বৈদেশিক-সম্পর্ক
ঢাকায় রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য ‘আত্মসচেতনমূলক নয়’: মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মুক্ত-উদার, সংযুক্ত, সমৃদ্ধ, নিরাপদ ও সহনশীলতা নিশ্চিত করার জন্য অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের উদ্দেশ্য এবং এটিই আমাদের অবস্থান।’
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটনে একটি সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ঢাকায় রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সাম্প্রতিক মন্তব্য ‘খুব বেশি আত্মসচেতনমূলক নয়’।
ল্যাভরভ সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘এমন কিছু দেশ আছে, যারা শুধু নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চায় এবং অন্যরা কী করতে পারবে আর কী করতে পারবে না- তা নির্ধারণ করে দিতে চায়। এসব দেশের এমন চেষ্টা প্রতিরোধ করতেই আমরা এ অঞ্চলে আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করব।’
আরও পড়ুন: আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান করুন: রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী
মিলার বলেন, ‘ রাশিয়ার প্রতি সম্মান জানিয়ে আমি বলব, দেশটি তার দুটি প্রতিবেশীদেশে আক্রমণ করেছে, আগ্রাসন চালাচ্ছে। যেখানে তারা প্রতিদিন স্কুল, হাসপাতাল ও আবাসিক ভবনগুলোতে বোমা মেরেছে। তাদের অন্য কোনো দেশের আদেশ চাপিয়ে দেওয়ার কথা বলা উচিত নয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, যেকোনো গণতন্ত্রে সাংবাদিকদের অপরিহার্য ভূমিকা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তাদের কাজ দুর্নীতি উন্মোচন করা, তাদের জীবনকে প্রভাবিত করে এমন তথ্য জানার নাগরিক অধিকার রক্ষা করা। তারা তাদের দৈনন্দিন জীবনে যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হয় সে সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা দরকার। নির্বাচিত কর্মকর্তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। যেমন আপনাদের উপস্থিতিতে আমি এখানে প্রতিদিন যা বলছি তার জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
মিলার বলেন, সাংবাদিকদের হয়রানি, সহিংসতা বা ভয়ভীতি ছাড়াই তাদের কাজ করার পরিবেশ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা সরকারকে জবাবদিহি করার চেষ্টা করে। তাদের উপর বাংলাদেশ সরকারের পদ্ধতিগত এবং ব্যাপক নিপীড়নের বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’
আরও পড়ুন: আপনার অর্জন খুবই আকর্ষনীয়: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বাইডেন
অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে ঢাকা-লন্ডন সমঝোতা স্মারক সইয়ের পরিকল্পনা
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ে একটি নতুন সমঝোতা স্মারক সই করার কথা ভাবছে।
২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড-ব্রেকিং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এবং ২০২২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে সর্বোচ্চ ৫৬১ মিলিয়ন ডলারের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে (এফডিআই) সন্তোষ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রসারে নতুন প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছে।
১২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত পঞ্চম বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য কৌশলগত সংলাপে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও যুক্তরাজ্যের ফরেইন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) স্থায়ী আন্ডার সেক্রেটারি স্যার ফিলিপ বার্টনের নেতৃত্বে এই সংলাপে কমনওয়েলথভুক্ত দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা, অভিবাসন ও গতিশীলতা, জলবায়ু ও উন্নয়ন অংশীদারিত্বসহ ঐতিহাসিক সম্পর্কের সার্বিক দিক পর্যালোচনা করা হয়।
স্যার বার্টন গত এক দশকে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য হিসেবে যুক্তরাজ্যের অব্যাহত বাজার প্রবেশাধিকার সহায়তার প্রশংসা করেন। ২০২৬ সালে বাংলাদেশের নির্ধারিত স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পর ২০২৯ সাল পর্যন্ত এবং পরেও এর মেয়াদ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
উভয় পক্ষ সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে সহযোগিতার জন্য একটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের বিষয়েও সম্মত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-প্যারিস দুটি সমঝোতা স্মারক সই
১৯৭১ সাল থেকে তাদের দীর্ঘদিনের মূল্য-ভিত্তিক সম্পর্ক এবং ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক লন্ডন সফরের কথা স্মরণ করেন তারা।
আন্ডার সেক্রেটারি স্যার বার্টন যুক্তরাজ্যের প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্য এবং রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলার ঐতিহাসিক রাজকীয় রাজ্যাভিষেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ করা হয়, রাজা তৃতীয় চার্লস তার স্থগিত হওয়া বাংলাদেশ সফর যত দ্রুত সম্ভব পুনঃনির্ধারণ করবেন।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য অভিবাসন ও গতিশীলতা সহযোগিতা বৃদ্ধি, বিশেষ করে নার্সিং, আতিথেয়তা, কৃষি, নির্মাণ ও রাজমিস্ত্রি এবং অন্যান্য সেবা খাতে লাভজনক কর্মসংস্থানের বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
অভিবাসন, গতিশীলতা ও যোগ্যতার পারস্পরিক স্বীকৃতি নিয়ে আলোচনার জন্য উভয় পক্ষ একটি 'জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ' গঠনে সম্মত হয়েছে।
তারা যুক্তরাজ্যে অনিয়মিত পরিস্থিতিতে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে একটি এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) সই করতে সম্মত হন।
বাংলাদেশ ২০২২ সালে শিক্ষা, ভ্রমণ ও ব্যবসা ভিসা প্রদান উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় যুক্তরাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
উভয় পক্ষ ফৌজদারি বিষয়ে পারস্পরিক আইনি সহায়তা নিয়েও আলোচনা করেছে।
আরও পড়ুন: হাসিনা-মোদি আলোচনার পর ঢাকা-নয়াদিল্লি ৩ সমঝোতা স্মারক সই
চলতি বছরের মার্চে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে স্বাক্ষরিত জলবায়ু চুক্তির কথা স্মরণ করে উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় জলবায়ু কার্যক্রমে সহযোগিতার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।
তারা জলবায়ু চুক্তির আওতায় একটি গ্রিনহাউজ গ্যাস শূন্যে নামিয়ে আনা এবং প্রকৃতিবান্ধব বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে জলবায়ু চুক্তির অধীনে সময়সীমা কার্যক্রমের সঙ্গে একটি যৌথ কর্মপরিকল্পনা সই করতে সম্মত হন।
একটি ন্যায়সঙ্গত, শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে এসডিজি-১৬ এর আওতায় এর জাতীয় লক্ষ্য অর্জনে অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব সন্ত্রাস, সহিংস চরমপন্থা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের 'জিরো টলারেন্স' নীতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
ভারত মহাসাগরে সামুদ্রিক ও বিমান নিরাপত্তা ও সুরক্ষাসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যুতে সহযোগিতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে।
যুক্তরাজ্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতায় বিশ্ব শান্তিতে বাংলাদেশের, বিশেষ করে নারী শান্তিরক্ষীদের সর্বোচ্চ অবদানের প্রশংসা করে।
দুই দেশ ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম প্রতিরক্ষা সংলাপে সন্তোষ প্রকাশ করে এবং লন্ডনে দ্বিতীয় সংলাপে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করতে সম্মত হয়।
যুক্তরাজ্য মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের উদার আশ্রয়ের প্রশংসা করেছে এবং বাংলাদেশ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও কমনওয়েলথসহ রোহিঙ্গা সংকটে যুক্তরাজ্যের মানবিক ও রাজনৈতিক সহায়তার প্রশংসা করেছে।
উভয় পক্ষই দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনে নিবিড়ভাবে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।
রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতার বিষয়ে আন্তর্জাতিক জবাবদিহির ওপর গুরুত্বারোপ করে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গাদের বিচারের মামলায় যোগ দেওয়ায় যুক্তরাজ্যকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব।
যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সম্প্রতি ঘোষিত 'ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক'কে স্বাগত জানিয়েছে।
অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য একটি অবাধ, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, সুরক্ষিত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উভয় পক্ষ নতুন অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছে।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ, আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থা (আইএমও) ও ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনসহ (আইওআরএ) বিভিন্ন আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় খাতে সহযোগিতা জোরদারে সম্মত হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দুই দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগ দেন।
কৌশলগত সংলাপের পরবর্তী অধিবেশন ২০২৪ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্য ও জার্মানির পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম বাজার হবে বাংলাদেশ: কমনওয়েলথ বিনিয়োগকারীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
ভয়াবহ বন্যায় লিবিয়ার জনগণ ও সরকারের প্রতি মোমেনের সমবেদনা
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন লিবিয়ার কিছু অংশে ভয়াবহ বন্যায় হাজার হাজার মানুষ নিহত ও নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় দেশটির জনগণ ও সরকারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
লিবিয়ার ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আল তাহির সালেম মোহাম্মদ আল বোরকে পাঠানো এক বার্তায় ড. মোমেন বলেন, ‘পূর্ব লিবিয়া, বিশেষ করে বেনগাজি, আল-বায়দা, দেরনা, সাহাত, আল-মারি এবং জাবেল আল-আখদারে ভূমধ্যসাগরীয় ঝড় ড্যানিয়েলের ধ্বংসাত্মক প্রভাব সম্পর্কে জানতে পেরে আমি গভীরভাবে শোকাহত।’
তিনি এই মর্মান্তিক ঘটনায় ২ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি মূল্যবান প্রাণহানি এবং আরও হাজার হাজারের জন্য তার আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন, যারা এখনও হিসাবের বাইরে।
আরও পড়ুন: লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
মোমেন বলেন, ‘এই হৃদয়বিদারক ক্ষতির মধ্য দিয়ে যাওয়া পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি আমাদের সমবেদনা ও প্রার্থনা রইলো। বিশাল এই ধ্বংসযজ্ঞ, ব্যাপক বন্যা এবং জীবন ও অবকাঠামোর ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি সত্যিই দুঃখজনক।’
বার্তায় মোমেন আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে দেশবাসীর সংহতি ও ধৈর্য এই কঠিন সময়ে বজায় থাকবে। সর্বশক্তিমান তাদের সময়টি সহ্য করার শক্তি ও সাহস এবং একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ার সহনশীলতা দিন।’
ড. মোমেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও সুখ কামনা করেন এবং ভবিষ্যতের জন্য লিবিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ জনগণের শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
আরও পড়ুন: লিবিয়ায় বন্যায় ২ হাজার মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা
মরক্কোয় শক্তিশালী ভূমিকম্পে ২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত, মারাকেচে ঐতিহাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত
লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল ও বন্যার তাণ্ডবে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা হিসেবে দ্রুততার সাথে ত্রাণ সামগ্রী প্রেরণের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সরকারের এই উদ্যোগের কথা জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিশ্ববাসীর কাছে লিবিয়ার রাষ্ট্রপতির মানবিক সহযোগিতার আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
দেশটিতে ঝড়ের আঘাতে এবং সৃষ্ট বন্যায় ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া আরও হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।
আরও পড়ুন: মরক্কোয় শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৮০০, মারাকেচে ঐতিহাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বাংলাদেশের সি-১৩০ এয়ারক্রাফট শিগগিরই ঢাকা থেকে যাত্রা করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে বিভিন্ন ধরণের ঔষধ, শুকনো খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানো হবে। বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের দুর্গত জনগণের জন্য এই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
লিবিয়ার তাবরুক এয়ারপোর্টে লিবিয়া সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পাঠানো ত্রাণসমূহ গ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ একটি মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য প্রতিনিয়ত ত্রাণ সহায়তা প্রদান করে আসছে।
আরও পড়ুন: লিবিয়ায় বন্যায় ২ হাজার মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা
বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, সহিংসতামুক্ত নির্বাচন চায় যুক্তরাজ্য: পররাষ্ট্র সচিব
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশে একটি ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত’ নির্বাচন দেখার আশা প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দুই দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত পঞ্চম কৌশলগত সংলাপের সময় যুক্তরাজ্যের পক্ষ বাংলাদেশের সঙ্গে নির্বাচন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেহেতু তারা আমাদের পুরনো বন্ধু এবং উন্নয়ন সহযোগী, তাই আমাদের নির্বাচনে তাদের আগ্রহ রয়েছে। আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছি (সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য)। আমরা ইতিবাচক আলোচনা করেছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘অংশগ্রহণমূলক’ শব্দের অনেক অর্থ হতে পারে।
সব মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ এক ধরনের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। তিনি বলেন, কোন দল কী ভাবছে তা তারা জানে না।
মাসুদ মোমেন বলেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই।
আরও পড়ুন: দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং অবকাঠামোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণে আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত বাংলাদেশ-ফ্রান্সের
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে আলোচনায় যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে উৎসাহিত করেছে যাতে বাংলাদেশের জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারে।
যুক্তরাজ্য মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতাকে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাচ্ছে যা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, অনিয়মিত হয়ে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার উপায় খুঁজতে দুই দেশ স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) সই করতে সম্মত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আরও বেশি শিক্ষার্থী ও শ্রমিক যুক্তরাজ্যে যাচ্ছে বলে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপও গঠন করা হবে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সংলাপে জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, গতিশীলতা ও অভিবাসন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, শাসন, মানবাধিকার, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, সাইবার নিরাপত্তা এবং মানবাধিকারের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন,‘আমরা এই ইস্যুতে আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি,’তারা রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনা করেছেন।
উভয় পক্ষ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন কীভাবে এগিয়ে চলেছে তা নিয়েও আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের স্থায়ী আন্ডার সেক্রেটারি স্যার ফিলিপ বার্টন এই সংলাপের সহ-সভাপতিত্ব করেন। যা একটি আধুনিক অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার জন্য দুই দেশের যৌথ অঙ্গীকার প্রতিফলিত করে।
সংলাপে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও উন্নয়ন অংশীদারিত্ব এবং রোহিঙ্গা সঙ্কটসহ বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনা হয়।
এটি দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা, কপ২৮-এ সহযোগিতা এবং জলবায়ু অর্থায়ন, জলবায়ু প্রভাবগুলোর অভিযোজন এবং সহনশীলতার উপর যৌথ কাজ এবং যুক্তরাজ্যের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিনিয়োগের প্রস্তাব প্রদর্শনের সুযোগ প্রদান করেছে।
চতুর্থ বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য কৌশলগত সংলাপ ২০২১ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
সর্বশেষ কৌশলগত সংলাপের সময় যুক্তরাজ্য ২০২৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার প্রদানের মাধ্যমে একটি মসৃণ এবং সফল এলডিসি অর্জন এবং রপ্তানি-নেতৃত্বাধীন বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
যুক্তরাজ্য ডব্লিউটিওর কার্যকারিতা উন্নত করে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য বিধি আধুনিকীকরণের মাধ্যমে অবাধ ও সুষ্ঠু বাণিজ্য সরবরাহের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য চাপ অব্যাহত রাখছে যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যের ল্যান্ডমার্ক ডেভেলপিং কান্ট্রিস ট্রেডিং স্কিম (ডিসিটিএস) এই বছরের জুন থেকে কার্যকর হয়েছে যা বাংলাদেশ সহ ৬৫টি উন্নয়নশীল দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশকারী পণ্যের উপর শুল্ক হ্রাস করে এবং ট্রেডিং নিয়মগুলোকে সহজ করে।
যুক্তরাজ্য সরকার বলেছে, ডিসিটিএস বাণিজ্য ও চাকরি বৃদ্ধি এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। এই নতুন স্কিমটি বাংলাদেশের সঙ্গে একটি আধুনিক এবং পারস্পরিকভাবে উপকারী অংশীদারিত্বের প্রতি যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এখন পর্যন্ত তারা জানে যে তিনি সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: আপনার অর্জন খুবই আকর্ষনীয়: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বাইডেন
আপনার অর্জন খুবই আকর্ষনীয়: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বাইডেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন এবং দেশের ১৭ কোটি মানুষকে উন্নত জীবন দেওয়ার বিষয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাইডেনকে জানিয়েছিলেন যে তিনি তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছেন এবং তিনি বাংলাদেশের জনগণকে তার পরিবার হিসাবে বিবেচনা করেন।
‘দেশে আমার ১৭০ মিলিয়ন লোকের একটি বড় পরিবার রয়েছে,’ প্রধানমন্ত্রী বাইডেনকে বলেছেন উল্লেখ করে মোমেন বলেন, তার উদ্দেশ্য হলো সমস্ত মৌলিক চাহিদা পূরণ করে এই মানুষদের একটি উন্নত জীবন দেওয়া।
আরও পড়ুন: আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান করুন: রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী
মোমেন প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে উদ্ধৃত করে বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছেন, ‘আমি জানি আপনার অর্জনগুলো খুবই চিত্তাকর্ষক।’
৯ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর জি-২০ সম্মেলনের সময় একজন সাংবাদিক প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সর্বশেষ তাদের আলোচনার বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সঙ্গে একটি সেলফি তোলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যা তাৎক্ষণিকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
মোমেন বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাইডেনের সঙ্গে আলাপ করেন এবং তা অত্যন্ত উষ্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জীবনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং আজ তিনি অত্যন্ত উচ্চমানের।
এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, তারা কখনো চাপের মধ্যে ছিল না, বরং মিডিয়া চাপে আছে।
তিনি আরও বলেন,‘আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি। আমরা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আরও পড়ুন: ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অগ্রগতি খুবই সন্তোষজনক: মোদির টুইট
রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য চাপ অব্যাহত রাখছে যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) পার্মানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি স্যার ফিলিপ বার্টন কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তার জন্য নতুন করে আরও ৩০ লাখ পাউন্ড (প্রায় ৪২ কোটি টাকা) সহায়তা ঘোষণা করেছেন।
যুক্তরাজ্য সরকারের এই নতুন সহায়তা জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) মাধ্যমে দেওয়া হবে।
স্যার ফিলিপ বার্টন পঞ্চম যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ কৌশলগত সংলাপে অংশগ্রহণের জন্য বর্তমানে বাংলাদেশ সফর করছেন।
যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে দুই দেশের মধ্যে একটি আধুনিক অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার যে অঙ্গীকার, এই কৌশলগত সংলাপ তাকেই প্রতিফলিত করে।
যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) পার্মানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি স্যার ফিলিপ বার্টন বলেন, ‘আমি ইউএনএইচসিআর-এর মাধ্যমে যুক্তরাজ্য সরকারের আরও তিন লাখ পাউন্ড সহায়তা ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যের পার্মানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি পঞ্চম কৌশলগত সংলাপে যোগ দিতে সোমবার ঢাকা আসছেন
তিনি বলেন, ‘নতুন এই সহায়তা কক্সবাজার ও ভাসানচরে বসবাসরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা, বিশুদ্ধ পানি, স্বাস্থ্যবিধি ও স্যানিটেশন পরিষেবা এবং রান্না করার জন্য জ্বালানি নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের উপর নৃশংসতার পর তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এর পর ছয় বছর অতিবাহিত হয়েছে। যুক্তরাজ্য রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী, বাংলাদেশ ও এই সংকটদ্বারা আক্রান্ত সকলের পাশে আছে।’
পার্মানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, আমরা দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য চাপ অব্যাহত রাখছি। যাতে করে শরণার্থীরা নিরাপদে, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে; যখন সেখানকার অবস্থা তাদের জন্য অনুকূলে থাকে। যতদিন তা না হয়, যুক্তরাজ্য রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাংলাদেশের স্থানীয় সম্প্রদায়কে সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাজ্য রোহিঙ্গা ও স্থানীয় সম্প্রদায়কে সহায়তা করার জন্য ৩৬৫ মিলিয়ন পাউন্ড (৫ হাজার কোটি টাকার বেশি) অর্থ প্রদান করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে খাদ্য, আশ্রয়, নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন, স্বাস্থাসেবা ও সুরক্ষা পরিষেবা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য ৫ম কৌশলগত সংলাপ মঙ্গলবার
জাতিসংঘের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল বাংলাদেশ সফরে আসছেন ৯ সেপ্টেম্বর
মার্কিন নেতৃত্বের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলোচনা উৎসাহব্যঞ্জক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশে ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সন্ত্রাসবাদ ও মৌলবাদের কুৎসিত চেহারা যাতে ফিরে না আসে, সেজন্য সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি দুঃখের সঙ্গে স্মরণ করছি ৯/১১ টুইন টাওয়ারের ধ্বংসযজ্ঞের কথা। যেখানে ২ হাজার ৯৮৮ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন, যাদের মধ্যে ছয়জন বাংলাদেশের এবং এরমধ্যে তিনজন আমার নিজের জেলা সিলেটের।’
আরও পড়ুন: রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ ঢাকায়, আজই বৈঠকে বসবেন মোমেনের সঙ্গে
মোমেন বলেন, আমরা তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আমরা আশা করি এ ধরনের ঘটনা আর কখনো ঘটবে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন নেতৃত্বের সঙ্গে তাদের সাম্প্রতিক আলোচনা উৎসাহব্যঞ্জক হওয়ায় তারা আনন্দিত।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে তারা অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতির কারণে বাংলাদেশে কোনো বোমা বিস্ফোরণ, গ্রেনেড হামলা এবং সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির আশঙ্কা নেই।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং অবকাঠামোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণে আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত বাংলাদেশ-ফ্রান্সের
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং রেলওয়ে সেক্টরসহ বাংলাদেশে মানসম্মত ও স্থিতিস্থাপক অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণে আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আশা প্রকাশ করেছেন, প্যারিস ও টুলুসে আগামী ২৩ ও ২৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ-ফ্রান্স বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন গতি আনবে।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের জনগণকে এমন উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য ধন্যবাদ। আমাদের বন্ধুত্ব দীর্ঘস্থায়ী ও অটুট।’
যৌথ প্রবৃদ্ধি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের দেওয়া অর্থনৈতিক সম্ভাবনার প্রতি ফ্রান্স আস্থা প্রকাশ করেছে।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) জারি করা একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উভয় পক্ষই শিল্প থেকে পরিষেবা পর্যন্ত প্রতিটি সেক্টরে বিস্তৃত তাদের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের গভীরতার কথা স্মরণ করেছে এবং ব্যবসা-থেকে-ব্যবসায় সহযোগিতার মাধ্যমে এটিকে আরও গভীর ও প্রসারিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: এয়ারবাসের কাছ থেকে ১০টি এ৩৫০ কেনার বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিতে খুশি ফ্রান্স
ফ্রান্স বাংলাদেশের শ্রম খাতে (২০২১-২০২৬) জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের প্রশংসা করেছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের জেনারেলাইজড স্কিম অব প্রেফারেন্সের (জিএসপি) অধীনে একটি মসৃণ ও টেকসই পরিবর্তনের সুবিধার্থে এর বাস্তবায়ন এবং বাংলাদেশের অর্থনীতির বহুমুখীকরণের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছে।
২০২১ সালের নভেম্বরে তার আমন্ত্রণে ফ্রান্স সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেসময়ে প্রধানমন্ত্রী ফরাসি প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশে আসার নিমন্ত্রণ করেন। অবশেষে, চলতি মাসের ১০-১১ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বাংলাদেশে সফর করেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সোমবার ঢাকায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে শক্তিশালী করার জন্য সাক্ষাত করেছেন এবং বিশ্ব শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিস্থাপকতা, সমৃদ্ধি এবং মানুষ-কেন্দ্রিক সংযোগের সমর্থনে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের জন্য একটি বিশ্বস্ত ও অর্থপূর্ণ অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার জন্য তাদের অভিন্ন প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স তাদের অংশীদারিত্বের কৌশলগত মাত্রাকে আরও গভীর করতে নিয়মিত উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ শুরু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন: প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে সম্পর্ককে 'কৌশলগত' পর্যায়ে নিতে চায় ঢাকা-প্যারিস
নগর পরিচালনা ও অবকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে ১৮৪ ইউরোর ঋণ সহায়তা চুক্তি সই
উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করলেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব ও ইউএনডিপির এশিয়া প্যাসিফিকের আঞ্চলিক পরিচালক কান্নি উইগনারাজাসহ ছয় সদস্যর একটি প্রতিনিধিদল। এ সময় তারা দাতা সংস্থাটির বিভিন্ন কাযর্ক্রম পরিদর্শন করেন।
সোমবার ( ১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৮ এর ব্লক-এল-১৭ তে পৌঁছান প্রতিনিধি দলটি। পরে তারা আইএমও অবস্থিত রোহিঙ্গা কালচারাল মেমোরি সেন্টার পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে আইএমও এর একজন কর্মকর্তা প্রতিনিধি দলকে রোহিঙ্গা কালচারাল মেমোরি সেন্টারের মধ্যে সংরক্ষিত রোহিঙ্গাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাক্ষ্য বহনকারী বিভিন্ন জিনিসপত্র প্রদর্শন করে বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে মা-মেয়ে নিহত
এর পরে একদল রোহিঙ্গাশিল্পী প্রতিনিধি দলকে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে একটি রোহিঙ্গা সংগীত (তারানা) গেয়ে শুনান।
এরপর ক্যাম্প-১৭ এইচ/৭১ ব্লকে অবস্থিত ইউএনসিআর-এনজিও ফোরাম ও ব্রাক ধারা পরিচালিত পাইলট প্রজেক্টের আওতাধীন মডেল ভিলেজ পরিদর্শন করেন।
এ সময় উক্ত প্রজেক্টে বর্জ্য পদার্থ কিভাবে পরিশোধ করা হয় এ ব্যাপারে ব্রাকের কর্মকর্তারা তাদের অবহিত করেন এবং ডব্লিউ এফফির ই-ভাউচার শপ পরিদর্শন করেন।
পরে এনজিও কর্মকর্তারা প্রতিনিধি দলকে রোহিঙ্গারা কিভাবে স্মার্টকার্ডের মাধ্যেম রেশন সংগ্রহ করে সেই ব্যাপারে বিস্তারিত অবহিত করেন।
পরবর্তীতে ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশন এর সিআইসি অফিসে সিআইসির সঙ্গে তারা সৌজন্য সাক্ষাৎ করে কথা বলেন।
ডব্লিউ এফফির ই-ভাউচার শপে আসা কিছু রোহিঙ্গাদের সঙ্গে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব কিছু সময় কথা বলে তাদের খোঁজখবর নেন। পরবর্তীতে ছয় সদস্যর প্রতিনিধি দলটি দুপুর ৩টার দিকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্য ফিরে যান।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন- শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবসন কমিশনার মিজানুর রহমান ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান।
আরও পড়ুন: উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার