বিশ্ব
উত্তর গাজায় সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের হত্যার নিন্দা জাতিসংঘ প্রধানের
উত্তর গাজায় সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ১০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানান জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক।
উত্তর গাজায় হামলার নিন্দা জানিয়ে দুজারিক বলেন, ‘গাজার উত্তরাঞ্চলের হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন মহাসচিব, যেখানে জীবন রক্ষা করার জন্য সাহায্য চাইতে গিয়ে ১০০ জনেরও বেশি লোক নিহত বা আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। গাজার আহত বেসামরিক নাগরিকদের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন, যার মধ্যে অবরুদ্ধ উত্তরাঞ্চলের লোকজনও রয়েছে। সেখানে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ত্রাণ সরবরাহ করতে পারেনি জাতিসংঘ।’
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার গাজা উপত্যকার পশ্চিমে সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলিবর্ষণ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ১০৪ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়। আহত হয় ৭৬০ জনেরও বেশি।
আরও পড়ুন: উপহার-অনুগ্রহ নয়, রাষ্ট্রকে একটি আন্তর্জাতিক আইনি অধিকার মনে করে ফিলিস্তিনিরা
ইসরায়েলি বাহিনীর এক মুখপাত্র দাবি করেন, ভোরে গাজা উপত্যকায় প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা ট্রাকগুলোতে আক্রমণ করে লুটপাট চালায় গাজাবাসীরা। এ সময় আত্মরক্ষা করতে গুলি চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
জাতিসংঘের কেউ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না জানিয়ে দুজারিক বলেন, ঘটনার তদন্ত করে জবাবদিহির ব্যবস্থা করা হবে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতি এবং সমস্ত জিম্মিদের নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন জানিয়ে মুখপাত্র বলেন, গুতেরেস আবারও জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যাতে গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সহায়তা গাজায় সবার কাছে পৌঁছাতে পারে।
গাজা সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজারেরও বেশি মৃত্যু এবং ৭০ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। মৃত্যুর এই মর্মান্তিক সংখ্যা দেখে গুতেরেস আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে জানান দুজারিক। এছাড়াও ধ্বংসস্তূপের নিচেও অনেকে আটকে আছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭০
ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭০
গাজা শহরে মানবিক সহায়তার জন্য অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার জবাবে ইসরায়েলের আকাশ, সমুদ্র ও স্থল আক্রমণের প্রথম লক্ষ্য ছিল গাজা শহর ও গাজার বাকি অংশগুলো। এলাকাটি ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছে এবং কয়েক মাস ধরে বাকি অঞ্চল থেকে মূলত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তবে সহায়তা পেয়েছে সামান্যই।
ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, গাজার বেশির ভাগ এলাকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ত্রাণবাহী গাড়িবহরে সাহায্যপ্রত্যাশী মানুষের মরিয়া হয়ে হামলে পড়াও এর একটি কারণ বলে জানায়।
জাতিসংঘ বলছে, গাজার এক চতুর্থাংশ মানুষ অনাহারে ভুগছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা বলেন, বৃহস্পতিবারের হামলায় আরও ২৮০ জন আহত হয়েছেন।
কামাল আদওয়ান হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের প্রধান ফারেস আফানা বলেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছে চিকিৎসকরা কয়েকশ মানুষকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেছেন।
তিনি বলেন, মৃত ও আহতদের নিয়ে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত অ্যাম্বুলেন্স নেই এবং কয়েকজনকে গাধার গাড়িতে করে হাসপাতালে আনা হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা এসব প্রতিবেদন খতিয়ে দেখছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই যুদ্ধে ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে এবং আহত হয়েছেন ৭০ হাজার ৪৫৭ জন।
তবে এর মধ্যে কতজন বেসামরিক ও যোদ্ধা তা আলাদা করে বলতে পারেনি মন্ত্রণালয়। নিহতদের দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু বলে জানানো হয়েছে।
হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকারের অংশ এই মন্ত্রণালয় হতাহতের বিস্তারিত রেকর্ড রাখে। এর আগে যেসব যুদ্ধ হয়েছে সেসবের হতাহতের যে হিসাব এই মন্ত্রণালয় দিয়েছে, তা অনেকাংশে জাতিসংঘ, স্বাধীন বিশেষজ্ঞ এমনকি ইসরাইলের নিজস্ব পরিসংখ্যানের সঙ্গেও মিলেছে।
ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলায় ১,২০০ মানুষ নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক এবং প্রায় ২৫০ জন জিম্মিকে করে হামাস। নভেম্বরে সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির সময় হামাসের জিম্মায় প্রায় ১৩০ জন রয়েছে বলে ইসরায়েলের দাবি। যাদের মধ্যে এক চতুর্থাংশ মারা গেছে বলেও মনে করা হচ্ছে।
যত দ্রুত সম্ভব গাজা উপত্যকায় ত্রাণসহায়তা পাঠানোর কাজ করছে কানাডা
কানাডা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য কাজ করছে বলে বুধবার একজন মন্ত্রিপরিষদ মন্ত্রী বলেছেন।
কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী আহমেদ হুসেন বলেছেন, অটোয়া ত্রাণ সরবরাহের জন্য নতুন বিকল্প খতিয়ে দেখছে।
তিনি বলেন, জর্ডানের মতো এই অঞ্চলের সমমনা দেশগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এই সহায়তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
হুসেন বলেন, গত সপ্তাহে সহায়তার ব্যবস্থা প্রয়োজনের কাছাকাছি ছিল না এবং একটি ক্লান্তিকর পরিদর্শন প্রক্রিয়া ট্রাকে করে আনা সরবরাহের গতি কমিয়ে দিচ্ছিল।
গত অক্টোবরে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজা উপত্যকায় ঢোকা বা বের হওয়ার একমাত্র পথ রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং পরিদর্শনের পর তিনি এ মন্তব্য করেন।
সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে কানাডা অবরুদ্ধ অঞ্চলটির জন্য ১০০ মিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার (৭৪ মিলিয়ন ডলার) সহায়তার জন্য রেখেছে, যার মধ্যে জানুয়ারিতে প্রতিশ্রুতির ৪০ মিলিয়ন কানাডিয়ান ডলারও (৩০ মিলিয়ন ডলার) রয়েছে।
আরও পড়ুন: সোমবারের মধ্যে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির আশা বাইডেনের
রমজানে গাজা সংঘাত সম্প্রসারণের বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ
জাপানে সবচেয়ে কম শিশু জন্মহার ২০২৩ সালে, কমেছে বিয়ের হারও
জাপানে টানা অষ্টম বছরের মতো গত বছর শিশুর জন্মহারের সংখ্যা কমে নতুন করে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।
মঙ্গলবার(২৭ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত সরকারি তথ্যে এই বিষয়টি উঠে এসেছে।
দেশেটির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, আগামী ছয় বছরে এই প্রবণতা বিপরীতমুখী করা দেশটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ২০২৩ সালে জাপানে ৭ লাখ ৫৮ হাজার ৬৩১ শিশুর জন্ম হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ১ শতাংশ কম। ১৮৯৯ সালে জাপান এই পরিসংখ্যান সংকলন শুরু করার পর থেকে এটিই সর্বনিম্ন জন্মহারের রেকর্ড।
পরিসংখ্যানে দেখা যায় বিয়ের সংখ্যা কমেছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। ফলে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ২৮১ দম্পতিতে দাঁড়িয়েছে, যা বিগত ৯০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো অর্ধ মিলিয়নের নিচে নেমে এসেছে। এটি শিশু জন্মহার কমার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তবে পিতৃতান্ত্রিক ঐতিহ্যের উপর ভিত্তিতে এবং পারিবারিক মূল্যবোধের কারণে জাপানে বিবাহবহির্ভূত সন্তান জন্ম দেওয়ার ঘটনা বিরল।
জরিপে দেখা গেছে, অনেক তরুণ জাপানিরা বিয়ে বা পরিবার গঠনে অনীহা প্রকাশ করে থাকেন। এর কারণ হিসেবে দেখা গেছে চাকরির সম্ভাবনা কম থাকায় তারা নিরুৎসাহিত হন। এছাড়া আয়ের চেয়ে জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়া এবং কর্পোরেট সংস্কৃতি- যা বাবা-মা উভয়েরই কাজ করার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন কারণও উল্লেখযোগ্য। এমনকি কান্নাকাটি করা শিশু এবং শিশুদের বাইরে খেলাধুলা করা ক্রমবর্ধমানভাবে একটি উপদ্রব হিসাবে বিবেচিত হয় তাদের কাছে। এর বাইরে অনেক তরুণ বাবা-মা বলেন যে তারা প্রায়শই বিচ্ছিন্ন বোধ করেন।
চিফ ক্যাবিনেট সেক্রেটারি ইয়োশিমাসা হায়াশি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, চলমান নিম্নগামী জন্মহার 'সংকটজনক অবস্থায়' রয়েছে।
তিনি বলেন, 'আগামী ছয় বছর বা ২০৩০ সাল পর্যন্ত তার বেশি সময় তরুণ জনসংখ্যা দ্রুত হ্রাস পেতে শুরু করবে, তখন আমরা এই প্রবণতা বিপরীত করতে সক্ষম হতে পারি। 'নষ্ট করার মতো সময় নেই।'
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা নিম্ন জন্মদানকে 'জাপানের সবচেয়ে বড় সংকট' বলে অভিহিত করেছেন এবং একটি প্রণোদনা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন যার মধ্যে বেশিরভাগ প্রসব, শিশু এবং তাদের পরিবারের জন্য আরও সহায়তা এবং ভর্তুকি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাবার আপিল খারিজ, জাপানি ২ শিশু থাকবে মায়ের জিম্মায়
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে সরকারের এই প্রচেষ্টা কার্যকর হবে কি না তা নিয়ে তারা সন্দিহান। কারণ, এখন পর্যন্ত তারা মূলত এমন লোকদের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে যারা ইতোমধ্যে বিবাহিত বা ইতোমধ্যে সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। অন্যদিকে বিয়েতে বা পরিবার গঠন করে সন্তান নিতে অনাগ্রহী তরুণদের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে যথেষ্টভাবে সম্বোধন করা হয়নি ওই প্রণোদনা কর্মসূচিতে।
জন্মহারের সংখ্যা বিগত ৫০ বছর থেকে কমছে। এই সংখ্যাটি প্রায় ২১ লাখে পৌঁছেছিল। বার্ষিক সংখ্যা ৭ লাখ ৬০ হাজারের নিচে নেমে আসার ঘটনা আগের পূর্বাভাসের চেয়ে দ্রুত ঘটেছে, যা ২০৩৫ সালের মধ্যে ঘটার কথা ছিল।
২০৭০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ কমে জাপানের জনসংখ্যা ১২ কোটি ৫০ লাখের বেশি থেকে ৮ কোটি ৭০ লাখে দাঁড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই জনসংখ্যার মধ্যে ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৪ জনের বয়স হবে ৬৫ বা তার বেশি।
অন্যদিকে চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী আঞ্চলিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা মোকাবিলায় দেশটি তার সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করায় অর্থনীতি এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি নিম্নমুখী এবং বয়স্ক জনসংখ্যার ব্যাপক চাপে রয়েছে।
আরও পড়ুন: চীনে জন্মহার কমলেও জনসংখ্যা ১৪০ কোটি ছাড়াল
সোমবারের মধ্যে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির আশা বাইডেনের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সোমবার বলেছেন, তিনি আশা করছেন ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি আগামী সপ্তাহের শুরু থেকে শত্রুতা বন্ধ করবে এবং অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দেবে।
যুদ্ধবিরতি কখন শুরু হতে পারে বলে মনে করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, ‘আশা করছি সপ্তাহান্তের শুরুতেই। সপ্তাহান্তের শেষ। আমার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেছেন, আমরা কাছাকাছি আছি। আমরা কাছাকাছি। আমরা এখনও কাজ শেষ করিনি। আমি আশা করছি আগামী সোমবারের মধ্যে আমরা যুদ্ধবিরতি পাব।’
নিউ ইয়র্কে এনবিসির 'লেট নাইট উইথ সেথ মেয়ার্স' অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন বাইডেন।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন সরকারের পদত্যাগের ফলে সংস্কারের দ্বার উন্মোচনের সম্ভাবনা
ইসরাইল শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে গাজায় আটক জিম্মিদের মুক্তির অনুমতি দিতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা চলছে। লড়াইয়ের প্রস্তাবিত ছয় সপ্তাহের বিরতিতে প্রতিদিন শত শত ট্রাককে গাজায় নিদারুণভাবে প্রয়োজনীয় ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দেওয়াও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আলোচকরা ১০ মার্চের দিকে মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার একটি অনানুষ্ঠানিক সময়সীমার মুখোমুখি হন, এটি এমন একটি সময় যা প্রায়শই ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে।
আরও পড়ুন: রমজানে গাজা সংঘাত সম্প্রসারণের বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ
হেগের একটি যুগান্তকারী রায় ইসরায়েলকে তার যুদ্ধ সংযত করার নির্দেশ দেওয়ার এক মাস পরে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সোমবার বলেছে, ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় মরিয়া জনগণকে জরুরি প্রয়োজনীয় সহায়তা সরবরাহের জন্য জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতের আদেশ মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি আবেদনের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত ইসরায়েলকে ক্ষুদ্র ফিলিস্তিনি ছিটমহলে মৃত্যু, ধ্বংসযজ্ঞ এবং যে কোনো গণহত্যা রোধে যথাসাধ্য চেষ্টা করার নির্দেশ দিয়েছে। এটি মানবিক বিপর্যয়ের সূত্রপাতকারী সামরিক আক্রমণের সমাপ্তির আদেশের স্বল্পতা বন্ধ করে দিয়েছে।
ইসরায়েল তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা আত্মরক্ষার জন্য লড়াই করছে।
আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন প্রচেষ্টা চলছে: ইসরায়েলি নেতা গান্টজ
ফিলিস্তিন সরকারের পদত্যাগের ফলে সংস্কারের দ্বার উন্মোচনের সম্ভাবনা
ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাতায়েহ বলেছেন, তার সরকার পদত্যাগ করছে, যা মার্কিন সমর্থিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সংস্কারের দ্বার উন্মুক্ত করতে পারে।
আরও পড়ুন: রমজানে গাজা সংঘাত সম্প্রসারণের বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ
সোমবার জমা দেওয়া ওই পদত্যাগপত্রের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তিনি শাতায়েহ ও তার সরকারের পদত্যাগ গ্রহণ করবেন কি না। কিন্তু এই পদক্ষেপ পশ্চিমা সমর্থিত ফিলিস্তিনি নেতৃত্বের নড়েচড়ে বসেছে এবং এটা মেনে নিতে ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে পুনরুজ্জীবিত করতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের সূচনা করতে পারে।
যুদ্ধ শেষ হলে গাজা শাসনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি সংস্কার করা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। চায় কিন্তু সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে এখনও অনেক বাধা রয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরুর পর ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে: জেলেনস্কি
'আর গণহত্যায় জড়িত থাকব না' বলে নিজের গায়ে আগুন দিলেন মার্কিন সেনা
রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরুর পর ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে: জেলেনস্কি
রাশিয়া পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করার পর থেকে গত দুই বছরে ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
রবিবার(২৬ ফেব্রুয়ারি) কিয়েভ ফোরামে ‘ইউক্রেন ইয়ার-২০২৪’ -এ এই তথ্য জানান প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
জেলেনস্কি বলেন, এই সংখ্যা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারের দেওয়া অনুমানের চেয়ে অনেক কম।
তিনি বলেন, ‘এই যুদ্ধে ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে। তিন লাখ বা দেড় লাখ নয়, বরং পুতিন ও তার প্রতারক চক্র যা বলছে তা মিথ্যা। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমাদের এই প্রতিটি ক্ষতি একটি মহান ত্যাগ।’আরও পড়ুন: রুশ অধিকৃত ইউক্রেনের বাজারে গোলাবর্ষণে নিহত ১৩
ইউক্রেনের এই নেতা বলেন, কতজন সেনা আহত বা নিখোঁজ হয়েছেন তা তিনি প্রকাশ করবেন না। তিনি আরও বলেছিলেন যে ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে ‘কয়েক হাজার বেসামরিক নাগরিক’ নিহত হয়েছে, তবে যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সঠিক কোনও পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না তারা আমাদের কতজন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। আমরা জানি না।’
আরও পড়ুন: রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সমর্থন দিতে ইউক্রেনে ৮০০টিরও বেশি ড্রোন পাঠাবে কানাডা
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম কিয়েভ ইউক্রেনের ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা নিশ্চিত করল।
তবে হতাহতের আনুষ্ঠানিক কয়েকটি পরিসংখ্যান জানিয়েছে রাশিয়া। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিকতম তথ্যে ৬ হাজারের বেশি মৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের প্রতিবেদনে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশিত মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ধারণা করা হয়েছিল যে ইউক্রেনে ৩ লাখ ১৫ হাজার রুশ সেনা নিহত বা আহত হয়েছে। যদি এই সংখ্যা সঠিক হয়, তাহলে যুদ্ধের আগে রাশিয়ার কাছে থাকা ৩ লাখ ৬০ হাজার সেনার ৮৭ শতাংশই হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাশিয়ার স্বাধীন সংবাদমাধ্যম মিডিয়াজোনা শনিবার জানিয়েছে, ২০২২ ও ২০২৩ সালে যুদ্ধে প্রায় ৭৫ হাজার রুশ পুরুষ নিহত হয়েছেন।
রাশিয়ার আরেক স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম মিডিয়াজোনা ও মেদুজা প্রকাশিত এক যৌথ তদন্তে দেখা গেছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষয়ক্ষতির হার কমছে না এবং মস্কো দৈনিক প্রায় ১২০ জন করে সেনাকে হারাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী আজ রাতে ঢাকায় যাত্রাবিরতি করবেন
'আর গণহত্যায় জড়িত থাকব না' বলে নিজের গায়ে আগুন দিলেন মার্কিন সেনা
ওয়াশিংটন ডিসিতে ইসরায়েলি দূতাবাসের বাইরে ‘আমি আর গণহত্যার সঙ্গে জড়িত থাকব না’ বলে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর এক সক্রিয় সদস্য।
তাৎক্ষণিকভাবে নাম প্রকাশ না করা ওই ব্যক্তি রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার কিছু আগে দূতাবাসে যান এবং গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম টুইচে লাইভ স্ট্রিমিং করেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের ধারণা, ওই ব্যক্তি নিজের ফোনে লাইভস্ট্রিম শুরু করে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেন।
পরে ভিডিওটি প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে ফেলা হয়, তবে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা একটি অনুলিপি সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করেছেন।
ওই ব্যক্তিকে চলমান তদন্তের বিষয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি এবং নাম প্রকাশ না করার শর্তে এপির সঙ্গে কথা বলেছেন।
পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ৩ যুবককে গুলি
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যখন গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় সামরিক অভিযানের জন্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন চাইছেন, তখন এ ঘটনা ঘটল। তবে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যার দাবিসহ সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
ইসরায়েল বরাবরই গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করে আসছে ইসরায়েল।
আটলান্টার দমকল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ডিসেম্বরে আটলান্টায় ইসরায়েলি কনস্যুলেটের বাইরে এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেন এবং আত্মহত্যার সময় পেট্রোল ব্যবহার করেন। ঘটনাস্থলে একটি ফিলিস্তিনি পতাকা পাওয়া গেছে এবং ঘটনাটিকে 'চরম রাজনৈতিক প্রতিবাদ' বলে মনে করা হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে ওয়াশিংটন মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, তাদের কর্মকর্তারা মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস কর্মকর্তাদের সহায়তার জন্য ইসরায়েলি দূতাবাসের বাইরে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন এবং একটি সন্দেহজনক গাড়ি পরীক্ষা করতে তাদের বোমা স্কোয়াডকেও ডাকা হয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িতে কোনও বিপজ্জনক বস্তু পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ফের নিহত ২
রমজানে গাজা সংঘাত সম্প্রসারণের বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ
পবিত্র রমজান মাসে গাজায় অব্যাহত যুদ্ধ সংঘাত প্রসারিত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ।
রবিবার(২৫ ফেব্রুয়ারি) আম্মানে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে এক বৈঠকে এই সতর্কবার্তা দেন তিনি।
রয়্যাল হাশেমি কোর্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাদশাহ আবদুল্লাহ গাজায় তাৎক্ষণিক ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা এবং নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: উপহার-অনুগ্রহ নয়, রাষ্ট্রকে একটি আন্তর্জাতিক আইনি অধিকার মনে করে ফিলিস্তিনিরা
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জর্ডান গাজার জনগণকে মানবিক, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে।
এতে আরও বলা হয়, বাদশাহ পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকাকে বিচ্ছিন্ন করার যে কোনও প্রচেষ্টাকে জর্ডান প্রত্যাখ্যান করবে বলে তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের ভিত্তিতে ফিলিস্তিনি সমস্যার ন্যায়সঙ্গত সমাধান খুঁজে বের করতে আরও সমন্বয় অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
হামাস-ইসরায়েল সংঘাতে জর্ডানের দৃঢ় অবস্থানের প্রশংসা করেন মাহমুদ আব্বাস। ফিলিস্তিনিদের স্বার্থে কাজ করতে এবং শহরের পবিত্র স্থানগুলো রক্ষায় উভয় পক্ষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় ও পরামর্শ অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।
আরও পড়ুন: ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ২৯ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত: গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
সুদানে চলমান সংঘাতে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে: জাতিসংঘের প্রতিবেদন
সুদানে চলমান সংঘাতে শিশুসহ অসংখ্য লোক ধর্ষণ এবং বিভিন্নভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে, যা যুদ্ধাপরাধের সমান হতে পারে বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে সুদানের রাজধানী খার্তুমে জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ বুরহানের নেতৃত্বাধীন দেশটির সামরিক বাহিনী এবং জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বে র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস নামে পরিচিত আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য সময়টা ভালো নয়: জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকার দেশটিতে বিশেষত শহরাঞ্চল এবং গোলযোগপূর্ণ পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর অঞ্চলেও এই লড়াই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১২ হাজার মানুষ নিহত এবং ৮০ লাখেরও বেশি লোক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
লড়াইয়ের শুরু থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের ঘটনাগুলো ওই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। সম্প্রতি সাহায্যদাতা গোষ্ঠী ও অধিকার পর্যবেক্ষকরা অনেকাংশে ঢুকতে পারছেন না, এমন কিছু স্থানের নির্যাতনের নথিতুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে গাজা ও ইউক্রেনের মতো জায়গায় যুদ্ধের কারণে এ সংঘাতের প্রভাব অনেকটা ঢাকা পড়ে গেছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তত ১১৮ জন ধর্ষণসহ যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন – যার বেশিরভাগই বাড়িতে ও রাস্তায় আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, এক নারীকে একটি ভবনে আটকে রাখা হয় এবং ৩৫ দিন ধরে তাকে বারবার সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়।
উভয় পক্ষের মধ্যেই শিশু সৈনিক নিয়োগ করা হয়েছে বলেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে ওই প্রতিবিদেনে।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের দ্রুত, পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভোলকার টার্ক বলেন, ‘এসব লঙ্ঘনের কিছু ঘটনা যুদ্ধাপরাধের শামিল।’
এই প্রতিবেদন ৩০০ জনেরও বেশি ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকারের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ইথিওপিয়া ও চাদে অনেক সুদানি পালিয়ে গেছে। সেখান থেকেও কিছুটা সংগ্রহ করা হয়েছে। পাশাপাশি সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোর ফটোগ্রাফ, ভিডিও ও উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার লক্ষ্য রয়েছে বাংলাদেশের: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
গত সপ্তাহে দেশটির উত্তর কোরদোফান রাজ্য থেকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর বরাত দিয়ে জাতিসংঘ জানিয়েছে, সুদানের সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরা ব্যক্তিরা প্রতিদ্বন্দ্বী আধাসামরিক গোষ্ঠীর সদস্যদের বিচ্ছিন্ন মাথা বহন করছে।
টার্ক বলেন, ‘প্রায় এক বছর ধরে সুদান থেকে মৃত্যু, দুর্ভোগ ও হতাশার বিবরণ বেরিয়ে আসছিল। অর্থহীন সংঘাত, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে যার কোনো শেষ নেই।’
তিনি বলেন, ‘বন্দুক বন্ধ করতে হবে এবং বেসামরিক নাগরিকদের অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।’
শুক্রবার জেনেভায় জাতিসংঘের ব্রিফিংয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কেনিয়ার নাইরোবি থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের আঞ্চলিক মুখপাত্র সাইফ মাগানগো বলেন, '(সুদানে) বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা এখন ৮০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, যা সবার জন্য উদ্বেগের বিষয় হওয়া উচিত।’
এর আগে ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, সুদানের সংঘাতের কোনো সামরিক সমাধান নেই। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অব্যাহত লড়াই কোনো সমাধান বয়ে আনবে না, ‘তাই আমাদের অবশ্যই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি বন্ধ করতে হবে।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি ভূমি দখলের বিষয়ে ইসরাইলের শুনানি শুরু জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতে