আইনশৃঙ্খলা
মাদারীপুরে রাজিব হত্যা: ২৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন
মাদারীপুরে রাজীব নামে এক যুবককে হত্যা মামলায় ২৩ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ছয় আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিকালে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস এ মামলার রায় দেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় আজিজ হত্যা: ৬ জনের যাবজ্জীবন
এ সময় আদালতে ২২ আসামি উপস্থিত ছিলেন। রায়ে চার জনকে খালাস দেয়া হয়েছে এবং বাকি তিন আসামি মৃত্যুবরণ করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মাদারীপুর আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান সিংহ।
মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ১ সেপ্টেম্বর সকালে মামা আলী হাওলাদারের নার্সারিতে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন রাজিব সরদার। পথে পৌর শহরের হরিকুমারিয়া এলাকায় পৌঁছালে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কয়েকজন দেশিয় অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে গুরুতর যখম করেন।
এ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর সময় পথেই তিনি মারা যান।
এ ঘটনার তিনদিন পর নিহতের মামা আলী হাওলাদার বাদী হয়ে জামাল হাওলাদার, রহিম হাওলাদার, আছাদ হাওলাদারসহ ৪৭ জনকে আসামি করে মাদারীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে সদর থানার তৎকালীন পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজিব হোসেন তদন্তের পর ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর ৩৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। যুক্তিতর্ক শেষে উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে মঙ্গলবার এ আদেশ দেন বিচারিক আদালত।
আরও পড়ুন: সিলেটে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
জয়পুরহাটে প্রতিবেশীকে হত্যার দায়ে ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
সিলেটে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
সিলেট নগরীর বন্দরবাজার এলাকার এক বাইসাইকেল মেরামতকারীকে হত্যা মামলায় তিন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. শাহাদৎ হোসেন প্রামাণিক এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী জয়নাল আবদীন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধ ত্রিশালের ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-চাঁদপুরের মতলব থানার বইয়েরা গ্রামের মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে ঝাড়ু মিয়া, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি এলাকার সবুজ মিয়ার ছেলে জাকির এবং মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার পাঁচপীর গ্রামের আতর মিয়ার ছেলে লাল মিয়া ওরফে লালু।
দণ্ডপ্রাপ্তদের তিনজনই পলাতক রয়েছেন।
মামলার বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, ২০০৭ সালের ২৮ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে সিলেট নগরের বন্দরবাজারে বাইসাইকেল মেরামতকারী আবুল কালাম (৪০) দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন।
নিহত আবুল কালাম সিলেট নগরের গাজীটোলা এলাকার দুলু মিয়ার কলোনির মৃত ইছরাব আলীর ছেলে এবং নগরের বন্দরবাজার সন্ধ্যাবাজার এলাকায় বাইসাইকেল মেকানিক ছিলেন।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সুমনা খাতুন বেদনা বাদী হয়ে ২৯ নভেম্বর সিলেটের কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন।
এর প্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ৯ মে কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সাইদ উদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পরবর্তীতে ২০১১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি একই মামলায় তিনজনকে অভিযুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রোকনুজ্জামান।
মামলাটি বিচারের জন্য ২০১৩ সালে এ আদালতে স্থানান্তরিত হলে বিচারকাজ শুরু হয়।
এরপর ২০০৮ সালের ১৪ আগস্ট এ মামলার অভিযোগ গঠনের পর ১২ জনের সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও দীর্ঘ শুনানি শেষে মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করা হয়।
মামলায় বাদি পক্ষে ছিলেন আদালতের পিপি সরওয়ার আহমদ চৌধুরী আবদাল এবং আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত আইনজীবী ঝর্ণা বেগম।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে প্রতিবেশীকে হত্যার দায়ে ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
চট্টগ্রামে উপজাতি তরুণীকে ধর্ষণ, মুদি দোকানিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আপিল বিভাগেও খারিজ
রাষ্ট্রপতি পদে মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত চেয়ে করা রিট আবেদন এবার আপিল বিভাগে খারিজ হয়েছে।
মঙ্গলবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ১৫ মার্চ মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করে ইসির গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা দুটি রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে করা রিট খারিজ
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
পরে রিট আবেদন দুটি নিয়ে আপিল বিভাগে যান রিটকারী দুই আইনজীবী।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন এম এ আজিজ খান।
গত ১৪ মার্চ মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করে ইসির গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদন দুটি শুনানির জন্য নতুন বেঞ্চে পাঠান প্রধান বিচারপতি।
তার আগে গত ১২ মার্চ মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত করার প্রক্রিয়া ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট শুনতে বিব্রতবোধ করেন হাইকোর্ট।
এ সময় রিট আবেদনটি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠান আদালত।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিব্রত প্রকাশ করেন।
বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি আহমেদ সোহেল বলেন, আমি পাঁচ বছর দুদকের আইনজীবী ছিলাম। যেহেতু এই রিট আবেদনে দুদকের প্রশ্ন জড়িত এ কারণে রিট আবেদনটি শুনতে বিব্রত বোধ করছি।
এরপর রিট আবেদনটি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়ে দেন আদালত।
তারও আগে গত ৭ মার্চ মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত করার প্রক্রিয়া ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
রিটে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে জারি করা গেজেটের কার্যকারিতা স্থগিত চাওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে রিটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন ১৯৯১ এর ৭ ধারা অনুসারে মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে যোগ্য মনোনীত করা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না, এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।
আরও পড়ুন: বাবার মামলা খারিজ, দুই সন্তান থাকবে জাপানি মায়ের কাছে
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম এ আজিজ খান। এই রিটে নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বিবাদী করা হয়েছে।
আইনজীবী এম এ আজিজ খান বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া ও পরবর্তীতে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে তা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করেছি।
রিট দায়ের করার কারণ প্রসঙ্গে ওই সময় আইনজীবী এম এ আজিজ খান বলেন, রাষ্ট্রপতি বাছাই প্রক্রিয়া সঠিকভাবে হয়নি। যাচাই-বাছাই সঠিকমতো হলে মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হতো না। কারণ মো. সাহাবুদ্দিন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার ছিলেন। দুদক আইন ২০০৪ এর ৯ ধারা অনুসারে দুদকের সাবেক কমিশনার লাভজনক কোনো পদে অধিষ্ঠিত হতে পারেন না। এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই করা হয়নি।
তিনি বলেন, এছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, মো. সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। এ বক্তব্য সঠিক নয়। এক্ষেত্রে নির্বাচন আর নিয়োগের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।
এ কারণে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ ও গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে রিট করেছি।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মো. সাহাবুদ্দিনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচন প্রক্রিয়া যথাযথ হয়নি দাবি করে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম এ আজিজ খান।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি অবসরপ্রাপ্ত বিচারক ও দুদকের সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিনকে দেশের ২২তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন, ১৯৯১-এর ৭ ধারা অনুসারে তাকে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
পরে মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করে ইসির গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আরেকটি রিট দায়ের করা হয়।
অ্যাডভোকেট আব্দুল মোমেন চৌধুরী এ রিট আবেদনটি দায়ের করেন।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রিট আবেদনটিও প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়ে দেন।
আরও পড়ুন: ডিবি প্রধান ও আরও ৯জনের বিরুদ্ধে বিএনপির অভিযোগ আদালতে খারিজ
উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত ২
কক্সবাজারের উখিয়ায় দুর্বত্তের গুলিতে দুই রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও একজন। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) দুপুর ১টায় ১৩ নম্বর উপজেলার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুই রোহিঙ্গার নামই হচ্ছে মো. রফিক। তারা ক্যাম্প-১৩, জি/৪ এর বাসিন্দা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী।
ওসি মোহাম্মদ আলী জানান, মঙ্গলবার দুপুরে বালুখালী ক্যাম্পে দুর্বত্তরা গুলি বর্ষণ করে। এঘটনায় তিনজন রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হয়। এসময় ঘটনাস্থলে একজনের মৃত্যু হয়। অপরজনকে হাসাপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুলিবিদ্ধ অপরজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওসি আরও বলেন, এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। ক্যাম্পের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে থানা পুলিশ ও এপিবিএন পুলিশ কাজ করছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাকে গুলি করে হত্যা
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বেচ্ছাসেবককে গুলি করে হত্যা
জামিন পেলেন মাহিয়া মাহির স্বামী রকিব
চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির পর এবার তার স্বামী রকিব সরকারকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও মারামারি মামলায় জামিন দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে রকিব সরকারের আইনজীবীরা গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নিয়াজ মাখদুম এর আদালতে তার জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন।
এর আগে হুইল চেয়ারে চড়ে স্বামী রকিব সরকারের সঙ্গে আদালত প্রাঙ্গনে আসেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি।
আরও পড়ুন: সৌদি আরব থেকে অবতরণের পর ঢাকা বিমানবন্দরে মাহিয়া মাহি গ্রেপ্তার
এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. আহসানুল হক বলেন, রকিব সরকারের আইনজীবীরা তার জামিনের আবেদন করলে দুই মামলায়ই তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত শনিবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশের করা মামলায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মাহিয়া মাহিকে গ্রেপ্তার করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। একই মামলার আসামি তার স্বামী রকিব সরকার সেদিন দেশে না এসে পরদিন রবিবার সকালে দেশে ফেরেন।
তবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এড়িয়ে তিনি সোমবার তার স্ত্রী মাহিয়া মাহিকে সঙ্গে নিয়ে আদালতে যান জামিন নিতে।
জামিন মঞ্জুর হওয়ার পর মাহি বলেন, আদালতে তিনি ন্যায়বিচার পেয়েছেন এবং ন্যায়বিচারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি অনন্য উদাহরণ বলে উল্লেখ করেন।
রকিব সরকারের আইনজীবী আনোয়ার সাদত সরকার বলেন, রকিব সরকারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশের করা মামলাসহ দুইটি মামলায় তাকে জামিন দিয়েছেন আদালত। পরবর্তী পুলিশ প্রতিবেদন আসার আগ পর্যন্ত এই জামিন বহাল থাকবে।
তিনি আরও জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার শুনানির তারিখ ধার্য হয়েছে আগামী ২৪ এপ্রিল। আর অপর মামলাটির দিন ধার্য হয়েছে ২৫ মে তারিখে।
পুলিশের দেয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় এবং ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেনের দায়ের করা মারধর, ভাঙচুর ও চাঁদাবাজির মামলায় নায়িকা মাহি ও তার স্বামী আসামি হয়েছেন।
মাহিয়া মাহি সৌদি আরবের মক্কা থেকে ফেসবুক লাইভে যুক্ত হয়ে পুলিশ কমিশনারের দেড়কোটি টাকা লেনদেনের কথা বলে পুলিশ বিভাগ, পুলিশ কমিশনার ও তার পারিবারিক ভাবমূর্তি ও মর্যাদা দারুন ভাবে ক্ষুন্ন করেছে বলে মনে করছেন জিএমপি কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জামিন পেলেন মাহিয়া মাহি
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা: অভিনেত্রী মাহিয়া মাহিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে
আরাভ খানের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করতে ইন্টারপোলে আবেদন করা হয়েছে: আইজিপি
পুলিশের আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, পুলিশ হত্যার আসামি ও কথিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী দুবাইয়ে অবস্থানরত আরাভ খানের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করতে ইন্টারপোলে আবেদন করা হয়েছে।
সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রামের এনায়েত বাজার পুলিশ ফাঁড়ি উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: যে কোনো মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে পুলিশ বদ্ধপরিকর: আইজিপি
পুলিশ প্রধান বলেন, ‘পুলিশ সদস্য হত্যা মামলার আসামি আরাভ খানের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করার জন্য ইন্টারপোলের কাছে পুলিশের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছিল। আমি কিছুক্ষণ আগে জানতে পেরেছি যে, তার যে নামে আমরা অভিযোগপত্র দিয়েছি, ওই নামে রেড নোটিশ জারির একটা বিষয় (আবেদন/অনুরোধ) দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘এটা ইন্টারপোল গ্রহণ করেছে। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি, কীভাবে কাজ করছি সেটা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাচ্ছিনা তদন্তের স্বার্থে।’
দুবাইয়ে এক ঝাঁক তারকা আরাভ খানের স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন যাওয়া প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, তারা বিজ্ঞাপনের জন্য বিভিন্ন জায়গায় যেতেই পারেন, এরপরও পুলিশ সার্বিক বিষয় খতিয়ে দেখছে।
নায়িকা মাহিয়া মাহির গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, তিনি ইতোমধ্যেই জামিন পেয়েছেন। তবে আমি নিশ্চিত করতে চাই কারও বিরুদ্ধে অন্যায় হবে না।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ সাহাসহ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আরাভ খানকে চেনেন না, দাবি সাবেক আইজিপি বেনজীরের
নির্বাচন কমিশনের দেয়া দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ পুলিশ: আইজিপি
হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ চার আসামির দুই বছর কারাদণ্ড
রাজধানীর পল্লবী থানায় দায়ের করা প্রতারণা মামলায় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া একই মামলায় অপর চার আসামির দুই বছর করে কারাদণ্ড হয়েছে।
কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেকের দুই হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও দুই মাসের কারাভোগ করতে হবে।
সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন এই রায় দেন।
আরও পড়ুন: জামিন পাননি হেলেনা জাহাঙ্গীর
মামলার অপর চার আসামি হলেন-জয়যাত্রা টিভির জেনারেল ম্যানেজার হাজেরা, প্রধান বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জামান আরিফ, কো-অর্ডিনেটর সানাউল্ল্যাহ নূরী ও স্টাফ রিপোর্টার মাহফুজ শাহরিয়ার।
সোমবার রায় ঘোষণার সময় হেলেনা জাহাঙ্গীর ও হাজেরা খাতুন আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
অন্য তিনজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন হেলেনা জাহাঙ্গীরের আইনজীবী আবদুর রব।
২০২১ সালের ২ আগস্ট রাতে পল্লবী থানায় সাংবাদিক আব্দুর রহমান তুহিন বাদী হয়ে একটি প্রতারণার মামলা করেন।
মামলায় জয়যাত্রা টিভির চেয়ারম্যান হেলেনা জাহাঙ্গীর, জেনারেল ম্যানেজার হাজেরা, প্রধান বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জামান আরিফ, কো-অর্ডিনেটর সানাউল্ল্যাহ নূরী, স্টাফ রিপোর্টার মাহফুজ শাহরিয়ারসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার বাদী তুহিন অভিযোগ করেন, জয়যাত্রা টিভির স্থানীয় সংবাদদাতা হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য ভোলা জেলার আবদুর রহমান তুহিনের কাছ থেকে ৫৪ হাজার টাকা নেন হেলেনা।
প্রতিবেদক হিসেবে রহমান কয়েক মাস কাজ করলেও কোনও বেতন পাননি। অন্যদিকে তার কাছ থেকে প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা নেয় টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ।
তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইড) পরিদর্শক শাহিনুর ইসলাম অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল আদালত দন্ডবিধি ৪২০/৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন।
মামলায় ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ১৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
আরও পড়ুন: হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ ৫ জনের মামলার রায় ২০ মার্চ
জামিন পেলেন হেলেনা জাহাঙ্গীর, মুক্তিতে ‘বাধা নেই’
চাঁপাইনবাবগঞ্জে আগ্নেয়াস্ত্র ও ১৩ কেজি গাঁজা জব্দ, গ্রেপ্তার ৩
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে দু’টি পিস্তল, সাত রাউন্ড গুলি, তিনটি ম্যাগাজিন ও ১৩ কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়েছে। এসময় তিনজনকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
রবিবার রাতে উপজেলার কানসাট গোপালনগর বাসস্ট্যান্ড এলাকা ও নাচোল উপজেলার চাঁনপাড়া এলাকায় এই পৃথক অভিযান দু’টি পরিচালানো করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- নীলফামারী জেলার রসুলপুর বিহারীপাড়া এলাকার মৃত সোলেমানের ছেলে আব্দুস সালাম(২৭) এবং জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার হাজারবিঘি এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে মর্তুজা আলম(৪৩) ও অপরজন নাচোল উপজেলার চাঁনপাড়া এলাকার তহুর আহমেদের ছেলে আহাদ বাবু(৩৩)।
আরও পড়ুন: রামগতিতে ৪ হাজার কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, আটক ৯
রবিবার রাতে র্যাব-৫ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
র্যাব জানায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ র্যাবের একটি দল রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট গোপালনগর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বন্ধ একটি আমের আড়তের সামনে অভিযান চালিয়ে অবৈধ অস্ত্রসহ সালামকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এছাড়া রবিবার রাত ১১টার দিকে নাচোল উপজেলার চাঁনপাড়া এলাকা থেকে ১৩ কেজি গাঁজাসহ মর্তুজা আলম ও আহাদ বাবুকে গ্রেপ্তার করে।
কোম্পানি অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কমান্ডার রুহ-ফি-তাহমিন তৌকিরের নেতৃত্বে এ অভিযান দু’টি চালানো হয়।
এসময় কোম্পানি উপ অধিনায়ক সহকারী পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম তার সঙ্গে ছিলেন। এ দু’টি ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় পৃথক দু’টি মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ১৪৮ মণ সরকারি চাল জব্দ, আটক ১
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন: ঘটনা তদন্তে বিএনপি সমর্থিত ১৪ প্রার্থীর রিট
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনা তদন্তের জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
তদন্তের জন্য কমিটি করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের প্রতি এ নির্দেশনা দেয়ার আর্জি জানিয়ে রবিবার রিটটি করেছেন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত ১৪ প্রার্থী।
সোমবার (১৯ মার্চ) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের বেঞ্চে আবেদনটি কার্যতালিকাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারীদের একজন এবং বিএনপি সমর্থক প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী মাহবুব উদ্দিন খোকন।
রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, আইন সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ডিবির উপ-কমিশনার ও শাহবাগ থানার ওসিকে বিবাদী করা হয়েছে।
আবেদনে ১৫ মার্চ আবেদনকারীদের, আইনজীবী ও সাংবাদিকদদের পেটানোর ঘটনা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বর্হিভূত হবে না সেই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
একই সঙ্গে ভবিষ্যতে যেন এভাবে পুলিশি তাণ্ডব আর না চালানো হয় সে ব্যাপারে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে এই রিটে।
গত ১৫ ও ১৬ মার্চ সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোটের নির্ধারিত দিন ছিল। সমিতির এই নির্বাচন পরিচালনা সাব-কমিটি গঠন নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে সমিতির আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক এবং সমমনা আইনজীবীরা।
আরও পড়ুন: সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোটগ্রহণ শেষ
শুরুতেই এই সাব-কমিটি গঠন নিয়ে মতৈক্য থাকলেও পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতা ও সাবেক বিচারপতি মনসুরুল হক চৌধুরীকে প্রধান করে সাত সদস্যের সাব-কমিটি ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে গঠন করা হয়।
কিন্তু সাব-কমিটি নির্বাচনে ভোট মেশিনে গণনা করতে চাইলে সমিতির বর্তমান সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ সমর্থক প্যানেলের প্রার্থী আব্দুন নূর দুলাল তাতে রাজি না হওয়ায় অ্যাডভোকেট মনসুরুল হক চৌধুরী ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় পদত্যাগ করেন। এ অবস্থায় ১৪ মার্চ বিএনপি ও আওয়ামী সমর্থক আইনজীবীরা ফের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েন।
সমিতির আওয়ামী ফোরামের নেতারা মুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুজ্জামানকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান করে নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে, বিএনপি সমর্থকরা সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি এ এস এম মোক্তার কবিরকে প্রধান করে একটি নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠন করেন। বিষয়টি নিয়ে দুপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়।
উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে ১৫ মার্চ সকালে ভোট গ্রহণ শুরুর উদ্যোগ নিলে বিএনপি-সমর্থিত প্যানেল থেকে মনোনীত প্রার্থীরা নির্বাচন পরিচালনা-সংক্রান্ত উপকমিটির সঙ্গে বিবাদে জড়ান।
এক পর্যায়ে সমিতির মিলনায়তনে কয়েকশ পুলিশ প্রবেশ করে। তারা বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করতে লাঠিচার্জ শুরু করলে প্রায় ১৫ জন আইনজীবী আহত হন। এসময় পুলিশের সঙ্গে ঢোকা সাংবাদিকরা ঘটনার ছবি, ভিডিও নিতে থাকেন। ফলে পুলিশ সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়। সাংবাদিকদেরকেও বেধড়ক লাঠিপেটা করতে থাকলে এনটিএন নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাভেদ আক্তারসহ ১০-১২জন গণমাধ্যম কর্মী আহত হন। পরে একতরফা ভোটে আওয়ামী লীগ সমর্থক ১৪ প্রার্থীই বিজয়ী হন।
এ নিয়ে গতকাল পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থকরা।
আরও পড়ুন: সমিতির নির্বাচন বিষয়ে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল
সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী (বার) সমিতির নির্বাচনে আইনজীবী এবং সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনার জন্য আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশদাতা উল্লেখ করে তাদের পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল।
একইসঙ্গে নির্বাচন পরিচালনায় নতুন একটি সাব-কমিটি গঠন করে পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
অন্যদিকে, সমিতির দুই দিনব্যাপী নির্বাচন ‘একতরফা হয়নি’- বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থক প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নির্বাচনে আইনজীবীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন। আর বিএনপি সমর্থিতরা ভোট বর্জনের ঘোষণাও দেননি।
এর আগে দুই দিনব্যাপী নির্বাচনের শেষ দিন বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে ১৪টি পদের সব কটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল জয়ী হয়েছে। যদিও নির্বাচনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল বিএনপি সমর্থকরা।
নির্বাচিত হলেন যারা- আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের প্রার্থী মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির তিন হাজার ৭২৫ ভোট পেয়ে সভাপতি ও মো. আবদুন নূর দুলাল তিন হাজার ৭৪১ ভোট পেয়ে সম্পাদক পদে পুর্ননির্বাচিত হয়েছেন। সহ-সভাপতির দুটি পদে মো. আলী আজম ও জেসমিন সুলতানা, কোষাধ্যক্ষ পদে এম মাসুদ আলম চৌধুরী, দুটি সহ-সম্পাদক পদে এ বি এম নূর-এ-আলম উজ্জ্বল ও মোহাম্মদ হারুন-উর রশিদ জয়ী হয়েছেন।
সাতটি সদস্য পদে জয়ীরা হচ্ছেন- মহিউদ্দিন আহমেদ (রুদ্র), মনিরুজ্জামান রানা, শফিক রায়হান শাওন, মো. সাফায়েত হোসেন (সজীব), মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. নাজমুল হুদা ও সুভাষ চন্দ্র দাস।
সমিতির দক্ষিণ হলে নির্বাচন পরিচালনায় আওয়ামী সমর্থকদের গঠিত সাব-কমিটির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান এই ফলাফল ঘোষণা করেন।
তিনি দাবি করেন, দুই দিনব্যাপী নির্বাচনে আট হাজার ৬০২ জন ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে চার হাজার ১৩৭টি।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ উপস্থাপন করলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা
নাইকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের ফলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা আরও একটি মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
রবিবার কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৩ মে দিন ধার্য করেন আদালত।
এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার হাজিরা দেন।
মামলার আসামি খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সি এম ইউছুফ হোসাইন ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ছে: আইনমন্ত্রী
এছাড়া অপর আসামি সেলিম ভূঁইয়ার আইনজীবী মো. জাকারিয়া হায়দার আদালতে সময়ের আবেদন করলে আদালত সময়ের আবেদন না-মঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করা হয়।
২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনে দুদক।
মামলার অন্য সাত আসামি হলেন- তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
অপরদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন এসেছে
আবেদন পেলে খালেদার মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত: আইনমন্ত্রী