আইনশৃঙ্খলা
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের ধারা জামিন অযোগ্য করার সুপারিশ হাইকোর্টের
মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন শরিফ, নবী রাসূলসহ সকল ধর্মগ্রন্থ ও ধর্মীয় অবতারদের বিষয়ে কটূক্তি ও অবমাননায় সর্বোচ্চ শাস্তি এবং জামিন অযোগ্য অপরাধ হিসেবে অভিহিত করে আইন প্রণয়নে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) মহানবীকে (সা.) নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য নিয়ে কুষ্টিয়ার একজনের জামিন আবেদনের বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মতামত দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
তিনি বলেন, ধর্মীয় অবমাননার বিষয়ে আদেশটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু এ বিষয়ে দণ্ডের কোনো বিধান নেই, তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবনসহ অজামিনযোগ্য আইন প্রণয়নের জন্য মতামত দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালত পর্যবেক্ষণে ২০২৩ সালের সাইবার নিরাপত্তা আইনে কুরআন শরিফ, নবী রাসূলসহ সব ধর্মগ্রন্থের বিষয়ে কটূক্তি করলে এই আইনের ধারায় জামিন অযোগ্যসহ সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান করতে মত দিয়েছেন আদালত।
আদালত বলেছেন, পূর্ববর্তী আইনে জামিন অযোগ্য ধারা ছিল। বর্তমান আইনে ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়ে কটূক্তি করলে জামিনযোগ্য ধারা হওয়ায় অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে।
আরও পড়ুন: বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে হতাহতদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ কেন নয়: হাইকোর্ট
আমিন উদ্দিন মানিক জানান, কুষ্টিয়া ভেড়ামারা উপজেলার সেলিম খান ‘হযরত মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে ফেসবুক লিঙ্কে কুরুচিপূর্ণ কমেন্ট করেন। এ মামলায় তার জামিন প্রশ্নে রুল শুনানিতে ২৫ লাখ টাকা ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে ও ফেসবুকে ‘লু*ই*চ্ছা’ পোস্টকারী নাফিসা চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণে পর্যাপ্ত প্রমাণ থাকায় সম্পূরক চার্জশিটের মাধ্যমে অভিযুক্ত করার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে ধারা জামিনযোগ্য হওয়ায় রুল নিষ্পত্তি করেন হাইকোর্ট। পর্যবেক্ষণে সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ এ কুরআন শরীফ, নবী রাসূলসহ সকল ধর্মগ্রন্থের বিষয়ে কটূক্তি করলে এই আইনের এই ধারায় জামিন অযোগ্যসহ সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান করার জন্য মতামত দিয়েছেন। হাইকোর্ট অপরাধটির বিষয়ে বলেছেন, এটি একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ ছিল এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত অপরাধ ছিল। কোরআন শরীফ ও হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে বিজ্ঞানী নিউটন, আইনস্টাইনসহ কেউই কখনও প্রশ্ন তোলেননি। এ সময় বিচারক পবিত্র কোরআন শরিফের ৪২ নম্বর সূরা আশশুরার কয়েকটি আয়াতের বিষয়ে অবতারণা করেন। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাহাব উদ্দিন আহমেদ টিপু ও মো. মজিবুর রহমান মুজিব। আসামি পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন।
মামলার এজাহারের তথ্য মতে, গত বছরের ২ নভেম্বর রিলেশনশিপ একটি ফেসবুকে লিঙ্কে নাফিসা চৌধুরী লিখেন ‘লু*ই*চ্ছা’ সর্বপ্রথম কার কার নাম মনে পরে। অতপর এজাহার নামীয় আসামি মো. সেলিম খান ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অনূভুতিতে আঘাত করে পোস্ট করেন।
এই বিষয়ে কুষ্টিয়ার হানিফ শাহ বাদী হয়ে গত ৪ নভেম্বর বাদী হয়ে ভেড়ামারা থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক শেখ লুৎফর রহমান গত ৩১ ডিসেম্বর অভিযোগ পত্র প্রদান করেন। গত ১৩ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া অবকাশকালীন দায়রা জজ রুহুল আমীন আসামির জামিন আবেদন না মঞ্জুর করলে আসামি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। হাইকোর্ট গত ৮ জানুয়ারি আসামির জামিন কেন প্রদান করা হবে না সেই মর্মে রুল দিয়েছিলেন। গতকাল সেই রুল চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করায় রোজায় খোলা থাকবে স্কুল
ঋণ জালিয়াতি: তানভীর মাহমুদসহ ১৮ জনের রায় ১৯ মার্চ
সোনালী ব্যাংকের প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার জন্য আগামী ১৯ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. আবুল কাশেমের আদালত দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের এ তারিখ ঠিক করেন।
আরও পড়ুন: কোন কোন আদালতে লোহার খাঁচা রয়েছে জানতে চান হাইকোর্ট
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, তানভীরের স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, জেনারেল ম্যানেজার তুষার আহমেদ, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সাবেক জিএম মীর মহিদুর রহমান, উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. সফিজউদ্দিন আহমেদ, ডিএমডি মাইনুল হক, এজিএম মো. কামরুল হোসেন খান ও নকশী নিটের এমডি মো. আবদুল মালেক কারাগারে রয়েছেন।
এছাড়া জামিনে রয়েছেন, উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শেখ আলতাফ হোসেন (সাময়িক বরখাস্ত) ও সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন সরকার।
