খুলনা
খুলনার তিন হাসপাতালে আরও ১৭ মৃত্যু
খুলনার তিন হাসপাতালে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘন্টায় আরও ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনায় ১৩ জন এবং উপসর্গে চারজন মারা গেছেন।
খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে আট জন, গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চার ও জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় আট জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনায় চারজন ও উপসর্গে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় করোনায় আরও ১৭ মৃত্যু
মৃতরা হলেন, খুলনা মহানগরীর চানমারী এলাকার মমতাজ বেগম (৫৫), খালিশপুরের রহিমা পারভীন, সোনাডাঙ্গার মনোয়ারা বেগম (৫০) ও বাগেরহাটের ফকিরহাটের সুব্রত পাল (৪৫)। হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৮০ জন। যার মধ্যে রেড জোনে ১০৯ জন, ইয়েলো জোনে ৩১ জন, আইসিইউতে ২০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩৩ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪০ জন।
গাজী মেডিকেল হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন, নগরীর বড় বয়রা এলাকার নোভা রানী দাশ (৭৫), খুলনার ডুমুরিয়ার নজরুল ইসলাম (৬৮), পাইকগাছার কপিলমুনির শোভা রানী সাহা (৭৫) ও বাগেরহাট সদরের মাহমুদা বেগম (৫৫)। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ১৩৪ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ৯ জন ও এইচডিইউতে আছেন ১১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩৬ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৭ জন। পিসিআর ল্যাবে ৬২টিনমুনা পরীক্ষায় ৪৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
মৃতরা হলেন, নগরীর খালিশপুরের জিল্লু মিয়া (৬৫), রহিম নগরের আমির হোসেন (৬৫), রূপসার নন্দনপুরের শরিফুল ইসলাম (৫২), বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার শারমিন বেগম (৪৫) ও একই উপজেলার মারিয়া (৩৯)। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭০ জন, তার মধ্যে ৩৬ জন পুরুষ ও ৩৪ জন নারী। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ২৪ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৩ জন।
আরও পড়ুন: করোনা: খুলনা বিভাগে রেকর্ড ৪৬ মৃত্যু
খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মুখপাত্র ডা. প্রকাশ চন্দ্র দেবনাথ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে কোন মৃত্যু হয়নি। করোনা শনাক্ত হওয়া ৪৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। যার মধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ১০ জন।
কুষ্টিয়ায় করোনা ও উপসর্গে আরও ১৩ মৃত্যু
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে ১১ জন এবং উপসর্গ নিয়ে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
আরও পড়ুন: করোনা: কুমিল্লায় ২৪ ঘণ্টায় ৪ মৃত্যু, শনাক্ত ২৮২
এদিকে, হাসপাতালে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে রোগী ভর্তির চাপ প্রতিদিনই বাড়ছে। ২৫০ বেডের করোনা ডেডিকেটেড এই হাসপাতালটিতে এখন শয্যার চেয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে সকাল ১১টা পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা হচ্ছে ২৭৪ জনে। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই ১৭৫ জন। আর উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন আরও ৯৯ জন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, শয্যা না থাকায় এখন রোগীদের মেঝেতে ও করিডোরে রাখতে হচ্ছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রোগীর চাপ যেভাবে বাড়ছে তাতে সেবা প্রদান করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অপরদিকে, কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৮৮৫টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে নতুন করে ২৯২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ৩০ ভাগ। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৮ হাজার ৭৬৬ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৮২৩ জন এবং মারা গেছেন ২৪৫ জন।
আরও পড়ুন: করোনা স্বাভাবিক না হলে গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা নয়, শিগগিরই নতুন সিদ্ধান্ত
নতুন শনাক্তের মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ১৫৩ জন, দৌলতপুরে ৪৪, কুমারখালীর ২৪, ভেড়ামারার ৩৪, মিরপুরের ২৯ ও খোকসা উপজেলায় আট জন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত জেলায় ৬৫ হাজার ৭১৪ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেয়া হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেছে ৬২ হাজার ৯৮১ জনের। বাকিরা নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছেন।
বর্তমানে কুষ্টিয়ায় করোনা রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৬৯৮ জন। এদের মধ্যে হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন আছেন ২৫৯ জন এবং হোম আইসোলেশনে আছেন ২ হাজার ২৩৯ জন।
খুলনায় করোনায় আরও ১৭ মৃত্যু
খুলনার চার হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ১০ জন, জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে দুজন, আবু নাসের হাসপাতালে একজন ও বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ রামেকের করোনা ইউনিটে আরও ১৮ মৃত্যু
রবিবার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এই চারটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে করোনায় ১২ জন ও উপসর্গে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে করোনায় পাঁচজন ও উপসর্গে পাঁচজন মারা গেছেন। এছাড়া হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৮৭ জন। যার মধ্যে রেড জোনে ১১৭ জন, ইয়ালো জোনে ৩০জন, আইসিইউতে ২০ জন ও এইচডিসিতে ২০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩৬ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৫ জন।
আরও পড়ুনঃ নাটোরে করোনার নতুন শনাক্ত ১৮৩
গাজী মেডিকেল হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ১১৯ জন। এরমধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ৯ জন ও এইচডিইউতে আছেন ৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ২৭ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৯ জন। এছাড়া পিসিআর ল্যাবে ৬৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৪৪ জনের করোনা পজেটিভ এসেছে।
আরও পড়ুনঃ কুমিল্লায় করোনায় নতুন শনাক্ত ১৭৪, মৃত্যু ৩
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনার আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মুখপাত্র ডা. প্রকাশ চন্দ্র দেবনাথ জানান, হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত নগরীর নিরালা এলাকার ওয়াহিদুজ্জামান (৬৬) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তাছাড়া করোনা শনাক্ত হওয়া ৪১ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।
নাটোরে করোনায় নতুন শনাক্ত ১৮৩
নাটোরে নিয়ন্ত্রণে আসছে না করোনা সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১৮৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছে এক জন।
এছাড়া গত ৯ জুন থেকে এই জেলায় টানা লকডাউন চলছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, সবর্শেষ ২৪ ঘণ্টায় নাটোরে করোনা সংক্রমণের গড় হার ৩৯ শতাংশের ওপরে। এসময় ৪৭৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ১৮৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
অঅরও পড়ুন: রামেকের করোনা ইউনিটে আরও ১৮ মৃত্যু
এদিকে, সোমবার নাটোর সদর হাসপাতালে অতিরিক্ত ১২ জনসহ ৮২ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে।
হিলি দিয়ে সপ্তাহে ৩ দিন ভারতে যাতায়াতের সিদ্ধান্ত
এখন থেকে সপ্তাহে তিন দিন দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যাতায়াত করতে পারবেন পাসপোর্টযাত্রীরা। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারতের বিশেষ অনুমতি নিতে হবে।
রবিবার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই সংক্রান্ত একটি আদেশ হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে এসে পাঠানো হয়। এর আগে প্রতিদিন আসা-যাওয়া করা যেত।
আরও পড়ুন: কঠোর লকডাউনে স্বাভাবিক হিলি স্থলবন্দরের কার্যক্রম
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সেকেন্দার আলী জানান, চিকিৎসা ও জরুরি প্রয়োজনে ভারতে গিয়ে আটকাপড়া বাংলাদেশি পাসপোর্টযাত্রীরা এখন থেকে সপ্তাহে তিন দিন হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরতে পারবেন। একইভাবে ভারতীয় পাসপোর্টযাত্রীরাও বাংলাদেশ থেকে ফিরতে পারবেন এবং আসতে পারবেন। এছাড়া চিকিৎসাসহ জরুরি প্রয়োজনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্টযাত্রীরা আবার ভারতে যেতে পারবেন।
আরও পড়ুন: হিলিতে বাড়ল কঠোর বিধিনিষেধ, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চলবে
তিনি জানান, রবিবার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) হয়ে আসা এই সংক্রান্ত একটি আদেশ হাতে পেয়েছি। ওই আদেশে বলা হয়েছে প্রতি সপ্তাহের রবিবার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার এই তিন দিন বাংলাদেশ ও ভারতের পাসপোর্টযাত্রীরা আসা-যাওয়া করতে পারবেন। তবে এই দুই দেশের বিশেষ অনুমতি ছাড়া কেউ কোনও দেশে প্রবেশ করতে পারবে না।
করোনা: খুলনা বিভাগে রেকর্ড ৪৬ মৃত্যু
সব রেকর্ড ভেঙে খুলনা বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন করে ১ হাজার ৩০৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) খুলনা বিভাগে সর্বোচ্চ ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক রাশেদা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে খুলনায় ১৫ জন, কুষ্টিয়ায় ১৫ জন, যশোরে সাতজন, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গায় দু’জন করে এবং বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও মেহেরপুরে একজন করে মারা গেছেন।
করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৬০ হাজার ৫৬৪ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ২১৪ জন। এ সময় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪০ হাজার ২১৮ জন।
খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. শেখ সাদিয়া মনোয়ারা ঊষা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় খুলনায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে জেলার ১০ জন রয়েছেন। একইসময়ে ৪৩৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৫০ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। যা মোট নমুনা পরীক্ষার ৩৪ শতাংশ।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জেলাভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫০ জনের। এ পর্যন্ত খুলনা জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৬ হাজার ৩৮৭ জনের। এ সময় মারা গেছেন ৩০০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৩৫২ জন।
এদিকে রবিবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গে নিয়ে খুলনার পৃথক তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া ১৫ জনের মধ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ৭ জন, খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২ ও বেসরকারি গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনা হাসপাতালের ফোকালপারসন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৯৭ জন। যার মধ্যে রেড জোনে ১০২ জন, ইয়ালো জোনে ৪১ জন, আইসিইউতে ২০ জন ও এইচডিসিতে ২০ জন রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩৮ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫০ জন।
বেসরকারী গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২৪ ঘণ্টায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ১১৫ জন, এর মধ্যে এইচডিইউতে আছেন ৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ২৩ জন, আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২২ জন।
আরও পড়ুন: একদিনে করোনায় রেকর্ড ১৫৩ মৃত্যু, শনাক্ত ২৮.৯৯ শতাংশ
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, খুলনার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে টুটপাড়ার জহুরুল হক (৬৫) ও ডুমুরিয়ার জাহানারা বেগম (৬০) নামের দুই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১৫ জন, আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৮ জন।
শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে ফোকালপারসন ডা. প্রকাশ দেবনাথ জানান, করোনা ইউনিট খোলার প্রথম ২৪ ঘণ্টায় ২৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন, তবে কেউ মারা যাননি।
খুলনা মেডিকেলের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল, খুলনা জেনারেল হাসপাতাল ও বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাওয়ায় শনিবার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে করোনা ইউনিট চালু করা হয়েছে।
এদিকে করোনার প্রাদুর্ভাব কমিয়ে আনতে খুলনায় দফায় দফায় বিধিনিষেধ ও ‘লকডাউন’ দিয়েও করোনা সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। করোনার হটস্পট হয়ে উঠেছে খুলনা বিভাগের ১০ জেলা। ঈদ উল ফিতর পরবর্তী সংক্রমণ বাড়ার যে শঙ্কা ছিল, সেটিই সত্যি হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে পড়েছে যে অক্সিজেন সিলিন্ডার কে আগে নেবেন-তা নিয়ে করোনা রোগীর স্বজনদের মধ্যে রীতিমতো কাড়াকাড়ি চলে খুলনায়। সময়মতো অক্সিজেন না পেয়ে রোগী মৃত্যুর অভিযোগও রয়েছে। আর যারা বাসাবাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের স্বজনদের ভিড় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানে।
আরও পড়ুন: সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ‘নির্লজ্জ’ আখ্যা দিয়ে পদত্যাগ দাবি
খুলনায় এতো করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণ কী? এমন প্রশ্নের জবাবে খুলনার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, শুধু খুলনায় নয় অনেক জেলাতেই ভয়াবহ অবস্থা। খুলনার মানুষজন স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। এটা তো সংক্রমিত রোগ। এক জন থেকে অন্যজনে ছড়ায়। স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা থাকলেও কেউ মানছেন না। মাস্ক পরছেন না। ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করলেও মাস্ক পরছে না অনেকে। সংক্রমণ হওয়ার আর কোনো রাস্তা তো দেখি না আমরা। এটাই মূলত এক নাম্বার কারণ।
সিভিল সার্জন বলেন, সরকার থেকে শুরু করে মিডিয়াসহ আমরাও সচেতনতার কথা বলছি কিন্তু চোরে শোনে না ধর্মের কাহিনী। সবাই ভাবে কিছু তো হয় না। কিন্তু হচ্ছে তো। যার হচ্ছে তার পরিবার বুঝছে কি হচ্ছে। যার চলে যাচ্ছে তার পরিবারই বুঝছে কি ভুল তারা করেছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণেই সরকার বাধ্য হলো লকডাউন দিতে। লকডাউন মানে কি মানুষকে বাসায় আটকানো। নিশ্চয় স্বাস্থ্যবিধি মানছে না সে জন্যই বাসায় আটকানোর চিন্তা করে সরকার লকডাউন দিয়েছে।
খুলনাঞ্চলের করোনা কি ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, না আমরা তো সেরকম কিছু দেখি না। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দিয়ে সয়লাব হয়ে গেছে এমন রিপোর্ট তো আসে না। যশোর, সাতক্ষীরার দিকে কিছু আছে। আমাদের এখানে কোনোটার আধিক্য তেমন নেই।
আরও পড়ুন: লকডাউনের চতুর্থ দিনে গ্রেপ্তার ৬১৮, জরিমানা প্রায় ১৩ লাখ
খুলনায় করোনা এত বেশি হওয়ার কারণ কী? জানতে চাইলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক রাশেদা সুলতানা বলেন, সব জায়গাই তো বেড়েছে সে হিসেবে খুলনাতেও বেড়েছে। মৃত্যুর হার খুলনায় একটু বেশি। সাধারণ সর্দি জ্বর ভেবে একটু দেরিতে চিকিৎসকের কাছে আসছেন রোগীরা। এখনের যে ভ্যারিয়েন্ট তা আগে থেকে বোঝাও যাচ্ছে না। রোগীও বুঝতে পারে না তিনি কতটা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
তিনি রোগীদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, একটু আগে আগে চিকিৎসকের কাছে আসার জন্য বলবো। আগে আসলে তার অবস্থা বুঝে চিকিৎসা করা গেলে সেভ করা সম্ভব হতে পারে। বিশেষ করে গ্রামের মানুষদের বলা হচ্ছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে সেবা নিতে।
করোনা: খুলনায় আরও ১৫ জনের মৃত্যু
খুলনার তিন হাসপাতালে আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টা থেকে রবিবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এরমধ্যে করোনায় ১৪ জন ও উপসর্গে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এরমধ্যে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাতজন, জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে দুজন ও বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে খুলনা আবু নাসের হাসপাতালের নতুন করোনা ইউনিটে প্রথমদিনে ২৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ খ্যাত ফজল-এ-খোদার ইন্তেকাল
খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, খুলনা করোনা ডেডিকেট হাসপাতালে গত ২৪ ঘন্টায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৯৭ জন। যার মধ্যে রেড জোনে ১০২ জন, ইয়ালো জোনে ৫৫জন, আইসিইউতে ২০ জন ও এইচডিসিতে ২০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হয়েছেন ৪০ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৫ জন।
গাজী মেডিকেল হাসপাতালের স্বত্তাধিকারী ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়াতে করোনায় সর্বোচ্চ ২১ মৃত্যুর রেকর্ড
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরো ১১৫ জন। এরমধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ৮ জন ও এইচডিইউতে আছেন ১০ জন। নতুন ভর্তি হয়েছেন ২৩ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২২ জন।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডাঃ কাজী আবু রাশেদ জানান, গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬৫ জন, তার মধ্যে ৩৩জন পুরুষ ও ৩২ জন মহিলা। গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হয়েছেন ১৫ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৮ জন।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় মোট মৃত্যু ৩৯ লাখ ৬৯ হাজার ছাড়াল
খুলনার আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মুখপাত্র ডা. প্রকাশ চন্দ্র দেবনাথ জানান, হাসপাতালে করোনা শনাক্ত হওয়া ২৪ জন রোগী ভর্তি রয়েছে।
কুষ্টিয়াতে করোনায় সর্বোচ্চ ২১ মৃত্যুর রেকর্ড
গত ২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আরও ১৯ জন ও কুমারখালী উপজেলায় দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।
কুষ্টিয়া করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৩ জন এবং করোনার লক্ষণ নিয়ে আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম.এ. মোমেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় করোনায় একদিনে আরও ১১ মৃত্যু
তিনি জানান, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় এটিই সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা। এর আগে গত জুন মাসে ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ১০ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল।
এদিকে, ২৪ ঘণ্টায় কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন করোনায় আক্রান্ত একজন এবং বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন করোনা রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানা গেছে।
কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: আকুল উদ্দিন করোনা আক্রান্ত দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে আরও ৯৫ জনের করোনা শনাক্ত
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৬০৯ টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে নতুন করে ১৯৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৬৯ ভাগ। জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ালো ৮ হাজার ৪৭৫ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৬৮৯ জন। মারা গেছেন ২৩০ জন।
কুষ্টিয়াতে নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছেন প্রায় আড়াই হাজারের অধিখ মানুষ। এছাড়া, বর্তমানে কুষ্টিয়ায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৪৯৩ জন। এদের মধ্যে হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন আছেন ২৬৫ জন এবং হোম আইসোলেশনে আছেন ২ হাজার ২২৮ জন।
প্রবল বর্ষণে ঝিনাইদহে জলাবদ্ধতা, তলিয়ে গেছে ২০ চাতাল
কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণের ফলে ঝিনাইদহের নিম্নাঞ্চলুগলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানি নিষ্কাষণ ব্যবস্থা না থাকার ফলে সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজারের ত্রিমোহনি এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ২০ চাতাল ও বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।
একই সাথে ফসল উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকর ও চাতালে মালিক-শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন: বন্যার আশঙ্কা: কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত
এদিকে, প্রায় দুই মাস যাবৎ বন্ধ রয়েছে চাল উৎপাদন কার্যক্রম। এতে কোটি টাকার লোকসান হয়েছে শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন চাতাল মালিকরা। এ অবস্থায় বেকার হয়ে অসহায় দিন কাটাচ্ছেন চাতালগুলোতে কর্মরত প্রায় দুই শতাধীক শ্রমিক। এছাড়া সাধুহাটি ও সগান্না ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় বর্ষার পানি নিষ্কাণের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় কৃষকেরা ফসলের ক্ষতি হবার আশঙ্কা করছেন।
শনিবার সরেজমিনে ত্রিমোহনি চাতাল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ওই এলাকার চাতালগুলোর পাশে একটি বিল ছিল। এই বিল দিয়ে এসব নিচু এলাকার পানি নিষ্কাষণ হত। কিন্তু প্রায় এক বছর আগে শুকনো মৌসুমে এই বিল এলাকায় পুকুর খনন করে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। যার ফলে পানি নিষ্কাষণ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। এতে কয়েকদফা বৃষ্টিতে এসব এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
চাতাল শ্রমিক আবু তালেব জানান, চাতালে কাজ করে সংসার চলে। কিন্তু বৃষ্টিতে পানি জমে প্রায় দুই মাস চাতাল বন্ধ রয়েছে। ফলে রোজগার না থাকায় কষ্টের মধ্য দিয়ে দিন পার করতে হচ্ছে। কখনও কখনও তিন বেলাও খাবার জুটছে না।
জলাবদ্ধতার শিকার একটি বাড়ির মালিক ইমান আলী বলেন, ‘পাশেই পুকুর কেটে বাধ দেয়ার ফলে বৃষ্টিতে এখানে পানি জমে গেছে। এই পানি বের হতে না পেরে আমাদের ঘরে ঢুকছে। খুবই সমস্যা হচ্ছে। আমরা উপজেলা প্রশাসনকে জানানোর পরও কোনও কাজ হচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গৃহিণীরা এখন কৃষাণী
চাতাল মালিক ও ডাকবাংলা চাউল কল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন ভান্ডারী বলেন, ‘আমাদের চাতালের পাশে প্রভাবশালীরা পুকুর খনন করায় চাতাল এলাকার পানি বের হচ্ছে না। এখন পানি নিষ্কাষণ না হওয়াই আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কিছু বসত-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।’
তিনি জানান, প্রায় ২০টি চাতাল ক্ষতিগ্রস্থ, উৎপাদন কাজ বন্ধ থাকার ফলে কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। প্রশাসনকে একাধিকবার জানানোর পরও কোনও ফল পাওয়া যায়নি। এভাবে চলতে থাকলে কিছুদিন পরে অটো রাইস মিলের ভেতরেও পানি উঠে যাবে। ফলে আরও কয়েক কোটি টাকা লোকসানের ঝুঁকি বাড়ছে।’
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম শাহীন জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যনদের নিয়ে তিনি এলাকাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। দ্রুতই বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছেন।
খুলনায় করোনায় একদিনে আরও ১১ মৃত্যু
খুলনায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ছয়জন, জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একজন ও বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুনঃ রাজশাহী মেডিকেলে করোনায় আরও ১৩ মৃত্যু
খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, খুলনা করোনা ডেডিকেট হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২১৩ জন। যার মধ্যে রেড জোনে ১১৩ জন, ইয়ালো জোনে ৬০ জন, আইসিইউতে ২০ জন ও এইচডিসিতে ২০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩৫ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৬ জন।
আরও পড়ুনঃ দেশে করোনায় টানা সাতদিন শতাধিক মৃত্যু
গাজী মেডিকেল হাসপাতালের স্বত্তাধিকারী ডাঃ গাজী মিজানুর রহমান জানান, ২৪ ঘণ্টায় এই হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে।এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ১০৯ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ৯ জন ও এইচডিইউতে আছেন ১০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ২৭ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১২ জন। তাছাড়া পিসিআর ল্যাবে ৩১টি নমুনা পরীক্ষায় ২৫ জনের করোনা পজেটিভ এসেছে।
আরও পড়ুনঃ করোনা: বগুড়ায় ৬ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ১১২
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডাঃ কাজী আবু রাশেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যশোরের বারান্দিপাড়ার আলেয়া বেগম (৬৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭০ জন, তার মধ্যে ৩৩ জন পুরুষ ও ৩৭ জন মহিলা। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১২জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭ জন।