%EF%BF%BD%EF%BF%BD%EF%BF%BD%EF%BF%BD%EF%BF%BD%EF%BF%BD%EF%BF%BD%EF%BF%BD%EF%BF%BD%EF%BF%BD%EF%BF%BD%EF%BF%BD%EF%BF%BD%EF%BF%BD%EF%BF%BD
সুদানে চলমান সংঘাতে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে: জাতিসংঘের প্রতিবেদন
সুদানে চলমান সংঘাতে শিশুসহ অসংখ্য লোক ধর্ষণ এবং বিভিন্নভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে, যা যুদ্ধাপরাধের সমান হতে পারে বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে সুদানের রাজধানী খার্তুমে জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ বুরহানের নেতৃত্বাধীন দেশটির সামরিক বাহিনী এবং জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বে র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস নামে পরিচিত আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য সময়টা ভালো নয়: জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকার দেশটিতে বিশেষত শহরাঞ্চল এবং গোলযোগপূর্ণ পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর অঞ্চলেও এই লড়াই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১২ হাজার মানুষ নিহত এবং ৮০ লাখেরও বেশি লোক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
লড়াইয়ের শুরু থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের ঘটনাগুলো ওই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। সম্প্রতি সাহায্যদাতা গোষ্ঠী ও অধিকার পর্যবেক্ষকরা অনেকাংশে ঢুকতে পারছেন না, এমন কিছু স্থানের নির্যাতনের নথিতুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে গাজা ও ইউক্রেনের মতো জায়গায় যুদ্ধের কারণে এ সংঘাতের প্রভাব অনেকটা ঢাকা পড়ে গেছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তত ১১৮ জন ধর্ষণসহ যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন – যার বেশিরভাগই বাড়িতে ও রাস্তায় আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, এক নারীকে একটি ভবনে আটকে রাখা হয় এবং ৩৫ দিন ধরে তাকে বারবার সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়।
উভয় পক্ষের মধ্যেই শিশু সৈনিক নিয়োগ করা হয়েছে বলেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে ওই প্রতিবিদেনে।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের দ্রুত, পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভোলকার টার্ক বলেন, ‘এসব লঙ্ঘনের কিছু ঘটনা যুদ্ধাপরাধের শামিল।’
এই প্রতিবেদন ৩০০ জনেরও বেশি ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকারের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ইথিওপিয়া ও চাদে অনেক সুদানি পালিয়ে গেছে। সেখান থেকেও কিছুটা সংগ্রহ করা হয়েছে। পাশাপাশি সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোর ফটোগ্রাফ, ভিডিও ও উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার লক্ষ্য রয়েছে বাংলাদেশের: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
গত সপ্তাহে দেশটির উত্তর কোরদোফান রাজ্য থেকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর বরাত দিয়ে জাতিসংঘ জানিয়েছে, সুদানের সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরা ব্যক্তিরা প্রতিদ্বন্দ্বী আধাসামরিক গোষ্ঠীর সদস্যদের বিচ্ছিন্ন মাথা বহন করছে।
টার্ক বলেন, ‘প্রায় এক বছর ধরে সুদান থেকে মৃত্যু, দুর্ভোগ ও হতাশার বিবরণ বেরিয়ে আসছিল। অর্থহীন সংঘাত, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে যার কোনো শেষ নেই।’
তিনি বলেন, ‘বন্দুক বন্ধ করতে হবে এবং বেসামরিক নাগরিকদের অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।’
শুক্রবার জেনেভায় জাতিসংঘের ব্রিফিংয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কেনিয়ার নাইরোবি থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের আঞ্চলিক মুখপাত্র সাইফ মাগানগো বলেন, '(সুদানে) বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা এখন ৮০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, যা সবার জন্য উদ্বেগের বিষয় হওয়া উচিত।’
এর আগে ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, সুদানের সংঘাতের কোনো সামরিক সমাধান নেই। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অব্যাহত লড়াই কোনো সমাধান বয়ে আনবে না, ‘তাই আমাদের অবশ্যই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি বন্ধ করতে হবে।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি ভূমি দখলের বিষয়ে ইসরাইলের শুনানি শুরু জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতে
গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন প্রচেষ্টা চলছে: ইসরায়েলি নেতা গান্টজ
গাজায় যুদ্ধ থামাতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর নতুন প্রচেষ্টা চলছে। বুধার রাতে এ তথ্য জানিয়েছেন ইসরায়েলের যুদ্ধ মন্ত্রিসভার এক সদস্য বেনি গাণ্টজ।
সাবেক সেনাপ্রধান ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্টজ বলেন, 'প্রাথমিক পদক্ষেপ এ বিষয়ে সামনে এগিয়ে যেতে সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।’
এক সপ্তাহ আগে আলোচনা স্থগিত হওয়ার পর নতুন করে যুদ্ধবিরতি আলোচনার ইঙ্গিত দিল ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: গাজায় বাংলাদেশের মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ায় মিশরকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ধন্যবাদ
তবে গান্টজ তার প্রতিশ্রুতির পুনরাবৃত্তি করে বলেন, হামাস অবশিষ্ট ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিতে রাজি না হলে আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে জনাকীর্ণ দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় স্থল আক্রমণ চালাবে ইসরায়েল।
গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ ২৩ লাখ জনসংখ্যার ৮০ শতাংশকে তাদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করেছে। বেশিরভাগই ইসরায়েলের নির্দেশে দক্ষিণে পালিয়েছে এবং প্রায় ১৫ লাখ মিশর সীমান্তের কাছে রাফায় গাদাগাদি করে রয়েছে।
গাজাজুড়ে রাতভর ইসরায়েলি হামলায় বুধবার পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গত ৭ অক্টোবর হামাস নেতৃত্বাধীন শসস্ত্র বাহিনী ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়ে প্রায় ১২০০ মানুষকে হত্যা ও প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করার পর এই যুদ্ধ শুরু হয়। এখনও আটক ১৩০ জন বন্দির প্রায় এক চতুর্থাংশ মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর জবাবে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের বেশির ভাগ এলাকা ধ্বংস করে দিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ২৯ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত: গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সমর্থন দিতে ইউক্রেনে ৮০০টিরও বেশি ড্রোন পাঠাবে কানাডা
কানাডার সরকার সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বলেছে, তারা এই বসন্তের শুরু থেকেই ইউক্রেনে ৮০০টিরও বেশি ড্রোন পাঠাবে।
ডিপার্টমেন্ট অব ন্যাশনাল ডিফেন্স এক বিবৃতিতে বলেছে, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেনের জন্য ড্রোন গুরুত্বপূর্ণ সক্ষমতা হয়ে উঠেছে। ড্রোনগুলো নজরদারি ও তথ্য সংগ্রহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং যুদ্ধাস্ত্রসহ সরবরাহ স্থানান্তরের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে।
এগুলোর জন্য ৯৫ মিলিয়ন কানাডিয়ান ডলারের (৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বেশি খরচ হবে এবং এগুলো ইউক্রেনের জন্য পূর্বে ঘোষিত ৫০০ মিলিয়ন কানাডিয়ান (৩৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) সামরিক সহায়তার অংশ।
আরও পড়ুন: ক্রেমলিনের শত্রু অ্যালেক্সেই নাভালনির মৃত্যু পশ্চিমা ক্ষোভকে উস্কে দিয়েছে, তবে পুতিনকে থামানো যায়নি
স্কাইরেঞ্জার আর৭০ মাল্টি-মিশন মানবহীন এরিয়াল সিস্টেমগুলো অন্টারিও প্রদেশের ওয়াটারলুতে অবস্থিত টেলিডাইন-এর তৈরি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের দুই বছর পূর্তির কয়েকদিন আগে এই ঘোষণা এলো।
কানাডা এর আগে ইউক্রেনকে ১০০টি উচ্চ-রেজুলেশনের ড্রোন ক্যামেরা দিয়েছিল এবং গত দুই বছরে সামরিক সহায়তায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার (১ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: রুশ অধিকৃত ইউক্রেনের বাজারে গোলাবর্ষণে নিহত ১৩
ইউক্রেনে ক্যাফেতে রুশ হামলায় ৫১ জন নিহত
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ২৯ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত: গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজা উপত্যকায় ২৯ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) অঞ্চলটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানান, এটি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক সহিংসতার আরেকটি ভয়াবহ মাইলফলক।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসের বিরুদ্ধে ‘পুরোপুরি বিজয়’ অর্জন না হওয়া পর্যন্ত আক্রমণ অব্যাহত থাকবে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সৈন্যরা শিগগিরই মিশরীয় সীমান্তের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় চলে যাবে। সেখানে গাজার অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ২৩ লাখ লোক আশ্রয় নিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ১৩ জনের মৃত্যু; রাফাহ অভিযান নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৭টি লাশ হাসপাতালে আনা হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ নিয়ে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৯২ জনে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিহতদের মধ্যে কতজন বেসামরিক ও কতজন সৈনিক তার হিসাব দিতে পারেনি। তবে নিহতদের দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু বলে জানায়। এ যুদ্ধে ৬৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
গাজায় হামাস পরিচালিত সরকারের অংশ হলেও হতাহতের বিস্তারিত রেকর্ড রাখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর হিসাব গাজায় আগের যুদ্ধগুলোর পরিসংখ্যান জাতিসংঘের সংস্থা, স্বাধীন বিশেষজ্ঞ ও ইসরাইলের নিজস্ব পরিসংখ্যানের সঙ্গে অনেকাংশে মিলে গেছে।
গত ৭ অক্টোবর হামাস নেতৃত্বাধীন শসস্ত্র বাহিনী গাজা থেকে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষকে হত্যা করে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে।
ইসরায়েলের হাতে বন্দি ২৪০ ফিলিস্তিনির বিনিময়ে নভেম্বরে সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতিতে শতাধিক বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়। হামাসের কাছে এখনও প্রায় ১৩০ জন জিম্মি রয়েছে, যাদের এক চতুর্থাংশ নিহত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০০৭ সাল থেকে হামাস শাসিত অবরুদ্ধ ভুখণ্ডে সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ও ধ্বংসাত্মক সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।
ইসরায়েল বলছে, তারা কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ১০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি জঙ্গিকে হত্যা করেছে। সামরিক বাহিনী বলছে, তারা বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি এড়ানোর চেষ্টা করে। এত বেশি মৃত্যুর জন্য হামাসকে দায়ী তারা। কারণ এই গোষ্ঠী ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকায় হামলা করে। সামরিক বাহিনী জানায়, অক্টোবরের শেষ দিকে স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত তাদের ২৩৬ সেনা নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের মতে, যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। গাজার প্রায় ৮০ শতাংশ ফিলিস্তিনিকে তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত করেছে এবং জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ অনাহারে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গাজায় গণহত্যা বন্ধ করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
নেতানিয়াহুর তিন সদস্যবিশিষ্ট যুদ্ধ-মন্ত্রিসভার সদস্য ও অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল বেনি গান্টজ রবিবার হুঁশিয়ারি করেন, মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া হলে এই আক্রমণ রাফা পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাসের পবিত্র মাসটি প্রায়ই এই অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধির একটি সময়। আগামী ১০ মার্চ থেকে রোজা শুরু হওয়ার সম্ভানা রয়েছে।
ইসরায়েল বলেছে যে, তারা রাফাহ থেকে বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তবে বিধ্বস্ত অঞ্চলের কোথায় তারা যাবে তা পরিষ্কার নয়, যার বিশাল অঞ্চল সমতল হয়ে গেছে। মিশর সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে এবং সতর্ক করে দিয়েছে যে ফিলিস্তিনিদের যেকোনো গণ অনুপ্রবেশ ইসরায়েলের সঙ্গে কয়েক দশকের পুরোনো শান্তি চুক্তিকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
ইসরাইলের শীর্ষ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা এখনো আরেকটি যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তির মধ্যস্থতা করতে মিসর ও কাতারের সঙ্গে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে। কিন্তু সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সেই প্রচেষ্টা থমকে গেছে বলে মনে হচ্ছে।
নেতানিয়াহু হামাসের 'বিভ্রান্তিকর' দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। হামাস বলছে, ইসরাইল যুদ্ধ শেষ না করা পর্যন্ত এবং গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেবে না। সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের সদস্যসহ শত শত ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তিও দাবি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজার রাফায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়াল
ফিলিস্তিনি ভূমি দখলের বিষয়ে ইসরাইলের শুনানি শুরু জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতে
৫৭ বছর ধরে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ভূমি ইসরায়েলের দখল করার বৈধতা নিয়ে সোমবার জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে ঐতিহাসিক শুনানি শুরু হয়েছে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অনুরোধে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে আইনি যুক্তিতর্ক ও শুনানি শুরু হওয়ার পর ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিরা প্রথম বক্তব্য রাখবেন।
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে আদালতের গ্রেট হল অব জাস্টিসে মামলাটি শুরু হলেও অধিকৃত পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা ও পূর্ব জেরুজালেমকে সংযুক্ত করে ইসরায়েলের অবাধ নিয়ন্ত্রণের বিষয়গুলোও উল্লেখ করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনি আইনি দল আন্তর্জাতিক বিচারক প্যানেলকে বলবে যে ইসরায়েল আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেছে। তারা দখলকৃত বিশাল ভূখণ্ড এবং ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার হরণ করেছে এবং জাতিগত বৈষম্য ও বর্ণবাদী ব্যবস্থা চাপিয়ে দিয়েছে।
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতিসংঘের সংগঠন বিভাগের প্রধান ওমর আওয়াদাল্লাহ বলেন, 'আমরা আদালতের কাছ থেকে নতুন কথা শুনতে চাই।’
সোমবার ফিলিস্তিনিদের আদালতে ভাষণ দেওয়ার পর নজিরবিহীন ৫১টি দেশ ও তিনটি আন্তর্জাতিক সংস্থা বক্তব্য রাখবে। এ বিষয়ে মতামত জানাতে কয়েক মাস সময় নিতে পারে আদালত।
শুনানির সময় ইসরায়েলের কথা বলার কথা নয়, তবে তারা লিখিত বিবৃতি জমা দিতে পারে।
হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক এবং ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো ইউভাল শানি বলেন, শান্তি চুক্তি না থাকায় ইসরায়েল নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে চলমান দখলদারিত্বকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করবে।
তারা হামাসের নেতৃত্বে ৭ অক্টোবরের হামলার দিকে ইঙ্গিত করতে পারে। দক্ষিণ ইসরায়েল জুড়ে ওই হামলায় ১২০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে ওই অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে ফিলিস্তিনি ও নেতৃস্থানীয় মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর যুক্তি হলো, এই দখলদারিত্ব আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থার চেয়েও অনেক বেশি। তারা বলছেন, এটি একটি বর্ণবাদী ব্যবস্থায় রূপান্তরিত হয়েছে। এর মাধ্যমে অধিকৃত ভূমিতে বসতি নির্মাণের মাধ্যমে উৎসাহিত করা হয়েছে, যা ফিলিস্তিনিদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা দেয় এবং জর্ডান নদী থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত ইহুদি আধিপত্য বজায় রাখতেই করা হয়েছে। এদিকে ইসরায়েল বর্ণবাদের যেকোনো অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকা দখল করে নেয় ইসরায়েল। ফিলিস্তিনিরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য তিনটি ভুখণ্ডই চায়। ইসরায়েল পশ্চিম তীরকে বিতর্কিত অঞ্চল বলে মনে করে, যার ভবিষ্যৎ আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত হওয়া উচিত।
পর্যবেক্ষক গ্রুপ পিস নাউয়ের মতে, তারা পশ্চিম তীর জুড়ে ১৪৬টি বসতি নির্মাণ করেছে, যার মধ্যে অনেকগুলো পুরোপুরি উন্নত শহরতলি এবং ছোট শহরগুলোর অনুরূপ। এসব বসতিতে পাঁচ লাখেরও বেশি ইহুদি বসবাস করে এবং প্রায় ৩০ লাখ ফিলিস্তিনি ওই অঞ্চলে বসবাস করে।
ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেমকে সংযুক্ত করে এবং পুরো জেরুজালেমকে তাদের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করে। পূর্ব জেরুজালেমে নির্মিত বসতিগুলোতে অতিরিক্ত দুই লাখ ইসরায়েলি বসবাস করে। যেগুলোকে ইসরায়েল তাদের রাজধানীর প্রতিবেশী হিসেবে বিবেচনা করে। শহরের ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা নানা বৈষম্যের মুখোমুখি হয়, যা তাদের পক্ষে নতুন বাড়ি তৈরি করা বা বিদ্যমান বাড়িগুলো সম্প্রসারণ করা কঠিন করে তোলে।
ইসরায়েল ২০০৫ সালে গাজা থেকে তার সমস্ত সৈন্য ও বসতি স্থাপনকারীদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। তবে অঞ্চলটির আকাশসীমা, উপকূলরেখা ও জনসংখ্যা নিবন্ধনের ক্ষেত্রে তাদের নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত রেখেছিল। ২০০৭ সালে ফিলিস্তিনি শসস্ত্র গোষ্ঠী হামাস গাজার ক্ষমতা দখল করলে সেখানে অবরোধ আরোপ করে ইসরায়েল ও মিসর।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এসব বসতিকে অবৈধ বলে মনে করে। শহরের সবচেয়ে স্পর্শকাতর পবিত্র স্থান পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলি দখলদারিত্বকে স্বীকৃতি দেয়নি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
ইসরায়েলি নীতি নিয়ে আদালতকে পরামর্শমূলক মতামত দিতে বলার ঘটনা এটাই প্রথম নয়।
২০০৪ সালে তারা বলেছিল, পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরের কিছু অংশের মধ্য দিয়ে ইসরায়েল যে বিচ্ছিন্ন বেষ্টনী নির্মাণ করেছে তা 'আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী'। একই সঙ্গে ইসরাইলকে অবিলম্বে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা। ইসরায়েল এই রায় উপেক্ষা করেছে।
এ ছাড়া গত মাসের শেষের দিকে আদালত গাজায় তাদের অভিযানে মৃত্যু, ধ্বংসযজ্ঞ ও যেকোনো ধরনের গণহত্যা ঠেকাতে ইসরাইলকে সম্ভাব্য সব কিছু করার নির্দেশ দেয়। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা মামলার প্রাথমিক পর্যায়ে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে, যে অভিযোগ ইসরায়েল অস্বীকার করেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতাসীন দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরে গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের নীতিকে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘু শাসনের বর্ণবাদী শাসনের সঙ্গে তুলনা করেছে, যা ১৯৯৪ সালে শেষ হওয়ার আগে বেশিরভাগ কৃষ্ণাঙ্গকে "স্বদেশে" আটকে রেখেছিল।
উদ্বেগ ও ‘সিলভার লাইনিং’ সন্ধানের মধ্যদিয়ে শেষ হলো মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন
নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিন দিনের আলোচনার পর রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) শেষ হয়েছে ৬০তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন। এবারের সম্মেলনে ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ ও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পশ্চিমা নেতারা।
আয়োজকরা ‘একটি সত্যিকারের ঝুঁকির কথা তুলে ধরেছেন যে, আরও বেশি সংখ্যক দেশ ক্ষতিকর পরিস্থিতিতে নিপতিত, যা সবার জন্যই খারাপ।’
শুক্রবার সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, গত ৭৫ বছরের মধ্যে যে কোনো সময়ের চেয়ে বিশ্ব সম্প্রদায় এখন অনেক বেশি খন্ডিত ও বিভক্ত।
আরও পড়ুন: গাজায় গণহত্যা বন্ধ করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
ইউক্রেন সংকট এবং গাজা সংঘাতসহ আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে অংশগ্রহণকারীরা বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতির মধ্যে একটি ‘সিলভার লাইনিং’(খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে ভালো কিছুর সন্ধান বা আশাবাদী হওয়া) খুঁজছিলেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এবার গ্লোবাল সাউথ থেকে বেশি সংখ্যক প্রতিনিধিকে এই ইভেন্টে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা পাশ্চাত্য কর্তৃক নির্ধারিত একটি বৈশ্বিক ব্যবস্থার সংস্কারের বিষয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করেন।
সম্মেলনে বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিয়া মোটলি বলেন, 'একটি বহুপক্ষীয় ব্যবস্থায় আওয়াজ তুলতে সক্ষম হওয়া দরকার।’
আরও পড়ুন: ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ নিচ্ছে বিবদমান পক্ষগুলো: মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব
পাপুয়া নিউগিনিতে উপজাতিদের সহিংসতায় ৫৩ জন নিহত
পাপুয়া নিউগিনিতে উপজাতিদের সহিংসতায় অন্তত ৫৩ জন নিহত হয়েছেন। রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সংঘর্ষে এই হতাহত হয় বলে অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে দেশটির পুলিশ।
রয়্যাল পাপুয়া নিউ গিনির কনস্টাবুলারির ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেনডেন্ট জর্জ কাকাস অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনকে বলেন, একটি উপজাতি, তাদের মিত্র ও ভাড়াটে সৈন্যরা রবিবার দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশটির প্রত্যন্ত পার্বত্য অঞ্চলের এনগা প্রদেশে প্রতিবেশী একটি উপজাতির ওপর হামলা চালায়।
জঙ্গলে পালিয়ে যাওয়া আহতদের মধ্যে আরও লাশ পাওয়া যাবে বলে মনে করছে পুলিশ।
এবিসিকে কাকাস বলেন, 'এই উপজাতিদের হত্যা করা হয়েছে সারা গ্রামাঞ্চলে এমনকি ঝোপঝাড় জুড়েও।’
যুদ্ধক্ষেত্র, রাস্তা ও নদীর পাড় থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ট্রাকে বোঝাই করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
কাকাস বলেন, কর্তৃপক্ষ এখনও 'গুলিবিদ্ধ, আহত এবং ঝোপের মধ্যে পালিয়ে যাওয়াদের' গণনা করছে।
তিনি বলেন, 'আমরা ধারণা করছি এ সংখ্যা ৬০ বা ৬৫ পর্যন্ত হতে পারে।’
কাকাস বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে এ ধরনের সহিংসতায় এটি সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা হতে পারে। কারণ এই এলাকায় খুব কম রাস্তা রয়েছে এবং বেশিরভাগ বাসিন্দাই জীবীকার জন্য কৃষির ওপর নির্ভরশীল।
গণহত্যার বিষয়ে রাজধানী পোর্ট মোর্সবির পুলিশের কাছে অ্যাসোসিয়েটস প্রেস (এপি) জানতে চাইলে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।
পাপুয়া নিউ গিনি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অংশে ৮০০ ভাষাসহ ১ কোটি মানুষের একটি বৈচিত্র্যময়, উন্নয়নশীল দেশ।
চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা সম্পর্ক চাইছে বলে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা তার সরকারের জন্য ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, তার সরকার পাপুয়া নিউ গিনিকে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে। দেশটি অস্ট্রেলিয়ার নিকটতম প্রতিবেশী এবং অস্ট্রেলিয়ার একক বৃহত্তম বৈদেশিক সহায়তা গ্রহীতা।
আলবানিজ বলেন, 'পাপুয়া নিউগিনি থেকে যে খবর এসেছে তা খুবই বিরক্তিকর।’
আরও পড়ুন: সুপার টুয়েলভে খেলার আশায় পাপুয়া নিউগিনির মুখোমুখি বাংলাদেশ
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পিএনজিতে আমাদের বন্ধুদের সহায়তা করার জন্য বাস্তবিক অর্থে যে কোনও সহায়তা সরবরাহ করতে প্রস্তুত রয়েছি।’
আলবানিজ বলেন, অস্ট্রেলিয়া ইতোমধ্যে পাপুয়া নিউ গিনির জন্য ‘যথেষ্ট সমর্থন’ দিয়েছে এবং দেশের পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে সহায়তা করছে।
প্রধানমন্ত্রী জেমস মারাপের প্রশাসন টিকিয়ে রাখায় ২০২২ সালের নির্বাচনের পর থেকে এনগা অঞ্চলে উপজাতি সহিংসতা তীব্র হয়েছে। নির্বাচন এবং তার সাথে জালিয়াতি এবং প্রক্রিয়াগত অসঙ্গতির অভিযোগ সর্বদা সারা দেশে সহিংসতার সূত্রপাত করেছে।
এনগার গভর্নর পিটার ইপাটাস বলেছেন, উপজাতিদের লড়াই শুরু হতে যাচ্ছে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।
ইপাটাস এবিসিকে বলেন, ‘প্রাদেশিক দৃষ্টিকোণ থেকে, আমরা জানতাম যে এই লড়াই হতে চলেছে এবং আমরা গত সপ্তাহে নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক করেছিলাম যাতে এটি না ঘটে তা নিশ্চিত করার জন্য তারা যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে।’
ইপাতাস এই সহিংসতাকে ‘প্রদেশে আমাদের জন্য খুব, খুব দুঃখজনক এবং এটি দেশের জন্য একটি খারাপ জিনিস’হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
আরও পড়ুন: পাপুয়ার স্বাধীনতাকামীদের সাথে ইন্দোনেশিয়ার আর্মিদের সংঘর্ষে নিহত ৪
ক্রেমলিনের শত্রু অ্যালেক্সেই নাভালনির মৃত্যু পশ্চিমা ক্ষোভকে উস্কে দিয়েছে, তবে পুতিনকে থামানো যায়নি
ক্রেমলিনের প্রধান শত্রু অ্যালেক্সেই নাভালনির মৃত্যুতে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমা ক্ষোভের প্রতি কান দিচ্ছেন না। কারণ তিনি আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে তার ২৪ বছরের শাসনের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং রাশিয়াজুড়ে পুলিশ যেকোনো প্রতিবাদ প্রচেষ্টা দমন করছে।
নাভালনির মৃত্যু ও ইউক্রেনে ক্রেমলিনের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের কারণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। কিন্তু ইউক্রেনের জন্য মার্কিন সহায়তা কংগ্রেসে আটকে রয়েছে এবং ইউরোপে ন্যাটো মিত্ররা শূন্যস্থান পূরণের জন্য লড়াই করছে। তাই অনেকে ভাবছেন যে পশ্চিমারা ক্রেমলিনের নির্মম নেতাকে থামাতে আসলে কী করতে পারবে? কারণ এর আগে একাধিক বার তাকে শাস্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে তারা।
লন্ডনভিত্তিক মায়াক ইন্টেলিজেন্স কনসালটেন্সি ফার্মের প্রধান মার্ক গালিওটি ইউটিউব মন্তব্যে উল্লেখ করেছেন, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনো বড় মূল্য নেই।’ কারণ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি নিষেধাজ্ঞা পাওয়া দেশগুলোর একটি দেশ হলো রাশিয়া।
গালিওত্তি বলেন, এর পরিবর্তে পশ্চিমাদের উচিত নাভালনির মিত্রদের সঙ্গে কাজ করা এবং ক্রেমলিনের প্রচারণা মোকাবিলায় সাধারণ রুশদের তথ্য চ্যানেলে প্রবেশাধিকার পেতে সহায়তা করা।
নাভালনির মৃত্যুকে পুতিনের 'হাইব্রিড কর্তৃত্ববাদ' থেকে 'নৃশংস ও ধ্বংসাত্মক স্বৈরতন্ত্র'তে রূপান্তরের আরেকটি পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন গালিওত্তি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো মিত্ররা ইউক্রেনের পক্ষে সমর্থন জোরদার করার জন্য আরও পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করছে। যেখানে রাশিয়ান সামরিক বাহিনী চার মাসের ভয়াবহ লড়াইয়ের পরে ইউক্রেনীয় সেনাদের মূল পূর্বাঞ্চলীয় শক্ত ঘাঁটি আভদিভকা থেকে পিছু হটতে বাধ্য করেছে। মিত্ররা রাশিয়ার কাছে যুদ্ধের ব্যয় বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে যাতে পুতিনকে পিছু হটতে বাধ্য করা যায়।
তবে ৭১ বছর বয়সী নেতা তার কোনো অর্জন ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে গত সপ্তাহে ফক্স নিউজের সাবেক উপস্থাপক টাকার কার্লসনের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, পশ্চিমারা তার শর্তে 'আজ হোক বা কাল হোক' কোনো না কোনো চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে বাধ্য হবে।
বেলারুশে সাবেক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ও লন্ডনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের রাশিয়া ও ইউরেশিয়াবিষয়ক সিনিয়র ফেলো নাইজেল গোল্ড-ডেভিস বলেন, নাভালনির মৃত্যু পুতিনের 'সম্পূর্ণ নির্মমতা ও অবজ্ঞা... পশ্চিমা ও আন্তর্জাতিক উভয় পরিপ্রেক্ষিতে।’
শুক্রবার মিউনিখে এক নিরাপত্তা সম্মেলনে পশ্চিমা নেতারা জড়ো হওয়ার পর নাভালনির মৃত্যুর ঘোষণা দেয় রাশিয়া।
গোল্ড-ডেভিস বলেন, পুতিন ‘পশ্চিমাদের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। আমরা যখন (ইউক্রেন) যুদ্ধের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে দাঁড়িয়ে আছি, তিনি আবারও পশ্চিমা সংকল্পের পরীক্ষা নিচ্ছেন।’
গোল্ড-ডেভিস বলেন, নাভালনির মৃত্যু কংগ্রেসে ইউক্রেনের জন্য সহায়তার বিরোধিতা করা মার্কিন রিপাবলিকানদের জন্য "জেগে ওঠার আহ্বান" হিসেবে কাজ করা উচিত। একই সঙ্গে ইউরোপীয় ন্যাটো মিত্রদের ইউক্রেনকে তাদের সহায়তা জোরদার করতে উৎসাহিত করা উচিত।
তিনি বলেন, 'শেষ পর্যন্ত এটা নির্ভর করছে পশ্চিমারা কী শিক্ষা নেয় তার ওপর।’
কিন্তু নাভালনির মৃত্যু শুক্রবার মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারকে ইউক্রেনের জন্য প্রস্তাবিত ৬১ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজের প্রতিশ্রুতি দিতে উদ্বুদ্ধ করেনি, যা ইউক্রেনের বিজয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, সোভিয়েত একনায়ক জোসেফ স্ট্যালিনের পর সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা রুশ নেতা পুতিন ক্রেমলিনবান্ধব দলগুলোর মনোনীত তিন প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। আরও ছয় বছরের জন্য ক্ষমতায় আসছেন তিনি। উদারপন্থী রাজনীতিবিদ বরিস নাদেজদিন, যিনি ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানকে তার প্রধান নির্বাচনি স্লোগান বানিয়েছিলেন, নির্বাচনি কর্মকর্তারা তাকে নির্বাচনে অংশ নিতে নিষেধ করেছিলেন।
‘নির্বাচনে পুতিনের জয় নিয়ে সংশয় না থাকলেও নাভালনির মৃত্যু প্রমাণ করে 'তিনি নাভালনিকে কতটা হুমকি হিসেবে দেখছেন', বলেন গোল্ড-ডেভিস।
তিনি আরও বলেন, ‘ক্রেমলিন এখন পর্যন্ত যেভাবে নির্বাচনি প্রচার চালিয়েছে তাতে বোঝা যায় যে তারা আত্মবিশ্বাসী নয়। এমনকি কারাগার থেকেও নাভালনি তার কণ্ঠস্বর বের করতে সক্ষম হয়েছেন।’
গোল্ড-ডেভিস বলেন, ১৫-১৭ মার্চের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে নাভালনির মৃত্যু সম্ভবত ভোটের আগে 'রাশিয়ার বিরোধীদের যেকোনো চিহ্নকে মুছে ফেলা ও চূর্ণ করার চূড়ান্ত কাজ' হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল।
কার্নেগি রাশিয়া ইউরেশিয়া সেন্টারের জ্যেষ্ঠ ফেলো তাতিয়ানা স্তানোভায়া বলেন, আগামী মাসে নিশ্চিত বিজয় সত্ত্বেও পুতিন এখনও নির্বাচনে পশ্চিমা হস্তক্ষেপের আশঙ্কা করছেন এবং নাভালনিকে 'জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় স্বার্থ ক্ষুণ্ন করার জন্য পশ্চিমাদের দ্বারা চালিত প্রতিপক্ষ' হিসেবে দেখেন।
একটি মন্তব্যে তিনি লিখেছেন, ‘তিনি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করেন যে পশ্চিমারা স্থিতিশীলতা হ্রাস করতে এবং তার প্রচারের রাজনৈতিক ক্ষতি করতে এই মুহূর্তটি ব্যবহার করবে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘এটি তাকে যেকোনো প্রতিকূল প্রকাশের বিরুদ্ধে আরও কঠোর, আরও দমনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে বাধ্য করবে, যা তিনি এসব হস্তক্ষেপের বহিরাগত প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত করতে পারেন। এটি বিশেষ করে গণমাধ্যম ও সামাজিক নেটওয়ার্কগুলোর উপর হস্তক্ষেপ করতে পারে।’
৪৭ বছর বয়সি নাভালনি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পুতিনের জন্য বড় হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। ২০১১-২০১২ সালে মস্কোতে পুতিনের শাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় ব্যাপক বিক্ষোভ জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। সরকারের দুর্নীতি উন্মোচন করার জন্য সফল প্রচার চালিয়েছিলেন।
গালেওত্তি বলেন, অনেক রুশ নাগরিকের কাছে নাভালনি ছিলেন আশার প্রতীক। এমনকি প্রত্যন্ত আর্কটিক কারাগার থেকেও “ভবিষ্যতের সুন্দর রাশিয়ার” একটি দর্শন পৌঁছে দিয়েছিলেন। রাশিয়ানদের প্রতি ক্রেমলিনের বার্তা "কেবল বেঁচে থাকুন, কেবল আপনার মাথা নিচু রাখুন” অগ্রাহ্য করে এটি একটি স্লোগান ছিল।
২০২০ সালে নাভালনি সাইবেরিয়ায় নার্ভ এজেন্টের বিষক্রিয়া থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছিলেন, যার জন্য তিনি ক্রেমলিনকে দায়ী করেছিলেন। তিনি জার্মানিতে সুস্থ হয়ে উঠলেও ২০২১ সালের জানুয়ারিতে দেশে ফেরার পরপরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তিনি কারাগারে ছিলেন, চরমপন্থার অভিযোগে তিনবার দোষী সাব্যস্ত হন এবং ১৯ বছরের কারাদণ্ড দেওেয়া হয় তাকে।
নাভালনির মৃত্যুর বিষয়ে পুতিন কোনো মন্তব্য করেননি এবং ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ ক্রেমলিনকে দায়ী করে পশ্চিমা নেতাদের বিবৃতিকে 'জঘন্য ও অগ্রহণযোগ্য' বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
কিন্তু পশ্চিমা নেতারা ক্রেমলিনের এ ধরনের যেকোনো মন্তব্যকে সন্দেহের চোখে দেখছেন। যেমন সন্দেহের চোখে দেখছেন ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে সৈন্যদের সংক্ষিপ্ত বিদ্রোহের দুই মাস পর ভাড়াটে সেনাপ্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের বিমান দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার বিষয়টি। গত আগস্টের এই দুর্ঘটনাকে ব্যাপকভাবে বিদ্রোহের জন্য ক্রেমলিনের প্রতিশোধ হিসেবে দেখা হয়েছিল। ২০০০ সালে তার প্রথম নির্বাচনের পর থেকে পুতিনের শাসনের জন্য সবচেয়ে গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল এটি।
গোল্ড-ডেভিস বলেন, ‘প্রিগোজিনের মৃত্যুর মতোই নাভালনির মৃত্যুও প্রমাণ করে পুতিন কত নির্মম।’
উপহার-অনুগ্রহ নয়, রাষ্ট্রকে একটি আন্তর্জাতিক আইনি অধিকার মনে করে ফিলিস্তিনিরা
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার বলেছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কোনো উপহার বা অনুগ্রহ নয়, এটি আন্তর্জাতিক আইন ও বৈধ আন্তর্জাতিক রেজুলেশনের অধিকার।
যুক্তরাষ্ট্র ও আরব দেশগুলোর একটি ছোট গ্রুপের 'ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য একটি নির্ধারিত সময়সূচি' নিয়ে চলমান আলোচনার বিষয়ে বুধবার ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এরপরেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ প্রত্যাখ্যান করার প্রতিক্রিয়ায় এটি বলেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপে নেতানিয়াহু বলেন, 'ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে স্থায়ী সমঝোতার আন্তর্জাতিক নির্দেশনা আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।’
আরও পড়ুন: রাফাহতে ইসরায়েলি হামলায় আরও ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত
শুক্রবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, 'আন্তর্জাতিক ও জাতিসংঘের স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করার ঘোষণা দিয়ে নেতানিয়াহু আবারও দখলদারিত্বের অবসান ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অধিকারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক ও আমেরিকান ঐকমত্যকে চ্যালেঞ্জ করেছেন।’
বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ব ও ফিলিস্তিনি জনগণের রাষ্ট্র গঠনের বিষয়ে যেকোনো প্রচেষ্টা বা ধারণা ব্যর্থ করে দিতে নেতানিয়াহু তার ঐতিহ্যগত শর্ত ফিলিস্তিনি জনগণ ও বিশ্বের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। একই সঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ প্রত্যাখান করেন।
নেতানিয়াহুর এই অবস্থানকে 'শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে তুলনীয় এবং জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন ও সংযুক্তির প্রকৃত লক্ষ্যগুলোর একটি স্পষ্ট ব্যাখ্যা' হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আরও পড়ুন: গাজার রাফায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়াল
সবার উন্নত ভবিষ্যৎ গড়তে বিজ্ঞানে লিঙ্গ সমতা জরুরি: গুতেরেস
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, সবার জন্য উন্নত ভবিষ্যৎ গড়তে বিজ্ঞানে লিঙ্গ সমতা অপরিহার্য।
রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ‘বিজ্ঞানে নারী ও মেয়ে’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'দুঃখজনকভাবে, নারী ও মেয়েরা পদ্ধতিগত বাধা ও পক্ষপাতিত্বের মুখোমুখি হচ্ছে যা তাদের বিজ্ঞানে ক্যারিয়ার গড়তে বাধার সম্মুখীন করছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্য অথবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ও উদ্ভাবনে নারী ও মেয়েদের সমানভাবে অংশগ্রহণ অপরিহার্য। তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞান যাতে সবার উপকারে আসে তা নিশ্চিত করার এটাই একমাত্র উপায়।’
বর্তমানে, বিশ্বব্যাপী বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের মাত্র এক তৃতীয়াংশ নারী এবং পুরুষদের তুলনায় তারা কম তহবিল পান, প্রকাশনাগুলোতে কম প্রতিনিধিত্ব করেন এবং প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিনিয়র পদে সংখ্যায় কম অধিষ্ঠিত।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুকে জাতিসংঘের আলোচ্যসূচির শীর্ষে রাখতে মহাসচিবের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুরোধ
কিছু কিছু জায়গায়, নারী ও মেয়েদের শিক্ষার সীমিত বা কোন সুযোগ নেই। গুতেরেস এই পরিস্থিতিকে কেবল সংশ্লিষ্ট সমাজের জন্যই ক্ষতিকর নয়, বরং মানবাধিকারের ভয়াবহ লঙ্ঘন বলে বর্ণনা করেছেন।
তিনি আরও বলেন,‘লিঙ্গ বৈষম্য মোকাবিলার জন্য লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা এবং রোল মডেলদের প্রচার করা দরকার যা মেয়েদের বৈজ্ঞানিক ক্যারিয়ার গড়তে উৎসাহিত করে। বিজ্ঞানে নারীদের অগ্রগতিকে উৎসাহিত করে এমন প্রোগ্রামগুলো বিকাশ করা এবং নারীদের প্রতিভা লালন করে এমন কাজের পরিবেশ তৈরি করা- বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীদের জন্য।’
জাতিসংঘ প্রধান বলেন, ‘নারী ও মেয়েরা বিজ্ঞানের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এখন সময় এসেছে স্বীকৃতি দেওয়ার, যা অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে। প্রতিটি নারী ও মেয়েকে তার সত্যিকারের সম্ভাবনা পূরণ করতে দিন।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য সময়টা ভালো নয়: জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী