শিক্ষা
শিশুদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে অভিভাবকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির মতো অভিশাপ থেকে দূরে রাখতে শিশুদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, পিতা-মাতার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকতে হবে। এতে তারা (শিশুরা) বিপথগামী হতে পারবে না। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতি থেকে দূরে রাখতে তাদের ছোটবেলা থেকেই সততার শিক্ষা দিতে হবে।
রবিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের ক্লাসের পাশাপাশি খেলাধুলা, চিত্রাঙ্কন, সংগীত ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক চর্চা এবং ধর্মীয় শিক্ষার মতো পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কাজে নিয়োজিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি অভিভাবক ও শিক্ষকদের অনুরোধ জানাব, আপনারা খেয়াল রাখবেন যাতে শিশুরা একদিকে মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়, অন্যদিকে তারা তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পায়।’
শিক্ষা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উল্লেখ করে শিক্ষার নামে শিশুদের ওপর কোনো ধরনের অন্যায্য চাপ সৃষ্টি না করতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষা নিতে হবে, যাতে তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি হয়। আমরা সে অনুযায়ী কারিকুলাম প্রণয়নে এগিয়ে যেতে চাই।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে শিশুরা এখন ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে বিশ্বকে দেখতে পারছে।
আরও পড়ুন: জাতির পিতার জন্মবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
তিনি আরও বলেন, ‘তাই তারা শুধু পাঠ্যবই পড়ে নয়, চোখ দিয়ে দেখেও শিখতে পারে। আর তখন তারাই হবে স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সিটিজেন। আমরা এটাই চাই।’
গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এবারের দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ধরে, আনব হাসি সবার ঘরে’।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক এবং শিশু তৈয়বা তাসমিন।
শিশু পিয়াশা জামিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন দুই শিশু আব্দুর রহমান ও লামিয়াতুল বারী।
ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম ও গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
অনুষ্ঠানে‘বঙ্গবন্ধু ও শিশু অধিকার’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪ উপলক্ষ্যে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন আয়োজিত কুইজ, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, দেশাত্মবোধক গান ও নৃত্য প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
এছাড়া বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও শিশু দিবস উপলক্ষে ১০৪ জন অসচ্ছল শিক্ষার্থীকে ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান হিসেবে প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু চিরদিন আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস: কাদের
জবি শিক্ষার্থী ফাইরুজের সুইসাইড নোটে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিবৃতি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা আত্মহত্যার আগে লেখা সুইসাইড নোটে তার মৃত্যুর জন্য দুই ব্যক্তিকে দায়ী করেন। তাদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। তিনি এ বিষয়ে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন।
তার দেওয়া ব্যাখ্যা তুলে ধরা হলো:
‘আসসালামু আলাইকুম,
আমি দ্বীন ইসলাম
সহকারী অধ্যাপক,
ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগ,
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রথমত আমি একজন মানুষ, দ্বিতীয়ত আমি একজন শিক্ষক, তৃতীয়ত আমি দুইজন কন্যা সন্তানের বাবা। আপনাদের কাছে অনুরোধ আপনারা আমার কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং প্রকৃত ঘটনা জানুন। দয়া করে আমার জীবনটাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়ে আমার সন্তানদের এতিম করবেন না।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার অকাল মৃত্যুর জন্য গভীর শোক প্রকাশ করছি। অবন্তিকার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
আরও পড়ুন: কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নয়: জবি ভিসি
আমাদের ছাত্রী অবন্তিকা ও তার সহপাঠীদের নিয়ে প্রকৃত ঘটনা নিচে তুলে ধরলাম:
ঘটনা প্রায় দেড় বছর আগের। অবন্তিকার ব্যাচমেটরা কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে, সেখানে অবন্তিকাও উপস্থিত ছিল। জিডিতে উল্লেখ করা হয় যে, কেউ একজন ফেইসবুকে ভুয়া একাউন্ট খুলে তাদের হয়রানি করে। পুলিশ তখন উচ্চতর তদন্তের আশ্বাস দিয়ে বলে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আইডিটা কে চালায় সেটা বের করে দেবে। এই কথা শুনে অবন্তিকা থানা থেকে বের হয়ে ক্যাম্পাসে আসার পথেই তার বন্ধুদের কাছে স্বীকার করে যে, আইডিগুলো (ফেইক একাউন্টসগুলো) সে নিজেই চালায়।তখন তার বন্ধুরা তাকেসহ প্রক্টর অফিসে নিয়ে এসে অবন্তিকার বিরুদ্ধে গত ০৮.০৮.২০২২ ইং তারিখে একটা লিখিত অভিযোগ দেয়।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রক্টর মোস্তফা কামাল স্যার আমাকে এবং সহকারী প্রক্টর গৌতম কুমার সাহা (গণিত বিভাগ) স্যারকে গত ১১.০৮.২০২২ তারিখে তদন্তের দায়িত্ব দেন।
পরবর্তীতে গত ১৬.০৮.২০২২ তারিখে প্রক্টর স্যারের উপস্থিতিতে আমি এবং সহকারী প্রক্টর গৌতম কুমার সাহা অবন্তিকা এবং অবন্তিকার অভিভাবকদের প্রক্টর অফিসে আসার জন্য আহ্বান করি। পরে অবন্তিকার মা মিটিং এ আসে এবং এখানে অবন্তিকার ক্লাসমেইটস সহ (অভিযোগ কারীরা) সবাই উপস্থিত ছিল। তখন অবন্তিকার মা তার ব্যাচমেইট (যারা এ অভিযোগ করেছে) তাদের কাছে ঘটনার সত্যতা শুনে বলে যে, আমার মেয়ে যা করেছে ভুল করেছে, ঘটনার জন্য অভিযোগকারী সকলের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে এবং ভবিষ্যতে আমার মেয়ে আর এই ধরনের কাজ করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয় এবং বলে, যদি করে তার দ্বায় আমরা নেব। এবারের মতো বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ জানান এবং বলেন, আমার মেয়ে ভালো শিক্ষার্থী কিন্তু সে কয়েকদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ এবং ওষুধ খাচ্ছে।
তখন তার ব্যাচমেইটরা বিষয়টা মানবিক এবং ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখেন। এভাবে বিষয়টা প্রাথমিকভাবে মিমাংসা করা হয়। মিমাংসার পরে অবন্তিকার মা জিডিটা তুলে নেওয়ার জন্য অভিযোগকারীদের বারবার অনুরোধ করেন। কিন্তু অভিযোগকারীরা জিডি তুলে নিতে অসম্মতি জানায়, কারণ তাদের ধারণা অবন্তিকা ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণ আবারও করতে পারে।
তখন আর জিডিটা সাথে সাথেই তোলা সম্ভব হয়নি। অভিযোগকারীরা বলেন, আমরা তাকে আগামী ৩ মাস পর্যবেক্ষণ করব এবং যদি অবন্তিকা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে তাহলে আমরা ৩ মাস পরে জিডিটা তুলে নেব। ঝামেলা এখানেই প্রাথমিকভাবে নিষ্পত্তি করা হয়। এর কিছুদিন পরে অবন্তিকা ও তার মা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন এবং আমাকে প্রক্টর অফিসে না পেয়ে আমার বিভাগে আসেন। যেহেতু আমার এলাকার আমি তাদের আমার সাধ্যমত আপ্যায়ন করি। যেহেতু তিনি আমার এলাকার এবং তিনি একজন অভিভাবক আমি আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ টুকু দিয়ে আপ্যায়ন করি। ওইদিন অবন্তিকার মা আমাকে জানান অবন্তিকার হলের বন্ধুরা ওর সাথে ভালো ব্যবহার করছে না, এতে অবন্তিকা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে।
তখন আমি তাদের প্রক্টর অফিসে লিখিতভাবে অভিযোগ করার পরামর্শ দেই। তখন অবন্তিকার মা বলে যা হওয়ার হয়ে গেছে এখন আর এ বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে চাচ্ছি না এবং বলেন আমি আমার মেয়েকে হলে রাখবো না, এতে করে তার পড়াশুনা খারাপ হয়ে যাবে এবং সে মানসিকভাবে আরও ভেঙে পড়বে। তখন আমি তাকে বলি আপনি অভিভাবক যা ভালো মনে করেন সেটাই করেন। যেকোনো প্রয়োজনে আমার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। অভিযোগ নিষ্পত্তির ৩ মাসেরও কিছুদিন পরে অবন্তিকা এবং তার বাবা-মা প্রক্টর অফিসে জিডি তোলার জন্য আসে কিন্তু তার ব্যাচমেইটরা জিডি তুলতে অসম্মতি জানায়।তখন অবন্তিকার মা-বাবা ও অবন্তিকা আবার আমাকে ফোন করে আমার বিভাগে দেখা করতে আসে।
আরও পড়ুন: ফাইরুজের আত্মহত্যার ঘটনায় জবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠী সাময়িক বরখাস্ত
আমি তখন ক্লাস নিচ্ছিলাম এবং পরে ক্লাস থেকে বের তাদের আমার রুম এ নিয়ে আমার সাধ্যমত আপ্যায়ন করি। তখন তারা জিডি তুলার বিষয়ে আমাকে অনুরোধ করে। আমি তখন তাদের বিষয়টা বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করি যে বিষয়টা আমার হাতে নেই। আমাদের কাজ তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদান করা এবং আমরা তাই করি। জিডির বিষয়ে প্রক্টর স্যার এবং অভিযোগকারীদের সাথে আলাপ করে নিষ্পত্তি করার পরামর্শ দেই।
তৎক্ষনাৎ অবন্তিকার মা কিছুটা হতাশার ভাষায় বলেন, আমি দুজন (অবন্তিকা এবং ওর বাবা) ডিপ্রেশনের রোগীকে নিয়ে এত বছর সংসার করে আসছি। আমি নিজেও অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ছি।এবং বলেন আমার মেয়েটা মারাত্মক ডিপ্রেশনে পড়ে গেছে। এরপরে অবন্তিকা ও তার পরিবারের কারো সাথে এ বিষয়ে আজ পর্যন্ত আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি।’
এ ছাড়া মৃত্যুর আগে ফেইসবুকে দেওয়া অবন্তিকার স্ট্যাটাস নিয়ে তিনি লেখেন:
‘প্রথমত আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ, আম্মানকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা, যা সম্পুর্ণ ভিত্তিহীন। কারণ ঘটনা নিস্পত্তি হয় ১৬-০৮-২০২২ সালে। এরপর এই বিষয় নিয়ে আর কারো সাথে কোনো আলোচনা হয়নি কখনোই।
প্রক্টর অফিসে অবন্তিকা ও তার মাকে একবারই ডাকা হয়েছিল। সেই সময় প্রক্টর মোস্তফা কামাল স্যার সহকারী প্রক্টর গৌতম সাহা স্যার এবং অভিযোগকারী তার বন্ধুরা উপস্তিত ছিলেন। একাধিকবার ডেকে হেনস্তা করার বিষয়টি সম্পুর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। কারণ বিষয়টি ওইদিনই মিমাংসা হয়ে গিয়েছিল।
সুইসাইড নোটে প্রক্টর অফিসে আম্মানের বিরুদ্ধে আনিত যৌন হয়রানি ও ভয়ভীতির অভিযোগের বিচার না পাওয়ার বিষয়টি তৎকালীন প্রক্টর মোস্তফা কামাল স্যার ভালো বলতে পারবেন। এ অভিযোগ সম্পর্কে আমি অবগত নই।
সুইসাইড নোটে আনিত অভিযোগ অবন্তিকাকে বহিষ্কার করার বিষয়ে পরবর্তীতে আমি কখনো কিছুই বলিনি। কারণ বিষয়টি মিমাংসা হওয়ার পরে অবন্তিকার সাথে বিগত দেড় বছরে একবারের জন্যেও অবন্তিকা বা তার পরিবারের সাথে আমার কোনো কথা বা যোগাযোগ হয়নি।’
এ বিষয়ে তিনি আরও কিছু কথা বলেন।
তিনি লেখেন, ‘একজন শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা এবং তাদের জন্য কাজ করা আমার নৈতিক দায়িত্ব। দীর্ঘ ১১ বছরের শিক্ষকতার জীবনে আমি আমার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতেও থাকবো।’
‘শুধুমাত্র স্ট্যাটাসের উপর ভিত্তি করে কাউকে ভুল না ভাবার অনুরোধ রইল। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনার প্রকৃত রহস্য উন্মোচনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য আমি সবিনয়ে প্রস্তুত। সঠিক তথ্য জেনে সিদ্ধান্ত এবং মন্তব্য করার অনুরোধ রইল। সবাই ভালো থাকবেন।’
আরও পড়ুন: ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
ফাইরুজের আত্মহত্যার ঘটনায় জবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠী সাময়িক বরখাস্ত
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা আত্মহত্যার পর বিচারের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয় এবং তা শনিবার সকাল পর্যন্ত চলে।
ফেসবুকে পোস্ট করে আত্মহত্যা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাইরোজ অবন্তিকা। শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে তাকে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেনারেল হাসপালের আবাসিক সার্জন ডা. আব্দুল করিম খন্দকার।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যে শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার পর ক্যাম্পাসে আসেন উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। শুরুতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ভিসিকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেননি। কিছুক্ষণ পর তারা তাকে ভেতরে ঢুকতে দেন। তখন তিনি শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে।
আরও পড়ুন: ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শনিবার বিকাল ৩টায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আজ দুপুর ১২টায় নিজ শহর কুমিল্লায় ফাইরুজের জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে, অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আরও পড়ুন: জবি ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগে হল থেকে বহিষ্কার আরেক শিক্ষার্থী
আইন অনুষদের ডিন মাসুম বিল্লাহকে আহ্বায়ক ও আইন কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার দাসকে সদস্য সচিব করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন আবুল হোসেন ও সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ঝুমুর আহমেদ।
মৃত্যুর আগে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে অবন্তিকা লিখেন, ‘আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী। আর তার সহকারী হিসেবে তার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের) সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান যে আমাকে অফলাইন-অনলাইনে থ্রেটের ওপর রাখতো সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেও আমার লাভ হয় নাই। দ্বীন ইসলাম আমাকে নানানভাবে ভয় দেখায় আম্মানের হয়ে যে আমাকে বহিষ্কার করা ওনার জন্য হাতের ময়লার মতো ব্যাপার। আমি জানি এখানে কোনো জাস্টিস পাবো না।’
আরও পড়ুন: বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে জবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু
ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
ফেসবুকে পোস্ট করে আত্মহত্যা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাইরোজ অবন্তিকা। শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত সোয়া ১০টার দিকে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে তাকে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেনারেল হাসপালের আবাসিক সার্জন ডা. আব্দুল করিম খন্দকার।
নিহত ফাইরোজ কুমিল্লা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক প্রয়াত জামাল উদ্দিনের মেয়ে। কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাও ফায়ার সার্ভিস পুকুরপাড়ের নিজ ঘরের ফ্যানের সঙ্গে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
মৃত্যুর আগে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে অবন্তিকা লিখেন, ‘আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী। আর তার সহকারী হিসেবে তার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের) সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান যে আমাকে অফলাইন-অনলাইনে থ্রেটের ওপর রাখতো সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেও আমার লাভ হয় নাই। দ্বীন ইসলাম আমাকে নানানভাবে ভয় দেখায় আম্মানের হয়ে যে আমাকে বহিষ্কার করা ওনার জন্য হাতের ময়লার মতো ব্যাপার। আমি জানি এখানে কোনো জাস্টিস পাবো না।’
আরও পড়ুন: ঢাকায় দূতাবাসে কর্মরত স্প্যানিশ নাগরিকের আত্মহত্যা
পোস্টে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আমি উপাচার্য সাদেকা হালিম ম্যামের কাছে এই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হিসেবে আপনার কাছে বিচার চাইলাম।’
সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম বলেন, ‘আমি মেয়েটিকে দেখেছি প্রায় দেড় বছর আগে। তাদের কয়েকজন সহপাঠী প্রক্টর অফিসে এসেছিল। সে সময় তৎকালীন প্রক্টর মোস্তফা কামাল স্যার, আমি ও আরও কয়েকজন সহকারী প্রক্টর অফিসে ছিলাম। মেয়েটি ফেক আইডি ব্যবহার করে তার বন্ধুদের মেসেজ পাঠাত। আমাদের বলা হয়েছিল যে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পরে মেয়েটি তার দোষ স্বীকার করে। তখন তার পরিবারের সদস্যরা জিডি প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন।’
আরও পড়ুন: স্ত্রী ও ২ মেয়েকে হত্যার পর যুবকের আত্মহত্যার চেষ্টা
তিনি আরও বলেন, ‘এরপর প্রক্টরিয়াল টিমের সবাই বৈঠক করে তাকে তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। কোনো সমস্যা না থাকলে জিডি প্রত্যাহার করা হবে। আমি কখনো মেয়েটির সঙ্গে একা কথা বলিনি। দয়া করে ঘটনার তদন্ত করুন। আমি দোষী হলে আমাকে শাস্তি দিন। কিন্তু দয়া করে আমাকে আগে থেকে দোষী বানাবেন না। নইলে আমাকেও আত্মহত্যা করতে হবে।’
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। নিহত শিক্ষার্থী তার মৃত্যুর জন্য আমাদের প্রক্টর টিমের এক সদস্যকে দায়ী করেছেন। মাননীয় উপাচার্য মৌখিকভাবে তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দিয়েছেন। আইনি প্রক্রিয়ায় তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে সারাদেশে আত্মহত্যা করেছে ৫১৩ শিক্ষার্থী: আঁচল ফাউন্ডেশন
চবিতে স্থানীয়দের সঙ্গে বিরোধে দুই শিক্ষার্থী আহত, মূল ফটকে তালা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের বিরোধে দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
আহত দুই শিক্ষার্থী হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শাহাদাত হোসেন ও মায়েশা।
এ ঘটনার জেরে ১ নম্বর গেইট ও রেলক্রসিং এলাকায় সড়ক অবরোধ করেছে স্থানীয়রা। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটক করে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে দিয়েছে ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিএফসি।
আরও পড়ুন: চবিতে আবারও ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষ
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার চবি ছাত্রলীগ ও স্থানীয়দের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সে ঘটনায় প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ায় সড়ক অবরোধ করেছে স্থানীয়রা।
সড়ক অবরোধকারীরা জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবারের ঘটনায় হাটহাজারী থানায় মামলা করতে গেলে মামলা গ্রহণ করেনি।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি করলেও তার রিপোর্ট এখনো দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা এখনো নেওয়া হয়নি। তাই তারা এর প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করেছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত স্থানীয়দের এ আন্দোলন চলমান রয়েছে। এছাড়াও মারধরের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেইটে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের মোটরসাইকেলের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ও ফতেপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বখতিয়ার উদ্দিনের মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে।
আরও পড়ুন: চবির শাটলে কথা কাটাকাটি, ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৩
এ ঘটনায় বখতিয়ার ও ওই ছাত্রের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রলীগ কর্মীর সঙ্গেও বখতিয়ারের বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীর সঙ্গে বখতিয়ারের হাতাহাতির একপর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয় ৩ জন। এ ঘটনার জের ধরেই স্থানীয়রা শিক্ষার্থীদের মারধর করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর রোকন উদ্দিন বলেন, পুলিশ প্রশাসন নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে। আমরা সবার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। সংঘর্ষের ঘটনা এড়াতে প্রশাসন তৎপর রয়েছে।
সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশেপাশের এলাকাজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেইটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
আরও পড়ুন: সাবেক ও বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে চবি কর্তৃপক্ষ
রমজানে ২৫ মার্চ পর্যন্ত খোলা থাকবে স্কুল: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
পবিত্র রমজান মাসে মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয়ের ক্লাস আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এর আগে রমজান মাসে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম ১৫ দিন খোলা রেখে গত ১৩ ডিসেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটির তালিকা সংশোধন করে সরকার।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) নতুন সিদ্ধান্তের বিষয়ে জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়েরের সইয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, মাধ্যমিক স্তরের অধীন সব সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়ের ক্লাস আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত চলবে।
এর আগে রমজান মাসে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ।
আরও পড়ুন: রমজানে সশরীরে ক্লাস চলবে স্কুল-কলেজে: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আপিল বিভাগের আদেশের ফলে রমজানে স্কুল পরিচালনায় আর কোনো বাধা থাকবে না।
গত ১০ মার্চ রমজানের প্রথম ১০ ও ১৫ দিন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার সরকারি সিদ্ধান্ত দুই মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট।
এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন অভিভাবক অ্যাডভোকেট মো. ইলিয়াস আলী মণ্ডল।
রিটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের পরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘শরিফার গল্প’ পর্যালোচনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৫ সদস্যের কমিটি
ময়মনসিংহ অঞ্চলে চাহিদার বিপরীতে খাদ্য উৎপাদন আড়াইগুণ
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে খাদ্য উৎপাদন হয়েছে ৪৪ লাখ ৮৮ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন। উৎপাদনের বিপরীতে খাদ্য চাহিদা মাত্র ১৮ লাখ ৭ হাজার ২৩৩ মেট্রিক টন। যা চাহিদার তুলনায় প্রায় আড়াইগুণ। চলতি অর্থবছরে প্রায় ২৬ লাখ ৮১ হাজার ৭১৭ মেট্রিক টন খাদ্য উদ্বৃত্ত রয়েছে।
সোমবার (১১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় ‘ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসল উৎপাদন পরিস্থিতি এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের কর্মপরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব তথ্য জানান ময়মনসিংহ অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয়ের উপপরিচালক সালমা আক্তার।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কেন্দ্রে ময়মনসিংহ অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয়ের আয়োজনে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের চারটি জেলা ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, জামালপুর ও শেরপুরের জাতভিত্তিক ফসল উৎপাদনের অগ্রগতি ও বিভিন্ন কার্যক্রম, বিগত পাঁচ বছরে বোরো, আমন ও আউশ ধানের উৎপাদন চিত্র ও কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়।
কর্মশালায় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বক্তারা বিভিন্ন কৃষিবান্ধব কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করেন।
এ প্রসঙ্গে বক্তারা উদাহরণ হিসেবে পারিবারিক পুষ্টি বাগান ও বস্তায় আদা চাষপদ্ধতি উল্লেখ করেন।
তারা আরও জানান, বস্তায় আদা চাষে জমির সঠিক ব্যবহারের পাশাপাশি কৃষকেরা আর্থিকভাবেও লাভবান হবেন। এক বস্তা আদা চাষে করতে খরচ হবে মাত্র ৭০ টাকা কিন্তু লাভ হবে বস্তাপ্রতি প্রায় ২১৫ টাকা।
কর্মশালায় অন্যান্য ফসল যেমন সরিষা, মধু, ভুট্টা, রঙিন ফুলকপি, ক্যাপসিকামসহ নতুন জাতের বিভিন্ন ফসল উৎপাদন ও রপ্তানিযোগ্য কৃষি বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন মতামত প্রদান করেন বক্তারা।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে শস্যের গড় নিবিড়তা পূর্বের চেয়ে ১ দশমিক ৫২ শতাংশ বেড়েছে, আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ বেড়েছে ৪ হাজার ৯৪৯ হেক্টর, আউশের আবাদ বেড়েছে ৪ হাজার ৬৬ হেক্টর জমিতে, মসলা জাতীয় ফসলের আবাদ বেড়েছে ১ হাজার ১৪৬ হেক্টর জমিতে, নারী ক্ষমতায়ন ৩০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং নার্স সিস্টেম হতে উদ্ভাবিত প্রযুক্তির ব্যবহার পূর্বের চেয়ে দুই শতাংশ বেড়েছে।
ময়মনসিংহ অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক আবু মো. এনায়েত উল্লাহর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে জুম মিটিংয়ে যুক্ত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস।
গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির সাবেক উপাচার্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ পুলের সদস্য অধ্যাপক ড. এম. এ সাত্তার মন্ডল।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং এর পরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম ও বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর।
সিরাজগঞ্জে সেই শিক্ষক ৫ দিনের রিমান্ডে
সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আরাফাত আশিক তমালকে গুলি করার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (১১ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. বিল্লাল হোসাইন তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জেলা পুলিশের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুলহাজ উদ্দীন জানান, মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাত ১২টার দিকে গুলিবিদ্ধ তমালের বাবা আব্দুল্লাহ আল আমিন বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন। পরদিন বুধবার গোয়েন্দা পুলিশের এসআই ইব্রাহিম হোসেন বাদী হয়ে ডা. রায়হান শরীফের নামে অস্ত্র আইনে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলার বাদী ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইব্রাহিম হোসেন অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিক্ষক রায়হান শরীফের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেন।
তিনি আরও জানান, সোমবার শুনানি শেষে বিচারক পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সোমবার (৪ মার্চ) পরীক্ষা চলাকালে বিকাল ৩টার দিকে কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. রায়হান শরীফ হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে শিক্ষার্থীদের বকাবকি শুরুর এক পর্যায়ে তার ব্যাগ থেকে একটি পিস্তল বের করে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আরাফাত আমিন তমালের পায়ে গুলি করেন।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিকালে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করাসহ তার কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড গুলি ও একাধিক দেশি-বিদেশি ছুরি ও কাটারি জব্দ করে।
রমজানে স্কুল বন্ধ: মঙ্গলবার আপিল বিভাগে শুনানি
রমজান মাসে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ রাখতে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
একইসঙ্গে এ বিষয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামীকাল (মঙ্গলবার) দিন ধার্য করেছেন আদালত।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১১ মার্চ) বিকেলে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
এর আগে গতকাল রবিবার রমজানের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশের পর ওই বেঞ্চের ডিএজি শেখ মো. সাইফুজ্জামান বলেন, হাইকোর্ট প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল রোজার মধ্যে খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন। দুই মাসের জন্য এই স্থগিতাদেশ জারি করে রুল দিয়েছেন। এ আদেশের ফলে রোজার মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে।
এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জি আংশিক সংশোধন করে রমজানে ১৫ দিন মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, রমজানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০ দিন ক্লাস চলবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের শিক্ষাবর্ষের ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জি আংশিক সংশোধন করা হয়েছে। আগামী ১১ থেকে ২৫ মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত মোট ১৫ দিন সরকারি/বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
পরে রমজানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার সিদ্ধান্তের এই বিজ্ঞপ্তি দুটি চ্যালেঞ্জ করে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক অ্যাডভোকেট মো. ইলিয়াছ আলী মন্ডল।
রিটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, শিক্ষা সচিব, উপসচিব প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, উপসচিব শিক্ষা সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের পরিচালককে বিবাদী করা হয়। সেই রিটের ওপর রবিবার শুনানি হয়।
বিওয়াইএলসির সিগনেচার লিডারশিপ প্রোগ্রামের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান সম্পন্ন
চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টারের (বিওয়াইএলসি) সিগনেচার লিডারশিপ প্রোগ্রামের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। সর্বমোট ১৯০ জন শিক্ষার্থী সফলভাবে এই নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন।
শুক্রবার (৮ মার্চ) চট্টগ্রামের পেনিনসুলা হোটেল বিওয়াইএলসির বিল্ডিং ব্রিজেস থ্রু লিডারশিপ ট্রেনিং (বিবিএলটি) প্রোগ্রামের ৪০ ও ৪২ তম ব্যাচ এবং বিল্ডিং ব্রিজেস থ্রু লিডারশিপ ট্রেনিং জুনিয়র (বিবিএলটিজে) প্রোগ্রামের ৩৪ ও ৩৬ তম ব্যাচের গ্রাজুয়েশন সেরিমনি অনুষ্ঠিত হয়।
‘দি এমব্যাসি অব দি কিংডম অব দি নেদারল্যান্ডস’ এই লিডারশিপ প্রোগ্রামের সহযোগিতায় ছিল।
বিওয়াইএলসি’র প্রতিষ্ঠাতা ও এক্সিকিউটিভ চেয়ারপার্সন ইজাজ আহমেদ গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে বলেন, ‘নেতৃত্ব চর্চার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলী হলো সৎ সাহস, সহানুভূতি ও যোগ্যতা।’
আরও পড়ুন: ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রোগ্রাম পরিচালনার জন্য টাটা পাওয়ার ডিডিএল ও ব্লকনটসের মধ্যে চুক্তি
তিনি আরও বলেন, ‘সমাজ পরিবর্তন করতে হলে নিজের কম্ফোর্ট জোন থেকে বের হতে হবে এবং নিজের সমাজের জন্য কাজ করতে হবে।’
চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ইংরেজি, বাংলা ও মাদরাসা মাধ্যম থেকে নির্বাচিত মোট ১৯০ জন শিক্ষার্থী ১০ সপ্তাহ এবং ৫ সপ্তাহ ব্যাপী যথাক্রমে বিবিএলটি ও বিবিএলটিজে নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিওয়াইএলসি থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছে।
বিবিএলটি ও বিবিএলটিজে প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় ধরে নেতৃত্ব চর্চার তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক ধারণাগুলো অর্জনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে সমাজসেবামূলক প্রকল্প নিয়ে কাজ করে।
শিক্ষার্থীরা কমিউনিটিতে প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসহ সমাজের সর্বস্তরের ১০ হাজারেরও অধিক মানুষকে সেবা প্রদান করে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্রনাথ তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্ব চর্চার এরুপ প্ল্যাটফর্ম তৈরির করার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘জন্মভূমির প্রতি প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব ও কৃতজ্ঞতার জায়গা থেকে কাজ করে যেতে হবে। এই লক্ষ্যে তরুণদের আরও এগিয়ে আসা এবং জন্মভূমির সব সমস্যা সমাধানে সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নেতৃত্ব দিতে হলে হতে হবে সাহসী এবং দক্ষতাসম্পন্ন সুনাগরিক, যেখানে বিওয়াইএলসি তাদের উদ্ভাবনী কার্যক্রম পরিচালনা করছে।’
আরও পড়ুন: চিকিৎসা গবেষণায় আরও সময় দিন: চিকিৎসকদের বললেন প্রধানমন্ত্রী