স্বাধীনতা
চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুরে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশে শিক্ষার আলোকবর্তিকা
শিশুদের শিক্ষার জন্য বই-পুস্তক ও শিক্ষাগুরুর পাশাপাশি কোন পরিবেশে তারা পড়াশোনা করছে সেটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার সার্বজনীন প্ল্যাটফর্মটি হওয়া উচিত মুক্তমনা ও আনন্দপূর্ণ। জীবনের এই প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ পরবর্তীতে যে কোন উচ্চ শিক্ষার জন্য মেধা ও মননের ভিতটা মজবুত করে। ঠিক তেমনি এক অভাবনীয় আদর্শের নাম চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সাধ্যের মত যতটুকু সম্ভব ততটুকু দিয়ে যে একটা স্কুলকেও দৃষ্টিনন্দন করে তোলা যায়, তা এই বিদ্যালয়টিকে না দেখলে বিঃশ্বাস হয়না। চলুন, এই অসাধারণ স্থাপনশৈলীতে সমৃদ্ধ এই স্কুলটি নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের নয়নাভিরাম বিদ্যাপীঠ
ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের শান্ত গ্রাম চরভিটায় গড়ে ওঠা ব্যতিক্রমধর্মী এক বিদ্যাপীঠ ‘চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’। শহরের পিচঢালা পথ ছাড়িয়ে চরভিটার আঁকাবাঁকা পথ ধরে এগোলে ভারতের সীমান্তের প্রায় দুই কিলোমিটার আগেই দেখা মেলে কারুকার্যমন্ডিত প্রাচীর ঘেরা এই বিদ্যাপীঠের। রঙ-বেরঙের প্রচ্ছদের ভবন সমৃদ্ধ খোলামেলা জায়গাটি সূর্যের আলোয় যেমন ঝলমলিয়ে ওঠে, রাতের ল্যাম্পশেডের আলোয় ঠিক তেমনি পরিণত হয় এক নিভৃত নিসর্গে।
এর নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে প্রায়ই এখানে ভীড় করেন অনেক দর্শনার্থী।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া বিষয়ে সিদ্ধান্ত রবিবার
ছাত্র-ছাত্রীদের বিনোদনের প্রাণকেন্দ্র
এখানে শিশুদের বিনোদনের জন্য বানানো হয়েছে শিশুপার্ক ও ছোট্ট চিড়িয়াখানা। খেলার মাঠ, দোলনা, গরুর গাড়ি আর পুকুরের নৌকা প্রতিদিনি মুখর হয়ে থাকে শিশুদের কোলাহলে। দেয়ালগুলো পরিপূর্ণ স্বাধীনতার মহান পুরুষদের প্রতিকৃতি, কবি সাহিত্যিকদের উক্তি এবং বিভিন্ন প্রাণীর ছবিতে। ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ ও বৃত্তাকার আকৃতি দেয়া হয়েছে ফুলের গাছগুলোতে।
মিনি চিড়িয়াখানায় রঙবেরঙের ফুল গাছের মাঝে ঊঁকি দেয় হাতি, ঘোড়া, হরিণ, জিরাফ, বক, ও ময়ূরের নিষ্প্রাণ চাহনীগুলো। আরও দেখা যায় খরগোশ, টার্কি, টিয়া, ঘুঘু, তিতির, কবুতর, রাজহাঁস, পাতিহাঁস ও চিনাহাঁস।
খড়-বাঁশের ঘর থেকে পূর্ণাঙ্গ স্কুলে পরিণত হওয়ার গল্প
২০০০ সালে বকুয়ার বহরমপুর বাজারে ছিলো এরফান আলীর চা-নাশতার দোকান। পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দিনে দু-তিনবার করে তিনি চা দিয়ে আসতেন। উচ্চ-মাধ্যমিক পাস করা এরফানের স্বপ্ন ছিলো শিক্ষক হওয়ার। ২০০১ সালে ছেলের স্বপ্নের কথা শুনে নিজের জমির ৩৩ শতাংশ জায়গা পরিষ্কার করে খড়-বাঁশের তিনটি স্কুলঘর উঠান বাবা নুরুল ইসলাম। গোড়াপত্তন হলেও সেটাকে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া ছিলো বেশ দুষ্কর।
২০০৮ সালে স্নাতক পাসের পর ২০১১ সালে তার দায়িত্ব নেন এরফান আলী। সে বছরই পাঠদানের অনুমতি পেয়ে যায় বিদ্যালয়টি।
আরও পড়ুন: ঢাবি কর্তৃপক্ষকে একাডেমিক মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর
প্রথমে বিনা বেতনে পড়ানোর জন্য কোন শিক্ষক না পেয়ে এরফান আলী তার স্ত্রী ও তিন বোনকে নিয়ে নিজেই বাচ্চাদের পড়াতে লেগে যান। গ্রামের এ বাড়ি ও বাড়ি ঘুরে ঘুরে তারা ছাত্র-ছাত্রী যোগাড় করতেন।
২০১৩ সাল নাগাদ স্কুলের শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫০-এ দাড়ালো, কিন্তু তাদের মধ্যে নিয়মিত ছিলো ৫০ থেকে ৬০ জন। তাই ছাত্র-ছাত্রীরা যেন ঝড়ে না যায়, সেজন্যে ২০১৪ সালে শুরু করা হয় দুপুরে খাওয়ার কার্যক্রম।
স্কুল ভবনের পাশের পুকুরে মাছ ও হাঁস চাষ, ভবনের চারপাশে পেঁপে চাষ করে সপ্তাহের দুই দিন দুপুরের খাবার চালিয়ে যান এরফান আলী। এই কৃষি কাজে স্কুলের শিক্ষার্থীরাও সাহায্য করেছে। এরপরেও দুপুরের খাবার চালানোটা যখন প্রায় অসম্ভব হয়ে যাচ্ছিলো, তখনি মুষ্টির চাল দিয়ে উদ্যোগটাকে চালু রাখলেন বাচ্চাদের অভিভাবকরা।
সাধারণত ডে মিলের জন্য প্রতি মাসে খরচ পড়তো ৩০ থেকে ৩৩ হাজার টাকা। তাই একটা নির্ভরযোগ্য স্থায়ী আয়ের খুবই প্রয়োজন হয়ে পড়েছিলো। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম নিজের এক বিঘা জমি ও ছয় বিঘার একটি পুকুর সাময়িকভাবে বিদ্যালয়ের ব্যবহারের জন্য দান করেন। এছাড়া খাবার তৈরির জন্য প্রতি মাসের প্রয়োজনীয় লবণ ও তেলও সরবরাহ করেন তিনি।
এছাড়াও সে সময়ে বকুয়ার চেয়ারম্যান আবু তাহের ও স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সহ-সভাপতি মো. কলিমউদ্দিন সহ গ্রামের আরও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এগিয়ে এলেন মিড ডে মিল-এর সাহায্যার্থে।
আরও পড়ুন: ফ্লাই ডাইনিং: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বাংলাদেশের প্রথম ঝুলন্ত রেস্টুরেন্ট
ছাত্র-শিক্ষকের যৌথ প্রচেষ্টায় চলতে থাকলো পুকুরে হাঁস আর দুই বিঘা জমিতে সবজি চাষ। এ থেকে উপার্জিত টাকার পুরোটাই জমা হত মিড ডে মিলের তহবিলে।
ফলশ্রুতিতে ক্লাসে নিয়মিত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৫ শতাংশে। ২০১৫ সালের ১৯ নভেম্বর স্কুলটি সে সময়ের প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে দুই লাখ টাকা অনুদান লাভ করে।
চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সার্বিক অবকাঠামো
স্কুল কাঠামোর অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রেখে পেরিয়ে গেছে দশটি বছর। একদম শুরুর দিকে এলাকাবাসীর সহায়তায় বিদ্যালয়ের চারপাশ দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছিলো প্রাচীর। পরবর্তীতে স্কুলের নিজ অর্থায়নে দ্বিতল ভবনের ছাদে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কম্পিউটার ল্যাব। স্কুল ভবনের উত্তরে গড়ে তোলা হয়েছে হাঁস-মুরগির খামার ও বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব লাইব্রেরি। পশ্চিম পাশে বানানো হয়েছে সিসি ক্যামেরাযুক্ত কন্ট্রোল রুম, মসজিদ, মাছ চাষের পুকুর ও সততা ক্যান্টিন। ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য আছে পৃথক পৃথক স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট।
২০১৬ সালে স্কুলটির জাতীয়করণের ঘোষণার পর সরকারের পক্ষ থেকে এককালীন অনুদান পাওয়ায় বিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়নের কাজ আরও গতিশীল হয়।
২০২০ সালে স্কুলটিতে চার তলা ফাউন্ডেশনের উপর চার কক্ষের একটি নতুন ভবন তৈরী করা হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এখন শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৪২০ এবং শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা সাতজন। স্কুলের একদম শুরু থেকে সবার প্রিয় শিক্ষক এরফান আলী স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের দশটি প্রাচীন মসজিদ: দেশের ঐতিহাসিক স্থাপত্যের নিদর্শন
মন্ত্রিসভায় রাষ্ট্রপতির খসড়া ভাষণ অনুমোদন
স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী ২৪ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদের ১৫তম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ভাষণের খসড়া সোমবার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে বৈঠকে যোগ দেন। এছাড়া মন্ত্রিসভার সদস্যরা বাংলাদেশ সচিবালয় থেকে যুক্ত ছিলেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২৪ নভেম্বর জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনায় রাষ্ট্রপতি ভাষণ দিবেন। মন্ত্রিসভায় আজ সেটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরব্যাপী উদযাপনের অংশ হিসেবে আগামী ২৪ ও ২৫ নভেম্বর বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: ২৪ নভেম্বর সংসদে ভাষণ দিবেন রাষ্ট্রপতি
নৌবাহিনীকে সমুদ্র অর্থনীতির পতাকাবাহী হওয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
স্বাধীনতার ৫০ বছরেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি হায়দার আলী
