প্রতারণা
প্রতারণার মামলা: সাহেদকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
বালু কিনে বিল পরিশোধ না করে প্রতারণা ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদের জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সগীর হোসেন লিয়ন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশির উল্লাহ।
আরও পড়ুন: রিজেন্টের সাহেদকে কেন জামিন দেয়া হবে না: হাইকোর্ট
রাষ্ট্রপক্ষের বশির উল্লাহ বলেন, বালু কিনে টাকা না দেয়ার অভিযোগে উত্তরা পশ্চিম থানায় এক ব্যবসায়ীর করা মামলায় আদালত সাহেদকে জামিন দেননি। তার আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেছেন। মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমের প্রতিষ্ঠানে ওই ব্যবসায়ী বালু সরবরাহ করতেন। কিন্তু টাকা না দিয়ে ঘোরাতে থাকেন সাহেদ। টাকা দেয়ার কথা বলে ওই ব্যবসায়ীকে ডেকে নিয়ে মারধর করেন সাহেদ। সাহেদ গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনি বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে করোনা ভুয়া পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম ধরা পড়ে। পরদিন ৭ জুলাই রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। পরে ১৫ জুলাই সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সেই থেকে কারাবন্দি সাহেদ। গত বছর অস্ত্র মামলায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে টাকা আত্মসাত মামলায় সাহেদের ৪ দিনের রিমান্ড
প্রতারণার অভিযোগে কর্ণফুলী মাল্টিপারপাসের প্রকল্প পরিচালকসহ গ্রেপ্তার ১০
অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগে সমবায় ভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস কো অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) শাকিল আহাম্মেদ (৩০) সহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
সোমবার (২৫ অক্টোবর) দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর পল্লবী এলাকায় কর্ণফুলীর অফিসে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার অন্য ৯ জন হলেন- মো. চাঁন মিয়া (৩৮), এ কে আজাদ (৩৫), মো. রেজাউল (২২), মো. তাজুল ইসলাম (৩১), মো. শাহাবুদ্দিন খাঁন (২৮), আব্দুস ছাত্তার (৩৭), মো. মাসুম বিল্লা (২৯), মো. টিটু মিয়া (২৮) ও মো. আতিকুর রহমান (২৮)।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ঘর দেয়ার কথা বলে প্রতারণা, একজনের কারাদণ্ড
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, মিরপুর এলাকার বেশকিছু ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৪ রাজধানীর মিরপুর মডেল থানাধীন ১১/এ, রোড নং-৬, প্লট-৪, নান্নু সুপার মাকের্টে অভিযান চালিয়ে ‘কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের অফিস থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত ১৭ টি মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাব বই, ২৬ টি চেক বই, দুটি ডিপোজিট বই, তিনটি সীল, ১২০ টি ডিপিএস বই, একটি রেজিস্ট্রার বই, একটি নোটবুক, একটি স্যালারি শিট, ৩০ টি জীবন-বৃত্তান্ত, পাঁচটি ক্যালেন্ডার, আট পাতা ডিপিএস এর মাসিক হিসাব বিবরণী, তিনটি পাসপোর্ট, একটি ডিভিআর মেশিন, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ কপি ২৮ পাতা, একটি ব্যানার ও নগদ চার লাখ ২২ হাজার টাকা জব্দ করে।
প্রতারক চক্রের মাঠ পর্যায়ের কর্মী ও সদস্য রয়েছে। তারা রাজধানীর মিরপুরস্থ বিভিন্ন বস্তি এলাকার গার্মেন্টসকর্মী, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, অটোচালক, সবজি ব্যবসায়ী, ফল ব্যবসায়ী, গৃহকর্মী ও নিম্নআয়ের মানুষদের টার্গেট করে স্বল্প সময়ে মাসিক মেয়াদ শেষে অধিক মুনাফা লাভের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কোম্পানী’তে বিনিয়োগ ও ডিপিএস করতে উদ্বুদ্ধ করত। ভিকটিমদের প্রলুব্ধ করে তাদের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে নানান কৌশলে প্রতারক চক্রের অফিস কার্যালয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হতো। এরপর তাদেরকে প্রতি গ্রাহক ও টার্গেট সংগ্রহের জন্য নির্দিষ্ট অংকের টাকা দেয়া হতো।
