পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)’র ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইমের অধীনে তদন্তাধীন আটটি অর্থপাচার মামলার তথ্য হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবিরের স্বাক্ষরে এই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আটটি মামলায় অর্থপাচারে অভিযুক্ত যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, এনামুল হক আরমান, খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া, বহিষ্কৃত কমিশনার মোমিনুল হক সাঈদ, রাজীব হোসেন রানা, জামাল ভাটারা, শরিফুল ইসলাম, আওলাদ হোসেন, শাজাহান বাবলু, নাজমুল আবেদীনসোহেলা আবেদীন, একেএম জাহিদ হোসেন, এ এন্ড বি আটারওয়্যার এন্ড নর্ম আউটফিট এন্ড একসেসরিস লি:, সিইপিজেড, চিটাগাংয়ের নাম রয়েছে।
এছাড়াও প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে নেয়া টাকার বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। এ ঘটনায় অপরিচিত হ্যাকাররা অভিযুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মোট ৮১ মিলিয়ন ইউএসডি ফিলিপাইনে এবং ২০ মিলিয়ন ইউএসডি শ্রীলংকায় পাচার করা হয়েছে। এ টাকার মধ্যে ফিলিপাইন থেকে ১৪ দশমিক ৬১ মিলিয়ন ইউএসডি এবং শ্রীলংকায় পাচার হওয়া ২০ মিলিয়ন ইউএসডি উদ্ধার হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
আরও পড়ুন: এস কে সিনহার দুর্নীতি মামলা: ২১ অক্টোবর পর্যন্ত রায় স্থগিত
প্রতিবেদনে ছয়টি দেশে অর্থ পাচারের তথ্য রয়েছে। এছাড়া আটটি মামলার মধ্যে ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও এনামুল হক আরমানের বিরুদ্ধে করা মামলায় সবচেয়ে বেশি দুইশত ৩২ কোটি ৩৭ লাখ ৫৩ হাজার ৬৯১ টাকা সিঙ্গাপুরে পাচারের বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনটি আগামী সপ্তাহে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে দাখিল করা হবে। রবিবার সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, এর আগে বিদেশে কারা অর্থপাচার করছে তাদের বিষয়ে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিলেন। এ বিষয়ে সিআইডির পক্ষ থেকে একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এই তালিকা পুলিশের আইজির মাধ্যমে আমাদের হাতে এসেছে। এফিডেভিটও করেছি। শুনানির দিন (২১ অক্টোবরের পর) এ প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করব।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত দাবি টিআইবির
এর আগে এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে অর্থপাচারকারীদের নাম-ঠিকানা ও তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানতে চান আদালত।
গত ১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বাংলাদেশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সুইস ব্যাংকসহ গোপনে বিদেশে পাচারকরা অর্থ অবিলম্বে ফেরত আনতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়। ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম খান ও অ্যাডভোকেট সুবীর নন্দী দাস এ রিট করেন।
আরও পড়ুন: দুর্নীতিবাজদের শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
রিটে অর্থসচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, অ্যাটর্নি জেনারেল, বাণিজ্যসচিব, পররাষ্ট্রসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ ১৫ জনকে বিবাদী করা হয়।