নদী ভাঙন
কুড়িগ্রামে গঙ্গাধর নদীর তীব্র ভাঙন, দিশেহারা ৩ গ্রামের মানুষ
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে উজানের ঢলে গঙ্গাধর নদীর পানি বাড়ছে। পানি বাড়ার সাথে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, বাগান, বাঁশঝাড়, পাকা স্থাপনা। শেষ সম্বল হারিয়ে দিশেহারা নদীর তীরবর্তী মানুষ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, খরস্রোতা গঙ্গাধর সারা বছরই কম-বেশি বল্লভেরখাস ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে তাণ্ডব চালায়। পানি বৃদ্ধি বা কমে গেলে এর ভয়াবহতা বাড়ে দ্বিগুন। গত কয়েক বছর থেকে তা অগ্রাসন চালাচ্ছে ওই ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে। এবার তীব্র ভাঙনের মুখে পড়েছে কৃষ্ণপুর জেলেপাড়া, রামদত্ত ও রঘুরভিটা এই তিন গ্রাম । এ বছর ওই তিন গ্রামে ভেঙেছে প্রায় অর্ধশত ঘরবাড়ি। গত একসপ্তাহে ভেঙেছে অন্তত ১৫টি বাড়ি। বসতভিটা হারিয়ে তাদের অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন রঘুরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ও অন্যের বাড়িতে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে যমুনায় ভয়াবহ ভাঙন, অর্ধশত ঘরবাড়ি বিলীন
১৯০৩ সালে স্থাপিত রঘুরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিদ্যালয়টিও এখন হুমকির মুখে। নদী থেকে এর দূরত্ব মাত্র ১০০ গজ। ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে আছে কালাডাঙ্গা জামে মসজিদ, রামদত্ত জামে মসজিদ, রামদত্ত মহিলা হাফেজা মাদরাসা, কৃষ্ণপুর নুরানী হাফেজিয়া মাদরাসা, কৃষ্ণপুরের একমাত্র পাকা সড়কসহ অনেক পাকা স্থাপনা।
জেলেপাড়ার শিথিল চন্দ্র বিশ্বাস, ভানুরাম বিশ্বাস জানান, তাদের দুই জনেরই বাড়ি ও বসতভিটা পরপর তিন বার গিলে খেয়েছে আগ্রাসী গঙ্গাধর। অন্যত্র জমি কিনে বসবাস করার ক্ষমতা নেই তাই অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে সেখানেই বসবাস করছেন।
একই অবস্থা সুবেরাম বিশ্বাসের। গঙ্গাধর তাকে ভিটেহারা করেছে চার বার। গত কয়েক বছর থেকে ভাঙনের কবলে পড়েও নাড়ির টানে জন্মভূমির মায়ায় বারবার ভিটে বদল করে বসবাস করছেন হরিপদ বিশ্বাস, সুমন বিশ্বাস, টরে বিশ্বাস, রঘুনাথ বিশ্বাসসহ অনেকেই।
রঘুর ভিটা গ্রামের সুলতান, কদর উদ্দিন জানান, তাদের আবাদি জমি অনেক আগেই গিলে খেয়েছে নদী। এখন বাড়ির ভিটায় ভাঙন ধরেছে। ঘরবাড়ি অনত্র সরিয়ে নিতে হচ্ছে তাদের। একই অবস্থা রামদত্ত গ্রামের।
আরও পড়ুন: তিস্তার ভাঙন: কুড়িগ্রামের ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি নদী গর্ভে
বল্লভেরখাস ইউপি চেয়ারম্যান আকমল হোসেন জানান, গত কয়েক বছর থেকে গঙ্গাধর আগ্রাসন চালাচ্ছে এ গ্রামগুলোতে। একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করেও কোন সুফল মেলেনি। ভাঙনরোধে জরুরি ভিত্তিতে সেখানে জিওব্যাগ ফেলা দরকার।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী ওমর ফারুক মো. মোক্তার হোসেন জানান, রঘুরভিটা থেকে কৃষ্ণপুর পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ব্যাপক ভাঙন চালাচ্ছে গঙ্গাধর নদী। অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। এই নদীর ভাঙন রোধে ২ বছর আগে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একটি প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। এটি পাশ হলে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে।
তিনি জানান, যেহেতু ব্যাপক এলাকা জুড়ে ভাঙন চলমান, তাই আপদকালীন কোন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
প্রবল বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে সিরাজগঞ্জের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে শনিবার সকালে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ও কাজিপুর পয়েন্টে ৪৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে জেলার বিভিন্ন স্থানে তীব্র নদী ভাঙনও শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (হেড কোয়ার্টার) নাসির উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, পাহাড়ি ঢলে ও দফায় দফায় প্রবল বৃষ্টিতে যমুনা নদীতে গত কয়েকদিন ধরে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ইতোমধ্যেই বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। বাড়িঘর ও রাস্তাঘাটে পানি উঠায় এসব এলাকার মানুষ এখন চরম বিপাকে পড়েছেন। বন্যাকবলিত এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে রোপা আমন ক্ষেত ও বীজতলা, আখ, পাট, তিল ও সবজি বাগানসহ বিভিন্ন ফসল। এভাবে যমুনায় পানি বাড়তে থাকলে বন্যার আশংকাও করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ তিস্তার ভাঙন: কুড়িগ্রামের ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি নদী গর্ভে
নাসির উদ্দিন আরও বলেন, কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলের ছয়টি ইউনিয়ন এবং চৌহালী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শুক্রবারের ভাঙনে বিলীন হয়েছে প্রায় ২০টি বাড়িঘরসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ নদীর পার থেকে তাদের ঘড়বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কাজিপুর উপজেলার খাসরাজবাড়ি, নাটুয়ারপাড়া, চরগিরিশ, মনসুরনগর, নিশ্চিন্তপুর ও তেকানী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে তীব্র নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। অবশ্য পানি উন্নয়ন বোর্ড এসব স্থানে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুনঃ যমুনার ভাঙনে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন
এদিকে বন্যা পূর্বাবাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে আরও দু-একদিন পানি বাড়তে পারে এবং এ সময়ের মধ্যে যমুনার পানি বিপৎসীমাও অতিক্রম করতে পারে।
তিস্তার ভাঙন: কুড়িগ্রামের ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি নদী গর্ভে
তিস্তার তীব্র ভাঙনে কুড়িগ্রামের রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের তিনটি মসজিদ, প্রথামিক বিদ্যালয়সহ পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি, গাছপালা ও শতশত একর ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজারহাটের তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি ও হ্রাসের কারণে তীব্র নদী ভাঙন শুরু হয়। ফলে গত এক মাসে উপজেলার ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াশাম, নাখেন্দা ও খিতাবখাঁ মৌজার তিন শতাধিক বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ফলে বসতভিটে হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবতর জীবন-যাপন করছে অনেক পরিবার।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে বিপদসীমার উপরে পদ্মার পানি, তীব্র ভাঙন
সরিষাবাড়ি ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম জানান, ঈদুল আজহার আগে থেকে ভাঙন চলছে। বর্তমানে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এবারের ভাঙনে এই তিনটি মৌজার অধিকাংশ জায়গাই নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে বলেও তিনি জানান।
খিতাবখাঁ বড়দরগা গ্রামের আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘এই নিয়্যা তিনবার বসতবাড়ি নদী নিয়ে গেলো, এল্যা বেটাবেটি নিয়ে কোটে থাকিম, কোটে বাড়ি তুলিম।‘
এদিকে, উপজেলার ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখাঁ, চর-খিতাবখাঁ, গতিয়াশাম, সরিষাবাড়ি ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রামহরি, তৈয়বখাঁ, চতুরা, কালিরহাট, চরবিদ্যানন্দসহ ১০টি গ্রামে দফায় দফায় নদী ভাঙনে চলতি মৌসুমে ৫ শতাধিক বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া, এই ১০টি গ্রামের সহস্রাধিক বসতভিটাসহ তৈয়বখাঁ বাজার, কালিরহাট বাজার, বুড়িরহাট বাজার, সরিষাবাড়ি বাজার, তৈয়বখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালিরহাট নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খিতাবখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর খিতাবখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২টি ইউনিয়নের আরও ৩টি মসজিদ, মন্দির, স্থাপনা ও শতশত একর ফসলি জমি হুমকির মুখে পরেছে।
আরও পড়ুন:যমুনার ভাঙনে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান বলেন, ‘ভাঙন কবলিত চার স্থানে জরুরি ব্যবস্থা হিসেবে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। তবে গতিয়াশাম, নাখেন্দা ও খিতাবখাঁ মৌজায় জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধ সম্ভব হবে না।’
ফরিদপুরে মধুমতি নদীতে ভাঙন
চলতি বর্ষা মৌসুম শুরু থেকেই ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার মধুমতি নদীতে বিভিন্ন অংশ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- পাচুরিয়া ইউপির চররামদিয়া, বাশতালা,টরবন্দ ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর।
এদিকে ভাঙন কবলিত এলাকায় ছুটে গেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মনজুর হোসেন ও জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। শুক্রবার বিকালে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া গ্রামে নদী ভাঙন কবলিত এলাকায় যান এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন তারা।
আরও পড়ুন: যমুনার ভাঙনে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন
পরির্দশনে শেষে এমপি মনজুর হোসেন বলেন, এই এলাকার নদী ভাঙন সমস্যা দীর্ঘ দিনের। স্বাধীনতার পর থেকে ভাঙনের মুখে এই অঞ্চলের মানুষ। আমরা চেষ্টা করছি সরকারি উচ্চ পর্যায়ে কথা বলেন এই ভাঙন রোধের স্থানীয় ব্যবস্থা নেয়ার।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, চলতি বর্ষা মৌসুমে ভাঙন প্রতিরোধে প্রাথমিকভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করার।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা মানুষ
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে যে সকল পরিবার নদী ভাঙনের স্বীকার হয়েছে তাদের তালিকা করে সরকারিভাবে আর্থিক ও খাদ্য সহায়তা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
বাড়ছে পানি, ফরিদপুরে নদী ভাঙন শুরু
গত কয়েকদিন ধরে ফরিদপুরের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়েই চলছে। এতে জেলার পাঁচটি উপজেলার কয়েকটি স্থানে নদীর পাড় ভাঙন শুরু হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড ।
ফরিদপুর পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, প্রতিদিনই ফরিদপুরের পদ্মা, মধুমতি ও আড়িয়াল খা’র পানি বাড়ছে। তবে এখনও পানি বিপদসীমার নিচে রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে ৩ পৌর এলাকায় ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে পয়েন্ট ২৭ সেন্টিমিটার। বর্তমানে গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীতে ৭ দশমিক ০৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে পাঁচটি উপজেলার কয়েকটি স্থানে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি প্রাথমিক প্রটেকশনের জন্য।‘
জেলার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি ও ভাঙন বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, পানি বৃদ্ধির সঙ্গে নদীতে ভাঙন দেখা দেবে এটা স্বাভাবিক। তবে আমরা খোঁজ খবর রাখছি। কোথাও জরুরি কিছু করার প্রয়োজন হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দিয়ে সেটি করা হবে।
আরও পড়ুনঃ বৃষ্টির পানিতে ডুবল ঢাকার রাস্তা, ভোগান্তিতে মানুষ
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ইতিমধ্যে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ফরিদপুরের নদী ভাঙন কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন।
দূর্যোগকালীন স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ডকেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
তিস্তা নদীর ভাঙন, ক্ষুব্ধ নদী পাড়ের মানুষ
কুড়িগ্রামে মেগা প্রকল্পের নামে তিস্তা নদীর ভাঙ্গন রোধে জরুরি বরাদ্দ না থাকায় ক্ষুব্ধ তিস্তা পাড়ের মানুষ।
বর্ষার আগেই পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে তিস্তা নদী তার ভয়ালরূপ দেখাতে শুরু করেছে। তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি,ফসলি জমিসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। আসন্ন বন্যার আগে ভাঙ্গন রোধে পদক্ষেপ না নিলে দুই জেলার কয়েক হাজার মানুষ ক্ষতি মুখে পড়বে।
আরও পড়ুন: যাদুকাটা নদীর ভাঙনে বিলীনের পথে সুনামগঞ্জের ২ গ্রাম
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তৈয়ব খাঁ এলাকার ষাটোর্দ্ধ বৃদ্ধা বখত জামালের অশ্রুসিক্ত আর্তনাদ দেখলে তিস্তা নদীর ভাঙ্গনের রুদ্ররূপ সম্পর্কে ধারনা হবে। মাত্র এক যুগে তিস্তা নদীর কড়াল গ্রাসে ৪ বার ভাঙ্গনে বসতভিটে সহ প্রায় আড়াই বিঘা ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। বর্তমানে নদীর তীরেই মাথা গোঁজার শেষ সম্বল জমি টুকুও পড়েছে হুমকির মুখে। এটি বিলীন হয়ে গেলে অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে বখত জামালের আশ্রয় হবে খোলা আকাশের নিচে। সন্তানরাও থাকে তাদের পরিবার নিয়ে আলাদা। খোঁজ রাখে না।
বখত জামালের মতো শত শত পরিবার এখন তিস্তা নদীর ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে।
আরও পড়ুন: বালু উত্তোলন: মাগুরায় মধুমতির ভাঙনে দিশেহারা এলাকাবাসী
ভারী বৃষ্টিপাত আর উজানে পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তা নদী রুদ্ররুপ ধারণ করেছে। গত এক সপ্তাহে তিস্তার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে শত শত বিঘা আবাদি জমি, গাছপালাসহ শতাধিক বাড়ী ঘর। ভেঙে গেছে মূল সড়কের ৪০ মিটার।
প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ভাঙন মোকাবিলায় নানান প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও চোখের সামনে বাড়িঘর ভেঙ্গে যেতে দেখে ক্ষুব্ধ তিস্তা পাড়ের মানুষ।
কুড়িগ্রামে উজানে ভারতীয় অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলার নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ফলে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। বিশেষ করে তিস্তা নদীর পানি হু-হু করে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। হঠাৎ করে পানিবৃদ্ধি এবং তীব্র স্রোতে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরা, রাজারহাটের বিদ্যানন্দ এবং পার্শ্ববর্তী গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের কাসিম বাজার এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিলীন হয়েছে পুকুর, ফসলি জমিসহ বাগান।
আরও পড়ুন: মাগুরায় মধুমতির ভাঙনে বসতভিটা, ফসলি জমি বিলীন
হুমকির মুখে রয়েছে ঐতিহাসিক কাসিম বাজার হাটসহ সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তীব্র ভাঙনে বসতবাড়ী বিলিন হয়ে গেলেও জনপ্রতিনিধি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে কার্যকর কোন উদ্যোগ গ্রহন না করায় সংশ্লিষ্টদের প্রতি হতাশ ও ক্ষুব্ধ এলাকার ভাঙন কবলিতরা।
ক্ষতিগ্রস্থ বখত জামাল অশ্রু চোখে বলেন,তিস্তা নদীর আমার সোগ খাইছে। এলা দু’শতক জমিও নাই থাকপার। যেটুকু আছে সেটা বিলীন হলে আমার থাকপার কিচ্ছু নাই। আমি পথের ফকির হয়া গেছি। আল্লাহ আমাকে ফকির বানাইছে। বাবা তোমার গুলার হাত-পাও ধরি কই চাচা হই আমার বাড়িঘর অক্ষা করি দ্যাও আল্লাহ তোমার একালেও ভালো পরকালেও ভালো করবে।
কাশিম বাজার এলাকার জব্বার আলী বলেন, সংসদে বেশ সুন্দর বড় বড় বক্তব্য দেয়, আরে মিয়া সংসদে বক্তব্য দেয়া বাদ দিয়া তোর এলাকায় দেখি যা। তোর এলাকার কি অবস্থা হইছে তুমি চোখে দেখ না। এসব কথা বলে জনপ্রতিনিধিদের উপর ক্ষোভ ঝাড়েন ভাঙ্গন কবলিতরা।
বজরার বাসিন্দা সহিদুর রহমান বরেন, অব্যাহত নদী ভাঙ্গনে ভিটে-মাটি, গাছপালা ও ফসলি জমি হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে যাচ্ছে এখান মানুষ। নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পেতে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ধরনা দিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না।
তৈয়ব খাঁ এলাকার মোশাররফ বলেন, তিস্তা নদীর মেগা প্রকল্পের নামে জরুরি বরাদ্দ না থাকায় ভাঙ্গন রোধে কোন পদক্ষেপ নেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবী জানাই তিনি যেন তিস্তার ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেন।
বজরা ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম আমিন বাবলু বলেন, গত কয়েকদিনে ইউনিয়নের পশ্চিম বজরা এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে এলজিইডি’র পাকা সড়কসহ পুরান বজরা জামে মসজিদ এবং বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘর বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের মুখে পশ্চিম বজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো ভেঙ্গে নেয়া হচ্ছে। ৫০-৬০টি বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে পুরান বজরাহাট, পশ্চিম বজরা দাখিল মাদ্রাসা,চর বজরা পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়াও চর বজরা পূর্ব বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বজরা ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষতি হবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, তিস্তা নদীর ভাঙ্গন রোধ এবং সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির নামে প্রায় ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সরকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এটি বাস্তবায়ন হলেও তিস্তা নদীর ভাঙ্গন রোধে স্থায়ীভাবে সমস্যা সমাধান হবে। বর্তমানে তিস্তার ভাঙন রোধে অস্থায়ীভাবে জিও ব্যাগ এবং জিও টিউব দিয়ে রোধ করার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এছাড়াও স্থায়ীভাবে কাজ করার জন্য প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
সিরাজগঞ্জে অসময়ে যমুনার ভাঙনে বহু বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার দক্ষিণে যমুনা নদীতে অসময়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ভাঙন এলাকার অনেক বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ভাঙনের কারণে ক্ষতিগ্রস্তরা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় যুগ ধরে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার দক্ষিণে দফায় দফায় নদী ভাঙন চলছে। প্রতিবছরই নদীতে পানি বৃদ্ধি ও কমার সময় এবং প্রচন্ড স্রোতের কারণে একের পর এক ঘরবাড়ি, বসতভিটা, জায়গা জমিন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়। এ পর্যন্ত ২০ হাজার বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় বহু পরিবার পথে বসেছে।
আরও পড়ুন: যাদুকাটা নদীর ভাঙনে বিলীনের পথে সুনামগঞ্জের ২ গ্রাম
এই দুর্দশা দেখতে গত ৪ বছরে কমপক্ষে ৫ বার স্থানীয় এমপি ও মন্ত্রীসহ পাউবো কর্মকর্তারা ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। প্রতিবারই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের দিয়েছেন স্থায়ী তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণের নানা প্রতিশ্রুতি।
এ ভাঙন রোধে প্রায় ৪ বছর আগে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে এনায়েতপুরের ব্রাহ্মনগ্রাম-আড়কান্দি থেকে পাঁচিল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকায় স্থায়ী তীর সংরক্ষণে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রাণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হচ্ছে না। এতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারছে না পাউবো। এ কারণে ভাঙনের মুখে পড়ে বহু পরিবার গৃহহীন হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বালু উত্তোলন: মাগুরায় মধুমতির ভাঙনে দিশেহারা এলাকাবাসী
গত ৭ মার্চ পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ভাঙনকবলিত এনায়েতপুর-পাঁচিল এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে ক্ষতিগ্রস্তদের তিনি স্থায়ী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ দ্রুত অনুমোদনের আশ্বাস দেন। এখনও সেই প্রকল্প অনুমোদনের ফাইল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েই রয়েছে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় মধুমতির ভাঙনে বসতভিটা, ফসলি জমি বিলীন
এদিকে দেড় সপ্তাহ ধরে যমুনা নদীতে কিছুটা পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওই এলাকার আড়কান্দি, পাকুরতলা, বাঐখোলা ও পাঁচিল এলাকা বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে। বর্ষা মৌসুমের আগেই এ ভাঙন শুরু হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
এ সময় এলাকাবাসী নিজস্ব উদ্যোগে ভাঙন প্রতিরোধে বাঁশের বেড়া (সটক) স্থাপন করেও ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।
এ বিষয়ে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন বলেন, অসময়ে ভাঙ্গন রোধে জরুরি জিও ব্যাগ ফেলার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়া স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার প্রকল্পটি এখনও অনুমোদন হয়নি। এ কারণে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মায় সক্রিয় বালু সিন্ডিকেট
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ও আখেরআলী এলাকায় পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে একাধিক সিন্ডিকেট। সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে ড্রেজার দিয়ে প্রকাশ্যে চলছে বালু উত্তোলন।
বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙনের আশঙ্কার পাশাপাশি বালুবোঝাই ভারি ট্রাক্টর চলাচলের কারণে গ্রামীণ রাস্তাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলেও বালুদস্যুদের দৌরাত্ম থামছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
আরও পড়ুন: পিয়াইন নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন, অর্ধ শতাধিক বসত নদীগর্ভে বিলীন
স্থানীয়দের জানায়, ২০১০ সালে বালু উত্তোলন নীতিমালায় যন্ত্রচালিত মেশিন দিয়ে ড্রেজিং পদ্ধতিতে নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও মূল্যবান স্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন করা বেআইনি। অথচ সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ও বাখেরআলী এলাকায় পদ্মা নদীতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙনের পাশাপশি নদীর গতিপথ বদলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। হুমকির মুখে পড়বে পদ্মা নদীর তীররক্ষা বাঁধ ও নদী তীরবর্তী স্থাপনাগুলো।
স্থানীয়রা জানান, ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙনে তাদের বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে এছাড়াও পদ্মার ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য সরকারের চরবাগডাঙ্গার ও শাজাহানপুর এলাকা রক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন হুমকির মুখে পড়তে পারে। আর বালুবোঝাই ভারি ট্রাক্টর চলাচলের কারণে বেড়ি বাঁধ সড়কসহ গ্রামীণ রাস্তাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে এলাকার মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলছেন ইউপি চেয়ারম্যান!
স্থানীয়দের অভিযোগ, বালু বাণিজ্যকে ঘিরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের কিছু নেতার ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে একাধিক সিন্ডিকেট। তারা সবকিছু ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কাজ।
আরও পড়ুন:নগরকান্দায় বালুভর্তি ট্রাকের ভারে ভেঙে পড়ল বেইলি ব্রিজ
স্থানীয়রা জানান, অবৈধভাবে এই বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে, তারপরও বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম সরকার জানান, পদ্মা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অব্যাহত নদী ভাঙনে সঙ্কুচিত হচ্ছে বটিয়াঘাটার ভৌগলিক মানচিত্র
অব্যাহত নদী ভাঙনে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলা সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে। বছরের পর বছর এ নদী ভাঙন নদীর কূলবর্তী মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে গৃহহারা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ভাঙনরোধে কার্যত দীর্ঘ মেয়াদী কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এতে গৃহহারা মানুষদের মধ্যে যেমন ক্ষোভ বেড়েছে, তেমনি এখনও যারা টিকে আছে তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
যাদুকাটা নদীর ভাঙনে বিলীনের পথে সুনামগঞ্জের ২ গ্রাম
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বাদাঘাট দক্ষিণ ইউনিয়নে যাদুকাটা নদীর শাখায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বর্ষণের তোড়ে ডালারপাড় ও বাগগাঁও গ্রাম দুটির আবাদি জমি ও ঘরবাড়িসহ অনেক স্থাপনা নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। দুই গ্রামের প্রায় ৫০০ পরিবার ভাঙনের আতঙ্কে মধ্যে রয়েছে।