রংপুর
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিলি স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আজ বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বন্দরের অভ্যন্তরে সকল কার্যক্রমও বন্ধ থাকবে। তবে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে উভয় দেশে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আজ (বুধবার) জন্মাষ্টমী অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকায় এদিন বন্দর দিয়ে ২ দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে পুনরায় বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হবে।
আরও পড়ুন: ভারত ৪০% শুল্ক আরোপ করায় হিলি দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি কমেছে
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আশরাফুল বলেন, ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপার অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক রয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক বলেন, জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বন্দরের অভ্যন্তরে সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। কাল থেকে পুনরায় বন্দরের সকল কার্যক্রম শুরু হবে।
আরও পড়ুন: হিলি বন্দরে সেই মহিষের মাংস ও পেঁয়াজ বাজেয়াপ্ত
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
কুড়িগ্রামে সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা, বিএসএফের বিরুদ্ধে মামলা
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় সীমান্তে গুলিতে নিহতের ঘটনায় বিএসএফ এর বিরুদ্ধে মামলা করেছে নিহতের বাবা মো. আব্দুল বাতেন।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) আব্দুল বাতেন বাদী হয়ে রৌমারী থানায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এদিকে ওই যুবকের লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, রোবরার ৩ সেপ্টেম্ব রাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে মানিক মিয়া নামের এক গরু ব্যবসায়ী নিহত হয়। নিহত মানিক মিয়া উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বেহুলারচর গ্রামের আব্দুল বাতেনের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে পুলিশ জানায়, রবিবার রাতে মোল্লারচর সীমানা পিলারের পাশে টহলরত কুচনিমারা ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা পরপর ৪ রাউন্ড গুলি ছুড়লে মানিক মিয়ার বুকে ও কোমড়ে গুলিবিদ্ধ হন।
সঙ্গে থাকা লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে রৌমারী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
রবিবার বিকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে এবং সোমবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য লাশ কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠায়।
এ ব্যাপারে সোমবার নিহতের পিতা আব্দুল বাতেন বাদী হয়ে ভারতীয় বিএসএফের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহতের বাবা মো. আব্দুল বাতেন বলেন, সীমান্তে শুধু আমার ছেলে নয় আমার ছেলের মত অনেককে ওরা গুলি করে হত্যা করেছে। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।
রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুপ কুমার সরকার বলেন, ভারতীয় সীমান্তে মানিক মিয়া হত্যার ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে বিএসএফের নামে হত্যা মামলা করেছে। লাশের সুরতহাল রিপোর্টে প্রাথমিকভাবে বাঁ পাঁজরে একটি ছোট ফুটো এবং বুকের ডান দিকে আরেকটি ফুটো ছিল। লাশের ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানো হয়েছে।
জামালপুর বিজিবি-৩৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আবদুল্লাহ আল মাশরুকি বলেন, সীমান্তে গুলির ঘটনায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী(বিএসএফ) এর সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছি। বিএসএফ এর পক্ষ থেকে গুলির ঘটনা স্বীকার করেছে। আমরা সীমান্ত হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। নিহতের পিতা বিএসএফ এর নামে হত্যা মামলা করেছে এমন তথ্য আমার কাছে নেই। যদি মামলা করে থাকে, তাহলে আমি আমার হেড কোয়ার্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ায় যাবো।
গাইবান্ধায় গাড়ির ওয়ার্কশপ থেকে ‘মানসিক প্রতিবন্ধী’ যুবকের লাশ উদ্ধার
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে একটি গাড়ির ওয়ার্কশপের চৌবাচ্চা থেকে অনাথ শীল (৪০) নামে মানসিক প্রতিবন্ধী এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) উপজেলার পান্থপাড়া এলাকার ‘সোহেল ড্রাইভিং’ নামের একটি গাড়ির ওয়ার্কশপ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: সিলেটে স্কুল শিক্ষিকা, গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার নিয়ে রহস্য!
