%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A3%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%B7%E0%A6%A3
ডলার সংকটে সৌদি আরবের কাছে মূল্য পরিশোধের বাড়তি সময় চেয়েছে বাংলাদেশ: সালমান এফ রহমান
সম্প্রতি সৌদি আরব সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান বাংলাদেশের ডলার সংকটে মূল্য পরিশোধের বাড়তি সময় চান।
সৌদি আরব থেকে জ্বালানি আমদানির জন্য দীর্ঘ সময়ে অর্থ প্রদানের সুবিধার্থে এই অনুরোধটি করা হয়।
দেশে ফেরার পর মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ৩ দিনের সফরের চিত্র তুলে ধরেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সৌদি আরব থেকে জ্বালানি আমদানির অর্থ পরিশোধের জন্য আমাদের ৪৫ দিনের সময়সীমা রয়েছে। ডলারের ঘাটতি বিবেচনায় এটি এক বছর পর্যন্ত বাড়ানো আমাদের জন্য বেশ সুবিধাজনক হবে। সৌদি কর্মকর্তারা এই প্রস্তাব বিবেচনায় নিতে সম্মত হয়েছেন।’
আরও পড়ুন: রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে না: সালমান এফ রহমান
রহমান ইসলামিক মিলিটারি কাউন্টার টেরোরিজম কোয়ালিশনের (আইএমসিটিসি) বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থান ও এ জাতীয় কাজকে ন্যায্যতা দেওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামের অপব্যবহারের বিষয় উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসের কোনো ধর্ম নেই এবং আইএমসিটিসির মাধ্যমে ইসলামী দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করে আমরা সন্ত্রাসবাদের দ্বারা ইসলামের অবমাননার বিরুদ্ধে লড়াই করার লক্ষ্য রাখছি।’
উপদেষ্টা গাজায় চলমান সংকটের সর্বসম্মত নিন্দার পাশাপাশি অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে সাক্ষাতের মাধ্যমে সমাধানের জন্য একটি সম্মিলিত আহ্বানের কথা তুলে ধরেন। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্দশার বিষয়টিও সমাধান করার অঙ্গীকার করা হয়।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে রহমান বাংলাদেশে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সৌদি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সৌদি আরবকে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দ দিতে আগ্রহী। তাদের বিনিয়োগমন্ত্রী এই প্রকল্প নিয়ে উৎসাহ দেখিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: সালমান এফ রহমান আবারও বিজয়ী
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে
জানুয়ারি শেষে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিচে নেমে এসেছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্যে উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী ৩১ জানুয়ারি দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার। যা গত ৩১ ডিসেম্বর ছিল ১৭ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, জানুয়ারি শেষে দেশের মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৫ দশমিক ০৯ বিলিয়ন ডলার।
আইএমএফের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে করা হিসাব অনুযায়ী রিজার্ভ তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহারযোগ্য, অন্যদিকে বিনিয়োগের আদায় সাপেক্ষে মোট রিজার্ভও ব্যবহারযোগ্য।
বাংলাদেশের মতো একটি ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির জন্য ছয় মাসের আমদানি ব্যয়ের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যথেষ্ট বলে মনে করা হয়।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, বিদ্যমান রিজার্ভ দিয়ে বাংলাদেশ প্রায় চার মাসের আমদানি বিল পরিশোধ করতে সক্ষম হবে।
২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
দেশের সঙ্কুচিত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর লক্ষ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিদেশে অবস্থানরত ও কর্মরত লাখ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসীর কাছ থেকে আরও বেশি রেমিট্যান্স আকৃষ্ট করতে রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম বা বিধি শিথিলসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও দক্ষ জনশক্তিতে
বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগ ও বিনিয়োগে আগ্রহী সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা।
এ বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম।
সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা করেন দুবাই চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মোহাম্মদ আলী রাশেদ লুতাহ এবং মাহবুবুল আলম।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল বলেন, 'সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধুর মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অন্যতম অংশীদার হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত সব সময় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে।’
আরও পড়ুন: ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার পোশাক রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রয়োজন দ্বিগুণ ডেনিম রপ্তানি
তিনি বলেন, ‘আমাদের লাখ লাখ রেমিট্যান্স যোদ্ধা ভাই-বোনেরা সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।’
তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ ও দক্ষ জনশক্তি নিয়োগে এফবিসিসিআইয়ের পূর্ণ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ওপর গুরুত্বারোপ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীদের জন্য সম্ভাবনাময় খাতগুলো তুলে ধরেন মাহবুবুল।
তিনি নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত ব্যবসার পরিবেশ নিশ্চিত করার সরকারের প্রতিশ্রুতি হিসেবে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইপিজেড) প্রতিষ্ঠা এবং মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্ণফুলী টানেল, পদ্মা সেতু এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো বড় অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর সমাপ্তির কথাও তুলে ধরেন।
ইপিজেডে বিনিয়োগকারী জাপান, ভারত ও কোরিয়ার মতো দেশগুলোর সাফল্যের গল্প তুলে ধরে বিনিয়োগের সুযোগ গ্রহণে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল হক। বিশেষ করে চট্টগ্রাম, পায়রা ও মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরে বিপুল বিনিয়োগ সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন তিনি।
আরও পড়ুন: বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও উন্নয়নশীল এশিয়ায় বলিষ্ঠ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির
মাহবুবুল আলম বাংলাদেশের পোশাক, সিরামিক, চামড়াজাত পণ্য এবং পাট ও পাটজাত পণ্যের মতো বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত খাতগুলো বিবেচনায় নিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
জবাবে দুবাই চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী রাশেদ লুতাহ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা যাচাইয়ের জন্য দুবাই চেম্বারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে একটি টিম গঠন করা হয়েছে। তিনি বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এদিকে দুবাই চেম্বারের সভাপতি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের দুবাইয়ে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
বৈঠকে এফবিসিসিআই পরিচালক মোহাম্মদ ফায়াজুর রহমান ভূঁইয়া, ফখোরুস সালেহীন নাহিয়ান, আবুধাবি দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, দুবাইস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর আশীষ কুমার সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ডলার এনডোর্সমেন্ট কী, কীভাবে করবেন
ডলার এনডোর্সমেন্ট কী, কীভাবে করবেন
উচ্চশিক্ষা, বিদেশ ভ্রমণসহ নানাবিধ আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ের আর্থিক কর্মকাণ্ডগুলো পরিচালনার জন্য প্রয়োজন পড়ে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহারের। আর এখানেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো ডলার এনডোর্সমেন্ট।
বিশ্ব অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একটি পাওয়ার হাউস হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারকে বিশ্বব্যাপী সাধারণ বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।
কোনো একটি দেশের পণ্য বা সেবা ক্রয় করার সময় এই মুদ্রার এনডোর্সমেন্ট সংশ্লিষ্ট দেশটির মুদ্রা ব্যবহারে বৈধতা প্রদান করে। চলুন, এই ডলার এনডোর্সমেন্ট কী এবং কীভাবে করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ডলার এনডোর্সমেন্ট কী
এই আর্থিক কার্যক্রমটির মানে হলো দেশের অভ্যন্তরে বা বাইরে যে কোনো লেনদেনে ডলার ব্যবহারের অনুমোদন। এর মাধ্যমে বিদেশি পণ্য বা সেবা নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার ব্যবহারের বৈধতা পাওয়া যায়। এই ডলারগুলো পরবর্তীতে সরাসরি কিংবা প্রয়োজনের স্বাপেক্ষে বিশেষত বিদেশ ভ্রমণের সময় সেই দেশের মুদ্রায় পরিবর্তন করে নেওয়া যায়।
এটি শুধু বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একটি প্রক্রিয়াই নয়, ডলার এনডোর্সমেন্ট ছাড়া ডলার সংক্রান্ত কোনো রূপ লেনদেনে জড়িত হওয়া বেআইনি।
আরও পড়ুন: অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছে ১.৯৭ বিলিয়ন ডলার
ডলার এনডোর্সমেন্টের সুবিধা
যে কাজগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক লেনদেন সম্পৃক্ত, এমন প্রতিটি কাজেই প্রয়োজন হয় ডলার খরচ করার। আর এই প্রয়োজনীয় খরচ সামাল দিতেই এনডোর্স করে নিতে হয় সেই পরিমাণ ডলারটি।
যেমন বিদেশে ভ্রমণ, উচ্চশিক্ষা, ও চিকিৎসার জন্য সেই দেশে যাওয়ার সময় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ডলার সঙ্গে নিতে হয়। চাকরি ও ব্যবসার কাজে যে দেশেই যাওয়া হোক না কেন, প্রাথমিক ব্যয়ের খাতগুলো নিরবচ্ছিন্ন রাখতে দরকার হয় ডলারের। ফলে অবধারিত হয়ে পড়ে সেই সংখ্যক ডলার সঙ্গে রাখার অনুমতি নেওয়া।
এছাড়া দেশের ভেতরে থেকেও বৈদেশিক কাজগুলো আঞ্জাম দিতে হলে ডলারের কোনো বিকল্প নেই। বিদেশি স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ, বিদেশি মার্কেট থেকে কেনাকাটা, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে দেশে ফিরে ডলারের বাংলাদেশি টাকায় রূপান্তরের জন্যও ডলার অনুমোদনের গুরুত্ব অপরিসীম।
দেশের ভেতরে যারা ইউটিউব ও ফেসবুকের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলোসহ ইন্টারনেটের অন্যত্রে বিজ্ঞাপন দেন, তাদের প্রায় ক্ষেত্রে ডলারের বৈধতা নিশ্চিত করে নিতে হয়।
এছাড়া আমদানি বা রপ্তানি ব্যবসার কাজগুলো বৈধভাবে কার্যকার করার জন্যও দরকার হয় ডলার আদান-প্রদানের অনুমতি।
আরও পড়ুন: খোলা বাজারে ১৫ টাকা বেশি দামে ডলার বিক্রি
ডলার এনডোর্সমেন্ট করার উপায়
আইনগতভাবে ডলার ব্যবহারের ক্ষমতা অর্জন করতে হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এর অনুমোদন নিতে হয় পাসপোর্টে সীলের মাধ্যমে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইস্যু করা হয়ে থাকে সনদপত্র, যেখানে উল্লেখ থাকে নির্দিষ্ট সংখ্যক ডলারের অংক।
শুধু তাই নয়, এখানে একটি বড় বিষয় হচ্ছে অনুমোদনটি কে দিচ্ছে সেটা। অর্থাৎ ডলারগুলো কোত্থেকে ক্রয় করা হচ্ছে ও ডলার বিক্রয়ের জন্য তাদের যথাযথ অনুমোদন আছে কি না সেটি গুরুত্বপূর্ণ।
দেশের ভেতরে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত ব্যাংক, মানি এক্সচেঞ্জার ও ডিলাররা আইনগতভাবে ডলার কেনা-বেঁচা করতে পারে। এছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ডলারের লেনদেনে জড়ানো বেআইনি।
চলুন, এবার এই এনডোর্সমেন্ট পদ্ধতিটির আরও খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া যাক।
ব্যাংক থেকে ডলার এনডোর্স করার প্রক্রিয়া
দেশের যে কোনো সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংক পাসপোর্ট বইয়ের শেষের দিকে এনডোর্সমেন্ট পাতায় সীল দিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলারের পরিমাণ লিখে দেয়। এটিই হলো অনুমোদনকৃত ডলারের পরিমাণ, যেটি এনডোর্সকারি কাগুজে ডলার উঠিয়ে কিংবা অনলাইনে ব্যবহার করতে পারেন।
এই ডলারপ্রাপ্তির জন্য এনডোর্সকারী সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে সমপরিমাণ বাংলাদেশি টাকা প্রদান করেন। এই পরিমাণটি ঠিক হয় বর্তমানে ডলার থেকে বাংলাদেশি টাকায় বিনিময় হার যত চলছে সে অনুসারে। এই হারটি অবশ্য একটি নির্দিষ্ট রেঞ্জের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে কমবেশি হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: ব্যাংকে ডলারের সরবরাহ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি: বাংলাদেশ ব্যাংক
সোনালী ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকে ডলার এনডোর্সমেন্টের ভিন্নতা
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে শুধু সোনালী ব্যাংকে ডলার এনডোর্সের জন্য সেখানে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকার বা নতুন করে করার প্রয়োজন পড়ে না। শুধুমাত্র পাসপোর্ট নিয়ে গেলেই কাজ হয়ে যায়। ব্যাংক কর্মকর্তা ঐ দিনের ডলার রেট অনুসারে টাকা হিসাব করে সার্ভিস চার্জের বিনিময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলারের অংক উল্লেখ করে পাসপোর্টে সীল মেরে দেন।
অন্যদিকে, বাকি সকল ব্যাংকে এই কার্যকলাপের জন্য অ্যাকাউন্ট থাকতে হয়। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে সাধারণত লোকাল শাখাগুলোতে এনডোর্স করা হয় না। এই সুবিধা দিয়ে থাকে শুধুমাত্র এডি বা অনুমোদিত ডিলার, শাখা বা ফরেইন এক্সচেঞ্জগুলো। বিভাগীয় শহর ও কিছু বাণিজ্যিক এলাকা ছাড়া কোথাও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর এডি শাখা নেই।
লোকাল শাখাতে এনডোর্স করতেই হলে সেখানে একটা ফরওয়ার্ডিং লেটার দিয়ে ডলার পরিবর্তনের চেষ্টা করা যেতে পারে।
এছাড়াও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর প্রত্যেকটিতে ডলার এনডোসিং-এর শর্তগুলোতে কিছু ভিন্নতা থাকে। তাই চূড়ান্তভাবে এনডোর্সমেন্টের পূর্বে অবশ্যই সেগুলোর সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া জরুরি।
ডুয়েল কারেন্সি কার্ডের বিপরীতে ডলার এনডোর্স
গত কয়েক বছর ধরেই বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে বিভিন্ন ব্যাংকের ডুয়েল কারেন্সি কার্ড সেবাগুলো। অনেকেই সরাসরি ডলার না তুলে এই আন্তর্জাতিক ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের বিপরীতে বৈধভাবে ডলার জমা করে নিচ্ছেন।
এই সেবার মাধ্যমে দেশ থেকে কার্ডে ডলার জমা করে বিদেশে নিয়ে গিয়ে সেখানে খরচ করা যায়। এমনকি প্রয়োজনে অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রাতেও পরিবর্তন করে নেওয়া যায়। তাছাড়া অনলাইন কেনাকাটার সুবিধা তো থাকছেই। এমনকি দেশের ভেতরে থেকেও বিশ্বের বিখ্যাত সব ই-কমার্স মার্কেটগুলো থেকে কোনো ঝামেলা ছাড়াই নানা সেবা ও পণ্য কেনা যায়।
বিদেশে চিকিৎসা ক্ষেত্রে খরচ করার জন্যও দেশি ব্যাংকের এই কার্ডগুলো বেশ উপকারি।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে: বাংলাদেশ ব্যাংক
এলসির মাধ্যমে ডলার এনডোর্সমেন্ট
এলসি বা লেটার অফ ক্রেডিট মুলত যারা আমদানি বা রপ্তানি ব্যবসার সঙ্গে জড়িতে তাদের জন্য দরকারি। এই ক্ষেত্রে ডলার এনডোর্সের জন্য এলসি করা হয় ব্যাংকের মাধ্যমে। এটি মূলত সেই আমদানি বা রপ্তানি কাজের জন্য ডলার বিনিময়ে বৈধতা দানকারী সনদপত্র।
মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ডলার ক্রয় করার নিয়ম
ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলো অপেক্ষা মানি এক্সচেঞ্জারগুলোর ডলার এনডোর্সিং-এর প্রক্রিয়া তুলনামূলক ভাবে সহজ। যে কোনো বৈধ পাসপোর্টধারি ঐ দিনের রেট অনুযায়ী সমপরিমাণ টাকা দিয়ে ডলার তুলে নিতে পারবেন এই এক্সচেঞ্জারগুলো থেকে। এক্সচেঞ্জ ফি দেয়া ছাড়া এখানে ব্যাংকের মতো ডকুমেন্টেশনের বাড়তি বিড়ম্বনা নেই।
তবে এই এনডোর্সমেন্ট ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য নয়। ভিসার জন্য শুধুমাত্র ব্যাংকের ডলার এনডোর্সমেন্ট গ্রহণযোগ্য।
অনেকেই অল্প কিছু টাকা বাঁচাতে যেয়ে এনডোর্স ছাড়া ডলার নিয়ে ইমিগ্রেশনে যেয়ে বিপদে পড়েন। কেননা প্রায়ই ক্ষেত্রে সেখানে ডলারের পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্টটা চেক করা হয়। তাই সার্বিক দিক থেকে ঝক্কি-ঝামেলা মুক্ত থাকার জন্য ডলার পাসপোর্টে এনডোর্স করে নেওয়া উচিৎ।
আরও পড়ুন: আপনি কি মার্কিন ডলার না কিনে বিদেশে ভ্রমণ করতে পারবেন?
কত ডলার এনডোর্স করা যায়
ডলার এনডোর্সের পরিমাণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুষ্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি বিদেশ গমনকালে এক বছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার বা সমমানের বৈদেশিক মূদ্রা এনডোর্স করতে পারবেন। যারা ১২ বছরের নিচে রয়েছেন তারা এর অর্ধেক অর্থাৎ ৬ হাজার ডলার ব্যবহারের অনুমোদন নিতে পারবেন।
চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলারের অনুমোদন নেওয়া যাবে, তবে এর জন্য অবশ্যই উপযুক্ত কাগজপত্র দেখাতে হবে। এর চেয়ে বেশি প্রয়োজন হলে যথাযথ কারণ ও প্রমাণ সহ যোগাযোগ করতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে।
ডলার এনডোর্সের মেয়াদ কত দিন
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মানুসারে, ডুয়েল কারেন্সি আন্তর্জাতিক ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের বিপরীতে পাসপোর্টের মেয়াদ যতদিন ততদিন থাকবে এনডোর্সমেন্টের মেয়াদ। তবে এক্ষেত্রে কিছু শর্ত রয়েছে:
- খরচের পরিমাণ এনডোর্সকৃত ডলারের সর্বোচ্চ লিমিট অর্থাৎ ১২ হাজার অতিক্রম করতে পারবে না।
- সম্পূরক কার্ডধারিরা বিদেশ ভ্রমণকালে তাদের ভ্রমণ কোঠার আওতাতেই এই সুবিধা পাবেন।
- তবে ভ্রমণ কোটার যে অংশটুকু বাকি থাকবে, তা ব্যবহারের জন্য পরের বছরে স্থানান্তর করা যাবে না।
- এই সুবিধা প্রবাসী বাংলাদেশি বা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য নয়।
শেষাংশ
সর্বসাকুল্যে, বাংলাদেশিদের জন্য যাবতীয় আন্তর্জাতিক লেনদেন সহজতর করার জন্যই এই ডলার এনডোর্সমেন্ট প্রক্রিয়া। অপেক্ষাকৃত সীমিত ডকুমেন্টেশনের আনুষ্ঠানিকতা থাকায় সোনালী ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জারগুলো এক্ষেত্রে সুবিধা প্রদানে এগিয়ে রয়েছে। এরপরেও প্রযোজ্য শর্তগুলো সতর্কতার সঙ্গে মেনে অগ্রসর হলে বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকেও পাওয়া যাবে কাঙ্ক্ষিত সেবা।
পরিশেষে, ডলার কী উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো হবে তা নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা থাকলে এনডোর্সমেন্টের নিয়মগুলোর সদ্ব্যবহার সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকলে ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন যেসব দেশে
বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও উন্নয়নশীল এশিয়ায় বলিষ্ঠ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির
ঢাকাএশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) দক্ষিণ এশিয়ার জন্য ২০২৩ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫.৭ শতাংশে উন্নীত করেছে। পাশাপাশি বলেছে, ভারতের অর্থনৈতিক পারফরম্যান্স প্রত্যাশার চেয়ে শক্তিশালী। ২০২৪ সালের পূর্বাভাস ৬ শতাংশে স্থিতিশীল রয়েছে। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও উন্নয়নশীল এশিয়ার অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আশাব্যঞ্জক বলেও উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের পূর্বাভাসে নিম্নমুখী পরিবর্তন সত্ত্বেও ২০২৪ সালের জন্য দক্ষিণ এশিয়া উপঅঞ্চলের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬ শতাংশে বজায় রাখা হয়েছে। উপঅঞ্চলের অন্যান্য অর্থনীতির জন্য ২০২৪ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রয়েছে।
উন্নয়নশীল এশিয়ার জন্য ২০২৩ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৪ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে, যা ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকের পূর্বে অনুমান করা ৪ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সংশোধনের জন্য শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে দায়ী করা হয়। যা ২০২৪ সালের জন্য প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৪ দশমিক ৮ শতাংশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন: জলবায়ু অগ্রাধিকার সহায়তা হিসেবে এডিবির কাছ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ
উন্নয়নশীল এশিয়ায় মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা আগের বছরের ৪ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে এই বছর সামঞ্জস্যযুক্ত ৩ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। যা ২০২৪ সালে ৩ দশমিক ৬ শতাংশে সামান্য বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
এডিবির প্রধান অর্থনীতিবিদ অ্যালবার্ট পার্ক বলেন, ‘চ্যালেঞ্জিং বৈশ্বিক পরিবেশ সত্ত্বেও, উন্নয়নশীল এশিয়া শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি প্রদর্শন করে চলেছে। অঞ্চলটি ধীরে ধীরে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনছে। যাইহোক, উচ্চ বৈশ্বিক সুদের হার থেকে শুরু করে এল নিনোর মতো জলবায়ু-সম্পর্কিত ইভেন্ট পর্যন্ত ঝুঁকি অব্যাহত রয়েছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারগুলোর জন্য সতর্ক থাকা এবং তাদের অর্থনীতি স্থিতিশীল এবং প্রবৃদ্ধি টেকসই তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
সম্ভাব্য নেতিবাচক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে উন্নত অর্থনীতিতে দীর্ঘায়িত উচ্চ সুদের হার, সম্ভবত আর্থিক অস্থিতিশীলতার দিকে পরিচালিত করে। এডিবি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এল নিনো এবং ইউক্রেনে চলমান রুশ আগ্রাসনের মতো ঘটনা থেকে সরবরাহ ব্যাহত হলে জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তায় নতুন করে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হতে পারে, যা মুদ্রাস্ফীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে জলবায়ু অগ্রাধিকার সমর্থনে ৪০০ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি
২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার পোশাক রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রয়োজন দ্বিগুণ ডেনিম রপ্তানি
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ২০৩০ সাল নাগাদ ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পোশাক রপ্তানির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তা অর্জন করতে বাংলাদেশের ডেনিম রপ্তানি দ্বিগুণ করতে হবে।
বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর ১৫তম আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। কিন্তু ডেনিম রপ্তানিতে আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষস্থানে; এমনকি আমাদের অবস্থান চীনের চেয়েও উপরে।’
আরও পড়ুন: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছে
তিনি আরও বলেন, ‘ডেনিম রপ্তানিতে বাংলাদেশের এই সাফল্যের পেছনে বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর বিশাল অবদান রয়েছে।’
প্রধান অতিথি হিসেবে আজ ঢাকায় বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর ১৫তম সংস্করণের উদ্বোধনকালে বাণিজ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে ছিলেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, বিজিএমইএ’র বর্তমান সভাপতি ফারুক হাসান, বিজিএমইএ’র সিনিয়র সহসভাপতি এস এম মান্নান কচি এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মোস্তাফিজ উদ্দিন।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানির প্রায় এক-চতুর্থাংশ আসে ডেনিম ও ডেনিম সম্পর্কিত পণ্য রপ্তানি থেকে। সুতরাং, ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পোশাক রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে ডেনিম রপ্তানি বাড়িয়ে দ্বিগুণ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এটা সম্ভব। কারণ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং সাসটেইনিবিলিটির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যে দৃষ্টান্তমূলক অগ্রগতি হয়েছে, তাতে আমরা বিশ্বাস করি যে ব্র্যান্ড এবং খুচরা বিক্রেতারা তাদের পছন্দের পোশাক সোর্সিং গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশকে বেছে নেবে।’
ফারুক হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশে ইউনাইটেড স্টেটস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) থেকে লিড সনদপ্রাপ্ত ২০৩টি সবুজ পোশাক কারখানা রয়েছে। বিশ্বের সর্বোচ্চ সংখ্যক সবুজ কারখানার উপস্থিতি সাসটেইনিবিলিটির প্রতি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের দূঢ় প্রতিশ্রুতি প্রমাণ করে।’
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের সেরা ১০০টি সবুজ কারখানার মধ্যে এখন ৫৩টি বাংলাদেশে অবস্থিত।
এস এম মান্নান কচি বলেন, ‘বর্তমানে বিজিএমইএ ও সরকার দেশে পোশাক শিল্প যাতে নির্বিঘ্নভাবে পরিচালিত হতে পারে, সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে। বাংলাদেশে যে নিরাপদ ব্যবসায়িক পরিবেশে বিরাজমান, বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর ১৫তম আসরের সফল আয়োজন তাই প্রমাণ করে।’
এইচঅ্যান্ডএমের বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ইথিওপিয়ার রিজিওনাল কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউর রহমান বলেন, এইচঅ্যান্ডএম ২০৩০ সালের মধ্যে ৫৬ শতাংশ কার্বন ডাইঅক্সাইড কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। কোম্পানির জন্য বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করতে এইচঅ্যান্ডএম একটি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি সই করার উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি রিসাইক্লিয়ের জন্য আরও নিয়মিত পরিকল্পনা গ্রহণের উপর গুরোত্বারোপ করেন। এ ছাড়াও, উদ্ভাবনের ও নতুন কৌশলসমূহ যেগুলো পোশাক শিল্পের জন্য অত্যাবশ্যক সেগুলো আয়ত্ত্ব করার উপর জোর দেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের রিজার্ভ-সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা করছে আইএমএফ
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন যে, হ্যান্ড এইচঅ্যান্ডএম গ্রিন সংক্রান্ত উদ্ভাবনের জন্য জিআইএফ এর সঙ্গে কাজ করছে।
অধিকন্তু, কার্বন নির্গমন ও পানি ব্যবহার কমাতে নতুন প্রযুক্তির প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ ছাড়াও তিনি পোশাক শ্রমিকদের উচ্চ মজুরি সম্পর্কে উল্লেখ করেন এবং এ বিষয়ে আলোচনা করার জন্য মন্ত্রীদের আমন্ত্রণ জানান।
মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘ডেনিম শিল্পে বাংলাদেশের রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। ডেনিম শিল্পের সেই অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর ১৫তম আয়োজনে ১২টি দেশের মোট ৮০ টি প্রদর্শক অংশ নিচ্ছে। আজ বুধবার থেকে শুরু হওয়া ২ দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীতে অংশ নিতে দেশ-বিদেশের প্রায় পাঁচ হাজার দর্শনার্থী নিবন্ধন করেছেন।
ডেনিম এক্সপোর এবারের আসরে মোট চারটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়া হাই কমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি (ইকোনমিক) জোশুয়া গাকুটান; বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক কাজী ফাইয়াজ মুরশিদ, বিজিএমইএ’র সাবেক সহসভাপতি ও তুসুকা গ্রুপের চেয়ারম্যান আরশাদ জামাল দিপু; পুমার বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শাখা ব্যবস্থাপক মঈন হায়দার চৌধুরী; মুনির আহমেদ, পরিচালক, এম অ্যান্ড জে গ্রুপ; মোহাম্মদ আনিস আগুং নুগরোহো, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, বেটার ওয়ার্ক বাংলাদেশ; মিস ক্যাথারিনা মায়ার, রিজিওনাল সিআরএম ম্যানেজার, ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট এবং তুরস্ক, ব্লুসাইন টেকনোলজিস এজি; এবং টাকার আসানো, ওয়াইকেকে বাংলাদেশ পিটিই লিমিটেডের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর ‘২০৩০ সালে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের অবস্থান ও সামনের পথ’ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেবেন।
'১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মানব সম্পদের উন্নয়ন ও সদ্ব্যবহার’শীর্ষক সভায় আলোচনা করবেন- জিয়াউর রহমান, রিজিওনাল কান্ট্রি ম্যানেজার, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ইথিওপিয়া, এইচএন্ডএম; ড. বার্ন্ড স্প্যানিয়ার, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেপুটি হেড অব মিশন; শরীফ জহির, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অনন্ত গ্রুপ; ড. শাহরিয়ার মাহমুদ, চিফ সাসটেইনেবিলিটি অফিসার, স্পিননোভা; সারওয়াত আহমেদ, সিনিয়র এডভাইজার, জিআইজেড; এবং ড. রবিচন্দ্রন এল, ডিরেক্টর - (প্রোডাক্ট ইনোভেশন/বিজনেস), আটলান্টিক কেয়ার কেমিক্যালস।
থিস উডস্ট্রা, বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর, আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, পরিচালক, বিজিএমইএ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক, টিম গ্রুপ; শফিউর রহমান, কান্ট্রি ম্যানেজার, জি-স্টার র; শামস মাহমুদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শাশা ডেনিমস লিমিটেড এবং সাবেক সভাপতি, ডিসিসিআই; মাত্তেও উরবিনি, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সোকো কেমিক্যালস; এবং আন্দ্রেয়া ভেনিয়ার, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, অফিসিনা+৩৯ 'ডেনিম শিল্পের টেকসই পরিবর্তন' বিষয়ক প্যানেল আলোচনা করবেন।
শিল্পের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনে করণী’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় বক্তাদের মধ্যে রয়েছে- আলী মুশতাক বাট, বাংলাদেশে ডেনমার্কের দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর অ্যান্ড হেড অব ট্রেড মিশন; মোহাম্মদ হাতেম, নির্বাহী সভাপতি, বিকেএমইএ; শহিদ উল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি, বিজিএমইএ; লুথমেলা ফরিদ, পরিচালক, প্যাসিফিক জিন্স; আদিব সাজ্জাদ, কান্ট্রি ম্যানেজার, সলভেই৮; এবং দীপক শাহ, গ্রুপ সিইও (বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনাম), টেক্স ফাস্টেনারস।
আরও পড়ুন: ড্রাইভারদের জন্য সাবস্ক্রিপশন প্যাকেজ চালু করল উবার
মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা পোশাক রপ্তানিতে প্রভাব ফেলবে না: বিজিএমইএ
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) মঙ্গলবার বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বিধিনিষেধ দেশে পোশাক পণ্য রপ্তানি ব্যাহত করবে না, বরং পশ্চিমের আর্থিক সংকটের কারণে হ্রাস পেতে পারে।
মঙ্গলবার বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা নিয়মিত আপনাদের সঙ্গে সর্বশেষ শিল্প পরিসংখ্যান ভাগ করছি। আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সামগ্রিক পোশাক আমদানি আশঙ্কাজনক হারে কমেছে।’
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পোশাক পণ্যের একক বৃহত্তম আমদানিকারক।
ফারুক বলেন, এই সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক বৈশ্বিক পোশাক আমদানি মূল্যের দিক থেকে ২২ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং বাংলাদেশ থেকে তাদের আমদানি প্রায় ২০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ জুলাইয়ে আরএমজি রপ্তানি করে ৩.৯৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে: বিজিএমইএ
তিনি বলেন, অন্যদিকে পরিমাণের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক আমদানি ২৮ শতাংশ এবং বাংলাদেশ থেকে আমদানির পরিমাণ ২৯ শতাংশ কমেছে।
তিনি আরও বলেন, এর অর্থ, পরিমাণের দিক থেকে গত ৭ মাসে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি এক-তৃতীয়াংশ হ্রাস পেয়েছে।
ফারুক বলেন, এদিকে ইউরোপ থেকে বৈশ্বিক আমদানি কমেছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং বাংলাদেশ থেকে কমেছে প্রায় ১২ শতাংশ। এছাড়া রপ্তানিকারক দেশগুলো থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানি কমেছে প্রায় ১৩ শতাংশ এবং বাংলাদেশ থেকে আমদানি কমেছে ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশ।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দুটি প্রধান বাজার উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপে মোট রপ্তানির প্রায় ৮০ শতাংশ হয়ে থাকে। আর কোনো কারণে এই দুই বাজারে অস্থিতিশীলতা দেখা দিলে তা আমাদের শিল্পের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে আমরা সর্বদা বাজার সম্প্রসারণ এবং নতুন বাজার তৈরির দিকে মনোনিবেশ করেছি। আমরা ২০১০ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে এটি করে আসছি। সম্প্রতি আমরা অস্ট্রেলিয়ায় দিনব্যাপী বাংলাদেশ অ্যাপারেল সামিটের আয়োজন করেছি। সেখানে আমরা আমাদের শিল্পের সামগ্রিক অগ্রগতি তুলে ধরেছি।’
বিজিএমইএ অস্ট্রেলিয়ায় রপ্তানিতে নতুন গতি আশা করছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ইরাক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে আশাবাদী বিজিএমইএ সভাপতি
তিনি বলেন, বিজিএমইএ দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, চীন, ভারত, সৌদি আরব এমনকি ইরাকের মতো আরও অনেক অপ্রচলিত বাজারের সঙ্গে কাজ করছে। নতুন বাজারে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশকে সাহায্য করবে
সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ আরও জানায়, সম্প্রতি বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ১০টি কোম্পানি ৩০০ কোটি টাকা পাচার করেছে বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা সত্য নয়।
১০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪টি বিজিএমইএ’র সদস্য, দু’টি বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সদস্য এবং ৪টি তাদের কোনোটির সঙ্গেই সম্পৃক্ত নয়।
এতে বলা হয়েছে, তৈরি পোশাক রপ্তানির নামে ঢাকা ও গাজীপুরের ১০ রপ্তানিকারকের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৫৩ লাখ ৬৬ হাজার ৯১৮ মার্কিন ডলারের অভিযোগ উঠেছে।
দেশটির গণমাধ্যমও এ বিষয়ে খবর ছড়িয়েছে। এরপর শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর প্রাথমিকভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করে।
ফারুক বলেন, ‘এই তথ্য মিথ্যা ও বানোয়াট।’
পোশাক কারখানাগুলোর অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্তে সরকারকে আলাদা টাস্কফোর্স গঠনের দাবি জানান তিনি।
বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দ বলেন, পাশ্চাত্যে মুদ্রাস্ফীতির চাপের কারণে গার্মেন্টস পণ্যের খুচরা বিক্রয় কমে যাওয়ায় দেশের রপ্তানি মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হওয়ায় রপ্তানি হ্রাসের দায় তারা নিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি এসএম মান্নান কচি, সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম, সংগঠনের সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনসহ অন্যান্য কারখানা মালিকরা।
আরও পড়ুন: নতুন ডিসিটিএস স্কিম যুক্তরাজ্যের সঙ্গে শক্তিশালী বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদারিত্ব তৈরি করতে পারে: বিজিএমইএ সভাপতি
মিরপুরে বিজিএমইএ হাসপাতালের দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন
মিরপুরের মিল্কভিটা রোডে বিজিএমইএ হাসপাতালের দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিজিএমইএ'র জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি এস এম মান্নান (কচি) হাসপাতালের নির্মাণ কাজটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন শেষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, মিরপুরের মিল্কভিটা রোডে দু’টি বেসমেন্টসহ ১৫০ শয্যার বিজিএমইএ হাসপাতালটি নির্মাণ করা হচ্ছে। বর্তমানে নির্মাণাধীন বিজিএমইএ হাসপাতালের নিচতলায় বিজিএমইএ'র মিরপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র কাজ করছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে অস্ট্রেলিয়ান ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান বিজিএমইএ সভাপতির
বিজিএমইএ'র এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রতি মাসে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ শ্রমিক বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সহ-সভাপতি (অর্থ) খন্দকার রফিকুল ইসলাম, মিরপুর হাসপাতাল সম্পর্কিত বিজিএমইএ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মো. জাহানদার রশীদ জুয়েল, মিরপুর হেলথ সেন্টার ও স্কুল সম্পর্কিত বিজিএমইএ’র স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুলতান আহমেদ এবং বিজিএমইএ শ্রম কল্যাণ ও শিক্ষা সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মো. আব্দুল আহাদ আনসারী। এছাড়াও মিরপুর এলাকার গার্মেন্টস শিল্প উদ্যোক্তা, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আরএমজি শিল্পের উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারের নীতিগত সহায়তা চান বিজিএমইএ সভাপতি
২০২৩ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০ শক্তিশালী মুদ্রা
বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড এবং অর্থনৈতিক লেনদেনে সাবলীলতার দরুণ মুদ্রা বিশ্ব অর্থনীতির একটি অপরিহার্য উপাদান। স্বভাবতই সবগুলো মুদ্রা মূল্যমান এক পাল্লায় পরিমাপ করা হয় না। এমনকি কিছু কিছু মুদ্রা অন্যগুলোকে ছাড়িয়ে আশ্চর্যজনক উচ্চতায় উঠে আসে। এই আকাশচুম্বী তারতম্যের কারণ কী! বর্তমান বিশ্বের সব থেকে দামি ১০টি মুদ্রার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি চলুন পটভূমিটাও জেনে নেওয়া যাক।
বৈদেশিক মুদ্রার মান নির্ধারণ হয় কীভাবে?
বৈদেশিক মুদ্রার মূল্যমান মূলত নির্ধারিত হয় দু’টি প্রধান উপায়ে: ফ্লোটিং রেট ও ফিক্সড রেট।
ফ্লোটিং রেট
এই রেটটি নির্ধারিত হয় মুক্ত বাজারে সরবরাহ ও চাহিদার বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। যখন একটি মুদ্রার চাহিদা বেশি হয়, তখন এর মূল্য বাড়ে। আর চাহিদা কমার সঙ্গে সঙ্গে তার দামটা পড়তে থাকে। বিভিন্ন প্রযুক্তিগত এবং মৌলিক কারণ একটি ন্যায্য বিনিময় হার সম্পর্কে মানুষের ধারণাকে প্রভাবিত করে। আর সেই অনুযায়ী পরিবর্তন হতে থাকে চাহিদা ও সরবরাহ।
উদাহরণস্বরূপ, ইউরোপীয়দের মধ্যে মার্কিন ডলারের চাহিদা বৃদ্ধির ফলে ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারের দাম বেড়ে যায়। এর পেছনে নটবর হিসেবে কাজ করে সুদের হারের পরিবর্তন, বেকারত্বের হার, মুদ্রাস্ফীতি ও ভূ-রাজনৈতিক ঘটনাগুলো।
ফিক্সড রেট
বিদেশি মুদ্রার বিনিময় হিসেবে একটি দেশের সরকার নিজেদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট হার নির্ধারণ করে দেয়। এই হার বজায় রাখার জন্য সরকার সেই বিদেশি মুদ্রার বিপরীতে নিজস্ব মুদ্রা ক্রয় ও বিক্রয় করে।
আরও পড়ুন: আমদানিতে কড়াকড়ি সত্ত্বেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে
স্বল্পমেয়াদে ফ্লোটিং রেটের গতিবিধিকে ঘিরে দানা বাধতে থাকে অনুমান ও গুজব। কখনো সত্যিকার অর্থেই রেটের বিপর্যয় ঘটে, যার সূত্র ধরে পরিবর্তিত হতে থাকে দৈনন্দিন সরবরাহ ও চাহিদা। স্বল্পমেয়াদের এই অস্থিরতার চরম অবস্থায় সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো হস্তক্ষেপ করে।
অর্থাৎ একটি মুদ্রার দাম অত্যধিক বেশি বা কম হয়ে গেলে সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর এই হস্তক্ষেপ ঘটে। অন্যথায় এই অস্থিতিশীলতাটি দেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং ঋণ পরিশোধের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সর্বপরি, মুদ্রার ফ্লোটিং রেটকে তুলনামূলকভাবে অনুকূল অবস্থায় নিয়ে আসার জন্য ফিক্সড রেটের ব্যবস্থাগুলো প্রয়োগ করা হয়।
২০২৩ সালে পৃথিবীর শীর্ষ ১০ মূল্যবান মুদ্রা
কুয়েতি দিনার
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দামি মুদ্রা হলো কুয়েতি দিনার (কেডব্লিউডি), যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রায় যার বিনিময় হার ৩ দশমিক ২৭ মার্কিন ডলার। কুয়েতের ভৌগলিক অবস্থান সৌদি আরব এবং ইরাকের মাঝে হওয়ায় দেশটিকে তেল রপ্তানিকারক হিসেবে বিশ্বব্যাপী শীর্ষস্থানীয় পদমর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। ১৯৬০-এর দশকে প্রবর্তিত মুদ্রা দিনার সর্বপ্রথম ব্রিটিশ পাউন্ডের বিপরীতে ফিক্সড রেট করা হয়েছিল। এই কৌশলগত পদক্ষেপটি কুয়েতকে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং একক মুদ্রামুখী ঝুঁকিগুলো হ্রাস করতে সাহায্য করে। বর্তমানে বাংলাদেশে ১ কুয়েতি দিনারের দাম ৩৫৩ দশমিক ৭০ টাকা।
আরও পড়ুন: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতিকৃতি বিশিষ্ট বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রার এখন কি করা হবে?
স্বর্ণ বনাম হীরা: কোন বিনিয়োগটি বেশি লাভজনক?
সামাজিক অবস্থান, আভিজাত্য, নির্ভরতা তৈরির বিকল্প হিসেবে স্বর্ণ ও হীরা ধাতব বস্তু দুটি স্ব স্ব ক্ষেত্রে মূল্যবান। কিন্তু সম্পদের সময় মূল্য থেকে অর্থোপার্জনের ক্ষেত্রে যে প্রশ্নটি সবার আগে আসবে, স্বর্ণ নাকি হীরা, কোন বিনিয়োগটি বেশি লাভজনক?
উভয় বিনিয়োগের মাঝেই কিছু মৌলিক পার্থক্য বিদ্যমান। আজকের আয়োজনে আপনি জানতে পারবেন স্বর্ণ ও হীরাতে বিনিয়োগের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো এবং বিনিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে কোন কোন বিষয়গুলো আপনার খতিয়ে দেখা জরুরি।
স্বর্ণ বিনিয়োগের সুবিধা
অনিশ্চিত সময়ে স্থিতি রক্ষাকারী
অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং বাজারের অস্থিরতার সময় স্বর্ণকে প্রায়ই নিরাপদ অবলম্বন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মুদ্রাস্ফীতি ও মুদ্রার মূল্যহ্রাস ব্যতিরেকে এই সম্পদ নিজের দাম ধরে রাখতে পারে।
তুলনামূলকভাবে নির্ভরযোগ্য খাত
বিভিন্ন সময়ে মূল্যমান বা লাভের ক্ষেত্রে বন্ড বা স্টকের থেকে অধিকতর সামঞ্জস্যপূর্ণতা বজায় রাখে স্বর্ণ। একাধিক খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সামগ্রিক বিনিয়োগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে এই ধাতবটি।
আরও পড়ুন: হংকংয়ে রেকর্ড ৪৯.৯ মিলিয়ন ডলারে গোলাপী হীরা বিক্রি
ভৌত সম্পদ হিসেবে সংরক্ষণযোগ্য
স্বর্ণ একটি ভৌত সম্পদ যা আপনি কয়েন, বার বা গয়না আকারে সংরক্ষণ করতে পারেন। এই স্থিতিশীলতা স্টক বা বন্ডের মতো অন্যান্য বিনিয়োগের তুলনায় অধিক নিরাপত্তার অনুভূতি প্রদান করতে পারে।