সংলাপ
আসন্ন নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপের সিদ্ধান্ত নেয়নি আ.লীগ: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বুধবার বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে দল এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে আমরা আমাদের নিজেদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করব। প্রয়োজনে আমরা নিজেরাই সমাধান করব। দেশে এমন কোনো রাজনৈতিক সংকট নেই যাতে জাতিসংঘের মধ্যস্থতা বা হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়।’
ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, যেকোনো সংকটের সমাধান সংবিধান। ‘সংবিধান যদি কোনো দেশে সমাধান দিতে না পারে, তাহলে সে দেশে গণতন্ত্র থাকবে কী করে?’
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সরকারের আলোচনার ইঙ্গিত আমির হোসেন আমু’র
এর আগে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু নির্বাচনী সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে আলোচনার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেন।
মঙ্গলবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যত্রের প্রতিবাদে ১৪ দলের প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, ‘সংলাপ ছাড়া অন্য কোনো মাধ্যমে সংকট সমাধান করা সম্ভব নয়। আর যদি তারা (বিএনপি) অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করে, তাহলে জনগণ প্রতিরোধ করবে।’
তিনি এমনকি ২০১৩ সালে ফার্নান্দেজ তারানকোর প্রচেষ্টার মতো জাতিসংঘের একজন প্রতিনিধির মধ্যস্থতায় আলোচনার সম্ভাবনাও ধরে রেখেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে যেকোনো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সংলাপের দরজা সব সময় খোলা। প্রয়োজনে জাতিসংঘের একজন প্রতিনিধির মধ্যস্থতায় বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হতে পারে।’
এদিকে, আসন্ন নির্বাচনে অবাধ ও সুষ্ঠু আচরণের প্রচারের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য একটি ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। সেই সঙ্গে আগামী নির্বাচন নিয়ে দেশের বহুমুখী তৎপরতা দৃশ্যমান।
আরও পড়ুন: বিএনপির ধ্বংসাত্মক অপরাজনীতির কারণেই নতুন মার্কিন ভিসা নীতি: তথ্যমন্ত্রী
লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে ৮ জুন দেশব্যাপী বিএনপি’র অবস্থান কর্মসূচি
সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থনকারীদের যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই: রাষ্ট্রদূত হাস
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস মঙ্গলবার বলেছেন, যারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করে এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যা চায়, আমরাও যুক্তরাষ্ট্রে তাই চাই। ‘আমি কোনো দ্বিমত দেখছি না।’
ঢাকায় এক অনুষ্ঠানের পর নতুন ভিসা নীতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত হাস এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চ্যালেঞ্জের চেয়ে ইতিবাচক বিষয়গুলো দেখছে। বাণিজ্য, নিরাপত্তা সম্পর্ক, জনগণের মধ্যে বন্ধন, স্বাস্থ্যসেবা এবং আসন্ন নির্বাচন নিয়ে ভালো সংলাপের বিষয়ে আমাদের একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্ব রয়েছে।’
আরও পড়ুন: নতুন ভিসা নীতি শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে সমর্থন করার জন্য: রাষ্ট্রদূত হাস
হাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুস্পষ্ট অঙ্গীকার করেছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তার ঘোষণায় বলেছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের।
এডওয়ার্ড এম কেনেডি সেন্টারে 'রুটস অব ফ্রেন্ডশিপ: ৫০ ইয়ারস অব ইউএস-বাংলাদেশ রিলেশনস'- শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: মার্কিন ভিসা নীতি ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে জনগণের দীর্ঘদিনের দাবিকে প্রতিফলিত করে: ফখরুল
নির্বাচনের আগে সংলাপের প্রয়োজন নেই, পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপের কোনো প্রয়োজন নেই এবং তিনি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যে ব্যবস্থা রয়েছে তা অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে ভয়েস অব আমেরিকা বাংলা সার্ভিসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সংলাপের প্রয়োজন কেন? ক্ষমতায় কি পেছনের দরজা দিয়ে আসবে? মোটেই না। যেহেতু একটি ব্যবস্থা আছে তাই আলোচনার প্রয়োজন নেই এবং যারা নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক তাদের (বিএনপিসহ বিরোধী দল) এগিয়ে আসা উচিত।’
ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন মোমেনের- ‘নির্বাচনের আগে ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং রিপাবলিকান পার্টি বা অন্যান্য দল কি আলোচনা করে? না, কখনোই না। কারণ, একটা সিস্টেম আছে। তারা সিস্টেম অনুসরণ করে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি যাদের কথা বলছেন তারা বন্দুকের মাধ্যমে তাদের যাত্রা শুরু করেছে। তারা ব্যালটে নয়, বন্দুকে বিশ্বাস করে।’
আরও পড়ুন: আমেরিকা আমাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু দেশ: মোমেন
মোমেন বলেন, ‘তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের ওপর আস্থা রাখে এবং এ কারণেই তারা একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চায়। কারণ আমরা মানুষকে বিশ্বাস করি। আমরা একটি মডেল নির্বাচন চাই।’
তিনি আরও বলেন যে বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র, মানবিক মর্যাদা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে ৩০ লাখ মানুষ তাদের জীবন উৎসর্গ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের রক্তে ভোটাধিকারসহ গণতন্ত্র রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় উল্লেখ করে বলেছে, বিশ্ববাসী বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেন গত ১০ এপ্রিল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের সময় বলেন, ‘অবশ্যই, আমরা তথা বিশ্ব বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে রয়েছি, যাতে তারা এই অঞ্চল এবং বিশ্বের জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের একটি শক্তিশালী দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।’
আরও পড়ুন: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে মোমেনের ফলপ্রসূ বৈঠক
মোমেন ভয়েস অব আমেরিকা বাংলা সার্ভিসকে বলেন, ‘আমি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে একমত। আমি খুব খুশি যে তিনিও এমন একটি মডেল নির্বাচন চান যা সারা বিশ্বে চিত্রিত হতে পারে। আমিও চাই এবং আমরা সকলের সমর্থন চাই।’
মোমেন বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব দলকে আন্তরিকতা ও রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রদর্শন করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘তার দল আওয়ামী লীগ সবসময় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে, অভ্যুত্থান বা বুলেটের মাধ্যমে নয়। গণতন্ত্রের প্রতি আমাদের যে আন্তরিকতা ও অঙ্গীকার রয়েছে তার দিক থেকে অন্যরা আমাদের কাছাকাছিও নেই।’
মোমেন বলেন যে বিএনপি যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাহলে তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত। বিএনপি অতীতে নির্বাচন বর্জন করেছে এবং নির্বাচন বানচাল করতে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। আমরা সেই পরিস্থিতি আর দেখতে চাই না।
তিনি আরও বলেন যে তিনি ব্লিঙ্কেনকে যত বেশি সম্ভব নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রেরণের অনুরোধ করেছেন। তবে পক্ষপাতদুষ্ট পর্যবেক্ষকদের এড়ানোর জন্য তাদের স্বাধীন হতে হবে এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হওয়া যাবে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লুকানোর কিছু নেই। কারণ আমরা গত ১৪ বছরে একটি চমৎকার কাজ করেছি এবং আমরা নিশ্চিত যে গল্প বানানো হলেও মানুষ আমাদের ভোট দেবে এবং সেই সব গল্প তারা বিশ্বাস করবে না।’
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ করার জন্য নয়: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে মোমেন
সংলাপে নয়, অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বিএনপিকে আমন্ত্রণ: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিএনপিকে সংলাপে নয়, বরং অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর ইসি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক না হোক, অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারেন এভাবে একটি চিঠি দিয়েছিলাম। আমরা সংলাপের আহ্বান করিনি। সংলাপ একটি আনুষ্ঠানিক ব্যাপার।’
এর আগে বৃহস্পতিবার সিইসি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় সভায় অংশ নিতে একটি আধা-আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠান।
আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন গত বছর গঠনের পর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই দফা সংলাপ করেছে। তবে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল সংলাপে অংশ নেয়নি।
বিএনপিকে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চিঠি জনগণের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে আরেকটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সরকারের সর্বশেষ কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল।
আরও পড়ুন: অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে: সিইসি
বিএনপি বা অন্য কোনো দলের সঙ্গে নতুন করে সংলাপ সম্ভব নয়: সিইসি
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি: ওবায়দুল কাদের
সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অনেক রাস্তা হচ্ছে, সেতু হচ্ছে, কিন্তু শৃঙ্খলা না থাকলে সাফল্য ধরে রাখতে পারবো না। এজন্য সড়ক ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসিদের সঙ্গে সংলাপের পর সাংবাদিকদের তিনি এমন তথ্য দিয়েছেন। তিনদিনব্যাপী জেলাপ্রশাসক সম্মেলনের আজ ছিল দ্বিতীয়দিন।
ওবায়দুর কাদের বলেন, আমি ডিসিদের বলেছি, সরকারের যেসব উন্নয়নমূলক অবকাঠামো হয়েছে। যেমন–পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, শতসেতু, শতরাস্তা, ওভারপাস, ফ্লাইওভার, এগুলো দৃশ্যমান। এগুলো নিয়ে সময় নষ্ট করতে চাই না। এগুলো সবাই দেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলে আরও বেশি করে সবার জানান সুযোগ মিলবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু তাদের বলেছি, আমি এখন আর নতুন কোনো রাস্তা করতে চাই না। আগামী নির্বাচনের আগে নতুন করে কোনো রাস্তা হবে না। যে রাস্তাগুলো আছে, সেগুলো মেরামত ও সংরক্ষণ করা আমাদের প্রথম ও প্রধান কাজ।’
আরও পড়ুন: দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো নিজেরাই সমাধান করবো: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আরেকটি বিষয় বলেছি, মোটরসাইকেলের মতো ছোটো ছোটো যানগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ঢাকা শহরে মোটরসাইকেল অনেকটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি, ৯৫ শতাংশ। ঢাকায় একটি মোটরসাইকেলে দুজন থাকলে তাদের মাথায় হেলমেট থাকে, কিন্তু মফস্বলে তিনজন থাকলেও কারও মাথায় হেলমেট থাকে না।
তিনি জানান, আর আমি সচিবকে একটা কথা বলেছি, গরিব মানুষের জীবন যেমন আছে, জীবিকাও আছে। ওদের জীবিকার চাকা তো আমরা বন্ধ করে দিতে পারি না। কাজেই এগুলোকে একটি নীতিমালার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা প্রণয়ন করতে হবে।
কাদের বলেন, ‘ডিসিদের দায়িত্ব হচ্ছে এসব গাড়িগুলো শহরে ও মহাসড়কে যে যানজটের সৃষ্টি করে, দুর্ঘটনার সৃষ্টি করে, সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দেখা গেল, একটি ইজিবাইক দুর্ঘটনা ঘটলে ১০-১২ জন মারা যান। সেটাও বড় দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার হার কমলেও এতে মৃত্যুর হার কমছে না।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন এগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আমার কথা হচ্ছে, আমি পরিবহন ও সড়কে শৃঙ্খলাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। এতে আমি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। অনেক রান্তা হচ্ছে, সেতু হচ্ছে, কিন্তু শৃঙ্খলা না হলে সাফল্য ধরে রাখতে পারবো না। এ ক্ষেত্রে ডিসিদের সহযোগিতা চেয়েছি।
নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে ডিসিদের কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কিনা; জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, শৃঙ্খলা বলতে সবকিছুকেই বোঝায়।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের ভাড়া বেশি না: কাদের
নেতার দরকার নেই, চৌকস কর্মী চাই: ছাত্রলীগকে ওবায়দুল কাদের
বিএনপি বা অন্য কোনো দলের সঙ্গে নতুন করে সংলাপ সম্ভব নয়: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বৃহস্পতিবার বলেছেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপি বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নতুন করে সংলাপের সুযোগ নেই।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য বিএনপিকে বারবার অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু তারা সবসময় আমাদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।’
তিনি বলেন, বিএনপি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে অনড়।
তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপি বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নতুন করে সংলাপের কোনো সুযোগ নেই।’
এছাড়া বিএনপির এমপিদের শূন্য থাকা পাঁচটি সংসদীয় আসনে উপনির্বাচন ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) দিয়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের কোনো চাপ নেই: সিইসি
তবে এই উপনির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর জন্য ইসির প্রয়োজনীয় তহবিল নেই বলেও জানান সিইসি।
বর্তমানে ৫০ থেকে ৬০টি আসনে ইভিএম দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের রয়েছে।
তিনি বলেন, আরও ইভিএম কেনার জন্য সরকারের কাছে আর্থিক বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
বরাদ্দের পর কমিশন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০টি আসনে নতুন মেশিন কেনা এবং ইভিএম দিয়ে নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে বলেও জানান তিনি।
সিইসি বলেন, সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কিছু ইভিএম ব্যবহার বন্ধ হয়ে গেছে। ইভিএমের যথাযথ সংরক্ষণের জন্য সরকারের কাছে একটি প্রকল্প জমা দেয়া হয়েছে এবং প্রকল্প প্রস্তাব এখন পরিকল্পনা কমিশনের কাছে রয়েছে।
সিইসি বলেন, ‘প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে ইভিএম সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হবে। এতে দেশের অর্থ সাশ্রয় হবে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া গণতান্ত্রিক চর্চা গড়ে উঠবে না: সিইসি
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন: সিইসি
আগামী নির্বাচনের আগে কোনো সংলাপ না করার ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রীর
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো সংলাপ না করার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি প্রশ্ন করেন, ‘অনেকেই বলেন ডায়ালগ করতে হবে, আলোচনা করতে হবে। কাদের সঙ্গে? ওই বিএনপি, খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া- সাজাপ্রাপ্ত আসামি; যারা গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে, তাদের সঙ্গে?’
শনিবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন মহিলা আওয়ামী লীগের ষষ্ঠ ত্রিবার্ষিক জাতীয় কাউন্সিলে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন যে সভা-সমাবেশ করতে বিএনপির কোনো বাধা নেই। তবে সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে তারা যদি অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ড ঘটায় তাহলে তার সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
আরও পড়ুন: ২৯ বছরেও বাংলাদেশ কেন উন্নয়নের মুখ দেখেনি: প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন
তিনি বিএনপিকে সতর্ক করে বলেন, ‘আপনাদের আন্দোলনে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে অগ্নিসংযোগ, মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা ও নিরীহদের ওপর গ্রেনেড নিক্ষেপের মতো ঘটনা ঘটলে আমরা একজনকেও রেহাই দেব না।’
প্রধানমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারি এসেছে যখন বিএনপি আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পথ প্রশস্ত করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশের প্রচারণা করছে। বিরোধী দল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদও করছে।
২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর সারাদেশে নির্যাতন ও দমন-পীড়নের লাগাম টেনে ধরার জন্য বিএনপি-জামায়াত শাসনের সমালোচনাও করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ভোগ্যপণ্যের কোনো সংকটের আশঙ্কা করছেন না প্রধানমন্ত্রী
ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বাড়িতে রাখলে চোরেরা উৎসাহিত হবে: প্রধানমন্ত্রী
ইসি সংলাপ: ৩০০ আসনে ইভিএমে ভোটের প্রস্তাব আ.লীগের
পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের জন্য আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তাব দিয়েছে।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁও-এ অবস্থিত নির্বাচন ভবনে ইসি সংলাপে আ.লীগ এই প্রস্তাব দেয়। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের এক প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সভায় অংশ নেন।
কাদের তাঁর দলের বেশ কয়েকটি প্রস্তাব উত্থাপন করে বলেন, ‘আমরা মন থেকে ইভিএমের ব্যবহার চাই। দলের পক্ষে আমরা ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় ইভিএমের ব্যবহার চাই।’
আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মতামত চেয়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শেষ করেছে ইসি।
আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে ছিলেন আওয়ামী লীগের আমির হোসেন আমু, মতিয়া চৌধুরী, কাজী জাফরুল্লাহ, ড. মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক, ফারুক খান, ড. হাসান মাহমুদ, সাহবুদ্দীন, আব্দুস সোবহান গোলাপ, বিপ্লব বড়ুয়া, ড. সেলিম মাহমুদ, শামসুর নাহার চাঁপা এবং সাঈম খান।
নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৮টি দল সংলাপে অংশ নেয়। নয়টি দল সেখানে অংশ নেয় নি এবং অন্য দুটি দল সময় চেয়েছে।
আরও পড়ুন: ইভিএম এর ত্রুটি পরীক্ষা করতে জুনে বিশেষজ্ঞদল ডাকা হবে: কমিশনার আলমগীর
সকল দলের অংশগ্রহণে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই: কমিশনার আহসান হাবিব
বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য আসন্ন বছর খুবই প্রতিশ্রুতিশীল: ডাচ রাষ্ট্রদূত
সাহায্য থেকে বাণিজ্যে স্থানান্তরের কথা মাথায় রেখে বেসরকারি খাতের বৃহত্তর সম্পৃক্ততায় বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্রে আসন্ন বছর ও দশকগুলো ‘খুবই প্রতিশ্রুতিশীল’ বলে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ডাচ রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন।
‘বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস সম্পর্ক: ভবিষ্যতের পূর্বাভাস’ শীর্ষক এক সংলাপে মূল বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশের সামর্থ্য, দুর্বলতা ও সুযোগ চিহ্নিত করেন এবং জয়-জয়ের ভিত্তিতে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সেগুলো মোকাবিলার ওপর জোর দেন।
রাষ্ট্রদূত লিউয়েন বলেন, ‘তাই আমরা আসন্ন বছর ও এমনকি কয়েক দশককে দেখছি বেসরকারি খাতের বৃহত্তর সম্পৃক্ততার সঙ্গে কৃষি-খাদ্য ও পানি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার জন্য অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিশীল।’
কসমস গ্রুপের জনহিতকর শাখা কসমস ফাউন্ডেশন চলমান অ্যাম্বাসেডর লেকচার সিরিজের অংশ হিসেবে এ সংলাপের আয়োজন করেছে।
কসমস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাহার খান সূচনা বক্তব্য দেন।
সিইসির প্রশংসা করলেও বর্তমান ইসির সঙ্গে সংলাপে যোগ দেবে না বিএনপি
বিএনপিকে আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানোয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের প্রশংসা করলেও সরকার পরিবর্তন না হলে দলটি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে কোনো সংলাপে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন বিএনপির জ্যৈষ্ঠ নেতা মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেন, ‘আজ (বুধবার) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে যোগ দিতে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমরা এতে অংশ নিইনি। কারণ আমরা নির্বাচন কমিশন বুঝি না, জানি না, মানিও না।’
আরও পড়ুন: লোডশেডিং সরকারের ভুল নীতির ফল: বিএনপি
এক সমাবেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা চান বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে ও বর্তমান সরকারের বিদায়ের পর নতুন সরকারের অধীনে ইসি পুনর্গঠিত হোক। ‘আমরা সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব এবং আমরা সেই কমিশনের সংলাপে যোগ দেব।’
বিএনপিকে বারবার ইসিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে- সিইসির এমন মন্তব্যের জবাবে আব্বাস বলেন, ‘আমরা আপনাকে (সিইসি) সাধুবাদ জানাই। আপনি বিএনপিকে বারবার আমন্ত্রণ জানাবেন কারণ বিএনপি ছাড়া নির্বাচন করতে পারবেন না।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো ইসিই বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে পারবে না: বিএনপি
বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন করার ক্ষমতা বাংলাদেশে কারো নেই বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দলের এক নেতার অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপি।