করোনা আক্রান্ত
বিশ্বে করোনা আক্রান্ত ১৯ কোটি ১৯ লাখ ছাড়াল
মহামারি করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ছোবলে পুরো বিশ্বজুড়ে প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। যুক্তরাষ্ট্রের জনস্ হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বে এই মহামরিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ কোটি ১৯ লাখ ৫১ হাজার ৪৫৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১ লাখ ২৬ হাজার ৪৪৪ জনে।
এখন পর্যন্ত বিশ্বে ৩৭১ কোটি ৩০ লাখ ২৪ হাজার ৬৮৬ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা তিন কোটি ৪২ লাখ ২৬ হাজার ৭৭৬ জন। আর মৃতের সংখ্যা ৬ লাখ ৯ হাজার ৮৪১ জনে দাঁড়িয়েছে।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত জানিয়েছে, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৯৪ লাখ ৭৩ হাজার ৯৫৪ জনে। দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৬০৪ জনে। যুক্তরাষ্ট্রের পরই ব্রাজিলে সবচেয়ে বেশি মানুষের করোনায় মৃত্যু হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের পর করোনা আক্রান্তে দেশটির অবস্থান তৃতীয়।
করোনায় বিপর্যস্ত দেশের তালিকায় ভারতের অবস্থান তৃতীয়। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন কোটি ১২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩৭ জনে। এছাড়া দেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার লাখ ১৮ হাজার ৪৮০ জনে।
পড়ুন: ঈদের দিন করোনায় মৃত্যু ১৭৩, শনাক্ত ৩০.৪৮ শতাংশ
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
দেশে গেল ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও ১৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪৯৮ জন।
বুধবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, একদিনে আরও ৭ হাজার ৬১৪ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এনিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৩ জন।
পড়ুন: যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ফল-মিষ্টি পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী
করোনা মহামারির মধ্যে দেশজুড়ে ঈদুল আজহা পালিত
বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪ হাজার ৯৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এই সময় শনাক্তের হার শতকরা ৩০.৪৮ শতাংশ। এই পর্যন্ত করোনায় দেশে মৃত্যুর হার ১.৬৩ শতাংশ।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯ হাজার ৭০৪ জন করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন। এনিয়ে মোট ৯ লাখ ৬১ হাজার ৪৪ জন সুস্থ হয়েছেন। সুস্থতার হার ৮৪.৫৬ শতাংশ।
রামেকের করোনা ইউনিটে একদিনে ২০ মৃত্যু
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২৪ ঘণ্টায় আরও ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, মৃতদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে চারজন ও উপসর্গে ১৬ জন মারা গেছেন। মারা যাওয়া ২০ জনের মধ্যে রাজশাহীর আটজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুজন, নাটোরের পাঁচজন, নওগাঁ দুজন ও কুষ্টিয়ার তিনজন।
শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ওয়ার্ডে নতুন ভর্তি হয়েছেন ৬০ জন। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৭২ জন। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত করোনা ইউনিটে ৪৫৪ শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছেন ৪৮০ জন। বাকিদের মেঝে ও বারান্দায় অতিরিক্ত বেডের ব্যবস্থা করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও আইসিইউতে ভর্তি রয়েছে ১৯ জন।
পড়ুন: কোভিড-১৯: বিশ্বব্যাপী মৃত্যু প্রায় ৪১ লাখ
করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন ৪৮০ জনের মধ্যে ২৩৮ জনের করোনা পজিটিভ রয়েছে। উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৭৪ জন। তাদের নতুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও করোনামুক্ত হয়েও পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলাতায় চিকিৎসাধীন ৬৮ জন।
