হজ
সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের খরচ নির্ধারণ
সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলতি মৌসুমে হজের খরচ ছয় লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে হিসেবে গত বছরের তুলনায় খরচ এক লাখ ৬১ হাজার ৮৬৮ টাকা বেড়েছে।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভায় হজ প্যাকেজ চূড়ান্ত করা হয়। সভা শেষে কমিটির সভাপতি ও ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান সাংবাদিকের হজ প্যাকেজ সম্পর্কে জানান।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘হজ উপলক্ষে প্যাকেজ প্রস্তুত ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আজ হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় হজ প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন খাতের ব্যয় পর্যালোচনা করা হয় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজের মূল্য ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। মিনার তাঁবুর সি-ক্যাটাগরির মূল্য অনুসারে সরকারি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিনার তাবুর অবস্থান সংক্রান্ত ক্যাটাগরি গ্রহণের ভিত্তিতে বেসরকারি এজেন্সিগুলো সরকারি প্যাকেজের সাথে সামঞ্জস্য রেখে স্ব-স্ব হজ প্যাকেজ ঘোষণা করবে। তাবুর অবস্থান ছাড়া অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজের ন্যায় নিশ্চিত করতে হবে।’
গত বছর সরকারিভাবে হজে যেতে প্যাকেজ-১ এ ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩৪০ এবং প্যাকেজ-২ এ ৫ লাখ ২১ হাজার ১৫০ টাকা খরচ হয়েছে। বেসরকারিভাবে এজেন্সিগুলোর 'সাধারণ প্যাকেজ' এর মাধ্যমে হজ পালনে খরচ হয়েছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ৭৪৪ টাকা। বেসরকারি হজ প্যাকেজ বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ঘোষণা করা হবে।
গত বছরের প্যাকেজ-১ এর ক্ষেত্রে এবার খরচ বেড়েছে ৯৬ হাজার ৬৭৮ টাকা, প্যাকেজ-২ এর ক্ষেত্রে এবার খরচ বেড়েছে এক লাখ ৬১ হাজার ৮৬৮ টাকা।
গত বছর সরকারিভাবে হজে যেতে প্যাকেজ-১ এ ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩৪০ এবং প্যাকেজ-২ এ ৫ লাখ ২১ হাজার ১৫০ টাকা খরচ হয়েছে। বেসরকারিভাবে এজেন্সিগুলোর 'সাধারণ প্যাকেজ' এর মাধ্যমে হজ পালনে খরচ হয়েছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ৭৪৪ টাকা।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।
চলতি বছর হজ পালনে গত ৯ জানুয়ারি সৌদি আরবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় হজচুক্তি করেছে বাংলাদেশ।
হজচুক্তি অনুযায়ী এ বছর আগের মতোই এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে পারবেন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন। ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের হজ করার ওপর নিষেধাজ্ঞাও উঠে গেছে।
এ বছর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে সৌদি আরবে গমনকারী শতভাগ হজযাত্রীর প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন ‘রুট টু মক্কা চুক্তি’ অনুযায়ী ওই বিমানবন্দরেই অনুষ্ঠিত হবে।
গত বছর থেকে এবার হজ প্যাকেজের খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণ তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত বছর রিয়ালের মূল্য ছিল ২১ টাকা, এখন নেই রিয়ালের মূল্য ৩০ টাকা। এক লাখ টাকার বেশি এখানেই চলে আসে। আনুষঙ্গিক ব্যয় খুব একটা বাড়েনি। বিভিন্ন খাতে সমন্বয় করে এ প্যাকেজ ঘোষণা করেছি।
আরও পড়ুন: করোনা মহামারির মধ্যেই হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
এবার বিমান ভাড়া কত জানতে চাইলে ফরিদুল খান বলেন, ‘এক লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা। বিমান ভাড়া কেন বেড়েছে তা আপনাদের বিবেচনা করা উচিত। বর্তমান বৈশ্বিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিমান ভাড়া বেড়েছে। বিমান ভাড়া নিয়ে আমরা বিমান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তিনদিন বসেছি। বর্তমান সময় আমাদের অনুকূলে না থাকার কারণে বিমান ভাড়া বাড়াতে হয়েছে।’
গত বছর হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া ছিল এক লাখ ৪০ হাজার।
আগের মতো তিনটি বিমান সংস্থা (বিমান বাংলাদেশ, সৌদিয়া এয়ারলাইন্স ও নাস এয়ার) এবারও হজযাত্রীদের পরিবহন করবে বলেও জানান ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।
এবার একটি প্যাকেজ কেন- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এবার একটি প্যাকেজই আমাদের থাকবে। এটার বিষয়ে আর অন্য কোন ব্যাখ্যা নেই।’
বেসরকারিভাবে মিনায় ডি-ক্যাটাগরি অনুসারে ৬ লাখ ৫৭ হাজার ৯৬০ টাকার মতো পড়বে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মূলত আমরা ব্যয়ের খাত দিয়ে দিয়েছি। হাব (হজ এজেন্সিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) এটা নির্ধারণ করবে। সি-ক্যাটাগরি নিয়েও তারা প্যাকেজ নির্ধারণ করতে পারবে। আমরা তাদের গাইড লাইন দিয়ে দিয়েছি।’
হজ এজেন্সিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘বেসরকারি হজ প্যাকেজ আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) ঘোষণা করা হবে।’
করোনাভাইরাস মহামারির আগে ২০১৯ সালে স্বাভাবিক হজ হয়েছে। তখন বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন মানুষ হজ পালন করেন। ২০২০ সালের জন্য বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে হজ সংক্রান্ত যে চুক্তি হয়, সেখানে বাংলাদেশিদের হজযাত্রীর কোটা ১০ হাজার বৃদ্ধি করা হয়। ২০২০ সালে এক লাখ ৩৭ হাজার বাংলাদেশি হজে যেতে পারতেন। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৌদি আরবের নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশ থেকে কেউ হজ পালন করতে পারেনি। ২০২১ সালেও বিদেশিদের জন্য হজ পালনে নিষেধাজ্ঞা ছিল।
করোনা মহামারি কমে এলে গত বছর (২০২২) বিভিন্ন দেশের কোটা অর্ধেক করে হজ পালনের অনুমতি দেয় সৌদি আরব। বাংলাদেশ থেকে ৬০ হাজার মুসলমান হজ পালন করেন। করোনা মহামারির কারণে গত বছর ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের হজ পালনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা ছিলো।
আরও পড়ুন: সৌদি হজ্জ বিষয়ক মন্ত্রীর সাথে রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারীর বৈঠক
এ বছর হজ ফ্লাইটে নিজস্ব বিমান ব্যবহার করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এ বছর হজ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমান ইজারা না নিয়ে নিজস্ব বিমান ব্যবহার করবে।
জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থাটির সিইও এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম ইউএনবিকে বলেন, ‘যেহেতু আমরা লিজ প্রক্রিয়া থেকে উপকৃত হই না, তাই আমরা হজ ফ্লাইটের জন্য আমাদের নিজস্ব বিমান ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
বুধবার আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ।
বিমানের সিইও বলেন, হজ ফ্লাইট নির্বিঘ্নে পরিচালনার জন্য আমরা আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছি।
গত বছরের হজ ফ্লাইটের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটি গত বছরের হজ ফ্লাইটের জন্য তার চারটি ওয়াইডবডি প্লেন ব্যবহার করেছিল।
আরও পড়ুন: চলতি মাসেই হজ প্যাকেজ ঘোষণা: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান ইউএনবিকে বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং সৌদিয়া এয়ারলাইন্স এ বছর ৫০ শতাংশ হজযাত্রী বহন করবে।
তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালের সৌদি-বাংলাদেশ হজ চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশি হজযাত্রীরা এ বছর সম্পূর্ণ কোটা অনুযায়ী হজ করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, ২৫-৩০ জানুয়ারির মধ্যে হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে।
প্যাকেজের দাম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বছর দাম বাড়ানো হবে না।
তিনি বলেন, ‘ডলারের বর্ধিত দামের জন্য যাত্রীদের কিছুটা বেশি খরচ করতে হতে পারে।’
এ বছর মোট এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন বাংলাদেশি হজ করতে পারবেন।
ফরিদুল হক খান আরও বলেন, বয়সসীমা প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী বাংলাদেশীরা এ বছর হজ করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘রুট টু মক্কা’ চুক্তির আওতায় সকল বাংলাদেশি হজযাত্রীর প্রি-এরাইভেল ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্ন হবে। তবে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি খারাপ হলে সৌদি কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের অনুমোদিত সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে হজের জন্য সৌদির সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি
রুট-টু-মক্কা : বাংলাদেশি হজযাত্রীদের সফর সহজে সমঝোতা স্মারক সই
২০২৩ সালে হজের জন্য সৌদির সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি
চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে আগের কোটা অনুযায়ী এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করতে পারবেন। সোমবার (৯ জানুয়ারি) সকালে সৌদি আরবে এ চুক্তি হয়।
একই সঙ্গে উঠে গেছে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের হজ পালনের নিষেধাজ্ঞা। এছাড়া এমন শর্ত থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে হজ চুক্তি করেছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: অন্য দেশের কেউ এবার হজ পালন করতে সৌদি যেতে পারবে না
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন ইউএনবিকে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ‘আজ সকাল ১০টার দিকে সৌদি আরবের সঙ্গে হজ চুক্তি হয়। হজ চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এবং সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী ড. তৌফিক আল-রাবিয়াহ সই করেন।’
উপসচিব বলেন, চুক্তি অনুযায়ী এবার সরকারিভাবে ১৫ হাজার জন এবং বাকি এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজে যেতে পারবেন।
এছাড়া হজ টিমের (প্রশাসনিক ও মেডিকেল) সদস্য হিসাবে সৌদি আরবে যেতে পারবেন এক হাজার ২৭০ জন।
তিনি আরও জানান, ‘এবার রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের আওতায় শতভাগ হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন বাংলাদেশেই হবে। হজযাত্রীদের অবশ্যই কোভিড টিকা নিতে হবে। জেদ্দা দিয়ে ৭০ শতাংশ এবং মদীনা দিয়ে ৩০ শতাংশ হজযাত্রী আসা-যাওয়া করবেন।’
বাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য কার্যক্রম ই-হজ ব্যবস্থাপনার আওতায় অনলাইনে বলেও জানান আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন।
হজ চুক্তি ছাড়াও সৌদি আরবের হজ ও ওমরা কনফারেন্স এবং এক্সিবিশনেও অংশ নিতে গত ৭ জানুয়ারি সৌদি আরবে যান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল।
প্রতিনিধি দলে রয়েছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম এবং হজ এজেন্সিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম।
করোনা মহামারির আগে ২০১৯ সালে স্বাভাবিক হজ হয়েছে। তখন বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন মানুষ হজ পালন করেন।
২০২০ সালের জন্য বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে হজ সংক্রান্ত যে চুক্তি হয়, সেখানে বাংলাদেশিদের হজযাত্রীর কোটা ১০ হাজার বৃদ্ধি করা হয়।
২০২০ সালে এক লাখ ৩৭ হাজার বাংলাদেশি হজে যেতে পারতেন। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সৌদি আরবের নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশ থেকে কেউ হজ পালন করতে পারেনি।
