মানববন্ধনের পরপরই বাবার বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে মিন্নি দাবি করেন, মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের আড়াল করতেই তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এসময় তিনি অপপ্রচারকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
রবিবার সকাল ১০টায় বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরে বরগুনার সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে বিপুল সংখ্যক লোকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে নিহত রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন থেকে দাবি করা হয়, রিফতা হত্যার সাথে তার স্ত্রী মিন্নি জড়িত। তাকে গ্রেপ্তারের দাবি করা হয়।
এর পরপরই বেলা সাড়ে ১২টায় মানববন্ধন ও ১৩ জুলাই রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফের সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন মিন্নি।
তিনি দাবি করেন, ‘অভিযুক্ত আসামিদের আড়াল করতেই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমার শ্বশুর অসুস্থ মানুষ, তিনি কখন কোথায় কী বলেন তার কোনো ঠিক নেই। তবে আমার মনে হচ্ছে তাকে দিয়ে কোনো মহল স্বার্থ হাছিল করার জন্য আমাকে জড়িয়ে মামলা হালকা করার চেষ্টা করছে। যাতে করে আসামিরা ছাড়া পেয়ে যেতে পারে।’
এসময় মিন্নি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমার যদি নয়নের সাথে বিয়েই হবে তবে যখন রিফাতের সাথে বিয়ে হয়েছিল তখন নয়ন কেন বাধা দেয়নি?’
রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২ জুলাই ভোররাতে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এখন পর্যন্ত এজাহারভুক্ত তিনজনসহ সাত আসামি হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এ ঘটনায় বর্তমানে ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে।
কোপানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। মিন্নি হামলাকারীদের বারবার বাধা দিলেও সন্ত্রাসীরা মিন্নিকে একটুও আঘাত করেনি। হামলাকারীদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল রিফাত।
একাধারে রিফাতকে কুপিয়ে বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে হামলাকারীরা। তারা চেহারা লুকানোরও কোনো চেষ্টা করেনি। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।