৫০ বছর পেরিয়ে দেশ যেখানে স্বাধীনতার সুর্বণ জয়ন্তী পালন করছে সেখানে এখন পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি পাননি দর্শনা পরানপুরের হায়দার আলী। জীবন বাজি রেখে দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধে লড়াই করেছেন। তিনি এখন রংমিস্ত্রী। অতি কষ্টে দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে কোনোরকমে সংসার চালিয়ে নিচ্ছেন।
হায়দার আলী দাবি করেন, বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার পরানপুরের কলিমুদ্দিনের বড় ছেলে হায়দার আলী ১৯৭১ সালে ৮ নম্বর সেক্টরে মাত্র ২১ বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। সে সময়ের টগবগে তরুণ হায়দার ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে বর্তমান ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বিষয়খালী অঞ্চলে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেন।
আরও পড়ুন: কয়লার দাম বৃদ্ধি: খুলনায় ১৫ দিনে ২ শতাধিক ইটভাটা বন্ধ
গণতন্ত্রের অভাবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি খারাপ: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রবিবার অভিযোগ করে বলেন, সরকার গণতন্ত্রকে ‘বিলুপ্ত’ করে দেশে ‘ভয়াবহ’ পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, দেশে যেখানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই সেখানে গণতন্ত্র নেই । বাক স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই। ৩৫ লাখের বেশি দেশপ্রেমিক মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে।
সরকার বিরোধীদের দমন করতে গুম, হত্যা ও দমন-পীড়ন চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, তারা (সরকার) ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করায় দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পেছনে সরকারের যুক্তি ‘অগ্রহণযোগ্য’: ফখরুল
১৯৭৫ সালের ১৭ নভেম্বর ‘বেসামরিক-সামরিক অভ্যুত্থানের’ স্মরণে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার ‘পুনরুদ্ধার’ করতে জনগণের শক্তিশালী ঐক্য গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।
বিএনপি নেতা বলেন, এই দিনে আমরা এই দেশের জনগণকে ও সকল রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে ফ্যাসিবাদী সরকারকে পরাজিত করতে এবং বেগম খালেদা জিয়াকে (কারাগার থেকে) মুক্তি দিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার শপথ নিয়েছি।
তিনি বলেন, আধিপত্য ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আবারও স্বাধীন শক্তি হিসেবে বাংলাদেশ অবশ্যই নিজের পায়ে দাঁড়াবে। আমরা বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার সংগ্রাম চালিয়ে যাব।
আরও পড়ুন: এখন সর্বত্র ‘চরম নৈরাজ্য’: মির্জা ফখরুল
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক ঘটনা সম্পর্কে ফখরুল বলেন, সেদিন জনগণ যে আশা-আকাঙ্খা নিয়ে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিল তা বাস্তবায়নের সুযোগ পেয়েছিল। ৭ নভেম্বর বেসামরিক-সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা জিয়াউর রহমানের অধীনে গণতন্ত্র, আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সুসংহত করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, জিয়া বহুদলীয় গণতন্ত্র, মুক্ত অর্থনীতি প্রবর্তন করেন এবং একটি সুন্দর সমাজ গঠনের সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন।সবচেয়ে বড় কথা হল বাংলাদেশ আবার সমাজতন্ত্র, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় যখন সংবাদপত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছিল।আমরা এই দিনটিকে বারবার স্মরণ করি কারণ এটি আমাদের অনুপ্রাণিত করে।
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করে স্বৈরাচারী শাসন প্রতিষ্ঠা করে দেশের সব অর্জন এবং জনগণের সব আশা-আকাঙ্খা ধ্বংস করেছে। তারা নিজেদের হাতে নির্মমভাবে রাষ্ট্রের সব স্তম্ভ ধ্বংস করেছে।
