বিনিয়োগ
বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী সৌদি আরবের অনেক নামকরা কোম্পানি: রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান বলেছেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি এবং সৌদি আরব বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
সৌদি আরবের ৯৩তম জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘অনেক বিখ্যাত সৌদি কোম্পানি ও বিনিয়োগকারী বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে গভীর আগ্রহ দেখিয়েছে।’
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাপী শান্তির সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সঠিক ব্যবহারের আহ্বান রাষ্ট্রদূত মুহিতের
২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সৌদি দূতাবাস দিবসটি পালন করবে। তবে সৌদি আরবের জাতীয় দিবস পালিত হয় ২৩ সেপ্টেম্বর।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি আরব প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষার জন্য বাড়ি, স্কুল, মসজিদ, এতিমখানা ও আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি হাসপাতাল, সেতু এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের মতো বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৌদি আরব সফর এবং সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি সৌদি আরবের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকজন সৌদি মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের পর সৌদি-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও জোরদার হয়।
সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের একটি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর ভিত্তি করে দুই দেশের সম্পর্ক গভীর ও অসামান্য।
তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে দুঃসময়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানো ও সহায়তা করে থাকে সৌদি আরব। বাংলাদেশ ইসলাম ও সৌদি আরবকে আন্তরিকভাবে ভালোবাসে, যা সৌদি আরবকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।’
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, বিশ্বের বৃহত্তম শ্রমবাজার হিসেবে স্বীকৃত সৌদি আরবে লাখ লাখ বাংলাদেশি বিভিন্ন খাতে কাজ করছেন।
তিনি বলেন, ‘এই দেশের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সৌদি আরব একটি দুর্দান্ত অবদান রেখেছে, কারণ অভিবাসী শ্রমিকরা ক্রমাগত তাদের প্রিয় পরিবারের সদস্যদের কাছে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ যখনই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন সৌদি আরব সবসময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় এবং বাংলাদেশকে সহায়তা করে।
আরও পড়ুন: কৃষি গবেষণায় সহযোগিতা করতে পারে ঢাকা-ইসলামাবাদ: পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: কূটনীতিকদের সঙ্গে রাখাইন সফরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত
উদ্যোক্তাদের জলবায়ু সহনশীল প্রকল্পে বিনিয়োগের আহ্বান
নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৪০ শতাংশ জ্বালানি উৎপাদনে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জলবায়ু সহনশীল প্রকল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা নীতিগত সহায়তা নিতে পারেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত সাবের হোসেন চৌধুরী।
একটি আন্তর্জাতিক জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সাহসী ঘোষণা দিয়ে বলেছেন আমরা নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আসা ৪০ শতাংশ জ্বালানি সরবরাহ করতে চাই। মুজিবের জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা অনুসারে, আমরা সহনশীল প্রকল্পে রূপান্তরিত করছি যা আমাদের চ্যালেঞ্জগুলো সুযোগে পরিণত করবে।’
সম্প্রতি ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে (আইইউবি) ‘প্রিজারভ প্ল্যানেট আর্থ, ঢাকা-২০২৩’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিএডি)।
আরও পড়ুন: কয়লার ব্যবহার কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন ক্লাইমেট পার্লামেন্টের ভাইস-চেয়ারপারসন ওয়াসেকা আয়েশা খান।
সাবের হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ বৈশ্বিক নির্গমনের মাত্র শূন্য দশমিক ৪৮ শতাংশ অবদান রাখছে। সুতরাং, আমাদের এই ক্রান্তিকালীন পরিবর্তনের খুবই প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আমরা শূন্যের কোটায়। এই ভূমিকায় বিশ্বনেতা হবে বাংলাদেশ।’
সম্মেলনে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশে বিদেশি বেসরকারি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়।
আয়েশা ওয়াসেকা খান বলেন, ৩০টি নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের কার্যকর অগ্রগতি রয়েছে, যার মধ্যে ২৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র বেসরকারি খাতে অর্থায়নে এবং আরও ৬৫টি প্রকল্প বিবেচনাধীন।
তিনি বলেন, 'আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে বাংলাদেশকে জ্বালানি প্রযুক্তি পরিহার করতে হবে, যা দীর্ঘমেয়াদে আটকে থাকা সম্পদে পরিণত হতে পারে এবং ভর্তুকির ক্ষেত্রে দেশের অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।’
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে বিশ্বব্যাংকের সাথে ১৮৫ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি
আইসিসিএডির পরিচালক অধ্যাপক সালেমুল হক, আইইইই সভাপতি অধ্যাপক সাইফুর রহমান, এসওএল শেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা সেবাস্টিয়ান গ্রো এবং নাসার অনুদান বিজয়ী ওয়াহিদুল হাসান প্রধান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সম্মেলনের আহ্বায়ক ছিলেন আইইউবির প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি কাইয়ুম খান।
আইইউবির চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার, উপাচার্য অধ্যাপক তানভীর হাসান, বিজ্ঞানী মোবারক আহমেদ খান এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক করিমও আমন্ত্রিত হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
‘ইয়ুথ এনগেজমেন্ট পার্টনার’ হিসেবে প্রায় ৪৪টি যুব সংগঠন এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব এই সম্মেলনে যোগ দেয়।
সম্মেলনটিতে স্পন্সর করেন ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (আইইইই), রোটারি ইন্টারন্যাশনাল, প্রজেক্ট আরোধ্য এবং হেল্প সার্ভিসেস ফাউন্ডেশন, আবদুল মোনেম গ্রুপ এবং গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স। এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বাস্তবায়ন অংশীদার ছিল এনভোলেড লিমিটেড।
আরও পড়ুন: ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০% নবায়নযোগ্য জালানি ব্যবহারে রোড ম্যাপ তৈরির আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
বাংলাদেশে ভিয়েতনামের বিনিয়োগ চান রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন
বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে ভিয়েতনামের বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
শুক্রবার (২২ সেপ্টম্বর) দুপুরে সফররত ভিয়েতনামের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট ভুয়ং দিন হুয়ে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: জাকার্তায় রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে আইওআরএ সেক্রেটারি জেনারেলের সৌজন্য সাক্ষাৎ
ভিয়েতনামের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক বিদ্যমান।
বাংলাদেশে ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ও ভিয়েতনামে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির সফরের উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে দু দেশের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় হয়েছে । রাষ্ট্রপতি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বিনিয়োগ বাড়াতে বাংলাদেশ থেকে ওষুধ, তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, সিরামিকসসহ বিশ্বমানের পণ্য আমদানি করতে ভিয়েতনামের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়লগ পার্টনার হতে বাংলাদেশের প্রতি ভিয়েতনামের সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন আশা করেন, রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক স্বদেশ প্রত্যাবাসনে ভিয়েতনাম বড় ভূমিকা পালন করবে।
সাক্ষাৎকালে ভিয়েতনামের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট ভুয়ং দিন হুয়ে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বাড়াতে গভীরভাবে আগ্রহী তার দেশ।
বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করতে সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়নে তার দেশ সহযোগিতা দিয়ে যাবে।
সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া , সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম , প্রেস সচিব জয়নাল আবেদন, সচিব সংযুক্ত মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান ও ভিয়েতনামের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্টের সফরসঙ্গীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর বিদায়ী সাক্ষাৎ
১২ দিনের সফর শেষে দেশে ফিরেছেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন
আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান মোমেনের
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বাংলাদেশ ও আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে অনাবিষ্কৃত বাণিজ্য সুযোগ কাজে লাগানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম বাংলাদেশ ২০২৩-এ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।
মোমেন আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে বিশেষ করে ফার্মাসিউটিক্যালস, টেক্সটাইল, জ্বালানি, নীল অর্থনীতি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (আইসিটি) মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর সঙ্গে শক্তিশালী বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় বাংলাদেশের দূরদর্শী 'লুক আফ্রিকা' নীতির ওপরও আলোকপাত করা হয়, যা আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে কৌশলগত অঙ্গীকারের প্রতিনিধিত্ব করে।
আরও পড়ুন: লিবিয়ার বন্যার্তদের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে আজ
এতে বাণিজ্য ও অর্থনীতি, শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি ও আইসিটি, বিমান ও সামুদ্রিক সংযোগ, স্বাস্থ্যসেবা, চুক্তিভিত্তিক চাষ, জনগণ থেকে জনগণের মধ্যে যোগাযোগ এবং কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা মওকুফসহ সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র তুলে ধরা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর একটি।
ভিশন ২০৪১ অর্জন এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর ওপর বাংলাদেশের গুরুত্ব তার উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের গতিপথের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আফ্রিকার নতুন বাজারগুলো বাংলাদেশি উদ্যোগের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে, যা রপ্তানি গন্তব্যে বৈচিত্র্য এনেছে।
আরও পড়ুন: দৃঢ় রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতিসহ বাংলাদেশের উত্তরণ আনন্দের উপলক্ষ হবে: ওইসিডি
মোমেন বলেন, চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ ও আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতার সম্ভাবনা আশাব্যঞ্জক।
তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারির শুরুতে অনুষ্ঠিতব্য আমাদের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আফ্রিকার দেশগুলোর যেকোনো নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাবে বাংলাদেশ।
আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশের মন্ত্রী, উচ্চ পর্যায়ের সরকারি প্রতিনিধি এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এই সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: উন্নয়নের সঠিক পথ বেছে নিলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল: ড্যান নেগ্রিয়া
অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে ঢাকা-লন্ডন সমঝোতা স্মারক সইয়ের পরিকল্পনা
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ে একটি নতুন সমঝোতা স্মারক সই করার কথা ভাবছে।
২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড-ব্রেকিং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এবং ২০২২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে সর্বোচ্চ ৫৬১ মিলিয়ন ডলারের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে (এফডিআই) সন্তোষ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রসারে নতুন প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছে।
১২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত পঞ্চম বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য কৌশলগত সংলাপে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও যুক্তরাজ্যের ফরেইন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) স্থায়ী আন্ডার সেক্রেটারি স্যার ফিলিপ বার্টনের নেতৃত্বে এই সংলাপে কমনওয়েলথভুক্ত দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা, অভিবাসন ও গতিশীলতা, জলবায়ু ও উন্নয়ন অংশীদারিত্বসহ ঐতিহাসিক সম্পর্কের সার্বিক দিক পর্যালোচনা করা হয়।
স্যার বার্টন গত এক দশকে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য হিসেবে যুক্তরাজ্যের অব্যাহত বাজার প্রবেশাধিকার সহায়তার প্রশংসা করেন। ২০২৬ সালে বাংলাদেশের নির্ধারিত স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পর ২০২৯ সাল পর্যন্ত এবং পরেও এর মেয়াদ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
উভয় পক্ষ সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে সহযোগিতার জন্য একটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের বিষয়েও সম্মত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-প্যারিস দুটি সমঝোতা স্মারক সই
১৯৭১ সাল থেকে তাদের দীর্ঘদিনের মূল্য-ভিত্তিক সম্পর্ক এবং ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক লন্ডন সফরের কথা স্মরণ করেন তারা।
আন্ডার সেক্রেটারি স্যার বার্টন যুক্তরাজ্যের প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্য এবং রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলার ঐতিহাসিক রাজকীয় রাজ্যাভিষেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ করা হয়, রাজা তৃতীয় চার্লস তার স্থগিত হওয়া বাংলাদেশ সফর যত দ্রুত সম্ভব পুনঃনির্ধারণ করবেন।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য অভিবাসন ও গতিশীলতা সহযোগিতা বৃদ্ধি, বিশেষ করে নার্সিং, আতিথেয়তা, কৃষি, নির্মাণ ও রাজমিস্ত্রি এবং অন্যান্য সেবা খাতে লাভজনক কর্মসংস্থানের বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
অভিবাসন, গতিশীলতা ও যোগ্যতার পারস্পরিক স্বীকৃতি নিয়ে আলোচনার জন্য উভয় পক্ষ একটি 'জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ' গঠনে সম্মত হয়েছে।
তারা যুক্তরাজ্যে অনিয়মিত পরিস্থিতিতে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে একটি এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) সই করতে সম্মত হন।
বাংলাদেশ ২০২২ সালে শিক্ষা, ভ্রমণ ও ব্যবসা ভিসা প্রদান উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় যুক্তরাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
উভয় পক্ষ ফৌজদারি বিষয়ে পারস্পরিক আইনি সহায়তা নিয়েও আলোচনা করেছে।
আরও পড়ুন: হাসিনা-মোদি আলোচনার পর ঢাকা-নয়াদিল্লি ৩ সমঝোতা স্মারক সই
চলতি বছরের মার্চে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে স্বাক্ষরিত জলবায়ু চুক্তির কথা স্মরণ করে উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় জলবায়ু কার্যক্রমে সহযোগিতার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।
তারা জলবায়ু চুক্তির আওতায় একটি গ্রিনহাউজ গ্যাস শূন্যে নামিয়ে আনা এবং প্রকৃতিবান্ধব বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে জলবায়ু চুক্তির অধীনে সময়সীমা কার্যক্রমের সঙ্গে একটি যৌথ কর্মপরিকল্পনা সই করতে সম্মত হন।
একটি ন্যায়সঙ্গত, শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে এসডিজি-১৬ এর আওতায় এর জাতীয় লক্ষ্য অর্জনে অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব সন্ত্রাস, সহিংস চরমপন্থা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের 'জিরো টলারেন্স' নীতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
ভারত মহাসাগরে সামুদ্রিক ও বিমান নিরাপত্তা ও সুরক্ষাসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যুতে সহযোগিতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে।
যুক্তরাজ্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতায় বিশ্ব শান্তিতে বাংলাদেশের, বিশেষ করে নারী শান্তিরক্ষীদের সর্বোচ্চ অবদানের প্রশংসা করে।
দুই দেশ ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম প্রতিরক্ষা সংলাপে সন্তোষ প্রকাশ করে এবং লন্ডনে দ্বিতীয় সংলাপে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করতে সম্মত হয়।
যুক্তরাজ্য মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের উদার আশ্রয়ের প্রশংসা করেছে এবং বাংলাদেশ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও কমনওয়েলথসহ রোহিঙ্গা সংকটে যুক্তরাজ্যের মানবিক ও রাজনৈতিক সহায়তার প্রশংসা করেছে।
উভয় পক্ষই দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনে নিবিড়ভাবে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।
রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতার বিষয়ে আন্তর্জাতিক জবাবদিহির ওপর গুরুত্বারোপ করে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গাদের বিচারের মামলায় যোগ দেওয়ায় যুক্তরাজ্যকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব।
যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সম্প্রতি ঘোষিত 'ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক'কে স্বাগত জানিয়েছে।
অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য একটি অবাধ, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, সুরক্ষিত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উভয় পক্ষ নতুন অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছে।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ, আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থা (আইএমও) ও ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনসহ (আইওআরএ) বিভিন্ন আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় খাতে সহযোগিতা জোরদারে সম্মত হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দুই দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগ দেন।
কৌশলগত সংলাপের পরবর্তী অধিবেশন ২০২৪ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্য ও জার্মানির পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম বাজার হবে বাংলাদেশ: কমনওয়েলথ বিনিয়োগকারীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে সৌদি আরবের ডাটাভোল্ট
সৌদি আরবের ডাটা সেন্টার প্রস্তুত ও বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘ডাটাভোল্ট’ গাজীপুরের কালিয়াকৈর বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে ১০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ডাটা সেন্টার স্থাপন করবে।
প্রতিষ্ঠানটির চিফ স্ট্যাট্রেজি অফিসার আয়াদ আল আমরি মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) গুলশান রেনেসাস হোটেলে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠককালে এ ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র: অর্থমন্ত্রী
হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠানটিকে হাইটেক সিটিতে তিন একর জমি বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস দেন। প্রতিষ্ঠানটি সেই জমিতেই অত্যাধুনিক ডাটা সেন্টার স্থাপন করবে বলেও জানায়।
বৈঠকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী হাইটেক পার্কে বিনিয়োগে সরকারের নানা প্রণোদনা এবং ভবিষ্যৎ বাজার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। একইসঙ্গে ডাটাভোল্টকে তাদের আগ্রহ প্রকাশে ধন্যবাদ জানিয়ে তার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন পলক।
বৈঠকে বাংলাদেশের আইসিটিসহ অন্যান্য খাতে বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
এ সময় বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জি এস এম জাফর উল্লাহসহ ডাটাভোল্ট এবং হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং অবকাঠামোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণে আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত বাংলাদেশ-ফ্রান্সের
ঢাকা-মস্কো দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং অবকাঠামোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণে আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত বাংলাদেশ-ফ্রান্সের
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং রেলওয়ে সেক্টরসহ বাংলাদেশে মানসম্মত ও স্থিতিস্থাপক অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণে আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আশা প্রকাশ করেছেন, প্যারিস ও টুলুসে আগামী ২৩ ও ২৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ-ফ্রান্স বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন গতি আনবে।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের জনগণকে এমন উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য ধন্যবাদ। আমাদের বন্ধুত্ব দীর্ঘস্থায়ী ও অটুট।’
যৌথ প্রবৃদ্ধি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের দেওয়া অর্থনৈতিক সম্ভাবনার প্রতি ফ্রান্স আস্থা প্রকাশ করেছে।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) জারি করা একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উভয় পক্ষই শিল্প থেকে পরিষেবা পর্যন্ত প্রতিটি সেক্টরে বিস্তৃত তাদের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের গভীরতার কথা স্মরণ করেছে এবং ব্যবসা-থেকে-ব্যবসায় সহযোগিতার মাধ্যমে এটিকে আরও গভীর ও প্রসারিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: এয়ারবাসের কাছ থেকে ১০টি এ৩৫০ কেনার বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিতে খুশি ফ্রান্স
ফ্রান্স বাংলাদেশের শ্রম খাতে (২০২১-২০২৬) জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের প্রশংসা করেছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের জেনারেলাইজড স্কিম অব প্রেফারেন্সের (জিএসপি) অধীনে একটি মসৃণ ও টেকসই পরিবর্তনের সুবিধার্থে এর বাস্তবায়ন এবং বাংলাদেশের অর্থনীতির বহুমুখীকরণের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছে।
২০২১ সালের নভেম্বরে তার আমন্ত্রণে ফ্রান্স সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেসময়ে প্রধানমন্ত্রী ফরাসি প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশে আসার নিমন্ত্রণ করেন। অবশেষে, চলতি মাসের ১০-১১ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বাংলাদেশে সফর করেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সোমবার ঢাকায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে শক্তিশালী করার জন্য সাক্ষাত করেছেন এবং বিশ্ব শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিস্থাপকতা, সমৃদ্ধি এবং মানুষ-কেন্দ্রিক সংযোগের সমর্থনে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের জন্য একটি বিশ্বস্ত ও অর্থপূর্ণ অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার জন্য তাদের অভিন্ন প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স তাদের অংশীদারিত্বের কৌশলগত মাত্রাকে আরও গভীর করতে নিয়মিত উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ শুরু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন: প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে সম্পর্ককে 'কৌশলগত' পর্যায়ে নিতে চায় ঢাকা-প্যারিস
নগর পরিচালনা ও অবকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে ১৮৪ ইউরোর ঋণ সহায়তা চুক্তি সই
ঢাকা-মস্কো দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে বলেছেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করতে একমত হয়েছেন।
বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি ভালো ও দীর্ঘস্থায়ী অংশীদার উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ জোরদার করছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ল্যাভরভ বলেন, তারা রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, তারা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে অব্যাহত আলোচনাকে সমর্থন করে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প- রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়েও কথা বলেন এবং এর ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে আসায় আমরা খুবই আনন্দিত। রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, তারা রোহিঙ্গা ইস্যু, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং রাশিয়ায় বৃহত্তর বাজারে প্রবেশাধিকার নিয়ে আলোচনা করেছেন।
মোমেন বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা চাই আলোচনা হোক এবং আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হোক।’
আরও পড়ুন: রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ ঢাকায়, আজই বৈঠকে বসবেন মোমেনের সঙ্গে
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুদিনের সফরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় এসেছেন। যা পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সন্ধ্যা ৬টা ১৭ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন তার রুশ প্রতিপক্ষকে স্বাগত জানান।
স্বাধীনতার পর রাশিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর।
শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
শুক্রবার যাত্রার আগে তিনি ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।
ঢাকায় রাশিয়ার দূতাবাস জানিয়েছে, দুই দেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়নের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে মতামত বিনিময় করবে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর শেষ করে ৯-১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেবেন।
গত বছরের ২৪ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত ২২তম আইওআরএ মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে যোগদানের জন্য ২৩ নভেম্বর ল্যাভরভের বাংলাদেশ সফরের কথা ছিল।কিন্তু শেষ মুহূর্তে এই সফর বাতিল করা হয়।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ও তার রুশ সমকক্ষ সের্গেই ল্যাভরভ টেলিফোনে আলাপ করেন এবং বাংলাদেশ ও রাশিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন এবং এ সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
টেলিফোনে আলাপকালে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিডিউল জটিলতার কারণে ঢাকায় আসতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন এবং শিগগিরই সফরের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
মোমেন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: খাদ্য, জ্বালানি ও রোহিঙ্গা ইস্যুর মতো বিষয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভের সঙ্গে আলোচনা করবে ঢাকা
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভের সঙ্গে মোমেনের বৈঠক ৭ সেপ্টেম্বর
বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র অটোমোবাইল, কৃষি, জ্বালানি ও ডিজিটাল লেনদেনসহ বিভিন্ন খাতে আরও বিনিয়োগ করে বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) অর্থমন্ত্রীর কার্যালয়ে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
কামাল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী দল বাংলাদেশ থেকে সয়াবিন তেল উৎপাদন ও রপ্তানির বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ভিসা কোম্পানি এসেছে এবং তারা ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমে সহযোগিতা চেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি বড় ভোক্তা বাজার হবে। তারা (এই খাতে) বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।’
তারা মনে করেন বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য একটি উর্বর ভূমি বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল দ্রব্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতির প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, তারা যখন দায়িত্ব নেয় তখন মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৩। পরে এক মাসে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশে নেমে আসে এবং দীর্ঘ মেয়াদে মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ছিল বলে জানান তিনি।
তিনি অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা সৃষ্টির জন্য ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধকে দায়ী করেছেন, যার কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।
তিনি বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি সত্ত্বেও বাংলাদেশের মানুষ ভালো অবস্থায় রয়েছে।
বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে ইতালির বিনিয়োগকারীদের প্রতি রাষ্ট্রপতির আহ্বান
বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল ও হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগের জন্য ইতালির বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘ইতালি বাংলাদেশের ৬ষ্ঠ বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য এবং গত বছর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলেছে।’
বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশকালে তিনি এ কথা বলেন।
নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। দু'দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর বাণী ছড়িয়ে দিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করুন: রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন
তিনি বলেন, ২০২৩ সালে ইতালিতে অনুষ্ঠিত ফুড সিস্টেম সামিটে প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ এবং ২০২০ সালে ইতালির রাষ্ট্রীয় সফর দু'দেশের সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি জ্বালানি ও সাংস্কৃতিক বিনিময় চুক্তি সই দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গতিশীল করেছে। এ ছাড়া প্রতিরক্ষা, অভিবাসন, নিরাপত্তা ও সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রপতি তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে চাপ অব্যাহত রাখতে ইতালির প্রতি অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশ থেকে আরও জনশক্তি নেওয়ার জন্য ইতালির প্রতি আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি দেশটির বৈধ অভিবাসন স্কিমের আওতায় বাংলাদেশ থেকে তাদের সরকারের আগ্রহকে স্বাগত জানান।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান বিচারপতির সৌজন্য সাক্ষাৎ
ইতালি রাষ্ট্রদূত বলেন, তার সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। বাংলাদেশের জনশক্তি ইতালির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
ইতালিতে বসবাসরত বাংলাদেশিদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ইতালিতে কর্মরত বাংলাদেশিরা সুশৃঙ্খল এবং তাদের মধ্যে অপরাধ খুবই কম।
তিনি বিশ্ব শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের ভূমিকারও প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সম্প্রসারণে ইতালি নতুন নতুন ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করবে। রাষ্ট্রদূত তার নতুন দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির সহযোগিতা কামনা করেন।
এ সময় রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক কাজী শাহেদ আহমেদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক