কেন্দ্রীয় সরকারের আনা বিলটির প্রতিবাদে উত্তর-পূর্বের প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠনের ডাকা ১১ ঘণ্টার হরতালকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত ত্রিপুরায় সহিংসতা এড়াতে সেবাগুলো বন্ধের সিদ্দান্ত নেয়া হয়েছে। খবর এনডিটিভি’র।
আগরতলায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীরা ত্রিপুরাকে পক্ষপাতদুষ্ট বিলটির আওতার বাহিরে রাখার দাবিতে স্লোগান দিয়ে আসছে। এর পরেই রাজ্যটির যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়া হয়।
সরকারের এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে ভারতের সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু গুজব ছড়িয়ে রাজ্যটিতে অশান্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করার কিছু খবর পুলিশ পাওয়ার পরেই যোগাযোগ সেবাগুলো বন্ধ করা হয়েছে।’
এর আগে, দেশটির উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের বিক্ষোভকারীরা ধালাই জেলার অ-উপজাতি মালাকানাধীন একটি বাজারে আগুন ধরিয়ে দেয়।
বিলের প্রতিবাদে উত্তর-পূর্বের ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে আসামের গুয়াহাটিসহ উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন জায়গার হরতালের ডাক দিলে জনজীবন স্থবিরতা নেমে আসে। বিক্ষোভকারীরা মূল রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করেন।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, অবরোধের কারণে বহু ট্রেনের সিডিউল বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে, আসামের বিভিন্ন অংশেও ব্যাপক প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দেয়ার পাশাপাশি বিধানসভা ও রাজ্যের সচিবালয় সংলগ্ন এলাকায় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
ডিব্রুগড় জেলায় সিআইএসএফ কর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দুলিয়াজানে তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন। সকাল থেকে ডাকা হরতালটি সন্ধ্যা ৫টার দিকে প্রত্যাহার করা হয়।
নাগরিকত্ব বিলে ২০১৫-এর আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। দেশের স্বনামধন্য ব্যক্তি, আন্দোলনকারী ও বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা অতি সত্ত্বর ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বিলটিকে প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন।
যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছেন, উত্তর-পূর্বের অনেক অংশকেই প্রস্তাবিত আইন থেকে বাদ দেয়া হবে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, এর ফলে এলাকায় প্রচুর সংখ্যক অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়বে।
আসামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বিলটি পাস হয়াকে ‘মারাত্মক’ পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন।
তার দাবি, এর ফলে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর মানুষ সেরাজ্যে ঢুকে পড়বে। সোমবার ৭ ঘন্টা উত্তপ্ত বিতর্কের পরে লোকসভায় বিলটি পাশ হয়। বিলের পক্ষে ৩১১টি ভোট পড়ে এবং ৮০টি ভোট বিপক্ষে পড়ে।