গণতন্ত্র
জিয়ার জন্মবার্ষিকী: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন সফল করার অঙ্গীকার বিএনপির
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকীতে 'গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের' জন্য চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন সফল করার অঙ্গীকার করেছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে দলের নেতা-কর্মীরা শপথ নেন।
এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগের একদলীয় শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করতে দেশের জনগণ জেগে উঠেছে।
তিনি বলেন, ‘পুরো জাতি অন্ধকারে নিমজ্জিত। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং একদলীয় শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করতে সরকার জেগে উঠেছে।’
আমরা আশা করি, আমরা নতুন অঙ্গীকার নিয়ে জনগণকে সংগঠিত করতে পারব এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, বহুদলীয় গণতন্ত্র রক্ষা, বাংলাদেশ রক্ষা এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলনে জয়ী হতে পারব।
আরও পড়ুন: জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী সোমবার
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান অল্প সময়ের মধ্যে বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে একদলীয় শাসনের অন্ধকার থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের আলোয় নিয়ে আসেন।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ দলের নেতারা জিয়ার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মোনাজাত করেন।
পরে দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন মির্জা ফখরুল।
এ দিন জিয়াউর রহমানের পোস্টারও প্রকাশ করে বিএনপি। তারা জাতীয় পতাকাও অর্ধনমিত রাখে।
আরও পড়ুন: জিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ২ দিনের কর্মসূচি বিএনপির
জিয়াউর রহমানের ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী বৃহস্পতিবার
সেনাবাহিনী দখল নেয়ার পর মিয়ানমারের অস্ত্র শিল্পের প্রসার ঘটেছে: রিপোর্ট
অন্তত ১৩টি দেশের কোম্পানি মিয়ানমারকে অস্ত্র তৈরি করতে তার সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করেছে। যা ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটির শান্তিকামী জনগণের ওপর নৃশংসতায় ব্যবহৃত হচ্ছে।
স্বাধীন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য খুঁজে পেয়েছেন।
মিয়ানমারের জন্য বিশেষ উপদেষ্টা পরিষদের সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশের ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটি কীভাবে অস্ত্র উৎপাদন বাড়িয়েছে এবং একটি গণ ও জনবিরোধী আন্দোলনকে প্ররোচিত করে তার বিবরণ দেয়া হয়েছে।
৫০ বছরের সামরিক শাসনের পরে গণতন্ত্রের পথে প্রায় এক দশকের অগ্রগতির পর দেশটির জান্তা বাহিনী ফের নির্বাচিত বেসামরিক নেতাদের আটক করে ক্ষমতা দখল করে।
এরপর নিরাপত্তা বাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে। যার জেরে সেনাশাসন বিরোধীরাও হাতে অস্ত্র তুলে নেয়।
জাতিসংঘের কিছু বিশেষজ্ঞ এই পরিস্থিতিকে গৃহযুদ্ধ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
রাজনৈতিক বন্দিদের সহায়তা সমিতি, সহিংসতায় দুই হাজার ৭০০টিরও বেশি বেসামরিক মৃত্যুর কথা নথিভুক্ত করেছে। যার মধ্যে ২৭৭টি শিশু রয়েছে এবং ১৩ হাজারেরও বেশি লোককে আটক করা হয়েছে।
যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের কোম্পানিগুলো মিয়ানমারের সামরিক সরবরাহ শৃঙ্খলকে সমর্থন করছে।
আরও পড়ুন: ‘আমরা ফিরে আসব’ লিখে কি সতর্কতা দিচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী!
প্রতিবেদনে এই ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে যে তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুবিধা দিচ্ছে না, তা যেন তারা নিশ্চিত করে।
মিয়ানমারের দেশীয় অস্ত্র শিল্পের বিস্তার ঘটেছে। অন্যদিকে, কিছু দেশ অস্ত্র ব্যবসায় বা অস্ত্র উৎপাদনে জড়িত ব্যক্তি ও কোম্পানির বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
গত অক্টোবরে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ একজন ব্যবসায়ী অং মো মিন্টের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
ট্রেজারি বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, অং মো মিন্টে মিয়ানমারের হয়ে অস্ত্র চুক্তির কাজ সহজতর করে।
তার ভাই হ্লেইং মো মিন্ট এবং তাদের প্রতিষ্ঠিত ট্রেডিং কোম্পানি ডাইনাস্টি ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লিমিটেডকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। এর একজন পরিচালক মায়ো থিটসারকেও নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত করা হয়েছিল।
নভেম্বরে মার্কিন বেসামরিক নাগরিকদের ওপর মারাত্মক বিমান হামলার কথা উল্লেখ করে সামরিক বাহিনীতে বিমান সরবরাহকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের কোনো ব্যক্তিগত অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নেই। তাই এই ধরনের কোনো কোম্পানি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রতিরক্ষা শিল্প অধিদপ্তর দ্বারা পরিচালিত হয়।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে স্কুলে হেলিকপ্টার হামলা, ৭ শিক্ষার্থীসহ নিহত ১৩
এতে আরও বলা হয়েছে, স্থানীয় কারখানাগুলো এখনও লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রযুক্তি ও বিদেশি সাপ্লাই চেইন, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং আপগ্রেড ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানে সরঞ্জাম পাঠানোর ওপর নির্ভর করে।
একটি বিবৃতিতে কাউন্সিল বিশেষজ্ঞ ক্রিস সিডোটি অনুরোধ করেছেন, সরকার তদন্ত করবে এবং যেসব সংস্থা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে ‘বেসামরিকদের ওপর নির্বিচারে আক্রমণ’ এ ব্যবহৃত অস্ত্র তৈরিতে সহায়তা করে সেসব সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
মানবাধিকার আইনজীবী এবং ২০১৭-২০১৯ সাল পর্যন্ত মিয়ানমারে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সদস্য সিডোতি বলেছেন, ‘মিয়ানমারের জনগণের দুর্ভোগ থেকে লাভবান হওয়া বিদেশি কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।’
গত বছর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার অফিসের একটি প্রতিবেদনে রাশিয়া, চীন, ইউক্রেন, ইসরায়েল, সিঙ্গাপুর ও ফিলিপাইনে কোম্পানির নামকরণের কিছু লিঙ্কের রূপরেখা দেয়া হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ অস্ত্র তৈরির শিল্পের বিকাশের একটি প্রধান কারণ হল অস্ত্র, সামরিক বিমান এবং অন্যান্য অস্ত্র আমদানি নিষেধাজ্ঞা বা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এখন ছোট অস্ত্র ও হালকা অস্ত্র তৈরিতে স্বাবলম্বী।
এতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের অস্ত্র তৈরির ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে- অ্যাসল্ট রাইফেল এবং মেশিনগান থেকে শুরু করে মর্টার, অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ও অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট অস্ত্র, ক্ষেপণাস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার এবং আর্টিলারি ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন আইটেম।
আরও পড়ুন: সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের
সরকারবিরোধী নতুন প্লাটফর্ম 'সমমনা গণতান্ত্রিক জোট' এর আত্মপ্রকাশ
দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সম্মিলিত আন্দোলনে যোগ দিতে ১৫টি সংগঠনের সমন্বয়ে একটি নতুন সরকারবিরোধী প্ল্যাটফর্ম, ‘সমমনা গণতান্ত্রিক জোট’ রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও যুব ফোরামের সভাপতি সাইদুর রহমান এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী ১৫টি সংগঠন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য বিএনপির ১০ দফা অর্জন এবং সংস্কারের জন্য বিএনপির দেয়া ২৭ দফা বাস্তবায়নে সম্মিলিত আন্দোলনে অংশ নিতে সমমনা গণতান্ত্রিক জোটের যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে ।’তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান স্বৈরাচারী, দখলদার, ফ্যাসিবাদী ও ভোটার ডাকাত সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি ঘোষিত সকল কর্মসূচিই তাদের নতুন জোট একযোগে পালন করবে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশ বিরোধীদের পক্ষে
নবগঠিত প্ল্যাটফর্মের সদস্যদের মধ্যে রয়েছে যুব ফোরাম, জিয়া নাগরিক সংসদ, গণতান্ত্রিক আন্দোলন, শহীদ জিয়া আইনজীবী পরিষদ, জাতীয়তাবাদী নাগরিক দল, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি, সংবিধান সংরক্ষণ পরিষদ, গণতন্ত্র রক্ষা মঞ্চ, চালক দল, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল। দাঁড়াও বাংলাদেশ, মুভমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল, দেশ রক্ষা মানুষ বাঁচাও আন্দোলন এবং বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানুল্লাহ আমান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ১১টি দলের সমন্বয়ে ‘জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট’ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
এছাড়া ২২ ডিসেম্বর ২০ দলীয় জোটের ১২টি দলের সঙ্গে ১২ দলীয় জোট চালু করা হয়, যেখানে বিএনপির বাইরে বিদ্যমান আরও দুটি জোট- গণতন্ত্র মঞ্চ (গণতন্ত্র ফোরাম) এবং বাম গণতান্ত্রিক জোটও রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের লক্ষ্যে একযোগে আন্দোলনে যোগদানের অভিপ্রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান ড.কামালের
গণফোরামের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৫
যুগপৎ আন্দোলন: ঢাকায় গণতন্ত্র মঞ্চের গণমিছিল
বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে বিরোধী দল ও জোটের যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শুক্রবার রাজধানীতে গণমিছিল বের করে গণতন্ত্র মঞ্চ।
বেলা ১১টার দিকে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীরা নয়াপল্টন এলাকায় জড়ো হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে মিছিল শুরু করে। এসময় অন্যান্য বিরোধী দল ও জোটগুলোর রাজধানীতে বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে মিছিল বের করে।
আরও পড়ুন: আ.লীগের জাতীয় কাউন্সিল বিবেচনায় ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমিছিল করবে বিএনপি
দুপুর ২টায় মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সকাল থেকে দলের শীর্ষ নেতাদের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে নয়াপল্টন এলাকায় ভিড় শুরু করেন তারা। এলাকায় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দুপুর আড়াইটার দিকে ১২ দলীয় জোটের ফকিরাপুল পানির ট্যাংক এলাকা, পুরানা পল্টন ক্রসিং থেকে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এফডিসি ক্রসিং থেকে এলডিপি এবং বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট থেকে জামায়াতে ইসলামীর মিছিল বের করে।
মিছিল শেষে বিরোধী দল ও জোটগুলো তাদের যুগপৎ আন্দোলন জোরদার করতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে।
২০১৮ সালের এই দিনে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বার্ষিকী উপলক্ষে ৩০ ডিসেম্বরকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করছে বিএনপি এবং অন্যান্য বিরোধী দল ও জোট।
বৃহস্পতিবার বিকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তাদের পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে বৈঠকে বসেন।
দলের স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাদের যুগপৎ আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে তারা অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেন।
সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেয়া, ক্ষমতা হস্তান্তর নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনসহ ১০ দফা দাবিতে রাজধানীতে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে বিএনপিসহ প্রায় ৩৩টি সমমনা রাজনৈতিক দল।
এর আগে ২৪ ডিসেম্বর সব বিভাগীয় শহর ও জেলা সদরে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল কর্মসূচির কারণে ৩০ ডিসেম্বর একই কর্মসূচি পুনঃনির্ধারণ করেছে বিএনপি।
এদিকে বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, তাদের গণমিছিল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দলের নেতাকর্মীরা নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে জড়ো হবে এবং দুপুর ২টায় মিছিল বের করবে।
জাহিদ জানান, তাদের মিছিলটি বিজয়নগর, কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ, মগবাজার মোড় হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নয়াপল্টনে গিয়ে শেষ হবে।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কাছ থেকে নয়াপল্টন থেকে মগবাজার পর্যন্ত মিছিল করার অনুমতি পেয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: যুগপৎ আন্দোলন: ৩৩টি বিরোধী দল রাজধানীতে গণমিছিল বের করবে
গণমিছিল সফলে প্রস্তুতি সভা করেছে সিলেট মহানগর বিএনপি
জামায়াতের সাথে বিএনপির রাজনীতির আদর্শিক মিল নেই; ভারত বিশেষ বন্ধু: ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আদর্শ ও রাজনৈতিক নীতির দিক থেকে তার দল জামায়াতে ইসলামীর চেয়ে আলাদা। জামায়াতের আদর্শের সঙ্গে বিএনপির কোনও মিল নেই।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি আশা করে ভারতসহ গণতান্ত্রিক দেশগুলো বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে, তবে তাদের দল এখানকার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কোনও দেশের সরাসরি হস্তক্ষেপের বিরোধী।
বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে
সম্প্রতি উত্তরার বাসায় ইউএনবিকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।
জামায়াতের আদর্শের সঙ্গে বিএনপির কোনও মিল নেই। ‘আমরা গণতন্ত্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সকল ধর্মের ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাস করি। কিন্তু জামায়াত ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনীতি করে এবং আমাদের সঙ্গে তা মেলে না।’
তিনি বলেন, তবে সংসদীয় রাজনীতিতে অনেক সমীকরণ ও মেরুকরণ রয়েছে। ‘এখানে প্রধান সমস্যা হল সংখ্যা বা ১৫১ আসন। প্রতিটি দল ১৫১টি আসন পাওয়ার চেষ্টা করে এবং সে কারণে দলগুলো জোট গঠন না করে জামায়াতের সঙ্গে জোট করে বা একটি বোঝাপড়া করে। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সালে আমাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার সময় জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সুস্পষ্ট সম্পর্ক ছিল।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, জামায়াতের সঙ্গে তাদের দলের নির্বাচনী জোট আছে, কিন্তু আদর্শিক জোট নয়। ‘আমাদের রাজনীতি সম্পূর্ণভাবে আমাদের স্বার্থের ওপর নির্ভর করবে। আমরা এখন আমাদের যুগপৎ আন্দোলন স্বাধীনভাবে করতে যাচ্ছি, কিন্তু কোনও জোটের অধীনে নয়।’
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বলে, কিন্তু এখন পর্যন্ত দলটিকে নিষিদ্ধ করার কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, তাদের দল চায় বামপন্থী ও ইসলামী দলগুলোসহ সব বিরোধী দল একযোগে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করুক।
ফখরুল বলেন, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের পর সব দলকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের কথাও বলছেন তারা। ‘এটা জাতীয় সরকার বা জোট সরকারের নামে হতে পারে। দেশে আওয়ামী লীগ যে সংকট তৈরি করেছে তা কোনও রাজনৈতিক দলের একার পক্ষে সমাধান করা কঠিন। জাতীয় ঐকমত্য না থাকলে সমস্যা থেকে উত্তরণ সহজ হবে না।
বিএনপি ইতোমধ্যেই সফল ‘যুগপৎ' আন্দোলনের শক্ত পটভূমি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে দাবি করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের জন্য রাজপথের আন্দোলন থেকে গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর এবার পিছিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় সরকারবিরোধী আন্দোলনে নির্ভীক বিএনপি: ফখরুল
বিএনপির সমাবেশে বিপুল জনসমাগম মানেই তারা গণতন্ত্র ফিরে চায়: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র ও তাদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় তাদের দলের বিভাগীয় সমাবেশে কয়েক লাখ মানুষ যোগ দিচ্ছে।
তিনি বলেন, একটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, গণতন্ত্র না থাকলে কারও অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।
সোমবার এই বিএনপি নেতা বলেন, দেশে গণতন্ত্রের অভাবে জাতি ভয়াবহ সংকটে পড়েছে। ‘আমাদের অবশ্যই এই সংকট কাটিয়ে উঠতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ছিলাম এবং কয়েক লাখ সাধারণ মানুষ এতে অংশ নিচ্ছে। কারণ তারা সবাই চায় দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসুক এবং জনগণের অধিকার সুরক্ষিত হোক।’
