এবার শুরুতেই বজ্রপাতও শুরু হয়ে গেছে। এতে ঘটছে প্রাণহানির ঘটনাও। শনিবার একদিনেই সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে বাবা ছেলেসহ মারা গেছেন ৯ জন।
হাওরাঞ্চলের এখন ধান কাটার মৌসুম চলছে। বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বন্যার শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। ফলে দ্রুত ধান কাটার নির্দেশনা দিয়েছে প্রশাসন। কৃষকরাও নেমে পড়েছেন ধান কাটতে। বন্যার শঙ্কায় থাকা কৃষকদের জন্য মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে বজ্রপাতের ভয়।
শনিবার বজ্রপাতে সিলেট জেলায় চারজন, সুনামগঞ্জে চারজন ও হবিগঞ্জে একজন মারা যান।
এরমধ্যে সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নে বজ্রপাতে মারা যান বাবা ও ছেলে। নিহতরা হলেন- ইউনিয়নের পুরান কালারুকার পূর্ব উত্তরপাড়ার শমসের আলী (৫৮) ও তার ছেলে ছয়ফুল আহমদ (১২)। বিকালে ধান কাটার সময় কালবৈশাখীর ঝড়ের সাথে প্রচণ্ড বজ্রপাতে মারা যান তারা।
একই সময়ে জেলার জকিগঞ্জে বজ্রপাতে ইসলাম উদ্দিন বলই (৪০) নামের এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়। উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের দরগাবাহারপুর গ্রামের আতাই মিয়ার ছেলে ইসলাম মাঠে গরু আনতে গিয়ে মারা যান।
এর আগে জেলার ওসামনীনগরে বজ্রপাতে রাহি আহমেদ (১৬) নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়। শনিবার সকাল ১১টার দিকে মাঠে ধান কাটতে গেলে বজ্রাঘাতের শিকার হয়ে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়।
এদিকে, সুনামগঞ্জে নিহতরা হলেন- শাল্লা উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের সুরেন্দ্র সরকারের ছেলে শংকর সরকার (২৬), জগন্নাথপুর উপজেলার বাউধরণ গ্রামে শিপন মিয়া (৩২), দিরাই উপজেলায় হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার মফিজ উল্লার ছেলে তাপস মিয়া (৩৫) ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের উত্তর গাজীনগর গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে ফরিদ মিয়া (৩৫)।
শাল্লা উপজেলা নারায়ণপুর গ্রামে শংকর মিয়া বাড়ি থেকে স্থানীয় শাসখাই বাজারে যাওয়ার পথে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। অপরদিকে জগন্নাথপুর উপজেলার বাউধরণ গ্রামের কৈচাপরী এলাকার বাসিন্দা শিপন মিয়া সকালে নলুয়ার হাওরে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মারা যান। দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়নের চিনাউরা হাওরে কাজ করতে আসা হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার তাপস মিয়া বজ্রপাতে প্রাণ হারান। আর দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ফরিদ মিয়া দুটি গরু নিয়ে গাজীর খাল নামক হাওরে যান। এ সময় ঝড়ের সাথে বজ্রপাত শুরু হলে বাড়ি ফেরার পথে দুটি গরুসহ বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।
অপরদিকে, হবিগঞ্জে বজ্রপাতে এক গরু ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার জেলার মাধবপুরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত লালু মিয়া (৩৯) মাধবপুর উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের অলি ইসলামের ছেলে।
জানা যায়, শনিবার দুপুরে লালু মিয়া কয়েকটি গরু নিয়ে মাঠে যান। এক পর্যায়ে বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হলে তিনি বজ্রাঘাতে গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অদিতি রায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ বজ্রপাতে এসব মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।