এর আগে ফখরুল ও দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আরও পড়ুন: সরকার পরিবর্তন এখন জনগণের দাবি: মির্জা ফখরুল
লিসবনে শেখ রাসেল দিবস উদযাপিত
লিসবনে বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযথ মর্যাদায় সোমবার ‘শেখ রাসেল দিবস’ উদযাপন করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর কনিষ্ঠ পুত্র শহিদ শেখ রাসেল-এর ৫৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক উৎসবমুখর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দূতাবাস দিবসটি উদযাপন করেছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পর্তুগালে নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব তারিক আহসান, দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ এবং পর্তুগালের বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ শহিদ শেখ রাসেল-এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে শেখ রাসেল দিবস উদযাপিত
পরবর্তীতে দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে শহিদ শেখ রাসেল-এর জীবনের উপর এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে আলোচকগণ মত প্রকাশ করেন যদি শেখ রাসেল বেঁচে থাকতেন তবে জাতি একজন দূরদর্শী নেতা পেত। বক্তারা স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি কর্তৃক শেখ রাসেল-এর নৃশংস ও বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন।
রাষ্ট্রদূত জনাব তারিক আহসান তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই শেখ রাসেলের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন বলেন, পরিবারের সবচেয়ে আদরের কনিষ্ঠ সন্তান হওয়া সত্ত্বেও শেখ রাসেল তার শৈশবের অধিকাংশ সময় পিতার সান্নিধ্য হতে বঞ্চিত হয়েছেন, কারণ বঙ্গবন্ধু বেশিরভাগ সময়ই পাকিস্তানি শাসকচক্র কর্তৃক কারাবন্দী থাকতেন।
আরও পড়ুন: কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে শেখ রাসেলের জন্মদিন উদযাপিত
রাষ্ট্রদূত গভীর দুঃখের সাথে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে পরিবারের অনান্য সদস্যদের সাথে শেখ রাসেল-এর শহিদ হবার কথা স্মরণ করে বলেন, ১০ বছর বয়সী একটি বালককে হত্যা করতে যাদের হাত কাপলো না তাতেই বোঝা যায় স্বাধীনতাবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল সেই খুনি চক্রটি কতটা নির্মম ও বর্বর ছিল। সেই একই প্রতিক্রিয়াশীল চক্র এখনও দেশবিরোধী নানাবিধ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাচ্ছে বলে রাষ্ট্রদূত সকলকে সতর্ক করেন এবং সবাইকে একসাথে তাদের প্রতিরোধের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, শেখ রাসেল বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং জাতি চিরদিন তাকে ভালোবাসার সাথে স্মরণ করবে।
আলোচনা সভা শেষে শেখ রাসেল-এর জীবনের উপর নির্মিত প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন: শেখ রাসেল: অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষার প্রতীকী নিশান
সবশেষে, শহিদ শেখ রাসেলসহ জাতির পিতা, তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্য ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধিতে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধিতে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন,মুজিব বর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ যৌথ ভাবে ‘বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২১’ এর আয়োজন করতে যাচ্ছে। সামিটে বাংলাদেশের অর্জন,বাংলাদেশে ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট পলিসি,বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের সম্ভাবনা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা হবে।
রবিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ডিসিসিআই এর যৌথভাবে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিং-এ বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: কৃষি খাতের লাভজনক বাণিজ্যিকীকরণের চেষ্টা চলছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন,বাংলাদেশ প্রতিটি সেক্টরে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। দেশের অর্থনীতি এখন একটি শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। আগামী ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশন করে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। এর ফলে অনেক বাণিজ্য সুবিধা পাবে না বাংলাদেশ। তখন জিএসপি প্লাস নামে বাণিজ্য সুবিধা পাওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এক সময় নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতায় বাণিজ্যে এগিয়ে যেতে হবে। এজন্য বিভিন্ন দেশের সাথে পিটিএ বা এফটিএ’র মতো চুক্তি করে বাণিজ্য সুবিধা নিতে হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন,বাংলাদেশে এখন চমৎকার বিনিয়োগের পরিবেশ বিরাজ করছে।দেশের প্রায় ৯৭ ভাগ মানুষ এখন বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করছে, প্রায় ১১ কোটি মানুষ ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় এসেছে,বর্তমানে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় দুই হাজার ২২৭ মার্কিন ডলার। জিডিপি গ্রোথ আট ভাগ,করোনা পরিস্থিতিতেও তা ৫.৪৭ ভাগ ছিল।
আরও পড়ুন: ই-কমার্সে প্রতারিত গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেয়া সম্ভব: বাণিজ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন,২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত দেশ। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে পরিকল্পিত ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
উল্লেখ্য,বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ডিসিসিআই যৌথভাবে আগামী ২৬ অক্টোবর থেকে ০১ নভেম্বর,২০২১ তারিখ সপ্তাহব্যাপী ‘বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২১’ অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট রেজওয়ান রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: ৯৭ ভাগ পণ্য রপ্তানিতে বাণিজ্য সুবিধা দিচ্ছে চীন: বাণিজ্যমন্ত্রী
যুক্তরাজ্যের কেরিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপের রণতরির বাংলাদেশ সফর
যুক্তরাজ্যের কেরিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপের বিশেষ রণতরি এইচএমএস কেন্টকে বৃহস্পতিবার স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও ব্রিটিশ হাইকমিশন বাংলাদেশ। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের অটুট বন্ধন এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সামুদ্রিক শান্তির প্রতি যুক্তরাজ্যের অটল প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখেই ব্রিটিশ রণতরির এই সফর।
বৃহস্পতিবার ভোরে যুক্তরাজ্যের কেরিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপের টাইপ ২৩ ফ্রিগেট (রণতরি) এইচএমএস কেন্ট চট্টগ্রাম নৌ-ঘাঁটিতে এসে নোঙ্গর করেছে। এই সফরে উদযাপিত হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় ও মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্কের দীর্ঘস্থায়ী ইতিহাস। এই বছর অব্যাহত শান্তি ও প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্রিটেন-বাংলাদেশ বন্ধনের উদ্দীপনাকে সামনে রেখে, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ ও তাঁর মানুষের সাথে সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে চায়।
আরও পড়ুন: মোংলায় পাথরবোঝাই লাইটার জাহাজডুবি: ১০ নাবিক জীবিত উদ্ধার
এইচএমএস কেন্ট-এর উপস্থিতি আরও যে বিষয়টি মনে করিয়ে দেয় তা হচ্ছে প্রতিরক্ষা বিষয়ে সহযোগিতা এবং একটি মুক্ত ও অবিচল আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার প্রতি যুক্তরাজ্যের অঙ্গীকার যার মাধ্যমে বিশ্বের মুক্ত সমাজ ও অর্থনীতিগুলোর সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
আশা করা হচ্ছে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে এইচএমএস কেন্ট বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও চট্টগ্রামের স্থানীয় প্রশাসনের সাথে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করবে যার দ্বারা দুই দেশের সামরিক,বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে।
বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র মারাঠী সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন
ভারতের মুম্বাইয়ে বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের উদ্যোগে সম্প্রতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র মারাঠী সংস্করণ-‘অপূর্ণ আত্মকথা’র মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিডিও বার্তায় জাতির পিতার আদর্শ আজও আমাদের পররাষ্ট্র নীতির মূল প্রতিপাদ্য বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মারাঠী সংস্করণ-‘অপূর্ণ আত্মকথা’র মোড়ক উন্মোচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন মুম্বাই নতুন মাত্রা যোগ করতে সক্ষম হয়েছে। যে দুই ডজন ভাষায় ঐতিহাসিক এ বইটি অনূদিত হয়েছে, তার সাথে এ অঞ্চলের মারাঠি ভাষা যুক্ত হলো।
আরও পড়ুন: মরিশাসে বঙ্গবন্ধুর স্মরণে বৃক্ষরোপণ
মুম্বাইতে নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার মো. লুৎফর রহমান স্বাগত বক্তব্যে জাতির জনকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এ সময় তিনি ’অপূর্ণ আত্মকথা’ বইটি জাতির পিতার রাজনীতি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভে এবং তার আদর্শ উপলব্ধি করতে মারাঠী ভাষাভাষীদের সহায়তা করবে বলে উল্লেখ করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় ওয়ার ভেটেরানদের অবদানের কথাও স্মরণ করেন।
অনুষ্ঠানে মহারাষ্ট্র রাজ্যের গভর্নর শ্রী ভগৎ সিং কুশিয়ারী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মুম্বাই মারাঠী সাংবাদিক সমিতির সভাপতি শ্রী নরেন্দ্র ওয়াবেল, কন্সাল জেনারেল গ্রুপের সভাপতি শ্রী ভিজয় কালান্ত্রি এবং দিল্লীস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের উপ-হাইকমিশনার মো. নুরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: তুরস্কে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর আলোকচিত্র প্রদর্শনী
পরীক্ষামূলকভাবে ১০০টি সেলুন লাইব্রেরি চালু করা হয়েছে: সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, আমরা যখন কোন সেলুনে যাই, তখন অবসর সময়ে আমরা হাতের নাগালে (বই, পত্রিকা, প্রভৃতি) যা কিছু পাই, তা পড়ার চেষ্টা করি। এতে করে আমাদের সময়টি যেমন সুন্দর কাটে, তেমনি আমরা জ্ঞানের আলোয় সমৃদ্ধ হই। সে বিষয়টি বিবেচনা করে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে সারা দেশে ১০০টি সেলুন লাইব্রেরি চালু করা হয়েছে। উদ্যোগটি আপাত দৃষ্টিতে ক্ষুদ্র মনে হলেও এর কার্যকারিতা ফলপ্রসূ ও সুবিশাল।বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আয়োজিত মুজিব শতবর্ষে শত গ্রন্থাগারে 'পড়ি বঙ্গবন্ধুর বই, সোনার মানুষ হই' শীর্ষক ধারাবাহিক পাঠ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলার ওয়েবসাইট উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীতিনমাসব্যাপী এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি এমপি।কে এম খালিদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যখনই সময় পেতেন, তখনই বই পড়তেন। এমনকি কারাগারে অন্তরীণের দিনগুলোতে তাঁর সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিল বই।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বইয়ের সঙ্গে আত্মার সম্পর্ক গড়তে হবে। নতুন টাকার গন্ধ যেমন আমাদের আকর্ষণ করে, তেমনি নতুন বইয়ের গন্ধও আমাদের আকৃষ্ট করে।সরকারি-বেসরকারি গ্রন্থাগারের উন্নয়নে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইসিটি বিভাগের সহযোগিতায় লাইব্রেরি ডিজিটালাইজড করার একটি সমন্বিত প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে যেটি বাস্তবায়িত হলে লাইব্রেরি হতে তথ্য সেবা গ্রহণ ও প্রদানের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন সূচিত হবে। এর মাধ্যমে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের অধীন ৭১টি সরকারি গ্রন্থাগার, আর্কাইভ ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের অধীন জাতীয় গ্রন্থাগার, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র এবং বিভিন্ন বেসরকারি গ্রন্থাগারসমূহ একই নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে।
আরও পড়ুন: নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলার ওয়েবসাইট উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
তিনি এসময় জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আয়োজিত ধারাবাহিক পাঠ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী ১০০টি পাঠাগারের প্রত্যেকটিকে তিন হাজার টাকা করে মোট তিন লক্ষ টাকা অনুদানের ঘোষণা দেন।সিমিন হোসেন রিমি এমপি বলেন, বইয়ের আবেদন চিরন্তন। ইবুক বা সোশ্যাল মিডিয়া কাগজে মুদ্রিত বইয়ের বিকল্প নয়, বরং সহায়ক হতে পারে। বইয়ের গুণের শেষ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বই পড়ার মাধ্যমে জ্ঞান, সৃজনশীলতা ও সহানুভূতি-সহমর্মিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বেশি বই পড়াশোনা করেন, তারা দ্রুত, সুন্দর ও গোছানোভাবে তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুবকর সিদ্দিক এবং বেসরকারি গ্রন্থাগার প্রতিনিধি ও দনিয়া পাঠাগারের সভাপতি মো. শাহনেওয়াজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মিনার মনসুর।
আরও পড়ুন: বই দিয়ে নির্মিত কলেজের প্রধান ‘ফটক’উল্লেখ্য, সারা দেশের ১০০টি বেসরকারি গ্রন্থাগারের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী,পাঠক বঙ্গবন্ধুর রচিত 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' গ্রন্থটি পাঠ করে লিখিতভাবে পাঠ-উত্তর প্রতিক্রিয়া বা অভিমত ব্যক্ত করার মাধ্যমে এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবেন।
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট সেবা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসীদের চাহিদা পূরণের জন্য ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) সেবা চালু করেছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন যৌথভাবে এই সেবার উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: ই পাসপোর্ট বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে: প্রধানমন্ত্রী
উদ্বোধন বক্তব্যে সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন বলেন, ‘নতুন প্রচলিত ই-পাসপোর্ট বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির হওয়ায় এতে জালিয়াতির কোন সুযোগ নেই, যার ফলে বহির্বিশ্বে এই পাসপোর্টধারীদের মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ এখনও ই-পাসপোর্টের প্রচলন করতে পারেনি। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করেছে। এছাড়া সরকার ইতোমধ্যেই ঢাকা,সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ই-গেট স্থাপন করেছে যা যাত্রীদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়াকে আরও সহজতর করবে।’
আরও পড়ুন: ই পাসপোর্টের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম বলেন,‘বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম বক্তব্যে ই-পাসপোর্ট সেবা সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের একক কৃতিত্ব হিসেবে উল্লেখ করেন এবং এটি তার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের’ আরেকটি যুগান্তকারী মাইলফলক হিসেবে তুলে ধরেন।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন সারা বিশ্বে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের ভোগান্তি কমে যাবে।’
গত ১০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক কনস্যুলেটে ই-পাসপোর্ট সেবা উদ্বোধন করা হয়। এছাড়াও বার্লিন ও এথেন্সে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে এর আগে ওই সেবা চালু হওয়ার প্রেক্ষিতে চতুর্থতম হিসেবে ওয়াশিংটন বাংলাদেশ দূতাবাসে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) সেবা চালু হল।