আপিল বিভাগ
ফখরুল-আব্বাসের জামিন বহাল, মুক্তিতে বাধা নেই
নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসের জামিনের হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। অর্থাৎ, তাদের জামিন বহাল থাকবে এবং মুক্তিতে থাকছে না বাধা।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ হাইকোর্টের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেন।
হাইকোর্টের রুল রক্ষণাবেক্ষণের ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
৪ জানুয়ারি আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনের শুনানির জন্য রবিবার দিন ধার্য করেন।
ওই মামলায় বিএনপির দুই নেতাকে জামিন দিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে একই দিন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়।
৩ জানুয়ারি এ মামলায় মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে ছয় মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: ফখরুল ও আব্বাসের হাইকোর্টের দেয়া জামিনের আপিল শুনানি রবিবার
বিএনপির দুই নেতাকে কেন স্থায়ী জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
গত বছরের ২১ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আসাদুজ্জামান চতুর্থবারের মতো বিএনপি নেতাদের জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।
গত ৯ ডিসেম্বর রাজধানীতে পৃথক অভিযান চালিয়ে ফখরুল ও আব্বাসকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি দল।
পরে রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ঢাকার একটি আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।
আরও পড়ুন: নয়াপল্টনে সংঘর্ষ: ফখরুল-আব্বাসকে হাইকোর্টে ৬ মাসের জামিন
ফখরুল-আব্বাসের জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন রাষ্ট্রপক্ষের
ফখরুল-আব্বাসের জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন রাষ্ট্রপক্ষের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের জামিনের হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
গত বছরের ৭ ডিসেম্বর ঢাকার নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় এই আবেদন করা হয়েছে।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর বলেন, আজ (বুধবার) সকালে সরকার সংশ্লিষ্ট আপিল বিভাগের বেঞ্চে আবেদনটি করে। দুপুর ২টার পর আবেদনের ওপর শুনানি করবেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ।
আরও পড়ুন: নয়াপল্টনে সংঘর্ষ: ফখরুল-আব্বাসকে হাইকোর্টে ৬ মাসের জামিন
এর আগে মঙ্গলবার এ মামলায় ফখরুল ও আব্বাসকে ছয় মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ জামিন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে বিএনপির দুই নেতাকে কেন স্থায়ী জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
গত ২১ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আসাদুজ্জামান চতুর্থবারের মতো বিএনপি নেতাদের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন।
গত ৯ ডিসেম্বর রাজধানীতে পৃথক অভিযান চালিয়ে ফখরুল ও আব্বাসকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল। পরে রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ঢাকার একটি আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।
গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার একটি আদালত ফখরুল ও আব্বাসসহ বিএনপির ২২৪ নেতাকর্মীর জামিন আবেদন নাকচ করে দেন। গত ১৫ ডিসেম্বর আবারও দুই বিএনপি নেতার জামিন আবেদন খারিজ হয়।
আরও পড়ুন: নয়াপল্টনে সংঘর্ষ: ফখরুল-আব্বাসের জামিন চতুর্থ দফায় নামঞ্জুর
ঢাকার একটি আদালত ৯ ডিসেম্বর তাদের ডিভিশন সুবিধা দেয়ার নির্দেশ দেন এবং এরপর ১৩ ডিসেম্বর থেকে ডিভিশন সুবিধা দেয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলার প্ররোচনা, পরিকল্পনা ও নির্দেশ দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
৭ ডিসেম্বর সমাবেশের (১০ ডিসেম্বর) আগে দলের নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে একজন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নিহত ও প্রায় ৫০ জন আহত হন।
বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় রমনা, শাহজাহানপুর, মতিঝিল ও পল্টন থানায় ৭২০ বিএনপি নেতাকর্মী ও অজ্ঞাতপরিচয় দুই হাজার ৪০০ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছে পুলিশ।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে নয়াপল্টন থানায় করা মামলায় ৪৫০ জন, মতিঝিল থানায় দায়ের করা মামলায় ২০ জন এবং শাহজাহানপুর থানায় দায়ের করা মামলায় সাতজনকে আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন: ফখরুল-আব্বাসকে আগেই ডিভিশন দেয়া উচিত ছিল: হাইকোর্ট
জাপার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না জিএম কাদের: আপিল বিভাগ
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসাবে গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বুধবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এছাড়া আপিল বিভাগ ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ আদালতকে জাপা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়ার রায়ের বিরুদ্ধে কাদেরের করা আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বলেছেন।
আদালতে আবেদনকারী জিয়াউল হক মৃধার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা এবং জিএম কাদেরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনের নিষেধাজ্ঞা হাইকোর্টে স্থগিত
এছাড়া আপিল বিভাগের আদেশ জাপা সিসিইফ হিসাবে কাদেরকে কাজ করতে বাধা দেয়। সিরাজুল বলেন, এখন আমাদের মৃধার বিরুদ্ধে দায়ের করা আবেদনের শুনানি করতে হবে।
এর আগে সোমবার, আপিল বিভাগ ১৩ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সাময়িক নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন।
৩০ নভেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার জজ এম ইনায়েতুর রহিম জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে তার পদে দায়িত্ব পালনের অনুমতি দিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন।
২৯ নভেম্বর হাইকোর্ট একটি পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিম্ন আদালতের নিষেধাজ্ঞা ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসাবে জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনের পথ পরিষ্কার করেন।
৪ অক্টোবর জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন জিয়াউল হক মৃধা।
৩০ অক্টোবর ঢাকার যুগ্ম জেলা দায়রা জজ আদালত-১ জিএম কাদেরের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
শেখ সিরাজুল ইসলাম ও কলিম উল্লাহ মজুমদারসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী ৬ অক্টোবর আদালতে জিএম কাদেরের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন নিয়ে আদালতে আবেদন করেন।
আবেদনে, ১৬ নভেম্বর আইনজীবীরা একই আদালত কর্তৃক বরখাস্ত করা দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চেয়ারম্যান হিসাবে তার ভূমিকা পালনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার জন্য আদালতের প্রতি আহ্বান জানান।
পরে নিম্ন আদালতের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন কাদের।
মামলার এজাহারে বলা হয়, দলটির প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মারা যান।
হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় (২৮ ডিসেম্বর ২০১৯) কাউন্সিলে জালিয়াতির মাধ্যমে কাদের নিজেকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন।
পরে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ক্ষমতা প্রয়োগ করে দলের চেয়ারম্যান হিসাবে কাদের রাঙ্গা, গাজীপুর মহানগর শাখার উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকার ও সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর সিকদারসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে বরখাস্ত করেন।
এছাড়া ১৪ সেপ্টেম্বর রাঙ্গাকে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ এবং ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকে দল থেকে অপসারণ করা হয়।
মামলায়, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ পর্যন্ত সমস্ত অপসারণ এবং কাউন্সিলকে অবৈধ ঘোষণা করার আদেশ চাওয়া হয়েছিল এবং হাইকোর্টের রিট পিটিশন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দলের পরবর্তী কাউন্সিল স্থগিত রাখতে বলা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা থাকবে কিনা জানা যাবে আগামীকাল
জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা বহাল
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের নতুন ৩ বিচারপতি
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত তিন বিচারপতি শপথ নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টার পর সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে তিন বিচারপতিকে শপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
তিন বিচারপতি হলেন- বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী।
এ সময় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সম্পাদক আবদুন নূর দুলালসহ নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারপতিদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দুপুরে হাইকোর্ট বিভাগের তিন বিচারপতিকে আপিল বিভাগে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি হাইকোর্ট বিভাগের কর্মরত তিনজন বিচারককে তাদের শপথ গ্রহণের তারিখ হতে আপিল বিভাগে বিচারক নিয়োগ করেছেন। এ তিনজনসহ আপিল বিভাগে এখন বিচারপতির সংখ্যা দাঁড়ালো নয় জন।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ৩ বিচারপতির নিয়োগ
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে তিনজন বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতির নির্দেশক্রমে তাদের নিয়োগ দিয়ে আইনমন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
নিয়োগপ্রাপ্তরা হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম।
আজ বিকাল চারটায় তাদের শপথ পড়াবেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
এতথ্য নিশ্চিত করেন আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।
বর্তমানে আপিল বিভাগে ছয়জন বিচারপতি রয়েছেন। নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের নিয়ে এ সংখ্যা দাঁড়াবে নয়জনে।
আরও পড়ুন: বিচারপ্রার্থীদের জন্য সুপ্রিম কোর্টে বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ উদ্বোধন
সুপ্রিম কোর্টের ১২ বিচারপতি করোনায় আক্রান্ত: প্রধান বিচারপতি
সুপ্রিম কোর্টে ৬০ দিনের মধ্যে তথ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার নির্দেশ হাইকোর্টের
দুর্নীতি মামলায় জামিন পেলেন হাজী সেলিম
দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে জামিন দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ১০ বছর দণ্ড দিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে হাজী সেলিমকে আপিলের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন (লিভ টু আপিল) মঞ্জুর করে মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
এর আগে গত ২২ মে হাইকোর্টের রায় অনুসারে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলাম তার জামিন নামঞ্জুর করেন। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে কারাগারে ডিভিশন ও সুচিকিৎসার আবেদন জানান। বিচারক কারাবিধি অনুযায়ী জেল কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। ২৪ মে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় হাইকোর্টের দেয়া দণ্ডের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন। একইসঙ্গে জামিন আবেদনও করেছিলেন হাজী সেলিম। সেই আবেদনের আজ শুনানি হয়।
২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আরও পড়ুন: ভাইয়ের মৃত্যু, সাড়ে ৫ ঘণ্টার প্যারোলে মুক্ত হাজী সেলিম
এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করেন।
পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় আপিল শুনানির জন্য নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
সে অনুসারে শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৯ মার্চ বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন।
রায়ে ১০ বছরের দণ্ড বহাল থাকলেও তিন বছরের সাজা থেকে খালাস পান হাজী সেলিম। একইসঙ্গে রায় পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।
চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। রায়ে ৩০ দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। এ সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে তার জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এরপর ২২ মে হজী সেলিম আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত। এখন জামিন পাওয়ায় তার কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা।
আরও পড়ুন: হাজী সেলিমের জামিন আবেদন নথিভুক্ত, আপিলের শুনানি ২৩ অক্টোবর
দণ্ড বাতিল চেয়ে হাজী সেলিমের আপিল
জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা বহাল
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশ দিয়ে হাইকোর্টের আদেশ আগামী সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহমান এ আদেশ দেন।
চেম্বার আদালতের এই আদেশের ফলে জিএম কাদেরের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞার আদেশ বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবেদনকারী জিয়াউল হক মৃধার আইনজীবী ব্যারিস্টার সাঈদ আহমেদ রাজা।
তিনি বলেন, বিচারিক আদালত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। সেই আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে নিম্ন আদালতে আবেদন করেন জিএম কাদের। ওই আবেদন খারিজ করেন বিচারিক আদালত। এরপর তার বিরুদ্ধে আপিল করেন। যে আপিলের ওপর জানুয়ারিতে শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। এরই মধ্যে হাইকোর্টে জিএম কাদের নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্ট বিচারিক আদালতে আদেশ স্থগিত করেন। পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আমরা আপিল বিভাগে আবেদন জানাই। আজ আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করে আবেদনটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন। সোমবার এ বিষয়ের ওপর ফের শুনানি হবে।
গত ৪ অক্টোবর জাপা থেকে বহিষ্কৃত নেতা দলটির সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন। বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত ১নং প্রতিপক্ষ (জিএম কাদের), ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বরের গঠনতন্ত্রের আলোকে যেন পার্টির কোনো প্রকার সিদ্ধান্ত এবং কোনো কার্য গ্রহণ করতে না পারে সে মর্মে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। পরে এ আদেশ প্রত্যাহারে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের আবেদন ১৬ নভেম্বর খারিজ করে দেন একই আদালত।
আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ খারিজাদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে মিস আপিল করেন জিএম কাদের। জেলা জজ এ আবেদন শুনানির জন্য ৯ জানুয়ারি দিন রাখলেন। কিন্তু আমরা ২৪ নভেম্বর দরখাস্ত দিয়ে বললাম ৯ জানুয়ারি রাখাতে, আমাদের ক্ষতি হচ্ছে। কারণ আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার আদেশ আছে। অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। তাই আজকেই শুনানি করেন। আমাদের ২৪ তারিখের দরখাস্তটা জেলা জজ রিজেক্ট করে দিলেন। এর বিরুদ্ধে আমরা রিভিশন করেছি। আমরা হাইকোর্টে বলেছি ২৪ তারিখের আদেশটা অবৈধ। কোর্ট রুল দিলো আর ৩০ অক্টোববের নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত করেছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। এরপর বিবাদী জিএম কাদের হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকার পরও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছরের ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন।
