বিএনপি
বঙ্গবাজার মার্কেট নিয়ে সরকার দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, বঙ্গবাজার মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডে বর্তমান সরকারের দায়িত্বহীনতা এবং বিভিন্ন সংস্থার আগুন নেভাতে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যর্থতা প্রকাশ পেয়েছে।
বুধবার রাজধানীর মালিবাগ এলাকার একটি হোটেলে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনকারী ১২-দলীয় জোটের এক ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবাজার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কয়েক হাজার মানুষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের আর্তনাদ সারা দেশের মানুষকে আচ্ছন্ন করেছে।
আরও পড়ুন: যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের মধ্যে কোনো দুর্বলতা নেই: ফখরুল
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা প্রায়ই বলি এই শাসন ব্যবস্থা দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং তারা কোথাও তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে না। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে, কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নেভাতে এবং হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি রোধে সরকারের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই।’
তিনি বলেন, সম্প্রতি পুরান ঢাকার সিদ্দিক বাজারসহ রাজধানীতে অনেক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যাতে প্রায় দুই ডজন লোক মারা গেছে।
ফখরুল বলেন, ‘বঙ্গবাজারে আগুনে কেউ মারা যায়নি বলে আমরা আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, তবে তারা (দোকান মালিকরা) আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
তিনি বলেন, অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ঘটনার পেছনের কারণ চিহ্নিতকরণ এবং অগ্নিকাণ্ড রোধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনেক সরকারি সংস্থা ও দপ্তরের দায়িত্ব থাকলেও তারা এ ব্যাপারে কিছুই করতে ব্যর্থ হয়েছে।
দেশে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর সরকারি সংস্থাগুলোও সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারছে না বলেও দুঃখ প্রকাশ করেন বিএনপি নেতা।
এছাড়া কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থার অভাবে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন বলেও জানান বিএনপি নেতা।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকার বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সে একটি বিশাল অগ্নিকাণ্ড ঘটে এবং এটি আশেপাশের কয়েকটি বাজারে ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রায় পাঁচ হাজার দোকান, প্রধানত তৈরি পোশাক এবং জুতার দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র সম্পূর্ণ অনুপস্থিত: মির্জা ফখরুল
ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের নিরাপত্তা ও তাদের দুর্ভোগ নিয়ে কম চিন্তা করে। কারণ, এর মূল উদ্দেশ্য যে কোনো উপায়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা।
ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকার সব নৈতিকতা ও নীতিকে বিসর্জন দিয়ে, সংবিধান লঙ্ঘন করে এবং জনগণের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে বেআইনি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার কুমিল্লায় তাদের দলের একটি ইফতার কর্মসূচি ছিল যেখানে পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই হামলা চালিয়ে ২০-২৫ জন বিরোধী নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে।
এছাড়া বুধবার ময়মনসিংহ জেলা বিএনপির সভায় পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের ‘ক্যাডাররা’ হামলা চালিয়ে বহু মানুষকে আহত করেছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি খুলনা ও নাটোরসহ দেশের আরও কয়েকটি এলাকায় একই ধরনের হামলা হয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমি বলতে চাই, বিবৃতি দিয়ে কোনো লাভ নেই। বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে এখনই আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে এবং শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্স থেকে বিএনপির ২০ নেতাকর্মী আটক
কুমিল্লায় তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্স থেকে বিএনপির ২০ নেতাকর্মী আটক
কুমিল্লায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলীয় একটি সমাবেশ ও ইফতার অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল ভাষণ দেয়ার সময় সেখান থেকে ২০ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার টাউনহল মিলনায়তনে কুমিল্লা বিভাগীয় যুবদল আয়োজিত অনুষ্ঠান থেকে তাদের আটক করা হয়।
এসময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হলে ইফতার মাহফিল বানচাল হয়ে যায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাউদ্দিন টুকুর বক্তব্যের পর তারেক রহমান ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: শনিবার সব মহানগর ও জেলায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো
তারেক রহমান তার বক্তব্য শুরু করলে কান্দিরপাড় পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক তপন বাগচী টাউন হলে প্রবেশ করেন। এ সময় পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয় বলে জানান তারা।
পরে ঘটনাস্থল থেকে ২০ জনকে আটক করা হয়।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, তারেক রহমানের যোগদানের কথা ছিল না। তাদের ইফতার মাহফিল করার কথা ছিল। তারেক রহমান যোগ দিলে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে।
এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে জড়িত ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আরও পড়ুন: যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের মধ্যে কোনো দুর্বলতা নেই: ফখরুল
বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র সম্পূর্ণ অনুপস্থিত: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশ বর্তমানে অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র সম্পূর্ণ অনুপস্থিত, মানুষের যে অধিকার তা পুরোপুরিভাবে হরণ করা হয়েছে। এছাড়া লঙ্ঘিত হচ্ছে মানুষের ব্যক্তগত অধিকার ও মানবাধিকার।
মঙ্গলবার বিকালে ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের কালিবাড়িস্থ পৌর কমিউনিটি হলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিমকালে তিনি এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার স্বপ্নকে ধ্বংস করেছে: ফখরুল
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ নতুন করে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মত তামাশা শুরু করেছে।
তিনি বলেন, আমরা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা কোনো তামাশার নির্বাচনে বিশ্বাস করি না। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণ যেখানে তার সত্যিকারের ভোট দিতে পারবে, তার মত প্রকাশ করতে পারবে; এই ধরনের একটা নির্বাচন আমরা চাই। আর সে নির্বাচন আওয়ামী লীগ যদি সরকারে থাকে তা কখনো নিরপেক্ষ হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির ১০ দফা দাবির প্রথম দফাটাই হচ্ছে বর্তমানে যে প্রধানমন্ত্রী আছেন শেখ হাসিনা, যিনি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হননি, তাকে পদত্যাগ করতে হবে। এই সংসদকে বিলুপ্ত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। তবেই একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নতুন নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায়। এটিই হচ্ছে আমার প্রধান দাবি।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, বর্তমান সরকার অর্থনীতির যে ভিত্তিগুলো-সেগুলো পর্যন্ত ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশে সরকারের উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করলেও প্রকৃত চিত্র উল্টো। অথচ সরকার সব সময় ভুল পরিসংখ্যান প্রচার করছে।’
আরও পড়ুন: যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের মধ্যে কোনো দুর্বলতা নেই: ফখরুল
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন যে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্টে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনে সরকারি দলের আইনজীবীরা পুলিশের সহায়তায় নির্বাচনকে পুরোপুরিভাবে পণ্ড করে দিয়েছে। শুধু তাই নয় পুলিশ সেখানে সম্পূরর্ণ রীতি বিরোধীভাবে, সুপ্রিমকোর্টের ভেতরে প্রবেশ করে বার লাইব্রেরিতে তারা আক্রমণ চালিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু ঢাকাতেই নয়, অনেক স্থানে লক্ষ্য করা গেছে প্রাতিষ্ঠানিক যে একটা ব্যবস্থা বার সমিতি; সেটাকে দখল করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার সকল শক্তি প্রয়োগ করেছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করতে তারা দ্বিধা করছে না। এখানে মানুষের একটা আস্থা ছিল, সেখান থেকেও আস্থা নির্মূল হওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।’
ফখরুল বলেন, ‘এখানে সংবিধানকে প্রতিনিয়ত লঙ্ঘন করা হচ্ছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বেশ কিছু ব্যক্তিকে র্যাব তুলে নিয়ে গেছে, এটা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি।’
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন যে নওগাঁয় একজন নারী কর্মচারীকে তারা তুলে নিয়ে যাওয়ার পর র্যাব কাস্টডিতে মারা গেছে। একইভাবে ডিজিটাল সিকিউরিটি মামলার মাধ্যমে মানুষের যে অধিকার তা খর্ব করা হচ্ছে।
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনা যেটা সেটা হচ্ছে সংবাদকর্মীদের স্বাধীনভাবে যে লেখা সেটা খর্ব করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা যা অর্জন করেছিলাম, যে স্বপ্ন নিয়ে ও চিন্তাচেতনা নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন, তা সম্পূর্ণভাবে এরা হরণ করেছ, লুন্ঠন করেছে। বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে একটি কর্তৃত্ববাদী একনায়েকতন্ত্রের দেশে পরিণত করেছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে ক্ষমতায় থাকতে চায়: ফখরুল
যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের মধ্যে কোনো দুর্বলতা নেই: ফখরুল
জোটের শরিকদের মধ্যে বিরোধ বাড়ার জল্পনা-কল্পনা উড়িয়ে দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনকারীদের মধ্যে কোনো দুর্বলতা নেই।
তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের একটি বিষয় পরিষ্কার করতে চাই যে আমাদের মধ্যে কোনো দুর্বলতা নেই এবং আমরা যুগপৎ আন্দোলনের গতি হারাইনি।’
রবিবার বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির সদস্যদের মধ্যে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিএনপি ও জোটের শরিকরা শনিবার সব নগর ও জেলা শহরে দুই ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও, গণতন্ত্র মঞ্চ এ কর্মসূচি পালনে বিরত থাকে।
এক সাংবাদিক এ বিষয়ে ফখরুলের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি জানান, সারাদেশে কখনো কখনো বিএনপির কর্মসূচি যুগপৎভাবে পালন করা হয়। তবে তাদের মধ্যে এবিষয়ে বোঝাপড়া আছে যে প্রতিটি দল চাইলে নিজস্ব কৌশলে কর্মসূচি পালন করতে পারবে।
আরও পড়ুন: সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট প্র্যাকটিস স্বাস্থ্য খাতকে ধ্বংস করার শামিল: মোশাররফ
তিনি বলেন, ‘তবে আমরা সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং রাষ্ট্রের সংস্কারের মূল দাবিতে একমত হয়ে যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, এখন থেকে তাদের যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি কোনটি এবং কোনটি তাদের দলের নিজস্ব কর্মসূচি তা তারা স্পষ্ট ঘোষণা করবেন।
তিনি বলেন, মূলত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে একটি গণতান্ত্রিক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ওপর ভিত্তি করে তাদের আন্দোলনের যৌথ ঘোষণা করা হবে।
শনিবারের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের ‘ক্যাডারদের’ হামলায় সারাদেশের বিভিন্ন জেলায়, বিশেষ করে খুলনা ও নাটোরে অনেক বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, আহতদের মধ্যে অনেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ‘বর্তমান আন্দোলন ও ভিন্নমতকে দমন করতে আমরা হামলা ও স্বৈরাচারী সরকারের দমনমূলক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই।’
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, সরকার জনমতকে দমন ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করতে গত ১৪ বছর ধরে পরিকল্পিতভাবে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও হত্যা এবং গ্রেপ্তার, দমন ও জেলে ঢোকাচ্ছে। ‘তারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণ করছে, বিশেষ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করে।’
তিনি জানান, তাদের বৈঠকে প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে গ্রেপ্তার এবং সংবাদপত্রটির সম্পাদক মতিউর রহমানসহ অন্যান্য সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (ডিএসএ) মামলা দায়েরের নিন্দা জানানো হয়।
ফখরুল বলেন, বৈঠকে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানানো হয়।
এই বিএনপি নেতা বলেন, তাদের বৈঠকে ২৪ মার্চ রাজশাহীতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (রাব) হেফাজতে সরকারি কর্মচারী সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসির অনানুষ্ঠানিক আলোচনার আহ্বান বিএনপির প্রত্যাখান
তিনি বলেন, তারা চলমান যুগপৎ আন্দোলনের তাদের পরবর্তী কর্মপন্থা সম্পর্কে কথা বলেছেন এবং তারা আন্দোলনের অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও জোরদার করার দিকে মনোনিবেশ করেছেন। যাতে একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি বিশ্বাসযোগ্য ও অপ্রীতিকর নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণমুখী সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য রাজপথের আন্দোলন তীব্রতর হয়।
রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, তারা যুগপৎ আন্দোলনের যৌথ ঘোষণার বিষয়েও কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, তারা আশা করছেন খুব শিগগিরই তারা যৌথ ঘোষণা সম্পর্কে জানাতে পারবেন।
হাসনাত বলেন, আগামী দিনে কীভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে বর্তমান আন্দোলনকে আরও জোরদার করা যায় সে বিষয়েও তারা আলোচনা করছেন।
আরও পড়ুন: অবস্থান কর্মসূচির পূর্বে খুলনায় ১৬ নেতাকর্মী আটক: বিএনপি
অবস্থান কর্মসূচির পূর্বে খুলনায় ১৬ নেতাকর্মী আটক: বিএনপি
খুলনা নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিকে সামনে রেখে শুক্রবার রাতে দলটি ও এর সহযোগী সংগঠনের ১৬ নেতাকর্মীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বিষয়টি জেলার স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন।
শনিবার সকালে নগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মাসুদ খান বাদল, ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আরমান শেখ, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আহ্বায়ক নুরুল হক, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রুবেল খন্দকার, সিটি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব হোসেন ও যুবদল নেতা নুর ইসলামকে আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শনিবার সব মহানগর ও জেলায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো
বিএনপি নেতারা বলেন, সরকার বিনা পরোয়ানায় বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে দেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তারা (সরকার) বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের দমনের জন্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আয়োজনসহ ১০ দফা দাবিতে শনিবার দেশের সব বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরে দুই ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি এবং এর সহযোগী সংগঠন ও সমমনা দলগুলো।
বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং আওয়ামী লীগ সরকারের কথিত সর্বাত্মক দুর্নীতির বিরুদ্ধে দলের প্রতিবাদ জানানোর জন্যও এই কর্মসূচি পালন করা হবে।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যমকে ঠেকাতে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করে ‘চূড়ান্ত’ দমন-পীড়ন চালাচ্ছে: বিএনপি
শনিবার সব মহানগর ও জেলায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো
চলমান যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠন এবং সমমনা দলগুলো নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ তাদের ১০ দফা দাবি আদায়ে শনিবার দেশের সব বিভাগীয় ও জেলা শহরে দুই ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।
বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি এবং আওয়ামী লীগ সরকারের কথিত সর্বব্যাপী দুর্নীতির বিরুদ্ধে দলের প্রতিবাদ করাও এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর বিএনপি যৌথভাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।
একই সময়ে অন্যান্য মহানগরী ও জেলা শহরেও একই কর্মসূচি পালন করবেন দলের নেতাকর্মীরা।
বিএনপি ছাড়াও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি, পেশাজীবি গণতান্ত্রিক জোট, ১২ দলীয় জোট, লেবার পার্টি, বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য এবং এলডিপিও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করবে।
আরও পড়ুন: ইসির অনানুষ্ঠানিক আলোচনার আহ্বান বিএনপির প্রত্যাখান
তবে দীর্ঘদিন ধরে যুগপৎ কর্মসূচি পালন করে আসা গণতন্ত্র মঞ্চ শনিবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে না।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা জানান, রবিবার বিএনপির সঙ্গে তাদের বৈঠকের কথা রয়েছে এবং বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তারা পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করবেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে বিএনপি ও সমমনা দল ও জোট বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিন্ন লক্ষ্যে একযোগে আন্দোলন শুরু করে।
এ পর্যন্ত তারা ১০ দফা দাবি আদায়ে দেশের সব ইউনিয়ন, জেলা ও বিভাগীয় শহরে সমাবেশ, মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি ও পদযাত্রা কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
এছাড়া গত ২৮ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর পাঁচটি এলাকায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেন বিএনপির ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যমকে ঠেকাতে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করে ‘চূড়ান্ত’ দমন-পীড়ন চালাচ্ছে: বিএনপি
গণমাধ্যমকে ঠেকাতে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করে ‘চূড়ান্ত’ দমন-পীড়ন চালাচ্ছে: বিএনপি
প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি অভিযোগ করেছে, সরকার গণমাধ্যমকে ঠেকাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো 'কালো'আইন ব্যবহার করে চরম দমন-পীড়ন চালাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
বুধবার প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ফখরুল বলেন,এদিন গভীর রাতেই পত্রিকাটির সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।
এছাড়া চট্টগ্রামে দৈনিক যুগান্তরের বিশেষ প্রতিবেদক ও ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব মাহবুব আলম লাভলুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও একটি মামলা করেছেন এক যুবলীগ নেতা।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে ক্ষমতায় থাকতে চায়: ফখরুল
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে মামলা দায়েরের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-এর অধীনে একের পর এক মামলা করা মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর মারাত্মক আঘাত।’
ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রের সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে সরকার প্রমাণ করেছে যে তারা গণতন্ত্রকে চিরতরে কবর দিতে চায়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-এর অধীনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার দেশের জনগণের কাছে একটি বার্তা দিতে চায়, তা হলো সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করা যাবে না এবং স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করা যাবে না।
বিএনপির জে্যষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ গণমাধ্যমকে নির্বিচারে দমন ও পীড়ন করে দেশে তাদের ভয়াবহ দুঃশাসন চালু রেখেছে।’
তিনি আরও বলেন, মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলাটি নিঃসন্দেহে সরকারের নির্দেশেই করা হয়েছে।
ফখরুল বলেন, সারাদেশে সাংবাদিক হত্যা-নিপীড়নে দেশবাসী ও গণমাধ্যম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট প্র্যাকটিস স্বাস্থ্য খাতকে ধ্বংস করার শামিল: মোশাররফ
ইসির অনানুষ্ঠানিক আলোচনার আহ্বান বিএনপির প্রত্যাখান
রাজনৈতিক সংকট নিরসনের ক্ষমতা না থাকায় নির্বাচন কমিশনের অনানুষ্ঠানিক আলোচনার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি।
তবে বিএনপিকে আলোচনার আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি পাঠানোর জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালকে ধন্যবাদ জানিয়েছে দলটি।
বুধবার গুলশানে দলের চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বিষয়ে তাদের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের কথা জানান।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুল কি জিয়ার লাশ দেখেছেন: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, মঙ্গলবার তাদের দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছে। এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পক্ষ থেকে বিএনপিকে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা ও মতবিনিময় সভার আমন্ত্রণ জানিয়ে দলের মহাসচিবের কাছে পাঠানো চিঠি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ফখরুল বলেন, আমাদের স্থায়ী কমিটির বৈঠক মনে করে যে-নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে মূল রাজনৈতিক সংকটের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কোনও আলোচনা বা সংলাপ ফলপ্রসূ হবে না।
তিনি আরও বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন প্রমাণ করেছে যে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয়। এমনকি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে চাইলেও সেই ক্ষমতা তাদের নেই।
ফখরুল বলেন, আমাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে বিএনপি নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব (অনানুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য) গ্রহণ করতে পারছে না।কারণ কমিশনের সঙ্গে এ ধরনের আলোচনা ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে মূল রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের কোনও সম্ভাবনা নেই।
২৩ মার্চ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ফখরুলকে একটি ডেমি-অফিসিয়াল চিঠি পাঠিয়ে বিএনপিকে আগামী জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার জন্য মতবিনিময় সভায় আমন্ত্রণ জানান।
বর্তমান ইসি গত বছর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে দুই দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করলেও বিএনপি ও জোটের শরিকরা কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, তারা দলীয় সিদ্ধান্ত জানিয়ে ইসিকে কোনো চিঠি পাঠাবেন না। তিনি আরও বলেন, আমি এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাকে (সিইসি) আমাদের সিদ্ধান্তের কথা জানাচ্ছি। আমি আশা করি তিনি আমাদের মতামত গ্রহণ করবেন।
আরও পড়ুন: জাতীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা’র সঙ্গে জয় বঙ্গবন্ধু অন্তর্ভুক্তি চেয়ে হাইকোর্টে রিট
ইসি ক্ষমতাহীন
আরেক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, আমার দেশ ও জনগণের সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের নেই। তাই এমন ইসির সঙ্গে বসে কোনও লাভ নেই।
বিএনপি নেতা বলেন, সিইসি কোনও ডাকঘর নন যে আমরা সরকারকে দেওয়ার জন্য তাকে চিঠি দেব। এটা একেবারেই সরকারের ব্যাপার। যেহেতু সংসদে সরকারের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, তাই এটা করতে পারে, অন্য কেউ এই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।
তিনি বরেন, নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে বসতে পারে বিএনপি। এছাড়া তারা বারবার বলছেন, নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন থাকায় ইসি কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
বিএনপি নেতা বলেন, সুতরাং এটি নিয়ে আলোচনা করতে হবে। এবং সরকারকে এ লক্ষ্যে এগিয়ে আসতে হবে। এই বিষয়টি (নির্বাচনকালীন সরকার) ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে আলোচনায় আমাদের আগ্রহ নেই।
তিনি আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে সরকার আলোচনার কোনো প্রস্তাব দিলে তাদের দল বিবেচনা করবে।
এছাড়া নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের ইস্যু ছাড়া আর কোনো আলোচনা হবে না।
আরও পড়ুন: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল হাসপাতালে ভর্তি
সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট প্র্যাকটিস স্বাস্থ্য খাতকে ধ্বংস করার শামিল: মোশাররফ
সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করার সরকারের সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্য খাতকে ধ্বংস করার সামিল বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যেই সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা সংকটে রয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে, ফি দিয়ে বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রাইভেট অনুশীলনের সুযোগ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার সামিল।’
মঙ্গলবার এক আলোচনা সভার বক্তব্যে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোশাররফও অভিযোগ করেন, সরকার ক্ষমতাসীন দলের চিকিৎসকদের পকেট ভারি করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আপনারা ৩০ মার্চ থেকে বিকাল ৩টার পর সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করার অনুমতি সংক্রান্ত একটি সার্কুলার দেখেছেন। ক্ষমতাসীন দলের চিকিৎসকদের জন্য অতিরিক্ত সুযোগ তৈরির জন্য এমন ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নেয়ায় এখানেও রাজনীতি করা হয়েছে।’
এই পদক্ষেপ রোগীদের জন্য ভালো ও কল্যাণ বয়ে আনবে না বলে মনে করেন বিএনপির এই নেতা। ‘সাধারণ মানুষ এখন সরকারি হাসপাতালে কোনো সেবা পাবে না এবং তারা বিকাল ৩টার পর ফি প্রদানকারী চিকিৎসকদের কাছে যেতে বাধ্য হবে।’
বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের একটি প্লাটফর্ম ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) ৫৩তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পতন’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার স্বপ্নকে ধ্বংস করেছে: ফখরুল
এর আগে সোমবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) থেকে সারাদেশের ১০টি জেলা হাসপাতাল ও ২০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিকাল ৩টার পর থেকে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস চলবে।
সরকার অধ্যাপকদের পরামর্শ ফি হিসেবে ৫০০ টাকা, সহযোগী অধ্যাপকদের জন্য ৪০০ টাকা, সহকারী অধ্যাপকদের জন্য ৩০০ টাকা এবং এমবিবিএস চিকিৎসকদের জন্য ২০০ টাকা নির্ধারণ করেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ বলেন, বর্তমান সরকার ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। ‘ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের একটি গ্রুপ ধনী হওয়ার জন্য দুর্নীতি ছড়াচ্ছে। এ কারণেই গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশে ধনী-গরিবের বৈষম্যের হার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি।’
তিনি বলেন, এক-চতুর্থাংশ ব্যবসায়ী, প্রশাসন ও পুলিশ সদস্যরা অর্থ উপার্জনের জন্য দেশের বর্তমান দুর্নীতিবাজ ব্যবস্থার সুযোগ নিচ্ছেন। ‘তাই এখন ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত চিকিৎসকদের বাড়তি সুযোগ দিতে প্রাইভেট প্র্যাকটিস ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এতে জনগণের কোনও উপকার হবে না।’
বিএনপি নেতা বলেন, সরকার রাজনীতিকরণ, দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে সব প্রতিষ্ঠান ও সব সেক্টরকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেনন, ‘দেশের মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেলে দেয়া হয়েছে। তারা(জনগণ) মনে করে এই সরকার কিছু ঠিক করতে পারবে না এবং কোনও সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পারবে না। যারা অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে তারা এটা মেরামত করতে পারবে না। যারা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে তারা সে অনুযায়ী স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংস্কার করতে পারে না।’
গণঅভ্যুত্থান গড়ে তুলে বর্তমান সরকারের পতন ঘটাতে সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান মোশাররফ।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে ক্ষমতায় থাকতে চায়: ফখরুল
আওয়ামী লীগ ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে ক্ষমতায় থাকতে চায়: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফখরুল বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে ভীতির পরিবেশ তৈরি করে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চাইছে।
সোমবার রাজধানীর ইস্কাটন এলাকার লেডিস ক্লাবে দেশের পেশাদার ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য বিএনপি আয়োজিত ইফতার পার্টির আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ফখরুল এসব কথা বলেন।
ইফতারের আগে ফখরুল আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
সংক্ষিপ্ত ভাষণে ফখরুল বলেন, তাদের দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া প্রতি বছর রমজানে পেশাজীবীদের জন্য ইফতারের আয়োজন করতেন। কিন্তু এটা আমাদের দুর্ভাগ্য যে মিথ্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে তাকে গৃহবন্দি করে রাখায় তিনি এ কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারেননি।
তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে পবিত্র রমজান মাস পার করতে পারছে না। ‘দেশে চরম বিশৃঙ্খলা চলছে এবং সরকার আমাদের সব অধিকার কেড়ে নেয়ায় মানুষ আর নিরাপদ বোধ করছে না।’
এই বিএনপি নেতা জানান, নওগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ ভূমি অফিসের এক নারী কর্মচারীকে এলিট ফোর্স তুলে নেয়ার ৩৬ ঘণ্টা পর র্যাবের হেফাজতে মারা যান।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার স্বপ্নকে ধ্বংস করেছে: ফখরুল