প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন প্রধানমন্ত্রীর
যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন। তিনি ১৯৯৭ সালে এই চ্যান্সারি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং ২০০০ সালে নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বুধবার বিকালে দূতাবাসে পৌঁছালে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান ফুলের তোড়া দিয়ে তাকে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রী প্রথমে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্ণারে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে তিনি সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে পথ শিশুদের নিয়ে কেক কাটলেন পলক
পরে তিনি বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
তিনি শহিদ মিনার ও বঙ্গবন্ধু কর্ণারসহ দূতাবাসের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে নৌকা বাইচের আয়োজন করবে বিআইডাব্লিউটিএ
আ. লীগ ক্ষমতায় না থাকলে দেশ আবার অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে: প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি
প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে রওশনের শুভেচ্ছা
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) অভিনন্দন বার্তায় বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, গতিশীল নেতৃত্ব, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, মানবিক মূল্যবোধ, বিচক্ষণতা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু দেশেই নন, বহির্বিশ্বেও অন্যতম সেরা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ক্রান্তিলগ্নে বাঙালি জাতিকে সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে গৌরবের আসনে সমাসীন করেছেন রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তার অসাম্প্রদায়িক, উদার, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও বিজ্ঞানমনস্ক দৃষ্টিভঙ্গি তাকে দিয়েছে এক আধুনিক ও অগ্রসর রাষ্ট্রনায়কের স্বীকৃতি।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন রওশন এরশাদ
রওশন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার কাজে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজনীতিতে তার সুদীর্ঘ পথচলা মোটেই কণ্টকমুক্ত ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিন্তু তিনি তার প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা, সাহস ও সাংগঠনিক দক্ষতাবলে সব প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা এবং নানা ধরনের ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছেন।
বিরোধীদলীয় নেতা প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করে বলেন, পরম করুণাময় আল্লাহতালা তার সহায় হোন। যাতে তিনি দেশ থেকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত, দুর্নীতি, সন্ত্রাস নির্মূল করতে পারেন এবং দেশবাসীকে সুশাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার ও উন্নত জীবন গঠনে সহায়তা করতে পারেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে পথ শিশুদের নিয়ে কেক কাটলেন পলক
রওশন এরশাদের অসুস্থতার সুযোগে কিছু লোক তার সইয়ে কাগজ তৈরি করছে: জিএম কাদের
প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে পথ শিশুদের নিয়ে কেক কাটলেন পলক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিনে সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের নিয়ে কেক কাটলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেটেপ্টম্বর) প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের নিয়ে কেক কাটা ও বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালায় স্মার্ট চিলড্রেন কার্নিভালে এ আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে সরকারের অর্জন নিয়ে ১১৩৭ ভিডিও কন্টেন্ট প্রকাশ
এসময় উপস্থিত সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কেক খাইয়ে দেন এবং স্মার্ট চিল্ড্রেন কার্নিভালে স্থাপিত বিভিন্ন স্টলে গিয়ে তাদের সঙ্গে খেলায় অংশ নেন প্রতিমন্ত্রী।
এই উপলক্ষে প্রতিমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, নগরীতে শিশুদের জন্য আয়োজন থাকে একেবারে কম। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের কর্ণধারদের আনন্দ দিতে তেমন উদ্যোগ নেই বললেই চলে। সেজন্যই বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশুদের নিয়ে একটি আনন্দঘন পরিবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপন করতেই এই বিশেষ আয়োজন হাতে নিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেধা-শ্রম দিয়ে, অসাধ্য সাধনের মাধ্যমে কীভাবে সংগ্রামী জীবনে জয়ী হওয়া যায় তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানাতেই আইসিটি বিভাগ ‘শেখ হাসিনা অ্যান্ড ফ্রেন্ডস’ তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার জন্মদিন সোমবার, প্রায় একযুগ পর দেশে উদযাপন
কেক কাটা অনুষ্ঠানে শতাধিক সুবিধাবঞ্চিত শিশু অংশ নেয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
উল্লেখ্য, গতকাল বাংলা একাডেমির এই চিত্রশালায় দেশে এই প্রথমবারের মতো আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে শুরু হয়েছে ৪ দিনের "স্মার্ট চিলড্রেন কার্নিভাল"। বৃহস্পতিবার এর দ্বিতীয় দিন। এ চিলড্রেন কার্নিভালে শিশুদের বিভিন্ন ধরনের ইন্টারেক্টিভ গেমিংসহ খেলতে খেলতে পরিবেশ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ডিজিটাল সংযোগ নিয়ে জানার ও শেখার ব্যবস্থা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে আইসিটি সচিব মো. সামসুল আরেফিন, বিসিসি নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার জন্মদিনে সোমবার ১২ টিভি চ্যানেলে ‘হাসিনা: অ্যা ডটারস টেল’
আ. লীগ ক্ষমতায় না থাকলে দেশ আবার অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে: প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে দেশ আবার অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে দেশ আবার অন্ধকার যুগে ফিরে যাবে।’
বুধবার ওয়াশিংটনের হলিডে এক্সপ্রেস ইন হোটেলে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি জানি, বাংলাদেশের মানুষ অন্ধকারে ফিরে যেতে চাইবে না।’
বিএনপি-জামায়াত সরকারের ২৯ বছরকে অন্ধকারযুগ আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সময়ে তারা নিজেদের ভাগ্য গড়ে তোলা ছাড়া মানুষের জন্য কিছুই করেনি।
আরও পড়ুন: ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত চক্র বাংলাদেশের মানুষের জীবন থেকে ২৯ বছর মুছে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত সারা দেশে ব্যাপক উন্নয়ন পরিচালনা করে এই বছরের ব্যবধান কমিয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লিখিত রূপকল্প ২০৪১-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২০০৯ সাল থেকে দেশে অব্যাহত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও স্থিতিশীলতার পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে দেশ পরিচালনা করায় বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে দেশের যাত্রা শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে যাত্রা সহজ করার উপায় খুঁজতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমি জানি, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের যাত্রায় কোনো অসুবিধা হবে না।’
আরও পড়ুন: ওয়াশিংটনের উদ্দেশে নিউইয়র্ক ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী
আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য হবে: নিউইয়র্কে নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী
চলচ্চিত্র নির্মাতা জাকীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
চলচ্চিত্র নির্মাতা ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাবেক মহাপরিচালক সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, খ্যাতিমান এই শিল্পীর মৃত্যুতে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, তার সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে দেশবাসী তাকে স্মরণ করবে।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
আরও পড়ুন: জিনাত বরকতউল্লাহ’র মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের ধ্বংসযজ্ঞ: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর গভীর শোকপ্রকাশ
রোহিঙ্গাদের ভুলে যাবেন না: বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমারের সৃষ্ট সংকট সমাধানে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা ও তাদের প্রত্যাবাসন বিষয় এজেন্ডার শীর্ষে রাখতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম উচ্চ পর্যায়ের সাইড ইভেন্টে 'হ্যাভ দে ফরগটেন আস?' এবং মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বৈশ্বিক সংহতি অব্যাহত রাখার বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, ‘এই দুর্দশাগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের জীবনধারণের জন্য আমাদের মানবিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখুন।’
তিনি আরও বলুন, ‘এই জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত, নিয়মে পরিণত করা ও ঘৃণ্য নৃশংসতাকারী অপরাধীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য চলমান ও প্রচলিত আইনি এবং বহুপক্ষীয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করুন।’
তিনি স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনকে সবচেয়ে কার্যকর করে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করতে সমন্বিত প্রচেষ্টা বহুগুণ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: 'উষ্ণ আতিথেয়তার' জন্য জো বাইডেনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কন্যা পুতুল
বাংলাদেশসহ কানাডা, গাম্বিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ পৃষ্ঠপোষকতায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু এখন স্থবিরতার পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত ৬ বছরে বাস্তুচ্যুত একজন রোহিঙ্গাও মিয়ানমারে তাদের বাড়িতে ফিরতে পারেননি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে তাদের দীর্ঘদিনের উপস্থিতি শুধু তাদেরকে হতাশার দিকে ঠেলে দিচ্ছে না; এটি কক্সবাজারের পরিস্থিতিকেও অনিশ্চিত করে তুলছে। আশ্রয়দাতা সম্প্রদায় আজ তাদের উদারতার শিকারে পরিণত হয়েছে।’
সর্বোপরি, তিনি বলেন, তাদের চাহিদার প্রতি বিশ্বব্যাপী মনোযোগ দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। এটি মানবিক সহায়তা পরিকল্পনায় ক্রমবর্ধমান অর্থায়নের অভাব স্পষ্ট।
শেখ হাসিনা বলেন, সমগ্র বিশ্ব অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন ও অন্যান্য অনেক কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা যে রেকর্ড পরিমাণ উচ্চতায় পৌঁছেছে, সে বিষয়ে তারা অবগত আছেন।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘বিশ্ব রোহিঙ্গাদের ভুলে যেতে পারে না কেননা ২০১৭ সালে তাদের দেশত্যাগ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না এবং তারা কয়েক দশক ধরে মিয়ানমারে নিপীড়ন ও বিতাড়িত হওয়ার শিকার হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, তাদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিকারে এগিয়ে আসতে সকলেরই দায়িত্ব রয়েছে। তাদের ভরণপোষণের জন্য মানবিক সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ, তবে এটিই সব কিছু নয়।
আরও পড়ুন: শুক্রবার ইউএনজিএ-তে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এসডিজি অর্জনের অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 'সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ' সম্পর্কিত এসডিজি-৩ সহ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা কোভিড-১৯ মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধ ও জলবায়ু সংকট থেকে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও এসডিজি অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
বুধবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনের পার্শ্ব ইভেন্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মা, নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্য অংশীদারিত্বের (পিএমএনসিএইচ) চেয়ার হেলেন ক্লার্ক সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের প্রথম নারী মহাসচিব পাওয়ার সময় এসেছে: ইউএনজিএ প্ল্যাটফর্মে প্রধানমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রীর কার্যক্রম সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার এর স্বাস্থ্যসেবা সকলের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার অনুযায়ী চলতি অর্থবছর ২০২৩-২৪ সালে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ২৭ শতাংশ বৃদ্ধির পাশাপাশি জাতীয় স্বাস্থ্য খাতের কৌশলগত পরিকল্পনা (২০১১-২০৩০) বাস্তবায়ন করছে।
বৈঠকে হেলেন ক্লার্ক শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে স্বাস্থ্য খাতে সার্বিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ‘সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে মা ও শিশুমৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
আরও পড়ুন: আসন্ন জলবায়ু সংকট এড়াতে প্রধান অর্থনীতিগুলোকে অবশ্যই ন্যায্য অংশীদারিত্ব করতে হবে: জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী
কোভিড-১৯ এর মতো আরেকটি মহামারি প্রতিরোধে বিশ্বকে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে: জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ এর মতো ভবিষ্যত মহামারি মোকাবিলায় উত্তম চর্চা বাড়িয়ে ও অতীতের ভুলগুলো এড়িয়ে সম্মিলিত শিক্ষা গ্রহণের জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দপ্তরে মহামারি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া (পিপিপিআর) বিষয়ক এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বলেন, ‘সমতা ও সংহতি অবশ্যই আমাদের প্রচেষ্টার প্রাণভোমরা তৈরি করবে।’
এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তিনি ৫টি অগ্রাধিকারের কথা উল্লেখ করেছেন, যেগুলো হলো:
প্রথম- উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য রেয়াতযোগ্য আন্তর্জাতিক অর্থায়ন;
দ্বিতীয়- মহামারি নজরদারি, প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে মোকাবিলার জন্য সম্পদ ও দক্ষতা একত্রিত করা;
তৃতীয়- সকলের জন্য ভ্যাকসিনসহ মানসম্পন্ন, সাশ্রয়ী ও কার্যকর মহামারি পণ্যগুলোর ন্যায়সঙ্গত ও অবাধ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা;
চতুর্থ- প্রযুক্তির প্রাপ্যতা ও বাস্তব জ্ঞানের মাধ্যমে মহামারি পণ্যগুলোর উৎপাদন বৈচিত্রকরণ;
পঞ্চম- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে প্রাপ্যতা ও সুবিধা ভাগ করে নেওয়ার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কাঠামো তৈরি করা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে জাতিসংঘ স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলের জন্য সম্মাননা পেলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘এ লক্ষ্যে আমরা একটি মহামারি চুক্তি ও আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিধিমালার (২০০৫) সংশোধনী থেকে ন্যায্য এবং সুনির্দিষ্ট ফলাফল দেখার আশা করি। বাংলাদেশ উভয় প্রক্রিয়ার সঙ্গে গঠনমূলকভাবে জড়িত থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের সকলের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে হাজির হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সারা বিশ্বে অনেককে হারিয়েছি। আমরা বুঝতে পেরেছি, মানুষের হস্তক্ষেপের জন্য প্রকৃতির নিজস্ব সীমা রয়েছে। আমরা বিশ্ব সংহতির অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতাও পেয়েছি। আমরা স্বীকার করেছি, সবাই নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত আমরা কেউই নিরাপদ নই।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ কোভিড-১৯ এর প্রভাবের বাইরে ছিল না।
তিনি বলেন, ‘তবুও, আমরা কোভিড-১৯ পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে একটি বৈশ্বিক সূচকে ৫ম স্থানে রয়েছি। শুরু থেকেই আমাদের জীবন বাঁচানো ও জীবিকা রক্ষার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়েছে।’
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে সরকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় একটি জাতীয় প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
প্রথম দিকে ডব্লিউএইচও’র সহায়তায় একটি জাতীয় প্রস্তুতি ও পরিস্থিতি মোকাবিলা পরিকল্পনা গ্রহণ করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা গরিবদের জন্য বিনামূল্যে ওষুধ ও পিপিই (ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম) সরবরাহ নিশ্চিত করি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি করি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে জাতিসংঘ স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলের জন্য সম্মাননা পেলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, শূন্য থেকে ৮৮৫টি কেন্দ্রে পরীক্ষাগার স্থাপন করা হয়। প্রায় সমস্ত হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় ১১ হাজার ডাক্তার ও ১৩ হাজার মেডিকেল সাপোর্ট স্টাফ নিয়োগ করা হয়। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৬ শতাংশে সীমিত রাখাসহ আমাদের ফ্রন্টলাইন কর্মীরা বিস্ময়করভাবে কাজ করেছে।
তিনি আরও বলেন, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পরিচালনার জন্য একটি ডেডিকেটেড ডিজিটাল অ্যাপ চালু করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কমপক্ষে দ্বিতীয় ডোজ দিয়ে ৯৩ শতাংশ ভ্যাকসিন কভার করেছি। আমি মহামারি ভ্যাকসিনগুলোকে বিশ্বব্যাপী জনসাধারণের পণ্য হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ২৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের একটি প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ৪ কোটিরও বেশি নিম্ন আয়ের মানুষকে সরাসরি খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। বাংলাদেশ অন্যান্য বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর পাশাপাশি বিদেশে অবস্থানরত অভিবাসী কর্মীদের দিকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।’
আরও পড়ুন: বাইডেনের নৈশভোজে যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী
চলমান সংকট মোকাবিলায় বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্গঠনে ৫ দফা প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বব্যাপী চলমান আর্থিক সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব আর্থিক ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তন প্রয়োজন।
মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে 'টুওয়ার্ডস আ ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার' শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে তিনি আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্গঠনে ৫ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন।
সেগুলো হলো:
প্রথমত, এমডিবি (বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংকসমূহ), আইএফআই (আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ) ও বেসরকারি ঋণদাতা সংস্থাগুলোকে অবশ্যই তাদের অগ্রাধিকার পুনরায় একত্রিত করতে হবে এবং এসডিজি বাস্তবায়ন ও জলবায়ু পদক্ষেপের জন্য অতিরিক্ত তহবিল সংগ্রহ করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য কম খরচে, ছাড়ের হারে এবং বিশেষত উচ্চ পরিমাণে অনুদানে তহবিল উপলব্ধ করা দরকার।
তৃতীয়ত, সমস্ত ঋণপ্রদানকারী উপকরণের দুর্যোগের ধারা থাকা উচিৎ, যাতে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো সংকটের সময় ধাক্কা মোকাবিলা করতে পারে।
চতুর্থত, ঋণদাতাদের মধ্যে সমন্বয় ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে ন্যায্য ও কার্যকর ঋণ ত্রাণ ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
পঞ্চমত, কোটার পরিবর্তে এসডিআর (স্পেশাল ড্রইং রাইটস) ঋণসীমা প্রয়োজন এবং দুর্বলতার ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিৎ, যা হবে সহজ ঋণ প্রক্রিয়া দ্বারা সমর্থিত।
আরও পড়ুন: উন্নয়নশীল বিশ্বে কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রচার করুন: উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামোর জরুরি সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু সংস্কারের প্রকৃতি ও ব্যাপ্তি নিয়ে সমঝোতার অভাব রয়ে গেছে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক পাবলিক অর্থায়ন ব্যয়বহুল এবং নাগালের বাইরে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ঋণের সংকট এড়াতে উচ্চ সুদের হারের ঋণ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি। বাংলাদেশ কখনোই ঋণ পরিশোধে খেলাপি হয়নি এবং আমরা আশা করি এই রেকর্ড বজায় থাকবে।’
জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈশ্বিক ক্রেডিট রেটিং সিস্টেম অবশ্যই পর্যালোচনা করা উচিৎ বিষয়ে একমত পোষণ করে তিনি বলেন, বর্তমান রেটিং সিস্টেম অনেক নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের জন্য তহবিলের প্রাপ্যতাকে আরও সীমাবদ্ধ করে।
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের ভোটাধিকার, কোটা এবং এমডিবি ও আইএফআই-তে প্রতিনিধিত্বের সীমাবদ্ধতাও তাদের দর কষাকষির ক্ষমতাকে হ্রাস করে।’
শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামোর জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং গ্লোবাল সাউথের প্রতিনিধিত্ব করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর উন্নয়নের বিবরণ প্রমাণ করে যে আমরা আমাদের ভূমিকা পালন করতে পারি। সময় এসেছে আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার আমাদের প্রত্যাশার প্রতি সাড়া দেওয়ার।’
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
সুদৃঢ় সামষ্টিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশকে দীর্ঘদিন ধরে কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারির ঠিক আগে আমাদের অর্থনীতি ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।’
তিনি বলেন, কোভিড মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশের অর্থনীতি চাপের মধ্যে ছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও আমরা এখনও ৬-৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি বজায় রাখছি; আমরা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, পেমেন্টের ভারসাম্য পরিচালনা এবং আমাদের উন্নয়ন ব্যয় বজায় রাখার চেষ্টা করছি। আমাদের আর্থিক এবং নীতির জায়গাতে স্পষ্ট চাপ রয়েছে।’
তিনি বলেন, তার সরকার দেশে দারিদ্র্যের মাত্রা ৪১ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্যের মাত্রা ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছে।
আরও পড়ুন: ৭৮তম ইউএনজিএ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
উন্নয়নশীল বিশ্বে কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রচার করুন: উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নশীল বিশ্বে কমিউনিটি-কেন্দ্রিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে বহুপক্ষীয় অর্থায়ন প্রতিষ্ঠানসহ উন্নয়ন অংশীদারদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে, বাংলাদেশ আগ্রহীদের সঙ্গে আমাদের অন্তর্দৃষ্টি ও দক্ষতা ভাগ করে নিতে প্রস্তুত। সকল সুখের মূলে রয়েছে স্বাস্থ্য। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চারিদিকে সুখ ছড়িয়ে দিতে চাই।’
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সদর দপ্তরে 'শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ অব কমিউনিটি ক্লিনিকস: ইনোভেশন অ্যাপ্রোচ টু অ্যাচিভিং ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ ইনক্লুসিভ অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ডায়াবেটিস' শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের সাইড-ইভেন্টের প্লেনারি সেশনে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।
অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, বাংলাদেশ, ভুটান, চীন এবং মালয়েশিয়া যৌথভাবে এই উচ্চ পর্যায়ের ইভেন্ট আয়োজন করে।
তিনি উল্লেখ করেন, সর্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ অর্জনের মূল চাবিকাঠি হলো কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা।
তিনি বলেন, ‘গ্লোবাল সাউথের উদীয়মান কণ্ঠস্বর হিসেবে বাংলাদেশ অর্থবহ আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের সম্ভাব্য উপায় হিসেবে এই ইস্যুটিকে সমর্থন করবে।’
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য ৫টি অগ্রাধিকারের বিষয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।
সেগুলো হলো:
প্রথম: কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে তৃণমূল পর্যায়ে দ্বাররক্ষী হিসেবে কাজ করা, যাতে স্বাস্থ্যসেবার জন্য পকেটের বাইরে বিপুল অর্থ প্রদান রোধ করা যায়;
দ্বিতীয়: কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে উন্নত ডিজিটাল স্বাস্থ্য এবং ডায়াগনস্টিক পরিষেবা প্রদানে সক্ষম করা, বিশেষত এনসিডিগুলোর জন্য;
তৃতীয়: ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মতো ক্রমবর্ধমান জলবায়ু জনিত স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় কমিউনিটি ক্লিনিকের সক্ষমতা আরও উন্নত করা;
চতুর্থ: মানসিক স্বাস্থ্য ও স্নায়বিক ব্যাধিগুলোর জন্য স্ক্রিনিং ও চিকিৎসা সুবিধাগুলো উন্নত করা, যাতে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারগুলোকে প্রবেশযোগ্য পরিষেবা সরবরাহ করা যায়
পঞ্চম: কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে একটি শক্তিশালী ডেটা-চালিত স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কর্মসূচির জন্য প্রাথমিক বিল্ডিং ব্লক হিসেবে ব্যবহার করা
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে রবিবার নিউইয়র্ক যাবেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে সারা দেশে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে। যেগুলোকে স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা এবং পুষ্টি সম্পর্কিত পরিষেবাগুলোর জন্য একটি ওয়ান-স্টপ সেন্টার হিসেবে কাজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নবজাতক, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমাতে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রায় ৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক দক্ষ জন্মদানের জন্য সুবিধা প্রদান করে থাকে। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রতি মাসে গড়ে সাড়ে ৯ থেকে ১০ লাখ মানুষ সেবা নিতে আসেন। সেবাপ্রত্যাশীদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশই নারী ও শিশু।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সার্বজনীন টিকাদানের স্থানীয় কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এগুলোতে কোভিড-১৯ টিকা কভারেজ নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্পর্কে সজাগ থাকুন: প্রধানমন্ত্রী