বরিশাল বিভাগে করোনা সনাক্তের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই বিভাগে নতুন করে ৮৭৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর একই সময়ে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগের দিন ২৪ ঘণ্টায় মোট শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৫৭৫ জন, তবে তার আগের ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৭১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিধিনিষেধ শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি
নতুন শনাক্তদের নিয়ে বিভাগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৩ হাজার ৫৬৩ জনে।
এদিকে, একই সময়ে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসাপাতালের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া গেল ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে বরিশাল ও ঝালকাঠির দুইজন করে মোট চারজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে বরিশাল বিভাগে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৩৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক।
আরও পড়ুন: টিকা নিয়ে ফেসবুকে ‘সুখবর’ দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, মোট আক্রান্ত ২৩ হাজার ৫৬৩ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৬ হাজার ১২৮ জন।
আক্রান্ত সংখ্যায় বরিশাল জেলায় নতুন সর্বোচ্চ ৪৯২ জন নিয়ে মোট ১০ হাজার ১০৪ জন, পটুয়াখালী জেলায় নতুন ৮১ জন নিয়ে মোট ২৯৭৩, ভোলা জেলায় নতুন ৩৩ জন সহ মোট ২৩২৬, পিরোজপুর জেলায় নতুন ৯২ জন নিয়ে মোট ৩২৮৯, বরগুনা জেলায় নতুন ৭৪ জন নিয়ে মোট আক্রান্ত ১৯৭৭ ও ঝালকাঠি জেলায় নতুন ১০৭ জন শনাক্ত নিয়ে মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৯৪ জনে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে আরও ১৯ মৃত্যু
অপরদিকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের দপ্তর সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় শুধুমাত্র বরিশাল শেবাচিম হাসাপাতালের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে শুধুমাত্র শেবাচিম হাসপাতালেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৩১ জন এবং আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে ৬২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করা ৬২৪ জনের মধ্যে ৩৪ জনের কোভিড টেস্টের রিপোর্ট এখনো হাতে পাওয়া যায়নি।
হাসপাতাল পরিচালক কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত শেবাচিমের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে ২৭ জন ও করোনা ওয়ার্ডে ২৬ জন ভর্তি হয়েছেন। করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে এখন ৩১১ জন রোগী চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে ৯৮ জনের করোনা ও ২১৩ জন আইসোলেশনে রয়েছেন। আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ২০০ জন করোনা পরীক্ষা করান। যার মধ্যে শনাক্তের হার ৫৫ শতাংশ।
এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র করোনা ডেটিকেটেড বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের করোনা ইউনিট এখন রোগীতে পরিপূর্ণ। ১০ বেড থেকে শুরু করে সময়ের সাথে সাথে ৩০০ বেডে রুপান্তরীত করা হলেও এখন কোন সিটই খালি নেই। আর জনবলসহ নানান সংকটের কারণে আর সিট বাড়ানো সম্ভব না বলে জানিয়েছেন কতৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: চমেকে জরুরি ছাড়া রোগী ভর্তি-অপারেশন বন্ধ
বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানান, চিকিৎসক, নার্স ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সংকটের মধ্যে ৩০০ বেডের ইউনিট চালানোই অসম্ভব। সেখানে সর্বোচ্চ মানসম্মত চিকিৎসাসেবা দেয়ার চেষ্টা চলছে প্রতিনিয়ত। আর সাপোর্ট না থাকায় এ মুহুর্তে শেবাচিমের করোনা ইউনিটে বেড বাড়ানো সম্ভব নয়। এখন সংকটাপন্ন রোগী ছাড়া আপেক্ষিক ভালো অবস্থার রোগীদের ভর্তি নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডকে করোনা ওয়ার্ডে পরিণত করা হয়েছে। সোমবার (১২ জুলাই) থেকে ২২ বেডের করোনা ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি করা শুরু হয়েছে