������������������������
মেহেরপুরে বইছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ, হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা
গত এক সপ্তাহ ধরে মেহেরপুর জেলায় বইছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রির বেশি রেকর্ড করা হয়েছে। প্রতিদিনই ৪২ থেকে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে ওঠানামা করছে তাপমাত্রা।
দিন ও রাতের তাপমাত্রায় খুব বেশি পার্থক্য না থাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষ বেশি অসুস্থ হচ্ছে। পেটের পীড়া, ঠান্ডা জ্বর, কাশি, সর্দি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, পানিশূন্যতা, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। বাড়ছে হিট স্ট্রোকের রোগীও।
তীব্র গরমে মেহেরপুরের হাসপাতালগুলোতেও প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে শয্যা সংকট।
রবিবার (২১ এপ্রিল) মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে, বেড না পেয়ে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সাজ্জাদ বলেন, গত এক সপ্তাহে ১ হাজার ৩১৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে ২২৩ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। ২১০ জন ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছে।
মেডিসিন ও গাইনি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪৫০ নারী। শিশু ওয়ার্ড ভর্তি ২৪০ জন। ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছে ১৫৫ জন শিশু।
এছাড়া উন্নত চিকিৎসা নিতে অন্য হাসপাতালে ১০ জনকে রেফার্ড করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরএমও আরও জানান, এক সপ্তাহের মধ্যে পুরুষ বিভাগে ৩৫০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে মারা গেছে ৬ জন রোগী। এছাড়া সার্জারি বিভাগে ভর্তি হয়েছে ৫০ জন। চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩১১ জন।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার আব্দুল্লাহ মারুফ বলেন, এক সপ্তাহে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৫২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে শিশু ১১২ জন, নারী ১৪৬ জন ও পুরুষ ৯৪ জন। এসব রোগীরা অধিকাংশই চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। রোগীদের মধ্যে বৃদ্ধ ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।
মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক আহসান হাবিব জানান, গত এক সপ্তাহে এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও বয়স্ক রোগী।
মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার মুঠোফোনে বলেন, গরম বাড়ায় হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে চিকিৎসকগণ কাজ করছেন।
বেডের সমস্যা থাকলেও প্রয়োজনীয় ওষধের সংকট নেই বলে জানান তিনি।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, গত কয়েকদিন থেকে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। এখন তা অতি তীব্র তাপদাহে রূপ নিয়েছে। এই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ অঞ্চলে আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।
এই গরমে সুস্থ থাকতে প্রচুর পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি ও তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যেতেও নিষেধ করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডেঙ্গুতে আরও ৩৭ জন আক্রান্ত
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশে সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কারো মৃত্যু হয়নি। তবে এই সময়ের মধ্যে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এর মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৪ জন রোগী।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে আরও ১৩ জন আক্রান্ত
চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের। এদের মধ্যে পুরুষ ১১ জন ও নারী ১৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২ হাজার ৪০ জন।
এদের মধ্যে পুরুষ ১ হাজার ২৫৮ জন ও নারী ৭৮২ জন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে আরও ৩৪ জন আক্রান্ত
ডেঙ্গুতে আরও ১৭ জন আক্রান্ত
কাতারের আমিরকে স্বাগত জানালেন রাষ্ট্রপতি
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোমবার বিকালে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। এ সময় লাল গালিচা সংবর্ধনা দিয়ে স্বাগত জানানো হয়।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে ২ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বিকাল ৫টায় কাতারের আমির আসেন।
রাষ্ট্রপতি ও আমির বিমানবন্দরে ফুল বিনিময় করেন এবং সালাম গ্রহণের পর উপস্থাপনা লাইনে বাংলাদেশ ও কাতারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সফরকালে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন মঙ্গলবার দরবার হলে আমিরের সম্মানে আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজ এবং বঙ্গভবনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন।
আরও পড়ুন: কাতার আমিরের সফরে ৬ চুক্তি ও ৫ সমঝোতা স্মারক সই হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অন্যদিকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সফররত আমির পরিদর্শন বইয়ে সই করবেন।
রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানান, বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে ১১টি সহযোগিতার বিষয়ে ৬টি চুক্তি ও ৫টি সমঝোতা স্মারক সই হবে।
প্রায় ১৯ বছর পর বন্ধুপ্রতীম দেশ কাতার থেকে ২৪ ঘণ্টা স্থায়ী এমন উচ্চ পর্যায়ের সফর হচ্ছে।
এর আগে ২০০৫ সালের এপ্রিলে কাতারের তৎকালীন আমির শেখ হামাদ বিন খলিফা আল-থানি বাংলাদেশ সফর করেন।
মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমিরকে তার কার্যালয়ে অভ্যর্থনা জানাবেন।
তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একান্ত বৈঠক করবেন, এরপর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক, ৬টি সমঝোতা স্মারকসহ ২ দেশের মধ্যে একাধিক সহযোগিতা নথি সই প্রত্যক্ষ করবেন এবং একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন।
আরও পড়ুন: কাতারের আমিরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত ঢাকা, সহযোগিতা বাড়ানোর দিকে নজর দুই দেশের
সেখানে পরিদর্শন বইয়ে সই শেষে আমির মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গভবনের উদ্দেশে যাত্রা করবেন এবং রাষ্ট্রপতি তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
ওইদিন বিকাল ৩টায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন মিরপুরের কালশী এলাকায় পার্ক এবং বিকাল ৩টায় মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালশী ফ্লাইওভার পর্যন্ত সড়ক উদ্বোধন করবেন তিনি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে তার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের পর ১৯৭৪ সালের ৪ মার্চ কাতার বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন দোহায় বাংলাদেশ তার কূটনৈতিক মিশন চালু করে। ১৯৮২ সালে ঢাকায় কূটনৈতিক মিশন খোলার মাধ্যমে প্রতিদান দেয় কাতার।
বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধা, অভিন্ন মূল্যবোধ, অভিন্ন ধর্মীয় ভিত্তি, অভিন্ন সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।
সুশৃঙ্খল ও পরিশ্রমী হিসেবে অত্যন্ত প্রশংসিত চার লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ ও কাতার বাংলাদেশের রূপকল্প ২০৪১ এবং কাতারের রূপকল্প ২০৩০ বাস্তবায়নে একে অপরকে ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ এবং গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বিবেচনা করে।
আরও পড়ুন: জনশক্তি, জ্বালানি ও বিনিয়োগে সহযোগিতা জোরদারে কাতারের আমিরের সফর: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
অর্থ আত্মসাৎ মামলা: মেজর মান্নানসহ ৭ জনের জামিন বাতিল বিষয়ে হাইকোর্টের রুল
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সাবেক মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানসহ ৭ জনকে বিচারিক আদালতের দেওয়া জামিন কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
তাদের জামিন বাতিল চেয়ে দুদকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (২২ এপ্রিল) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের রায়ের পর বুয়েটের ভবিষ্যৎ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের প্রতিক্রিয়া
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন- আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
এ মামলায় বিচারিক আদালতে জামিন পাওয়া অন্যরা হলেন– বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফসি) সাবেক পরিচালক আ ন ম জাহাঙ্গীর, রইস উদ্দিন, রোকেয়া ফেরদৌস, ডিএমডি ইনামুর রহমান, পরিচালক এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ ফখরে ফয়সল।
২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল মাজেদ দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে ১২ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে মেসার্স টেলিকম সার্ভিস এন্টারপ্রাইজের রাজিয়া সুলতানার নামে বিআইএফসি হতে মোট ৯ কোটি ৭৭ লাখ ৯৪ হাজার ৮৯২ টাকা ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ দেখিয়ে টাকা স্থানান্তর ও রূপান্তর ঘটিয়ে আত্মসাৎ করেন।
এ মামলায় গত ৭ মার্চ মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ তাদের জামিন দেন। পরে জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক।
আরও পড়ুন: বুয়েটের রাব্বীকে হলের সিট ফেরত দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
সাজেকের পাহাড় কাটা বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের
দেশে আরও ১২ জনের করোনা শনাক্ত
দেশে সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যু হয়নি।
তবে এ সময় নতুন করে ১২ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৮২৮ জনে।
আরও পড়ুন: দেশে আরও ২২ জনের করোনা শনাক্ত
এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৯৪ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। একই সময় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ০১ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৮ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৭ হাজার ৩০২ জনে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, আক্রান্ত ১৬
দেশে আরও ১৬ জনের করোনা শনাক্ত
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি গ্রহণ করছে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অংশীজনদের সঙ্গে তাদের বৈশ্বিক কর্মসূচিতে সমন্বয় সাধনের জন্য বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ (বিসিডিপি) তৈরি করা হয়েছে।
বিসিডিপি জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যা মোকাবিলায় অংশীজন, উন্নত দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং তহবিল কর্মসূচির সঙ্গে কাজ করবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (ইউএনএফসিসিসি) নির্বাহী সচিব সাইমন স্টিল সোমবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি শুরু করছে।
এ সময় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা এবং জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনাসহ (ন্যাপ) বাংলাদেশের বিভিন্ন অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে বাংলাদেশ প্রায়ই নানা ধরনের ঘূর্ণিঝড়, ভারী বৃষ্টিপাত ও তাপপ্রবাহের সম্মুখীন হচ্ছে।
তিনি বলেন, 'আমরা বনায়নের জন্য সামাজিক আন্দোলনকে উৎসাহিত করছি, ৮৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করেছি এবং বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করছি।’
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের গবেষকরা লবণাক্ততা, বন্যা ও খরা সহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন।
আগামী জুন থেকে বর্ষা মৌসুমে সারা দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার দল আওয়ামী লীগ এই আন্দোলনের অগ্রদূত।
নিজ উদ্যোগে জলবায়ু তহবিল গঠনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন সাইমন স্টিল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কেবল জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কাজ করে না, বরং অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কর্মসূচি গ্রহণ করছে।
তিনি বলেন, এই বিষয়গুলো নিঃসন্দেহে সারা বিশ্বের জন্য উদাহরণ।
সাইমন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্ব পালনকারী নেতা এবং তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে অংশ নিয়েছেন যেখানে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে আন্দোলন ত্বরান্বিত করতে আপনারা এসব ফোরামে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় আপনাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারেন।‘
অন্যান্য দেশগুলো বাংলাদেশের এই অভিজ্ঞতাকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমনে কাজে লাগিয়ে নিজস্ব অভিযোজন ও প্রশমন পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সাইমন বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশ শুধু নিজের দেশে নয়, সারা বিশ্বে তার পদচিহ্ন রেখে যাচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ।
আরও ৭২ ঘণ্টার জন্য হিট অ্যালার্ট জারি
সারাদেশে বিরাজমান তাপপ্রবাহ পরিস্থিতির পরিবর্তন না হওয়ায় সোমবার থেকে ৭২ ঘণ্টা আবার ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে।
সোমবার (২২ এপ্রিল) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এ সংক্রান্ত সতর্কতা জারি করা হয়।
আরও পড়ুন: খুলনায় শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই সুপেয় পানির তীব্র সংকটে জনজীবন ভোগান্তি
আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় অস্বস্তি থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এর আগে গত ১৯ এপ্রিল আবহাওয়া অফিস হিট অ্যালার্ট জারি করে।
সম্পর্ক জোরদারে সরকারি সফরে বুধবার থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে ৬ দিনের সরকারি সফরে আগামীকাল বুধবার থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (২২ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার বিষয়ে লেটার অব ইনটেন্টসহ বেশ কয়েকটি সহযোগিতা চুক্তি সই হবে এই সফরে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা ছাড়, জ্বালানি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করতে পারে। এছাড়া সম্পর্ক সম্প্রসারণের জন্য পর্যটন খাতে সহযোগিতা এবং শুল্ক সম্পর্কিত পারস্পরিক সহযোগিতা সম্পর্কিত আরও দুটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব নথি সই প্রত্যক্ষ করবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এটি দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সফর।’
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশও থাইল্যান্ডের সমর্থন চাইবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নৌপরিবহন সংযোগের বিষয়টিও আলোচিত হবে। ‘আমি বিষয়টি উত্থাপন করতে খুব আগ্রহী।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের কাছ থেকে বিনিয়োগ বাড়াতে চাইবে।
১৯৭২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর এই প্রথম বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ড শীর্ষ পর্যায়ে সফর করছেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের মানবাধিকার রক্ষা করতে হবে: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই সফর বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড উভয়ের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটি দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।
মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে রয়েছেন।
২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীকে থাইল্যান্ডের উপস্থাপক শ্রেষ্ঠ থাভিসিন আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।
একই দিনে গভর্নমেন্ট হাউজে প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরাকলাওচাওহুয়া এবং থাইল্যান্ডের রাজা ও রানী সুথিদা বজ্রসুধাবিমালাক্ষনের সঙ্গে রাজকীয় সাক্ষাৎ করবেন।
শেখ হাসিনা তার সম্মানে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।
বহুপক্ষীয় কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কমিশন ফর এসকাপ’র ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার সফর 'স্থগিত'
তিনি ২৫ এপ্রিল এসকাপ’র অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। একই দিনে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়া আলিসজাবানা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
'লিভারেজিং ডিজিটাল ইনোভেশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অষ্টম অধিবেশনটি টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে অঞ্চলব্যাপী সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ জোরদার করার একটি সুযোগ হবে।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিজিটাল উদ্ভাবন কীভাবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে অবদান রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করতে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারি নেতা ও মন্ত্রী এবং অন্যান্য মূল স্টেকহোল্ডারদের এই অধিবেশনে একত্রিত করবে।
এছাড়াও, অংশগ্রহণকারীরা ডিজিটাল উদ্ভাবনের রূপান্তরমূলক সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণরূপে উন্মোচনের সুযোগগুলো চিহ্নিত করতে এবং টেকসই উন্নয়নে তাদের অবদান জোরদার করার পথগুলো নিয়ে আলোচনা করতে সক্ষম হবেন।
একটি ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা অংশীদার ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে জড়িত হওয়ার সুযোগ দেবে। এখানে ডিজিটাল উদ্ভাবনগুলো প্রদর্শন করা হবে যা এরই মধ্যে এই অঞ্চল জুড়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অবদান রাখছে।
টেকসই উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অবস্থান অনন্য।
এরই মধ্যে, এই অঞ্চল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডিজিটাল ফিন্যান্স, গভটেক ও ইন্টারনেট অব থিংসের মতো অগ্রণী প্রযুক্তির মাধ্যম ডিজিটালি চালিত উদ্ভাবনের জন্য একটি গতিশীল কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।
তবুও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় বিশাল সম্মিলিত প্রচেষ্টা জোরদার করতে আরও দক্ষতা ও ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগানোর জন্য, এই অঞ্চলের একটি পরিকল্পনা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার থাইল্যান্ড সফরে সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচনের প্রত্যাশা: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
নিরাপদ বিশ্ব গড়তে অভিযোজন সক্ষমতা বাড়াতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলতে অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধি, সহনশীলতা জোরদার এবং সমন্বিত ঝুঁকি হ্রাসের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
সোমবার (২২ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) চার দিনব্যাপী জাতিসংঘ জলবায়ু অভিযোজন সম্মেলন জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (ন্যাপ) এক্সপো-২০২৪-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য ছয়টি বিষয় বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রথমত, প্রধান কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোকে তাদের কার্বন নিঃসরণ কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।
দ্বিতীয়ত, উন্নত দেশগুলো বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলারের জলবায়ু তহবিলের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা পূরণ করতে হবে। অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে এই তহবিল সমানভাবে বণ্টন করতে হবে।
তৃতীয়ত, উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই দক্ষ জ্বালানি সমাধান এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রযুক্তি হস্তান্তর নিশ্চিত করতে হবে।
চতুর্থত, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের সময়, জড়িত দেশগুলোর উন্নয়ন অগ্রাধিকারগুলো তাদের ক্ষতি এবং ক্ষতির ভিত্তিতে বিবেচনায় নেওয়া উচিত।
পঞ্চমত, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা, নদীভাঙন, বন্যা ও খরার কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব সব দেশকে ভাগ করে নিতে হবে।
পরিশেষে, আগামী প্রজন্মের জন্য একটি টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে প্রধান অর্থনীতিগুলোকে অবশ্যই সকল স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের (ইউএনএফসিসিসি) নির্বাহী সচিব সাইমন স্টিল এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী কার্বন নিঃসরণ প্রণয়নে বাংলাদেশের অবদান শূন্য দশমিক ৪৮ শতাংশেরও কম হলেও এটি নেতিবাচক প্রভাবের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি।
জলবায়ু পরিবর্তনের এসব বিরূপ প্রভাব আমাদের সম্ভাবনাময় উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য হুমকি। অব্যাহত বৈশ্বিক উষ্ণতা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি বড় এলাকা যা দেশের মোট আয়তনের প্রায় ১২-১৭ শতাংশ এবং এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমরা বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য উন্নত বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হ্রাসে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ইনটেন্ডেড ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন (আইএনডিসি) প্রণয়ন করে এবং সেটি হালনাগাদ করে ২০২১ সালে ইউএনএফসিসিসিতে জমা দিয়েছে।
তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ নিঃশর্ত ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং শর্তসাপেক্ষে ১৫ দশমিক ১২ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হ্রাসে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করেছে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করেছে। একই সঙ্গে ২০২৩ সালে মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা (এমসিপিপি) প্রণয়ন করেছে। এটির লক্ষ্য জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় দুর্বলতা থেকে সমৃদ্ধির দিকে সহনশীলতায় পৌঁছানো।
তিনি বলেন, এছাড়া এমসিপিপির অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচিতে স্থানীয় জনগণ ও অংশীজনদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং প্রকৃতিভিত্তিক সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আসুন সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে একযোগে কাজ করি: পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ২০২২-২০৫০ সালের জন্য জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (ন্যাপ) প্রণয়ন করেছে এবং ২০২২ সালের অক্টোবরে ইউএনএফসিসিসিতে জমা দিয়েছে। এই পরিকল্পনায় ১১টি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার ৮টি খাতে ১১৩টি অগ্রাধিকার কর্মসূচি চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী ২৭ বছরে ন্যাপে গৃহীত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রায় ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন।
আমি ধনী দেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সুনির্দিষ্ট তহবিল ও অতিরিক্ত আর্থিক সম্পদ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলো ব্যাপক কার্বন নিঃসরণের মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণায়নে অধিক অবদান রাখছে।
তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে রক্ষা করা তাদের নৈতিক দায়িত্ব। ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে আমরা অভিযোজন ও প্রশমন কার্যক্রমে উন্নত দেশগুলোর পক্ষ থেকে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদানের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছিলাম। আশা করি উন্নত দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের হুমকিতে পড়া বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পরও আর্থিক, বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি সহায়তা অব্যাহত রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, কপ-২৬ এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উন্নত দেশগুলোর ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৫ সালের মধ্যে অভিযোজন অর্থায়ন দ্বিগুণ করা উচিত। ধনী দেশগুলোকে এই প্রতিশ্রুতি পূরণের আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: খেলাধুলাই যোগ্য নাগরিক গড়ে তুলতে পারে : প্রধানমন্ত্রী
‘যেসব দেশ ইতোমধ্যে ন্যাপ প্রণয়ন করেছে তারা যাতে তাদের এনএপি বাস্তবায়নে ইউএনএফসিসিসিসহ সহজে ও দ্রুত সব উৎস থেকে আর্থিক সহায়তা পেতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সম্ভাব্য ক্ষতি হ্রাসে অভিযোজন ও প্রশমনে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইউএনএফসিসিসির লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড থেকে অর্থায়নের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ সব সময় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে উন্নয়ন অংশীদারদের নিয়ে 'বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ' (বিসিডিপি) গঠন করেছে যেখানে সব পক্ষ একমত হয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, বিসিডিপি মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা, জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা, জাতীয় নির্ধারিত অবদান এবং বাংলাদেশের রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
তিনি বলেন,‘আসুন আমরা এই গ্রহকে আরও নিবিড়ভাবে রক্ষার জন্য একসঙ্গে কাজ করি।’
এ অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপের (বিসিডিপি) উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: চার দিনব্যাপী জাতিসংঘ ক্লাইমেট অ্যাডাপশন এক্সপোর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
‘লালজমিন’র মতো মুক্তিযুদ্ধের ওপর আরও নাটক হওয়া দরকার: ড. হাছান মাহমুদ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের ওপর আরও নাটক হওয়া দরকার। লালজমিনের মতো মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক আরও মঞ্চায়িত হলে সেটি আমাদের নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে সহায়তা করবে। আমাদের নাট্যাঙ্গনকে সমৃদ্ধ করবে।
রবিবার(২১ এপ্রিল) রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে মঞ্চ নাটক 'লালজমিন'র মঞ্চায়ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।
ড. হাছান বলেন, মুক্তিযুদ্ধ একদিকে যেমন আমাদের স্বাধীনতা এনেছে, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক কিছু সৃষ্টিও হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের গানগুলো এখনো যখন বাজে, তখন আমরা থমকে দাঁড়াই। সেগুলোর কখনো তুলনা হয় না। মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক গল্প লেখা হয়েছে, যেগুলো আমাদের সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে।
আরও পড়ুন: প্রবাসীদের বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠানোর আহ্বান রাষ্ট্রদূত ইমরানের
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামীতে বিদেশি কূটনৈতিকদের সামনে 'লালজমিন' নাটকটি মঞ্চায়িত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এতে কূটনৈতিকরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারবে।
এসময় দেশে নাটকের বিস্তার ও নাট্য আন্দোলনকে শক্তিশালী করার বিষয়ে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা ও অনুভূতির কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'লালজমিন' নাটকটি নাট্যাঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছে।
সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ফরেন অফিস স্পাউসেস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক নুরান ফাতিমা ও সভাপতি ফাহমিদা জাবীন, অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিকরা, অভিনেত্রী মোমেনা চৌধুরী, নাট্য নির্দেশক সুদীপ চক্রবর্তীসহ শুন্যন রেপার্টরি থিয়েটারের সদস্যরা, দেশের প্রথিতযশা নাট্য নির্মাতা ও অভিনয় শিল্পীরা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও তথ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: অভ্যন্তরীণ কারণে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সফর স্থগিত: হাছান মাহমুদ