কৃষি
দেশকে বিপজ্জনক জৈব রাসায়নিক কীটনাশক ডিডিটি মুক্ত ঘোষণা পরিবেশমন্ত্রীর
সরকারিভাবে বাংলাদেশকে বিপজ্জনক জৈব রাসায়নিক কীটনাশক ডিডিটি মুক্ত ঘোষণা করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
রবিবার (৮ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে চট্টগ্রামের মেডিকেল সাব-ডিপো থেকে সাফল্যজনকভাবে ৫০০ টন ডিডিটি অপসারণ এবং বিশ্ব জীববৈচিত্র সম্মেলনে অর্জন উপলক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
মন্ত্রী জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১৯৮৫ সালে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ৫০০ টন ডিডিটি পেস্টিসাইড আমদানি করেছিল। নিম্নমান বিবেচনায় আমদানি করা অব্যবহৃত বিপজ্জনক জৈব রাসায়নিক পেস্টিসাইড ডিডিটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের মেডিকেল সাব-ডিপোতে মজুত রাখা হয়।
উল্লিখিত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় গ্লোবাল এনভাইরনমেন্ট ফেসিলিটির অর্থায়ন এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার কারিগরি সহায়তায় পেস্টিসাইড রিস্ক ‘রিডাকশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করে।
প্রকল্পটির মাধ্যমে কর্মকর্তাদের নিরলস পরিশ্রমের ফলে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ১০ ডিসেম্বর এ বিষাক্ত পদার্থ সম্পূর্ণভাবে ফ্রান্সে রপ্তানি করা সম্ভব হয়।
আরও পড়ুন: সরিষা চাষে বিপ্লব ঘটছে, বছরে সাশ্রয় হবে ১০ হাজার কোটি টাকা: কৃষিমন্ত্রী
মন্ত্রী এ সময় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই রপ্তানির ফলে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষা সম্ভব হয়েছে। স্টকহোম কনভেনশন কর্তৃক নিষিদ্ধ পণ্য ডিডিটি রপ্তানির সঙ্গে বাংলাদেশের একটি আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার পূর্ণ হলো।
সংবাদ সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে ৭-১৯ ডিসেম্বর কানাডার মন্ট্রিলে অনুষ্ঠিত বিশ্ব জীববৈচিত্র্য সম্মেলনের অর্জন বিষয়ে আলোকপাত করে মন্ত্রী বলেন, এ সম্মেলনের মধ্যে হাই-লেভেল সেগমেন্টে বাংলাদেশের পক্ষে প্রদত্ত বক্তব্যে ২০২০ পরবর্তী গ্লোবাল বায়োডাইভারসিটি ফ্রেমওয়ার্ক বাস্তবায়নে উন্নত বিশ্বকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সহায়তা বাড়ানো এবং বিশ্বের মোট জিডিপির অন্তত এক ভাগ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ব্যয় করতে আহ্বান জানানো হয়।
তিনি জানান, এবারের সম্মেলনে ২০৫০ সালের মধ্যে ‘লিভিং হারমোনি উইথ নেচার’ রূপকল্প এবং ২০৩০ সালের মধ্যে জীববৈচিত্র্য এবং ইকোসিস্টেমের ক্ষতিসাধন রোধ ও রক্ষার অভিলক্ষ্য নিয়ে ‘কুনমিং-মনট্রিল গ্লোবাল বায়োডাইভার্সিটি ফ্রেমওয়ার্ক’ গৃহীত হয়। ওই ফ্রেমওয়ার্কে চারটি অভীষ্টের আওতায় ২৩টি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর মধ্যে অন্যতম লক্ষ্য হলো–পৃথিবীব্যাপী ৩০ ভাগ স্থল এবং জলজ পরিবেশকে সংরক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সব উৎস থেকে প্রতি বছর কমপক্ষে ২০০ বিলিয়ন ইউএস ডলার অর্থায়ন নিশ্চিত করা; উন্নত বিশ্ব থেকে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত বিশ্বে ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর কমপক্ষে ২০ বিলিয়ন ডলার এবং ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর কমপক্ষে ৩০ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন নিশ্চিত করা।