গত ৫ মার্চ গাজীপুর মহানগর কমিটির উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক রফিকুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মো. আজিজকে বহিষ্কার করেন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাদী মশিউর রহমান রাঙ্গাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করেন। অন্যদিকে ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকেও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করেন, যা অবৈধ।
ফটো সাংবাদিক শহিদুল আলমের মামলার তদন্ত চলবে: আপিল বিভাগ
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলার তদন্ত কার্যক্রমের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট খারিজের বিরুদ্ধে দায়ের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
রবিবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ তার লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন।
এ আদেশের ফলে এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলতে আর কোনও বাঁধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে শহিদুল আলমের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
আরও পড়ুন: মির্জা আব্বাসের দুর্নীতির মামলার বিচার চলবে: আপিল বিভাগ
এ মামলার তদন্ত কার্যক্রমের বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিট খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শহিদুল আলম। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১০ জানুয়ারি আপিল বিভাগ শহিদুল আলমকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে চার সপ্তাহের মধ্যে লিভ টু আপিল করতে বলেন। সে অনুযায়ী লিভ টু আপিল করলে আজ শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ তা খরিজ করে দেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৬ আগস্ট রমনা থানায় একটি মামলা হয়। সে মামলায় দীর্ঘদিন কারাভোগের পর শহিদুল আলম জামিনে মুক্তি পান। তবে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে থাকা মামলার তদন্ত কার্যক্রমের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে শহিদুল আলম ২০১৯ সালের ৩ মার্চ হাইকোর্টে রিট করেন। সে রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করে মামলার তদন্ত কার্যক্রমের ওপর তিন মাসের স্থগিতাদেশ দেন। পরবর্তীতে সে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়। এরপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে শহিদুল আলমের মামলার তদন্ত কার্যক্রমের বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিট খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে রায় দেন হাইকোর্ট। সে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে শহিদুল আলম। ওই লিভ টু আপিলও আজ খারিজ করেন আপিল বিভাগ।
আরও পড়ুন: মামলা স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন ড. ইউনূসের
সম্রাটের জামিন বাতিলের আদেশ আপিল বিভাগে বহাল
মির্জা আব্বাসের দুর্নীতির মামলার বিচার চলবে: আপিল বিভাগ
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের হিসাব বিবরণীতে তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলা বাতিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এ আদেশের ফলে মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে বিচারিক আদালতে এ মামলা চলতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুর রেজাক খান ও সগীর হোসেন লিয়ন।
সোমবার এ বিষয়ে শুনানি শেষে আদেশের জন্য মঙ্গলবার দিন ঠিক করেছিলেন আপিল বিভাগ।
৫ কোটি ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ২৩৪ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ৩৩ লাখ ৪৮ হাজার ৫৮১ টাকা তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শফিউল আলম ২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর হাইকোর্ট মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে দেন। মামলাটি বর্তমানে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৬ এ সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
পড়ুন: দুর্নীতি মামলায় বরখাস্ত ডিআইজি বজলুর রশীদের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড
দুর্নীতি, অনিয়ম করে নিয়ন্ত্রণহীন সরকার দুর্ভিক্ষের কথা বলছে: ফখরুল
প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে মো. নূরুজ্জামান
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর অনুপস্থিতিতে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালন করবেন। রবিবার সুপ্রিম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জেনারেল (সিনিয়র জেলা জজ) মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে গমন ও অবস্থান করবেন।
এতে আরও বলা হয়েছে, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর অনুপস্থিতিতে প্রধান বিচারপতির যাত্রার তারিখ থেকে পুনরায় কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালন করবেন।
আরও পড়ুন: প্রতি বছর ‘প্রধান বিচারপতি পদক’ প্রদানের সিদ্ধান্ত, নীতিমালা প্রণয়ন
বর্তমানে বিচার ব্যবস্থায় দীর্ঘসূত্রিতা বেড়েছে: প্রধান বিচারপতি
আদালতে মানুষের দুর্দশার সুযোগ নেয়া বরদাশত করা হবে না: প্রধান বিচারপতি