বাংলাদেশ
বাংলাদেশে নারী জাগরণ ঘটেছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংরক্ষিত আসনের জন্য জাতীয় সংসদে প্রত্যাশী ১ হাজার ৫৫০ জনেরও বেশি নারীর প্রবেশ প্রমাণ করে বাংলাদেশে নারী জাগরণ ঘটেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন দেখি মাত্র ৪৮টি সংরক্ষিত আসনের জন্য ১ হাজার ৫৫৩ জন নারী আশাবাদী, তখন আমরা এই উপসংহারে আসতে পারি যে বাংলাদেশে নারীর জাগরণ ঘটেছে।’
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী নারীদের সঙ্গে এক সভায় এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, নারীরা এখন প্রতিটি সেক্টরে সফলভাবে কাজ করছে এবং তাদের যোগ্যতা প্রমাণ করছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চান রুগ্ণ শিল্পের মালিকরা
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যেখানেই নারীদের পাঠাই, তারা সবাই সফলভাবে কাজ করে… আমাদের নারীরা তাদের যোগ্যতার পরিচয় দিচ্ছে।’
খেলাধুলাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে নারীদের সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘নারীদের জন্য নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির কোনো যুক্তি নেই।’
তিনি বলেন, এটা অযৌক্তিক যে নারীরা খেলাধুলা, ব্যবসা ও চাকরিতে যোগ দিতে পারবে না। কারণ একজন নারী (খাদিজা) প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিবি খাদিজা একজন ব্যবসায়ী ছিলেন এবং তিনি ইসলাম প্রচার ও প্রসারের জন্য হযরত মুহাম্মদকে (সা.) তার সমস্ত অর্থ ও সম্পদ দিয়ে সহায়তা করেছিলেন।
ইসলাম নারীকে এমনকি হিজড়া সম্প্রদায়কেও যথেষ্ট অধিকার দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নারীদেরকে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে আমরা খুবই সচেতন। আজ গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো নারীই পিছিয়ে নেই।’
প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশে আরও বেশি সংখ্যক নারী সরাসরি ভোটের মাধ্যমে এগিয়ে আসবে।
জাতীয় সংসদে ৩৫০টি আসন রয়েছে, যার মধ্যে ৫০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও বিমসটেক একসঙ্গে কাজ করবে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ও বিমসটেক একসঙ্গে কাজ করবে: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসায় বাংলাদেশের মানুষ এখন গণতন্ত্র উপভোগ করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টোরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) মহাসচিব ইন্দ্র মণি পান্ডে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'দেশের মানুষ এখন গণতন্ত্র উপভোগ করছে।’
আরও পড়ুন: জননিরাপত্তা নিশ্চিতে অপচেষ্টা প্রতিহত করুন: প্রধানমন্ত্রী
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম সাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা সময় ছিল যখন দেশ সামরিক শাসনের অধীনে নিমজ্জিত ছিল।
দেশের মানুষকে তার অন্যতম শক্তি হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সব সময় গ্রামীণ উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়েছে।
তিনি বলেন, তিনি অসংখ্য গ্রাম পরিদর্শন করেছেন এবং জনগণকে খাদ্য উৎপাদন ছাড়া এক ইঞ্চি আবাদি জমিও ফেলে না রাখতে উৎসাহিত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি সবাইকে অনুরোধ করেছি যেভাবেই হোক খাদ্য উৎপাদনে সম্পৃক্ত হতে।’
তিনি আরও বলেন, অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ ও বিমসটেক একসঙ্গে কাজ করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত সবসময়ই বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম দেশ।
তিনি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন যে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে অনেক সাহায্য করেছে ভারত। সেসময় প্রায় এক কোটি মানুষকে আশ্রয়ও দিয়েছে দেশটি।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর তিনি এবং তার বোন শেখ রেহানা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
বিমসটেক মহাসচিব প্রধানমন্ত্রীকে পুনঃনির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানান।
তিনি বিমসটেকের সঙ্গে বাংলাদেশের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বিমসটেকের চমৎকার সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি গ্রামীণ উন্নয়নে গুরুত্ব দিন: একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী
তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও প্রধানমন্ত্রীর ভিশন এবং স্বল্পোন্নত দেশের স্ট্যাটাস থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় অনুষ্ঠেয় সপ্তম শীর্ষ সম্মেলনের সময় বিমসটেক নেতাদের উদ্বোধনের লক্ষ্যে আগামী তিন বছরের মধ্যে প্রস্তাবিত বিমসটেক সচিবালয় ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ।
প্রতিটি সেক্টরের জন্য একটি শীর্ষস্থানীয় দেশ সহ সাতটি খাতে নামিয়ে আনাসহ বিমসটেকের অধীনে সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো পুনর্গঠন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও উন্নয়ন বিমসটেক সহযোগিতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত এবং বাংলাদেশ এ খাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
পরবর্তী শীর্ষ সম্মেলনের পর বাংলাদেশ যখন সভাপতিত্ব গ্রহণ করবে তখন পরবর্তী বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন ফোরামের কার্যক্রম আরও জোরদার করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক প্রক্রিয়াকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন, যেহেতু নতুন মহাসচিব ও সভাপতিত্বে থাকবে দুটি অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ- ভারত ও বাংলাদেশ এবং সচিবালয়ের আনুষ্ঠানিকতা ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।
৬ষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনের পর এই গ্রুপের সভাপতিত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশ বিমসটেক প্রক্রিয়ায় আরও দায়িত্ব গ্রহণে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট প্রমাণ করে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকবান্ধব: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশের সমুদ্র-স্থলবন্দর ব্যবহার করতে চায় নেপাল: নৌপ্রতিমন্ত্রী
নেপাল বাংলাদেশের সমুদ্র ও দুইটি স্থলবন্দর (বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারী) ব্যবহার করতে চায় বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে আমাদের একটা মিটিং হবে, সেখানে এ বিষয়গুলো চূড়ান্ত হবে।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী নিজ দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভাণ্ডারির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: গ্লোবাল মেরিটাইম ইন্ডিয়া সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নৌপ্রতিমন্ত্রী
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, নেপালের সঙ্গে আমাদের অনেক এনগেজমেন্ট আছে। নেপালের প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী বাংলাদেশে লেখাপড়া করছে। চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরের ব্যাপারে নেপালের খুব আগ্রহ রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, নেপাল ভূমি বেষ্টিত একটি দেশ। তারা মূলত মোংলা বন্দর ব্যবহার করতে চায়। এছাড়া তারা বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারী স্থলবন্দরও ব্যবহার করতে আগ্রহী। বন্দর ব্যবহার করে তারা পণ্য আনা-নেওয়া করতে চায়।
এসব ব্যাপারে তিনি কথা বলেছেন এবং সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রদূত ব্যক্তিগতভাবে বন্দরগুলো পরিদর্শন করেছেন। তিনি চান যাতে দ্রুত এগুলো হয়। আমরাও এটি বাস্তবায়নের গুরুত্ব দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে এটি নিয়ে কথা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আমাদের বিজয়ের মহানায়কের নাম শেখ মুজিবুর রহমান: নৌপ্রতিমন্ত্রী
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী যখন দিল্লি গিয়েছিলেন তিনি একটি বিষয় উত্থাপন করেছেন যে, আমরা কীভাবে ভারতের ২৩ কিলোমিটার ভূমি ব্যবহার করে নেপালের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হতে পারি। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে আমাদের একটা বৈঠক হবে, সেখানে এ বিষয়গুলো চূড়ান্ত হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নেপাল এখন ফুলবাড়ী পর্যন্ত আসতে পারে। কিন্তু আমাদেরগুলো যেতে পারে না। এ সংকট নিরসনে আমরা তিন দেশ মিলে কাজ করছি। এটা তারা চায়, আমরাও সেটা চাই। এটা হলে বহির্বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বেশি মসৃণ হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের আবিষ্কারক প্রধানমন্ত্রী: নৌপ্রতিমন্ত্রী
সব ফরম্যাটে বাংলাদেশের অধিনায়ক হলেন শান্ত
সব ফরম্যাটে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করবেন বাঁহাতি ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত।
সোমবার এই বছরের বোর্ডের প্রথম সভা শেষে বিসিবি সভাপতি ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
পাপন বলেন, 'নাজমুল হোসেন শান্তকে সব ফরম্যাটের নতুন অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ বছর টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন তিনি।’
আরও পড়ুন: বিপিএল ২০২৪: সাকিবের পারফরম্যান্সে পঞ্চম জয় পেল রংপুর
বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজে সাকিবের অধিনায়কত্ব চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এরপরই এরকম সিদ্ধান্ত এল বিসিবির পক্ষ থেকে।
টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে শান্তর নিয়োগ বিস্ময়কর হতে পারে, কারণ এই ফরম্যাটে সাকিব বাংলাদেশের হয়ে নিয়মিত ছিলেন। তবে বেশ কিছু কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন নাজমুল হাসান।
বিসিবি সভাপতির ব্যাখ্যা, 'সাকিব তার দৃষ্টিশক্তি নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন। শ্রীলংকার বিপক্ষে আসন্ন সিরিজ এবং বিশ্বকাপের কথা ভেবে আমরা অনুভব করেছি যে নতুন অধিনায়ক নিয়োগ এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই পরিবর্তন বিশ্বকাপের নির্বিঘ্ন প্রস্তুতিতে সহায়ক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিসিবি সভাপতি।
সাকিবের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে নিজের নেতৃত্বের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন শান্ত। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় অধিনায়ক হিসেবে আরও দীর্ঘ সময় কাটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিপিএল ২০২৪: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে উড়িয়ে দিল রংপুর রাইডার্স
বাংলাদেশের হয়ে ছয়টি ওয়ানডে, তিনটি টি-টোয়েন্টি এবং দুটি টেস্টে তিনটি জয় নিয়ে একটি সফল অধিনায়কত্বের রেকর্ড রয়েছে শান্তর ঝুলিতে। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক হিসেবেও নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন তিনি।
সহঅধিনায়কের পদ এখনো ফাঁকা রয়েছে। এই পদে বেশ কয়েকটি নাম বিবেচনাধীন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বোর্ড সভাপতি। টেস্ট ও ওয়ানডে ফরম্যাটের জন্য বাংলাদেশের আলাদা সহঅধিনায়ক থাকতে পারে।
পূর্ণকালীন অধিনায়ক হিসেবে শান্তর প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট হতে যাচ্ছে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনটি টি-টোয়েন্টি, তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টেস্ট। সিলেট ও চট্টগ্রামের দুটি ভেন্যুতে হবে এই সিরিজ।
আরও পড়ুন: বিপিএল ২০২৪: টাইগারদের বিপক্ষে স্বাচ্ছন্দ্যে ফিরল স্ট্রাইকার্স
বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় রয়েছে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ শেখ হাসিনাকে সমর্থন দিচ্ছে বলে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন যদি না হতো তাহলে আমরা সুলতানগঞ্জে আসতে পারতাম না।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ও ভারত অভ্যন্তরীণ নৌপথ অতিক্রমণ ও বাণিজ্য প্রটোকলের (পিআইডব্লিউটিটি) আওতায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জে ‘সুলতানগঞ্জ পোর্ট অব কল’ এবং ‘সুলতানগঞ্জ-মায়া’ নৌপথে নৌযান যাত্রার উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বাল্কহেড ধাক্কা দেওয়ায় ফেরিডুবির ঘটনা ঘটেছে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
এরপর সুলতানগঞ্জ হাইস্কুল মাঠে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আতঙ্কে থাকত। উন্নয়নের চাকা ৭৫ এর মতো উল্টোদিকে ঘুরিয়ে দিতে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অর্থবহ, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অকুণ্ঠ সমর্থনের কারণে শেখ হাসিনার হাত আরও শক্তিশালী হয়েছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আগামী দিনে দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, শেখ হাসিনার ডাইনামিক নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা নির্মিত হয়েছে।
তিনি অরও বলেন, ‘কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব’ এ নীতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় চলে গেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। সৌদিআরবসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডে সরাসরি চলবে জাহাজ : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য একটি মহল তৎপর ছিল। বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় চলে গেছে।
ভারতীয় রুপির মাধ্যমে বাণিজ্যে বাংলাদেশি রপ্তানি বাড়বে: হাইকমিশনার
উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং ভারতীয় রুপির মাধ্যমে বাণিজ্যের মতো নতুন পদক্ষেপ বাংলাদেশি রপ্তানি আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) তিনি বাংলাদেশের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে গোদাগাড়ীর সুলতাগঞ্জ বন্দরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নদী যোগাযোগ রুট চালু করতে সুলতানগঞ্জ (বাংলাদেশ) থেকে মায়া (ভারত) পর্যন্ত একটি পণ্যবাহী জাহাজের যাত্রার সূচনা করেন।
আরও পড়ুন: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের হাইকমিশনার ও রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
হাইকমিশনার ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও সংযোগের অংশ এবং তাদের সম্পর্কের সাম্প্রতিক রূপান্তরের দৃশ্যমান প্রতীক হিসেবে নতুন নৌ রুটটিকে উল্লেখ করেন।
তিনি দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রকৃত সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বহুমুখী যোগাযোগের উপর গুরুত্ব দেন এবং মায়া-সুলতানগঞ্জ নদীপথ পুনরায় চালুর বিষয়টিকে একটি পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
হাইকমিশনার বলেন, এটি কেবল সীমান্তের দুই পাশের স্থানীয় অর্থনীতিকেই উপকৃত করবে না, জাতীয় অর্থনীতিতেও অবদান রাখবে এবং উপআঞ্চলিক সহযোগিতা ও সংহতি জোরদার করবে।
হাইকমিশনার আরও বলেন, ভারত আজ এশিয়ায় বাংলাদেশের বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (সিইপিএ) কথা উল্লেখ করে হাইকমিশনার বলেন, এর জন্য শিগগিরই আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনারের বৈঠক
গোদাগাড়ী সুলতানগঞ্জ বন্দর উদ্বোধনের পর বাংলাদেশের সুলতানগঞ্জ থেকে ভারতের মায়া ঘাটের উদ্দেশে একটি পণ্যবাহী জাহাজ ছেড়ে যায়। ইন্দো-বাংলাদেশ প্রটোকল রুট (আইবিপি) রুট ৫ ও ৬ এ ভারতের মায়া বন্দর থেকে বাংলাদেশের সুলতানগঞ্জ বন্দরের মধ্যে পরীক্ষামূলক পাঁচটি পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের প্রথমটি এটি।
এই আইবিপি রুটের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা রয়েছে, যা উভয় দেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথ বাস্তুতন্ত্রে নতুন গতি সঞ্চার করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান (লিটন), রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুল ওয়াদুদ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল।
এ সময় বিআইডব্লিউটিএ ও বাংলাদেশ সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে প্রবাসীদের প্রতি হাইকমিশনার আল্লামা সিদ্দীকীর আহ্বান
বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে উচ্চতর মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে আরও উচ্চতর মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।
রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘অংশগ্রহণমুলক উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ ও স্মার্ট সোনার বাংলা গড়তে চাই আমরা। পরিকল্পিত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আমরা হোল অব সোসাইটি অ্যাপ্রোচে কাজ করতে চাই। সুতরাং স্মার্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা গড়ার যাত্রায় আপনারাও অংশীজন।’
আরও পড়ুন: সাবেক ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এবাদুর মারা গেছেন
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা যে সারা বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে সম্মান পেয়েছে, সেটির একটি উল্লেখযোগ্য কারণ অংশীদার প্রতিষ্ঠানসমূহের অকুণ্ঠ সহযোগিতা ও অংশগ্রহণ।
তিনি বলেন, ‘আপনারাও এই কৃতিত্বের অংশীদার। আমি আপনাদের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে আরও আধুনিক, কার্যকর ও জনমুখী করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, আজ আমরা ‘আর্লি ওয়ার্নিং ফর অল’নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানলাম। এটিকে গতিশীল করতে রোড ম্যাপ প্রণয়ন করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য আমাদের আরও কাজ করতে হবে।
এ বিষয়ে আমার সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।
মন্ত্রী বলেন, কয়েকটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও প্রস্তাবনা নির্ধারণ করে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করেছি। এর অন্যতম লক্ষ্য হলো- সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা গড়া।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, ড্রোন টেকনোলজি গ্রহণ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার উপযোগী করার উপর গুরুত্বারোপ করেন প্রতিমন্ত্রী। এর পাশাপাশি অবকাঠামোগত পরিকল্পনা ও প্রকল্পগুলো অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সরকার জোড়ালোভাবে কাজ করছে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘সেগুলোকে আধুনিক ও সম্প্রসারিত করার জন্য আমরা আরও পরামর্শ সভা করব। মোট কথা আমরা সবাই মিলে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অন্যতম অংশীদার হতে চাই। আমাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এমনভাবে গড়ে উঠবে, যাতে উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগঘটিত সব বাধা দূর হবে।’
মন্ত্রী বলেন, যেসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমরা প্রতিরোধ করতে পারব না, সেগুলোর ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা যেন সর্বনিম্ন থাকে।
তিনি আরও বলেন, দুর্যোগের শিকার এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা। গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোসমূহকে দুর্যোগের ক্ষতি থেকে রক্ষা করা। আমাদের মূল উদ্দেশ্য উন্নয়নকে টেকসই করা। এর পাশাপাশি দুর্যোগ সহনশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলাও আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
আরও পড়ুন: দুর্যোগ উত্তর পুনর্গঠনে প্যারাডাইম শিফটে কাজ করছে সরকার: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দে আতঙ্ক টেকনাফে
মিয়ানমার থেকে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে ও শনিবার সকালে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে।
হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, ‘শুক্রবার রাতে সীমান্তের ওপারে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। শনিবার সকাল থেকেই গুলির মাত্রা বাড়তে থাকে।’
আরও পড়ুন: নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রোহিঙ্গা ‘ইয়াবা কারবারি’ নিহত
তিনি আরও বলেন, স্থানীয়রা নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে যাচ্ছেন এবং মাছ চাষিরা ঘেরে যেতে পারছেন না।
ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের বাংলাদেশ অংশে একটি মর্টার শেল এসে পড়ে।
তিনি বলেন, ‘গত দুই দিন ধরে সীমান্ত শান্ত থাকলেও শনিবার থেকে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে।’
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে দুই সপ্তাহ ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তার সশস্ত্র বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তুমুল লড়াই, সংঘর্ষ ও গোলাগুলির মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন: ২০১৭ সালের চুক্তির ভিত্তিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে অঙ্গীকারবদ্ধ মিয়ানমার: দেশটির মন্ত্রী
সীমান্তে সংঘাতের আশঙ্কায় বুধবার দুপুর পর্যন্ত মিয়ানমারের তিন শতাধিক সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে, সোমবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপায়তলী গ্রামের আকেটি বাড়ির রান্নাঘরে মিয়ানমারের দিক থেকে আসা মর্টার শেল আঘাত করে। এতে এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা পুরুষ নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: বছরের ২য় প্রান্তিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ
মিয়ানমার থেকে আসা মর্টারশেল নিস্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ ভূখন্ডে আসা একটি মর্টারশেল নিস্ক্রিয় করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে দিকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের নয়াপড়া সীমান্তে ঘটনাটি ঘটে।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াপাড়ায় অবিস্ফোরিত মর্টারশেলটি পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সেনাবাহিনীর নবনিযুক্ত সিজিএস-পিএসও’র সাক্ষাৎ
বিজিবির সদর দপ্তর জানায়, নয়াপাড়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল মিয়ানমার থেকে আসা অবিস্ফোরিত মর্টার শেলটি নিষ্ক্রিয় করে। এসময় বিজিবি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যে তৎপর সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের সময় বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যরা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় এই প্রাণঘাতী শেলটি ফেলে রেখে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন বিজিবি সদস্যরা।
আরও পড়ুন: নির্বাচন ২০২৪: সারাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন
সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন চেয়ে আপিল বিভাগে ইনসানিয়াতের মামলা
সীমান্ত উত্তেজনায় ক্রসফায়ারের মুখে বাংলাদেশ: বিএনপি
মিয়ানমার ও ভারত সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিক হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশ এখন ক্রসফায়ারের মুখে।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়।
দলটির স্থায়ী কমিটি বলেছে, আওয়ামী লীগ ভারত, চীন ও রাশিয়ার সমর্থন নিয়ে এসব দেশকে বিভিন্ন 'অবৈধ অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক' সুবিধা দিয়ে ক্ষমতায় টিকে আছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সংবাদ সম্মেলনে বলেন, একদিকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুরু করে ভারতের সীমান্তে আমাদের বিজিবি সদস্য ও লোকজন গুলিবিদ্ধ হচ্ছে, অন্যদিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া ও মর্টার শেলের আঘাতে দুজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। রাখাইন রাজ্য থেকে সেনারা পালিয়ে এসে (আমাদের দেশে) আশ্রয় নিচ্ছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ এখন ক্রসফায়ারের মুখে।
বাংলাদেশ সীমান্তে বিরাজমান উত্তেজনার পেছনের কারণ কী হতে যাচ্ছে এবং কী হতে যাচ্ছে তা ভেবে দেখার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
নানা ব্যর্থতা ও সমস্যা থেকে বাংলাদেশের মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে কি না, সে প্রশ্নও তোলেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, 'যারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের গোপন সম্পর্ক আছে কি না... সরকার এর আগেও জনগণকে বিভ্রান্ত করতে একের পর এক ইস্যু তৈরি করেছে।’
মিয়ানমার সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলে সীমান্ত সমস্যা সমাধানে সরকার প্রয়োজনীয় ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: জনগণের কাছে তওবা করে বিএনপিকে রাজনীতিতে আসার আহ্বান নানকের
বিএনপি বলেছে, মিয়ানমারের মতো দেশ কখনো বাংলাদেশে গুলি চালানোর সাহস পায়নি। এখন কেন তারা এটা করার সাহস পাচ্ছেন? এই বিষয়টি আপনাদের সকলকে ভাবতে হবে... কোথায় যাচ্ছে আমাদের দেশ?
তিনি সীমান্ত সমস্যার বিষয়ে সরকারকে যথাযথ উদ্যোগ নিতে বাধ্য করতে জনগণকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের নাগরিকরা এখন যেভাবে চারদিক থেকে আক্রান্ত হচ্ছেন, তা থেকে রক্ষা করতে হবে।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তার সশস্ত্র বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র লড়াই, সংঘর্ষ ও গোলাগুলির মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সীমান্তে সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার দুপুর পর্যন্ত মিয়ানমারের অন্তত ৩২৭ জন সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে, সোমবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপৈতলী গ্রামের রান্নাঘরে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা পুরুষ নিহত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে গয়েশ্বর দাবি করেন, বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ‘ফ্যাসিবাদী সরকার নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ভারত, চীন ও রাশিয়াকে অবৈধ অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক সুবিধা দিয়ে তাদের সমর্থন নিয়েছে।’
তিনি বলেন, তাদের দল দেশবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে। তিনি বলেন, ‘আমরা চলমান আন্দোলনে আছি। আন্দোলনের গতি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দিকে রূপ নেয়।’
বিএনপি নেতা বলেন, বিরোধী দলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জনগণ নির্বাচন ও এর ফলাফল প্রত্যাখ্যান করায় ৬২টি রাজনৈতিক দলের ৭ জানুয়ারি 'একতরফা' নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত সঠিক ও যৌক্তিক ছিল।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষ ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে একতরফা নির্বাচনের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ জানিয়েছে। ‘জনগণের এই স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন বিএনপির রাজনীতির সফলতা ও বিজয়ের বহিঃপ্রকাশ।’
গয়েশ্বর দাবি করেন, ৭ জানুয়ারির 'প্রহসনমূলক' নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ‘বরং অবৈধ, অনৈতিকতা ও অসাংবিধানিকভাবে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনের নামে জাতির সঙ্গে চরম প্রতারণা করা হয়েছে। ২০২৪ সালে ডামি প্রার্থী, ডামি পার্টি, ডামি ভোটার এবং ডামি পর্যবেক্ষকদের নিয়ে একটি ডামি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
বিএনপির মতো পৃথিবীতে এমন কোনো রাজনৈতিক দল আছে কি না, যেখানে ৫০ লাখের বেশি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা রাজনৈতিক মামলা দেওয়া হয়েছে। সেই প্রশ্নও তোলেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও তার অনুগত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের ২ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে এবং প্রায় ৭০০ নিরীহ মানুষকে গুম করেছে। গয়েশ্বর প্রশ্ন তুলে বলেন, আসন ভাগাভাগির নির্বাচনের আগে ফ্যাসিস্ট সরকার কেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ২৫ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করল?
কারাগারে তাদের দলের ১১ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির ৫০ লাখ নেতা-কর্মী তাদের জীবনে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তারা পুলিশ ও বিচার বিভাগের অবিচার ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের আকাশছোঁয়া মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির জন্য সরকারের সমালোচনা করেন তিনি।
গয়েশ্বর আরও বলেন, 'দেশের ১৮ কোটি মানুষ রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ শেখ হাসিনার দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়। জনগণও আশা করে, বিএনপির আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জনবিরোধী ও ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাত করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে বিএনপির নেতৃত্বে রাজপথে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অচিরেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সরকারের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় বিপদাপন্ন হয়ে পড়েছে সীমান্ত : বিএনপি
নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করছে বিএনপি-জামায়াত: প্রধানমন্ত্রী