জাতিসংঘ
‘আমি ভেবেছিলাম, সবাই আমাকে ভুলে গেছে’: কর্নেল সুফিউল আনাম
জাতিসংঘের কর্মকর্তা বাংলাদেশি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সুফিউল আনামকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইয়েমেনে আল-কায়েদা দ্বারা অপহরণ করেছিল। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) -এর সহায়তায় উদ্ধার হওয়ার পর আজ ঢাকায় ফিরে এসেছেন তিনি।
বুধবার সুফিউল আনামকে বহনকারী এমিরেটসের একটি ফ্লাইট সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
সুফিউল তার আগমনের পর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে তার বন্দিত্বের হতাশাজনক বর্ণনা দেন। তাকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
সুফিউল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে এনএসআই কর্মকর্তারা আমাকে উদ্ধার করে।’ এজন্য ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স (এনএসআই) কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
জাতিসংঘের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম সবাই আমাকে ভুলে গেছে। কিন্তু যখন আমি এনএসআই সদস্যদের সঙ্গে দেখা করি, তখন আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে আমাকে ভুলে যাওয়া হয়নি।’
আরও পড়ুন: উত্তর নাইজেরিয়ায় বন্দুকধারীর হামলায় ১৫ জন নিহত, ৫ ত্রাণকর্মীকে অপহরণ
ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন,‘সন্ত্রাসীদের অপহরণ করার পর জীবিত বাড়ি ফিরতে পারব তা ভাবিনি। গত ১৮ মাস ধরে আমি খুব বিপজ্জনক পরিবেশে ছিলাম। আমি ভেবেছিলাম যে কোনো মুহূর্তে সন্ত্রাসীরা আমাকে মেরে ফেলবে।’
সংবাদ সম্মেলনে সুফিউল তাকে উদ্ধারকারী এনএসআই কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্বের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি তাদের পেশাদারিত্ব এবং তাদের দায়িত্ববোধ ভুলে যাব না।’
কীভাবে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল সে বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সুফিউল বলেন, ‘১৮ মাস আগে যখন আমি পেশাগত দায়িত্ব থেকে ফিরে আসছিলাম তখন আমাকে অপহরণ করা হয়... বন্দিদশায় প্রতিদিনই মৃত্যুর ভয় দেখা দেয়। যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।’
আরও পড়ুন: ইয়েমেনে কারাভোগ শেষে ফিরছেন ৫ বাংলাদেশি
পাকিস্তানের ইমরান খানের বিরুদ্ধে যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়া মানার আহ্বান জাতিসংঘ প্রধানের
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি (পিটিআই) -এর চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া এবং আইনের শাসনকে মেনে চলার জন্য পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
সোমবার জাতিসংঘ প্রধান এই আহ্বান জানান।
গুতেরেসের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক বলেছেন, ‘ইসলামাবাদে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পরে যে চলমান বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছে তার প্রতি মহাসচিব নজর রাখছেন এবং তিনি সব পক্ষকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: ইমরান খানকে উচ্চ-নিরাপত্তা সম্পন্ন কারাগারে স্থানান্তর
হক নিয়মিত একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তিনি (গুতেরেস) শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।’ ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে উন্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আইনের শাসনকে মেনে চলার জন্য মহাসচিব কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন।’
শনিবার (৫ আগস্ট) স্থানীয় আদালত তাকে আর্থিক সম্পদ লুকানোর জন্য তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যা বিক্ষোভের সূত্রপাত করেছিল।
আরও পড়ুন: কারাগারে থেকেও কলকাঠি নাড়তে পারেন ইমরান
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন
নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের বড় ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল-এর ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।
শনিবার (৫ আগস্ট) অনুষ্ঠানের শুরুতেই বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত জাতির পিতার পরিবারের সকল শহীদ সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
এরপর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং শেখ কামালের জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানটিতে মূল বক্তব্য প্রদান করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত।
তিনি বলেন, ‘শেখ কামাল ছিলেন একজন ক্ষণজন্মা কিংবদন্তী। মাত্র ২৬ বছরের জীবনে তিনি দেশ ও দেশের মানুষের জন্য অসংখ্য অবদান রেখে গেছেন। একজন নিবেদিত, সংগ্রামী ও আদর্শবাদী রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা পালন করেন শহীদ শেখ কামাল।’
আব্দুল মুহিত বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সরাসরি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের উন্নয়নে নিরলস কাজ করে গেছেন।
আরও পড়ুন: শেখ কামাল অমায়িক ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি ছিলেন আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠা, ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীন বাংলাদেশে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন আন্দোলনের একজন পুরোধা। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠী।
স্থায়ী প্রতিনিধি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যে অসামান্য অগ্রগতি সাধন করেছে, তার মধ্য দিয়েই বাস্তবায়িত হচ্ছে স্বপ্নদর্শী তরুণ শেখ কামালের স্বপ্ন।
অবশেষে শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জীবন ও কর্মকে অনুকরণ করে দেশের জন্য কাজ করার জন্য বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রদূত মুহিত তার বক্তব্য শেষ করেন।
উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে মিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বক্তব্য রাখেন। শেখ কামালের আদর্শ ধারণ করে দেশের যুবসমাজ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশকে আরও উচ্চতর আসনে তুলে ধরবে মর্মে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তারা।
আলোচনাপর্ব শেষে কেক কেটে শেখ কামালের জন্মদিন পালন করার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: ১০ ব্যক্তি ও ২ সংগঠনকে শেখ কামাল ক্রীড়া পুরস্কার দিলেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ কামাল আন্তঃস্কুল ও মাদরাসা অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতা-২০২৩: ঢাকায় চূড়ান্ত পর্ব শুরু আজ
বাংলাদেশে নির্বাচনের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর
বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল, তাদের সমর্থক ও নিরাপত্তা বাহিনীকে একটি ‘শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করে অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার জেরেমি লরেন্স বলেন, ‘আগামী বছরের নির্বাচনের জন্য যেসব দল প্রচার চালাচ্ছে তাদের সবার জন্য নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আমরা আহ্বান জানাই। যাতে বহুদলীয় রাজনীতি ও ভিন্ন মত প্রকাশের চর্চা বজায় থাকে। একই সঙ্গে সবার মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতাকে শ্রদ্ধা করতে হবে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের এই মুখপাত্র বলেন, বিরোধী দলের বেশ কয়েকটি সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, সাধারণ পোশাকধারী কিছুসংখ্যক মানুষের পাশাপাশি পুলিশকে বিক্ষোভকারীদের মারতে হাতুড়ি, লাঠি, ব্যাট ও লোহার রড ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে 'বিশ্বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক' নির্বাচনের কথা বলেছে জাতিসংঘ
এই মুখপাত্র বলেন, ‘বিরোধী দলের অনেক সমর্থকদের পাশাপাশি কিছু পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। বিরোধী দলের সিনিয়র নেতাদের প্রকাশ্য দিবালোকে মারধর করা হয়েছে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মীদের পরিচয় দিয়ে তাদের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে।’
জেরেমি লরেন্স বলেছেন, সমাবেশের আগে এবং চলাকালীন শত শত বিরোধী নেতা ও সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই তাদের মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে এবং জনগণকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার প্রয়োগ করার অনুমতি দিতে হবে। একই সঙ্গে তৃতীয় পক্ষের দ্বারা সেই অধিকারগুলোর প্রয়োগকে দমন বা সীমিত করার প্রচেষ্টা থেকে রক্ষার জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, আমরা পুলিশকে তা নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করছি, খুবই প্রয়োজন হলেই তবেই বল প্রয়োগ করার জন্য। যদি তা করা হয় তাহলে বৈধতা, সংযম ও সমানুপাতিকতার নীতিগুলোর সঙ্গে সম্পূর্ণ সম্মতি জানানো হবে।
জাতিসংঘের এই মুখপাত্র বলেন, ‘অত্যধিক বলপ্রয়োগের বিষয়ে অবিলম্বে তদন্ত করা উচিত এবং দায়ীদের জবাবদিহি করতে হবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সকল পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ারের
সহিংসতা ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে: জাতিসংঘ
বাংলাদেশে 'বিশ্বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক' নির্বাচনের কথা বলেছে জাতিসংঘ
জাতিসংঘ বাংলাদেশে 'শান্তিপূর্ণ, বিশ্বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক' নির্বাচনকে উৎসাহিত করেছে।
৩১ জুলাই জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিবের উপ-মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, ‘নির্বাচন প্রসঙ্গে জাতিসংঘ বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ, বিশ্বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনকে উৎসাহিত করে।’
রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি বলেন যে জাতিসংঘ শরণার্থীদের প্রতি বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের উদারতার প্রশংসা করে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের উপ-মুখপাত্র বলেন, ‘এবং আমরা আশা করি এটি অব্যাহত থাকবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সব পক্ষকে মৌলিক স্বাধীনতা ও আইনের শাসনকে সম্মান করার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
তিনি আরও বলেন, ‘মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যপদ নিয়ে মন্তব্য করা আমার কাজ নয়। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া মূলত সদস্য দেশগুলোর কাজ।’
সাংবাদিক লাভলু আনসার বলেন, ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তা সত্ত্বেও তিনি বলেন যে তথাকথিত নাগরিক সমাজের কিছু মানুষ, মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা কিছু সংগঠন এমনকি মার্কিন কংগ্রেসের কিছু সদস্যও জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন থেকে বাংলাদেশকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন।
তথাকথিত নাগরিক সমাজ ও মার্কিন কংগ্রেসের কিছু সদস্য বাংলাদেশের আসন্ন সংসদ নির্বাচন জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন ওই সাংবাদিক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণ দল পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র: পিটার হাস
বাংলাদেশের সকল পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ারের
জাতিসংঘের ফ্রিডম অব অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড পিসফুল অ্যাসেম্বলি বিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ক্লেমেন্ট নাইলেতসোসি ভউল বাংলাদেশের সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘আমি কর্তৃপক্ষকে তাদের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যে প্রতিবাদ বা সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করা এবং অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকা।’
তিনি বলেন, ‘ভিন্নমতাবলম্বীদের কণ্ঠকে সম্মান করা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মূল চাবিকাঠি।’
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের এপ্রিল মাস থেকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও অ্যাসোসিয়েশনের স্বাধীনতার অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ক্লেমেন্ট নাইলেতসোসি ভউল।
আরও পড়ুন: সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই খাদ্য ব্যবস্থাপনা চালু করুন: জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী
জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে রোমে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
মানবপাচার মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার লঙ্ঘন: আন্তোনিও গুতেরেস
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মানবপাচার হলো মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, সংঘাত ও অস্থিতিশীলতার সময়ে দুর্বলতার সুযোগে মানুষ এর শিকারে পরিণত হয় এবং তখন এর মাত্রাও বৃদ্ধি পায়।
রবিবার (৩০ জুলাই) বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে জাতিসংঘ মহাসচিব এসব কথা বলেন। ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক প্রস্তাবের মাধ্যমে প্রতি বছর ৩০ জুলাই বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবস হিসেবে সারা বিশ্বে পালন করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর থেকে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালিত হয়।
গুতেরেস বলেন, অসমতা বাড়ছে, জলবায়ু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাস্তুচ্যূতির হার যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি। আর এসকল কারণে অনেক বেশি মানুষ মানব পাচারকারীদের শিকারে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
তিনি বলেন, ভুক্তভোগীদের সিংহভাগই নারী ও শিশু। যাদের অনেকেই নৃশংস সহিংসতা, জোরপূর্বক শ্রম এবং ভয়াবহ যৌন নিপীড়ন ও শোষণের শিকার হয়।
তিনি আরও বলেন, তা সত্ত্বেও মানব পাচারকারীরা এখনো মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে। তাদের অপরাধ দমনের বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না। এই বিষয়ে অবশ্যই পরিবর্তন আনতে হবে।
আরও পড়ুন: আসুন গর্ব করে ঘোষণা করি, আমরা নারীবাদী: গুতেরেস
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আমাদের অবশ্যই শনাক্তকরণ ও সুরক্ষায় আরও বিনিয়োগ করতে হবে। মানুষকে পণ্য বানানো অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ব্যবস্থাকে জোরদার করতে হবে এবং ভুক্তভোগীদের জীবন পুনর্গঠনে সহযোগিতা করতে আমাদের অবশ্যই আরও বেশি কিছু করতে হবে।
তিনি বলেন, এবারের এই বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবসে আসুন আমরা মানবপাচারের শিকার ভুক্তভোগীদের শনাক্ত, সুরক্ষা ও সহযোগিতা দিতে এবং পাচারের শিকার কোনো ভুক্তভোগী যেন পেছনে পড়ে না থাকে, তা নিশ্চিতে আমাদের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করি।
তিনি আরও বলেন, আসুন একসঙ্গে আমরা এমন বিশ্ব গড়ে তুলি, যেখানে কাউকে কখনো বেচা-কেনা কিংবা শোষণ করা হয় না।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক নির্যাতনের বিচারের আহ্বান গুতেরেসের
অভিবাসনের বৈশ্বিক চুক্তি ‘পথ দেখাচ্ছে’: গুতেরেস
নেপালকে পায়রা বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহলের সঙ্গে বৈঠকে নবনির্মিত পায়রা বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছেন।
জাতিসংঘ ফুড সিস্টেমস সামিটের এক ফাঁকে এফএও সদর দপ্তরে নবনির্মিত বাংলাদেশ-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কক্ষে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাৎ করেন। সামিটটিতে যোগ দিতে দুই নেতাই রোমে অবস্থান করছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপালকে পায়রা বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দেন।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ইতোমধ্যে নেপালের জন্য চালনা (মোংলা) ও চট্টগ্রাম বন্দর খুলে দিয়েছে। নেপাল নবনির্মিত পায়রা বন্দরও ব্যবহার করতে পারবে।’
আরও পড়ুন: পায়রা বন্দরের আট জাহাজের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এ অঞ্চলে যোগাযোগ বাড়াতে সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলছে।
মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী।
তাকে উদ্ধৃত করে মোমেন বলেন, ‘আপনি আমাদের অঞ্চলের নেতা।’
তিনি বলেন যে নেপালে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের বিশাল সুযোগ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের জন্য নেপাল থেকে ভারতের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রথম ত্রিপক্ষীয় বিদ্যুৎ বাণিজ্য শুরু হওয়ার পর বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষ করে জলবিদ্যুৎ আমদানির পদক্ষেপ নেবে।
দহল উল্লেখ করেন যে বিপুল সংখ্যক নেপালি শিক্ষার্থী বাংলাদেশে পড়াশোনা করছে।
আরও পড়ুন: পায়রা বন্দর অর্থনীতিতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে: প্রতিমন্ত্রী খালিদ
সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই খাদ্য ব্যবস্থাপনা চালু করুন: জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী
বিশ্বের দুই বিলিয়ন মানুষ এখনও খাদ্য নিরাপত্তার বাইরে রয়েছে উল্লেখ করে সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই খাদ্য ব্যবস্থাপনা চালু করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে খাদ্য, সার, জ্বালানি এবং আর্থিক সংকট বিশ্বজুড়ে ক্ষুধা ও অপুষ্টির সমস্যাকে তীব্রতর করেছে। তবে পুষ্টিকর খাদ্য সংগ্রহের অক্ষমতার জন্য কৃষি ও খাদ্যপণ্যের দামই একমাত্র বাধা নয়। ফলে সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই খাদ্য ব্যবস্থাপনার প্রবর্তন প্রয়োজন।’
সোমবার ইতালির রাজধানী রোমে ইউএন ফুড সিস্টেম সামিট+২ স্টকটেকিং মোমেন্ট (ইউএনএফএসএস+২) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘ সাসটেইনেবল ফুড সিস্টেম ফর পিপল, প্লানেট অ্যান্ড প্রসপারিটি: ডাইভার্স পাথওয়ে ইন এ শেয়ার্ড জার্নি।’
এটি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে উদ্বোধন করা হয়।
আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈচিত্র্য আনতে হবে: শিক্ষাবিদদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের প্রায় ৬৯ কোটি মানুষ এখনও অপুষ্টিতে ভুগছে। প্রায় দুই বিলিয়ন খাদ্য নিরাপত্তার আওতায় রয়েছে আর প্রায় তিন বিলিয়ন মানুষ সুষম খাদ্য থেকে বঞ্চিত।
তিনি সারা বিশ্বে টেকসই, নিরাপদ এবং পুষ্টিকর খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পাঁচটি প্রস্তাব রাখেন, যার মধ্যে আধুনিক কৃষিতে বিনিয়োগের জন্য বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংক এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বিস্তৃত করা।
প্রধানমন্ত্রী তার প্রথম প্রস্তাবে বলেন, ‘আধুনিক কৃষিতে বিনিয়োগে বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আর্থিক প্রণোদনা এবং নীতি সহায়তা প্রদান করা প্রয়োজন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব কর্তৃক সূচিত কৃষ্ণ সাগর শস্য চুক্তির কার্যকারিতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি খাদ্য ও সার রপ্তানির
ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ যেকোনো বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
তৃতীয় প্রস্তাবটি রেখে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক 'খাদ্য ব্যাংক' প্রতিষ্ঠা করতে এগিয়ে আসতে হবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তনে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করতে হবে।
চতুর্থ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ন্যানো-টেকনোলজি, বায়ো-ইনফরমেটিক্স এবং উন্নত কৃষি প্রযুক্তি, কৃষি শিক্ষা ও গবেষণায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সবার জন্য সহজলভ্য করতে হবে।
তার পঞ্চম প্রস্তাব করে তিনি বলেন, প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের অপচয় রোধ করতে তরুণদের সম্পৃক্ত করে একটি ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, ‘যদি আমরা সম্মিলিতভাবে প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে আমরা টেকসই বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন করতে পারব।’
আরও পড়ুন: দেশের অফশোর উইন্ড এনার্জিতে বিনিয়োগের প্রস্তাব ডেনমার্কের
বাংলাদেশের খাদ্য খাতের বিষয় তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ২০০৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হয়ে ২ দশমিক ৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি দিয়ে শুরু করে। তারপরে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের জন্য ভর্তুকি প্রদান, ১০ টাকায় কৃষকদের জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, একটি সুশৃঙ্খল সার বিতরণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়।
তিনি বলেন, ‘এর ফলে, আমরা শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতাই অর্জন করিনি, বরং ২০১৩ সালের মধ্যে খাদ্য উদ্বৃত্ত দেশে পরিণত হয়েছি।’
এফএও-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ দশটি খাদ্য উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে একটি।
তিনি বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেড়েছে ৪৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন যা ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ছিল ৩২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন।
তিনি বলেন, ‘এখন ধান ও মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে তৃতীয়, পাট উৎপাদনে দ্বিতীয়, সবজি উৎপাদনে তৃতীয় এবং আলু উৎপাদনে ৬ষ্ঠ।
বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। কিন্তু দেশের প্রায় ৪০ দশমিক ৬ শতাংশ শ্রমশক্তি কৃষিতে নিয়োজিত। জিডিপিতে মৎস্য খাতের অবদান ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ, যেখানে প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান ১ দশমিক ৯০ শতাংশ।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার কৃষি গবেষণা এবং উদ্ভাবনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে…। গত ১৪ বছরে ৬৯০টি উন্নত এবং উচ্চ ফলনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা লবণাক্ততা-সহনশীল ধান উদ্ভাবন করেছেন এবং তারা খরা ও জলাবদ্ধতা-সহনশীল ধান উদ্ভাবনে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।’
আরও পড়ুন: দেশের জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী আরব আমিরাত
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ২০১৩ সালে খাদ্য নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করে এবং ২০১৫ সালে বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ গঠন করে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন সরকারি পর্যায়ে খাদ্যশস্যের মজুদ ক্ষমতা প্রায় ২১ লাখ ৫৯ হাজার মেট্রিক টন। দেশে খাদ্যশস্য মজুদের পরিমাণ ১৬ লাখ টনের বেশি, যা ২০০৭ সালে ছিল ১০ লাখ টন। দেশের ১৯টি দুর্যোগপ্রবণ জেলার অধীনে ৬৩টি উপজেলায় প্রায় ৫ লাখ পারিবারিক খাদ্য গুদাম বিতরণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তার কৃষি উদ্ভাবন ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে আগ্রহ প্রকাশ করছে।
২০টিরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান সহ ১৬০টিরও বেশি দেশ থেকে প্রায় ২ হাজার অংশগ্রহণকারী শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।
শেখ হাসিনা যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন তখন এফএও সদর দপ্তরের পূর্ণাঙ্গ কক্ষ এবং কয়েকটি হলরুমে বিপুল সংখ্যক দর্শক উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কামাল দাহাল, সামোয়া ফিয়ামের প্রধানমন্ত্রী নাওমি মাতাফা, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং এফএও মহাপরিচালক ডক্টর কু ডংইউ।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের ফুড সিস্টেমস সামিটে যোগ দিতে রোমের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ প্রধানমন্ত্রীর
জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে রোমে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
জাতিসংঘের মহাসচিবের আমন্ত্রণে খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে রবিবার (২৩ জুলাই) রোমে পৌঁছেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (২৪ জুলাই) ইতালির রাজধানী রোমে তিন দিনব্যাপী এই শীর্ষ সম্মেলন শুরু হবে।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা কাতার এয়ারওয়েজের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে ঢাকা থেকে যাত্রা করেন।
স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ৫টা ৪০মিনিটে) এটি রোমের ফিউমিসিনো বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
ফ্লাইটটি এর আগে ভোর ৫টা ৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যায়।
ইতালির রোমে খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে ‘সাসটেইনেবল ফুড সিস্টেমস ফর পিপল, প্লানেট অ্যান্ড প্রোসপারেটি: ডাইভার্স পাথওয়েজ ইন আ শেয়ারড জার্নি’- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থাপনা+২ স্টকটেকিং মোমেন্ট (ইউএনএফএসএস+২) শীর্ষ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের ফুড সিস্টেমস সামিটে যোগ দিতে রোমের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ প্রধানমন্ত্রীর
ইতালিতে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন।
তার সঙ্গে থাকা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অন্যদের মধ্যে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এরপর তিনি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে খাদ্য ব্যবস্থা ও জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডের উপর একটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দেবেন।
এফএও মহাপরিচালক কু ডংইউ এবং ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড অব এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্টের (ইফাদ) প্রেসিডেন্ট আলভারো লারিওর সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করবেন।
আরও পড়ুন: দেশের জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী আরব আমিরাত
এরপর প্রধানমন্ত্রী এফএও সদর দপ্তরে বাংলাদেশ-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কক্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং একই দিনে এফএও মহাপরিচালকের রিসেপশনে যোগ দেবেন।
তার সফরে দুই দেশের মধ্যে ‘জ্বালানির ক্ষেত্রে সহযোগিতা’ এবং ‘সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি’ বিষয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া, হাসিনা একটি আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে যোগ দেবেন। এটি ইউরোপে অবস্থানরত ১৫ বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) একটি কমিউনিটি ইভেন্টে যোগ দেবেন।
আগামী বুধবার (২৬ জুলাই) সফর শেষে শেখ হাসিনা রোম ত্যাগ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: দেশের অফশোর উইন্ড এনার্জিতে বিনিয়োগের প্রস্তাব ডেনমার্কের