২০২১ সালেও বিদেশিদের জন্য হজ পালনে নিষেধাজ্ঞা ছিল।
করোনা মহামারী কমে এলে গত বছর (২০২২) বিভিন্ন দেশ থেকে কোটা অর্ধেক করে হজ পালনের অনুমতি দেয় সৌদি আরব।
বাংলাদেশ থেকে ৬০ হাজার মুসলমান হজ পালন করেন।
এছাড়া করোনা মহামারীর কারণে গত বছর ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের হজ পালনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা ছিলো।
আরও পড়ুন: হজ পালনে মিনায় ১০০০ হাজি
সীমিত পরিসরে হজ পালন সঠিক সিদ্ধান্ত: ঢাকা
হজে ৬৫ বছরের বয়সসীমা নাও থাকতে পারে: প্রতিমন্ত্রী
আগামী বছর থেকে হজে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা নাও থাকতে পারে এবং হজ পূর্ণ পরিসরে হবে বলে জানিয়েছেন ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে রিলিজিয়াস রিপোর্টার্স ফোরামের (আরআরএফ) নবনির্বাচিত কমিটির নেতাদের সাক্ষাৎকালে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি সরকারের সঙ্গে আমাদের যতটুকু আনঅফিসিয়াল কথা হয়েছে। সে অনুযায়ী তাদের বিষয়ে যতটুকু জেনেছি এবার হয়তো পূর্ণ হজই হবে। গত বছর আমাদের যেটা হয়েছিল সেটা হয়তো নাও হতে পারে। এবার হয়তো রেশিও হিসাবে আমরা যতটুকু কোটা পাওয়ার ততটুকু পাবো ইনশাআল্লাহ।’
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে আরও ৭ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু
তিনি বলেন, ‘৬৫ বছরের বিধিনিষেধের বিষয়টিও এবার নাও থাকতে পারে। এ জিনিসটা আমরা এরই মধ্যে তাদের কাছে জানতে পেরেছি।’
আরআরএফের সভাপতি উবায়দুল্লাহ বাদল ও সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবলুর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা প্রতিমন্ত্রী সঙ্গে দেখা করেন।
আরও পড়ুন: ৪১৯ যাত্রী নিয়ে সিলেট থেকে হজের প্রথম ফ্লাইট ছাড়লো
সৌদি আরবে আরও ৩ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু
সৌদি আরবে আরও ৭ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু
বাংলাদেশ হজ ম্যানেজমেন্ট পোর্টাল অনুযায়ী, ৩ থেকে ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে সৌদি আরবে এক নারীসহ আরও সাত বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
নিহতরা হলেন- টাঙ্গাইলের মুস্তাফিজুর রহমান (৬১), কুষ্টিয়ার আজিজুল হক (৬৫), চাঁপাইনবাবগঞ্জের মো. শাহজাহান সিরাজ (৫৮), সিলেটের ফয়জুর রহমান (৫০), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিরিনা আক্তার (৬০), নওগাঁর মো. রফিকুল ইসলাম (৫২) ও একই জেলার আব্দুল মোত্তালিব (৫৮)।
আরও পড়ুন: ৪১৯ যাত্রী নিয়ে সিলেট থেকে হজের প্রথম ফ্লাইট ছাড়লো
পোর্টাল অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার মুস্তাফিজুর ও আজিজুল মারা যান এবং শাহজাহান ও ফয়জুর বুধবার মারা যান।
এছাড়া শিরিনা ৭ জুলাই এবং আবদুল মোত্তালিব ও রফিকুল যথাক্রমে ৪ ও ৩ জুলাই মারা যান।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ১৩ হাজারের বেশি হজযাত্রী
এতে বলা হয়, তাৎক্ষণিকভাবে তাদের মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি।
চলতি বছরের ১১ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত সৌদি আরবে পাঁচ নারীসহ ১৯ বাংলাদেশি হজযাত্রী মারা গেছেন।
এ বছর প্রায় ৬০ হাজার ২৫৬ জন বাংলাদেশি হজ পালন করেছেন।
মানবজীবনে পবিত্র ঈদুল আযহার শিক্ষা
পবিত্র হজ্জ্বের মৌসুমের সাথে সামঞ্জস্য রেখে হিজরি বর্ষপঞ্জির জিলহজ্জ্ব মাসের ১০ থেকে ১২ এই তিন দিন মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু কুরবানি করা হয়। এর মাধ্যমে মুসলমানগণ নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করে আত্মত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হন। একই সাথে প্রত্যেকের মধ্যে চেষ্টা থাকে অন্তরের পাশবিকতাকে ধ্বংস করে আত্মশুদ্ধি এবং খোদাভীতি অর্জনের। হযরত ঈসমাইল (আঃ) আল্লাহর নির্দেশে নিজ পুত্রকে কুরবানি করতে উদ্যত হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর এই আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, ভয় ও ভালোবাসার উপহার স্বরূপ আল্লাহ তাঁর পুত্রকে নিরাপদে রেখে তার স্থানে একটি দুম্বাকে রেখে দেন। ফলে ঈসমাইল (আঃ)-এর ছুড়িতে দুম্বাটি জবাই হয়ে যায়। সেই দিন থেকে বিশ্বের প্রতিটি মুসলমানের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা। চলুন জেনে নেয়া যাক, পবিত্র ঈদুল আযহার তাৎপর্যপূর্ণ শিক্ষা দিয়ে জীবনকে কিভাবে সমৃদ্ধ করা যায়।
জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পবিত্র ঈদুল আযহার ১০টি শিক্ষা
ত্যাগ-তীতিক্ষা
পৃথিবীতে বড় বড় অর্জনগুলোর নেপথ্যে রয়েছে হাজারো আত্মত্যাগ। দানবাকৃতির স্থাপনাগুলোর মধ্যে নিহিত আছে শত শত শ্রমিকের ঘাম পানি করা কষ্ট। বিশ্ব জুড়ে প্রতিটি বিপ্লবের পেছনে রয়েছে লাখ লাখ বিসর্জনের গল্প।
জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হলেও প্রতিটি মানুষকে তার আরামপ্রদ দিনগুলোকে জলাঞ্জলি দিয়ে পরিশ্রম করে যেতে হয়। আর প্রতিটি পরিশ্রম মানেই ত্যাগ-তীতিক্ষা, যার শিক্ষা যুগ যুগ ধরে দিয়ে আসছে এই কুরবানির ঈদ। জীবনে চূড়ান্ত সফলতা পেতে হলে স্বস্তির জায়গাগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হয়। ত্যাগ করতে হয় জীবনের সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটিও। এখানে কুরবানির পশুটিও সেই বস্তুগুলোকে প্রতিনিধিত্ব করছে যেগুলো আঁকড়ে পড়ে থাকার জন্য সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌছা সম্ভব হচ্ছে না।
পড়ুন: পদ্মা সেতু কোরবানির আয়োজনে অভাবনীয় সুযোগ তৈরি করেছে: মন্ত্রী
আত্মশুদ্ধি
বাহ্যিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা একটি মানুষকে যেমন বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে রাখে, মনের পরিচ্ছন্নতা তেমনি মানসিক শক্তি বাড়িয়ে তোলে। লোভ, হিংসা, অহঙ্কার, গীবত ইত্যাদি হচ্ছে মনের রোগ যেগুলো একটি মানুষকে তিলে তিলে ধ্বংস করে দেয়।
ঈদে পশু জবাই দেয়া মানে মনের পশুকে হত্যা করা, যেটি এর ধারক মানুষটি সহ তার আশেপাশের সবাইকে ক্ষতি করতে পারে। এই পশুর বিনাশের ফলে মানুষের ভেতরে থাকা ভালো ও খারাপ সত্ত্বার মধ্যে শুধুমাত্র ভালো সত্ত্বাটাই বিরাজ করতে থাকে। এই ভালো সত্ত্বাটি মানুষকে প্রতিনিয়ত সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার দিকে ধাবিত করে। এভাবে তার জীবনে আসল শুদ্ধতা আসতে শুরু করে।
দায়বদ্ধতা
যে কোন কাজের ক্ষেত্রে দায়বদ্ধতার অভাব থাকলে সেই কাজের প্রতি গুরুত্ব থাকে না। এই দায়বদ্ধতা আসতে পারে ভালবাসা থেকে, শ্রদ্ধা থেকে অথবা কোন নিয়ম মানা থেকে। মনুষ্য সমান মানেই কতগুলো সম্পর্কের সমষ্টি আর এই সম্পর্কগুলো টিকে থাকে দায়বদ্ধতার কারণে।
পড়ুন: ঈদুল আযহার বাংলা সিনেমা ২০২২: সিনেমাপ্রেমিদের ঈদ আনন্দ
একটি মানুষের সফলতা শুধু তার ব্যক্তিগত সাফল্য নয়। তার এই অর্জনের উপর নির্ভর করে তার আশেপাশের মানুষগুলো। তাই সে যখন তা ভুলে যায় তখন তা শুধু তার সাফল্যের পথেই বাধা নয়, সেই মানুষগুলোর প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যকে অবহেলা করার শামিল। কুরবানির জন্য উপযুক্ত প্রতিটি মুসলমানকে কুরবানি যথাযথভাবে পালন না করার জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। আর এভাবেই কুরবানির ঈদ দায়বদ্ধতার শিক্ষা দেয়।
সম্পদের সমবন্টন
কুরবানির মাংস সমভাবে তিন ভাগ করতে হয়। এক ভাগ ফকীর-মিসকিনের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়- স্বজনের এবং এক ভাগ নিজের জন্য। এখানে কোন এক ভাগে বেশি দেয়ার নিয়ম নেই। অবশ্য কেউ চাইলে নিজের ভাগটুকু ফকীর-মিসকিন ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে বিলিয়ে দিতে পারেন। তবে সেখানে পরিবারের সকলের সম্মতি থাকতে হবে। কারণ পরিবারের হক নষ্ট করা ঠিক নয়।
এই বন্টন পদ্ধতি শুধু এই ঈদের জন্য নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বন্টনের সময় সমতা বিধানের তাগিদ দেয়। যে কোন পণ্য বিনিময়ের সময় ক্রেতা-বিক্রেতা কিংবা দাতা-গ্রহীতা উভয়কে খেয়াল রাখতে হবে যেন লেনদেনে কোন ত্রুটি না থাকে।
পড়ুন: কোরবানির হাট মাতাবে ‘সম্রাট’ ও ‘ট্রাম্প’
গরীব-দুঃখীদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি
গরীবদের কথা উপেক্ষা করা হলে কোন ঈদ-ই সঠিক ভাবে পালন করা হবে না এবং এর জন্য গুণাহগার হতে হবে। কুরবানির মাংসের এক ভাগ তো আছেই, পাশাপাশি দান-সাদকা করার কথাও বলা হয়েছে। যারা একবেলা আহার যোগাড় করাই কষ্টসাধ্য ব্যাপার তাদের মুখে খাবার তুলে দেয়ার মাধ্যমে ঈদের খুশী ছড়িয়ে দেয়াটাই ঈদের মুল বার্তা।
হত-দরিদ্র মানুষের একবেলা চাল যোগাড়ে যেখানে সমস্যা সেখানে মাংস কিনে খাওয়ার কথা তারা চিন্তাও করতে পারে না। তারা ঈদুল আযহার এই দিনটির জন্য রীতিমত অপেক্ষা করে থাকে। তাই নিজের ভাগে মাংস বেশি পড়লো কিনা এবং লোক দেখানো কুরবানি এসব কিছু বাদ দিয়ে গরীব-দুঃখীদের পাশে দাড়ালে ঈদের আসল উদ্দেশ্য হাসিল হবে।
সামাজিকতা
কুরবানির ঈদের কার্যক্রমগুলোর জন্য অনেকগুলো হাত একত্রিত হয়। কুরবানির জন্য পরিকল্পনা থেকে শুরু করে মাংস বন্টন পর্যন্ত কাজগুলো একের পক্ষে করা সম্ভব হয় না। এভাবে এই ঈদটি মানুষকে পরস্পরের কাছে আনে। পুরনো ঝগড়া-বিবাদ ভুলে প্রতিটি প্রাণে সৌহার্দ্য ও সহমর্মিতা ছড়িয়ে দেয়।
পড়ুন: কোরবানির পশু কেনাবেচায় ডিজিটাল হাট চালু
কেউ একা পুরো একটা পশু কুরবানি দিতে অপারগ হলে প্রয়োজনে সে অন্যদের সাথে বড় পশু কুরবানিতে শরীক হতে পারে। এতে শরীক হওয়া প্রত্যেকে সমান ভাবে কুরবানির নেকী অর্জন করতে পারে। এই সম্মিলিত হওয়ার রেশ থেকেই ঈদ পরবর্তী বিভিন্ন সাহায্য-সহযোগিতায় একে অপরের দিকে এগিয়ে আসে।
নিয়মানুবর্তিতা
ঈদে প্রতিটি ক্রিয়াকলাপ কিছু সুনির্দিষ্ট পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে পালন করতে হয়। ঈদের পশু নির্বাচন, ঈদের নামায আদায়, পশু কুরবানি, মাংস বন্টন সবকিছুর জন্য সঠিক সময় ও পদ্ধতি আছে। এর বাইরে কেউ নিজের খেয়াল-খুশী মত এই কাজগুলো সম্পন্ন করতে গেলে ঈদুল আযহার আসল লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে না। এই পদ্ধতিগুলো কারো উপর বোঝা নয়, বরং প্রতিটি মুসলমান নিজেদের সাধ্য মত এগুলো পালন করতে পারে।
এভাবে ঈদুল আযহা জীবনের প্রতিটি কাজে নিয়ম মেনে চলার শিক্ষা দেয়। প্রতিটি কাজে সফলতা পাবার মুলমন্ত্র হচ্ছে সেই কাজের প্রাসঙ্গিক নিয়মগুলোর বাইরে না যেয়ে তা সঠিকভাবে মেনে চলা।
পড়ুন: ঈদ উপলক্ষে ১ লাখ ৩০০ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ
হালাল উপার্জন
যে কোন স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন ও প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমান নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে তার উপর কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব। সম্পূর্ণ যাকাতের ন্যায় এই নিসাব পরিমাণটি হলো সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা কিংবা এর সমতূল্য বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুতকৃত পণ্য। এমনকি সেই সমমূল্যের নগদ টাকা কারো কাছে থাকলে তিনি কুরবানি দেয়ার জন্য উপযুক্ত হবেন। এই পরিমাণটি খাদ্য, বাসস্থান এবং উপার্জনের উপকরণের বাইরে হতে হবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এই সমমূল্যের অর্থ অবশ্যই হালাল উপার্জনের হতে হবে। নতুবা হারাম উপার্জনের টাকা থেকে কুরবানি আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য হয় না।
পরিকল্পনা মাফিক ব্যবস্থাপনা
যে কোন কাজ সম্পন্ন করা যেমন কাজটির জন্য পূর্ব পরিকল্পনার সাথে জড়িত ঠিক তেমনি কাজের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে প্রয়োজন সঠিক ব্যবস্থাপনা। বছর ঘুরে মাত্র একবার আসে ঈদুল আযহা। আর তাই এর জন্য আগে থেকে প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে।
পড়ুন: ঈদুল আযহা: মহামারির মধ্যে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে অনলাইনে গরু ক্রয়
হিসেবের সংসারে প্রতি মাসের খরচ থেকে কুরবানির জন্য টাকা বাঁচিয়ে রাখা এই পরিকল্পনার অন্তর্ভূক্ত। আর এই পরিকল্পনার মাধ্যমেই স্পষ্ট হয় একজন মুসলমান কতটা গুরুত্বের সাথে কুরবানির ঈদকে গ্রহণ করছেন। অতঃপর কুরবানির পশু কেনা, কুরবানির কসাই ঠিক করা, কুরবানির পরবর্তী পরিস্কার করণ, মাংস বন্টন প্রভৃতির জন্য পূর্ব পরিকল্পনা থাকা দরকার। এভাবে জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে পথ দেখায় এই ঈদ।
মিতব্যয়ীতা
লোক দেখানো কুরবানি বা কুরবানির পশুর পিছনে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করা যেমন অপচয়ের শামিল, তেমনি দায়সাড়া গোছের পশু ক্রয় করাও ঠিক নয়। বাজার দর যাচাই করে, বিক্রেতা যেন প্রতারিত না হয় এবং একই সাথে অন্যদেরও যেন পশু কিনতে সুবিধা হয় সেদিকে লক্ষ রেখে কুরবানির পশু কিনতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়তা অর্থাৎ যতটুকু না হলেই নয় সেদিকে গুরুত্ব দিলে অপচয় রোধ করে পশু ক্রয় সম্ভব হবে।
তাছাড়া পশু ক্রয়ে খরচকৃত টাকা এবং পশুর রক্ত-মাংস নয়; এখানে আল্লাহর নির্দেশ পালনটাই আসল। এভাবে নিত্য-নৈমিত্তিক লেনদেনে মিতব্যয়ী হওয়ার শিক্ষা পাওয়া যায়।
পড়ুন: ঈদুল আজহা: হাটের জন্য প্রস্তুত ঠাকুরগাঁওয়ের ‘বারাকাত’
পরিশিষ্ট
এভাবে পবিত্র ঈদুল আযহার শিক্ষা শুধু ধর্মীয় দিক থেকে নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষকে উপকৃত করতে পারে। তাই কুরবানির যথাযথ ভাব গাম্ভীর্য অনুসারে এর কার্যকলাপগুলো পালিত হচ্ছে কিনা সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা বাঞ্ছনীয়। আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রদর্শন, অর্থের অপচয়, গরীব-দুঃখীদের উপেক্ষা করা এবং কুরবানির পশুকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থেকে কুরবানির আসল উদ্দেশ্যের প্রতি খেয়াল করা উচিত। অন্যথায় এত ঘটা করে পালিত উৎসবের কোন অর্থ তো থাকবেই না, বরং আল্লাহ অসন্তুষ্ট হবেন। সর্বপরি, আত্মত্যাগ ও খোদাভীতিকে সামনে রেখে শুধু প্রয়োজনীয়তাটুকুতে গুরুত্বারোপ করলে ঈদুল আযহার উদ্দেশ্য হাসিল সম্ভব হবে।
হজ: সৌদি আরবে আরও ৩ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু
আসন্ন হজ পালন করতে যাওয়া মক্কায় আরও তিন বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ পোর্টাল জানিয়েছে।
নিহতরা হলেন-ঢাকার ফাতেমা বেগম (৬০) পাসপোর্ট নম্বর ইই০৩৮২৮৪৩, সিরাজগঞ্জের রফিকুল ইসলাম (৪৭) পাসপোর্ট নম্বর বিটি০৪৮৫৪৩৩ এবং টাঙ্গাইলের মো আব্দুল গফুর মিয়া (৬২) যার পাসপোর্ট নম্বর বিওয়াই০০৬২২০২।
পোর্টাল অনুযায়ী ফাতেমা ও রফিকুল বৃহস্পতিবার এবং গফুর মঙ্গলবার মারা যান।
শুক্রবার পোর্টাল জানিয়েছে, মৃত্যুর কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
সৌদি আরবে চলতি বছরের ১১ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত তিন নারীসহ মোট নয়জন বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
পড়ুন: ৪১৯ যাত্রী নিয়ে সিলেট থেকে হজের প্রথম ফ্লাইট ছাড়লো
বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে পারবেন আরও ২৪১৫ জন
সৌদি সরকার বাংলাদেশের জন্য হজের কোটা বৃদ্ধি করায় এ বছর আরও দুই হাজার ৪১৫ জন বাংলাদেশি হজ পালন করতে পারবেন।
বুধবার বাংলাদেশের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে সৌদি আরবের হজ কাউন্সিলে পাঠানো এক চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে।
চিঠি অনুযায়ী, চলতি বছরের হজের জন্য সৌদি সরকারের বরাদ্দ করা আরও দুই হাজার ৪১৫ জন হজযাত্রীর বর্ধিত কোটা বাংলাদেশ গ্রহণ করেছে।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ১৩ হাজারের বেশি হজযাত্রী
সৌদি হজ কাউন্সিলরকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১১৫ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় বাকি দুই হাজার ৩০০ জনের কোটা নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এ বছর হজ ৮ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে।
হজযাত্রীদের নিয়ে সৌদি আরবের জন্য ৫ জুন থেকে ফ্লাইট শুরু হয়েছে। সৌদি আরবে শেষ ফ্লাইট যাবে ৩ জুলাই। ফিরতি ফ্লাইট ১৪ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ৪ আগস্ট শেষ হবে।
মঙ্গলবার পর্যন্ত ২৬ হাজার ৩০৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরব গেছেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম থেকে ৪১৭ জন হজযাত্রী নিয়ে প্রথম ফ্লাইট ছেড়ে গেল
সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ১৩ হাজারের বেশি হজযাত্রী
হজ পালনের জন্য এই পর্যন্ত ১৩ হাজার ২২৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। ৩৪টি ফ্লাইটে তারা সৌদি গেছেন।
হজ বুলেটিনে বলা হয়, ৫ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ১৩ হাজার ২২৯ জন হজ যাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার তিন হাজার ৩৮৫ জন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ৯ হাজার ৮৪৪ জন হজযাত্রী রয়েছেন। এছাড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিচালিত ১৯টি, সৌদি এয়ারলাইন্স পরিচালিত ১০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স পরিচালিত পাঁচটি ফ্লাইট মিলে মোট ৩৪টি ফ্লাইটে এই হজযাত্রীরা সৌদি আরবে পেঁছান।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম থেকে ৪১৭ জন হজযাত্রী নিয়ে প্রথম ফ্লাইট ছেড়ে গেল
এখন পর্যন্ত সৌদি আরবে বাংদেশের একজন হজযাত্রী মারা গেছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৮ জুলাই পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় সারা বিশ্বের ১০ লাখ হাজী এ বছর হজ করতে যাবেন।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু
প্রসঙ্গত, ৫ জুন (রবিবার) ৪১০ জন যাত্রী নিয়ে চলতি বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট ঢাকা ছাড়ে। ওই দিন সকাল ৯টার দিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যায় এবং স্থানীয় সময় দুপুর পৌনে ১টার দিকে জেদ্দায় পৌঁছায়।
প্রথম হজ ফ্লাইট রবিবার
বাংলাদেশ থেকে ৪১৯ হজযাত্রী নিয়ে প্রথম হজ ফ্লাইট রবিবার সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা হবে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৮ জুলাই পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় সারাবিশ্বের ১০ লাখ হাজী এ বছর হজ করতে যাবেন।
এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজযাত্রী এবারে হজে অংশ নেবেন।
শান্তির ধর্ম ইসলামের মর্যাদা সমুন্নত রাখার জন্য সবাইকে আহ্বান জানিয়ে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হজ কর্মসূচি-২০২২ (১৪৪৩ হিজরি) উদ্বোধন করেছেন।
এসময় তিনি হজযাত্রীদের সৌদি আরবের নিয়ম-কানুন মেনে হজের আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে বলেন।
এ বছর হজ পালনে হজযাত্রীদের ন্যূনতম পাঁচ লাখ ২১ হাজার ১৫০ টাকা খরচ করতে হবে।
এ বছর সরকার বিমান ভাড়া নির্ধারণ করেছে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: দেশবাসীর জন্য দোয়া করুন, হজযাত্রীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যারা কোভিড-১৯ এর পূর্ণ ডোজ টিকা নিয়েছেন এবং যাদের বয়স ৬৫ বছরের কম শুধুমাত্র তারাই হজ পালনের সুযোগ পাবেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বিদেশ থেকে সৌদি আরবে যাত্রার ৭২ ঘন্টা আগে হজযাত্রীদের পিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ সনদ থাকতে হবে।
গত বছর করোনা মহামারির কারণে বিশ্বের ৫৮ হাজার ৭৪৫ জন হাজী হজ করেছিলেন
উল্লেখ্য, করোনা শুরুর আগে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করেছিলেন।
এছাড়া প্রতিবছর প্রায় ২৫ লাখ মানুষ সৌদি আরব হজ করতে যেতেন।
আরও পড়ুন: হজের খরচ বাড়ল আরও ৫৯ হাজার টাকা
হজ ফ্লাইট ৩১ মে’র পরিবর্তে ৫ জুন শুরু