পরিচালক জানান, সোমবার দুটি ল্যাবে রাজশাহীর ৩৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১১৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। যা আগের দিনের চেয়ে ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়ে করোনা শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আগের দিন ছিল ১৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এর আগে গত শনিবার ২৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ এবং গত শুক্রবার ছিল ৩১ দশমিক ৯২ শতাংশ।
পড়ুন: বাংলাদেশে করোনায় একদিনে নতুন মৃত্যুর রেকর্ড ২৩১
রামেকে করোনায় আরও ১৭ মৃত্যু
চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত শতভাগ শিশুর দেহে ডেল্টা ধরন
চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শতভাগ শিশুর দেহে ডেল্টা ধরন পাওয়া গেছে। জুন থেকে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল এবং চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে আসা ও ভর্তি হওয়া ১২ শিশুর নমুনার জিনোম সিকুয়েন্সে পরিক্ষায় তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এ ক্ষেত্রে তাদের মৃত্যুঝুঁকি কম।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
রবিবার (১৮ জুলাই) বিষয়টি জানিয়েছে একটি গবেষক দল। গবেষণা দলের নেতৃত্বে রয়েছেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী ও ডা. আব্দুর রব মাসুম এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চিকিৎসক ও অধ্যাপক ডা. সঞ্জয় কান্তি বিশ্বাস ও ডা. নাহিদ সুলতানা।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের প্রধান ও গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ডা. আবদুর রব মাসুম জানান, তিন প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে করা এ গবেষণায় গত জুন থেকে চলতি জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আক্রান্ত শিশুদের শরীরে পাওয়া নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়। এই গবেষণা এখনো চলমান।
গবেষণায় পাওয়া সিকোয়েন্স ডেটা জার্মানভিত্তিক ভাইরাসের আন্তর্জাতিক তথ্যভান্ডার ‘গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটা’–তে প্রকাশিত হয়েছে। গত শনিবার সকালে সংস্থাটি এ সম্পর্কিত তথ্য তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে।
পড়ুন: করোনায় আরও ২২৫ মৃত্যু, শনাক্ত ১১ লাখ ছাড়াল
গবেষক দলে আরও ছিলেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. মিনহাজুল হক, ডা. রাজদ্বীপ বিশ্বাস ও ডা. মো. একরাম হোসেন এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ফাহিম হাসান রেজা ও ডা. আজমাইন মাহতাব।
জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের তত্ত্বাবধানে ছিল আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) ভাইরোলজি বিভাগের গবেষকদল, যার নেতৃত্বে ছিলেন বিজ্ঞানী ড. মুস্তাফিজুর রহমান এবং ড. মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন।
গবেষণায় দেখা যায়, আক্রান্ত শিশুদের ৮০ ভাগেরই বয়স ১০ বছরের নিচে। সর্বনিম্ন আট মাস বয়সের শিশুর মাঝে ডেল্টা ধরন চিহ্নিত হয়েছে। এ গবেষক দলের অন্য গবেষণা অনুযায়ী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের মাঝে ৮০ ভাগ রোগী পুরুষ হলেও শিশুদের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে। মেয়ে শিশুরাও সমানভাবে এ ধরনে সংক্রমিত ও আক্রান্ত হচ্ছে। ৫০ ভাগ ছেলে এবং ৫০ ভাগ মেয়ের মধ্যে এ ধরনের উপস্থিতি দেখা গেছে। ৯৫ ভাগ শিশুর মধ্যেই জ্বরের লক্ষণ এবং ৭০ ভাগ শিশুর মধ্যে সর্দি ও কাশি ছিল। একটি শিশু পুরোপুরি উপসর্গহীন ছিল।
গবেষণায় নেতৃত্ব দেয়া চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, গত চার মাসের পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, চট্টগ্রামে আলফা ও বিটা ধরনের প্রকোপ ছিল মে মাস পর্যন্ত। কিন্তু জুন থেকে ৯০ ভাগ রোগীর মধ্যেই ডেল্টা ধরন দেখা যাচ্ছে। এ পরিবর্তনের সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হচ্ছে, শিশুদের মধ্যে ডেল্টা ধরনের সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাওয়া।
পড়ুন: কুষ্টিয়ায় করোনায় আরও ২০ জনের মৃত্যু
বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু!
এ প্রসঙ্গে গবেষকদলের অন্যতম সদস্য ডা. সঞ্জয় কান্তি বিশ্বাস বলেন, গত এক বছরে আমরা তেমন উল্লেখযোগ্য হারে শিশুদের মাঝে করোনাভাইরাস দেখতে পাইনি। কিন্তু গত জুন মাস থেকে আক্রান্তের সংখ্যা ও তীব্রতা বেড়ে গেছে। ডেল্টা ধরনের কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে আমাদের গবেষণা থেকে পরিলক্ষিত হচ্ছে। ছোট শিশুরা নিজের অনুভূতি কিংবা দুর্বলতা প্রকাশ করতে না পারায়, অনেকেই করোনা টেস্ট বা শনাক্তকরণের আওতায় আসবে না, যা চিন্তার বিষয়ও।
গবেষক দলের শিশুদের মাঝে করোনা আক্রান্ত হওয়ার মাত্রা বেড়ে যাওয়া অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। এ ক্ষেত্রে শিশুদের জন্য বিশেষায়িত নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রের প্রয়োজন বেড়ে যেতে পারে সামনের দিনগুলোতে। পরিবারের সবাইকে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে শিশুদের স্বার্থে।
গত এপ্রিল মাস থেকে চট্টগ্রামের এ গবেষকদল চট্টগ্রামের বিভিন্ন পর্যায়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জিনোমিক সার্ভিলেন্স বা নিয়মিত জিনোমিক বৈশিষ্ট্য ও শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন পর্যবেক্ষণের কাজ করছেন। গবেষণায় সার্বিক সহযোগিতায় আছে ডিজিজ বায়োলজি অ্যান্ড মলিকুলার এপিডেমিওলজি রিসার্চ গ্রুপ, চট্টগ্রাম।
খুলনায় করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও ১২ মৃত্যু
খুলনার তিন হাসপাতালে গত ২৪ ঘন্টায় আরও ১২ জনের প্রাণহানী হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৯ জন ও উপসর্গ নিয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
মৃতদের মধ্যে খুলনা ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে পাঁচ জন, জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চার ও গাজী মেডিকেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তিন জনের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় করোনা শনাক্তের হার ৪৮.০৭ শতাংশ, মৃত্যু ৮
খুলনা ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, হাসপাতালে গত ২৪ ঘন্টায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া উপসর্গে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২০১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩৮ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২১ জন।
খুলনার শহীদ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ডা. প্রকাশ দেবনাথ জানান, হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন ৪৪ জন। তার মধ্যে আইসিইউতে রয়েছে ১০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ছয় জন আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ছয় জন। এই হাসপাতারে কারও মৃত্যু হয়নি।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তামানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬৮ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১২ জন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় করোনায় মোট মৃত্যু ৩৫৯
গাজী মেডিকেল হাসপাতালের স্বত্তাধিকারী ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
এই হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ১১৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১২ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৫ জন।
চমেকে জরুরি ছাড়া রোগী ভর্তি-অপারেশন বন্ধ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে করোনা রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় করোনা আক্রান্ত ছাড়া অন্যান্য সাধারণ রোগী ভর্তি বন্ধ এবং রুটিন অপারেশন সীমিত করা হয়েছে।
সোমবার (১২ জুলাই) এ নিয়ে জরুরি আদেশ জারি করেছে চমেক কর্তৃপক্ষ।
নতুন নিয়মে হাসপাতালে জরুরি অপারেশন ছাড়া মাইনর কিংবা রুটিন অপারেশন বন্ধ থাকবে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ূন কবীর স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়- কেবলমাত্র জরুরি রোগীদের ভর্তি ব্যতীত অন্যান্য রুটিন অপারেশনসমূহ স্থগিত থাকবে। জরুরি রোগীদের ভর্তি করা হবে, তবে রুটিন ভর্তি বন্ধ থাকবে। ইতোমধ্যে ভর্তিকৃত রোগীদের মধ্যে যারা জরুরি নন (দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত) তাদের আপাতত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, ব্যবস্থাপত্র দিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা গ্রহণের জন্য ছাড়পত্র দেয়া হবে। সকল স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, নার্সিং কর্মকর্তা, কর্মচারী ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের ডিউটিকালীন সময়ে মাস্ক পরিধান করা অত্যাবশ্যক।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে করোনায় একদিনে ১৪ মৃত্যু, শনাক্ত ৭০৯
এ ব্যাপারে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ূন বলেন, ‘হঠাৎ করে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্বাভাবিক রোগীর চেয়ে করোনা রোগীর সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। আপাতত জরুরি অপারেশন এবং জরুরি রোগী ভর্তি রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অন্যান্য সেবা সীমিত করে হাসপাতালের লোকবল কোভিড-১৯ চিকিৎসা কার্যক্রমে নিয়োজিত রাখা হবে।’
তিনি বলেন, যারা ইতোমধ্যে ভর্তি রয়েছেন তাদের শারীরিক অবস্থা যাচাই করে প্রয়োজনীয় প্রেসক্রিপশন ও পরামর্শ দিয়ে বাসায় পাঠানো হচ্ছে। যাদের নিতান্ত হাসপাতালে থাকা প্রয়োজন তাদের আমরা ভর্তি রাখছি। চিকিৎসা শেষে তারাও বাসায় ফিরে যাবেন।
আরও পড়ুন: দেশে শনাক্তে রেকর্ড, আরও ২২০ জনের মৃত্যু
১৫ থেকে ২২ জুলাই লকডাউন শিথিল, ঈদের পর ফের কঠোর
বিশ্বব্যাপী করোনা আক্রান্ত ১৮ কোটি ৪১ লাখ ছাড়াল
বিশ্বব্যাপী প্রতিদিনি মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ কোটি ৪১ লাখ ৬ হাজার ৯১৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া একই সময়ে মোট মৃতের সংখ্যা ৩৯ লাখ ৮৩ হাজার ৭০৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট ৩২২ কোটি ৯ লাখ ৩০ হাজার ৮৭৬ ডোজ করোনার টিকা প্রদান করা হয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৩৭ লাখ ২৩ হাজার ৯৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৬ লাখ ৫ হাজার ৫৬৭ জন।
আরও পড়ুন: একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু, শনাক্তেও রেকর্ড
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ২৫ হাজার ১১২ জনে। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১ কোটি ৮৭ লাখ ৯২ হাজার ৫১১ জন। মৃত্যুর দিক দিয়ে দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়।
এদিকে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৫ লাখ ৮৫ হাজার ২২৯ জন। একই সময়ে মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২ হাজার ২৭৮ জনে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, অক্সিজেন সংকট
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, এর আগে রবিবার (৪ জুলাই) দেশে ১৫৩ জনের প্রাণহানি হয়েছিল। এনিয়ে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ২২৯ জনে।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসে একদিনে সর্বোচ্চ ৯ হাজার ৯৬৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে ৩০ জুন ৮ হাজার ৮২২ আক্রান্ত হয়েছিল। এনিয়ে মোট শনাক্ত ৯ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮১ জনে দাঁড়িয়েছে। শনাক্তের হার ২৯.৩০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: করোনা স্বাভাবিক না হলে গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা নয়, শিগগিরই নতুন সিদ্ধান্ত
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৪ হাজার ২টি। মৃতদের মধ্যে ১০৯ জন পুরুষ এবং ৫৫ জন নারী।
নতুন করে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ১৮৫ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৩৯ হাজার ৮২ জন। সুস্থতার হার ৮৭.৮৭ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১.৫৯ শতাংশ।
করোনা আক্রান্ত এমপি নারায়ণ চন্দ্র, হাসপাতালে ভর্তি
খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ বলেন,
বুধবার (৩০ জুন) সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা মহামারি থেকে শিশুকে নিরাপদ রাখবেন কীভাবে?
খুলনায় করোনা ইউনিটে আরও ১৩ জনের প্রাণহানি
খুলনার পৃথক তিনটি হাসপাতালে বুধবার (৩০ জুন) সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসাধীন আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর মধ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে দুজন, খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তিন ও বেসরকারি গাজী মেডিকেল হাসপাতালে আট জনের মৃত্যু হয়েছে।
গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্বত্তাধিকারী ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৮৫ জন, এর মধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন পাঁচ জন আর এইচডিইউতে আছেন ১০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ২১ জন, আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২০ জন। গতকাল ৩২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৭ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: অকারণে বের হলে গ্রেপ্তার, ডিএমপি কমিশনারের হুঁশিয়ারি
জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, খুলনার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা করোনা হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, খুলনার ১৩০ শয্যা বিশিষ্ট ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় দু'জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তারা রেড জোনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২০১ জন, যার মধ্যে রেড জোনে ১১৩ জন, ইয়ালো জোনে ৩৮ জন, আইসিইউতে ২০ জন ও এইচডিসিতে ২০ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৪৪ জন, আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৮ জন।
বিশ্বে করোনা আক্রান্ত ১৫ কোটি ৮৩ লাখ ছাড়াল
যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিনস্ বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ কোটি ৮৩ লাখ ৩৭ হাজার ৪২২ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে মারা গেছেন ৩২ লাখ ৯৩ হাজার ১৫৩ জন।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা ৩ কোটি ২৭ লাখ ৭ হাজার ৭৯৭ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৫ লাখ ৮১ হাজার ৭৫৪ জন।
এদিকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২২ হাজার ৩৪০ জনে। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ ৮৪ হাজার ৭৯০ জন।
যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ ল্যাটিন আমেরিকার এই দেশটি। করোনা মহামারির প্রকোপ শুরু হবার পর গেল এপ্রিলেই সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখতে পায় ব্রাজিল।
অপরদিকে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে চলমান করোনার প্রকোপে এই পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত হয়েছে ২ কোটি ২৬ লাখ ৬২ হাজার ৫৭৫ জন এবং মারা গেছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ১১৬ জন।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
দেশে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত ও মৃত্যু আরও বেড়েছে বলে রবিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, করোনায় আরও ৫৬ জন মারা গেছেন। এনিয়ে মোট মৃত্যু ১১ হাজার ৯৩৪ জনে দাঁড়াল।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৩৮৬ জনের শরীরে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে মোট শনাক্ত ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫১৩ জনে পৌঁছেছে।
এর আগে শনিবার অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ জন মারা গেছেন এবং ১ হাজার ২৮৫ জন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ হাজার ৯১৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শনাক্তের হার ৮.১৯ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৩২৯ জন। মোট সুস্থ ৭ লাখ ১০ হাজার ১৬২ জন। সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৮১ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১.৫৪ শতাংশ।
আরও পড়ুন: দেশে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত: আইইডিসিআর
এদিকে, বাংলাদেশে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (ধরন) শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।
শনিবার দুপুরে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সংস্থাটি।
২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনা আক্রান্ত আরও ৮ লাখ
যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিনস্ বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে প্রায় আট লাখ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এনিয়ে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ কোটি ৩৯ লাখ ৬০ হাজার ৭৪৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া একদিনে আরও প্রায় ১৪ হাজার মানুষ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন। এনিয়ে বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩২ লাখ ২৩ হাজার ৫১৯ জন।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা ৩ কোটি ২৫ লাখ ১১ হাজার ২৯০ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৪২১ জন।
আরও পড়ুন: ঈদের আগেই চীন থেকে ভ্যাকসিন পেতে আশাবাদী ঢাকা
এদিকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ১১ হাজার ৫৮৮ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৩ হাজার মানুষ মারা গেছেন। দেশটিতে এপর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১ কোটি ৪৮ লাখ ৫৬ হাজার ৮৮৮ জন।
ল্যাটিন আমেরিকার এই দেশটিতে করোনা মহামারির প্রকোপ শুরু হবার পর গেল এপ্রিলেই সবচেয়ে মৃত্যু দেখতে পায় দেশটি।
অপরদিকে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে চলমান করোনার প্রকোপে এই পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছে ২ কোটি ২ লাখ ৮২ হাজার ৮৩৩ জন এবং মারা গেছে ২ লাখ ২২ হাজার ৪০৮ জন।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
দেশে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে মৃত্যু আরও কমেছে, তবে শনাক্ত বেড়েছে বলে মঙ্গলবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, করোনায় আরও ৬১ জন মারা গেছেন। এনিয়ে মোট মৃত্যু ১১ হাজার ৭০৫ জনে দাঁড়াল।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৯১৪ জনের শরীরে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে মোট শনাক্ত ৭ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯৬ জনে পৌঁছেছে।
এর আগে সোমবার অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় ৬৫ জন মারা গেছেন এবং ১ হাজার ৭৩৯ জন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ হাজার ৯৮৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শনাক্তের হার ৮.৭১ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৮৭০ জন। মোট সুস্থ ৬ লাখ ৯৫ হাজার ৩২ জন। সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ৭৮ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১.৫৩ শতাংশ।
এদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন মঙ্গলবার বলেছেন, ঈদুল ফিতরের আগেই ভ্যাকসিন ডেলিভারি দিতে চীনা সরকার কাজ শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: অবশেষে আইপিএল স্থগিত
তিনি বলেন, ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং সম্প্রতি জানিয়েছেন যে ভ্যাকসিন ঈদের আগেই ঢাকায় আসা শুরু করবে। অন্যদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক নির্দিষ্ট করে জানিয়েছেন ১০ মে ভ্যাকসিন আসবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে চীন ও রাশিয়ার সংযোগ স্থাপন করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উল্লেখ করে ড. মোমেন ইউএনবিকে বলেন, ‘কখন এবং কত ডোজ টিকা কীভাবে আসবে তা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে। তারা জানে কখন এটা আমাদের দরকার।’
মন্ত্রী বলেন, চীনে ৫ দিনের মে দিবসের ছুটি চলছে যা ৫ মে শেষ হবে। এই ছুটির কারণে চীনে সবকিছু বন্ধ থাকবে।
ভ্যাকসিন পেতে রাশিয়া ও আমেরিকার সাথে যোগাযোগ চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অর্ডারের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন উৎপাদন হওয়ায় কিছু সময় লাগবে।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার বলেছেন, করোনাভাইরাস থেকে জনগণকে রক্ষায় সরকার যেকোনো মূল্যে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করবে। ‘আমরা আরও ভ্যাকসিন আনছি, কত টাকা লাগবে সেটা কোনো বিষয় নয়।’
বিএনপি নেতা আমান করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শনিবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানকে বেলা দেড়টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নেয়া হয় বলে জানান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন।
শুক্রবার করোনা পরীক্ষা করান আমান এবং তার ফলাফল পজিটিভ এসেছে।
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত বিসিবির পরিচালক আকরাম খান
আমান সুস্থ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, তার কোনো বড় ধরনের জটিলতা নেই।
আমান ১৯৯০ সালে ডাকসুর ভিপি ছিলেন এবং ঢাকা-৩ আসন থেকে তিনবার এমপি নির্বাচিত হন তিনি।