মধ্যপ্রাচ্য
গাজায় 'মানবিক বিরতির' আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবের ব্যর্থতায় ফ্রান্সের দুঃখ প্রকাশ
নিরাপত্তা পরিষদে ব্রাজিলের আনা খসড়া প্রস্তাবের ব্যর্থতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে ফ্রান্স।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় অবস্থিত ফরাসি দূতাবাস বলেছে, ফ্রান্স খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। এটি কাউন্সিলকে সাধারণ নীতির কাছাকাছি আনতে পারে এবং এটি ১২টি দেশের সমর্থন পেয়েছিল।
এই খসড়াটিতে দ্ব্যর্থহীনভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের ‘সন্ত্রাসী হামলার’ নিন্দা; জিম্মিদের মুক্তির দাবি; আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা, মানবিক বিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে বেসামরিক জনগণের মৌলিক পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে গাজায় জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) এবং মানবিক সংস্থাগুলোর পূর্ণ, নিরাপদ ও বাধাহীন মানবিক প্রবেশাধিকারের আহ্বান জানানো হয়।
আরও পড়ুন: মিশরকে গাজায় সীমিত মানবিক সহায়তা সরবরাহের অনুমতি ইসরায়েলের
খসড়া প্রস্তাবে নিরাপদ ও স্বীকৃত সীমানার মধ্যে পাশাপাশি বসবাসকারী দু’টি রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির কথাও স্মরণ করা হয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা রোধে প্রচেষ্টা বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
ব্রাজিলকে তার উদ্যোগ ও সমন্বয়কারী ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে ফ্রান্স। মানবিক জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় এবং আঞ্চলিক সংঘাত এড়ানোর জন্য ফ্রান্স এর অংশীদারদের সঙ্গে সংঘবদ্ধ থাকবে।
ফ্রান্স ইতোমধ্যে গাজার জনগণের জন্য অতিরিক্ত মানবিক সহায়তা হিসেবে ১০ মিলিয়ন ইউরো সংগ্রহ করেছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত
গাজার দক্ষিণাঞ্চলে শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৪০ ফিলিস্তিনি
গাজার দক্ষিণাঞ্চলে শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৪০ ফিলিস্তিনি
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরের শরণার্থীদের একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি।
মঙ্গলবার (১৭অক্টোবর) হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, খান ইউনিস শরণার্থী শিবিরের একটি বাড়িতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান। ইসরায়েলের উচ্ছেদের আদেশের পর গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি বাড়িটিতে আশ্রয় নিয়েছিল।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
গত ৭ অক্টোবর হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৮০৮ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১০ হাজার ৮৫০ জন আহত হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলের নারী ও শিশু হত্যার নিন্দা ঢাকার
মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দ্বারা ধ্বংস হওয়া তাদের বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নীচে এক হাজর ২০০ বেশি ফিলিস্তিনি আটকা পড়েছে এবং ফিলিস্তিনি উপকূলীয় অবরুদ্ধ এলাকাটিতে ২০০ বেশি শিশু নিখোঁজ রয়েছে।
হামাসের সদস্যরা গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি সামরিক অবস্থানকে লক্ষ্যবস্তু করে ও শহরগুলোতে আকস্মিক অভিযান চালায়। এর জবাবে গাজায় ব্যাপক ইসরায়েলি বিমান হামলা শুরু হয়।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজার বাসিন্দাদের স্থানান্তর অত্যন্ত বিপজ্জনক: জাতিসংঘ মহাসচিব
গাজার বাসিন্দাদের স্থানান্তর অত্যন্ত বিপজ্জনক: জাতিসংঘ মহাসচিব
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নির্দেশে গাজার বাসিন্দাদের উত্তর থেকে দক্ষিণে স্থানান্তর অত্যন্ত বিপজ্জনক।
কয়েক দিনের বিমান হামলার পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজা সিটি ও এর আশেপাশের ফিলিস্তিনিদের ওই অঞ্চলের দক্ষিণে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে উল্লেখ করে গুতরেস বলেন, ‘খাবার, পানি বা বাসস্থান নেই- অবরুদ্ধ করে রাখা এমন অঞ্চলে ঘনবসতিপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্রের ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে স্থানান্তরিত করা অত্যন্ত বিপজ্জন এবং কিছু ক্ষেত্রে অসম্ভবও।’
গাজার দক্ষিণাঞ্চলের হাসপাতালগুলো ইতোমধ্যে পূর্ণ হয়েছে এবং উত্তরাঞ্চল থেকে যাওয়া হাজার হাজার নতুন রোগী গ্রহণ করতে পারবে না। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে। মর্গগুলো উপচে পড়ছে; দায়িত্ব পালনকালে ১১ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যাওয়ার আগে তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৩৪টি হামলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গাজার অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবং বিদ্যুৎ পাম্প ও ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্টে বিদ্যুৎ না থাকায় পুরো এলাকা পানি সংকটের সম্মুখীন হয়েছে।
গুতেরেস বলেন, গাজার পরিস্থিতি একটি বিপজ্জনক নতুন নিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ার দামেস্ক ও আলেপ্পোর বিমানবন্দরে ইসরায়েলের বিমান হামলা
তিনি বলেন, শনিবার ইসরায়েলে হামাসের ভয়াবহ আকস্মিক হামলায় এক হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং হাজার হাজার আহত হয়েছে এবং গাজায় ইসরায়েলের তীব্র বোমা বর্ষণে ইতিমধ্যে এক হাজার ৮০০ জন নিহত এবং হাজার হাজার আহত হয়েছেন।
গুতেরেস গাজায় অবিলম্বে মানবিক প্রবেশাধিকারের আহ্বান জানিয়েছেন যাতে জ্বালানি, খাদ্য এবং পানি সংকটে থাকা লোকদের সরবরাহ করা যায়। তিনি আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও মানবাধিকার আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার আহ্বান জানান। অবিলম্বে গাজায় জিম্মিদের মুক্তিরও আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: হামাসকে 'ধ্বংস' করার অঙ্গীকার নেতানিয়াহুর : গাজা আক্রমণ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে
গুতেরেস বলেন, ‘এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নের জন্য সব পক্ষ এবং তাদের ওপর যাদের প্রভাব রয়েছে, তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করা জরুরি।’
জাতিসংঘ মহাসচিব মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বজুড়ে সংঘাতের কারণে বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধেও সতর্ক করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সহিংসতাকে উস্কে দেয় এমন অমানবিক ভাষা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি সকল নেতাদেরকে ইহুদিবিদ্বেষ, মুসলিমবিদ্বেষ গোঁড়ামি এবং সব ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা এবং মৃত্যু ও ধ্বংসের এই অন্তহীন চক্রের স্থায়ী সমাধান খুঁজতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একত্রিত হওয়ার এখনই সময়।’
আরও পড়ুন: সিরিয়ার দামেস্ক ও আলেপ্পোর বিমানবন্দরে ইসরায়েলের বিমান হামলা
ইসরায়েলের স্থল হামলার হুমকিতে অনেক ফিলিস্তিনি গাজার উত্তরাঞ্চল ছেড়েছে
ক্ষমতাসীন হামাস সশস্ত্র গোষ্ঠীর আকস্মিক হামলার প্রতিশোধ হিসেবে সম্ভাব্য স্থল আক্রমণের আগে অবরুদ্ধ গাজার ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে দক্ষিণাঞ্চলে সরে যেতে বলেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। এরপর অনেক ফিলিস্তিনি শুক্রবার গাজার উত্তরাঞ্চল ছেড়ে গেছেন।
জাতিসংঘ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, গাজার জনবহুল জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেককে সরিয়ে নেওয়া কঠিন হবে এবং ইসরায়েলকে এই নজিরবিহীন নির্দেশনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। সারাদিন ধরে ওই এলাকায় বিমান হামলা চালানো হলে গাড়ি, ট্রাক ও গাধার গাড়িতে করে পরিবারগুলো গাজা শহরের বাইরে একটি প্রধান সড়কে নেমে আসে।
আরও পড়ুন: হামাসকে 'ধ্বংস' করার অঙ্গীকার নেতানিয়াহুর : গাজা আক্রমণ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে
হামাসের গণমাধ্যম কার্যালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিমানগুলো দক্ষিণাঞ্চল থেকে পালিয়ে আসা গাড়িগুলোতে হামলা চালিয়ে ৭০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের সৈন্যরা হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গাজায় অস্থায়ী অভিযান চালিয়েছে এবং প্রায় এক সপ্তাহ আগে ইসরায়েলে হামাসের হামলায় অপহৃত প্রায় ১৫০ জনের সন্ধান পেয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা গাজা সিটির আশেপাশে হামাসের আন্ডারগ্রাউন্ড আস্তানালক্ষ্য করে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে। কিন্তু ফিলিস্তিনি ও কিছু মিশরীয় কর্মকর্তা আশঙ্কা করছেন যে, ইসরায়েল শেষ পর্যন্ত মিশরের সঙ্গে দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে গাজার জনগণকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ার দামেস্ক ও আলেপ্পোর বিমানবন্দরে ইসরায়েলের বিমান হামলা
হামাস জনগণকে সরে যাওয়ার আদেশ উপেক্ষা করতে বলেছে এবং গাজার পরিবারগুলো কোথাও কোনও নিরাপদ জায়গা না থাকায় চলে যাওয়া বা থাকার সিদ্ধান্ত হিসাবে দেখেছিল। হাসপাতালের কর্মীরা জানিয়েছেন, তারা রোগীদের ছেড়ে যেতে পারবেন না।
গত এক সপ্তাহে ইসরায়েলি অবিরাম হামলায় গাজার আশেপাশের বিশাল এলাকা নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। এতে গাজায় দুর্ভোগ বেড়ে গেছে, যা খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং কার্যত বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে।
গাজা সিটিতে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্টের মুখপাত্র নেবাল ফারসাখ বলেন,‘খাবারের কথা ভুলে যান, বিদ্যুতের কথা ভুলে যান, জ্বালানির কথা ভুলে যান- আপনি এটি করতে পারবেন কিনা, এখন একমাত্র উদ্বেগ হচ্ছে আপনি বেঁচে থাকবেন কিনা।’ এসময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানিয়েছে, গাজার এক সপ্তাহের যুদ্ধে প্রায় এক হাজার ৯০০ মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের অর্ধেকেরও বেশির বয়স ১৮ বছরের কম অথবা নারী।
ইসরায়েলি সরকার জানিয়েছে, গত শনিবার হামাসের হামলায় এক হাজার ৩০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক এবং প্রায় দেড় হাজার হামাস সদস্য মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: হামাসের আকস্মিক হামলা-ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়ায় নিহত ১০০০ ছাড়িয়েছে
হামাসকে 'ধ্বংস' করার অঙ্গীকার নেতানিয়াহুর : গাজা আক্রমণ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে
গাজা উপত্যকায় প্রত্যাশিত স্থল আক্রমণের জন্য সেনাবাহিনী প্রস্তুত করার সময় হামাসকে ধ্বংস করার অঙ্গীকার করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
নেতানিয়াহু শুক্রবার(১৩ অক্টোবর) রাতে জাতীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে এই হুমকি দেন।
গত শনিবার হামাস জঙ্গিরা নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলা চালিয়ে নৃশংস তাণ্ডবে এক হাজার ৩০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলিকে হত্যা করার পর থেকে গাজায় বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল গাজার অর্ধেক জনসংখ্যাকে তাদের বাড়িঘর থেকে সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন: সিরিয়ার দামেস্ক ও আলেপ্পোর বিমানবন্দরে ইসরায়েলের বিমান হামলা
নেতানিয়াহু বলেন, 'এটা শুরু মাত্র। 'আমরা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে এই যুদ্ধের অবসান ঘটাব'
‘আমরা হামাসকে ধ্বংস করব’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অভিযানের জন্য ইসরায়েলের প্রতি ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমর্থন রয়েছে।
আরও পড়ুন: হামাসের আকস্মিক হামলা-ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়ায় নিহত ১০০০ ছাড়িয়েছে
সিরিয়ার দামেস্ক ও আলেপ্পোর বিমানবন্দরে ইসরায়েলের বিমান হামলা
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক ও উত্তরাঞ্চলীয় আলেপ্পো শহরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইসরায়েলি বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা’র খবরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সামরিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সানা জানিয়েছে,ওই হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের ফিলিস্তিন বিরোধী নীতিকে 'টাইম বোমা' আখ্যা দিয়েছে আরব লীগ
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে ভয়াবহ হামলা চালানোর পর সিরিয়ায় প্রথমবারের মতো হামলা চালালো ইসরায়েল।
এই অঞ্চলের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সিরিয়া সফরের একদিন আগে এই বিমান হামলা চালালো ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: হামাসের আকস্মিক হামলা-ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়ায় নিহত ১০০০ ছাড়িয়েছে
লেবাননের হিজবুল্লাহসহ তেহরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কাছে ইরান থেকে অস্ত্রের চালান ঠেকাতে সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দরগুলোতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
সিরিয়ার ১২ বছর ধরে চলা সংঘাতে ইরান সমর্থিত হাজার হাজার যোদ্ধা যোগ দিয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বাহিনীর পক্ষে ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করছে।
ইসরায়েল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দামেস্ক ও আলেপ্পো বিমানবন্দরে হামলাসহ সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকার অভ্যন্তরের লক্ষ্যবস্তুতে শত শত হামলা চালিয়েছে। তবে এসব হামলা ও অভিযানের বিষয়ে খুব কমই স্বীকার করে বা আলোচনা করে দেশটি।
আরও পড়ুন: কঠোর লড়াইয়ের পর ইসরায়েলি সৈন্যরা খুঁজে পান ধ্বংসস্তূপ ও শিশু হত্যার চিহ্ন
কঠোর লড়াইয়ের পর ইসরায়েলি সৈন্যরা খুঁজে পান ধ্বংসস্তূপ ও শিশু হত্যার চিহ্ন
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একজন কমান্ডার ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া পুড়ে যাওয়া একটি বাড়ির সামনে থামলেন। এক সময়ের দাঁড়িয়ে থাকা বাড়ির সামনের দেয়াল এখন আর নেই। তিনি বললেন, দেখুন হামাস সশস্ত্র বাহিনীরা কী করেছে! এই ঘনবসতি সম্প্রদায়টি কিছুদিন আগেও প্রাণে চঞ্চল ছিল।
মেজর জেনারেল ইতাই ভেরুভ বলেন, ‘যে ঘরে শিশুরা ছিল, সে ঘরেই কেউ এসে তাদের মেরে ভেলেছে। ১৫ জন ছিল মেয়ে ও কিশোর বয়সী। তারা তাদের একই ঘরে রেখে হ্যান্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং সব শেষ হয়ে যায়।’
ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে পূর্ব ইউরোপে ইহুদিদের ওপর নৃশংস হামলার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘এটি জঘন্য ঘটনা, এটি গণহত্যা।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েল ও হামাসের সংঘর্ষে ৯ মার্কিন নাগরিক নিহত: এনএসসি
গাজার সঙ্গে ইসরায়েলের সুরক্ষিত সীমান্ত থেকে কয়েক মাইল দূরে অবস্থিত এই গ্রামটি সশস্ত্র বাহিনীদের কাছ থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘ লড়াইয়ের পর বুধবার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক সাংবাদিকসহ একদল সাংবাদিকের নেতৃত্বে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এই গ্রামটি পরিদর্শন করে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেন, ইসরায়েলি বাহিনীর জয়ের আগে হামলাকারীরা ১০০ জনেরও বেশি বাসিন্দাকে হত্যা করেছে।
ফিলিস্তিনি ছিটমহল থেকে শুরু হওয়া ব্যাপক আক্রমণের অংশ হিসেবে শনিবার ভোরে ২০টিরও বেশি শহর ও গ্রামে হামলা চালানো হয়, যার মধ্যে ১ হাজারেরও বেশি মানুষের বসতি বে’ইরি অন্যতম।
প্রতিষ্ঠারও দুই বছর পূর্বে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা শুরু হওয়া বে'ইরি অঞ্চলে অন্যান্য স্থাপনার মধ্যে একটি বড় মুদ্রণ প্ল্যান্ট ছিল, যা ইসরায়েলি ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়। যা এখন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধের ভয়াবহ প্রতীকে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে প্রায় ১ হাজার ২০০ এবং গাজায় প্রায় ১ হাজার ১০০ জন নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলে ফ্লাইট স্থগিত করল ইজিপ্টএয়ার
সামরিক বাহিনী থেকে অবসর নেওয়া ভেরুভকে আবারও আক্রমণের কবলে পড়া শহরগুলো উদ্ধার করতে আবারও শনিবার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তিনি বলেন, হামাস যোদ্ধারা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে অবস্থান নিয়েছিল, ছোট ছোট দলে লুকিয়ে ছিল এবং ইসরায়েলি সৈন্যদের চমকে দিয়েছিল। কারণ বাড়ি বাড়ি গিয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘যখনই আমরা ভেবেছি যে আমরা অঞ্চলটি পরিষ্কার করেছি এবং সবকিছু নীরব ছিল, হঠাৎ করে আরও ১২ বা ২০ জন বেরিয়ে এসেছে।’
দোতলা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনী গ্রেনেড দিয়ে কিশোর-কিশোরীদের হত্যা করেছে। সৈন্যরা তাদের হাত বাঁধা অবস্থায় অন্যান্য বাসিন্দাদের লাশ খুঁজে পেয়েছে। সংক্ষিপ্ত পরিদর্শনের সময়, একজন প্রতিবেদক কিছু বাড়ির পাশে ফাঁকা গর্ত এবং গাড়িতে আগুন দিতে দেখেছিলেন। ধ্বংসাবশেষের মাঝখানে একটি বাচ্চাদের ব্যাকপ্যাকসহ পরিবারের ফ্রেমযুক্ত ছবিগুলো সেখানে পড়ে ছিল।
বুধবার সূর্যাস্তের একটু আগে যখন সাংবাদিকদের নিয়ে আসা হয়, ততক্ষণে উদ্ধারকর্মীরা নিহত বেশিরভাগ বাসিন্দার লাশ সরিয়ে ফেলেন। কিন্তু বেশ কয়েকজন সশস্ত্র বাহিনীর লাশ ছিল এবং বাতাসে প্রচণ্ড মৃত্যুর গন্ধ ছিল।
ভেরুভ বলেন, ‘আমরা গাজায় আঘাত হানব। আমরা হামাসকে আঘাত করব। এবং আমরা ধ্বংস করব।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের সমর্থনে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে রণতরী পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র
হামাসের আকস্মিক হামলা-ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়ায় নিহত ১০০০ ছাড়িয়েছে
ইসরায়েলি সরকার রবিবার হামাসের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। হামাসের আকস্মিক আক্রমণের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ‘উল্লেখযোগ্য সামরিক পদক্ষেপের’ জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছে। কারণ, সামরিক বাহিনী দক্ষিণাঞ্চলের শহরগুলোতে এখনও যোদ্ধাদের দমন করার চেষ্টা করছে এবং গাজা উপত্যকায় বোমাবর্ষণ জোরদার করেছে ইসরায়েল।
এতে উভয় পক্ষের এক হাজার ১০০ জন নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩২
হামাস গাজা থেকে নজিরবিহীন আক্রমণ শুরু করার ২৪ ঘন্টারও বেশি সময় পরে ইসরায়েলি বাহিনী সোমবার সকালেও বেশ কয়েকটি স্থানে লুকিয়ে থাকা হামাস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ইসরায়েলের কমপক্ষে ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। কয়েক দশকের মধ্যে এমন পরিস্থিতিতে পড়েনি দেশটি। অন্যদিকে গাজায় ৪০০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের ফিলিস্তিন বিরোধী নীতিকে 'টাইম বোমা' আখ্যা দিয়েছে আরব লীগ
ইসরায়েলের ফিলিস্তিন বিরোধী নীতিকে 'টাইম বোমা' আখ্যা দিয়েছে আরব লীগ
ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সহিংস নীতিকে 'টাইম বোমা' আখ্যায়িত করে আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল গীত ফিলিস্তিনি গাজা উপত্যকায় তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।
আবুল গীতকে উদ্ধৃত করে আরব লীগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলের সহিংস ও চরমপন্থী নীতির অব্যাহত বাস্তবায়ন একটি টাইম বোমা, যা অদূর ভবিষ্যতে স্থিতিশীলতার জন্য এই অঞ্চলকে গুরুতর সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে।’
গাজায় ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, দিনের শুরুতে ছিটমহলটিতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২৩২ জন নিহত এবং ১ হাজার ৬৯৭ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩২
এর আগে গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স মুভমেন্টের (হামাস) রকেট হামলার পর ইসরায়েলি এই হামলা চালানো হয়।
শনিবার ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, দুই পক্ষের মধ্যে নতুন দফা সংঘর্ষে অন্তত ১৫০ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: হামাসের আকস্মিক হামলায় ২২ ইসরায়েলি সেনা নিহত
হামাস কিছু ইসরায়েলি কর্মকর্তা ও সৈন্যকে জিম্মি করে রেখেছে, যা ইসরায়েলি পক্ষ নিশ্চিত করেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শনিবার ঘোষণা করেছেন, ইসরায়েল ‘যুদ্ধের অবস্থায়’ রয়েছে এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ইসরায়েলি সৈন্য ও বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের আত্মরক্ষার অধিকারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় সামরিক বাহিনীর অনুষ্ঠানে ড্রোন হামলায় নিহত ৮০, আহত ২৪০
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩২
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩২, আহত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৬৯৭ জন।
শনিবার গাজায় ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক হালনাগাদ তথ্যে জানানো হয়।
এর আগে ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স মুভমেন্টের (হামাস) রকেট হামলার জবাবে এই বিমান হামলা চালানো হয়।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে যে ফিলিস্তিনি জঙ্গিরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রায় ৩ হাজার রকেট নিক্ষেপ করেছে এবং কয়েক ডজন সশস্ত্র ব্যক্তি দক্ষিণ ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করেছে।
আরও পড়ুন: গাজায় বিমান হামলায় আরেক সশস্ত্র কমান্ডার নিহত হয়েছে: ইসরায়েল
গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী জঙ্গি গোষ্ঠী হামাস দাবি করেছে যে তারা বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা ও সৈন্যকে আটক করেছে এবং তাদের ‘নিরাপদ স্থানে’ রাখা হয়েছে।
জবাবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, তারা উপকূলীয় ছিটমহলের বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েক ডজন যুদ্ধবিমান দিয়ে হামাসের স্থাপনা ও সদর দপ্তর লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের জ্বালানিমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, হামাসের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে তার দেশ ফিলিস্তিনি ছিটমহলের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেবে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৯ জন নিহত
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক জাতীয় ভাষণে ঘোষণা করেছেন যে ইসরায়েল ‘যুদ্ধের অবস্থায় রয়েছে’ এবং ‘মজুদের পূর্ণ একত্রীকরণের’ নির্দেশ দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ইসরায়েলি বাহিনী ও বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মরক্ষার অধিকারের ওপর গুরুত্বারোপ করে গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত, ওআইসির জরুরি বৈঠকে বাংলাদেশের তীব্র নিন্দা