নিহত অনাথ শীল রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার সাধবী গ্রামের রাজেন্দ্রনাথ শীলের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, অনাথ শীল মানসিক প্রতিবন্ধী ছিলেন। বেশ কয়েক ধরে গোবিন্দগঞ্জ শহরে তাকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। সোমবার সকালে সোহেল ড্রাইভিংয়ের চৌবাচ্চায় তার লাশ ভাসতে দেখা গেছে।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আলম শাহ বলেন, খবর পেয়ে চৌবাচ্চা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে একটি ইউডি মামলা করা হয়েছে। মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে নিখোঁজ শিশুর লাশ উদ্ধার করল পিবিআই
তুরস্কে আরও ৪ জনের লাশ উদ্ধার করল বাংলাদেশ সম্মিলিত দল
কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে মানিক মিয়া (৩৫) নামে এক বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত ১২টার দিকে আর্ন্তজাতিক সীমানা পিলার ১০৬২-২এস এর কাছে শৌলমারী ইউনিয়নের বেহুলারচর সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
নিহত মানিক মিয়া জেলার রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বেহুলারচর গ্রামের আব্দুল বাতেনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে মানিক মিয়াসহ ২০-২৫ জন বেহুলারচর সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার নম্বর ১০৬২-২এস-এর কাছে যায়। এ সময় ভারতের ৪৫ ব্যাটালিয়নের কুচনিমারা ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে বুকের ডান পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে মানিক মিয়া ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে সঙ্গীরা তার লাশ অন্যত্র সরিয়ে গোপনে দাফনের চেষ্টা করে।
দুপুরের দিকে খবর পেয়ে পুলিশ বন্দরের ইউনিয়নের বাঞ্ছারচর এলাকা থেকে মানিকের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
জামালপুর বিজিবির ৩৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাশরুকীর জানান, বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি।
রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রূপ কুমার সরকার জানান, খবর পেয়ে বন্দরের ইউনিয়নের বাঞ্ছারচর এলাকার মোতালেবের বাড়ি থেকে বেহুলারচর এলাকার মানিক মিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত, আহত ১
ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বাড়ায় ৬০ট স্কুল বন্ধ
উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারী বর্ষণে গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকালে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীতীরবর্তী নিচু এলাকা এবং চরাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকায় পানি উঠেছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপরে
এছাড়া ওই সব এলাকার ফসলি জমি, আমন বীজতলা এবং নিচু এলাকার ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে কয়েক হাজার পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
পানি ওঠার ফলে ১৬৫ চরাঞ্চলের ৬০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান জানান, পানি বৃদ্ধির ফলে কড়াইবাড়ি, খারজানি, পারদিয়ারা ও কুন্দেরপাড়া গ্রামে ব্যাপক নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে ওইসব গ্রামের মানুষরা ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র নদীর ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানান।
এছাড়া তিস্তা নদীর পানি ২৩ সেন্টিমিটার এবং ঘাঘট নদীর পানি ২৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুন্দরগঞ্জ, সদর, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য ৭৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দে্ওয়া হয়েছে।
এছাড়া ওই চার উপজেলায় ৫০ হাজার টাকা করে মোট ২ লাখ নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও ফুলছড়ি উপজেলার জন্য বিশেষ বরাদ্দ হিসেবে ৫০টি শুকনা খাবার প্যাকেট সরবরাহ করা হয়েছে বলে জেলা ত্রাণ দপ্তর জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপরে, কুড়িগ্রামে বন্যার আশঙ্কা
কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপরে
দিনাজপুরে ট্রাকচাপায় নিহত ১, হাবিপ্রবির ২ নেপালি শিক্ষার্থী আহত
দিনাজপুরে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় ট্রাকের সঙ্গে ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ইজিবাইকচালক নিহত হয়েছেন।
এ সময় ইজিবাইকে থাকা হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন নেপালি শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: যাত্রাবাড়ীতে সড়ক দুর্ঘটনায় বাসের হেলপার নিহত
নিহত ইকরামুল (৪০) জেলা শহরের রামনগর মহল্লার নিজাম উদ্দিনের ছেলে।
আহত ট্রাফিং কাছী (২২) বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি অনুষদে অধ্যায়নরত ২১তম ব্যাচের এবং মকবুল হোসেন (২৫) ১৭তম ব্যাচের ছাত্র।
উভয়কে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) (তদন্ত) গোলাম মাওলা জানান, শহর থেকে ইজিবাইকে চড়ে ক্যাম্পাসে ফেরার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ফেন্ডস অটো রাইস মিলের সামনে ইজিবাইকটিকে পৃষ্ট করে একটি ট্রাক। এতে দুর্ঘটনাস্থলে ইজিবাইক চালক ইকরামুল নিহত হয়েছে এবং ২ জন নেপালি শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠনো হয়েছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: যাত্রাবাড়ীতে সড়ক দুর্ঘটনায় লেগুনা চালক নিহত
সিরাজগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
কুড়িগ্রামে বন্যায় এখনো ৭০০০ পরিবার পানিবন্দি
কুড়িগ্রামে ১৬টি নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তিস্তা নদীর পানি টানা সাতদিন বিপৎসীমার উপরে থাকার পর শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলেও বন্যাকবলিত এলাকাগুলো থেকে সরেনি পানি। ফলে বিশুদ্ধ পানি আর রান্না করা খাবারের সংকটে রয়েছেন ৫ উপজেলার প্রায় ৭ হাজার পরিবারের পানিবন্দি মানুষজন।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে বন্যায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
চিলমারীর নয়ারহাট ও শাখাহাতির চরে তীব্র ভাঙনে দুই দিনে ৬০-৮০টি বসতভিটা ব্রহ্মপুত্রে বিলীন হয়ে গেছে। এখানকার লোকজন বাড়িঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
জেলার কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর, চিলমারী, নাগেশ্বরী, রাজারহাটের নদীতীরবর্তী চরাঞ্চলগুলোর ঘরবাড়ি, আবাদি জমি, গোচারণ ভূমি এখনো বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। তিস্তার পাড়ে নদী ভাঙন কিছুটা কমলেও, ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
বানভাসি এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, লোকজন বাঁচার তাগিদে ঘরের মধ্যে মাচা করে, কেউবা গোয়ালঘরে আবার কেউ কেউ নৌকায় আশ্রয় নিয়েছেন।
টিউবওয়েলগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি শুকনো খাবার খেয়ে কোনোমতে দিন পার করছেন এসব বানভাসিরা।
রান্না করার চাল-সবজি থাকলেও রান্নার জ্বালানির অভাবে রান্না করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। কোন কোন জায়গায় ৪-৫ পরিবার একসঙ্গে রান্না করছে, যাতে এক চুলোতে একই জ্বালানি দিয়ে ভাত-তরকারি রান্না হয়ে যায়।
জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখার দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় তৃতীয় ধাপের বন্যায় ১৮ হাজার ৬২৬ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে ৭৯৮টি, ৫ হাজার ৬৮৩ হেক্টর আবাদি জমি নষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে ২ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টায় কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দেওয়া তথ্যমতে, গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে কমে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার, দুধকুমার পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২৮ সেন্টিমিটার এবং তিস্তা কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দিনাজপুরে নানির লাশ আনার পথে প্রাণ গেল নাতির
ঢাকা থেকে নানির লাশ দিনাজপুরে নেওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল নাতির। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সেচালক।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের নুরজাহানপুর মসজিদসংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত হৃদয় মাহিন আলভী (২১) দিনাজপুর শহরের দক্ষিণ বালুবাড়ী এলাকার মোকতাদুর রহমানের ছেলে।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে অটোবাইকে চার্জ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল চালকের
আহত অ্যাম্বুলেন্সেচালক মিঠুন বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার শরিকল গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যায় আলভীর নানি মালেকা বেগম। মালেকা বেগমের লাশ ঢাকা থেকে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে দিনাজপুরে আনছিলেন নাতি হৃদয় মাহিন আলভী।
শুক্রবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার নুরজাহানপুর মসজিদের কাছে এলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাককে ধাক্কা দেয়।
এতে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ সময় অ্যাম্বুলেন্সের সামনে বসে থাকা নাতি হৃদয় মাহিন আলভী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। গুরুতর আহত হন চালক মিঠুন।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, আহত অ্যাম্বুলেন্সচালক মিঠুকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সম্ভবত চালক ঘুমের ঘোরে অ্যাম্বুলেন্স চালানোয় দুর্ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়েসহ প্রাণ গেল ৩ জনের
কুড়িগ্রামে পুকুরে ডুবে প্রাণ গেল ২ শিশুর
ঘরের চাল ছুঁই ছুঁই পানি তবু পিপাসার্ত কুড়িগ্রামের বন্যাকবলিতরা
ঘরের চাল ছুঁই ছুঁই বন্যার পানি। পানির তোড়ে ভেসে গেছে বাড়ি-ঘর, ক্ষেতের ফসল আর সব। তবু পিপাসার্ত কুড়িগ্রামের বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ। সুপেয় পানির অভাব তীব্র হচ্ছে দুর্গতদের মাঝে।
কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ের খেয়ার আলগা চরের বাসিন্দা সাহেরা বেগম বলেন, 'হামার ঘরত পানি উঠছে, মানুষের বাড়িত আশ্রয় নিছি আজ দুই দিন হলো। নদীর পানি আজ সকালেও এক হাত বাড়ছে। কিন্তু খাওয়ার পানির খুব কষ্ট হইছে।’
সদর উপজেলার চর যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ার চরের বাসিন্দা মতিয়ার রহমান বলেন, 'আজ পাঁচ দিন থেকে বন্যার পানিত খুব কষ্টে চলাচল করছি। নৌকা ছাড়া বের হতে পারছি না। যে হারে পানি বাড়তেছে জানি না কী হবে।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুড়িগ্রামে সবগুলো নদ-নদীর পানি আবার বাড়তে শুরু করছে। জেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে বন্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফসলি জমি, আমন ধানখেত পানিতে তলিয়ে গেছে। কী দিয়ে কাটবে বছর, তারই চিন্তায় দিন কাটছে কৃষকদের।
এ ছাড়া, রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে ৫০টি বাড়ি বিলীন
চিলমারীতে এক সপ্তাহ ধরে পানিতে ভাসছে হরিজন পল্লী
কুড়িগ্রাম, ৩১ আগস্ট (ইউএনবি)- কুড়িগ্রামে চিলমারীতে হরিজন পল্লী এক সপ্তাহ ধরে পানির নিচে তলিয়ে আছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, থানাহাট ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সবুজপাড়া এলাকায় বিলের মাঝে সদ্য নির্মিত হরিজন পল্লীর চারদিকে থৈ থৈ করছে পানি।
হরিজন পল্লীর আশ্রয় নেওয়া বাসিন্দা শ্রী মনি লাল জানান, সামান্য বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে আমাদের হরিজন পল্লী। গত সাত দিন ধরে এভাবে পানিবন্দি রয়েছি আমরা। আর একটু পানি বাড়লে হরিজন পল্লী ছেড়ে চলে যেতে হবে আমাদের।
আশ্রয় নেওয়া বাসিন্দা শ্রী রুমা রাণী বলেন, বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি, সব সময় ভয়ে থাকতে হচ্ছে।
আশ্রয় নেওয়া হরিজন পল্লীর বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে পানি বন্দি থাকলেও এখনও সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো খাদ্য সহায়তা পাননি তারা।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা( ইউএনও) মো. রাফিউল আলম জানান, হরিজন সম্প্রদায়সহ পানিবন্দি মানুষদের তালিকা করা হচ্ছে। এ ছাড়া হরিজনপল্লীতে মাটি ভরাটের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে এই সমস্যা থাকবে না।