প্রধান বিচারপতি
সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের মৃত্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
শনিবার এক শোকবার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত সাহাবুদ্দীন আহমদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে সাহাবুদ্দীন আহমেদ মৃত্যুবরণ করেন।
আরও পড়ুন: সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ আর নেই
সুপ্রিম কোর্টের নতুন রেজিস্ট্রার জেনারেল হলেন বজলুর রহমান
সুপ্রিম কোর্টের নতুন রেজিস্ট্রার জেনারেল হিসেবে সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমানকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সোমবার আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ নিয়োগের বিষয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির অভিপ্রায় অনুযায়ী সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমানকে বর্তমান কর্মস্থল হতে বদলি করে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল পদে নিয়োগের উদ্দেশ্যে তাঁর চাকরি প্রধান বিচারপতির অধীন ন্যস্ত করা হলো।’
উল্লেখ্য, সুপ্রিমকোর্টের বর্তমান রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর আজ সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) অবসরে যাচ্ছেন। নতুন নিয়োগ পাওয়া জেলা ও দায়রা জজ বজলুর রহমান বর্তমান রেজিস্ট্রার জেনারেল আলী আকবরের স্থলাভিষিক্ত হবেন।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের চেয়ারম্যান হলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান বিচারপতির সৌজন্য সাক্ষাৎ
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
সাক্ষাৎকালে প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন কার্যক্রম বিশেষ করে করোনাকালে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন।
প্রধান বিচারপতি মামলাজট কমাতে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কেও রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির কাছে কানাডার নতুন হাইকমিশনার লিলি নিকোলসের পরিচয়পত্র পেশ
রাষ্ট্রপ্রধান প্রধান বিচারপতিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বিচার বিভাগ মানুষের বিচার পাওয়ার শেষ আশ্রয়স্থল।
তিনি বলেন, বিচারপ্রার্থীরা যেন কোনো রকমের হয়রানি ছাড়া বিচার পেতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে বিচার বিভাগ দ্রুত বিচার কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রপতি।
আরও পড়ুন: হয়রানি ছাড়া ন্যায়বিচার নিশ্চিত করুন: রাষ্ট্রপতি
এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন ও সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
সস্ত্রীক করোনা আক্রান্ত প্রধান বিচারপতি, বিএসএমএমইউতে ভর্তি
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও তাঁর স্ত্রী ডালিয়া ফিরোজ করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শরফুদ্দিন আহমেদ জানান, বুধবার রাতে প্রধান বিচারপতিকে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের ভিআইপি ডিলাক্সের কেবিন নম্বর ৬১২ তে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার একই হাসপাতালে ভর্তি হন তার স্ত্রী ডালিয়া ফিরোজ।
তিনি জানান, তারা দুজনই সুস্থ আছেন। দুপুরে তাদের বিষয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, যারা তাদের চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় শনাক্তের হার ২৫.১১ শতাংশ, মৃত্যু ১২
বিএসএমএমইউর উপাচার্য জানান, প্রধান বিচারপতি ও তাঁর স্ত্রী উভয়ই করোনার মৃদু উপসর্গে আক্রান্ত। বর্তমানে তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো আছে।
তবে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি। অন্যদিকে রেজিস্ট্রার জেনারেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এর আগে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সারাদেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বুধবার থেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্ট উভয়ের কার্যক্রম ভার্চুয়ালি পরিচালনা করার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস সংক্রমণের রেড জোনে আরও ১০ জেলা
কুমিল্লায় বিদ্যালয়ের সব শিক্ষকের করোনা শনাক্ত, বন্ধ ঘোষণা
বুধবার থেকে ভার্চুয়ালি চলবে সুপ্রিম কোর্ট
দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে আগামীকাল বুধবার থেকে ফের সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে শুরু হচ্ছে।
মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নির্দেশক্রমে এ বিষয়ে পৃথক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের জন্য জারিকৃত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপর্যুক্ত বিষয়ে নির্দেশিত হয়ে জানানো যাচ্ছে যে, করোনা সংক্রমণজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আগামী বুধবার থেকে ‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০’ এবং এতদসংক্রান্তে জারিকৃত প্র্যাকটিস ডাইরেকশন অনুসরণ করত: তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
হাইকোর্ট বিভাগের জন্য জারিকৃত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপর্যুক্ত বিষয়ে নির্দেশিত হয়ে জানানো যাচ্ছে যে, করোনা সংক্রমণজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আগামী বুধবার থেকে ‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০’ এবং এতদসংক্রান্তে জারিকৃত প্র্যাকটিস ডাইরেকশন অনুসরণ করত: তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে হাইকোর্ট বিভাগের সব বেঞ্চে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হলে প্রধান বিচারপতি বলেন,‘চারদিকে করোনার সংক্রমণের যে অবস্থা, তাতে মনে হচ্ছে আবারও হয়ত ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনায় যেতে হবে। ভার্চুয়ালি মামলা যে কম নিষ্পত্তি হয় তা কিন্তু নয়, ভার্চুয়ালি বেশিই নিষ্পত্তি হয়।’
এসময় আদালতে উপস্থিত রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন,‘আমাদের অ্যাটর্নি জেনারেল মহোদয় এবং একজন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলসহ কয়েকজন আইন কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছেন।’
আরও পড়ুন: বিএসএমএমইউ চিকিৎসকের মানহানিকর ভিডিও সরানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
তখন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন,‘আমাদের হাইকোর্টের ১৩ জন বিচারপতি, স্টাফ এবং নিম্ন আদালতের বেশ কিছু বিচারকও আক্রান্ত হয়েছেন।’
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে বিচার বিভাগকে সচল রাখার প্রয়োজনীয়তায় একপর্যায়ে ২০২০ সালের ৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ- ২০২০’ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।
এরপরে ৯ মে ভার্চুয়াল উপস্থিতিকে স্বশরীরে উপস্থিতি হিসেবে গণ্য করে অধ্যাদেশটি জারি করেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। এরপর একই বছরের ১০ মে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে ১১ মে থেকে সীমিত পরিসরে বিচারিক কার্যক্রম শুরুর মাধ্যমে দেশে ভার্চুয়াল আদালত চালু হয়েছিল। করোনা সংক্রমণ কমে আসায় গত বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের উভয় (আপীল ও হাইকোর্ট) বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম ফের শারীরিক উপস্থিতিতে চালু করে কোর্ট প্রশাসন।
তবে ধীরে ধীরে করোনা সংক্রমণ আবারও বাড়ছে। দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে ছয় হাজার ছাড়িয়ে গেছে। শনাক্তের হার বেড়ে হয়েছে ২০ শতাংশের ওপরে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (রবিবার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) দেশে করোনা সংক্রমিত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ছয় হাজার ৬৭৬ জন। এরই মধ্যে গত ১৬ জানুয়ারি থেকে ফের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ভার্চুয়ালি শুরু হয়েছে। এরপর বুধবার থেকে সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম ভার্চুয়ালি শুরু হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চান হাইকোর্ট
অর্থপাচার মামলায় হাইকোর্টে জামিন পেলেন বগুড়ার তুফান
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের তিন বিচারপতি
নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত আপিল বিভাগের চার বিচারপতির মধ্যে তিন বিচারপতি শপথ নিয়েছেন। রবিবার (৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী তাদের শপথবাক্য পাঠ করান। সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর।
শপথ নেয়া তিন বিচারপতি হলেন-বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ। এর আগে আজ সকালে হাইকোর্ট বিভাগের চার বিচারপতিকে আপিল বিভাগে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগে কর্মরত চারজন বিচারককে তাদের শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের বিচারক নিয়োগ করেছেন। চার বিচারপতি হলেন- বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ।
আরও পড়ুন: আপিল বিভাগে ৪ বিচারপতি নিয়োগ
শপথ গ্রহণের পর আপিল বিভাগের এক নম্বর আদালত কক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে এই তিন বিচারপতিকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
আদালত কক্ষে বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসানের অনুপস্থিতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমি তার সাথে কথা বলেছি। তিনি সুস্থ হয়ে পরে শপথ নেবেন বলে জানিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: দুর্নীতির বিষয়ে ‘নো কম্প্রোমাইজ’: প্রধান বিচারপতি
টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধান বিচারপতির শ্রদ্ধা
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে সমাধিসৌধ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি ফাতেহা পাঠ ও বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
পরে প্রধান বিচারপতি পরে সমাধিসৌধের ভেতরে যান এবং বঙ্গবন্ধু ও তার বাবা-মায়ের কবর পরিদর্শন ও জিয়ারত করেন। এরপর তিনি ‘ বঙ্গবন্ধ’ ভবনে গিয়ে সেখানে রক্ষিত পরিদর্শন বইয়ে মন্তব্য লিখে সেখানে স্বাক্ষর করেন।
আরও পড়ুন: জাতীয় স্মৃতিসৌধে নব-নিযুক্ত প্রধান বিচারপতির শ্রদ্ধা
এই সময় তার সঙ্গে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবার, গোপালগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ অমিত কুমার দে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা ও দায়রা জজ আলমাছ হোসেন মৃধা, গোপালগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম মোহম্মাদ সাহদাৎ হোসেন ভূঁইয়া, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আব্বাস উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইলিয়াছুর রহমান, পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দীকা, টুঙ্গিপাড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম, টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র তোজ্জাম্মেল হক টুটুল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ, সহ-সভাপতি ইলিয়াস হোসেনসহ জজশিপ ও মেজিস্ট্রেসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির বিষয়ে ‘নো কম্প্রোমাইজ’: প্রধান বিচারপতি
‘মৃত বঙ্গবন্ধু জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে শক্তিশালী’
নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, মৃত বঙ্গবন্ধু জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে শক্তিশালী। বিচারপতিরা বঙ্গবন্ধুকে সর্বোচ্চ শ্রদ্ধার আসনে রেখে তার আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন।
শনিবার সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সেখানে শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
পরে দুপুরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। শ্রদ্ধা জানানোর সময় তার সঙ্গে ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান নোনী ও বিচারপতি মো. ওবায়দুল হাসান, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবরসহ সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তারা। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান করেন প্রধান বিচারপতি।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার মনে হয় ৭৫ এর ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে বটে, তিনি শাহাদাত বরণ করেছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকবেন মানুষের মধ্যে এবং বাংলার আনাচে কানাচে আমরা বঙ্গবন্ধুকে অনুভব করি। মৃত বঙ্গবন্ধু এখন জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী।’
আরও পড়ুন: ২৩তম প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী
তিনি আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে ১৫ আগস্টে আমরা সুপ্রিম কোর্টে অনুষ্ঠান করেছি। প্রত্যেকটা বিচারপতি উনাকে (বঙ্গবন্ধু) শ্রদ্ধা নিবেদন করে কথা বলেছেন। এখান থেকে আমার মনে হয় জীবিত বঙ্গবন্ধুর থেকে মৃত বঙ্গবন্ধু অনেক অনেক বেশি শক্তিশালী। ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে মারতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধু মরেননি; আমাদের মনে জীবিত আছেন।’
এর আগে ৩০ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। ২০১৩ সালের ২৮ মার্চ আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
জানা যায়, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ১৯৫৬ সালে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার রমানাথপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ৯ ভাইবোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। ১৯৭২ সালে তিনি খোকসা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর সাতক্ষীরার আচার্য্য প্রফুল্ল কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭৪ সালে তিনি ওই কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন এবং ১৯৭৬ সালে স্নাতক পাস করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। সেখান থেকে তিনি ১৯৭৮ সালে এমএ করেন। তারপর তিনি ধানমন্ডি ল কলেজ থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন।
আরও পড়ুন: শপথ নিলেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী
১৯৮১ সালে তিনি ঢাকা আইনজীবী সমিতিতে একজন আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের এবং ১৯৯৯ সালের ২৭ মে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভূক্ত হন। তিনি বাংলাদেশের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে তাকে হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ না দিয়ে বাদ দেন। পরে আদালতের রায়ে ২০০৯ সালের ২৫ মার্চ হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৩ সালের মার্চ মাসে তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি তাকে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেন। সর্বশেষ গত বছরের ৩ মে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান পদে পুননিয়োগ পান তিনি। বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী তার কর্মজীবনে অনেকগুলো জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ রায় প্রদান করেন। একজন সফল বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি অনেকগুলো আন্তর্জাতিক সম্মেলনেও অংশ নেন।
আরও পড়ুন: জাতীয় স্মৃতিসৌধে নব-নিযুক্ত প্রধান বিচারপতির শ্রদ্ধা
শপথ নিলেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী
দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ্য বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। শুক্রবার বিকাল ৪টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তাকে শপথবাক্য পাঠ করান।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাষ্ট্রপতির স্ত্রী বেগম রাশিদা খানম, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, সাবেক প্রধান বিচারপতিগণ, আপিল ও হাইকোর্ট উভয় বিভাগের বিচারপতিগণ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
২৩তম প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
বৃহস্পতিবার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ এ বিষয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী শুক্রবার বিকাল ৪টায় বঙ্গভবনে প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেবেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন।
বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের বয়স ৬৮ বছর হয়ে যাওয়ায় তিনি বৃহস্পতিবার অবসর নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিদায়ী প্রধান বিচারপতি
সংবিধানের ৯৬ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ৬৭ বছর পর্যন্ত একজন বিচারপতি দায়িত্ব পালন করবেন।
এর আগে বুধবার বঙ্গভবনে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেছেন।
২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তাকে দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতি নিয়োগের সর্বময় ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির: আইনমন্ত্রী