আরও পড়ুন: জন্মদিনে মির্জা ফখরুল বললেন ‘জীবন সুন্দর’
দুর্গাপূজা উদযাপন শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, বিএনপি মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতিতে বিশ্বাসী।
বিএনপির এই নেতা বলেন, গণতন্ত্র, জনগণের সমঅধিকার, ন্যায়বিচার ও ন্যায়পরায়ণতার চেতনায় একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ার জন্য দেশ স্বাধীন হয়েছে।
ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকার প্রথমে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠায়। ‘তাকে এখন গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের জনগণ আবারও মুক্তিযুদ্ধের সময়ের মতো জেগে উঠবে এবং শয়তান শাসককে পরাজিত করে বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার পথ প্রশস্ত করবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান নেতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকার, ডা. সুকোমল বড়ুয়া, গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুল কি জিয়ার লাশ দেখেছেন: তথ্যমন্ত্রী
মার্কিন গণতন্ত্রে নিজস্ব ত্রুটি রয়েছে: নতুন জরিপ
কিছুদিন আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সর্বত্রই গণতন্ত্রের 'দুর্বলতা' রয়েছে। ঠিক এর কিছুদিন পর যুক্তরাষ্ট্রে সংগঠিত এক জরিপ বলছে, আমেরিকানদের মাত্র অর্ধেকই উচ্চ আস্থা রাখেন যে আসন্ন মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোট সঠিকভাবে গণনা করা হবে।
দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস-এনওআরসি সেন্টার ফর পাবলিক অ্যাফেয়ার্স রিসার্চের নতুন জরিপ অনুসারে, মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের মাত্র ৯ শতাংশ মনে করেন গণতন্ত্র ‘অত্যন্ত’ বা ‘খুব ভালো’ পর্যায়ে আছে, অন্যদিকে ৫২ শতাংশ মনে করছেন এটি ভালো পর্যায়ে নেই। নিউইয়র্কভিত্তিক বৈশ্বিক সংবাদ সংস্থা দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এ তথ্য জানিয়েছে।
জরিপটি বলছে যে অনেক আমেরিকান মার্কিন গণতন্ত্রের অবস্থা ও নির্বাচিত কর্মকর্তাদের নির্বাচিত করার পদ্ধতি সম্পর্কে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। এপি অনুসারে, প্রায় দুই বছর পর একটি বিভক্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ব্যাপক জালিয়াতি ও মার্কিন ক্যাপিটলে একটি সহিংস হামলার মিথ্যা দাবিকে উৎসাহিত করে।
দুই বছর আগে থেকে একটি বিপরীতমুখী অবস্থা দাঁড়িয়েছে-এখন ডেমোক্র্যাটদের চেয়ে রিপাবলিকানরা বলছেন গণতন্ত্র ভালো পর্যায়ে নেই। এই বছর, ৬৮ শতাংশ রিপাবলিকান দুই বছর আগে ৩২ শতাংশের তুলনায় এইভাবে মনে করেন।
প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্র কীভাবে কাজ করছে সে সম্পর্কে একটি তিক্ত দৃষ্টিভঙ্গিসহ ডেমোক্র্যাটদের অংশ ৬৩ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে নেমে এসেছে।
প্রতিটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরে হেরে যাওয়া দলকে কিছু সদস্য হারানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়। এপি জানিয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার মিত্রদের ডেমোক্র্যাটরা নির্বাচন চুরি করার বিষয়ে মিথ্যাচারের কারণে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফলে বিপর্যয় আরও গভীর হয়েছে।
প্রেসিডেন্সিয়াল ও কংগ্রেসনাল দৌড় থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রতিযোগিতা যেমন স্কুল বোর্ডের জন্য দৌড়, গণতন্ত্র নিয়ে সাধারণ হতাশা দেশব্যাপী ক্রমবর্ধমান মেরুকরণের কয়েক দশক পরে দেখা দেয়।
সামগ্রিকভাবে, রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের অনুরূপ অংশসহ মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের মাত্র এক চতুর্থাংশ বলছে, নেতা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সম্পর্কে তারা আশাবাদী, যেখানে ৪৩ শতাংশ বলেছেন তারা হতাশাবাদী। অন্য ৩১ শতাংশ ব্যক্তি তেমন কিছুই মনে করেন না।
এপি-এনওআরসি জরিপে রিপাবলিকানদের একটি বড় অংশ পাওয়া গেছে, ৫৮ শতাংশ এখনও বিশ্বাস করেন যে বাইডেনের নির্বাচন বৈধ ছিল না।
জরিপটি দেখায় যে ৪৭ শতাংশ আমেরিকান বলছেন যে তাদের ‘অনেক বেশি’ বা ‘বেশ কিছুটা’ আত্মবিশ্বাস রয়েছে যে ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোট সঠিকভাবে গণনা করা হবে।
১১ অক্টোবর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও নির্বাচন সম্পর্কে বিদেশিদের কথা বলা নিয়ে সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রেও দুর্বলতা আছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদেরও দুর্বলতা আছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) সেরাটা আছে। তাদের নিজস্ব দুর্বলতা আছে।’
এপিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই কথার ছাপ দেখা যায়।
১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের পৃষ্ঠপোষকদের গণতন্ত্র নিয়ে বক্তব্যের অধিকার নেই: প্রধানমন্ত্রী
১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচারে বাধা দেয়ার জন্য বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটা জাতির জন্য পরিহাসের বিষয় যে খুনিদের পৃষ্ঠপোষকরা এখন গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আজ তাদের কাছ থেকে গণতন্ত্র, ভোট ও মানবাধিকারের কথা শুনতে হচ্ছে। দুর্ভাগ্যবশত, একই মানুষগুলো খুনি, খুনিদের পৃষ্ঠপোষক এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ রাসেল দিবস (২০২২) ও শেখ রাসেল পদক (২০২২) এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে যোগদানকালে ভাষণ দেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) মঙ্গলবার এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রাসেল ১৫ আগস্ট ট্র্যাজেডিতে মাত্র ১০ বছর বয়সে শহীদ হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন না করা পর্যন্ত তাকে ও তার বোন শেখ রেহানাকে তাদের পরিবারের সদস্যদের হত্যার বিচার চাইতে দেয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: জাপান দূতাবাসে শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উদযাপিত
তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘আজ কেন আমরা মানবতা, মানবাধিকার বিষয়ের মতো এত শব্দ শুনি? আমার এই প্রশ্নের উত্তর কি কেউ দিতে পারবেন যে অনেক বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে আমি যখন সরকার গঠন করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পেরেছি শুধু তখনই খুনিদের বিচার হবে?’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের পর যারাই ক্ষমতায় এসেছেন- জিয়াউর রহমান, জেনারেল এরশাদ ও খালেদা জিয়া, তারাই নৃশংস খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা ও পুরস্কৃত করেছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আধুনিক ও প্রযুক্তিভিত্তিক জ্ঞানে সজ্জিত করার সরকারি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে পাঁচ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব ও ৩০০ শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচার (৩০০টি সংসদীয় আসনের প্রতিটিতে একটি করে স্কুল) উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাসেলের শৈশবকে তুলে ধরে ‘দুরন্ত প্রাণবন্ত শেখ রাসেল’ নামের একটি বইয়ের মোড়কও উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানে নোবেল শান্তি বিজয়ী ও বিখ্যাত শিশু অধিকার কর্মী কৈলাশ সত্যার্থীর একটি ভিডিও বার্তা, একটি অ্যানিমেটেড সিনেমা ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’ এর ট্রেলার, শেখ রাসেলের ওপর একটি ভিডিও তথ্যচিত্র এবং শেখ রাসেল দিবস (২০২২) উপলক্ষে একটি থিম সং পরিবেশিত হয়। আইসিটি বিভাগ অ্যানিমেটেড সিনেমা, তথ্যচিত্র ও থিম সং তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন: শহীদ শেখ রাসেলের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে এম শহীদুল্লাহ এবং শিশু বক্তা আফসা জাফর সৃজিতসহ আরও অনেকে।
শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন।
গত বছর সরকার জাতীয়ভাবে দিবসটি পালনের জন্য ‘ক’ ক্যাটাগরিতে ১৮ অক্টোবরকে শেখ রাসেল দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
আরও পড়ুন: শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির বাণী
দেশের নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিএনপি বড় অন্তরায়: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের নিরাপত্তা, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিএনপি বড় অন্তরায়।
মঙ্গলবার সকালে শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে বনানী কবরস্থানে ফুল দিয়ে ও দোয়া মাহফিল শেষ করে সাংবাদিক তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি এদেশের রাজনীতির জন্য বিষফোঁড়া মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির হাতে দেশের গণতন্ত্র ও আইনব্যবস্থা নিরাপদ নয়।’
এসময় তিনি বলেন, শেখ রাসেলকে যারা হত্যা করেছে, ১৫ আগস্টের হত্যকাণ্ডে যারা জড়িত ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না। এই হত্যাকাণ্ড ক্ষমার অযোগ্য।
এসময় শেখ পরিবারের পক্ষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস বলেন, যেদিন শেখ রাসেলের খুনিদের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে সেদিন রাসেলের আত্মা শান্তি পাবে।
পড়ুন: শহীদ শেখ রাসেলের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির বাণী
গণতন্ত্রে যুক্তরাষ্ট্রেরও দুর্বলতা আছে: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে বিদেশিরা কথা বলছে’ প্রসঙ্গ টেনে তীব্র সমালোচনা করে বলেন, গণতন্ত্রে ‘দুর্বলতা’ সর্বত্রই আছে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেরও।
তিনি বলেন, সব দেশেই গণতন্ত্রের ভালো-মন্দ দিক রয়েছে। এটি একটি নিখুঁত পরিস্থিতি নয়। বরং এটি একটি গতিশীল ও বিকশিত প্রক্রিয়া। নিরন্তর প্রচেষ্টার মাধ্যমে গণতন্ত্র পরিপক্ক হয়।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বারবার মন্তব্যের প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মোমেন এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘বিদেশিরা তখনই মন্তব্য করে যখন গণমাধ্যম তাদের কাছে যায়। তাদের কাছে না গিয়ে আপনাদের উচিত আমাদের কাছে আসা (প্রশ্ন করে)।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ‘দুর্বলতা’ আছে কিন্তু সরকার সেই দুর্বলতাগুলো কিভাবে সংশোধন করা যায় তা দেখার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বাইরের পরামর্শের প্রয়োজন নেই: মোমেন
তিনি বলেন, ‘আমাদের দুর্বলতা আছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) সেরাটা আছে। তাদের নিজস্ব দুর্বলতা আছে।’
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা বড় শক্তিধর নই। তারপরও এদেশে আমাদের নীতি ও মূল্যবোধ আছে। যেখানে অন্যায় দেখি সেখানে আমরা সোচ্চার থাকি। এই হল বাংলাদেশ।’
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদেশে যখন গণহত্যা চলছিল তখন তারা (যুক্তরাষ্ট্র) বাংলাদেশের ধারে কাছেও আসেনি এবং মিয়ানমারে যখন গণহত্যা চলছিল তখন কেউ তাদের আশ্রয় দেয়নি। কে দিয়েছিল? দিয়েছিল বাংলা। এই হল বাংলাদেশ। মানবিক বিবেচনায় সীমান্ত খুলে দেয়ার সাহস আছে শেখ হাসিনার।
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ গণতন্ত্রে নেতৃস্থানীয় এবং এদেশের মানুষ একাত্তরে রক্ত দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আমরা রক্ত দিয়েছি। পৃথিবীর কোথাও কি এরকম দেখেছেন? যখন জনগণের কণ্ঠস্বর ও গণতান্ত্রিক অধিকার অস্বীকার করা হয়েছিল, তখন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সংগ্রাম করেছি।’
আরও পড়ুন: সরকারের সম্পত্তি ও জীবন রক্ষার অধিকার আছে: মোমেন
মোমেন বলেন, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এদেশের মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু করেছিল। তাহলে, অন্যরা আমাদের কতটা শেখাবে? আমরা এখনও গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের পাশে আছি।
নির্বাচন প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, সরকার নির্বাচনের সময় একটি মৃত্যুও দেখতে চায় না।
তিনি বলেন, ‘সরকার অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বদ্ধপরিকর। সরকার এতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বারবার ক্ষমতায় এসেছে।’
তিনি বলেন, আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার চেষ্টা করব। বিদেশিদের কাছে না যাওয়াই ভালো।
মোমেন আরও বলেন, শেখ হাসিনা সহজে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রমাণ দিয়েছেন।
মোমেন মার্কিন নির্বাচনে তুলনামূলকভাবে খুব কম ভোট দেয়ার ও তরুণদের রাজনীতিতে আসার আগ্রহের অভাব বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, তারা কি তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) গণতন্ত্র পছন্দ করে না? কেন তরুণরা (সামনে) আসছে না... আপনাদেরর (সাংবাদিকদের) উচিত তাদের সেসব প্রশ্ন করা।
আরও পড়ুন: ব্রুনাইয়ের সুলতান আসছেন ১৫ অক্টোবর: মোমেন