ওই ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় দেশের ‘ন্যাশনাল বায়োডাইভার্সিটি স্ট্রাটেজি অ্যান্ড একশন প্ল্যান’ আপডেট করা হবে।
আরও পড়ুন: সরিষা ফুলের হলুদ হাসিতে রঙিন যশোরে দিগন্তজোড়া মাঠ
মন্ত্রী জানান, সম্মেলনে সাসটেইনেবল ওয়াইল্ডলাইফ ম্যানেজমেট, নেচার অ্যান্ড কালচার, কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন বায়োডার্ভিসিটি, বায়োডার্ভিসিটি অ্যান্ড এগ্রিকালচার, বায়োডাইভার্সিটি অ্যান্ড ক্লাইমেট চেইঞ্জ, ইনভেসিভ এলিয়েন স্পেসিজ, সিন্থেটিক বায়োলজি ইত্যাদি শিরোনামে আরও কয়েকটি ডকুমেন্টস গৃহীত হয়।
ওই ডকুমেন্টস নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের সঙ্গে সভা করে পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে।
এছাড়া উন্নত বিশ্ব যাতে পর্যাপ্ত আর্থিক, কারিগরি এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা পেতে পারে, সে লক্ষ্যে এগিয়ে আসে সেজন্য বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের সঙ্গে একাত্ম হয়ে সম্মেলনে আহ্বান করেছে।
সে প্রেক্ষাপটে বিশ্ব জীববৈচিত্র্য সম্মেলনে এ মর্মে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি কর্তৃক ২০২৩ সালের মধ্যে গ্লোবাল বায়োডাইভারসিটি ফ্রেমওয়ার্ক তহবিল (জিবিএফ ফান্ড) প্রতিষ্ঠা করা হবে।
মন্ত্রী জানান, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ইতোমধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে জিবিএফ বাস্তবায়নে তথা জীববৈচিত্র্য এবং প্রতিবেশ সংরক্ষণের জন্য ৩৫০ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা প্রদান করবেন মর্মে অঙ্গীকার করেছেন।
মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সচিব ডক্টর ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব মিজানুল হক চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডক্টর আব্দুল হামিদ ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিনিধি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বোরোর উৎপাদন বাড়াতে ১৭০ কোটি টাকার প্রণোদনা
সরিষা চাষে বিপ্লব ঘটছে, বছরে সাশ্রয় হবে ১০ হাজার কোটি টাকা: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ভোজ্যতেলের চাহিদার শতকরা ৯০ ভাগ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এতে বছরে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। দেশে ৫০ ভাগ তেল উৎপাদনের মাধ্যমে আমদানি নির্ভরতা কমাতে তিন বছর মেয়াদি রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রথম বছরেই এবার সারা দেশে দ্বিগুণ পরিমাণ সরিষা চাষ হয়েছে। সরিষা চাষে বিপ্লব ঘটতে যাচ্ছে এবং আগামী তিন বছরের মধ্যেই আমরা বছরে ভোজ্যতেল আমদানিতে কমপক্ষে ১০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারব।
রবিবার সকালে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার তুলসীডাঙ্গায় সরিষার মাঠ পরিদর্শন ও সরিষা চাষীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: চালের উৎপাদন বাড়াতে গবেষণায় আরও জোর দিতে হবে: কৃষিমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, শুধু সরিষার আবাদ বৃদ্ধিই নয়, এর সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে মৌচাষ ও মধুর উৎপাদন।
তিনি বলেন, অন্যদিকে আমন ও বোরোর মধ্যবর্তী সময়ে পতিত জমিতে সরিষার আবাদ হওয়ায় ধানের উৎপাদন কমছে না, একইসঙ্গে কৃষকেরা অতিরিক্ত ফসল হিসেবে এই সরিষা পেয়ে লাভবান হচ্ছেন।
সরিষা চাষীরা যাতে সরিষার ভালো দাম পান, এ বিষয়ে সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
এসময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পতিত জমি চাষের জন্য ব্যবহার করতে অন্য মন্ত্রীদের কৃষিমন্ত্রীর চিঠি
পতিত জমি চাষের জন্য ব্যবহার করতে অন্য মন্ত্রীদের কৃষিমন্ত্রীর চিঠি
সরিষা ফুলের হলুদ হাসিতে রঙিন যশোরে দিগন্তজোড়া মাঠ
যশোরে সরিষা ফুলের হলুদ হাসিতে রঙিন হয়ে উঠেছে যশোরে দিগন্তজোড়া মাঠ। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই হলুদের চাদরে ঢাকা বিস্তীর্ণ মাঠ। জেলার বিস্তীর্ণ মাঠগুলো যেন হলুদ বর্ণে ঘেরা স্বপ্নীল পৃথিবী। সরিষার সবুজ গাছের হলুদ ফুল সোনাঝরা রোদে যেন ঝিকিমিকি করছে।
কৃষি বিভাগ জানান, নিকট-অতীত যে কোনো সময়ের অপেক্ষা চলতি মৌসুমে যশোরাঞ্চলে রেকর্ড পরিমাণ রবি ফসলের আবাদ হয়েছে। এসব ফসলের সিংহভাগই জুড়ে আছে সরিষা আবাদ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরাঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে যশোরাঞ্চলের আওতাভুক্ত ছয় জেলা- যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। এই ছয় জেলায় ৫৪ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও সেখানে চাষ হয়েছে ৭২ হাজার ৯২৫ হেক্টর জমিতে।
এর মধ্যে যশোরে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও সেটি প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে চাষ ২৪ হাজার ৮৪৮ হেক্টর জমিতে। এর বাইরে ঝিনাইদহে ৯ হাজার ৭৭৭ হেক্টরের বিপরীতে চাষ হয়েছে ১১ হাজার ১১২ হেক্টর, মাগুরায় ১৫ হাজার হেক্টরের বিপরীতে ১৬ হাজার ৩৫৫ হেক্টর, কুষ্টিয়ায় ৯ হাজার ১৫০ হেক্টরের বিপরীতে ১১ হাজার ৬৪৫ হেক্টর, চুয়াডাঙ্গায় ২ হাজার ৮০০ হেক্টরের বিপরীতে তিন হাজার ১৩৫ হেক্টর ও মেহেরপুর জেলায় চার হাজার ৩৭০ হেক্টরের বিপরীতে পাঁচ হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ সুরমায় সাম্মাম ফসল কর্তন কর্মসূচির উদ্বোধন
কৃষি বিভাগ বলছে, অন্যান্য বছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম সরিষা আবাদ হলেও এবছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষা আবাদ হয়েছে। সরিষা আবাদের জন্য আবহাওয়া ভালো হওয়ায় কৃষকরাও বেশ আশান্বিত।
যশোর সদর উপজেলার সুলতানপুর মাঠে কথা হয় চাষি আবু বক্কারের সঙ্গে তিনি বলেন, এবার তাদের মাঠে ১৭০ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। এসব খেতে টরি-৭ ও টরি-১৪ নামের উন্নত জাতের সরিষার দু’টি জাত আবাদ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এবছর সরিষা চাষের জন্য আবহাওয়া শতভাগ অনুকূলে। সরিষা বপণের সময় প্রয়োজনী বৃষ্টি পাওয়ায় কোনো সমস্যা হয়নি। শেষমেষ ফুল ও ফল আসা পর্যন্তও কোনো বড় ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় এবছর নিকট-অতীত যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো ফলন হবে বলে তিনি আশা করেন।
একই মাঠে কথা হয় চাষি হেমায়েত ও ইদ্রিস আলী সঙ্গে এ সময় তারা বলেন, এ বছর সয়াবিনসহ যাবতীয় ভোজ্য তেলের দাম দ্বিগুণেরও বেশি হওয়ায় অধিকাংশ কৃষকরা সরিষা আবাদের প্রতি ঝুঁকেছেন। ধান চাষে কখনও লাভ কখনও লোকসান হওয়ায় কৃষকরা চাষের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলায় তারা সরিষা আবাদ করে লাভ করবেন বলে ধারণা করছেন।
এছাড়াও তারা আরও বলেন, ধানসহ অন্য ফসলে খরচ বেশি লাভ কম। অথচ সরিষা চাষে খরচ কম লাভ বেশি। এক বিঘা জমিতে বীজ, সার, সেচ ও মাড়াই করে বাজারে তোলা পর্যন্ত খরচ হয় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। সেখানে এক বিঘা জমিতে সরিষার ফলন হয় চার থেকে পাঁচ মণ। প্রতিমণ সরিষা বাজারে পাঁচ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে টেকসই খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করতে ছাদ কৃষি প্রয়োজন: এফএও
হাবিবুর রহমান নামে আরেক কৃষক বলেন, সরিষা আবাদের পাশাপাশি একই মৌসুমে কৃষক আমন ও বোরো আবাদ করে বাড়তি মুনাফা পাচ্ছে। সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে বিভিন্ন সবজির আবাদ করেও তারা লাভ হচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় অনেক চাষিই এখন ধান আবাদের পাশাপাশি সরিষা আবাদ করে দ্বিগুণ লাভ করছে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হক বলেন, চলতি মৌসুমে যশোরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ হাজার ৮৪৮ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। যা কৃষির জন্য খুবই ইতিবাচক।
তিনি বলেন, জমির উর্বরতা ধরে রাখার জন্য শস্য নিবিড়তার জন্য কৃষককে সরিষা আবাদে উৎসাহিত করা হচ্ছে। কারণ সরিষা আবাদ করে একই জমিতে সহজেই তিন ফসলের চাষ করা সম্ভব। এজন্য অধিকাংশ কৃষককে সরিষা আবাদের জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোরাঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, সরকার ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে রবি ফসলের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এজন্য যশোরসহ দক্ষিনাঞ্চলের জেলাগুলোতে অন্য ফসলের সঙ্গে সরিষা আবাদের চাষির সংখ্যা বাড়ছে। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার ভালো ফলন হবে বলে তিনি আশা করেন।
আরও পড়ুন: বোরোর উৎপাদন বাড়াতে ১৭০ কোটি টাকার প্রণোদনা
দক্ষিণ সুরমায় সাম্মাম ফসল কর্তন কর্মসূচির উদ্বোধন
সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় চাষ হচ্ছে মরুভূমির ফল সাম্মাম। বিদেশি এই ফসল কর্তন কর্মসূচি ঘটা করে আয়োজন করা হয়েছে।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের রায়খাইলে ব্যক্তি উদ্যোগে উৎপাদিত মরুভূমির ফল সাম্মাম ফসল কর্তন কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন খাঁন বলেন, সিলেট অঞ্চলের পতিত জমি চাষের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। পতিত জমি ব্যবহার করে আধুনিক প্রযুক্তির বিস্তার ও শস্য বহুমুখীকরণের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। এতে কৃষকের আয় ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি সহ পুষ্টি ও সামাজিক ব্যবস্থার টেকসই উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: করোনা মহামারি এবং চড়া সুদের দাদনের কারণে বিপাকে পিরোজপুরের ভাসমান চাষীরা
তিনি বলেন, অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনয়নের লক্ষ্যে কৃষি বিভাগের পাশাপাশি সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। বর্তমান সরকার জেলা ও উপজেলা ভিত্তিক স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে দেশে কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সাম্মাম ফল কর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেট অঞ্চলের উপ-পরিচালক ড. কাজী মুজিবুর রহমান, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রাজিব হোসেন, দি নিউ নেশন এর সিলেট ব্যুরো প্রধান এস.এ শফি, উপসহকারী কৃষি অফিসার শাহিদা সুলতানা, নজরুল ইসলাম, এ.কে আজাদ ফাহিমদ, কৃষক জহির আলী সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
উল্লেখ্য, রসালো মিষ্টি ও পুষ্টিগুণে ভরপুর মধ্যপ্রাচ্যের জনপ্রিয় ফল সাম্মাম প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেছেন দক্ষিণ সুরমার জালালপুর ইউনিয়নের রায়খাইল গ্রামের প্রবাস ফেরত হাব্বান মিয়া ও বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা জহির আলী। তারা ব্যক্তিগতভাবে প্রথম বারের মতো ১০০ শতক জায়গায় পরীক্ষামূলকভাবে সাম্মাম চাষ শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে কালো ধান চাষে চমক
পতিত জমি চাষের জন্য ব্যবহার করতে অন্য মন্ত্রীদের কৃষিমন্ত্রীর চিঠি
বাংলাদেশে টেকসই খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করতে ছাদ কৃষি প্রয়োজন: এফএও
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বলেছে, টেকসই খাদ্য নিশ্চিত করতে এবং খাদ্যের অপচয় কমাতে বাংলাদেশের শহরগুলোতে ছাদে কৃষি প্রয়োজন।
ছাদে বাগান করার গুরুত্বের ওপর জোর দিতে জাতিসংঘের সংস্থা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নিয়ে ঢাকা ফুড সিস্টেম (ডিএফএস) শীর্ষক একটি প্রকল্পের অধীনে বুধবার একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা করেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং প্রকল্পের সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার জেভিয়ার বাউয়ান ভবনের ছাদে ফল ও সবজি চাষের প্রয়োজনীয়তার ওপর আলোকপাত করেন।
আরও পড়ুন: বোরোতে ডিজেলে ভর্তুকি দেয়ার বিবেচনা করছে সরকার: কৃষিমন্ত্রী
বাউয়ান বলেন, ‘বাড়ির লোকেরা ছাদে কৃষি থেকে পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের সুবিধা পেতে পারে। ছাদে কৃষিও সাধারণভাবে সম্প্রদায় এবং সমাজের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তারা যা খায় তার সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে তারা মানুষকে সাহায্য করতে পারে। এটি এমন একটি লিঙ্ক যা দুর্বল হয়ে গেছে যেহেতু আমরা আমাদের খাদ্যের আউটসোর্সিং শুরু করেছি এবং শিল্পোন্নত উৎপাদনের ওপর এত বেশি নির্ভর করছি।’
কৃষি মন্ত্রণালয়ের এগ্রিকালচার ইনফরমেশন সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা শহরে প্রায় সাড়ে চার লাখ ছাদে সাড়ে চার হাজার হেক্টর জায়গা অব্যবহৃত রয়ে গেছে।
ডিএনসিসি’র পরিচালিত ড্রোন থেকে ছবি ব্যবহার করে একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে শহরের ওই অংশের মাত্র দুই শতাংশ ছাদেই ছাদ বাগান রয়েছে।
মেয়র আতিকুল বলেন, ‘ডিএনসিসি, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন এবং সমবায় মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় নগরীর বাসিন্দাদের ছাদে কৃষি চালু করতে দশ শতাংশ হোল্ডিং ট্যাক্স রেয়াতের সম্ভাবনা ঘোষণা করেছে৷ এফএও পরিকল্পিত কর রেয়াত নীতি বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশিকা প্রস্তুত করতে শহরের দু’টি করপোরেশনকে সহায়তা করছে।’
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা সিটি করপোরেশনগুলোর জন্য নির্দেশিকাগুলোর একটি সেট তৈরি এবং প্রয়োগ করতে তাদের মতামত প্রদান করে যা কৃষি বাস্তবায়নকারী পরিবারগুলোর সম্পত্তি কর রেয়াতের জন্য যোগ্য কিনা তা নির্ধারণে কর্মকর্তাদের সহায়তা করবে৷
কিংডম অব নেদারল্যান্ডের অর্থায়নে ডিএফএস প্রকল্পটি নগরীর ২০টি ছাদে কৃষি প্রদর্শনী প্লট তৈরি করতে এবং বস্তি এলাকার সাড়ে ৫০০ জনকে প্রশিক্ষণ দিতে একটি স্থানীয় সংস্থা প্রশিকার সঙ্গে কাজ করছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ এফএও এবং নেদারল্যান্ডের ওগেনিংজেন ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড রিসার্চ (ডব্লিউইউআর) এর প্রযুক্তিগত সহায়তায় ডিএফএস প্রকল্প বাস্তবায়নের নেতৃত্ব দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: পতিত জমি চাষের জন্য ব্যবহার করতে অন্য মন্ত্রীদের কৃষিমন্ত্রীর চিঠি
আমনে আবাদ লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
বোরোর উৎপাদন বাড়াতে ১৭০ কোটি টাকার প্রণোদনা
দেশে বোরোর আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রায় ১৭০ কোটি টাকার প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। সারা দেশের ২৭ লাখ কৃষক এ প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে বীজ ও সার পাচ্ছেন।
তিনটি ধাপে বা ক্যাটাগরিতে দেয়া হচ্ছে এসব প্রণোদনা।
আরও পড়ুন: খুলনাঞ্চলের বোরো ধানে পোকার আক্রমণ: লোকসানের শঙ্কায় চাষিরা
হাইব্রিড ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রায় ৮২ কোটি টাকার প্রণোদনার আওতায় ১৫ লাখ কৃষকের প্রত্যেককে দেয়া হচ্ছে বিনামূল্যে দুই কেজি ধানবীজ।
উচ্চফলনশীল জাতের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রায় ৭৩ কোটি টাকার প্রণোদনার আওতায় উপকারভোগী কৃষক ১২ লাখ।
এতে একজন কৃষক এক বিঘা জমিতে চাষের জন্য প্রয়োজনীয় পাঁচ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে পাচ্ছেন।
এছাড়া কৃষিযন্ত্র ব্যবহারের সুবিধার্থে একটি মাঠে একই সময়ে ধান লাগানো ও কাটার জন্য ১৫ কোটি টাকার প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে।
এর আওতায় ৬১টি জেলায় ১১০টি ব্লক বা প্রদর্শনী স্থাপিত হবে। প্রতিটি প্রদর্শনী হবে ৫০ একর জমিতে, খরচ হবে ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বাজেট কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা খাত থেকে এ প্রণোদনা প্রদান করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে এসব প্রণোদনা বিতরণ কার্যক্রম চলমান আছে।
ইতোমধ্যে গড়ে প্রায় ৫০ শতাংশ প্রণোদনা বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
আরও পড়ুন: বোরোতে ডিজেলে ভর্তুকি দেয়ার বিবেচনা করছে সরকার: কৃষিমন্ত্রী
হাওরের ৯০% বোরো ধান কাটা শেষ
নেত্রকোণায় ধান কেটে ও বাহারি পিঠা দিয়ে নবান্ন উৎসবের উদ্বোধন
`কাস্তে হাতে মাঠে চলি, নতুন ধান ঘরে তুলি` এই শ্লোগানকে সামনে রেখে নতুন রোপা আমন ধান কেটে নেত্রকোণায় শুরু হয়েছে ধান কাটা ও নবান্ন উৎসব।
অগ্রহায়ণের দ্বিতীয় দিনে সদর উপজেলার মৌগাতি ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে নেত্রকোনা সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ধান কাটা ও নবান্ন উৎসবের আয়োজন করে। মাঠে ধান কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে নবান্ন উৎসবের শুভ উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
আরও পড়ুন: সুগারমিলের পতিত জমি চাষের আওতায় আনা হবে: কৃষিমন্ত্রী
এ উপলক্ষে কৃষকদের নিয়ে এক আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয়।
নেত্রকোণা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নূরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান মানিক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন, মৌগাতী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান খান আবুনী, কৃষক আমিনুল ইসলাম।
বক্তারা, বর্তমান বৈশ্বিক সংকটকালে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পতিত জমিসহ চাষাবাদের জমিতে বেশী করে ফসল উৎপাদন ও বাড়ির আশপাশে শাক-সবজি আবাদ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
নেত্রকোণায় নবান্ন উৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন ফসলের মাঠে মাঠে চলছে ধান কাটা, ধান মাড়াই, ধান শুকানো ও গোলায় ধান ভরার কাজ।
নবান্ন উৎসবের আনন্দকে আরও ছড়িয়ে দিতে বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয় বাহারি পিঠা পুলি পায়েস তৈরি এবং পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের মাঝে বিতরণ।
এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয় গ্রামীণ খেলাধুলা, বাউল গান ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আরও পড়ুন: ফুলবাড়ী: সবুজ রঙে সেজেছে কৃষকের মাঠ
ঘেরের পাড়ে সবজি চাষে স্বাবলম্বী তেরখাদার চাষিরা
সুগারমিলের পতিত জমি চাষের আওতায় আনা হবে: কৃষিমন্ত্রী
সুগারমিলসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো.আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, সুগারমিলের অনেক পতিত জমি আছে। সেগুলোকে চাষের আওতায় আনতে হবে। এছাড়া, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জমি কোথায় কোথায় পতিত আছে, তা খুঁজে বের করে চাষের আওতায় আনতে হবে।
রবিবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় মন্ত্রী, সুগারমিল এবং বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যের চাহিদাও বাড়ছে। কাজেই, যে কোন মূল্যে খাদ্য উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। উৎপাদন বাড়ানোর জন্য যেটুকু সুযোগ আছে, তার সবটুকু আমরা কাজে লাগাতে চাই। সেজন্য, মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তাদেরকে আরও তৎপর ও সক্রিয় হতে হবে। কীভাবে উৎপাদন আরও বাড়ান যায়-তা খুঁজে বের করতে হবে।
সভায় জানানো হয়, চলমান ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিপিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৭২টি প্রকল্পের অনুকূলে মোট চার হাজার ১৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। এবছর সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ আছে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পে, যার পরিমাণ ৬৬০ কোটি টাকা।
সভাটি সঞ্চালনা করেন কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম। এসময় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং সংস্থাপ্রধানসহ প্রকল্প পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দেশে দুর্ভিক্ষ হবে না: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিতে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন: বিশ্ব খাদ্য ফোরামে কৃষিমন্ত্রী
বিশ্ব খাদ্য ফোরামে যোগ দিতে ইতালি যাচ্ছেন কৃষিমন্ত্রী
ফুলবাড়ী: সবুজ রঙে সেজেছে কৃষকের মাঠ
সবুজ রঙে সেজেছে কৃষকের মাঠ। কৃষকের স্বপ্নের আমন খেতের চারিদিকে সবুজ রঙে ভরে উঠেছে। বিস্তৃর্ণ কৃষকের মাঠে মাঠে দু-চোখ জুড়ানো যেন এক অপরূপ সবুজের সমারোহ। যেন কোন জমি আর পতিত নেই।
প্রতিটি ধান গাছে র্শীষ বেড়া শুরু করেছে। বৃষ্টি ভেজা বাতাসে দোল খাচ্ছে আমন ধানের গাছগুলো। এ যেন এক নয়ন জুড়ানো দৃশ্যে মেতে উঠেছে ফসলের মাঠ জুড়ে। এখন মাঠ জুড়ে সবুজ রঙে সাজিয়ে তুলেছে প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্য।
আরও পড়ুন: অনাবৃষ্টিতে আমন চাষ নিয়ে শঙ্কায় কৃষক
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অধিকাংশ প্রান্তিক কৃষক পরিবার কৃষির উপর নির্ভরশীল। ধানসহ সারা বছরেই কোন না কোন ফলন ফলায়। সেই ফসল বিক্রি করে পরিবার-পরিজন জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। তাদের প্রধান ফসল ধান। চলতি আমন মৌসুমে অঞ্চলের চাষিরা তাদের প্রধান ফসল উৎপাদনের শুরুতেই বৃষ্টির দেখা মেলেনি।
ভরা বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির দেখা না পেয়ে সঠিক সময়ে বাধ্য হয়ে শ্যালো মেশিন ও সেচযন্ত্রের মাধ্যমে পানি ক্রয় করে জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ করেছেন চাষিরা। এ বছর পানি ক্রয় তাদের স্বপ্নের ফসল বাড়তি খরচ দিয়ে চাষাবাদ করলেও আমনের বাম্পার ফলনের এক উজ্জল সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় আমন চাষিদের কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
আরও পড়ুন: চলাচলের অনুপযোগী ফরিদপুর পৌরসভার শতাধিক কিলোমিটার সড়ক
কুরুষাফেরুষা গ্রামের কৃষক আবুল কাসেম ও পুলিন চন্দ্র রায় জানান, ভরা বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির দেখা পাইনি। তবে সঠিক সময়ে শ্যালো-মেশিন ও সেচযন্ত্র দিয়ে পানি কিনে আমন ধান চাষাবাদ করেছি। রোপনের পর বৃষ্টির দেখা মেলে। মাঝে মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় এ বছর আমনের আবাদ গত বছরগুলোর চেয়ে ভাল ফলন দেখা দিয়েছে। জ্বালানি তেল ও সারের বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা অতিরিক্ত খরচ বহন করে আমন ধান চাষাবাদ করলেও এখন সেই স্বপ্নের ফসল দেখে আমাদের মন ভরে যায়।
ঘেরের পাড়ে সবজি চাষে স্বাবলম্বী তেরখাদার চাষিরা
খুলনার তেরখাদা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের তিন সহস্রাধিক ঘেরের পাড়ে সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন চাষিরা।
চাষ করা সবজির মধ্যে লাউ, শসা, করলা, চিচিঙ্গা, টমেটো, চাল কুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, এমনকি তরমুজও রয়েছে।
আরও পড়ুন: শীতের প্রথম বাজার ধরতে ব্যস্ত যশোরের সবজি চাষিরা
জানা গেছে, ঘেরের পানিতে মাছ চাষ আর পাড়ে সবজি চাষ করে এসব এলাকার কৃষকেরা এখন স্বাবলম্বী। যদিও চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টির কারণে যেমন মৎস্য চাষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, তেমনি ঘেরের বেড়িতে শাক সবজির চাষও ব্যাহত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাড়ছে খুলনার চুইঝালের কদর, যাচ্ছে থাইল্যান্ডে
আজগড়া এলাকার আলী গাজী জানান, সবজি চাষ করে এলাকার কৃষকেরা ভালোই আছেন। সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এসেছে।
আজগড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কৃষ্ণ মেনন রায় বলেন, ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলোতে শুধু ঘের আর ঘের। বিশেষ করে আমার ইউনিয়নের ১০ হাজার লোকের বসবাস। এর মধ্যে ৮০ ভাগ মানুষই ঘেরে মাছ ও সবজি চাষ করে থাকেন।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত চাষিরা
এ ব্যাপারে তেরখাদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘের পাড়ে উৎপাদিত লাউ, করলা ও টমেটো ইতোমধ্যে উপজলার চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হচ্ছে। কৃষকেরা দামও ভালো পাচ্ছেন। এসব নিম্নাঞ্চলের মানুষের আয়ের একটা বিশাল অংশই সবজি চাষ থেকে আসে। তাছাড়া এই এলাকার সবজি জেলা শহরের সবজির চাহিদাও মিটিয়ে থাকে।