গ্রেপ্তার শাকিল আহম্মেদ ও চাঁন মিয়া ভুক্তভোগীদের বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফা দেয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে কর্ণফুলী মাল্টিপারপাসে বিনিয়োগ ও ডিপিএস করতে আগ্রহী করত।
আরও পড়ুন: ফেসবুকে চাকরির লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণা: গ্রেপ্তার ৩
‘কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ এর মালিক ও মূল অভিযুক্ত জসিম উদ্দিন পলাতক। তার নিজ জেলা মুন্সিগঞ্জ। সে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স পাশ করে। তার দুইজন স্ত্রী ও দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। আগে একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে রিপ্রেজেন্টিটিভ হিসেবে কর্মরত ছিল। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে সে অল্প সময়ে অধিক মুনাফা লাভের আশায় এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধন লাভ করে ২০০৬ সালে। ২০১৩ সালে সমিতিটির পূনর্নিবন্ধন হয়।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-২০১৯ সালের তাদের মোট সদস্য সংখ্যা ৫৩৭ জন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ২৫-৩০ হাজার সদস্য গ্রাহক সংগ্রহ করেছে। সে কোম্পানিতে নতুন সদস্য আনার লক্ষ্যে পুরাতন সদস্যদের চাপ দিতো ও তাদের মুনাফার লোভ দেখাতো।
র্যাব-৪ এর সিও আরও বলেন, জসিম অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির, অধিকাংশ সময়েই সমিতির অফিসে আসত না। সমিতির ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা উত্তোলন করে অন্যত্র স্থানান্তর বা জমি ও ফ্ল্যাট কিনে টাকা লেয়ারিং করত।
গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের মালিকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে প্রতারণা মামলা
মূল অভিযুক্ত জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, অভিযানের পর থেকে জসিম উদ্দিন পলাতক।
মাগুরায় ভিজিএফের চাল আত্মসাত: ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলায় ভিজিএফের চাল আত্মসাত ও প্রতারণার অভিযোগে নহাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলী মিয়াসহ তিনজনের নামে মহম্মদপুর থানায় মামলা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. লাল্টু মিয়া বাদী হয়ে মহম্মদপুর থানায় মামলাটি করেন।
মামলার অপর দুই আসামি হলেন নহাটা বাজারের চালের ব্যবসায়ী আনন্দ কুমার দে ও তাঁর ভাই সমীর কুমার দে।এদিকে একই অভিযোগে নহাটা ইউপির সচিব আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে মঞ্জুর রহমান নামে অপর এক চাল ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে ৯০০ কেজি ভিজিএফের চালসহ আটক ১
থানা-পুলিশ ও ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকার নহাটা ইউনিয়নে এক হাজার ৬২৭ জন দুস্থ, অসহায় ব্যক্তির জন্য ১০ কেজি করে ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দেয়। কিন্তু ওই চাল তাঁদের মধ্যে বিতরণ না করে স্থানীয় দুই ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ ওঠে ইউপির চেয়ারম্যান আলী মিয়ার বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে গত রবিবার বেলা ১১টার দিকে ইউএনও মো. শাহিন হোসেন নহাটা গ্রামে চাল ব্যবসায়ী আনন্দ কুমার দে ও তাঁর ভাই সমীর কুমার দের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ভিজিএফের ২২ বস্তা চাল (১ হাজার ১০০ কেজি) উদ্ধার করেন।
এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নহাটা বাজারের আরেক চাল ব্যবসায়ী মঞ্জুর রহমানের গুদামে অভিযান চালিয়ে ভিজিএফের ২৭ বস্তা চাল উদ্ধার করেন ইউএনও মো. শাহিন হোসেন। এ সময় মঞ্জুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মহম্মদপুর থানায় মামলা করেন নহাটা ইউপির সচিব আলমগীর হোসেন।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে ভিজিএফের ২৯ বস্তা চাল জব্দ
তবে চাল আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান আলী মিয়া বলেন, ‘মেম্বারদের (ইউপি সদস্য) উপস্থিতিতে ৩২২ বস্তা চাল এক হাজার ৬২৭ জন দুস্থ লোকের মধ্যে তিন দিন ধরে বিতরণ করেছি। মাস্টার রোলে সদস্যদের স্বাক্ষর আছে। ভিজিএফের চালে গন্ধ থাকে। তাই গরিব মানুষ ওই চাল খেতে চান না, ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেন। উদ্ধার হওয়া চালের সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ইউএনও সাহেব আমার কাছে ভিজিএফের ৩০০টি কার্ড দাবি করেন। কিন্তু তালিকা চূড়ান্ত হওয়ায় তাঁকে কোনো কার্ড দিতে পারিনি। তাই আমার ওপর তাঁর রাগ ছিল।’
কার্ড চাওয়ার কথা স্বীকার করে ইউএনও মো. শাহিন হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকেরা আমার কাছে এসেছিলেন। তাঁরা কিছু কার্ড চেয়েছিলেন। তাঁরা রাজনীতি করেন। এ জন্য তাঁদের কার্ডের দরকার হয়। আমি চেয়ারম্যানকে বলেছিলাম। কিন্তু তিনি তা দিতে পারেননি। এর সঙ্গে ভিজিএফের ওই চাল উদ্ধার বা মামলার কোনো সম্পর্ক নেই।’
আরও পড়ুন: চালের মূল্য সহনীয় পরিস্থিতিতে রয়েছে, দাবি খাদ্যমন্ত্রীর
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরীকুল ইসলাম বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে করা মামলাটি রেকর্ড করার পর দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠিয়ে দিয়েছি। কমিশন মামলা তদন্ত করবে।’
ফেসবুকে চাকরির লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণা: গ্রেপ্তার ৩
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চাকরির লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জে দুটি প্রতারণামূলক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও এমডিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা এ তথ্য জানান।
এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানায় আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
এর আগে গত মঙ্গলবার সিদ্ধিরগঞ্জের সাহেবপাড়া এলাকায় প্রতারণামূলক প্রতিষ্ঠান এন.আর.এস ফোর্স সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেডের অফিসে অভিযান পরিচালনা করে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম (৩১) এবং এমডি মো. সাইফুল ইসলামকে (২৮) প্রতারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৭০টি ভিজিটিং কার্ড, ২০টি চাকরি প্রত্যাশীদের ভর্তি ফরম, একটি সীল, অফিস শর্তাবলীর ২০টি অঙ্গীকারনামা, তিন জোড়া সিকিউরিটি ইউনিফর্ম ও দুটি আয়-ব্যয়ের রেজিস্টার জব্দ করা হয়। পাশাপাশি চাকরি প্রত্যাশী আটজন ভুক্তভোগীকেও উদ্ধার করা হয়।
এন.আর.এস ফোর্স সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও এমডি’র কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে একই দিনে র্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন চাষাঢ়া তোলারাম কলেজ রোড এলাকায় অপর একটি প্রতারণামূলক প্রতিষ্ঠান এম.আর.এম ফোর্সেস সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেডের অফিসে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় প্রতারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা অবস্থায় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মো. রায়হানকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একটি সীল, ২০টি চাকরি প্রত্যাশীদের স্বহস্তে পূরণ করা ভর্তি ফরম, দুটি এটিএম কার্ড, চারটি টাকার রশিদ ও তিনটি আয়-ব্যয়ের রেজিস্টার জব্দ করা হয়।
জানা যায়, গত ছয় মাসে এ প্রতিষ্ঠানটি ১২ শতাধিক মানুষের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
এদিকে রিয়াজুল, স্মৃতি আক্তার, রাব্বি, রাবেয়াসহ একাধিক ভুক্তভোগী জানায়, তারা ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেখে চাকরির জন্য গেলে প্রথমে তাদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ এক হাজার ৫০ টাকা রাখে। পরবর্তীতে বিভিন্ন ধাপে সাড়ে সাত হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিলেও চাকরি দেয়নি।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের মালিকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে প্রতারণা মামলা
নেত্রকোণায় চাকরি দেয়ার নামে ‘প্রতারণা’, গ্রেপ্তার ৩
চট্টগ্রামে প্রতারণার অভিযোগে গাড়ি আমদানিকারক গ্রেপ্তার
ই-অরেঞ্জের মালিকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে প্রতারণা মামলা
প্রতারণার আভিযোগে এবার চট্টগ্রামে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের মালিকসহ সাত জনের নামে মামলা করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হোসেন মোহাম্মদ রেজার আদালতে নুরুল আবছার পারভেজ নামে এক গ্রাহক মামলাটি করেছেন।
মামলায় আসামিরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা শেখ সোহেল রানা, চিফ অপারেটিং অফিসার আমান উল্লাহ, বীথি আক্তার, জায়েদুল ফিরোজ ও ই-অরেঞ্জের সাবেক চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) নাজমুল আলম রাসেল।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ, পুলিশের লাঠিচার্জ
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদীর আইনজীবি গোলাম মাওলা মুরাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ই-অরেঞ্জ সারাদেশে লাখ লাখ গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমরা চট্টগ্রামের প্রতারিত গ্রাহকদের টাকা ফেরত চেয়ে আদালতে মামলা করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও কয়েকদিন আগে প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন এবং প্রতারিতদের অর্থ ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আশা করি, আমরা ন্যায়বিচার পাবো।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ২৭ মে এর পর থেকে বিভিন্ন সময় পণ্য ক্রয় করার জন্য ই-অরেঞ্জকে অর্থ প্রদান করেন গ্রাহক নুরুল আবছার পারভেজ। নির্দিষ্ট সময়ের পরও এমনকি এখন পর্যন্ত গ্রাহককে কোনও পণ্য সরবরাহ করেনি। অর্ডার নেয়ার পর থেকে ই-অরেঞ্জ কর্তৃপক্ষ ফেসবুকে নোটিশের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহের আশ্বাস দেয়, কিন্তু তারা পণ্য সরবরাহ না করে দেশে প্রায় এক লাখ গ্রাহকের ১১শ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। আত্মসাৎ করা এ টাকার মধ্যে চট্টগ্রামের নুরুল আবছার পারভেজ, মোর্শেদ সিকদার ও মাহমুদুল হাসান খান নামের তিনজন ব্যবসায়ীর প্রায় সাড়ে ১১ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়াসহ ৩ জন কারাগারে
একই অভিযাগে এর আগে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত ও কুমিল্লার আদালতেও সোনিয়া মেহজাবিন এবং মাসুকুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে ই-অরেঞ্জের প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, কর্মকর্তা আমান উল্লাহ ও সাবেক কর্মকর্তা নাজমুল আলম রাসেল অন্য এক প্রতারণা মামলায় ঢাকা কেন্দ্রিয় কারাগারে আটক আছেন।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের মালিকসহ তিনজন ৫ দিনের রিমান্ডে
নেত্রকোণায় চাকরি দেয়ার নামে ‘প্রতারণা’, গ্রেপ্তার ৩
নেত্রকোণায় শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে তিন প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সকালে পৌর শহরের অজহর রোড এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
তারা হলেন, ঢাকার হাজারীবাগের রায়ের বাজার এলাকার মৃত ইমদাদুল হকের ছেলে রেজাউল হক টিটু (৪৫), গাজীপুরের শ্রীপুরের গলধাপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল হেকিমের ছেলে মো. আবুল কালাম আজাদ (৪৯) ও নেত্রকোণার কাটলী এলাকার আ. হেকিমের ছেলে আবু সায়েম (৩০)।
আরও পড়ুন: আমগাছের মগডালে আটকে থাকা যুবককে উদ্ধার
বিকালে নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাখের আহম্মেদ জানান , নেত্রকোণা শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয়ার কথা বলে প্রলোভন দেখায় প্রতারকরা। পরে নেত্রকোণা জেলার বিভিন্ন এলাকার সাত জনের কাছ থেকে মোট ৪৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা কৌশলে হাতিয়ে নেয়।
আরও পড়ুন: ৯৯৯ এ কল: কথিত ছিনতাইকারী দম্পতি আটক
পরে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে নিয়োগপত্র আসলে তাদের সন্দেহ হয়। বৃহস্পতিবার বিকালে বাকি টাকা নেয়ার জন্য নেত্রকোণায় আসলে প্রতারকদের আটক করে তারা এবং টাকা ফেরত দেয়ার জন্য চাপ দেয়। পরে মোবাইলে ২ লাখ টাকা ফেরত দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ তদন্তের পর শুক্রবার সকালে তাদের গ্রেপ্তার দেখায়।
আরও পড়ুন: শিশু সন্তানকে গলা কেটে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা, আটক মা
এ ব্যাপারে দুপুরে নেত্রকোণা সদর থানার উলুয়াটি গ্রামের মো. নাজমুল হাসান খান বাদী হয়ে মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন।
ধামাকা শপিংয়ের কোন লাইসেন্স ও একাউন্ট ছিল না: র্যাব
ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ‘ধামাকা শপিং’ কোন ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে লেনদেন করতো বলে র্যাব জানিয়েছে।
বুধবার বিকালে র্যাবের কারওয়ান বাজার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘ধামাকা শপিংয়ের কোন ট্রেড লাইসেন্স নেই, তারা কৌশলে ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের একাউন্টের মাধ্যমে ব্যবসায়িক লেনদেন করেছে। এখন পর্যন্ত সেখানে প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছ।’
পড়ুন: জালিয়াতির অভিযোগে ‘ধামাকা শপিং’এর সিওও গ্রেপ্তার
এর আগে প্রতারণার অভিযোগ রাজধানীর তেজগাঁও এলাকা থেকে ধামাকা শপিংয়ের চিফ অপারেটিং অফিসারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
তারা হলেন ধামাকার সিওও সিরাজুল ইসলাম রানা (৩৪), মোবাইল ফ্যাশন ক্যাটাগরির হেড ইমতিয়াজ হাসান সবুজ (৩১) এবং কোম্পানির হেড ইলেকট্রনিক্স ইব্রাহিম স্বপন (৩৩)।
এর আগে ২৩ সেপ্টেম্বর একজন গ্রাহকের অভিযোগে গাজীপুরের টঙ্গী পশ্চিম থানায় এই ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও আত্মসাতের অভিযোগে একটি মামলা করা হয়েছিল।
পড়ুন: ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ চেয়ে হাইকোর্টে রিট
ই-কমার্স বন্ধ নয়, শৃঙ্খলা আনতে রেগুলেটরি অথরিটি হচ্ছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণা, অর্থ আত্মসাত ও অর্থপাচার বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়েছে। রিটে তদন্তের মাধ্যমে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অর্থ ফেরতের পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন এবং ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের দুজন গ্রাহকের পক্ষে জনস্বার্থে রিটটি করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার রিটটি দাখিল করেন।
আরও পড়ুন: ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ চেয়ে হাইকোর্টে রিট
রিটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যানসহ ১৮ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার পল্লব। তিনি আরও জানান, মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি, ব্যাংক খাতে অনলাইন পেমেন্টের সুবিধা, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ অবকাঠামোগত সুবিধা বৃদ্ধির সুযোগে ব্যাঙের ছাতার মতো ই-কমার্সভিত্তিক অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। গত কয়েক বছর কিছু প্রতিষ্ঠান সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কার্যকর নজরদারির অভাবের সুযোগে বিভিন্ন অনৈতিক অফার, ডিসকাউন্ট নামে গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাত করেছে এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় তদন্তসহ গ্রাহকের স্বার্থরক্ষায় অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবিতে রিট করা হয়েছে।
রিটে উল্লেখ করা হয়, ইভ্যালি, ধামাকা, আলেশা মার্ট, কিউকম, দালাল, ই-অরেঞ্জ, আলাদিনের প্রদীপ, দারাজ প্রতিষ্ঠার মাত্র দু-এক বছরের মধ্যে বিভিন্ন অফারের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা মূলত মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতিতে এ অর্থ সংগ্রহ করে। বিভিন্ন পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী এসব কোম্পানি বিপুল অর্থ ইতোমধ্যে বিদেশে পাচার করেছে।
আরও পড়ুন: ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে: ডিএমপি
ই-ওয়ালেট, গিফট কার্ডসহ আরও অন্যান্য অ-অনুমোদিত পদ্ধতিতে লেনদেন করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে লাখ লাখ গ্রাহককে সর্বস্বান্ত করেছে। সরকারি দপ্তরগুলোর নাকের ডগায় এসব অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত দেশের প্রচলিত আইন ভঙ্গ করেছে। কিন্তু তারা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। বছরের পর বছর নোটিশগ্রহীতাদের কার্যকর নজরদারির অভাবে এসব কোম্পানি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ সরকারি দপ্তরগুলোর তাদের সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগে গাফিলতি ও ব্যর্থতার ফলে বাংলাদেশের লাখ লাখ গ্রাহক যাদের বেশিরভাগই তরুণ আজ সর্বস্বান্ত। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর যে সম্ভাবনা সেটিও আজ প্রশ্নবিদ্ধ। সংশ্লিষ্টরা কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারেন না।
রিটে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির সমন্বয়ে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে যাদের গাফিলতির কারণে লাখ লাখ গ্রাহক সর্বস্বান্ত হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা, দুদকের মাধ্যমে এ পর্যন্ত এসব কোম্পানির মাধ্যমে পাচার করা অর্থের পরিমাণ বের করে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, বাংলাদেশ ব্যাংককে এসব কোম্পানিতে কত টাকা লেনদেন হয়েছে এবং গ্রাহকরা মোট কত টাকা দিয়েছে তা চিহ্নিত করা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ পর্যন্ত কতগুলো প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দিয়েছে এবং তারা কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, বাংলাদেশে প্রতিযোগিতা কমিশনকে প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২ অনুযায়ী, ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পূর্ণ দায়িত্ব নেয়াসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নজরদারি, অসম প্রতিযোগিতা রোধ, জনসচেতনতা তৈরি ইত্যাদি পদক্ষেপ নেয়া, জাতীয় ডিজিটাল বাণিজ্যনীতি, ২০১৮ অনুযায়ী দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে হেল্প ডেস্ক অবিলম্বে চালু করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘ই-কমার্স খাতে সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ জরুরি’
গত সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন এবং ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের দুজন গ্রাহকের পক্ষে ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা, অর্থ আত্মসাত ও অর্থপাচারের বিষয়টি উল্লেখ করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে জনস্বার্থে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। ওই নোটিশের পরও সরকারের তরফ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না নেয়ায় এই রিট করা হয়।
ফের রিমান্ডে ইভ্যালির সিইও
ঢাকার একটি আদালত মঙ্গলবার ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেলকে ধানমন্ডি মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় এক দিনের রিমান্ডে দিয়েছেন।
গুলশান থানায় দায়ের করা একটি মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করলে অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম হাসিবুল হক এই আদেশ দেন।
আদালত তাঁর স্ত্রী ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে তিন দিনের রিমান্ডের মেয়াদ শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইভ্যালির চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা
পুলিশ দুজনকে আদালতে হাজির করে এবং মামলায় প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ড চায়।
এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেল এবং তাঁর স্ত্রী শামীমা নাসরিনসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত ও প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেন পল্টন এলাকার মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম।
আসামিদের মধ্যে আছেন, ইভ্যালির ভাইস প্রেসিডেন্ট আকাশ, সিনিয়র অ্যাকাউন্টস ম্যানেজার তানভীর আলম, ম্যানেজার জাহেদুল ইসলাম, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ জাওয়াদুল হক চৌধুরী।
আরও পড়ুন: ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে: ডিএমপি
উল্লেখ্য, এর আগে শামীমা এবং কোম্পানির কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত ও প্রতারণার অভিযোগ এনে ইভ্যালির গ্রাহক আরিফ বাকের রাসেল গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর এই দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক অপরাধ তদন্ত শাখা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ২ আগস্ট একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সাধারণ চিঠির মাধ্যমে ইভ্যালির শীর্ষ নির্বাহীদের পরিচালিত সমস্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত করার নির্দেশ দেয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা অধিদপ্তরও গ্রাহকদের কাছ থেকে ইভ্যালির দ্বারা ‘প্রতারণা’র অভিযোগ পেয়েছে।
আরও পড়ুন: ইভ্যালির সিইও ও চেয়ারম্যান ৩ দিনের রিমান্ডে
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, ইভ্যালির বিরুদ্ধে একটি বড় অভিযোগ হচ্ছে, তারা ভোক্তাদের প্রতিষ্ঠানের ই-ওয়ালেটে টাকা জমা দিতে বাধ্য করেছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
চট্টগ্রামে প্রতারণার অভিযোগে গাড়ি আমদানিকারক গ্রেপ্তার
গাড়ি বিক্রির নামে প্রতারণার মাধ্যমে ২৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও চেক প্রতারণা মামলায় নগরীর আগ্রাবাদ এলাকা থেকে আরিফুর রহমান সিদ্দিকী নামে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে নগরীর শেখ মুজিব রোড, তেজারত ভবনের ৪র্থ তলার একটি অফিস থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।
গ্রেপ্তার আরিফুর রহমান রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এনএইচ এন্টারপ্রাইজ এর কর্ণধার এবং পটিয়ার জঙ্গল খাইন ইউনিয়নের আলহাজ্ব মাহাবুবুর রহমানের ছেলে।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া।
মামলার বাদী ব্যবসায়ী নেজাম উদ্দিন বলেন, পারিবারিক কাজে ব্যবহারের জন্য একটি গাড়ি ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিলে আমার পূর্ব পরিচিত ও প্রতিবেশি আসামি আরিফুর রহমানের (যিনি নিজেকে রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানীকারক ও গাড়ি বিক্রেতা হিসেবে পরিচয় দেন) সাথে একটি টয়োটা এলিয়ন কার মডেল-২০১৬ কেনার জন্য গাড়ির মূল্য বাবদ ২৭ লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হন এবং ২০১৯ সালের ১১ জুন নগদ ৭ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। একই দিন ইস্টার্ন ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে আমার স্ত্রীর হিসেব থেকে ২০ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও তিনি গাড়ি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আমার ২৭ লাখ টাকা ফেরত দিবে বলে জানায়। সে অনুযায়ী তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এনএইচ এন্টারপ্রাইজ নামে তার স্বাক্ষরিত উত্তরা ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার (হিসাব নং ০০১২২০০২১৬৬১৩) ২০ লাখ টাকার চেক দেন ২০ সালের২০ আগস্ট। অবশিষ্ট ৭ লাখ টাকা পরে দেবে বলে জানায়। কিন্ত তার দেয়া চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে তা ডিসঅনার হয়।
আরও পড়ুন: প্রতারণার অভিযোগে এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
তিনি জানান, এনিয়ে অনেক দেন দরবার হলেও প্রতরক আরিফুর রহমান আমার টাকা ফেরত না দিয়ে আত্মগোপন করে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করা হলেও সে টাকা ফেরত দেয়নি। পরে বাধ্য হয়ে তার বিরুদ্ধে আমি আদালতে মামলা করলে বদন্ত শেষে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। আসামি আরিফুর রহমান ব্যবসার আড়ালে একজন প্রতারক। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার আরও মামলা রয়েছে।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া বলেন, ‘আদালতের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মূলে চেক প্রতারণা মামলার পলাতক আসামি অরিফুর রহমান সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে করোনা সার্টিফিকেট প্রতারণা চক্রের তিন সদস্য গ্রেপ্তার
গ্রাহক প্রতারণা: স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বোনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা