শাবিপ্রবি
শাবিপ্রবিতে ভর্তি আবেদন রবিবার থেকে শুরু
সম্প্রতি দেশের ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি)। আগামী রবিবার (২১ নভেম্বর) থেকে শুরু হবে শাবিপ্রবির ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়া। ওইদিন সকাল ১০টা থেকে আবেদন শুরু হয়ে চলবে শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) রাত ১২টা পর্যন্ত।
মঙ্গলবার প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ সেশনের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এবারের ভর্তি আবেদন ফি ইউনিট ভেদে ৬৫০ টাকা। তবে আর্কিটেকচার বিভাগে ভর্তিচ্ছুদের সাধারণ জ্ঞান পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য অতিরিক্ত ৩৫০ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা admission.sust.edu এই ওয়েবসাইটে থেকে আবেদন করতে পারবে। পূর্বে প্রকাশিত ভর্তি নির্দেশিকায় উল্লেখিত ভর্তির যোগ্যতা বিষয়ক শর্তাবলী আবেদনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের এনআইডি নিবন্ধনের তথ্য দেয়ার নির্দেশ
বাসে শাবিপ্রবি ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে যুবকের কারাদণ্ড
বাসে শাবিপ্রবি ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে যুবকের কারাদণ্ড
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) এক ছাত্রীকে মোবাইল ফোনে পর্নোভিডিও দেখিয়ে যৌন হয়রানি এবং অশালীন অঙ্গভঙ্গি করায় এক যুবককে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা সৌদিয়া পরিবহনের একটি বাসের ভিতরে এ ঘটনা ঘটে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মৌলভীবাজারের শেরপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ৭টা ২০ মিনিটে হট্টগোলের আওয়াজ শুনতে পান শেরপুর হাইওয়ে থানার পুলিশের টহলরত দল। এসময় গাড়ি থামিয়ে গাড়ির চালক ও সুপারভাইজারের কাছে সার্জেন্ট শিবলু মিয়া জানতে চান, গাড়িতে কোনো ঝামেলা হয়েছে কিনা। গাড়ির চালক ও সুপারভাইজার জানান, একজন পুরুষ ও একজন নারী যাত্রীর (শাবি শিক্ষার্থী) মধ্যে ঝামেলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘ব্যক্তিগত হতাশা’: শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
ঘটনার খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ সুপার সিলেট রিজিয়নের নির্দেশক্রমে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানায়।তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মৌলভীবাজার সদর মোস্তাফিজুর রহমান। এসময় তিনি ঘটনার বিবরণ শুনে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। অনাদায়ে বিনাশ্রমে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেন। পরবর্তীতে আসামিকে মৌলভীবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।শেরপুর হাইওয়ে থানার (ওসি) মো. নবীর হোসেন জানান, চট্টগ্রাম থেকে সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে সোমবার রাত সাড়ে ৯ টায় ছেড়ে আসা সৌদিয়া পরিবহনের বাসটির যাত্রী সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থানার মো. আব্দুর রউফের ছেলে মো. মাহবুবুর রহমান (২৬) তার পেছনের সিটে বসা শাবির আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থীকে তার হাতে থাকা মোবাইল ফোনে পর্নোগ্রাফি ভিডিও দেখিয়ে দীর্ঘক্ষণ বিরক্ত করছিল ও মেয়েটির দিকে বার বার তাকিয়ে বিভিন্নভাবে খারাপ অঙ্গভঙ্গি করেছে। হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. শহিদ উল্লাহ্ বলেন, মহাসড়কে সব ধরনের হয়রানিমূলক কাজ বন্ধে হাইওয়ে পুলিশ স্বচ্ছতার সাথে কাজ করছে। মহাসড়ক নিরাপদ ও মহাসড়কে কেউ যেন অযথা হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়টিকে সামনে রেখে কাজ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের এনআইডি নিবন্ধনের তথ্য দেয়ার নির্দেশ
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের এনআইডি নিবন্ধনের তথ্য দেয়ার নির্দেশ
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) মেডিকেল সেন্টার থেকে যেসব শিক্ষার্থী জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ছাড়া টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন তাদের এনআইডি ছাড়া টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেবে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এজন্য আগামী ১৮ নভেম্বরের (বৃহস্পতিবার) মধ্যে শিক্ষার্থীদের এনআইডি নিবন্ধনের তথ্য দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ক্যান্সারে মারা গেলেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থী
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের প্রশাসক অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসেন জানান, যেসব শিক্ষার্থী এনআইডি ছাড়া টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে তাদের দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক এনআইডির তথ্য দিতে হবে। এজন্য যারা এখনো এনআইডির নিবন্ধন করেননি আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে অনলাইনে নিবন্ধন করে প্রক্টর বরাবর প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী সপ্তাহ থেকে ক্যাম্পাসে এনআইডি বুথ বসবে। ক্যাম্পাসে এনআইডির নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শেষ হলে যথাসময়ে টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় নতুন ইতিহাস তৈরি হল: শাবিপ্রবি উপাচার্য
তিনি জানান, যেসব শিক্ষার্থী এনআইডি দিয়ে মেডিকেল সেন্টার থেকে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে তারা চাইলে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল বা নির্ধারিত কেন্দ্র থেকে ফাইজারের দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবে।
‘ব্যক্তিগত হতাশা’: শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থী রবিবার রাতে ঝিনাইদহের নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেছেন।
নিহত চঞ্চল চক্রবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার মাধবপুর গ্রামে। সোমবার ঝিনাইদহের শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহসিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, 'চঞ্চল চক্রবর্তী তার নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেছেন। ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তার আত্মহত্যার কারণ জানা যায়নি।'
আরও পড়ুন: ক্যান্সারে মারা গেলেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীএদিকে ব্যক্তিগত হতাশার কারণেই চঞ্চল আত্মহত্যা করেছে বলে জানায় তার বাবা শিবপ্রদীপ কুমার চক্রবর্তী।তিনি বলেন, 'রবিবার রাত ১২টায় খেলা দেখে চঞ্চল ক্লাস নাইনে পড়ুয়া তার ছোটভাই চয়নকে নিয়ে ঘুমাতে যায়। সকাল ৭ টায় চয়ন উঠে দেখে গলায় গামছাবাঁধা অবস্থায় ঝুলে আছে চঞ্চল।'বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আজহারুল আরাফাত বলেন, 'রাতে নিজ বাড়িতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন চঞ্চল। যতটুকু জেনেছি তার বন্ধু-বান্ধব পাশ করে বের হয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী হলেও ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থীদের সাথে অধয়নরত ছিলেন তিনি। তার পড়াশোনা এখনও চলমান রয়েছে। তাই হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা করেছেন চঞ্চল।'
আরও পড়ুন: ওরা আর কখনো শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ফিরবে নাবিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. আলমগীর কবীর বলেন, 'ঘটনা জেনেছি। খুবই দুঃখজনক। চঞ্চলের এমন সিদ্ধান্তে আমরা শোকাহত। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীদের প্রতি এমন ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করে সতর্ক থাকার অনুরোধ করছি।'
শাবিপ্রবির বাদ পড়া শিক্ষার্থীরা করোনার টিকা পাবেন রবিবার
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) মেডিকেল সেন্টার থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যারা টিকার প্রথম ডোজ নিতে পারেননি, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শুধুমাত্র আগামী রবিবার মেডিকেল সেন্টার থেকে টিকা নিতে পারবেন ওই শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের প্রশাসক অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োজিত সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়ে যেসব শিক্ষার্থী মেডিকেল সেন্টার থেকে টিকার প্রথম ডোজ নিতে পারেননি, তারা শুধুমাত্র আগামী রবিবার টিকা নিতে পারবেন। এরপর আর কাউকে আমাদের মেডিকেল সেন্টার থেকে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হবে না। ওইদিন শিক্ষার্থীরা জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন, টিকা কার্ডের মূলকপি ও ফটোকপি (যদি থাকে) এবং স্টুডেন্ট আইডি কার্ডের ফটোকপি জমা দিয়ে টিকা নিতে পারবেন।এছাড়া যেসব শিক্ষার্থী জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া টিকা নিয়েছেন তাদের শিগগিরই জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য জমা দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।গত ১৬ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। ওইদিন থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত এক হাজার ৭১৭ জন শিক্ষার্থী টিকা গ্রহণের প্রথম ডোজ সম্পন্ন করেন।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের মধ্যে ৫০ শতাংশ মানুষ টিকা পাবে: স্বাস্থ্য সচিব
এ মাসেই তিন কোটি ডোজ টিকা দেয়া যাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টারের সাহায্যে করোনার টিকা পৌঁছে দিল সেনাবাহিনী
করোনার ছুটি শেষে শাবিপ্রবিতে ফিরেছে শিক্ষার্থীরা: মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে থাকছে নজরদারি
বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিনের ছুটি কাটিয়ে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। ভার্চুয়াল থেকে সশরীরে ক্লাসে ফিরেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা। আর এই ক্লাসে ফেরা শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিতে নজরদারীতে এনেছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)।শিক্ষার্থীদের জন্য ইতোমধ্যে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় সার্বক্ষণিক কাজ করছে ‘সাস্ট মনের কথা’ ফেসবুক পেইজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ ও নির্দেশনা পরিচালকের অধীনে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সেবাটি পরিচালনা হচ্ছে। এতে কাজ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট ফজিলাতুন্নেছা শাপলা।বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী কারও মানসিক সমস্যা দেখা দিলে সরাসরি সম্ভব না হলে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ‘সাস্ট মনের কথা’ ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে যোগাযোগ করে সার্বক্ষণিক মানসিক বিষয়ক স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া যাবে। এই মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় সর্বদা গোপনীয়তা রক্ষা করে সেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিটি বিভাগে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পুরুষ ও নারী আলাদাভাবে দুইজন করে শিক্ষক ছাত্র উপদেষ্টা বিদ্যমান।
আরও পড়ুন: করোনার দীর্ঘ ছুটিতে নতুন আঙ্গিকে শাবিপ্রবির চিকিৎসা কেন্দ্রকরোনাকালীন প্রথম থেকেই অনলাইন কার্যক্রমে সচল ব্যবস্থাপনা চালু রেখেছিল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। তবে শিক্ষার্থীদের স্বশরীরে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ক্লাসের আক্ষেপটি দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মাঝে। এছাড়াও দীর্ঘ এই ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের শিক্ষার্থী তোরাবি বিনতে হক, একই বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের আছিয়া আকতার, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের তৌহিদুল আলম প্রত্যয়ের আত্মহত্যা ও রসায়ন বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির আহমেদের সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু কাঁদিয়েছে শাবিপ্রবিয়ানদের হৃদয়কে। চলতি বছরের ৬ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১২-১৩ বর্ষের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আলমগীর কবির ও ১৬ অক্টোবর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান দেশের বাইরে উচ্চ শিক্ষার জন্য পড়াশোনা করতে গিয়ে আত্মহত্যার মতো ঘটনাগুলো শাবিপ্রবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে হৃদয় বিদারক পরিবেশ তৈরি করেছে।দীর্ঘ ছুটির পর ক্যাম্পাসে ফেরা নিয়ে কথা হয় শিক্ষার্থীদের সাথে। বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ফারজানা আকতার বলেন, কোভিড-১৯ শুরু হওয়ার পর থেকে গত দেড় বছরে শাবিপ্রবি থেকে অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে কিছু মানুষকে আমরা হারিয়েছি। এর মধ্যে পাঁচজন আত্মহত্যা করেছেন, যাদের মধ্যে একজন শিক্ষকও ছিলেন। একজন মানুষ কতোটা অসহায় হলে আত্মহত্যার মতো কঠিনতম সিদ্ধান্তে চলে যায় তা হয়তো আমরা জানি না। কিন্তু কোনো কঠিন পরিস্থিতিতে মানসিক ও শারিরীকভাবে সুস্থ্ থাকার জন্য একজন মনোবিজ্ঞানীসহ ছাত্র উপদেষ্টা-ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা এবং শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মহোদয়গণ অনলাইনে নানা সময়ে বিভিন্ন সেশন, আলোচনা অনুষ্ঠান ইত্যদির আয়োজন করে এসেছেন।
আরও পড়ুন: ক্যান্সারে মারা গেলেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থী
তিনি বলেন, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী যারা মাত্র দেড় মাস ক্যাম্পাসে কাটানোর পর দীর্ঘ দেড় বছর বাড়িতে কাটিয়ে এখন একজন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হিসেবে ক্যাম্পাসে ফিরছেন তাদেরসহ সকল শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যায় কিংবা কঠিন কোনো পরিস্থিতিতে তাঁরা পরামর্শ দিয়ে যাবেন এবং শিক্ষার্থীরাও পরিবেশ-পরিস্থিতির এই নানা উত্থান-পতনে হতাশাগ্রস্থ না হয়ে মানসিকভাবে শক্তিশালী থাকার চেষ্টা করবেন বলে আশা রাখছি।অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী প্রবাল বড়ুয়া বলেন, দীর্ঘ দেড় বছর পর আমরা সশরীরে ক্লাসে উপস্থিত হয়েছি। এই মহামারিতে যদি মানসিক অবস্থা চিন্তা করি তাহলে একপ্রকার বলা যায় শোচনীয় অবস্থায় ছিল। অনলাইন ক্লাসে যেহেতু আমাদের পাঠদান সম্পন্ন হচ্ছিল, ডিভাইস সমস্যা, নেটওয়ার্ক সমস্যা, ফ্যামিলির সমস্যা আরও অনেক ধরনের সমস্যার কারণে ক্লাসে ভালোভাবে উপস্থিত হতে পারি নি। যেহেতু ক্লাসগুলো এখন সশরীরে হচ্ছে সেহেতু ক্লাসগুলোতে আমরা নিয়মিত উপস্থিত হতে পারছি এবং আমরা মানসিকভাবে সতেজ থাকতে পারছি।
হলগুলোতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সামিউল ইসলাম বলেন, একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিজ বিশেষ করে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। ইনডোর- আউটডোর খেলাধুলা এবং এক্সট্রা কারিকুলার কর্মকান্ড শিক্ষার্থীদের নির্মল মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী হলের প্রাধ্যক্ষ ড. জায়েদা শারমীন বলেন, করোনার মতো মহামারি মোকাবেলার অভিজ্ঞতা আমাদের সকলের জন্যই আসলে বিরাট এক চ্যালেঞ্জ হিসেবেই এসেছে। আর এই চ্যালেঞ্জের বড় একটা বিষয় হচ্ছে মানসিক স্বাস্থ্যের সঠিক পরিচর্যা নিশ্চিত করা। শিক্ষার্থীদের জন্য এ বিষয়টি আরও বড় ধরনের গুরুত্ব বহন করে বলে আমি মনে করি।
আরও পড়ুন: ওরা আর কখনো শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ফিরবে না
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে অনেক দিন বাসায় থাকায় একদিকে যেমন তাদের মধ্যে একঘেয়েমিতা দেখা দিয়েছে তেমনি কিছুটা সেশন জ্যাম তৈরির ফলে চাকরির বাজারে প্রবেশের প্রতিবন্ধকতাও একটি বড় অংশের মধ্যে হতাশার জন্ম দিয়েছে। এ ধরনের মানসিক চাপ মোকাবেলায় আমাদের সকলকে ধৈর্যের সাথে একযোগে কাজ করতে হবে। শিক্ষক –শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা -কর্মচারী সকলের মানসিক বিষয়টি প্রয়োজন অনুযায়ী গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার জন্য কাউন্সেলিং সেলের নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তাতে সকলের অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে হবে।বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট ফজিলাতুন্নেছা শাপলা বলেন, দীর্ঘ ছুটি কাটিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরেছে। অনেক শিক্ষার্থীর কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশটা আগের মতোন নাও মনে হতে পারে এডজাস্টমেন্টের ক্ষেত্রে। সকল শিক্ষার্থীদের জন্য আমাদের দরজা খোলা। অনলাইন, সশরীরে, মুঠোফোনে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা অব্যাহত আছে। ডিপার্টমেন্ট ও হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় কাউন্সেলিং, ফলোআপ, মেডিসিনের বিষয়গুলোতে সেবা থাকছে।শাবিপ্রবি প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড.আলমগীর কবীর বলেন, আমাদের শৃঙ্খলা কমিটি শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তায় বিবেচনায় তৎপর। বর্তমানে করোনার এই দীর্ঘ ছুটি শেষে ক্যাম্পাসে ফেরা অনেক শিক্ষার্থী মানসিক সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে এসেছে। আমরা প্রতিটা ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সমাধানে চেষ্টা করছি। এই বিষয়গুলো আমাদের নজরে রয়েছে।
আরও পড়ুন: ফেসবুকে চাকরির সুযোগ পেলেন শাবিপ্রবির দুই শিক্ষার্থীবিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ জানান, লম্বা একটি ছুটি কাটিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা আমাদের মাঝে ফিরে এসেছে। দীর্ঘ একটা সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ব্যস্ততা ভুলে অন্য একটি পরিবেশে মিশে ছিল। আর এই সময়টিতে হল, মেস, বাসা, বিভাগ যেকোনো পরিস্থিতিতে কোনো মানসিক সমস্যা তৈরি হলে শিক্ষার্থীদের বলবো আমাদের কাছে চলে আসতে । আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইন ও অফলাইন দুই জায়গাতেই এই মানসিক স্বাস্থ্য সেবা চালু রেখেছি। শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যার সংকট নিরসনে আমাদের সাইকোলজিস্টসহ শিক্ষক উপদেষ্টাদের আন্তরিকভাবে স্বাস্থ্য সেবা তাদের মানসিক ভীতি দূর করতে সহায়তা করবে। আমরা চাই প্রতিটা শিক্ষার্থী মানসিক সুস্থতার মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা জীবন পার করে তাদের ভবিষ্যত জীবনেও সুন্দর দৃষ্টান্ত স্থাপন করুক।শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের সবধরনের সমস্যা নিরসনে আমাদের শিক্ষকরা কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটি বিভাগ, হলসহ সকল দপ্তরে শিক্ষার্থীদের প্রতি আন্তরিকতার কমতি নেই। এছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় আমাদের প্রতিটি দপ্তরে নির্দেশনা দেয়া আছে। স্ব স্ব জায়গা থেকে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় সকলে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।
শাবিপ্রবিতে সশরীরে পাঠদান কার্যক্রম শুরু
বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিনের ছুটি কাটিয়ে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আবার খুলে দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সারাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলোও খুলে গেছে। ভার্চুয়াল থেকে সশরীরে ক্লাসে ফিরেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সশরীরে ক্লাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি)।করোনাকালীন সময়ে প্রথম থেকেই অনলাইন কার্যক্রমে সচল ব্যবস্থাপনা চালু রেখেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষার্থীরা দুটি সেমিস্টারের ক্লাস-পরীক্ষা ইতোমধ্যে সম্পন্ন করতে পেরেছে। যা শিক্ষার্থীদের সেশনজটের মানসিক চিন্তা থেকে অনেকাংশে স্বস্তি দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে করোনার টিকাদান শুরু
মঙ্গলবার সশরীরে ক্লাস শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা, ইংরেজি, ব্যবসায় প্রশাসনসহ বেশ কয়েকটি বিভাগ। দীর্ঘ দিন পর সহপাঠীদের একসাথে ক্লাসে পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ দিন পর ক্লাসে ফেরায় বিভাগগুলোর পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন উপহারসামগ্রী দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে গিয়ে দেখা যায় বিভাগটিতে অবকাঠামোগত বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ল্যাব কক্ষ, নতুন ফার্নিচার সংযোজন, নতুন চেয়ার টেবিল সংযোজনসহ বাড়তি সৌন্দর্য বিদ্যমান। এছাড়াও সশরীরে ক্লাসে ফেরা নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি থাকছে শতভাগ।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিতক্লাসে ফেরার আনন্দের অনুভূতি জানিয়ে বাংলা বিভাগের মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী রোহিতুজ্জামান নাজমুল আহসান বলেন, দীর্ঘদিন পর এই ক্লাসে ফিরতে পেরে আনন্দ কাজ করছে। দীর্ঘদিন পর সেই পরিচিত মুখ, সেই পরিচিত ক্যাম্পাস, এ যেন এক নতুন অনুভূতি।বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. ফারজানা সিদ্দিকা বলেন, আজকে আবারও আমাদের সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হল। করোনা পরবর্তী শাবিপ্রবির বাংলা বিভাগ নতুনভাবে যাত্রা শুরু করছে। করোনার এই সময়ে একাডেমিক যতটুকু ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নেয়ার জন্য সর্বত্র চেষ্টা থাকবে।উল্লেখ্য, গত ২৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল খুলে দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী, করোনার টিকার অন্তত এক ডোজ যেসব শিক্ষার্থী নিয়েছেন শুধু তারাই আবাসিক হলে উঠতে পারবেন এবং সশরীরে ক্লাসে অংশ নিতে পারবেন।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতেই সিলেট বিভাগের প্রথম বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মিত হয়
ক্যান্সারে মারা গেলেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থী
মরণব্যাধি কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী সাবিকুননাহার সিনথিয়া মারা গেছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যলয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৩-১৪ বর্ষের শিক্ষার্থী।
শনিবার রাত দেড়টার দিকে হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
আরও পড়ুন: দেড় বছর পর হলে ফিরলেন শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. ফারজানা সিদ্দিকা বলেন, ‘সিনথিয়ার এমন মৃত্যু হৃদয়কে দারুণভাবে ব্যথিত করেছে। এভাবে একটি হাসিমুখ চলে যাবে তা আমাদের কারও কাছেই কাম্য নয়। আমরা সকলেই প্রার্থনা করবো পরপারে যেনো তিনি ভালো থাকে। একই সাথে তার চিকিৎসার সাহায্যে যেভাবে যারা হাত বাড়িয়েছেন তাদের সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
আরও পড়ুন: গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় নতুন ইতিহাস তৈরি হল: শাবিপ্রবি উপাচার্য
চলতি বছর আগস্ট মাসে সিনথিয়ার শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। মরণব্যাধি এই কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া সিনথিয়ার চিকিৎসার জন্য শাবিপ্রবির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আর্থিক সাহায্যের জন্য নিজ বিভাগ, অ্যালামনাই, বর্তমান, সাবেক, দেশ ও দেশের বাইরের সকল শিক্ষার্থীদের তৎপরতা ছিল। এছাড়াও শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ সার্বিকভাবে সিনথিয়া চিকিৎসায় খোঁজ-খবরসহ অন্যান্য বিষয়ে এগিয়ে এসেছেন।
ফেসবুকে চাকরির সুযোগ পেলেন শাবিপ্রবির দুই শিক্ষার্থী
জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ও টেক্সট জায়ান্ট সাইট ফেসবুকে চাকরির সুযোগ পেলেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(শাবিপ্রবি) কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী।
চাকরির সুযোগ পাওয়া মওদুদ আহমেদ শাহরিয়ার ও এম. নাজিম উদ্দিন দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের ২০১৩-১৪ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।জানা যায়, চাকরির বিষয়টি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ই-মেইলের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন। মওদুদ আহমেদ শাহরিয়ার ও এম.নাজিম উদ্দিন দুজনই ইংল্যান্ডের ফেসবুকের ইউরোপিয়ান সদর দপ্তরে সফটওয়ার প্রকৌশলি হিসেবে যোগদান করবেন। চলতি বছরের জুন মাসে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করেন তাদের সাথে। বেশ কিছু ধাপে ভাইবার মাধ্যমে দক্ষতা যাচাই প্রক্রিয়া করে ফেসবুকে যোগদানের জন্য তাদেরকে নিয়োগের প্রস্তাবপত্র পাঠানো হয়। কোনো প্রকার জটিলতা না দেখা দিলে ২০২২ সালে ফেসবুকের এই দপ্তরে যোগদান করবেন বলে জানিয়েছেন দুজনেই।
আরও পড়ুন: ওরা আর কখনো শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ফিরবে নানিজের অনুভূতি জানিয়ে মওদুদ আহমেদ শাহরিয়ার বলেন, বিষয়টা আমার জন্য অবশ্যই খুশির খবর। ফেসবুকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন সংস্কৃতির সফটওয়্যার প্রকৌশলীদের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা হবে। আশা করি এই অভিজ্ঞতা পরবর্তীতে আরও বড় কাজে সাহায্য করবে। ছাত্র অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিংয়ের সাথে যুক্ত ছিলাম, ওই সময় অর্জিত দক্ষতা ফেসবুকের ভাইভায় উত্তীর্ণ হতে সাহায্য করেছে। যথাযথ সহায়তা পেলে বাংলাদেশ থেকে আরও অনেক শিক্ষার্থী বিশ্বের বড় সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোতে কাজ করার সুযোগ পাবে বলে মনে করি।এম. নাজিম উদ্দিন বলেন, আমি খুবই আনন্দিত গুগল ও ফেসবুকের মতো পৃথিবীর টপ টেক জায়ান্ট থেকে অফার পেয়ে। সবকিছু বিবেচনায় আমি ফেসবুকের অফার গ্রহণ করেছি। প্রস্তুতির সময়টুকু মোটেই সহজ ছিল না। আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার মা-বাবা, বন্ধু, সিনিয়রসহ সকলকে যারা আমাকে এই লম্বা প্রস্তুতির সময়টুকুতে সহযোগিতা করেছে, সাপোর্ট দিয়েছে। সত্যিকার অর্থে, ২০১৪ সালে যখন প্রোগ্রামিং শুরু করি, তখন থেকেই স্বপ্ন ছিল পৃথিবীর টপক্লাস ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে টেক জায়ান্টে জব করার।
আরও পড়ুন: করোনার দীর্ঘ ছুটিতে নতুন আঙ্গিকে শাবিপ্রবির চিকিৎসা কেন্দ্রতিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শেষ হওয়ার পর থেকেই প্রস্তুতি নেয়া শুরু করি গুগল, ফেসবুকের জন্য। প্রথম কয়েকবার আবেদন করে ব্যর্থও হই। কিন্তু সবসময় ই নিজের উপর বিশ্বাস ছিল। অবশেষে এই বছর জুন মাসে ফেসবুক ও গুগল থেকে যোগাযোগ করে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভাইভা দেওয়র জন্য। প্রায় দুই মাসব্যাপী ছয়টা করে ইন্টারভিউ নেয় গুগল ও ফেসবুক। সবগুলো ইন্টারভিউ ভালো হওয়ার পর দুই কোম্পানি থেকেই অফার করে। সবকিছু বিবেচনায় আমি ফেসবুকের লন্ডন অফিসের অফার গ্রহণ করি। কোনো জটিলতা না থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে যোগদান করব।
করোনার দীর্ঘ ছুটিতে নতুন আঙ্গিকে শাবিপ্রবির চিকিৎসা কেন্দ্র
করোনার দীর্ঘ ছুটিতে সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে রূপ নিয়েছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যায়ের (শাবিপ্রবি) চিকিৎসা কেন্দ্র। শিক্ষার্থীদের জন্য সার্বক্ষণিক ডাক্তার, অ্যাম্বুলেন্স সেবা, আইসোলেশন কেন্দ্রসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে নতুন রূপ পেয়েছে শাবিপ্রবির এই চিকিৎসা কেন্দ্র।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন এই মেডিকেল সেন্টারকে নতুন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে। মেডিকেল সেন্টারের সর্বত্র নতুন টাইলসের ব্যবহার, নতুন করে কেন্দ্রীয় ওষুধ সংরক্ষণ কক্ষ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ, শিক্ষার্থীদের অপেক্ষারত কক্ষ ও ডাক্তারদের রোগী দেখার কক্ষ সংস্কার, অত্যাধনিক ড্রেসিং কক্ষ, বিশুদ্ধ পানির সুব্যবস্থা ও আইসোলেশন কেন্দ্রের ব্যবস্থা বিদ্যামান। বর্তমানে মেডিকেল সেন্টারটি কেবল সরকারি ওষুধের ওপর নির্ভরশীল নয়।
মেডিকেল সেন্টার সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি বেক্সিমকো থেকে ৩৩টি ও স্কয়ার থেকে ৩৪টিসহ মোট ৬৭টি আইটেমের ওষুধ ক্রয়ের প্রক্রিয়াধীন আছে। যা দ্রুত মেডিকেল সেন্টারে সরবরাহ করা হবে।
আরও পড়ুন: ওরা আর কখনো শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ফিরবে না