বরিশাল
মেঘনার পানি বিপদসীমার ওপরে, ভোলায় ৮ গ্রাম প্লাবিত
সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে আবারও উপকূলীয় দ্বীপজেলা ভোলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। শনিবার মেঘনার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এর ফলে ভোলার রাজাপুর ইউনিয়নের কমপক্ষে আটটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে সকাল বিকাল দুই বেলা ভাসছে ওই এলাকার মানুষ। গত চারদিন ধরে জোয়ারের পানিতে ১৯ ছাগল মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ভোলার রাজাপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন জানান, গত কয়েক দিনের অতি জোয়ারের পানিতে তাদের ইউনিয়নের ৩ নং সামপুর, দাইয়া, মেদুয়া, কন্দকপুর, ৪নং ওয়ার্ড, চর মনোশা একাংশ ও মধ্য সামপুর গ্রাম সকাল ও বিকালে দুই বেলা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। বাঁধের ভিতরে ও বাইয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে করে ৩ থেকে ৪ ফুট পানিতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। মানুষের দুর্ভোগ এখন চরম আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয়রা জানান, বহু মানুষের আমন ধানের জালা খেত নষ্ট হয়ে গেছে। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে মানুষের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। অসংখ্য পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। গবাদি পশু মারা যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, রাজাপুর ইউনিয়নে রনি মাতাব্বরের ছয়টি, করিমের আটটি, বাহাউদ্দিননে তিনটি, রেজাউলের দুটি ছাগাল মারা গেছে। এছাড়াও বহু ছাগল অসুস্থ হয়ে পড়েছে। মাঝের চর, মদপুরসহ চরাঞ্চল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, ভোলায় মেঘনার পানি শনিবার বিপদসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রভাহিত হচ্ছে। তবে বেড়ি বাঁধ ভেঙে বা উপচে কোথাও পানি প্রবেশের ঘটনা ঘটেনি।
আরও পড়ুন: বঙ্গোসাগরে নিম্নচাপ: ভোলার ১০ গ্রাম প্লাবিত
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি: বিপাকে ভোলার লক্ষাধিক জেলে
বঙ্গোসাগরে নিম্নচাপ: ভোলার ১০ গ্রাম প্লাবিত
বঙ্গোসাগরে নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর ইউনিয়ন ও মনপুরা ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে করে প্রায় ২২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
ঢালচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম জানান, অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্রায় দেড় হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। সকাল ১০টা থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রায় ৮ ঘন্টা জোয়ারের পানিতে ভাসতে হচ্ছে ঢালচরের মানুষকে। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে গত তিন দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ পানি উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, জোয়ারের ৪ থেকে ৫ ফুট পানিতে মানুষের ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান তলিয়ে যায়। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। বহু ঘর-বাড়ি ও রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়েছে। গবাদি পশুর কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি।
অপরদিকে জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরার কাউয়ারটেকে ঢাকাগামী লঞ্চ ঘাট এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়।
আরও বলুন: বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ: কক্সবাজারে পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধাজ্ঞা
কলাতলী চরের ইউপি সদস্য মো. রহমান জানান, বেড়ি বাঁধহীন সদ্য ঘোষিত নতুন চর কলাতলী ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা ৫ ফুট জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়াও বিচ্ছিন্ন চরনিজাম, বদনারচর, ঢালচর ও চর শামসুদ্দিনে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ওই সব চরে বসবাসরত ২০ হাজারের ওপরে মানুষ বুধবার ও বৃহস্পতিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের কাউয়ারটেক এলাকার বাসিন্দারা জানান, জোয়ারের পানিতে ঘর-বাড়ি সব ডুবে গেছে। প্রতিদিন জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই তারা জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর ডিভিশন-২ এর উপসহকারি প্রকৌশলী আবদুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, মেঘনার পানি বুধবার বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার ও বৃহস্পতিবার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। জোয়ারের পানিতে চরাঞ্চলসহ বেড়ি বাঁধের বাইরের এলাকা চার ফুট জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ: বাগেরহাটের নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি
লঞ্চ-বাল্কহেড সংঘর্ষে নিখোঁজ শ্রমিকের লাশ উদ্ধার
সন্ধ্যা নদীতে লঞ্চের সঙ্গে সংঘর্ষে বাল্কহেড ডুবিতে নিখোঁজ দুইজনের মধ্যে কালাম নামে এক শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলাধীন সন্ধ্যা নদীর খেজুরবাড়ি পয়েন্ট থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন বাল্কহেডের মালিক হাবুল কাজী।
তিনি জানান, মৃত কালাম (৫৫) পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলার নান্দুহার এলাকার বাসিন্দা। এদিকে এখনও নিখোঁজ অপর শ্রমিক মিলনের সন্ধানে নদীতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাল্কহেড মালিক।
আরও পড়ুন: ধলেশ্বরী নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় সিমেন্টবোঝাই বাল্কহেড ডুবি
প্রায় ৫০০ যাত্রী নিয়ে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে ঢাকা যাওয়ায় পথে উজিরপুর উপজেলাধীন মীরের হাট সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীতে এমভি মর্নিং সান-৯ লঞ্চের সঙ্গে একটি বাল্কহেডের সংঘর্ষ হয়। এতে বাল্কহেডটি ডুবে গিয়ে এর দুই শ্রমিক নিখোঁজ হন এবং লঞ্চের তলা ফেটে ভেতরে পানি প্রবেশ করতে থাকে। পরে লঞ্চটি উজিরপুরের বড়াকোঠা ইউনিয়নের চৌধুরীর হাট লঞ্চঘাটে নোঙর করে।
এ সময় আতঙ্কিত হয়ে বেশিরভাগ যাত্রী লঞ্চ থেকে নেমে গেলেও কিছু যাত্রী লঞ্চে থেকে যান। পরে লঞ্চটির ফেটে যাওয়া অংশ মেরামত করা হলে সেটি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিহা তানজিন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে রাতেই তিনিসহ, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স ও বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা যান। লঞ্চের যে অংশ ফেটে যায়, সেখানে ঝালাই করে মেরামত করা হয়। পরে রাত সোয়া ৩ টার দিকে লঞ্চটি নিরাপদে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। তখন লঞ্চে ১শ’র ওপরে যাত্রী ছিল বলে জানান তিনি।
এদিকে এ ঘটনায় এখনও কোন পক্ষ কোন ধরনের মামলা দায়ের করেনি। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ আলম চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বাল্কহেডের ধাক্কায় নৌকাডুবি: স্ত্রীর মৃত্যু, স্বামী নিখোঁজ
ভোলায় মেঘনা নদীতে বালু বোঝাই বাল্কহেড ডুবি
‘বান্ধবী’র সঙ্গে দেখা করতে বরিশালে ভারতীয় নৃত্যশিল্পী, হতাশ হয়ে দেশে ফিরলেন
প্রেমকান্তো নামে এক ভারতীয় যুবক তার তথাকথিত বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে বরিশালে এসেছেন, কিন্তু প্রেমিকা তাকে প্রত্যাখ্যাত করেন।
প্রেমকান্ত ও মেয়েটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়, তারা একে অপরকে ভালোবাসতেন।
ইতোমধ্যেই তার বান্ধবী তাকে প্রত্যাখ্যান করেন এবং তার বান্ধবীর অন্য প্রেমিক হাতে তিনি নির্যাতনের শিকার হন বলে সম্প্রতি ঘটনাটি আলোচনায় উঠে আসে।
প্রতারিত ও নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রেমকান্তো স্থানীয় পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুন: প্রেমের টানে সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে ভারতীয় তরুণী
গত ২৪ জুলাই ভারতের তামিলনাড়ু থেকে ওই যুবক প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে বাংলাদেশে আসেন। পরের দিন বরিশাল সরকারি কলেজে তাদের দেখা হয়। পরে তারা বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার দেখা করেন। একপর্যায়ে প্রেমকান্তোকে মেয়েটির দ্বিতীয় প্রেমিকের কথা জানানো হয়।
এদিকে,প্রেমকান্তের খবর শুনে গত ২৭ জুলাই ওই ভারতীয় যুবককে মারধর করে তরুণীর আরেক প্রেমিক।
আরও পড়ুন: প্রেমের টানে ভারত থেকে বাংলাদেশে এসে ধরা কিশোরী!
প্রেমকান্তোর অভিযোগ, তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু পুলিশ এখনো এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
পরে, বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশন ওই যুবককে ঢাকা এনে ভারতে পাঠিয়ে দেয়।
ভোলায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ: ঢাকায় ছাত্রদল নেতার মৃত্যু
ভোলায় পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের (জেসিডি) এক নেতা বুধবার ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। এতে এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দুই জনে দাঁড়িয়েছে।
নিহত নূরে আলম জেলা ছাত্রদলের সভাপতি।
জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির স্বপন জানান, রবিবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নূরে আলম গুলিবিদ্ধ হন। ওই দিনই রাজধানীর কমফোর্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হলে বিকাল সোয়া ৩টার দিকে তিনি মারা যান। তিনি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
রবিবার সকালে সদর উপজেলার কালীনাথ রায়ের বাজারে জেলা দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সমাবেশ করে এর নেতাকর্মীরা।
একপর্যায়ে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কালীনাথ রায়ের বাজারে বিক্ষোভ করতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও গুলি বর্ষণ করে; যার ফলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এসময় একজন নিহত হয় এবং কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান, এ ঘটনায় হত্যা মামলায় প্রায় ২৫০-৩০০ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে এবং পুলিশকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৩০০ জন অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে অন্য একটি মামলা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করেছে।
আরও পড়ুন: ভোলায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ভোলায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩০
মেঘনা চরে ফেরি আটকা, যাত্রীদের উদ্ধার
চাঁদপুরে মেঘনা নদীর চরে আটকে থাকা একটি ফেরি থেকে ৪০০ জনেরও বেশি যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টার দিকে চাঁদপুরের পশ্চিম মোহনপুর সংলগ্ন স্থানে এই ঘটনা ঘটে।
আটকা পড়া ফেরির মাস্টার আলম সরদার জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ৪০০ যাত্রী নিয়ে ‘সুন্দরবন-১১’ বরিশালের যাওয়ার সময় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। লঞ্চটি চাঁদপুরের মোহনপুরের কাছে পৌঁছালে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে নদীর তীরবর্তী চরের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
ফেরীর যাত্রী ফারুক হোসেন বলেন, রাত ১১টার দিকে ফেরীর যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয় এবং ১২টার দিকে চরে আটকে যায়। এই সময় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।
এদিকে, সুরভী-৭ লঞ্চটি পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আটকে যাওয়া ফেরিটি দেখতে পায় এবং সন্দুরবন ১১ লঞ্চের যাত্রীদের উদ্ধার করে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে সব যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়।
পড়ুন: জাহাজ ও ফেরি ভাড়া ২০ শতাংশ বাড়াল বিআইডব্লিউটিসি
মুন্সীগঞ্জে দুই ফেরির মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১০
বরিশালে পানিতে ডুবে শিশুসহ ২ জনের মৃত্যু
বরিশালের আগৈলঝাড়ার পৃথক এলাকায় পানিতে ডুবে শিশুসহ দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার বাকাল ইউনিয়ন ও বাগধা ইউনিয়নে সোমবার এই দুর্ঘটনা দুটি ঘটে।
বাকাল ইউনিয়নের ফুল্লশ্রী গ্রামে সোমবার দুপুরে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে ইয়াসিন ফড়িয়া (২০) নামে এক যুবক নিখোঁজ হয়। পরে খোঁজাখুজির পর পুকুর থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ইয়াসিন ওই গ্রামের শাহাজালাল ফড়িয়ার ছেলে।
নিহতের বাবা শাহাজালাল ফড়িয়া জানান, ইয়াসিন মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিল। গোসল করতে নেমে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
অপরদিকে একইদিন উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের চাঁদত্রিশিরা গ্রামে দেড় বছরের শিশু ইব্রাহিম শিকদার পুকুরে পড়ে নিহত হয়েছে। নিহত ইব্রাহিম ওই গ্রামের মোজাম শিকদারের ছেলে।
মোজাম সিকদার জানান, খেলার ছলে বাড়ির পাশের পুকুরে পড়ে যায় শিশু ইব্রাহিম। পরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. ফারহানা ইসলাম জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই পানিতে ডুবে যাওয়া দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: হাজীগঞ্জে পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
ভোলায় নিউমোনিয়া ৪ শিশুর মৃত্যু, হাসপাতালে ৪০০
ভোলায় নিউমোনিয়া এবং অন্যান্য ঠান্ডাজনিত রোগ শিশুদের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
ভোলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার পর্যন্ত গত এক মাসে মোট ৪০০ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে যার মধ্যে ভোলা সদর উপজেলায় তিন এবং চরফ্যাসন উপজেলার এক শিশু মারা গেছে।
শুক্রবার স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, গত এক মাসে জেলায় কমপক্ষে চার শিশু মারা গেছে এবং আরও ৪০০ ও বেশি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
আরও পড়ুন: জোরদার প্রচেষ্টা নিউমোনিয়ায় মৃত্যু থেকে বাঁচাতে পারে ১ লাখ ৪০ হাজার শিশুকে: ইউনিসেফ
ভোলা সিভিল সার্জন দপ্তর জানিয়েছে, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত মৃত চার শিশুর মধ্যে তিন ভোলা সদরে ও ১ জন চরফ্যাসন উপজেলার।
স্বাস্থ্য বিভাগ শিশু মৃত্যু এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য অতিরিক্ত গরম এবং পরে প্রচুর বৃষ্টিপাতকে দায়ী করেছে।
ভোলা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বাধ্য এক একটি বেডে একাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। হাসপাতালের ৩০ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে শুক্রবার ১০ জন নতুন ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে অর্ধ শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শয্যা স্বল্পতার কারণে জেলার সাত উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে কিছু রোগীকে স্থানান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নিউমোনিয়া, ফুসফুস জটিলতায় নটরডেম কলেজের শিক্ষকের মৃত্যু
ভোলা ২৫০ শয্যার জেনালের হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. তামান্নায়ে হাবিবা জানান, নিউমোনিয়ায় শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হয় এবং আবহাওয়া জনিত কারনে শিশুদের ঠান্ডা জনিত রোগ বাড়তে পারে। চিকিৎসক ও নার্সের সংকট থাকা স্বত্বেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
পান্ডব নদীতে সিমেন্ট বোঝাই ট্রলারডুবি
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার পান্ডব নদীতে বৃহস্পতিবার রাতে সিমেন্ট বোঝাই ট্রলার ডুবে গেছে বলে জানিয়েছেন বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) আলাউদ্দিন মিলন।
ওসি জানান, বরিশাল নগরীর অ্যাংকর সিমেন্ট ফ্যাক্টরি থেকে এক হাজার বস্তা সিমেন্ট নিয়ে ট্রলারটি রওনা হয়েছিল। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ট্রলারটি পান্ডব নদীর উপজেলার আর্শেদের খেয়াঘাট এলাকায় পৌঁছালে বিপরীতমুখী বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলারডুবি, ৩ জেলে নিখোঁজ
বাকেরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম জানান,দুর্ঘটনাকবলিত ট্রলারটিতে দুজন যাত্রী ছিল। তারা সাতরে তীরে উঠেছেন। এর মধ্যে একজন সামান্য আহত হয়েছে। তাকে বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
হত্যার পর মেঘনায় ভাসিয়ে দেয়া হয় মিলনের লাশ
বরিশালের হিজলা উপজেলায় গত ৬ মাস আগে পল্লী চিকিৎসক নিখোঁজের রহস্য উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কের কারণে পল্লী চিকিৎসককে হত্যার পর লাশ মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে বলে গ্রেপ্তাররা স্বীকার করেছে পুলিশের কাছে।
হত্যার শিকার পল্লী চিকিৎসক মিলন দপ্তরী (৩০) উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের ছয়গাঁও গ্রামের আবদুল খালেক দপ্তরীর ছেলে।
হত্যার কথা স্বীকার করে পুলিশের কাছে জবানবন্দি দেয়া আসামিরা হলো- উপজেলার মেমানিয়া ইউনিয়নের পূর্ব খাগেরচর গ্রামের মৃত আব্দুর রব ঘরামীর ছেলে আব্দুর রশিদ ঘরামী (৬৪) ও তার প্রবাসী ছেলে মনির হোসেনের স্ত্রী রাহেলা বেগম (২৭)।
আরও পড়ুন: বরিশালে বিআরটিসি বাসের ধাক্কায় ৬ জন নিহতের ঘটনায় চালক গ্রেপ্তার
বরিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪, আহত ১২
হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইউনুস মিঞা জানান, আব্দুর রশিদ ঘরামী ও তার ছেলের বউ রাহেলা হত্যার কথা স্বীকার করে পুলিশের কাছে ১৬১ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
আসামিদের স্বীকারোক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে ওসি জানান, পল্লী চিকিৎসক মিলনের সঙ্গে রাহেলা বেগমের বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক হয়। বিষয়টি রাহেলার শ্বশুর রশিদ জেনে ফেলে। পরে রাহেলার মাধ্যমে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে ফোন করে মিলনকে ঘরে আনে আব্দুর রশিদ। মিলন ঘরে আসার আগে থেকে আলমারীর পিছনে লুকিয়ে থাকা আব্দুর রশিদ এসে মিলনের চোখে মরিচের গুড়া নিক্ষেপ করে। এসময় মিলন বিষয়টি ভালো করেননি বলে হুমকি দেয় আব্দুর রশিদকে। তখন রশিদ মুগুর (গাব গাছের লাঠি) দিয়ে সজোরে মিলনের বুকে আঘাত করে। এতে মিলন ঘরের মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে আব্দুর রশিদ ও তার পুত্রবধূ বুঝতে পারে মিলনের মৃত্যু হয়েছে। তখন তারা লাশ গুমের পরিকল্পনা করে। মিলনের পা রশি দিয়ে বেঁধে টেনে বাড়ির সামনের খালে ফেলে দেয়। সেখান থেকে টেনে মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেয়।
ওসি বলেন, এই ঘটনায় মিলনের ভাই সবুজ দপ্তরী ১ ফেব্রুয়ারি হিজলা থানায় নিখোঁজের জিডি করেছিল। জিডির তদন্ত করে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে মিলনের সর্বশেষ অবস্থান জানতে পেরে আব্দুর রশিদ ও তার পুত্রবধূ রাহেলাকে সোমবার রাতে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার কথা স্বীকার করেন।
তবে লাশের কোন সন্ধান পাননি জানিয়ে ওসি বলেন, এ ঘটনায় হত্যা মামলা হবে।