খুলনা
যশোরে ট্রাক-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫
যশোরের মনিরামপুরে ট্রাক ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে একজন নিহত এবং পাঁচজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার যশোর-চুকনগর মহাসড়কের ছাতিয়ানতলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত বিধান চন্দ্র রায় (৫৫) বাগেরহাটের কচুয়ার নরেন্দ্রপুর গ্রামের মৃত মনোরঞ্জন রায়ের ছেলে। তিনি পেশায় একজন আইনজীবী।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ভাইবোনসহ নিহত ৩
আহতরা হলেন- খুলনার সোনাডাঙ্গার শেখপাড়া এলাকার এম এন জোয়ারদার (৫৬), হোসনেয়ারা (৫৪), জলি জোয়াদ্দার (৫০), শওকত আরা (৪২) ও মাইক্রোবাসের চালক লিটন হোসেন (৪৫)।
মণিরামপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রণব কুমার বিশ্বাস জানান, আহতদের উদ্ধার করে মনিরামপুর হাসপাতালে নেয়া হয়।
ঘন কুয়াশার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে তার ধারণা।
মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তন্ময় কুমার বিশ্বাস বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই একজন মারা যান। আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে বোনকে আনতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো ভাইয়ের
জানুয়ারিতে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৫ জন নিহত: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
সরকারি গমের চালানে বালু-কংক্রিট: চুয়াডাঙ্গায় মামলা, গ্রেপ্তার ৩
চুয়াডাঙ্গায় সরকারি গমের চালানের ট্রাকে বালুর বস্তা ও বড় কংক্রিটের টুকরা পাওয়ার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার রাতে জোনাকি পরিবহন, সরকার এন্টারপ্রাইজ ও সানরাইজ জুট ট্রেডার্স- এই তিন প্রতিষ্ঠানসহ মোট ১২ জনের নাম উল্লেখ করে সদর উপজেলার খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি মামলা করেছেন।
মামলার পর আটক তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তারা হলেন- ট্রাক হেলপার রবিউল ইসলাম, হৃদয় ও হোসেন আলী।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসানুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সোমবার দুপুরে তিনজনকে আটক করা হয়। সোমবার রাতে সরকারি গমের চালানে তিন হাজার ৭৭১ কেজি গম কম থাকার অভিযোগে তিন প্রতিষ্ঠানসহ ১২ জনের নামে একটি মামলা করেন সদর উপজেলার খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এরপরই আটক তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।
এর আগে চুয়াডাঙ্গা সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, ছয়টি ট্রাক থেকে সব গম নামানো হয়েছে। এতে তিন হাজার ৭৭১ কেজি গম কম পাওয়া গেছে। এছাড়া ওই ট্রাক থেকে উদ্ধার করা বালুর পরিমাণ এক হাজার ৪৮৮ কেজি।
এছাড়া জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজা জানিয়েছিলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাক চালক-হেলপাররা এ কারসাজিতে জড়িত। তবে তদন্তের পর বিষয়টি বিস্তারিত জানানো হবে।
উল্লেখ্য, চুক্তি অনুযায়ী খুলনার সরকার এন্টারপ্রাইজ, জোনাকি পরিবহন ও সানরাইজ জুট ট্রেডার্স পরিবহন ঠিকাদারের মাধ্যমে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৩০০ মেট্রিক টন গম চুয়াডাঙ্গা সদর খাদ্যগুদামে পাঠানোর কথা ছিল। সেই অনুযায়ী গত শুক্রবার প্রথম চালানে ১০০ মেট্রিক টন গম আসে।
রবিবার ভোরে দ্বিতীয় চালানের ১০০ মেট্রিক টন গম এলে আনলোডের সময় একটি ট্রাকে বালুভর্তি সাতটি বস্তা পাওয়া যায়। এরপর অন্য ট্রাকগুলো আনলোড করার সময় পাওয়া যায় একে একে বালুভর্তি ২৮টি বস্তা ও কয়েকটি সিমেন্টের জমাট টুকরো। সব গম ওজনের পর তিন হাজার ৭৭১ কেজি গম কম পাওয়ার অভিযোগে মামলা করে জেলা খাদ্য বিভাগ।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে নকল প্রবেশপত্র তৈরির অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩
বরিশালে প্রাইভেটকার থেকে ৩৫ কেজি গাঁজা জব্দ, গ্রেপ্তার ২
খুলনায় নির্ধারিত মূল্যের বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে এলপিজি সিলিন্ডার
তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম দুই দিন আগে ২৬৬ টাকা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এতে প্রতি ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম দাড়িয়েছে এক হাজার ৪৯৮ টাকা।
এই দামেও বাজারে গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। এর প্রভাব পড়েছে খুলনার বাজারে। নির্ধারিত মূল্যের বেশি দিয়ে কিনতে হবে প্রতি সিলিন্ডার।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরকারি দরের চাইতেও ১০০/১৫০ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে গ্যাস। দাম নিয়ে এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে অসহায় হয়ে পড়েছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ।
আরও পড়ুন: ১২ কেজি এলপিজির দাম বাড়ল ১৬ টাকা
এদিকে গত দুই সপ্তাহ ধরে এলপি গ্যাসের বাজারে সংকট চলছে। ২৬৬ টাকা দাম বাড়বে- এই সংবাদ আগাম জানতে পেরে বাজার থেকে গ্যাস সরিয়ে ফেলে কোম্পানিগুলো।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, খুলনা শহর ছাড়াও আশপাশের পৌরসভা, উপজেলা ও গ্রামে বিপুলসংখ্যক মানুষ এলপিজির ওপর নির্ভরশীল।
আরও জানা যায়, ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে আসছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এলপিজি তৈরির মূল উপাদান প্রোপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রতি মাসে এলপিজির এ দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো। এটি সৌদি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে পরিচিত। এ সৌদি সিপিকে ভিত্তিমূল্য ধরে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে বিইআরসি।
গত বৃহস্পতিবার বিইআরসি এক বিজ্ঞপ্তিতে এলপিজির দাম একলাফে ২৬৬ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এতে প্রতি ১২ কেজির সিলিন্ডারের দর নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৪৯৮ টাকা, যা জানুয়ারি মাসে ছিল এক হাজার ২৩২ টাকা।
সংস্থাটি প্রতি মাসেই এলপিজির দাম নির্ধারণ করে। তবে তা সব জায়গায় কার্যকর হতে দেখা যায় না। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অভিযোগ জানাতে বলা হয়।
নগরীর গোবরচাকা এলাকার বাসিন্দা সোহরাব হোসেন জানান, সরকার ২৬৬ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করেছে দেড় হাজার (এক হাজার ৪৯৮) টাকা। কিন্তু দোকানে কিনতে গেলে দাম চাইছে এক হাজার ৭০০ টাকা। অনেক তর্কবিতর্কের পরে ৫০ টাকা কমে এক হাজার ৬৫০ টাকায় গ্যাস কিনেছি।
নিরাপদ সড়ক চাইয়ের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান মুন্না জানান, তিনিও ১৫০ টাকা বেশি দিয়ে এক হাজার ৬৫০ টাকায় গ্যাস কিনেছেন।
নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও এক হাজার ৬০০ টাকার নিচে গ্যাস নেই। কোথাও এক হাজার ৬৫০, কোথাও এক হাজার ৭০০ টাকায়ও গ্যাস বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর শেখপাড়া এলাকার বাসিন্দা ইকবাল হাসান জানান, সরকার পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতাদের জন্য ৪০/৫০ টাকা মুনাফা রেখেই দাম নির্ধারণ করে। অর্থ্যাৎ ব্যবসায়ীরা যদি ১৪৯৮ টাকায় গ্যাস বিক্রি করে, তাতেও তাদের ৫০/৬০ টাকা প্রতি সিলিন্ডারে লাভ থাকে।
কিন্তু এই লাভে তারা সন্তুষ্ট হতে পারেন না। খুচরা ব্যবসায়ীরা আরও ১০০/১৫০ টাকা লাভ করতে চান।
তিনি বলেন, মাত্র ১৪০০ টাকা বিনিয়োগ করে ১৫০/২০০ টাকা মুনাফা খোঁজার যে লোভ-এটাই গ্রাহকদের পকেট ফাঁকা করে দিচ্ছে। কিন্তু এসব দেখার কেউ নেই।
বটিয়াঘাটার মোহাম্মদনগর এলাকার বাসিন্দা আকরামুল ইসলাম বলেন, তাঁর পাঁচ সদস্যের পরিবারে মাসে দুই সিলিন্ডার এলপিজি লাগে। এতে খরচ হয় তিন হাজার টাকা।
তিনি আরও বলেন, গত মাসে তিনি প্রতি সিলিন্ডার (১২ কেজি) গ্যাস কিনেছেন ১৩৫০ টাকা দিয়ে। এখন ১ হাজার ৬৫০ টাকা চাইছে।
সরকার নির্ধারিত দামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি দাম বললে দোকানদারেরা অপমান করেন। তারা বলেন সরকারের কাছ থেকে কিনতে।
আরও পড়ুন: এলপিজির দাম কেজি প্রতি বাড়ল ২২.১৫ টাকা
এলপিজির দাম কমেছে
খুলনায় ৫০ টাকায় গরুর মাংস, ৪০ টাকায় মুরগির মাংস!
‘বাজারে এক কেজি ছাড়া গরুর মাংস বিক্রি করে না। আর এক কেজি কেনার তৌফিক আমাগে নেই। এক কেজি মাংসের দাম ৭০০ টাকার বেশি। যে কারণে আমাগে মতো মানুষের ভাগ্যে মাংস জোটে না। তবে জব্বার স্টোরে মধ্য ও নিম্নবিত্তের প্রয়োজন অনুযায়ী অল্প টাকায় বাজার করা যায়। সর্বনিম্ন ৫০ টাকায় গরুর মাংস কেনা যায় এবং সর্বনিম্ন ৪০ টাকায় মুরগির গোশত পাওয়া যায়। তাই শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এখানে আসছি মাংস কেনার জন্য’- কথাগুলো বলছিলেন, খুলনার লবণচরার অটোস্ট্যান্ড সংলগ্ন মেসার্স জব্বারের মোড়ের মেসার্স জব্বার স্টোরের ক্রেতা লিমা বেগম।
তিনি আরও বলেন, বাজারে সব জিনিসের দাম আগুন। চাল-ডাল-তেল কিনতেই হিমশিম খাচ্ছি। তখন গরুর মাংস কেনার কথা কল্পনাও করা যায় না। কিন্তু আমাগে কথা মাথায় রেখে এ দোকানে এমন ব্যবস্থা করায় আমরা খুবই খুশি।
মেসার্স জব্বার স্টোরের মালিক ইমন হাসান মোস্তফা বলেন, দোকানটি আমার বাবার। এখন আমি পরিচালনা করি। এখানে ৫০, ১০০, ২০০ টাকায় ছোট প্যাকেটে গরুর মাংস পাওয়া যায়। এছাড়া সর্বনিম্ন ৪০ টাকায় মুরগির মাংস পাওয়া যায়। যাতে সাধ্য অনুযায়ী ক্রেতারা কিনতে পারেন। আমার কাছে কোনো ক্রেতা এসে যেন ফিরে না যায়, সেজন্য মাছ, মাংস, সবজি, মসলাসহ সব ধরণের পণ্য রেখেছি।
কেন এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিলেন জানতে চাইলে ইমন বলেন, ‘শুধু ব্যবসা নয়, মানুষের সেবা করার জন্য কাজ করছি। বর্তমান বাজারের যে অবস্থা তাতে মানুষের সুবিধার জন্য এ উদ্যোগ নিয়েছি। এক কেজি গরুর মাংসের যে দাম, তা অনেকেই কিনতে পারেন না। আবার মুরগি কিংবা মাছ একটির যা ওজন হয় তাও অনেকে কিনতে পারেন না। তাদের সুবিধার জন্য আমি ছোট ছোট প্যাকে যার যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকু কেনার ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া সামনে ইলিশ ও খাসির মাংস আনার চেষ্টা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার দোকানে পাঁচ টাকায় অনেক জিনিস পাওয়া যায়। গরম মসলা, লবণ, শুকনা মরিচ, চিনি, হলুদের গুঁড়া, ডাল, তেল, জিরা ও ধনিয়ার গুঁড়া পাঁচ টাকায় পাওয়া যায়। গরিব মানুষের সুবিধার জন্য এ ব্যবস্থা।’
ইমন বলেন, ‘যার যেমন লাগে সে তেমন কেনেন। আমার দোকানে এ ব্যবস্থা নতুন। সামনে পাঁচ টাকায় আরও জিনিসপত্র পাওয়া যাবে।’
আরও পড়ুন: এক টাকার রেস্টুরেন্ট!
যশোরে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে নারীর আত্মহত্যা
যশোরের অভয়নগরে শ্বশুরবাড়ির লোকের নির্যাতন সইতে না পেরে এক নারীর ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার রাজঘাট রেলক্রসিংয়ের পাশে খুলনাগামী বেতনা ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।
নিহত সুমাইয়া বেগম (২২) ওই উপজেলার বাঘুটিয়া গ্রামের আলী হোসেন চুন্নির ছেলে রকি শেখের স্ত্রী এবং খুলনার ফুলতলা উপজেলার বেজেরডাঙা গ্রামের মহিরুল ইসলামের মেয়ে।
নিহত সুমাইয়ার বাবা মহিরুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘গত তিনবছর আগে রকির সঙ্গে সুমাইয়ার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর বিভিন্ন সময়ে রকি সুমাইয়ার ওপর যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। আমি তাদের এক লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়েছি। তারপরও তারা আমার মেয়েকে নির্যাতন করতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর রকি আমার মেয়ের গলায় ছুরি দিয়ে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো। আমি সংবাদ পেয়ে মেয়েকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি এবং মামলা করি। পরে সুমাইয়ার শ্বশুরবাড়ির এলাকার লোকজন আমার বাড়ি এসে আলোচনা করে মামলা মীমাংসা করে মেয়েকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এরপর থেকে ওর স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন নির্যাতন চালিয়েই যেতে থাকে। নির্যাতন সইতে না পেরে তাই আমার মেয়ে ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।’
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা!
তিনি আরও বলেন, ‘সুমাইয়া আত্মহত্যার আগে আমার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলছিল। সে তখন শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের কথা বলছিল। তখন প্রায় দুপুর বারটা বাজে। আমি তাকে মোবাইলে বারবার শান্ত হওয়ার অনুরোধ করছিলাম। সে আমাকে বলেছিলো বাবা তোমার নাতিকে দেখে রেখো। তখন মোবাইলে আমি ট্রেন আসার শব্দ শুনছিলাম। হঠাৎ একটি শব্দ শুনলাম, এরপর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একটুপর জানতে পারি সে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।’
এ বিষয়ে যশোর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা
সুন্দরবনের ফরেস্ট অফিসের কাছে ৩ বাঘ, আতঙ্কিত বনরক্ষীরা
সুন্দরবনের সুপতি স্টেশনাধীন চান্দেশ্বর ফরেস্ট অফিস এলাকায় তিনটি বাঘের উপস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বনরক্ষীরা। শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে দুটি বাঘ ওই অফিস প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়ে এবং শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকাল পর্যন্ত বাঘগুলো বনে ফিরে যায়নি।
গত ২৪ ঘণ্টা ধরে বাঘগুলো একই স্থানে ঘোরাঘুরি করছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। এই অবস্থায় ওই ক্যাম্পের ৫ বনরক্ষী আতঙ্কিত হয়ে অফিসেই অবস্থান করছেন।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় লোকালয়ে বাঘ, আতঙ্কে গ্রামবাসী
চান্দেশ্বর ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক জানান, শুক্রবার দুপুরে আসা দু’টি বাঘের সঙ্গে রাতে আরও একটি যোগ দিয়েছে। রাতে বনরক্ষীরা পুকুর পাড়ে টর্চ লাইটের আলো জ্বেলে তিনটি বাঘের উপস্থিতি শনাক্ত করেছেন। সকালেও বাঘ তিনটি পুকুর পাড়ের অদূরে বনে ঘোরাঘুরি করছিল। এখনও বাঘগুলো অফিসের দক্ষিণ পাশে নদী তীরে অবস্থান করছে।
তিনি জানান, বনরক্ষীরাও সতর্ক অবস্থানে থেকে বাঘের গতিবিধি লক্ষ্য করছেন।
এ ব্যাপারে শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সামসুল আরেফীন জানান, এই সময়টা বাঘের প্রজননকাল। তাই সঙ্গীসহ বাঘগুলো নিজের মতো করে চলাচল করছে। তাদের কোনো ক্ষতি না করতে বনরক্ষীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন বাঘের আক্রমণে মৌয়াল নিহত
মতলবে খাঁচায় বন্দি মেছো বাঘ, জনমনে আতঙ্ক
খুলনায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় প্রাণ গেলো কিশোরের
খুলনা মহানগরীর আড়ংঘাটায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার সময় সে সাইকেলে ছিল। শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৭টার দিকে চিংড়িখালী-তেলিগাতীর মাঝামাঝি বিশ্বরোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
কাগজী রাহাত (১৪) খানজাহান আলী থানার শিরোমনি পূর্বপাড়ার ইকবাল হোসেনের ছেলে।
আরও পড়ুন: সাভারে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় নিহত ২
পুলিশ জানায়, রাহাত ও মো. আমির হামজা (৪৫) নামে একজন সাইকেল যোগে আফিল গেটের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় পেছন দিক থেকে ছুটে আসা দ্রুতগামীর একটি প্রাইভেটকার তাদের সাইকেলকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। এতে দু’জনই রাস্তায় পড়ে মারাত্মকভাবে আহত হন।
পরে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় তাৎক্ষণিকভাবে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
সেখানে আমির হামজাকে সার্জারি (১) বিভাগের ৯/১০ ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
আর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে রাত ৮টার দিকে রাহাতকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, বর্তমানে রাহাতের লাশটি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরে আছে।
এছাড়া আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
আড়ংঘাটা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দিপক মন্ডল জানান, দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলেই মারা যান রাহাত আর আমির হামজা গুরুতর আহত হন। আড়ংঘাটা পুলিশ ও ফায়ারসার্ভিসের সদস্যরা তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাহাতের লাশ মর্গে আছে। আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসার দেয়া হয়েছে। এরইমধ্যে পুলিশ প্রাইভেটকারটি আটক করেছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় পথচারী নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় নিহত ১
নীরব হত্যা: ৫ শিক্ষার্থীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল সনি-তে প্রচারিত ‘ক্রাইম পেট্রোল’ সিরিয়াল দেখে অপহরণ ও পরে হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে পাঁচ কিশোর খুলনার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
খুলনার ডুমুরিয়ার এসিজিবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র নীরব মন্ডল হত্যা এবং মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ লাখ টাকা দাবি করার কথাও প্রকাশ করে তারা।
কিশোর অপরাধীদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-২ এর বিচারক রনক জাহান।
আদালতের সূত্র জানায়, শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পাঁচ কিশোর পর্যায়ক্রমে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জাবানবন্দি প্রদান করে। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাদের শনিবার সংশোধানাগারে পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের শিশু: ভাইরাসের নীরব শিকার
এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা দেড় মাস আগে ভারতের জনপ্রিয় টিভি সিরিয়াল ক্রাইম পেট্রোল দেখে অপহরণের বিষয়ে তামিল নেয়। এ সময় থেকে তারা নীরব মন্ডলকে টার্গেট করে। সুযোগ খুঁজতে থাকে কীভাবে নীরবকে অপহরণ করা যায়।
আদালত সূত্রে আরও জানা যায়, তারা পাঁচ জনের একটি টিম গঠন করে। কিশোর আসামি হীরক সরস্বতী পূজার আগে ও পরে নীরবকে অপহরণের টার্গেট নেয়। কিন্তু প্রথম ধাপে সে সফল হতে পারেনি। এরপর দায়িত্ব নেয় পিয়াল, কিন্তু সেও ব্যর্থ হয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে নীরব মন্ডলকে ডেকে নেয় তারা।
এর আগে হত্যাকাণ্ডের স্থানে অভিযুক্ত স্কুলছাত্র পিতু বাড়ি থেকে নাইলনের রশি, তালা ও চাবি নিয়ে অবস্থান করতে থাকে। অপেক্ষার পর স্কুলের পাশে ওই পরিত্যক্ত ভবনে নীরবকে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে পিতু বা দ্বীপ গলায় রশি পরিয়ে দেয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে নীরবকে হত্যা করা হয়। মারা যাওয়ার আগে নীরবের সমস্ত শরীর নাড়া দিলে ভয় পেয়ে যায় আসামিরা। পিতু গলার রশি খুলে দেয় আর পিয়াল নীরবকে ধরে রাখে।
নীরবের মৃত্যুর পর তার বাবা শেখর মন্ডলকে ফোন দেয় পিতু। এ সময় পাশে দাঁড়িয়ে ছিল সোহেল। তারা নীরবের বাবার কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এরপর নীরবের বাবা ও তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সোহেল ফোনের কল বন্ধ করে রাখে। তারা ওই ভবনের পেছনের দরজা তালা দিয়ে রেখে চলে যায়।
তাদের ধারণা ছিল- শুক্র, শনি ও রবিবার (মাঘী পূর্ণিমা) স্কুল ছুটি। এই তিন দিনের মধ্যে তারা সকল আলামত নষ্ট করে ফেলবে যাতে স্কুলে এমন ঘটনা ঘটেছে, কেউ টের না পায়। কিন্তু তা হয়ে উঠেনি। ঘটনার পর রাত ১১ টার দিকে তারা আবারও নীরবের বাবার ব্যবহৃত ফোনে কল করে মুক্তিপণ দাবি করে। আর ওই ফোন কলের সূত্র ধরেই পুলিশের জালে আটকা পড়ে অভিযুক্তরা।
পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তির সাহায্যে প্রথমে সোহেলকে আটক করে। পরবর্তীতে অপর অভিযুক্তদের একে একে গ্রেপ্তার করে। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে আদালতেও ঘটনার আদ্যপান্ত বর্ণনা দেয় তারা।
ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ কনি মিয়া বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে তারা। পরবর্তীতে আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়ার কথা তাদের জানালে তারা দিতে রাজি হয়। বিকাল ৪টার দিকে তাদের আদালতে নেয়া হয়। পরে ক্রমান্বয়ে তারা আদালতে জবানবন্দি দিতে থাকে।
উল্লেখ্য, অপহরণ করার পর গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করা সপ্তম শ্রেণির ছাত্র নীরব মন্ডল খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া পূর্বপাড়া এলাকার পান-সুপারি ব্যবসায়ী শেখর মন্ডলের ছেলে। বৃহস্পতিবার তাকে দেড়টার দিকে অপহরণ ও বেলা ৩টার দিকে গুটুদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি পরিত্যক্ত কক্ষে হত্যা করা হয়।
হত্যায় জড়িতরা হচ্ছে-গুটুদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র সোহেল মোল্লা (১৫), হীরক রায়(১৫) ও পিতু মণ্ডল(১৪), দশম শ্রেণির ছাত্র পিয়াল রায় (১৫) ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র দ্বীপ মণ্ডল (১৩)।
এর মধ্যে পিয়ালের বাড়ি ডুমুরিয়ার ভান্ডারপাড়া তেলিগাতি এলাকায় এবং অন্য চারজনের বাড়ি গুটুদিয়া এলাকায়।
আরও পড়ুন: মুক্তিপণের জন্য ক্রাইম পেট্রোলের কায়দায় নীরবকে অপহরণের পর হত্যা
‘নীরব ঘাতক স্লিপ এপনিয়া’
কোটচাঁদপুর পৌরসভায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের প্রতিবাদে পৌর মেয়রের সংবাদ সম্মেলন
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভায় বিদ্যুৎ বিভাগের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. সহিদুজ্জামান।
শুক্রবার সকালে পৌরসভা মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনে পৌরসভার সচিব, কর্মকর্তা-কর্মচারী, পৌর কাউন্সিলর ও সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পৌর মেয়র বলেন, কোটচাঁদপুর পৌরসভায় ২ কোটি ৯০ লাখ ৭০ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। যা দায়িত্বভার গ্রহণের আগের বকেয়া। কিন্তু আবাসিক প্রকৌশলী পৌরসভার সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পৌরবাসীদের।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে অপহৃত স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারের দাবিতে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন
তিনি আরও বলেন, পৌরসভার যে আয় হয় তা দিয়ে মোট বকেয়া বিল পরিশোধ করা সম্ভব নয়। তাই প্রতিমাসে এক লাখ টাকা করে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে চান কোটচাঁদপুর পৌরসভা। এতে একদিকে যেমন বকেয়া বিল পরিশোধ হবে অন্যদিকে পৌরবাসীদেরও দুর্ভোগ লাঘব হবে।
ঝিনাইদহ ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান চৌধুরী জানান, কোটচাঁদপুর পৌরসভার পানি ও সড়ক বাতির ১০টি বিদ্যুৎ সংযোগের মধ্যে পাঁচটি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক বকেয়া আদায়ের জন্য এই সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে আ.লীগ-বিএনপির পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন
মুক্তিপণের জন্য ক্রাইম পেট্রোলের কায়দায় নীরবকে অপহরণের পর হত্যা
৩০ লাথ টাকার জন্য ভারতের অপরাধ বিষয়ক টিভি সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রোল’ এর কায়দায় স্কুলছাত্র নীরব মণ্ডলকে (১৩) অপহরণ করে তারা। অজ্ঞান করার লক্ষ্যে গলায় রশি পেঁচালে শ্বাসরোধে তার মৃত্যু হয়।
এরপর তার লাশ স্কুলের একটি কক্ষে ঝুলিয়ে রাখে। এ ঘটনায় আটক পাঁচ কিশোর এই স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
খুলনায় বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে স্কুলের একটি কক্ষ থেকে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র নীরবের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ একই স্কুলের ওই পাঁচ ছাত্রকে আটক করে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে আওয়ামী লীগ কর্মীকে অপহরণের পর হত্যা
পুলিশ জানায়, আটকরা স্বীকার করেছে যে তারা মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ লাখ টাকা পেতে ক্রাইম পেট্রোল সিরিয়াল দেখে এই অপহরণের পরিকল্পনা করে।
নিহত নীরব খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া পূর্বপাড়া এলাকার পান-সুপারি ব্যবসায়ী শেখর মণ্ডলের ছেলে।
আটকরা হচ্ছে- গুটুদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র সোহেল মোল্লা (১৫), হীরক রায় (১৫) ও পিতু মণ্ডল (১৪), দশম শ্রেণির ছাত্র পিয়াল রায় (১৫) ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র দ্বীপ মণ্ডল (১৩)।
এর মধ্যে পিয়ালের বাড়ি ডুমুরিয়ার ভান্ডারপাড়া তেলিগাতি এলাকায় এবং অন্য চারজনের বাড়ি গুটুদিয়া এলাকায়।
ডুমুরিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ কনি মিয়া বলেন, নীরব মণ্ডল গুটুদিয়া এসিজিবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) স্কুল ছুটির পর পিয়াল নামে একটি ছেলে নীরবকে ডেকে নিয়ে যায়। স্কুলের পেছনে পরিত্যক্ত একটি ভবনের মধ্যে অবস্থান করছিল পিতু, সোহেল এবং দ্বীপ। নীরবকে সেখানে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা তার পা ধরে মুখ বন্ধ করতে চায়।
এছাড়া রশি ঝুলিয়ে রেখেছিল দ্বীপ। আটকদের ভাষ্য অনুযায়ী-তাদের পরিকল্পনা ছিল অজ্ঞান করে তার বাবার কাছ থেকে টাকা নেয়ার। কিন্তু তারা প্রথমেই তাকে ঝুলিয়ে মেরে ফেলে।
দুই থেকে তিনজন রশি টেনে ধরে রাখে, নীরব সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়।
তিনি আরও বলেন, সেখানে নীরবের লাশ রেখে তারা তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায়। হীরকের দায়িত্ব ছিল নীরবের বাবার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করা। ওই নম্বরে ফোন দিয়ে নীরবের বাবার কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
ওসি বলেন, বিষয়টি জানার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আমরা বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচজনকে আটক করি। লাশ উদ্ধারের আগে প্রথমে সোহেলকে আটক করি। পরে দ্বীপ, পিয়াল ও পিতুকে আটক করা হয়। আর লাশ উদ্ধারের পর হীরককে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: নতুন জামার টাকার জন্য শিশুকে অপহরণের পর হত্যা, ২ স্কুলছাত্র গ্রেপ্তার
প্রভাষক মামুন হত্যা: ৮ বছর পর জামায়াত নেতা গ্রেপ্তার