শুক্রবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সংবিধানে বলা আছে বিচার অবশ্যই প্রকাশ্যে এবং উন্মুক্ত আদালতে হতে হবে। কিন্তু তারা (কারাগারের ভেতরে) একটি ছোট কক্ষে বিচার করছেন, যেখানে মাত্র ১০ জন আইনজীবীর বসার ব্যবস্থা রয়েছে। এটা কোনো উন্মুক্ত আদালত নয়।’
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খালেদার বিচার উন্মুক্ত আদালতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যেখানে মানুষের অবাধ যাতায়াত রয়েছে। ‘যখন আদালতের দরজা খোলা থাকে তখন তা কীভাবে ক্যামেরা ট্রায়াল হয়?’
তিনি আরো বলেন, বিএনপি নেতারা খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলায় তার বিচারের জন্য কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী আদালত বসানো হয়েছে। ‘জিয়াউর রহমানের আমলে কারাগারের ভেতরের একটি আদালতে কর্নেল তাহেরের বিচার হয়েছিল।’
প্রধানমন্ত্রীর এ যুক্তি খণ্ডন করে ফখরুল বলেন, কর্নেল তাহেরের বিচার হয়েছিল সামরিক আইনের সময়, বেসামরিক প্রশাসনের অধীনে নয়। ‘সুতরাং ওই বিচারের সাথে এটা তুলনা করা যায় না।’
সংবিধান বা বিদ্যমান আইন দণ্ডিত খালেদার সাথে তার কাজের লোক ফাতেমাকে কারাগারে যাওয়ার অনুমতি দেয় না বলে শেখ হাসিনা যে মন্তব্য করেছেন তার জবাবে বিএনপি নেতা বলেন, ফাতেমা আদালতের আদেশ অনুযায়ী কারাগারে থাকছেন। ‘আমরা তাকে কারাগারে রাখিনি।’
খালেদা জিয়া দণ্ড পাওয়া মামলায় সর্বোচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলেও সরকার কেন নানা কৌশল ব্যবহার করে তাকে কারাগারে আটকে রেখেছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফখরুল বলেন, ‘আপনারা কেন তাকে ভয় পান? তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দিন এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করুন। কিন্তু আপনারা তা করতে চান না, কারণ আপনারা জানেন যে জনগণ আপনাদের সাথে নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, কারাগার কোনো উন্মুক্ত জায়গা নয় এবং মানুষ সেখানে যেতে পারে না। ‘কথিত আদালতটি কারাগারের ভেতরে বসানো হয়েছে। এটা কীভাবে উন্মুক্ত আদালত হয় যেখানে মানুষ প্রবেশ করতে পারে না? প্রধানমন্ত্রী জনগণকে বিভ্রান্ত করতে এমন মন্তব্য করেছেন।’
তিনি জানান, কর্নেল তাহেরের বিচারের সময় বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম সামরিক আইন জারি করেছিলেন এবং তখন সংবিধান স্থগিত ছিল।
‘জিয়াউর রহমানের সময়ে দেশদ্রোহিতার জন্য তাহেরের বিচার হয়েছিল। কিন্তু এখন খালেদা জিয়ার বিচার হচ্ছে দুর্নীতির মামলায় যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত,’ যোগ করেন তিনি।
খালেদা জিয়াকে আগামী সাধারণ নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে সরকারের কৌশলের অংশ হিসেবে কারাগারের ভেতরে অস্থায়ী আদালত বসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মোশারররফ।