পলাতক আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, প্যারাগন গ্রুপের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জিএম ননী গোপাল নাথ, প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির, সহকারী উপমহাব্যবস্থাপক মো. সাইফুল হাসান, নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মতিন, ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক মীর জাকারিয়া, টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তসলিম হাসান, ডিএমডি মো. আতিকুর রহমান ও সোনালী ব্যাংক ধানমন্ডি শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুন্নেসা মেরি।
দুদক প্রসিকিউটর মীর আহাম্মদ আলী সালাম জানান, তানভীরসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে করা একটি মামলায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে সেদিন দুদকের পক্ষ থেকে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে থেকে নিয়ে আরও দুইজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত দুদকের আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর ওই দুইজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত। সাক্ষ্য গ্রহণ, আত্মপক্ষ সমর্থন ও যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালত রায় প্রচারের জন্য ১৯ মার্চ দিন ধার্য করেছেন।
গত ২৮ জানুয়ারি মামলার যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে আদালত রায়ের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ঠিক করেন। তবে ওই দিন আরও দুইজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দুদকের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
মামলায় অস্তিত্বহীন ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের নামে প্রায় ৫২৬ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে আসামিরা। মামলায় আদালত অভিযোগপত্রের মোট ৮১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
আরও পড়ুন: আদালতের হাজতখানায় কেক কেটে ছাত্রদল নেতার জন্মদিন পালন, ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
গ্রাম আদালতকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার ক্ষমতা দিয়ে বিল উত্থাপন
আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনায় ৫ আইনজীবী কারাগারে
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনায় শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় রিমান্ড শেষে পাঁচ আইনজীবীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া আইনজীবীরা হলেন- মোহাম্মাদ ওসমান চৌধুরী, কাজী বশির আহাম্মেদ, মো. এনামুল হোসেন সুমন, মো. হাসানুজ্জামান তুষার ও মো. তরিকুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা হাফিজকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
তিন দিনের রিমান্ড শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আবুল কালাম আযাদ পাঁচ আইনজীবীকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন চেয়ে শুনানি করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের জামিনের বিরোধিতা করে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
শাহবাগ থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপপরিদর্শক (এসআই) নিজাম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে মারধর, ভাঙচুরের ঘটনায় স্বতন্ত্র সম্পাদক প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথী ও বিএনপি সমর্থিত সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২০ জন আইনজীবীকে আসামি করে শাহবাগ থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ৮ মার্চ মামলা করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী (সাইফ)। মামলায় আরও ৩০-৪০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় যুবক কারাগারে
আত্মসমর্পণ করে কারাগারে বিএনপির ৭ নেতা-কর্মী
আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করায় রোজায় খোলা থাকবে স্কুল
রমজান মাসে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: রোজায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ থাকবে: হাইকোর্ট
এ আদেশের ফলে রমজানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল খোলা রাখতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ।
পরে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। ফলে রমজানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে।
এর আগে রবিবার রমজানের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা স্থগিত করেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: রমজানে স্কুল বন্ধ: মঙ্গলবার আপিল বিভাগে শুনানি
ঢাকায় শুরু হয়েছে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের ডিগ্রিতে ইউসিবি’র আর্লি এনরোলমেন্ট গ্র্যান্ট
জয়পুরহাটে স্বামীকে হত্যা: স্ত্রীসহ ২ জনের মৃত্যুদণ্ড
জয়পুরহাটে বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রীসহ দুইজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় যুবলীগ নেতা হত্যায় ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৮ জনের যাবজ্জীবন
সোমবার (১১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় অতিরিক্ত দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক নুরুল ইসলাম এ রায় দেন।
আসামিরা হলেন- জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার মহব্বতপুর-দূর্গাপুর গ্রামের মোখলেছার রহমানের মেয়ে জোৎস্না বেগম ও দাশরা খানপাড়ার বুলু মিয়ার ছেলে শাহিন মিয়া বাবু।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, জোৎস্না বেগম বিয়ের পর ক্ষেতলাল উপজেলার মহব্বতপুর-দূর্গাপুর গ্রামে ঘর জামাই থাকতেন। তার স্ত্রী পার্শ্ববর্তী গ্রামের শাহিন মিয়া বাবুর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তার জেরে ২০১৫ সালের ৯ নভেম্বর বিকালে আসামিরা তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে।
এ ঘটনায় নিহতের চাচা ছানাউল ইসলাম বাদী হয়ে ক্ষেতলাল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত সোমবার এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে নারী হত্যা মামলায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড
সিরাজগঞ্জে মাকে গলা কেটে হত্যার দায়ে ছেলের মৃত্যুদণ্ড
৩ সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের নিয়োগ বাতিল
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গণনা নিয়ে হামলা-মামলার প্রেক্ষাপটে তিনজন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের নিয়োগ বাতিল করে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এই তিন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হলেন মো. জাকির হোসেন, কাজী বশির আহমেদ ও শ্যামা আক্তার।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সলিসিটর রুনা নাহিদ আকতারের সই করা এক বিজ্ঞপ্তি সূত্রে তাদের নিয়োগ আদেশ বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে তিন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের মধ্যে মো. জাকির হোসেন ও কাজী বশির আহমেদ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গণনা নিয়ে হামলার ঘটনায় আহত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান চৌধুরী সাইফের করা মামলার আসামি।
আরও পড়ুন: কে কী বলল তা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ নেই: জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ইইউর বিবৃতি প্রত্যাখ্যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
গত ৬ ও ৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুই দিনব্যাপী নির্বাচনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের পর ফলাফল ঘোষণা নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির তৈরি হয়। বৃহস্পতিবার রাতেই ভোট গণনার পক্ষে সোচ্চার হন সম্পাদক প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথী। তবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্পাদক প্রার্থী শাহ মনজুরুল হক শুক্রবার বেলা ৩ টায় ‘দিনের আলোতে’ ভোট গণনা চাচ্ছিলেন। এ বিষয় নিয়েই একপর্যায়ে দুপক্ষের সমর্থকদের মাঝে হট্টগোল শুরু হয়। শুক্রবার ভোরে মারামারির ঘটনাও ঘটে। যেখানে একজন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলকে আক্রমণ করার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। যেটি ‘বহিরাগতের হামলা’ হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
পরে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান চৌধুরী সাইফ তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে শুক্রবার রাতে মামলা করেন। যেখানে এই নির্বাচনের স্বতন্ত্র সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি ও বিএনপির প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়। শুক্রবার রাতেই এই মামলার আসামি বিএনপি সমর্থিত ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আর নাহিদ সুলতানা যুথীর বাসায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অভিযান চালিয়ে কয়েজনকে আটক করে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে মাকে গলা কেটে হত্যার দায়ে ছেলের মৃত্যুদণ্ড
এরপর শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপি সমর্থিত সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে কাজলকে ৪ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন ঢাকার আদালত।
অন্যদিকে, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ঘটনাবহুল নির্বাচনে কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪ টি পদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ (সাদা প্যানেল) থেকে ১০ জন নির্বাচিত হন। সম্পাদক পদ সহ এই প্যানেলের নির্বাচিতরা হলেন- সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক, সহ-সভাপতি রমজান আলী শিকদার ও দেওয়ান মো. আবু ওবাঈদ হোসেন সেতু, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনসারী, সহ-সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির ও মোহাম্মদ হুমায়ন কবির এবং সদস্য পদে মো. বেলাল হোসেন, মো. রায়হান রনি, রাশেদুল হক খোকন ও খালেদ মোশাররফ।
অন্যদিকে, বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল (নীল প্যানেল) থেকে সভাপতি সহ ৪ টি পদে নির্বাচিত হন। নির্বাচিতরা হলেন- সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও সদস্য পদে সৈয়দ ফজলে এলাহী অভি, শফিকুল ইসলাম এবং ফাতিমা আক্তার।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে সহিংসতা: ৪ দিনের রিমান্ডে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল
সুপ্রিম কোর্টে সহিংসতা: ৪ দিনের রিমান্ডে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় গ্রেপ্তার বিএনপি-জামায়াতপন্থী নীল প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রবিবার (১০ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালত শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলার শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এর আগে, তাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ।
আর রুহুল কুদ্দুস কাজলের রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার, মহসিন মিয়া, মোসলেহ উদ্দিন জসিম ও ওমর ফারুক ফারুকী।
মামলার শুনানির সময় আদালতে শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত কাজলের চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ড আবেদন শুনানির জন্য এজলাসে তোলার সময় কাজল বলেন, আমি আইনজীবীদের জনপ্রিয় নেতা। নির্বাচন থেকে সরিয়ে ফলাফল ছিনিয়ে নিতে আমাকে আটক করে তথাকথিত ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি আদালতে বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করা হয়েছে। আমি তিনবারের সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সম্পাদক। বারের সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ আইনজীবী গ্রেপ্তার: ডিবি
রুহুল কুদ্দুস বলেন, সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে গত দুই বছর ধরে যে কলঙ্কজনক অধ্যায় চলে আসছিল। আজকে তৃতীয় বছরের মতো ২০২৪ সালেও সেই কলঙ্ক থেকে মুক্ত হতে পারল না। আমি আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে তাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার এবং পেশার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে কাজ করে যাব।
এর আগে, শনিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টনের তোপখানা রোডে নিজ চেম্বার থেকে তাকে আটক করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে মারধর, ভাঙচুরের ঘটনায় স্বতন্ত্র সম্পাদক প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথী ও বিএনপি সমর্থিত সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২০ জন আইনজীবীকে আসামি করে শাহবাগ থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ৮ মার্চ মামলা করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী (সাইফ)। মামলায় আরও ৩০-৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
শনিবার এ মামলায় আইনজীবী কাজী বশির আহমেদ, তুষার, তরিকুল, এনামুল হক সুমন ও ব্যারিস্টার ওসমানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আরও পড়ুন: এসসিবিএ নির্বাচন: সভাপতি খোকন, সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল হক
সিরাজগঞ্জে মাকে গলা কেটে হত্যার দায়ে ছেলের মৃত্যুদণ্ড
সিরাজগঞ্জে মা রশিদা খানমকে গলাকেটে হত্যার দায়ে ছেলে নাহিদ ইমরান নিয়নকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (১০ মার্চ) সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. আবুল বাশার মিঞা এ রায় দেন।
আসামি নাহিদ ইমরান সিরাজগঞ্জ জেলা সদরের খোর্দ্দ শিয়ালকোল গ্রামের তোজাম্মেল হকের ছেলে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় স্ত্রীসহ ৩ জনকে হত্যা: সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড
ওই আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) আইনজীবী জেবুন্নেসা জেবা রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনায় নিহতের ছোট ছেলে নাছিম ইমরান নিশাত বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, নিয়ন ক্রিকেট জুয়ায় আসক্ত হয়ে অনেক টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ঋণ হওয়ায় তিনি হতাশাগ্রস্ত হয়ে বিভিন্ন সময় মায়ের কাছে টাকা দাবি করতেন।
কিন্তু মা টাকা দিতে অস্বীকার করায় এ নিয়ে মায়ের সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে নিয়ন মাকে হত্যা করেন।
ঘটনার পর থেকে দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকার পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর নিয়ন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রবিবার দুপুর ১২টার দিকে আসামির উপস্থিতিতে বিজ্ঞ আদালত উল্লেখিত রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় যুবলীগ নেতা হত্যায় ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৮ জনের যাবজ্জীবন
সিরাজগঞ্জে মা ও ২ ছেলেকে হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড
দেবহাটায় মাদরাসা ছাত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে স্বামী গ্রেপ্তার
সাতক্ষীরার দেবহাটার পারুলিয়ায় হাফেজা সাইমা খাতুন নামের এক মাদরাসা ছাত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্বামী তানজিম আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহত হাফেজা সাইমা খাতুন (১৮) সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মৌখালী গ্রামের হারুন অর রশিদের মেয়ে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে কিশোর গ্যাংয়ের ৩৭ সদস্য গ্রেপ্তার
নিহতের মা রাবেয়া খাতুন জানান, গত ৫ মাস আগে তার মেয়েকে ওই মাদরাসার পরিচালক মুফতি আব্দুস সবুর তার ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে সম্পন্ন হয় তাদের। শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পরে ছেলের বাবা ফোন করে তাদের মেয়ের মৃত্যুর বিষয়টি জানান।
মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে ডায়রিয়া রোগে মারা গেছে বলে তারা জানায়। তখন তারা রাতেই ছেলের বাড়িতে চলে আসে এবং মৃত্যুর কারণ নিয়ে তাদের সন্দেহ হয়।
তার আগে স্থানীয় একজন জাতীয় সেবা ৯৯৯- এ কল দেওয়ায় দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ও ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে এবং তার স্বামী তানজিমকে গ্রেপ্তার করে।
দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ মাহমুদ হোসেন জানান, স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে বলে তিনি জানান।
ওসি আরও জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের মা রাবেয়া খাতুন বাদী হয়ে দেবহাটা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ আইনজীবী গ্রেপ্তার: ডিবি
সিলেটে ২০২ বস্তা ভারতীয় পেঁয়াজ জব্দ, গ্রেপ্তার ৩
কে কী বলল তা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ নেই: জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ইইউর বিবৃতি প্রত্যাখ্যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ইইউ'র বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, নির্বাচনি প্রচার সুষ্ঠু হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে বিদেশিদের বিভ্রান্ত করছে। অন্যায়ভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। 'কে কী বললেন সেটা আমাদের বিষয় নয়।’
শনিবার(৯ মার্চ) রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজ কনভেনশন হলে পুলিশ মেমোরিয়াল ডে ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইলেকশন এক্সপার্ট মিশন এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে এবং ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন নিয়ে মিশনের ফলাফল উপস্থাপন করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশের ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামগ্রিকভাবে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য কিছু মৌলিক আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করেনি। অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য সমাবেশ, সংগঠন, আন্দোলন এবং বক্তব্যের স্বাধীনতাসহ নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারগুলো সীমাবদ্ধ ছিল। বিচারিক কার্যক্রম ও গণগ্রেপ্তারের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা মারাত্মকভাবে সীমিত ছিল।’
এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'পুলিশ বাহিনী ও আমাদের রাজনৈতিক দল(আওয়ামী লীগ) কোনো হামলা বা মামলা করেনি। তারা (বিএনপি) এটা করেছে। তারা যদি আমাদের অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করে থাকে, আমরা এ ধরনের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা মনে করি, তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আরেকটি ষড়যন্ত্র করতে চাইছে।’
আরও পড়ুন: আত্মসমর্পণ করে কারাগারে বিএনপির ৭ নেতা-কর্মী
অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপি প্রতিনিয়ত মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে।
তিনি বলেন, 'তারা (আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো) কীভাবে বিভ্রান্ত হচ্ছে, সেটা আমাদের বিষয় নয়। আমরা স্পষ্ট করে বলতে পারি, তারা যা বলেছে দেশে তা ঘটেনি।’
তিনি বলেন, ‘দু-একটি বাদে সব দেশই আমাদের প্রশংসা করেছে। তারা মনে করেন, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বলছে, দেশে হাজার হাজার বন্দি আছে। আমাদের এখানে কোনো 'রাজবন্দি' নেই। আমরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের বন্দি করে রেখেছি- যারা প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুর করেছে, পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, আনসার সদস্যদের পিটিয়ে হত্যা করেছে এবং নারীদের নির্যাতন করেছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বরাত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, তারেক রহমান রাজনীতি থেকে দূরে থাকবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েই যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'ইংল্যান্ডে বসে থেকে তিনি এদেশে তার দলের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন। তিনি দেশের মানুষ ও তার দলের নেতা-কর্মীদের মঙ্গল চান না।’
আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন, অতিরিক্ত আইজিপি, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধান, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা এবং নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীর ৫৫ রেস্তোরাঁ থেকে ১২টি ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার উদ্ধার, আটক ৫৭
অনুষ্ঠানে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত সাত পুলিশ সদস্যের পরিবারকে স্মারক ও উপহার সামগ্রী দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও আইজিপি। ব্যক্তিগতভাবে পুলিশ সদস্যদের পরিবারের খোঁজখবর নেন আইজিপি।
২০২৩ সালে কর্তব্যরত অবস্থায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৩৪ জন পুলিশ সদস্য। এদের মধ্যে তিনজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, একজন সহকারী পুলিশ সুপার, আটজন নিরস্ত্র বা নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক, ১২ জন উপপরিদর্শক (নিরস্ত্র), দুজন সাব-ইন্সপেক্টর (সশস্ত্র), একজন সার্জেন্ট, একজন টিএসআই, ১৬ জন এএসআই (নিরস্ত্র), তিনজন নায়েক এবং ৮৭ জন কনস্টেবল রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের স্মরণে প্রতি বছর ১ মার্চ পুলিশ মেমোরিয়াল ডে পালন করা হয়। অনিবার্য কারণবশত এ বছর পুলিশ মেমোরিয়াল ডে ১ মার্চের পরিবর্তে ৯ মার্চ পালিত হলো।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ আইনজীবী গ্রেপ্তার: ডিবি