আইনমন্ত্রী
ন্যায়বিচার ছাড়া মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারেনা: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ন্যায়বিচার ছাড়া মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারেনা।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও গতিশীল বিচার বিভাগের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেখানে শোষিত-বঞ্চিত-নির্যাতিত এবং অসহায় মানুষগুলো স্বল্প খরচে দ্রুত ন্যায়বিচার পাবেন।
মন্ত্রী বলেন, বস্তুত ন্যায়বিচার খাদ্য ও বস্ত্রের মতোই জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য উপাদান। কেননা খাদ্য ছাড়া যেমন জীবন বেঁচে থাকতে পারেনা, বস্ত্র ছাড়া যেমন মানুষ জনসম্মুখে বের হতে পারে না, তেমনি ন্যায়বিচার ছাড়া মানুষ সমাজে শান্তিতে বসবাস করতে পারেনা।
শনিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ/সমপর্যায়ের বিচারকদের জন্য আয়োজিত ১০ম ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের বিচারক নিয়োগে নতুন আইন আসছে: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, ন্যায়বিচারের অনুপস্থিতিতে সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, সামাজিক অস্থিরতা বা অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়। আর সমাজ নিয়েই যেহেতু রাষ্ট্র, তাই অস্থিতিশীল সমাজ মানেই অস্থিতিশীল রাষ্ট্র। এরূপ রাষ্ট্রের সঙ্গে বিদেশি রাষ্ট্রসমূহ বন্ধুত্ব বা সম্পর্ক স্থাপন করতে অনীহা দেখায়, তারা বিনিয়োগ করতে ভয় পায়।এছাড়া পরিণতিতে ওই রাষ্ট্র বিশ্ব সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ও উন্নয়ন বিঘ্নিত হয়।
আইনমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সবসময় তৎপর থেকেছেন। এমনকি পাকিস্তানি শাসন আমলে তিনি যেখানেই সুযোগ পেয়েছেন, সেখানেই আইনের শাসন, ন্যায়বিচার ও সুযোগের সমতা নিশ্চিতকরণের বিষয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরে কথা বলেছেন।
মন্ত্রী বলেন, কোন দেশে সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও শক্তিশালী আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে অপরাধকর্মে জড়িত প্রত্যেক অপরাধীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক এবং এসব বিচার যথাসম্ভব দ্রুতগতিতে হওয়া উচিত।
এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার শুরু থেকেই বিচার বিভাগকে সবধরণের সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার ও সুপ্রীম কোর্ট দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির মাধ্যমে দেশের দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত মামলাজট কমানোর বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
যার সুফল ইতোমধ্যেই জনগণ পেতে শুরু করেছে। প্রায়ই খবর পাওয়া যাচ্ছে দেশের অনেক আদালতেই এখন একক সময়ে মামলা দায়েরের সংখ্যার চেয়ে মামলা নিষ্পত্তির হার বেশি হচ্ছে। যা আমাদেরকে আশান্বিত করছে।
তিনি বিশ্বাস করেন, সরকার ও সুপ্রীম কোর্টের বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি বিজ্ঞ বিচারকদের উদ্ভাবনীমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ, বিচারিক কর্মঘন্টার সঠিক প্রয়োগ, কার্যকর মামলা ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, দক্ষ আদালত ব্যবস্থাপনা এবং সর্বোপরি তাদের সুদক্ষ নেতৃত্বের কার্যকর সমন্বয়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগ মামলার বোঝা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারে। বিচার প্রক্রিয়ায় অংশীজনদের সঙ্গে কার্যকর সমন্বয় সাধনের মাধ্যমেও মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব।
এছাড়া তিনি আশা প্রকাশ করেন, এসব ক্ষেত্রে সকল বিচারক তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।
আইনমন্ত্রী একথাও স্মরণ করিয়ে দেন যে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে একটি মামলার অনেকগুলো পক্ষ তৈরি হয়ে যায়। কোন পক্ষ চায়, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হোক। কোন পক্ষ চায়, মামলা নিষ্পত্তির সময় প্রলম্বিত হোক। কেউ কেউ হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করে আদালতের কালক্ষেপন করে থাকেন।এসব বিষয়কে মাথায় নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। দ্রুত গতিতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।এছাড়া ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার মর্মমূলে রয়েছে নিরপেক্ষতার ধারণা।
আনিসুল হক বলেন, আমরা রাষ্ট্রের যে যে দায়িত্বই পালন করি না কেন, প্রত্যেকের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সব সময় সাধারণ জনগণ বিশেষ করে কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী মানুষের কাছে দায়বদ্ধতার বিষয়টি স্মরণ রাখা উচিত। কেননা লাখ লাখ শ্রমিক ও গার্মেন্টস কর্মীর গা ঘামানো পরিশ্রমের বিনিময়েই আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকা রপ্তানি আয় হয়। এক কোটির বেশি প্রবাসী কর্মীর রেমিটেন্স পাঠানোর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ বাড়ে, গ্রামের কৃষক ভাই-বোনদের রোদ-বৃষ্টিতে মাঠে নেমে ফসল ফলানোর ফলেই আমরা শহরে বসে তা খেতে পারি।আবার তাদের করের টাকায় আমাদের বেতন-ভাতা হয়।
বাস্তবতা হলো সমাজে এসব মানুষই বেশি ভোগান্তির শিকার হন ও শোষিত-বঞ্চিত হন। যদিও জাতির পিতা স্বয়ং কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী মানুষের অধিকার আদায়ে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম করে গেছেন। তাই বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদেরকে যাতে আদালতের বারান্দায় বছরের পর বছর জুতার তলা ক্ষয় করতে না হয়, সে বিষয়ে বিচারকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া তারা যাতে সেবা নিতে এসে কোনভাবে অবজ্ঞা বা হয়রানির স্বীকার না হয়, সে বিষয়ে সজাগ থাকা উচিত।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সাওয়ার ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শেখ আশফাকুর রহমান বক্তৃতা করেন।
আরও পড়ুন: মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের সঙ্কট নিরসন
মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি: আইনমন্ত্রী
ঢাকা, ১৮ জানুয়ারি (ইউএনবি)-আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিরুদ্ধে নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি।
তিনি বলেন, ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কারও সম্পর্কে ভালো কিছু লেখে না। তবে তারা তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে যে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ডোনাল্ড লু বলেছেন যে তারা র্যাবের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতেন, কিন্তু বাংলাদেশের হিসেবে তা করেনি। মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।’
বুধবার তিনি বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মো. হাশিমের সঙ্গে বৈঠকের পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুকে উদ্ধৃত করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা (মার্কিন) দেখেছি র্যাব অনেক ভালো করেছে। আমরাও র্যাবের প্রয়োজনীয়তা বুঝি। যেহেতু মানবাধিকার পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে, তাই আমরা নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করিনি। তিনি (লু) আমাকে খুব স্পষ্টভাবে বলেছেন।’
আরও পড়ুন: চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো শেষ করাই নতুন বছরের চ্যালেঞ্জ: আইনমন্ত্রী
সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেছেন লু।
এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, র্যাবের বিরুদ্ধে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য তিনি লুকে বলেননি কারণ এটি আইনি প্রক্রিয়া মেনেই করতে হবে।
‘আমরা সেই পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করছি’, তিনি যোগ করেন।
এলিট ফোর্সের সংস্কার সম্পর্কে আনিসুল হক বলেন, ‘র্যাব সদস্যরা অপরাধ করলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। সংস্কার প্রক্রিয়া চলমান; এটা সময় লাগে।’
তিনি আরও বলেন, লু’র সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর পলাতক দণ্ডিত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর দাবি জানান।
‘তিনি আমাকে তাদের বিচার বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন। আমি তাকে ফিরিয়ে আনতে দরজায় কড়া নাড়ব,’ বলেন মন্ত্রী।
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার উপায়, অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ এবং শ্রম ও মানবাধিকার বিষয়ে কথা শুনতে শনিবার সন্ধ্যায় লু ঢাকায় আসেন।
ঢাকায় তার সংক্ষিপ্ত অবস্থানের সময়, লু পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়ে আলোচনা করতে আইনমন্ত্রী এবং সুশীল সমাজের নেতারাসহ বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
আরও পড়ুন: যারাই মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে, তাদেরকেই আইনের আওতায় আনা হবে: আইনমন্ত্রী
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনজীবী সমিতির আদালত বর্জন প্রত্যাহার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির আদালত বর্জন কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। রবিবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল থেকে জেলা জজের আদালত ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-১ আদালত ছাড়া সকল আদালতের বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নেন আইনজীবীরা।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠকের পর এ কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতি।
এতে করে বিচারপ্রার্থীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
তারা জানান, এতদিন কোর্ট বন্ধ থাকার কারণে তাদের অর্থ ও সময় উভয় নষ্ট হয়েছে। সেসঙ্গে তাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। তবে আবারও আদালতের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হওয়ায় তাদের আর হতাশ হয়ে ফিরতে হবে না।
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. তানভীর ভুইয়া জানান, আইনজীবীদের তিনটি দাবি মেনে নেয়ায় রবিবার থেকে আইনজীবীরা আদালতের বিচারিক কাজে অংশ নিচ্ছেন। তবে জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারকের বদলির আগ পর্যন্ত তাদের আদালত বর্জন অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া, নাজির মোমিনুল ইসলামকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বদলি করা হবে।
আগামী ২৪ জানুয়ারির মধ্যে ওই দুই বিচারকসহ নাজিরকে অপসারণ করা না হলে সাধারণ সভা থেকে পরবর্তী কর্মসূচি নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২ বিচারকসহ নাজিরের অপসারণ চেয়ে আইনজীবীদের আদালত বর্জন
এ বিষয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল বলেন, আইনজীবীরা আদালতের বিচারিক কাজে অংশ নিচ্ছেন। এতে করে বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে। এছাড়া আদালতের এজলাসগুলোতে বিচারকেরা বিচারকাজ পরিচালনা করছেন।
উল্লেখ্য, গত ১ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ আইনজীবীরা মামলা দাখিল করতে গেলে বিচারক মোহাম্মদ ফারুক মামলা না নিয়ে আইনজীবীদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ করেন আইনজীবীরা।
এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর সমিতির সভা করে আইনজীবীরা ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয়।
এদিকে বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে ৪ জানুয়ারি কর্মবিরতি পালন করেন আদালতের কর্মচারিরা। এ অবস্থায় জেলা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ ও আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণ চেয়ে ৫ জানুয়ারি থেকে পুরো আদালত বর্জনের লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন আইনজীবীরা।
এছাড়া বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও অশালীন স্লোগান দেয়ার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২৪ আইনজীবীকে দু’দফায় তলব করেছেন উচ্চ আদালত।
আরও পড়ুন: আইনমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের সঙ্কট নিরসন
আদালত স্বাধীনভাবে তাদের কাজ করে: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের সঙ্কট নিরসন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে বিচারক ও আইনজীবীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের ঘটনায় রাজধানীতে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মধ্যে বৈঠকে আট দিন পর স্থবিরতা অপসারণ করা হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন যে রবিবার থেকে দুই বিচারপতি ছাড়া বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন তারা। তাদের তিনটি দাবি মেনে নেয়ায় রবিবার থেকে আইনজীবীরা তাদের কর্মকাণ্ডে যোগ দেবেন
তিনি আরও বলেন, জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের অপসারণ না হলে তারা আদালত বয়কট করবেন। এ ছাড়া মোহাম্মদ ফারুকের আদালতের নাজির মমিনুল ইসলামকে অপসারণ করা হবে।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের বিচারক নিয়োগে নতুন আইন আসছে: আইনমন্ত্রী
মফিজুর রহমান জানান যে আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করে শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবেন তারা।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে আইনমন্ত্রীর বাসায় অচলাবস্থা নিয়ে দুই ঘণ্টা বৈঠক হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির ও সাধারণ সম্পাদক আবদুন নুর দুলাল।
গত বছরের ১ ডিসেম্বর আদালতে মামলা করতে আসা আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বিচারক ফারুক। ওই মন্তব্যের প্রতিবাদে গত ২৬ ডিসেম্বর বিচারপতি ফারুকের আদালত বয়কটের ঘোষণা দেন আইনজীবীরা।
অন্যদিকে, চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি বিচারকের সঙ্গে আইনজীবীদের অসদাচরণের প্রতিবাদে আদালতের কর্মকর্তারা কর্মবিরতি পালন করেন। এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পরদিন সব আদালত বর্জন করে লাগাতার কর্মসূচি পালন করেন আইনজীবীরা।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারকদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২৪ জন আইনজীবীকে দুবার তলব করেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: আদালত স্বাধীনভাবে তাদের কাজ করে: আইনমন্ত্রী
নির্ধারিত সময়েই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবে: আইনমন্ত্রী
হাইকোর্টের বিচারক নিয়োগে নতুন আইন আসছে: আইনমন্ত্রী
হাইকোর্টের বিচারক নিয়োগের জন্য সরকার একটি আইন প্রণয়নের কাজ করছে এবং কয়েক দিনের মধ্যে তা সংসদে পেশ করা হবে।
সোমবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও সুযোগ-সুবিধা) বিল-২০২৩ পাসের বিষয়ে আলোচনাকালে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা) ও গণফোরামের সংসদ সদস্যদের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো শেষ করাই নতুন বছরের চ্যালেঞ্জ: আইনমন্ত্রী
বিলটি পাসের বিষয়ে অংশগ্রহণের সময় জাপা ও গণফোরামের সংসদ সদস্যরা দাবি করেন যে সরকারকে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের জন্য একটি বহুল কাঙ্ক্ষিত আইন প্রণয়ন করতে হবে।
সিলেট থেকে নির্বাচিত গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি এখন হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগ দেন।
তিনি বলেন, ‘বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে অযোগ্যতার কথা বলা হয়, কিন্তু যোগ্যতার মানদণ্ড উল্লেখ করা হয় না। এক্ষেত্রে বিচারক নিয়োগের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন করা হলে নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ থাকবে না।’
সুনামগঞ্জ থেকে নির্বাচিত জাপা সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেছেন, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কোনো আইন নেই।
তিনি বলেন, ‘গত বছর এই আইনটি পাস হয়েছিল এবং এই আইনের ভিত্তিতে একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছিল।’
তিনি আরও জানান, একইভাবে হাইকোর্টের বিচারপতিদের নিয়োগেও আইন হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা এখনও হয়নি।
তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ দেয়া হয়।
ময়মনসিংহ থেকে নির্বাচিত আরেক জাপা সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামও একই দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: আদালত স্বাধীনভাবে তাদের কাজ করে: আইনমন্ত্রী
নির্ধারিত সময়েই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবে: আইনমন্ত্রী
আদালত স্বাধীনভাবে তাদের কাজ করে: আইনমন্ত্রী
বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসের হাইকোর্টের জামিনের বিরুদ্ধে সরকারের আপিলের বিষয়ে শুক্রবার আইনমন্ত্রী বলেন, সরকার বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করে না।
শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা প্রেসক্লাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘আদালত স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের মুক্তিতে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।’
অ্যাটর্নি জেনারেলের বরাত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, দুই নেতার হাইকোর্টে জামিন প্রক্রিয়ায় আইন লঙ্ঘন হয়েছে। তাই হাইকোর্টের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন: দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকার প্রশংসনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে: আইনমন্ত্রী
গত ৯ ডিসেম্বর রাজধানীতে পৃথক অভিযান চালিয়ে ফখরুল ও আব্বাসকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণের বিষয়ে আনিসুল বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন, এখন হাইকোর্ট বিষয়টি তার এখতিয়ারে নিয়েছে। ‘এ বিষয়ে আমি কোনো কিছু বলব না।’
তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখেছি এবং যদি এটি সত্য হয় তবে আমি লজ্জিত ও দুঃখিত। একজন আইনজীবী পরিবারের সদস্য হিসেবে আমি বিশ্বাস করি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সব আইনজীবী এ যে ঘটনা ঘটেছে তা আইনজীবীরা করতে পারেন না। আমি এটা বিশ্বাস করি না।’
বৃহস্পতিবার জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতিসহ তিন আইনজীবীকে তলব করেন বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
তলব করা ব্যক্তিরা হলেন-আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ ভূঁইয়া, সচিব (প্রশাসন) অ্যাডভোকেট মো. আক্কাস আলী ও অ্যাডভোকেট জুবায়ের ইসলাম।
এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত ৪ জানুয়ারি জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ ফারুক হাইকোর্টে লিখিত অভিযোগ পাঠান। পরে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বিচারপতির লিখিত অভিযোগ হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠান।
গত ২ জানুয়ারি আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. তানভীর ভূঁইয়া, সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মো. আক্কাস আলী এবং জুবায়ের ইসলামসহ প্রায় ১০-১৫ জন আইনজীবী এসে বিচারককে অভদ্রভাবে আদালত কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন।
অভিযোগে বলা হয়, অ্যাডভোকেট তানভীর আদালতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
আরও পড়ুন: নির্ধারিত সময়েই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবে: আইনমন্ত্রী
চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো শেষ করাই নতুন বছরের চ্যালেঞ্জ: আইনমন্ত্রী
নির্ধারিত সময়েই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবে: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে আপাতত সংবিধান সংশোধনের কোনো পরিকল্পনা নেই। নির্ধারিত সময়েই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান রাষ্ট্রপতি পর পর দুই টার্ম থেকেছেন, সংবিধান অনুসারে তিনি আর থাকতে পারবেন না।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অধস্তন আদালতের বিচারকদের জন্য আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে সরকার: আইনমন্ত্রী
যুক্তরাজ্যের সহযোগিতায় এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
চারদিনের এ কর্মশালায় বাংলাদেশের বিচার বিভাগের বিভিন্ন সমস্যা যেমন মামলাজট, মামলা ব্যবস্থাপনা, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির পন্থা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
বিএনপি নেতাদের জামিনের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আদালতের কাজে আইন মন্ত্রণালয় তো নয়ই, সরকারের অন্য কোনও মন্ত্রণালয়ও হস্তক্ষেপ করছে না। আদালত যদি মনে করে থাকে, যে জামিন দেয়া যাবে, আদালত জামিন দিয়েছে। যদি মনে করে থাকে যে, জামিন দেয়া যাবে না, তখন দেয়নি।
মন্ত্রী আরও বলেন, এটা অহরহ হয়ে থাকে যে নিম্ন আদালত জামিন দেননি, উচ্চ আদালত জামিন দিয়েছেন। আবার এমনও হয়, নিম্ন আদালত জামিন দিয়েছেন, উচ্চ আদালত সেখানে হস্তক্ষেপ করে তা আটকে দিয়েছেন। এটা নতুন কিছু না বাংলাদেশে।
এটা নিয়ে যারা অভিযোগ করছেন, তারা হয়তো জাতীয় পার্টি-বিএনপির আমল দেখেননি বা দেখলেও তারা সেইসব অভিজ্ঞতার কথা এখন বলতে চান না।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের হাইকোর্টের জজ বিচারপতি মওরা ম্যাকগোয়ান ও যুক্তরাজ্যের সার্কিট জজ খাতুন সাপনারা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো শেষ করাই নতুন বছরের চ্যালেঞ্জ: আইনমন্ত্রী
দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকার প্রশংসনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে: আইনমন্ত্রী
চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো শেষ করাই নতুন বছরের চ্যালেঞ্জ: আইনমন্ত্রী
আইন ও বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো শেষ করাই নতুন বছরের চ্যালেঞ্জ।
রবিবার (১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকার প্রশংসনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে: আইনমন্ত্রী
নতুন বছরে সরকারের চ্যালেঞ্জের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা সরকার গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে এবং গণতন্ত্রের শেকড় শক্ত করার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের বিকাশ শেখ হাসিনার সরকারের আমলেই হয়েছে। এ সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর, পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে সংবিধানে যেভাবে বলা আছে ঠিক সেভাবেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশে।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে, শেখ হাসিনা সরকারের কাছে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যেসব অঙ্গীকার করা হয়েছিল জনগণের কাছে সেসব অঙ্গীকার; সেসব অঙ্গীকারের যেগুলো এখনও শেষ হয়নি সেগুলো শেষ করা।
পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল চালু ছিল ২০২২ সালের সবচেয়ে বড় সাফল্য জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ঢাকা ময়মনসিংহ ও সিলেটসহ এ বছর যত উন্নয়ন প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা সে ইনশাল্লাহ সেটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে সেসব প্রকল্পগুলো শেষ করবো।
নির্বাচন সঠিকভাবে ও সঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান আনিসুল হক।
২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন কী করতে পারবেন-এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। এছাড়া যে দল নির্বাচনে আসেনি, সেটা তো আমাদের দায়িত্ব না।
মন্ত্রী বলেন, আগামী নির্বাচন যখন হবে আশা করব সব দল এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। ‘আমাদের দায়বদ্ধতা জনগণের কাছে। জনগণের ভোট দেয়ার যে অধিকার রয়েছে সেটার মধ্যে কেউ যদি বাধাগ্রস্ত করে তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।’
জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ আছে কিনা জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, কোনো বিশৃঙ্খলা ঘটানোর চেষ্টা প্রশ্রয় দেয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আইন রক্ষার্থে আইনানুগভাবে ব্যবস্থা নেবে।
নির্বাহী আদেশে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা যায় কিনা-এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সেটা আপনারা দেখবেন।
বিভিন্ন সংগঠন মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানাচ্ছে-এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিবর্তে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
তিনি বলেন, যেসব-ক্ষেত্রে জনগণ বিচার পায়নি, সেসব ক্ষেত্রে মানুষ বিচার পেয়েছে। যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে কথা বলছেন, তারা কিন্তু অতীতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলেন না। এক্ষেত্রে তাদের বক্তব্য কতটা বিশ্বাসযোগ্য সেটা আপনারা বিচার করবেন।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে সরকার: আইনমন্ত্রী
যারাই মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে, তাদেরকেই আইনের আওতায় আনা হবে: আইনমন্ত্রী
দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে সরকার: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশকেও দুর্নীতির ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান এবং জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। এছাড়া দুর্নীতি একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ যা থেকে পৃথিবীর কোনও দেশই মুক্ত নয় এবং এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক ইসলামী সংস্থা (ওআইসি) এর সদস্য দেশগুলোর দুর্নীতিবিরোধী আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের জন্য প্রথম মন্ত্রী পর্যায়ের দু’দিনব্যাপী সম্মেলনে এ কথা বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ সকালে সৌদি আরবের জেদ্দায় শুরু হয়েছে এই সম্মেলন। এ সময় সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ওআইসির স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) উপস্থিত ছিলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়, ব্যাংকিং ও নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য উন্নত নিয়ন্ত্রণ কাঠামো ও তদারকির ব্যবস্থা, বিভিন্ন স্তরে জাতীয় দুর্নীতি প্রতিরোধ কাঠামো, উন্নত শাসন ব্যবস্থা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণসচেতনতা তৈরির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক এবং কমিউনিটি পর্যায়ে বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করেছি।
এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সততা ইউনিট, সততার দোকান ও সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার জন্য গণশুনানির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সকল স্তরে দুর্নীতি প্রতিরোধে ফৌজদারি আইন, স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন, তথ্যের অধিকার নিশ্চিতে তথ্য কমিশন, মানি লন্ডারিং আইন, সন্ত্রাসে অর্থায়ন বন্ধ, সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রতিরোধে পারস্পরিক আইনি সহায়তা, সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম প্রতিরোধসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
ওআইসির সভায় আইনমন্ত্রী বলেন, অবৈধ আর্থিক প্রবাহ রোধ করা এবং বাজেয়াপ্ত সম্পদ পুনরুদ্ধার এবং ফেরত দেয়ার মাধ্যমে একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।
এ বিষয়ে জাতিসংঘের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কনভেনশন (UNCAC) এর সুস্পষ্ট বিধান থাকা সত্ত্বেও দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিং এর মাধ্যমে অবৈধভাবে পাচারকৃত সম্পদ পুনরুদ্ধারে কিছু কিছু দেশের বিভিন্ন ধরনের অসহযোগিতায় আইনমন্ত্রী তার উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: জেনেভায় মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের সঙ্গে আইনমন্ত্রীর বৈঠক
যারাই মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে, তাদেরকেই আইনের আওতায় আনা হবে: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, সুরক্ষা ও উন্নয়নে বর্তমান সরকার সর্বতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্ন উঠছে, সেখানেই সরকার তড়িৎ ব্যবস্থা নিচ্ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিষয়ে সরকারের অবস্থান একেবারে পরিষ্কার। বাংলাদেশে যারাই মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে, তাদেরকেই আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে।শনিবার দুপুরে রাজধানীর রেডিসন হোটেলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উদ্যোগে মানবাধিকার দিবস-২০২২ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে সরকারের অনেক বড়বড় অর্জন সত্ত্বেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কেউকেউ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে নেতিবাচকভাবে চিত্রিত করার হীন চেষ্টা করছেন।বাংলাদেশের সংবিধান ও সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র এদুটির কোথাও অন্যের অধিকার হরণ করে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলা নেই- একথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদ ও সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের ২০ অনুচ্ছেদে শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ করার অধিকারের কথা বলা আছে। কিন্তু মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার এদুটি অনন্য দলিলের কোথাও বলা নেই রাস্তাঘাট বন্ধ করে, জনসাধারণের চলাচলের পথ রুন্ধ করে সভা-সমাবেশ করা যাবে।তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আজকাল মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে কি-না তা জানার আগেই অনেকে আমাদেরকে মানবাধিকার সমন্ধে ছবক দিচ্ছেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর ও ২৬ সেপ্টেম্বর এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঘৃণতম মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটলেও তারা মানবাধিকার রক্ষা দূরে থাক, এবিষয়ে একটি টু শব্দও করেন নাই।
আরও পড়ুন: জনগণকে সর্বোত্তম সেবা দিন: সাব-রেজিস্ট্রারদের উদ্দেশে আইনমন্ত্রীতিনি বলেন, যে বঙ্গবন্ধু তার সারাটা জীবন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষার জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছিলেন, সেই বঙ্গবন্ধুকে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সপরিবারে নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়, যা ছিল বিশ্বের ইতিহাসে ঘৃণ্যতম ও চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিভৎসতা এত ভয়াবহ ছিল যে, ইনডেমনিটি আইন করে দীর্ঘ ২১ বছর খুনিদের বিচারের পথ রুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল, তাঁদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল এবং বিশ্বের বড়বড় দেশ খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছিল। দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন খুনি এখনো কয়েকটি বড় দেশের আশ্রয়ে আছে। তাদেরকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অনেকটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।মি. হক আরও বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, সুরক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন প্রণয়ন করে এর অধীনে শক্তিশালী জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার। সরকারের অব্যাহত সহযোগিতায় বর্তমানে এই কমিশনের এখতিয়ার ও কাজের পরিধি ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে। এটি এখন নারী, শিশু, দলিত, হিজড়া, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, মেহনতী মানুষ ও প্রবাসী শ্রমিকসহ সর্বস্তরের মানুষের অধিকার সুরক্ষায় সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ফলে স্বল্প সময়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এশিয়া প্যাসিফিক ফোরামের সদস্য পদ লাভ করেছে এবং ‘বি’ ক্যাটাগরির স্ট্যাটাস অর্জন করেছে। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষায় জবাবদিহিতার অংশ হিসেবে সরকার জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন কমিটিতে নিয়মিত রাষ্ট্রীয় প্রতিবেদন এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ছায়া প্রতিবেদন প্রেরণ করছে। দেশে ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ সুগম করার পাশাপাশি সব ধরণের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে কাজ করছে। মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট উচ্চ আদালতের বিভিন্ন রায় ও আদেশ দ্রুত কার্যকর করার যথাযথ পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে। মানবাধিকার নিশ্চিতকরণে সরকার আরও অনেক আইন প্রণয়ণ করেছে। বৈষম্য বিরোধী আইন প্রণয়নের বিষয়টিও এখন আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির নিকট পরীক্ষা-নিরীক্ষাধীন রয়েছে।সরকারের সুনীতি ও দৃঢ় অবস্থানের কারণেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, জাতীয় চারনেতা হত্যাকাণ্ড ও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধসহ বড় বড় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করা সম্ভব হয়েছে। দেশ থেকে বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর হয়েছে। মানুষ ন্যায়বিচার পাচ্ছেন। মানবাধিকার সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। বাংলাদেশ চার চার বার জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যপদ লাভ করেছে, বলেন আইনমন্ত্রী।জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মইনুল কবির প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
আরও পড়ুন: আয়কর আইনজীবীদের একটি শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকা দরকার: আইনমন্ত্রী
দেখা যাক, ছদ্মবেশে জামায়াতের নিবন্ধন ইসি কীভাবে পরিচালনা করে: আইনমন্ত্রী