলিস্তিনে ঈদ-উল-ফিতর পালিত হয় ছুটির দিন হিসেবে। পুরো এক মাস রোজা রাখার পর এই দিনটিতে ফিলিস্তিনিরা ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকে। এছাড়া গণভোজের মাধ্যমে দিনটিকে উদযাপনের জন্য সকলে একত্রিত হয়।
কিন্তু গাজা উপত্যকার মানুষেরা ঈদের আনন্দ আর খাওয়া-দাওয়ার বদলে পরবর্তী হামলার শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে। একদিকে হামাসের অব্যাহত রকেটা হামলা, অন্যদিকে ইসরায়েলের বিমান হামলা, সবমিলিয়ে পুরো গাজায় পরিণত হয়েছে ধোয়ার নগরীতে।
গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া হামাসের রকেটা হামলার পর থেকে ইসরায়েল এ পর্যন্ত দু’টি বড় বিল্ডিং ধ্বংস করেছে। দাবি করা হচ্ছে, ওই স্থাপনাগুলো হামাসের ঘাটি হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস ২০০৭ সালে ফিলিস্তিনি সরকারের কাছ থেকে গাজার দখল নিয়ে নেয়। তারা মুসলিমদের নিজেদের ঘরে এবং বাড়ির আশেপাশের মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করার আহ্বান জানিয়েছে। সেই সাথে খোলা ময়দানে নামাজ আদায় থেকে বিরত থাকার কথা বলেছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হামাস বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত রকেট হামলা অব্যাহত রাখে।
আল-আকসায় সংঘর্ষে ২০০ ফিলিস্তিনি আহত
আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে শুক্রবার রাত থেকে ইসরায়েলি পুলিশের সাথে সংঘর্ষে অন্তত ২০০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির জরুরি সেবা সংস্থা।
ফিলিস্তিনিদের জমি দখল সহ বিভিন্ন বিষয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলমান অস্থিরতার মধ্যেই এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পূর্ব-জেরুজালেম থেকে ফিলিস্তিনিদের বের করে দেয়ার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দু’টি দেশই বেশ কয়েক দশক ধরেই এই জায়গার দাবি করে আসছে।
রেড ক্রিসেন্টের তথ্য মতে, সংঘর্ষের ফলে আহত অন্তত ৮৮ জন ফিলিস্তিনিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অধিকাংশই চোখে-মুখে রাবার বুলেটের ক্ষত নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েল বলছে, সংঘর্ষে তাদের ৪ জন পুলিশ আহত হয়েছে।
পবিত্র রমজান মাসে ফিলিস্তিনিদের জমায়েতে বাঁধা দেয়া, জোরপূর্বক ইসরায়েলি বসতি স্থাপনসহ নানা কারণে ভবিষ্যতে আবারও সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।