দুর্নীতি
ইমরান খানের গ্রেপ্তার: পাকিস্তানজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সহিংসতা
দুর্নীতির একাধিক মামলায় অভিযুক্ত পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে মঙ্গলবার আদালত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এতে রাজনৈতিক উত্তেজনা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং সারা দেশে তার ক্ষুব্ধ সমর্থকদের দ্বারা সহিংস বিক্ষোভের সূত্রপাত করে।
২০২২ সালের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হলেও বিরোধী দলের শীর্ষ নেতা ইমরান খানের গ্রেপ্তার পাকিস্তানকে বিপর্যস্ত করার সর্বশেষ সংঘাতের প্রতিনিধিত্ব করে, যেখানে বছরের পর বছর ধরে সাবেক প্রধানমন্ত্রীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপ রয়েছে।
বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায় বিক্ষোভকারী ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে একজন নিহত হয়েছেন, সেখানে আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন। করাচি, পেশোয়ার, রাওয়ালপিন্ডি এবং লাহোরে অনুরূপ সহিংসতায় প্রায় ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।
আরও পড়ুন: ইসলামাবাদের আদালত থেকে ইমরান খান গ্রেপ্তার
সহিংসতার মধ্যে পাকিস্তানের টেলিযোগাযোগ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রকরা টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং রাজধানী ইসলামাবাদ ও অন্যান্য শহরে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছে। বুধবার কিছু বেসরকারি স্কুলের ক্লাস বাতিল করা হয়।
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ফাওয়াদ চৌধুরী জানান যে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরোর নিরাপত্তা এজেন্টরা ইমরানকে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে গ্রেপ্তার করে একটি সাঁজোয়া গাড়িতে নিয়ে যায়।
৭১ বছর বয়সী সাবেক ক্রিকেট তারকার গ্রেপ্তারকে 'অপহরণ' বলে আখ্যায়িত করেছেন ফাওয়াদ চৌধুরী। পাকিস্তানের স্বাধীন জিও টিভি খানকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও সম্প্রচার করেছে।
আদালতের বাইরে খানের সমর্থক ও পুলিশের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। চৌধুরী বলেন, সংঘর্ষে খানের কয়েকজন আইনজীবী ও সমর্থক আহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছেন।
পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরোর কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খানকে ইসলামাবাদের নিকটবর্তী রাওয়ালপিন্ডিতে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তার নিয়মিত মেডিকেল চেকআপও হওয়ার কথা ছিল।
দুর্নীতি মামলায় অভিযোগের মুখোমুখি হতে নিকটবর্তী লাহোর থেকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে এসেছিলেন ইমরান খান।
আরও পড়ুন: ইমরান খানের বাড়িতে পুলিশের অভিযান, গ্রেপ্তার ৬১
বঙ্গবন্ধুর দুর্নীতি বিরোধী ভাষণগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে রুল জারি হাইকোর্টের
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুর্নীতি ও অর্থপাচার বিরোধী ভাষণগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ট্রেনিং সেন্টারের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রাজউকের নথি গাযেব সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিকালে মঙ্গলবার (২ মে) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ স্ব-প্রণোদিত হয়ে এ রুল জারি করেন।
মন্ত্রী পরিষদ সচিব, শিক্ষা সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুর্নীতি বিরোধী (ভাষণ) বক্তব্যগুলোকে আদর্শ হিসেবে ধারণ করে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) কাজ করতে বলেছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া, আদালত তার আদেশে বঙ্গবন্ধুর দুর্নীতি বিরোধী বক্তব্যসমূহ আগামী ১ মাসের মধ্যে হাইকোর্টে দাখিল করতে জাতীয় আর্কাইভের ডিজির প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।আগামী ৪ জুন এ রুলের পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক, দুদকের আইনজীবী মো. খুরশিদ আলম খান ও রাজউকের আইনজীবী ইমাম হাছান।
আরও পড়ুন: রকেটের গতিতে মামলা তদন্ত: সেই কর্মকর্তাকে বরখাস্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
হজ প্যাকেজের অতিরিক্ত খরচ কেন জনস্বার্থ পরিপন্থী নয়: হাইকোর্ট
যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানোর একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কেন অসাংবিধানিক নয়: হাইকোর্ট
বিএনপি নেতা হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা চলবে
গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের ভাই ও বিএনপি দলীয় ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে দুদকের করা প্লট দুর্নীতির মামলা বাতিল চেয়ে করা রিভিশন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মামলাটি ৬ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে বিচারিক আদালতে মামলাটি চলতে আর বাধা নেই।
রবিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি। রিভিশনকারী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাব্বির হামজা।
আরও পড়ুন: আ.লীগের তোপের মুখে ভোলা ছাড়লেন হাফিজ ইব্রাহিম
পরে আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের জানান, সাবেক এমপি হাফিজ ইব্রাহিমের মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাজউকের প্লট নেওয়ার দুর্নীতি মামলা বাতিলে রিভিশন আবেদন খারিজ করেন হাইকোর্ট। ফলে এই মামলা চলবে। পাশাপাশি আগে দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে ৬ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদের সদস্য থাকাকালীন রাজউকে মিথ্যা হলফনামা দিয়ে ঢাকার বনানী আবাসিক এলাকায় ৫ কাঠার একটি সরকারি প্লট গ্রহণ করেন হাফিজ ইব্রাহিম। এতে তিনি অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করে সরকারি সম্পত্তি আত্মসাৎ করেন। মিথ্যা হলফনামা দিয়ে প্লট নেওয়ার কারণে দুদক ২০১৭ সালের ১৩ মার্চ মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করে। পরে ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালত এই মামলায় অভিযোগ গঠন করেন। সেই অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করলে হাইকোর্ট ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল রুল জারি করেছিলেন। সেই রুল রবিবার খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: দুদকের মামলা বাতিল চেয়ে সাবেক এমপি হাফিজের করা আবেদন খারিজ
ডা. জাফরুল্লাহ অত্যন্ত স্পষ্টবাদী, দুঃশাসন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন: বিএনপি
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের (জিএসকে) প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বিএনপি বলেছে, তিনি ছিলেন অত্যন্ত স্পষ্টবাদী, দুঃশাসন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার।
বুধবার এক শোক বার্তায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের নায়ক ডা. জাফরুল্লাহ জাতি, দেশ ও জনগণের কল্যাণে সারা জীবন কাজ করে গেছেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বিএনপি ও এলডিপির ২৬ নেতাকর্মী কারাগারে
বিএনপি নেতা স্মরণ করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের জন্য মাঠ হাসপাতাল এবং স্বাধীনতার পর স্বল্প খরচে চিকিৎসার জন্য গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় ডা. জাফরুল্লাহ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।
তিনি বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী উন্নয়ন এবং সমাজ সংস্কার ও অগ্রগতিতেও এই মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন।
ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রের সব সংকটে তিনি নির্ভীক সৈনিক হিসেবে এগিয়ে এসেছিলেন।
বিএনপি নেতা বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে এবং আওয়ামী সরকারের গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং দল কর্তৃক জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে অসামান্য ভূমিকা পালন করেন।
তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং জাফরুল্লাহর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিএনপির কর্মসূচিতে হামলা: নাটোরে আ.লীগ ও যুবলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে আবারও ক্ষমতা দখল করতে চায় সরকার: বিএনপি
দুর্নীতি মামলায় সাবেক এমপি আউয়াল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি একেএমএ আউয়াল ও তার স্ত্রী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী লায়লা পারভিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের করা তিন মামলায় অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
উভয়ের উপস্থিতিতে গতকাল বৃহস্পতিবার এই অভিযোগ গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী একে নূর উদ্দীন আহম্মেদ।
অ্যাডভোকেট নূর উদ্দীন বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে খাস জমি অবৈধভাবে দখল ও অর্থ আত্নসাতের অভিযোগে দুদক তাদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করে। ওই মামলা বর্তমানে বরিশাল বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে রয়েছে। আদালতের বিচারক মেহেদী আল মাসুদ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন। পরে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য্য করেছেন। এর মাধ্যমে মামলার বিচার কাজ শুরু হল।
মামলার বরাত দিয়ে আদালতের বেঞ্চ সহকারী হারুন অর রশিদ বলেন, ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক আলী আকবর বাদী হয়ে মামলা করেন। তিন মামলায় পিরোজপুর ১ আসনের সাবেক এমপি আউয়াল ও তার স্ত্রীকে আসামিকে করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আউয়াল দম্পতির ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ নিয়ে হাইকোর্টের রুল
এর মধ্যে একটি মামলায় তার স্ত্রী লায়লা পারভীন নিজের নাম লায়লা ইরাদ উল্লেখ করে ২০১৪ সালের ২৫ অগাষ্ট নেছারাবাদ উপজেলার স্বরুপকাঠি মৌজায় সরকারী ভিপি ৫ শতাংশ জমি ইজারা নেয়। ইজারা নেয়ার আবেদন পত্রে লায়লা ইরাদের সাক্ষর ছিলো।
ইজারার চুক্তি অনুযায়ী আধা-পাকা ভবন নির্মাণের কথা থাকলেও দ্বিতল ভবন করে একেএম আউয়াল ফাউন্ডেশন ও পাঠাগারের নামে অবৈধভাবে দখলে রেখেছেন। ২০২১ সালের ২২ এপ্রিল দুদক কর্মকর্তা আলী আকবর স্বামী স্ত্রীকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
একই কর্মকর্তার করা দ্বিতীয় মামলায় অভিযোগ আনা হয়, একেএমএ আউয়াল ২০০৮ ও ২০১৪ সালে পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে পিরোজপুর সদরে রাজার পুকুরের জমি স্ত্রী লায়লা পারভীনের পরিবর্তে লায়লা আউয়াল উল্লেখ ৪৪ শতাংশ জমি উভয়ের নামে নেয়। পরে পুকুর ভরাট করে অবৈধভাবে সীমানা প্রাচীর দিয়ে দখলে নেয়। একই কর্মকর্তা ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন।
দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময়ে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বৈঠাকাঠি পল্লী বিদ্যুতের সাব জোনাল অফিসের পাশে বৈঠাকাঠি মৌজায় ৩ শতাংশ খাস জমি স্ত্রী লায়লা পারভীনের নামে নিয়ে দ্বিতল ভবন করে মাসিক ১৭ হাজার ২৫০ টাকা চুক্তিতে ভাড়া দিয়েছে। এ মামলায় একই কর্মকর্তা ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সাবেক এমপি আউয়াল দম্পতির সম্পদ জব্দের আদেশ বহাল
আউয়াল দম্পতির আগাম জামিন আপিলেও বহাল
খুলনা ওয়াসা এমডির দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট
খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম-দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইমাদুল হক বসির রিটটি দায়ের করেন।
রিটে খুলনা ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম-দুর্নীতির অনুসন্ধান করতে দুদকের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, তার নিয়োগ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে।
রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিব, উপ-সচিব স্থানীয় সরকার (পানি সরবরাহ), পিএসসির চেয়ারম্যান, খুলনা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ, খুলনা ওয়াসার চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশন ও খুলনা ওয়াসার এমডিকে বিবাদী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে জলাবদ্ধতার দায় ওয়াসা ও সিটি করপোরেশন উভয়ের: টিআইবি
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, খুলনা ওয়াসার এমডির অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে বিস্তর অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তারপরও তিনি বহাল তবিয়তে রয়েছে। নিজের পদে থাকতে তিনি প্রবিধান সংশোধন করে নিচ্ছেন। তারপরও তার বিষয়ে কোনো তদন্ত হচ্ছে না।
রিট আবেদনটির ওপর আগামী সপ্তাহে শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী।
আরও পড়ুন: এবার ঢাকা ওয়াসা বাড়াল পানির দাম
দুর্নীতির প্রকোপ কমলে বাংলাদেশে বিনিয়োগ আরও বাড়বে: পিটার হাস
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, তার দেশ দুর্নীতি নির্মূলে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর ফলে বাংলাদেশিরা মর্যাদাকর জীবন উপভোগ করতে এবং আরও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যদি নাগরিক ও বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতে পারে যে অন্য বাজারের তুলনায় এখানে দুর্নীতি কম, তাহলে এটি আরও বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে এবং দেশকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।’
মঙ্গলবার সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) এবং সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজের আয়োজনে ঢাকার একটি হোটেলে ‘কল টু অ্যাকশন অ্যাগেইনস্ট করাপশন সামিট;- শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত হাস এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, পৃথিবীর প্রতিটি কোণেই কম-বেশি দুর্নীতি রয়েছে এবং সব দেশের মানুষই জানে এটা কেমন।
হাস বলেন, ‘একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে 'ঘুষ' দিতে হচ্ছে, আপনি যদি পাসপোর্ট অ্যাপয়েন্টমেন্ট চান তবে আপনার অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হবে এমনকি আপনার কেনা জমি রেজিস্ট্রি করার জন্যও কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে হবে।’
আরও পড়ুন: র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড উল্লেখযোগ্য কমেছে: পিটার হাস
তিনি বলেন, দুর্নীতি একটি পরজীবী, যা একটি সমাজের সম্পদ খায় ও এর শক্তিকে শুষে নেয় এবং এটি ব্যবসা ও সরকারের প্রতিটি স্তরকে ধ্বংস করতে পারে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে, আমার নিজের দেশেও কিছু কুখ্যাত কেলেঙ্কারি ঘটেছে।’
তিনি বলেন, এসব দুর্নীতির বহিঃপ্রকাশ ও অপরাধীদের জবাবদিহিতা করার জন্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যন্য দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সমাজ যখন এই ধরনের চেষ্টা চালায়, তখন তারা উন্নতি লাভ করে। আমি নিশ্চিত যে এটি বাংলাদেশেও হতে পারে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাহায্য করতে আগ্রহী।’
হাস বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের অধীনে মার্কিন সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইকে মূল জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন উদ্যোগগুলোকে সমর্থন করি যা বাংলাদেশি ব্যবসাগুলোকে আন্তর্জাতিক মান ও নিয়ম মেনে চলতে সাহায্য করে এবং যা তাদেরকে বিশ্ব বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তোলে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘নৈতিক ব্যবসা চর্চা প্রচারের মাধ্যমে আমরা সব আকারের ব্যবসার জন্য আরও বেশি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে পারি এবং আরও বিদেশি বিনিয়োগকে উত্সাহিত করতে পারি।’
ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) নতুন ব্যবসার জন্য একটি অনলাইন রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালু করতে বাংলাদেশের রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানির সঙ্গে অংশীদারিত্ব করেছে।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, এটি নতুন ব্যবসা নিবন্ধনকে আরও স্বচ্ছ, দ্রুত এবং আরও সাশ্রয়ী করে তুলবে।
ইউএসএআইডি অনুমোদিত অর্থনৈতিক অপারেটর প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গেও কাজ করেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের উন্নয়নে ‘বিশ্বস্ত অংশীদার’ থাকবে যুক্তরাষ্ট্র: পিটার হাস
হাস বলেছেন, প্রক্রিয়াটি আরও স্বচ্ছ হয়েছে এবং বেসরকারি খাত ও সরকারের মধ্যে আস্থার পরিমাণ বাড়িয়েছে।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের কমার্শিয়াল ল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (সিএলডিপি) বাংলাদেশের আইনি ও ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতির জন্য কর্মশালা পরিচালনার জন্য প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ (পিপিপি) অথরিটি বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করে।
সিএলডিপি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সঙ্গেও কাজ করে, যাতে আর্থিক স্বচ্ছতা উন্নত করে পৌর শাসনের উন্নতি হয়।
এই কর্মসূচির অধীনে, সিএলডিপি জানুয়ারিতে মিয়ামিতে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়রসহ একটি প্রতিনিধিদলকে আমন্ত্রণ জানায়।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্তকারী ও অ্যাটর্নিদের প্রশিক্ষণ দেয়- কীভাবে অর্থ পাচারের তদন্ত এবং বিচার করতে হয়, কীভাবে ইলেকট্রনিক প্রমাণ ব্যবহার করতে হয় এবং কীভাবে আর্থিক অপরাধের তদন্ত করতে হয়।
হাস বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এবং আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন সমন্বয় কেন্দ্রের মধ্যেও একটি সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের তাদের কাজের জন্য জবাবদিহি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি বিভিন্নভাবে হতে পারে।’
আরও পড়ুন: সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক ও উন্নত দেশে পরিণত হতে প্রয়োজনীয় সবকিছু আছে বাংলাদেশের: মার্কিন রাষ্ট্রদূত
রাষ্ট্রদূত বলেন, মার্কিন আইনে যেমন আমেরিকান নাগরিক ও ব্যবসাগুলোকে দুর্নীতির জন্য দায়বদ্ধ থাকে, তেমনি আইন লঙ্ঘন করে দুর্নীতি চর্চাকারী অ-নাগরিকদের জন্যও আইন ও শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার দুর্নীতি কমাতে কী করতে পারে-এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্নীতি মোকাবিলা করতে এবং শাসন ও ব্যবসায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বৃদ্ধির জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে ভাবা যেতে পারে।’
হাস বলেন, একটি উপায় হলো নগদ আর্থিক লেনদেনগুলো অনলাইনে সম্পন্নের ব্যবস্থা করা।
তিনি বলেন, ‘নাগরিকরা ইলেকট্রনিকভাবে বিল, জরিমানা ও কর পরিশোধ করতে পারে।
তিনি বলেন, এই ধরনের প্রক্রিয়ায় জনসাধারণের টাকায় আমলাদের পকেট ভরার সুযোগ কমে যাবে।
হাস দুর্নীতির ঘটনা তদন্ত ও উন্মোচনে একটি সক্রিয় নাগরিক সমাজ এবং স্বাধীন গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অনেক সুবিধা রয়েছে, যা সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় মনে হবে। ‘কিন্তু আমেরিকান ব্যবসায়ী নেতারা আমাকে বলছেন: বহু-জাতীয় সংস্থাগুলোর কাছে বিনিয়োগের অনেক বিকল্প রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, যে দেশে দুর্নীতির মাত্রা সবচেয়ে কম, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কম, আইনের শাসনের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা এবং তাদের ব্যবসার জন্য সর্বোত্তম লজিস্টিক অবকাঠামো আছে, স্বভাবতই এমন কোনও দেশকেই তারা বেছে নিতে চাইবে।
নাইকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের ফলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা আরও একটি মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
রবিবার কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৩ মে দিন ধার্য করেন আদালত।
এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার হাজিরা দেন।
মামলার আসামি খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সি এম ইউছুফ হোসাইন ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ছে: আইনমন্ত্রী
এছাড়া অপর আসামি সেলিম ভূঁইয়ার আইনজীবী মো. জাকারিয়া হায়দার আদালতে সময়ের আবেদন করলে আদালত সময়ের আবেদন না-মঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করা হয়।
২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনে দুদক।
মামলার অন্য সাত আসামি হলেন- তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
অপরদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন এসেছে
আবেদন পেলে খালেদার মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত: আইনমন্ত্রী
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন গ্রেপ্তার
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটির দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা জানিয়েছে, দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের জন্য তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
মুহিউদ্দিন ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। মেয়াদ শেষের পরে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়া দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন।
এর আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হন এবং বিচারে তার ১২ বছরের জেল হয়।
দেশটির দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা বলেছে, শুক্রবার মুহিউদ্দিনকে তার মেয়াদকালে সরকারি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত তহবিলের অপব্যবহার এবং অর্থপাচার সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
৭৫ বছর বয়সী মুহিউদ্দিন তিন সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো প্রশ্নের জিজ্ঞাসাবাদের উত্তর দিতে বৃহস্পতিবার দুর্নীতিবিরোধী সংস্থার কাছে যান।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়া প্রধানমন্ত্রীর জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রস্তাবে রাজার না
করোনা মহামারিকালীন অর্থনৈতিক সহায়তা এবং আরও কিছু প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ্ তহবিল নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ক্ষমতায় বসার পর তার আগের প্রশাসনের অনুমোদিত সরকারি প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
অন্যদিকে, মুহিউদ্দিনের রাজনৈতিক দল বেরসাতু’র দুই জ্যেষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধেও সম্প্রতি দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে।
এছাড়া দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা তাদের কথিত বেআইনি কার্যক্রমের তদন্তের জন্য বেরসাতুর ব্যাংক অ্যাকাউন্টও জব্দ করেছে।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ার সাবেক অর্থমন্ত্রী লিম দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার
মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন
জাহাঙ্গীরের দুর্নীতির অনুসন্ধান ৬ মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র থাকাকালে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান ছয় মাসের মধ্যে সম্পন্নের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনকে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না ও অ্যাডভোকেট একরামুল হক টুটুল।
দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর মামলায় সেই বিচারকের হাইকোর্টে জামিন
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
মঙ্গলবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পশ্চিম ভিরুলিয়া সরকার বাড়ীর ওসমান গনি সরকারের ছেলে মো. আব্দুর রহিম সরকার হাইকোর্টে এ রিট করেন।
রিটে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত দ্রুত শেষ করতে আবেদন জানানো হয়।
এর আগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারে ‘গ্রাফ্ট ইজ হিজ মিডল নেইম’ শীর্ষক শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
ওই প্রতিবেদন যুক্ত করা হয় রিট আবেদনটিতে।
রিটে জাহাঙ্গীর আলম মেয়র থাকাকালীন আসা দুর্নীতির অভিযোগ দুদক আইনে বেধে দেয়া সময়ে অনুসন্ধান শুরু বা শেষ করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং অবিলম্বে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন এবং আইন অনুসারে যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি তদন্ত রিপোর্ট হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশনাও চাওয়া হয়।
রিটে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, স্থানীয় সরকার সচিব, অতিরিক্ত সচিব মোস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী, বিএফআইউ, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র এবং জাহাঙ্গীর আলমকে বিবাদী করা হয়েছে।
ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়, জাহাঙ্গীর আলম ও তার অনুসারীরা দুর্নীতিতে কিছুই ছাড়েননি। এমনকি জাতীয় শোক দিবসে দুঃস্থদের খাওয়ানোর জন্য বরাদ্দকৃত অর্থও তারা নিজেদের পকেটে ঢুকিয়েছেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (জিসিসি) প্রতিটি ক্ষেত্র ছুঁয়েছে তাদের দুর্নীতির হাত।
অনুদান বিতরণ, বালু ভরাট, সড়ক প্রশস্তকরণ-এমনকি নালা-নর্দমা পরিষ্কার থেকে বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিদের জন্য দেয়া খাবারের মতো ছোট আকারের কর্মকাণ্ডে ও ভাগ বসিয়েছেন জিসিসির বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও তার অনুসারীরা।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থও এর বাইরে ছিল না।
আরও পড়ুন: আদর্শ প্রকাশনীর বইমেলায় স্টল বরাদ্দ নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত
জিসিসির অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদনে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অজস্র অভিযোগের এমন বিশদ বিবরণ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় গঠিত একটি তদন্ত কমিটির তৈরি এ প্রতিবেদনে জাহাঙ্গীরের বিভিন্ন দুর্নীতি-অপকর্মের তথ্যসহ বিভিন্ন পর্যবেক্ষণও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গাজীপুর সিটি করপোরেশন গত তিন অর্থবছরে (২০১৮-২০১৯, ২০১৯-২০২০ ও ২০২০-২০২১) আটটি এলাকায় বর্জ্য অপসারণে ব্যয় করেছে ১২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
অথচ সেসব এলাকার কোনো আবর্জনা পরিষ্কার না করেই এর বিল পরিশোধ করা হয়েছে।
জিসিসির তদন্ত প্রতিবেদনে বর্ণনা করা হয়েছে যে কীভাবে জাহাঙ্গীরের তত্ত্বাবধানে সব আইন উপেক্ষা করে দুর্নীতি সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছিল।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ জানুয়ারি ক্ষমতাসীন দল তাকে সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা দেয়।
এরপর তার দুর্নীতি ও অপকর্মের বিষয়গুলো আবারও সামনে আসে।
২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হলে জাহাঙ্গীরকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। ভিডিওতে তাকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করতে এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
দল থেকে বহিষ্কারের সাত দিন পর ২৫ নভেম্বর তাকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সে সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ভূমি দখল, ক্ষমতার অপব্যবহার ও সরকারি অর্থের অপব্যবহারের অভিযোগকে জাহাঙ্গীরের স্থগিতাদেশের কারণ হিসেবে উল্লেখ করে।
পরে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে দলের পক্ষ থেকে সাধারণ ক্ষমার পর জাহাঙ্গীরের অনুসারীরা উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েছেন।
দলের ভেতরকার সূত্রগুলো বলছে, তারা এখন জাহাঙ্গীরের মেয়র পদ পুনরুদ্ধারের ব্যাপারে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।
তবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ওপরেই নির্ভর করছে এ সিদ্ধান্ত।
গত সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রী বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমরা তা বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেব।
তদন্ত কমিটির সদস্য মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম জানান, এখনও মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়নি। আমরা গাজীপুর সিটি করপোরেশনকে বিভিন্ন কাগজপত্র জমা দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। এখন আমরা সেই নথিগুলো বিশ্লেষণ করছি। আমরা শিগগিরই প্রতিবেদন তৈরির কাজ শেষ করব।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতি কালো দাগ সৃষ্টি করেছে: হাইকোর্ট
এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে বলে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।