খুলনার রূপসা উপজেলা ও খুলনা মহানগরীর তিনটি থানা এলাকায় এক সপ্তাহের কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বুধবার সকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
খুলনায় সার্বিকভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণে জনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং জনসমাগমের স্থানসমূহ বিবেচনায় নিয়ে মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে করোনা সংক্রমণের আধিক্য বিবেচনায় রূপসা উপজেলা, খুলনা সদর, সোনাডাঙ্গা এবং খালিশপুর থানায় জরুরি সেবা ব্যতীত সকল দোকান এবং জনসমাবেশের স্থান ৪ জুন থেকে আগামী এক সপ্তাহ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়।
রূপসা উপজেলাসহ খুলনা মহানগরীতে সন্ধ্যার পর দোকানপাট বন্ধ রাখা, হোটেলগুলোতে লোকসমাগম নিয়ন্ত্রণ এবং যত্রতত্র একাধিক লোকের উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় ব্যবস্থা নেবে।
এসময় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা আদায়, স্বাস্থ্যবিধি পালনে মনিটরিং জোরদার করা এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে প্রচার-প্রচারণা চলমান থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
সভায় সিটি মেয়র বলেন, 'সার্বিকভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণে খুলনার স্বাস্থ্যবিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। সন্ধ্যার পর একাধিক লোকের জনসমাগম বন্ধ করতে হবে।'
তিনি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং সর্বক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার করার নির্দেশনা দেন। এক্ষেত্রে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে মসজিদের ইমামদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট: সীমান্তবর্তী হওয়ায় ঝুঁকিতে খুলনা বিভাগ
উল্লেখ্য, রূপসা উপজেলাতে করোনা সংক্রমণের হার শতকরা ৪ দশমিক ১৮। কিন্তু অন্যান্য উপজেলাতে এই হার শতকরা প্রায় এক ভাগ। এছাড়া খুলনা মহানগরীর সদরে সংক্রমণ হার শতকরা ৩৫, খালিশপুরে ২৫ এবং সোনাডাঙ্গাতে এই হার শতকরা ১৭। তবে অন্যান্য স্থানে সংক্রমণের হার নিম্নগামী।
সভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. কামাল হোসেন এবং খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুরে ৭ দিনের লকডাউন
এছাড়া খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান, সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. রবিউল হাসান, মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. ইকবাল হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইউসুপ আলী, সরকারি কর্মকর্তাসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।